Childhood marriage

Childhood marriage 2 !! Part- 34

#পর্ব-৩৪
#লেখিকা-সানজিদা সেতু
সবাইঃ (চিৎকার করে)তুমি!তুমি..এখানে কি করছো?
ছোঁয়াঃ সবাইকে এভাবে একসাথে দেখে প্রচণ্ড রকমের শক খেলাম।তারপর কাউকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ছুটে বেরিয়ে আসলাম…
সায়নঃ ছোঁয়া…আমার কথাটা একবার শোন প্লিজ ছোঁয়া…ছোঁয়া…
রাকিবঃ এই সায়ন,ও এখানে কি করছিল?
সায়নঃ ওসব পরেও জানতে পারবি,আগে প্লিজ আমাকে যেতে দে,ওকে আটকাতে হবে নাহলে যে…
দীপুঃ তার আগে এটা বল একটা বিবাহিত মেয়ের সাথে তুই…How could you do this yaar!
সায়নঃ শোন তোরা কিন্তু ওকে ভুল বুঝছিস
আসিফঃ এতে ভুল বোঝার কি আছে?ওতো নিজ মুখেই সব স্বীকার করেছে তাহলে এর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির ক আছে?
রাকিবঃ ছি!সায়ন আমি জাস্ট ভাবতে পারছি না তুই ওর মত একটা মেয়ের সাথে…
সায়নঃ ওর মত মেয়ে মানে!কি বলতে চাইছিস তুই?
আসিফঃ ও বলতে চাইছে এমন একটা চরিত্রহীন মেয়েকে তুই…
সায়নঃ আসিফ…
দীপুঃ চেঁচাচ্ছিস কেন?ওতো ভুল কিছু বলেনি,যেই মেয়ে বিবাহিত হয়েও অন্য একজনের সাথে রাত কাটায় তাকে আর যাই বলিনা কেন চরিত্রবানতো আর বলা যায় না তাইনা?

সায়নঃ শাট আপ দীপু
দীপুঃ কেন চুপ কেন করব যা সত্যি আমিতো তাই বলেছি
সায়নঃ দীপু চুপ কর বলছি,নাহলে কিন্তু খুব খারাপ হয়ে যাবে
দীপুঃ কেন কি করবি তুই?যা ইচ্ছে কর,সত্যি বলতে আমি ভয় পাই না…
সায়নঃ তুই…
মারুফঃ এই এই এই..সা..সায়ন,তুই যা তো আমি দেখছি ব্যপারটা
(সায়ন বেরিয়ে গেল)
আসিফঃ এই তুই ওকে যেতে দিলি কেন?
মারুফঃ যা ঠিক মনে হয়েছে আমি তাই করেছি
রাকিবঃ তা এরমধ্যে ঠিক কি দেখলি?
দীপুঃ দেখ মারুফ,তুই খুব ভাল করেই জানিস সায়ন যেটা করছে মোটেও ঠিক করছে না তারপরেও তুই…
মারুফঃ খুব ভাল করেই জানি আর জানি বলেই বলছি ও যা করছে একদম ঠিক করছে
আসিফঃ How is this possible!
রাকিবঃ তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?
মারুফঃ আমার মাথা ঠিকই আছে,সত্যিটা জানলে আমি নিশ্চিত তোরাও আমার সাথে একমত হবি
রাকিবঃ সত্যি!কিসের সত্যি?
মারুফঃ ছোঁয়ার পুরো নাম কি জানিস?মিসেস তাসনিয়া মাহবুব আর ওর হাজবেণ্ডের নাম মাহবুব হাসান ওরফে সায়ন…
সবাইঃ হোয়াট!
মারুফঃ যদিও সায়ন এখনই সবাইকে সবকিছু জানাতে নিষেধ করেছিল বাট আই থিঙ্ক এটলিস্ট তোদেরকে এখন ব্যাপারটা জানানো উচিত তাই…
দীপুঃ বাট এটা কিভাবে সম্ভব!কাহিনীতো কিছুই বুঝছি না একটু ভেঙ্গে বলতো
মারুফঃ সবাইকে সবকিছু খুলে বললাম,সব শুনেতো সবার মুখের অবস্থা দেখার মত হয়েছে
রাকিবঃ তারমানে আমরা মেয়েটাকে শুধু শুধু ভুল বঝছিলাম?
আসিফঃ না কাজটা আমরা মোটেও ঠিক করিনি।যাইহোক সবইতো বুঝলাম কিন্তু মেয়েটা ওভাবে চলে গেল কেন?আমাদের দেখে কি লজ্জা পেয়েছে নাকি…
দীপুঃ আমার কিন্তু তা মনে হচ্ছে না,দেখলি না ছোঁয়া কেমন রেগে মেগে বেরিয়ে গেল আর সায়নও কেমন টেনশনে ছিল দেখলি না?I think something is wrong…
মারুফঃ আমি বোধহয় বুঝতে পারছি ব্যাপারটা ঠিক কি হয়েছে,মনেতো হচ্ছে যা করতে চেয়েছিলাম তার উল্টোটা হয়ে গেছে
আসিফঃ মানে?
মারুফঃ ওদেরকে সব খুলে বললাম
রাকিবঃ Are you mad or what!এই কি ভেবে তুই এসব করতে গেলি বলতো,এখন কি হবে একবার ভেবে দেখেছিস?আরে সবকিছুতো আরও বেশি কমপ্লিকেটেড হয়ে যাচ্ছে…
মারুফঃ আই নো বাট হোপ দ্যাট সায়ন সব ম্যানেজ করে নেবে…

