1. নতুন গল্পঃ3. রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প গুলোঃChildhood marriageলেখাঃ সানজিদা সেতু

Childhood marriage !! লেখাঃ সানজিদা সেতু

Childhood marriage

ছোঁয়া : কাকিয়া আমি গেলাম…
কাকিয়া : গেলাম মানে!রাতে না বললি তোদের আজকে অফডে,তাহলে এই সাত সকালে কই যাচ্ছিস?
ছোঁয়া : কোথায় আবার ভার্সিটিতেই যাচ্ছি।আরে বাবা কাল আমাদের Excursion(study tour)না?তুমিতো জানোনা এত্ত এত্ত কাজ পড়ে আছে।সবার চেস্ট কার্ড,টি শার্ট,ক্যাপ সব আমাকে ডিস্ট্রিবিউশন করতে হবে আর সবাই নিজ নিজ দ্বায়িত্ব ঠিকমত পালন করল কিনা সেটাওতো দেখা লাগবে তাইনা?
কাকিয়া : হয়েছে হয়েছে আর এত এক্সকিউজ দেখাতে হবে না,কোথায় যাবি যা…
ছোঁয়া : এইতো আমার লক্ষ্মী কাকিয়া😘
(কাকিয়ার গালে একটা পাপ্পি দিয়ে দিল)
কাকিয়া : আহ্ ছোঁয়া কি যে পাগলামি করিস না..এখন চুপচাপ টেবিলে গিয়ে বসতো আমি এক্ষুণি নাস্তা দিচ্ছি…
ছোঁয়া : না না না হাতে একদমই সময় নেই আমি গেলাম টা টা
কাকিয়া : তাই বলে না খেয়েই😟
(ছোঁয়া টেবিল থেকে একটা আপেল তুলে নিয়ে ওটাতে একটা কামড় বসিয়ে দিল)
ছোঁয়া : কি এবার হলতো?আরতো খালি পেটে যাচ্ছি না এবারতো একটু হাসো😉
কাকিয়া : ☺☺
ছোঁয়া : হায় মে মারযাবা,এই রকম কিলার হাসি দিয়েইতো আমার কাকাইটাকে ঘায়েল করছো।তাইতো বলি আমার অত্ত সুন্দর কাকাইটা কেন এখনও এই বুড়িটার প্রেমে পাগল😎😎

  1.  Childhood marriage !! লেখাঃ সানজিদা সেতু [ Season- 1 ]
  2. Childhood marriage !! লেখাঃ সানজিদা সেতু [ Season- 2 ]
  3. Childhood marriage !! লেখাঃ সানজিদা সেতু [ Season- 3 ]

