সে কি জানে

সে কি জানে Season 2 ! Part- 52 (শেষ পর্ব)

রিহানের আজ চার বছর পূর্ণ হলো। অথচ সবাই বাসায় অনুষ্ঠান না করে হাসপাতালে দৌঁড়াদৌঁড়ি করছি। কেননা আজকে দীঘি আর আবদ্ধের জীবনে নতুন সদস্য আসতে চলেছে। আমি, রেয়ান, মামী, নুহান আর তার স্ত্রী পায়েল বসে আছি দেওয়ালের সাথে লাগানো বেঞ্চগুলোতে। আবদ্ধ ওটির দরজার একটু পাশে ফ্লোরে বসে আছে। দীঘিকে যখন থেকে ওটিতে নেওয়া হয়েছে আবদ্ধ ঠিক তখন থেকেই বসে আছে সেখানে। চোখ দিয়ে অবিরাম পানি ঝরছে তার। যা দেখে রিহান রেয়ানের কোল থেকে নেমে গেল। ধীর পায়ে এগিয়ে গেল আবদ্ধের দিকে। অংসে(কাঁধে) হাত রেখে আমতা আমতা করে বলে উঠল,
— “মামু! তুমি কাঁদছো কেন? মামনি ঠিক হয়ে যাবে দেখো। আমি ঠিক করে দিবো মামনিকে।”
ব্যস! এতটুকু কথা যথেষ্ট ছিল আবদ্ধর জন্য। সে তড়িৎ গতিতে ঝাপটে ধরল রিহানকে। কেঁদে উঠল শব্দ করে। রিহান যেন একটা বুঝদার নবীন বালক হয়ে উঠল মুহুর্তেই। নিজের ছোট্ট হাতটা আবদ্ধের পিঠে বুলাতে লাগলো ধীর গতিতে। নিজের ছেলের এহেন কান্ডে মুগ্ধ প্রায় আমি। এতটুকু ছেলে আমার, অথচ তার ভাবখানা কেমন! যেন সব বুঝে সে। সব কিছু সামলে নেওয়ার অসীম ক্ষমতা আছে তার।
আমার পাশে বসে থাকা রেয়ানও মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছেন নিজের ছেলের দিকে। হঠাৎ কানে ফিসফিসিয়ে বলে উঠলেন,
— “দেখেছো, আমার ছেলে আমার মতোই হয়েছে।”
আমি ভেঙ্গচি কেটে বললাম,
— “কঁচু!”
— “কঁচু আমি না তুমি। আফটার অল যাই করি না কেন তোমাদের ভাই-বোনের মতো এত কান্না করি না।”
কথাটা নুহানের কানে পৌঁছাতেই সে হেসে উঠল শব্দ করে। যেন হাসা ছাড়া আর কূল কিনারা নেই তার। নুহানের সাথে আমিও মুচকি মুচকি হাসছি। রেয়ান বিরক্তি নিয়ে প্রথমে আমার দিকে তাকিয়ে নুহানের দিকে তাকালেন আবার। নুহানের চোখে রেয়ানের তীক্ষ্ম দৃষ্টি ধরা পরতেই সে হাসি থামালো কোনোরকম। তবে পুরোপুরি থামাতে পারলো না সে। মুচকি-মুচকি হেসে বলে উঠল,
— “ভাইয়া, কান্নার ব্যাপারে তুমি কিছু বইল না প্লিজ! আবদ্ধ ভাইয়া তো তাও কম কাঁদছে। ভাবীর সময় তো তুমি___‌‌‌‌‌‌‌!”
কথাটা শেষ করতে পারলো না নুহান। হাসি যেন আর বাঁধা মানছে না নুহানের। সে হেসে চলছে তার আপন গতিতে। রেয়ান এবার আর বিরক্তি প্রকাশ করলেন না। চুপ হয়ে গেলেন মুহুর্তেই৷ কেননা এ বিষয়ে তার বলার মতো কিছুই নেই। এদিকে পায়েল নিজের কৌতূহল দমাতে না পেরে নুহানের হাসি কোনোমতে থামিয়ে বলে উঠে,
— “কি করেছিল ভাইয়া? আমাকেও বলো না প্লিজ।”
আবারও হাসলো নুহান। রেয়ানের দিকে তাকিয়ে বলল,
— “বলব ভাইয়া?”