সায়নঃ ছোঁয়া…প্লিজ আমার কথাটা একটু শোন,আমি সত্যিই কিছু মনে করতে পারছি না।আমাদের মধ্যে আদৌ কিছু হয়েছে কিনা তাওতো ক্লিয়ার না…
ছোঁয়াঃ হোয়াট ডু ইউ মিন বাই দ্যাট?সবকিছুইতো পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে তারপরও আপনি প্রমাণ চান!
সায়নঃ দেখো ছোঁয়া,আমার মনে হয় না আমি তেমন কিছু করেছি আর যদি কিছু করেও থাকি সেটা একেবারেই আনইন্টেনশনালিই…ব্যাপারটা একটু ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে দেখো প্লিজ…
ছোঁয়াঃ কি ভেবে দেখব বলুন,ইনটেনশনালিই হোক আর আনইন্টেনশনালিই হোক হয়েছেতো…আর এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিতো আমারই হল তাইনা?
সায়নঃ দেখো ছোঁয়া,তুমি কিন্তু এবার বাড়াবাড়ি করে ফেলছো
ছোঁয়াঃ বাড়াবাড়ি!কিসের বাড়াবাড়ি?ওহ আপনি কিছু করলে সেটা ঠিকই থাকে আর আমি কিছু করতে গেলেই সেটা বাড়াবাড়ি তাইতো?হাউ ফানি…
সায়নঃ বাড়াবাড়িইতো,তুমি মানো বা না মানো ভুলে যেওনা আমি তোমার হাজবেণ্ড তাই যদি আমাদের মধ্যে কিছু হয়েও থাকে লিগালি আর ধর্মমতে একদম ঠিক আছে সো প্লিজ এটা নিয়ে আর বেশি মাথাব্যথা কর না…
ছোঁয়াঃ দেখুন আপনি এখান থেকে যান প্লিজ,আপনাকে আমার জাস্ট সহ্য হচ্ছে না
সায়নঃ ওকে ফাইন বাই…
(কিছুক্ষণ পর)
ছোঁয়া নিজের রুমে ঢুকতেই লোপা ওর দিকে ছুটে এলো
লোপাঃ কি রে তোকে এমন লাগছে কেন?কি হয়েছে তোর?
(ছোঁয়া কোন জবাব না দিয়েই ওয়াশরুমের দিকে চলে গেল।লোপা আর টাইম ওয়েস্ট না করে মারুফকে ফোন দিল)
লোপাঃ হ্যালো
মারুফঃ হ্যাঁ লোপা,বলছি যে ছোঁয়া এখন কেমন আছে,ও কি হলে ঠিকমত পৌঁছে গেছে?ও ঠিক আছেতো?
লোপাঃ এই আপনি থামুনতো,আগে বলুন এক্স্যাক্টলি কি হয়েছে তারপর নাহয় প্যানিক হবেন
মারুফঃ ও হ্যাঁ বলছি।ওকে সব খুলে বললাম
লোপাঃ আপনাকে আগেই বলেছিলাম,জানতাম এমন কিছুই হবে কিন্তু আপনিতো…এখন ছোঁয়াকে কিভাবে সামলাবো?ওর যে টেম্পার তাতে…
মারুফঃ ওকে লিসেন লোপা,জাস্ট কুল ডাউন।ভেজালটা যেহেতু আমিই লাগিয়েছি আমিই কিছু করছি জাস্ট ভাবীকে একটু ম্যানেজ করার চেষ্টা কর প্লিজ…
লোপাঃ ওকে…
(তখনই ছোঁয়া রুমে ঢুকলো)
লোপাঃ কি রে,কি হয়েছে তোর?
ছোঁয়াঃ কিছু হয়নি
লোপাঃ দেখ ছোঁয়া,সায়ন ভাই…
ছোঁয়াঃ ওই লোকটার ব্যপারে আর একটা কথাও শুনতে চাই না আমি,যদি উনার ব্যপারেই কথা বলতে চাস তাহলে প্লিজ ডোন্ট সে এনিথিং
লোপাঃ কিন্তু দোস্ত…
ছোঁয়াঃ লোপা…আমাকে একটু একা থাকতে দে প্লিজ…
লোপাঃ কিন্তু…
ছোঁয়াঃ লোপা…প্লিজ লিভ…