কাকিয়া : (এই মাইয়া কয় কি😮)ওই তুই যাবি নাকি আমি ঝাঁটা নিয়ে আসবো😡
ছোঁয়া : (এই রে মনে হয় বাড়াবাড়ি করে ফেললাম,আমি বাবা পালাই)টা টা কাকিয়া…
কাকিয়া : ওই পালাচ্ছিস কোথাও এদিকে আয় বলছি😡
ছোঁয়া : আমি কি পাগল যে তোমার কাছে যাব😏
কাকাই : আরে এ আমি কি দেখছি,তুমি হঠাৎ আমার ছোঁয়া মার উপর এত রাগলে কেন?
ছোয়া : দেখ না কাকাই,তোমার রাক্ষসী,রণচণ্ডী,বদমেজাজী বউ আমাকে ঝাঁটা দিয়ে পিটাতে চাইছে😪
কাকাই : কি তোমার এত বড় সাহস..
কাকিয়া : এই তুমি চুপ করবে!এই ছোঁয়া এদিকে আয় বলছি,আমাকে রাক্ষসী বলা!আজ তোর একদিন কি আমার একদিন…
ছোঁয়া : (এই রে মিষ্টি কাকিয়া এবার সত্যি সত্যি রাক্ষসী হয়ে গেছে,নাহ্ এবার পালানো ছাড়া কোন উপায় নেই দেখছি😰)টা টা রাক্ষসী,আর এই যে কাকাই আমার তোমার রাক্ষসী বউটাকে দেখে শুনে রাখবে কিন্তু… (Childhood marriage)
কাকিয়া : তবে রে😬
ছোঁয়া : এক ছুটে বাড়ির বাইরে চলে এলাম,আসার সময় শুনলাম কাকিয়া হুংকার দিয়ে উঠল!তাতে আমার কি আমিতো ঠিক ঠাক বের হতে পেরেছি এতেই শান্তি😁
কাকিয়া : পাগলি একটা😇
কাকাই : এই তুমি হঠাৎ মেয়েটার উপর রাগলে কেন বলতো
কাকিয়া : আরে আমি রাগ করতে যাব কেন?
কাকাই : তাহলে?
কাকিয়া : আমার অনেক লজ্জা লাগছিল তাই…😌
কাকাই : ও হো হো তোমার ঐ লজ্জারাঙা মুখটা দেখেইতো পাগল হয়েছিলাম😊
কাকিয়া : এই সরো তো,বুড়ো হয়ে গেল তবুও ঢং গেল না
কাকাই : কে বুড়ো আমি😮আমিতো এখনও ইয়াংম্যান।এখনতো দেখছি ছোঁয়ার কথাই ঠিক,তোমাকে আসলেই চোখের ডক্টর দেখাতে হবে দেখছি😎
কাকিয়া : হুহ তোমরা বাপ-বেটিতো আছোই আমার পিছে লাগার জন্য।ঠিক আছে তাহলে তোমরাই থাকো এ বাড়িতে আমি আজই আমার বাপের বাড়ি চলে যাব😡
কাকাই : এই আসমা,রেগে যাচ্ছো কেন?আমিতো মজা করছিলাম…
.
ছোঁয়া : যাক বাবা এইবারের মত বাঁচা গেল,কিন্তু একটা জিনিসতো বুঝলাম না কাকিয়া হঠাৎ এমন রেগে গেল কেন?আমি কি রাগার মত কিছু বলেছিলাম?ওহ্ হো এইবার বুঝছি রাগ না আমার স্যুইট কাকিয়াটা লজ্জা পাইছে😂বাব্বাহ বুড়ি হয়ে গেল তাও লজ্জা গেল না,একেবারে লজ্জাবতী লাজুকলতা😎

এই দেখুন কখন থেকে একমনে বকবক করে যাচ্ছি,আপনাদেরকে যে এখনও আমার পরিচয়টা দেয়া হয়নি সেদিকে তো আমার খেয়ালই নেই!আচ্ছা বাবা আর রাগ করতে হবে না,আমি এক্ষুণি আমার পরিচয় দিচ্ছি আর হ্যাঁ দেরিতে পরিচয় দেওয়ার জন্য সরি…
আমি ছোঁয়া,সবে কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি।আগামীকাল আমাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে স্টাডিট্যুরে নিয়ে যাবে,পুরো দশদিনের ট্যুর তাই এক্সাইটমেন্টের সাথে সাথে টেনশনটাও একটু বেশি আর সবচেয়ে বড় কথা ট্যুরটা হচ্ছে কক্সবাজার,রাঙামাটি,বান্দরবান আর সেন্টমার্টিনে।সবগুলোই আমার পছন্দের জায়গা তাই এত এক্সাইটেড😍
আর ঐ যে একটু আগে যাদের কথা শুনলেন,উনারা হলেন আমার কাকাই আর কাকিয়া।কাকাই আমার বাবার বাল্যকালের বন্ধু,আমার বাবা যখন মাররা যান তখন আমি খুব ছোট তাই উনার কথা ঠিকমত মনেও পড়ে না।বাবা মারা যাওয়ার পর কাকাই আর কাকিয়া আমাকে এ বাড়িতে নিয়ে আসেন আর তারপর থেকে আমি এখানেই আছি।আমার মা আর ছোট বোন দিয়া আমাদের বাড়িতেই থাকে,আমি অনেকবার চেয়েছি ওদের কাছে গিয়ে থাকতে কিন্তু ওরা কখনই রাজি হয়নি আর কাকাই-কাকিয়াতো কিছুতেই আমাকে ছাড়বে না তাই মা-বাবার আদর ছাড়াই আমাকে বড় হতে হয়েছে😞
এবার আসি কাকিয়া আর কাকাইয়ের কথায়,উনাদের মত ভাল মানুষ আমি খুব কমই দেখেছি।উনারা ছোট থেকেই আমাকে নিজের সন্তানের মত ভালোবেসেছেন,কোনদিন কোনকিছুর অভাব বুঝতে দেননি।এমন না যে উনারা নিঃসন্তান,উনাদের একটা ছেলে আছে নাম সায়ন,এখন কানাডাতে আছে লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে।গত ১০ বছর ধরেই সে ওখানে আছে,উনার ছোট মামার পরিবার ওখানে সেটেল্ড তাই ওখানেই থাকে,এই ১০ বছরে সে একবারও এ বাড়িতে আসেনি।আমার খুব জানতে ইচ্ছে হয় মানুষ এত কঠোর কিভাবে হতে পারে!উনার কি একটা বারও নিজের মা-বাবার কথা মনে হয়না?
সায়ন আমার থেকে ৫/৬ বছরের বড় হবে কিন্তু কোন এক অজানা কারণে আমাকে কেউই উনাকে ভাইয়া বলে ডাকতে দিত না তাই ছোট হলেও আমি উনার নাম ধরেই ডাকতাম তবে সবসময় উনাকে বড় ভাইয়ের মতই সম্মান করে এসেছি।উনি যখন ক্লাস নাইনে উঠলেন তখনই উনি এখান থেকে চলে যান,তারপর থেকে আর উনার সাথে আমার দেখা হয়নি।এখন উনি দেখতে কেমন হয়েছেন তাও জানিনা…(Childhood marriage)