মারুফঃ দোস্ত কি করব বলনা…আমার মাথায় না কিছুই ঢুকছে না,লোপা বলল ছোঁয়া নাকি প্রচণ্ড রেগে আছে তাহলেতো সায়ন…
আসিফঃ ওইতো সায়ন চলে এসেছে,কি রে তোকে এমন লাগছে কেন?কি রে ছোঁয়া ঠিক আছেতো?
মারুফঃ আই এ্যাম সরি দোস্ত,আমার জন্যই এতকিছু…
রাকিবঃ আহ মারুফ,তুই একটু চুপ থাকতো।সায়ন,এক্স্যাক্টলি কি হয়েছে বলতো
সায়নঃ আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি রে,ছোঁয়া আর কখনই আমাকে ক্ষমা করবে না
(সায়ন আর কিছু না বলেই রুমে চলে গেল,গিয়েই দরজা আটকে দিল)
মারুফঃ এই সায়ন,দরজা আটকে দিলি কেন?একটু খোল প্লিজ তোর সাথে জরুরি কথা আছে
সায়নঃ আমাকে একটু একা থাকতে দে প্লিজ…
মারুফঃ বাট…
রাকিবঃ মারুফ,ওকে ছেড়ে দে।মনে হচ্ছে যা করার আমাদেরকেই করতে হবে…

(পরদিন)
ক্লাস শেষে হলের দিকে যাচ্ছিল ছোঁয়া,হঠাৎই মারুফরা ওর সামনে এসে দাঁড়ালো।ওদেরকে দেখেই ছোঁয়া চলে যাচ্ছিলো,কোথা থেকে যেন লোপা এসে ওকে আটকে দিল
মারুফঃ ছোঁয়া প্লিজ আমরা জাস্ট তোমার পাঁচ মিনিট নিবো,একবার জাস্ট একবার আমাদের কথাটা শোন প্লিজ…
ছোঁয়াঃ ভাইয়া প্লিজ,উনার ব্যপারে আর একটা কথাও আমি শুনতে চাই না
লোপাঃ তুই না চাইলেও তোকে শুনতে হবে নাহলে সত্যিটা জানবি কিভাবে?
ছোঁয়াঃ কোন সত্যি জানার দরকার নেই আমার,কোনকিছু জানতে চাই না আমি,কোনকিছু না…
মারুফঃ কাল রাতে ঠিক কি হয়েছে জানিনা বাট যা কিছুই হোক না কেন তাতে সায়নের কোন দোষ নেই,সব দোষ আমার।আমিই পানিতে ড্রাগস মিশিয়েছিলাম তাই হয়তো…
ছোঁয়াঃ (চমকে উঠে)কি বললেন আপনি!
মারুফঃ তুমি ঠিকই শুনেছো,আমার জন্যই তোমরা…তোমাদের কারোরই হয়তো নিজের কোন সেন্স ছিল না তাই…
ছোঁয়াঃ How could you do this to me!
মারুফঃ আসলে ছোঁয়া সব দোষ আমার,এতকিছু ভেবেতো আমি কিছু করিনি কিন্তু বিশ্বাস কর আমি চিন্তাও করিনি এমন কিছু হবে
ছোঁয়াঃ বাট হয়েতো গেছে,এখন আমি কি করব?
মারুফঃ সায়নকে তুমি ক্ষমা করা দাও,আমি এমনটা না করলে ও কখনই এমন কিছু করতো না বিলিভ মি…
ছোঁয়াঃ আই কান্ট,যে অবস্থায়ই করুক না কেন আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে উনি আমার সাথে…
সায়নঃ দেখো ছোঁয়া,তোমার নিজেরও কিন্তু কোন সেন্স ছিল না তাই এরমধ্যে যে তোমারও কোন হাত ছিল না এটাওতো তুমি বলতে পারবে না।তাই বলছি প্লিজ সায়নকে একটা সুযোগ দাও
লোপাঃ আমাদের যা বলার আমরা তোকে সব খুলে বলেছি,এখন তুই ই ভেবে দেখ কি করবি।বাট একটা কথা কি জানিস,যাই হোক না কেন এতে ভাইয়া আর তুই সমানভাবে দায়ী সো সবকিছু ভাইয়ার উপর না চাপিয়ে একটু ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখ…

(সন্ধ্যায়)
আয়ানদের বাড়ির ড্রয়িংরুমে বসে আছে ছোঁয়া।বাইরে প্রচণ্ড বৃষ্টি তাই বারান্দায় না বসে এখানেই বসতে হয়েছে আজকে।প্রজেক্টের কাজ প্রায় শেষের পথে,আজই হয়তো শেষ হয়ে যাবে তাই একটু বেশিই কাজ করতে হচ্ছে।দুপুরে সবাই কথাগুলো বলার পর থেকেই ছোঁয়া শুধু সায়নের কথাই ভেবে যাচ্ছে।কাজ করে যাচ্ছে এখানে কিন্তু মনটা পড়ে আছে অন্য জায়গায়
ছোঁয়াঃ আচ্ছা আমি কি সত্যিই বাড়াবাড়ি করছি?উনাকে কি একবার সুযোগ দেওয়া উচিত?(মনে মনে)
আয়ানঃ ছোঁয়া…ছোঁয়া…
ছোঁয়াঃ (চমকে উঠে)জ্বি ভাইয়া?
আয়ানঃ সেই কখন থেকে দেখছি কি যেন ভাবছো,কোন সমস্যা?
ছোঁয়াঃ কই নাতো
আয়ানঃ ছোঁয়া,এ্যাকচুয়ালি আই এ্যাম সরি
ছোঁয়াঃ সরি!কিন্তু কেন?
আয়ানঃ আসলে তুমি ম্যারিড তা জানতাম না তাই…
ছোঁয়াঃ আচ্ছা উনিতো আমার হাজবেন্ড,তো নিজের স্ত্রীর থেকে এইটুকে আশা করা কি খুব বড় কোন অপরাধ?আর তাছাড়া উনিতো এসব জেনে বুঝে করেননি তাহলে…

(মনে মনে)
আয়ানঃ ছোঁয়া…শুনতে পাচ্ছো?
ছোঁয়াঃ জ্বি…
আয়ানঃ আই থিঙ্ক তোমার আজকে মুড ঠিক নেই তাই বলছি এখন আর কোন কাজ করা ঠিক হবে না
ছোঁয়াঃ না ভাইয়া,আমি ঠিক আছি
আয়ানঃ ইটস ওকে।তোমাকে আর কোনকিছু করতে হবে না,এমনিও যেটুকু কাজ বাঁকি আছে আমি একাই করে নিতে পারব আর তাছাড়া রাতও হয়ে গেছে সো ইউ বেটার লিভ
ছোঁয়াঃ ভালই হল,আমি ডিসিশন নিয়ে নিয়েছি।উনাকে আরেকটা সুযোগ দিব।এখান থেকে গিয়েই উনার সাথে কথা বলতে হবে
আয়ানঃ ছোঁয়া…কোথায় হারিয়ে গেলে?
ছোঁয়াঃ জ্বি?কি..ক্ক..কিছু বলছিলেন?
আয়ানঃ চলো তোমাকে হলে নামিয়ে দিয়ে আসি
ছোঁয়াঃ না না ভাইয়া,আপনাকে আর কষ্ট করতে হবে না।আমি বরং একটা রিকশা নিয়ে চলে যাব
আয়ানঃ বাইরে যেরকম বৃষ্টি হচ্ছে,মনে হয় না কোন রিকশা পাবে সো প্লিজ…
ছোঁয়াঃ কিন্তু…
আয়ানঃ চিন্তা কর না,অন্য কারো বউয়ের প্রতি আমার কোন ইন্টারেস্ট নেই…
চলবে…