এই যে দেখেছেন আপরাদের সাথে বক বক করতে করতে ভার্সিটিতে চলে এসেছি,এখন আর না অনেক কাজ বাঁকি আছে ঝটপট করে ফেলতে হবেতো…
(রাত ১১টা)
কাকাই : কই রে মা,তোর হল?তাড়াতাড়ি কর নাহলেতো তোর স্যারেরা তোকে রেখেই রওনা দিয়ে দিবে
ছোঁয়া : এ্যাহ্ বলল আর হয়ে গেল!আমাকে রেখে কেমনে যায় আমিও দেখে নিব হুহ্
কাকাই : আচ্ছা দেখিস,এখনতো চল…
ছোঁয়া : হ্যাঁ তাই চল
কাকিয়া : তোর কি ওখানে গেলেই না?আমার কিন্তু মন সাই দিচ্ছে না😞
ছোঁয়া : আহ্ কাকিয়া এমন করছো মনে হচ্ছে যেন আমি চিরতরে চলে যাচ্ছি!আচ্ছা কাকিয়া,তুমি এমন করলে আমি কি করে যাই বলতো😳
কাকাই : ও তো ঠিকই বলেছে,দেখি এবার একটু মুচকি করে হাসো তো…
মা রে তুই চলতো আমার সাথে,এখানে যতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবি ততক্ষণ তোর কাকিয়া এমন বক বক করতে থাকবে…
কাকিয়া : কিহ্ আমি শুধু বক বক করি😡
কাকাই : এই না না তুমি বকবে কেন বকবে তোমার দুশমন।ছোঁয়া মা চল চল দেরি হয়ে যাবেতো…
(কাকাই ছোঁয়াকে নিয়ে বেরিয়ে গেল)
কাকিয়া : ঠেলা দেখে বেরিয়ে গেলে তো,যাও যাও ফিরেতো তোমাকে এখানেই আসতে হবে তখন ঠিক দেখে নিব😬

লোপা : কি রে তোর আবার কি হল?
ছোঁয়া : মানে?
লোপা : না মানে তুই হঠাৎ এমন চুপসে গেলি যে…
ছোঁয়া : আসলে কাকাই-কাকিয়াকে ছেড়ে কখনও একা একা কোথাও যাইনি তাই…
লোপা : হুম বুঝলাম
ছোঁয়া : কি বুৃঝলি?
লোপা : না মানে ভাবছিলাম ট্যুরটা দিয়ে ভালই হল
ছোঁয়া : কিভাবে?
লোপা : কারণ এই ১০ দিন বাইরে থাকতে একটা জিনিস প্র্যাক্টিস হয়ে যাবে
ছোঁয়া : কেন জিনিস?
লোপা : আরে বাবা দুদিন পরে বিয়ে করবি তখনতো বাবা-মাকে ছেড়ে থাকতেই হবে তাইনা?
ছোঁয়া : তুই না আসলেই একটা…
লোপা : কি?
ছোঁয়া : ফাযিল আর ইচড়ে পাকা আর আর শেয়াল পণ্ডিত আর… (Childhood marriage)
লোপা : থাক,আর কিছু বলতে হবে না
ছোঁয়া : আচ্ছা যা এইবারের মত অল্পতেই ছেড়ে দিলাম
লোপা : তবে যাই বলিস তোর এই চুপচাপ গোমড়া মুখ করে বসে থাকাটা কিন্তু তোর ক্যারেক্টারের সাথে যায় না…
ছোঁয়া : এটা অবশ্য তুই ঠিকই বলেছিস…আমি গোমড়া মুখে থাকলে তোর পেছনে লাগবে কে রে বান্দরনী?😁
(দুজনেই উচ্চস্বরে হেসে উঠল)

(সকাল ১০ টা,শাহজালাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট)
কিছু্ক্ষণ আগেই একটা বিমান ল্যাণ্ড করেছে।এক্সিট ডোর দিয়ে খুব হ্যাণ্ডসাম একটা ছেলে বেরিয়ে আসলো,ওকে দেখেই আরেকটা ছেলে ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরল।ছেলেটার নাম মারুফ আর ও সায়নের ফ্রেণ্ড প্লাস ফুফাতো ভাই…
মারুফ : আরে সায়ন কেমন আছিস তুই?এতদিন পর আমাদের কথা মনে পড়ল তাহলে…
সায়ন : তোদের কথা আবার মনে পড়বে না?তোদেরকে তো আমি অলয়েজ মিস করি
মারুফ : রিয়েলি?
সায়ন : অফকোর্স ইয়ার
মারুফ : আচ্ছা শোন,আজকে কিন্তু তোকে বাড়ি যেতে দিচ্ছি না,আজকে আমাদের এখানে থাকবি কয়েকদিন তারপর বাড়িতে যাওয়ার চিন্তা।
সায়ন : বাড়ি,কে যাবে বাড়িতে?কোন বাড়ি টাড়ি হবে না
মারুফ : মানে?তুই বাড়ি যাবি না?
সায়ন : যাব তবে এখন না,আগে কয়েকদিন তোদের সবার সাথে ঘুরব তারপর ওসব ভাবা যাবে
মারুফ : মানে কি সায়ন,মামা-মামী কিছু বলবে না?
সায়ন : কেউ কিছু জানলেতো বলবে😏
মারুফ : মানে😟
সায়ন : মানেটা খুব পরিষ্কার,সবাই জানে আমি দেশে ফিরব আরো প্রায় সপ্তাহ খানেক পর😁
মারুফ : What 😮
সায়ন : তোর অবাক হওয়ার পালা শেষ হলে চল যাওয়া যাক
মারুফ : ও হ্যাঁ,তাহলে চল আমাদের বাড়ি…
সায়ন : আবে ইয়ার,তোর মাথায় কি গোবর পোরা আছে😡
মারুফ : কেন?

সায়ন : ওই গাধা তোর বাসায় গেলে তো সবাই জেনেই যাবে যে আমি দেশে ফিরে এসেছি
মারুফ : তাইতো…তাহলে এখন কি করবি?
সায়ন : ভাবছি আমার কোন ফ্রেণ্ডের বাসায় উঠব আর কাল সকালেই কক্সবাজার…
মারুফ : কক্সবাজার😮
সায়ন : হুম ভাবছি এবারে দেশের সব পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে ফিরে দেখব তারপর ফিরে গিয়ে ঐ সাদা চামড়ার মানুষগুলোকে দেখাব আমাদের দেশটা কত সুন্দর…
মারুফ : হুম That’s a good idea🙂
সায়ন : এই সায়নের কোন আইডিয়া কখনও ফ্লপ হয়েছে যে এবার হবে?বরাবরের মতই এবারেও সব হিট হবে দেখিস
মারুফ : হিট না সুপার হিট হবে☺
সায়ন : yah then let’s go for it baby😊
To be continued….
#যদিও আমার বেশিরভাগ পাঠকই #love_games-2 লিখতে বলছিল কিন্তু ওই গল্পটা ভাল করে সাজানোর জন্য আমার আরো কিছুদিন সময় লাগবে।তাই আপনাদের আর ওয়েট না করিয়ে এটাই দিয়ে দিলাম।আমার এক্সাম ২ মাস পেছানোর কারণে গল্পটা দেওয়ার দুঃসাহস করে বসলাম।তবে এই সময় ক্লাসটেস্ট আর ল্যাবের ঝামেলার জন্য হয়তো মাঝে মাঝে গল্প দিতে প্রবলেম হতে পারে।তবে যথাসাধ্য চেষ্টা করব নিয়মিত গল্প দেয়ার।কেমন লাগল জানাতে ভুলবেন না…

বিঃ দ্রঃ একটু নিচে ভালো করে লক্ষ করুন পরবর্তী পর্বের লিংক দেয়া আছে

এক পলকে দেখে নিন সহজে গল্প খুঁজে পাওয়ার সুবিধার্থে দেওয়া হল