রেয়ান মুখ দিয়ে একটা শব্দও উচ্চারণ করলেন না। তবে চোখ দিয়ে ইশারা করে নুহানকে বলে উঠলেন- “তুই যদি এখন কিছু বলিস, একেবারে আলু ভর্তা বানিয়ে ফেলবো তোকে।” রেয়ানের ইশারা উপেক্ষা করল নুহান। নিজের মতো করে বলে উঠল,
— “যখন ভাবিকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলাম ভাইয়ার তো তখন নাজেহাল অবস্থা। খালি আম্মুকে ধরে কান্না করছিল ভাইয়া। ভাবির ডেলেফারি ভাইয়ার করার কথা হলেও সে মুহুর্তে ডেলেফারি করার কোনো মন-মানোসিকতা ছিল না ভাইয়ার। কেঁদে কূল পাচ্ছিল না সে। একবার আব্বুকে ধরে কান্না করছিল তো একবার আম্মুকে ধরে। পড়ে যখন ওটিতে ভাবিকে নেওয়া হয় ভাইয়া ভাবিকে ছাড়ছিলই না। জড়িয়ে ধরে ওটিতে কান্না করছিল। বাধ্য হয়ে ডাক্তাররা ভাইয়াকে ওটির বাইরে পাঠিয়ে দেয়। এতে যেন রেয়ান ভাইয়া আরও অশান্তি শুরু করে দেয়। ওটির দরজা থাক্কাতে থাক্কাতে প্রায় ভেঙ্গেই ফেলেছিল সে। পরে একজন নার্স এসে পুরো শহরের বিখ্যাত হাসপাতালের একজন সিনিয়র ডাক্তার মানে রেয়ান ভাইকে ধমক দিয়ে বলে উঠে,
— ” সমস্যা কি আপনার? এমন পাগলের মতো করছেন কেন? আপনি জানেন না আপনার স্ত্রীর অবস্থা ভালো না। তবুও এমন অস্বাভাবিক আচরণ করার মানে কি?”
রেয়ান ভাইয়া আরও দ্বিগুণ চিল্লিয়ে তখন জবাব দেয়,
— “আমার বউয়ের অবস্থা ভালো না এটা আপনাকে কে বলেছে? এত বেশি কথা বলার অভ্যাস কেন আপনার? আপনি জানেন আমি কে? এত সাহস কিভাবে হয় একজন ডাক্তারকে ধমক দেওয়া? চুপচাপ ওটির দরজা খুলে আমাকে আমার বউয়ের কাছে যেতে দিন। আই সোয়ের, এমন না করলে আপনার মাথার একটা চুলও বাকি রাখবো না আমি।”
নার্স অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল রেয়ান ভাইয়ের দিকে। নার্সের এমন অবাক হওয়া সহ্য হয় নি ভাইয়ার। আবারও চিল্লিয়ে বলে উঠে ভাইয়া,
— “কি হলো? কথা কানে যাই নি? আপনি বয়না নাকি? ওটির দরজা খুলুন তাড়াতাড়ি।”
পরিস্থিতি সময়ের বেগে আরও কঠিন হতে দেখে আমি, আম্মু আর আব্বু ভাইয়াকে সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু ভাইয়া তো ভাইয়াই৷ সে তার বউয়ের কাছে যাবেই যাবে। বাধ্য হয়ে পড়ে ডাক্তাররা তাকে ঢোকার অনুমতি দেয়। তবে ভাইয়াকে ওটিতে ঢুকতে দেওয়ার প্রধান শর্ত ছিল ভাইয়া সেখানে যেয়ে কাঁদতে পারবে না৷ ভাইয়াও রাজী হয়। এক মুহুর্তের জন্য পাগলানি ছেড়ে নিজের ডাক্তারি পোশাক পড়ে একদম ডাক্তার সাহেব হয়ে ওটিতে ঢুকে ভাইয়া।”
থামলো নুহান। এখনও মুখে হাসি লেগে আছে তার। পায়েল আগের চেয়ে আরও কৌতূহল নিয়ে বলে উঠল,
— “তারপর?”
— “তারপর আর কি? ভাইয়ার হাতে তার সন্তান রিহান এ পৃথিবীতে আসে। কেননা ভাইয়ার পাগলামোর জন্য ডাক্তাররা তখনও ভাবির ডেলেফারি করতে পারে নি। ভাইয়া ওটিতে যাওয়ার পরপর সেটা করা হয় এবং তা ভাইয়াই করেন। আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার কি জানো?”
পায়েল দ্রুত কণ্ঠে বলে উঠল,
— “কি?”
এ পর্যায়ে রেয়ান উঠে দাঁড়ালেন। কিছু না বলে অতি বিরক্তি নিয়ে আমার হাত টেনে আবদ্ধের কাছাকাছি এসে দাঁড়ালেন। আবদ্ধ তখনও রিহানকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। সে দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি আমি। আর রেয়ান তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। নুহান আমাদের দিকে তাকিয়ে একবার হাসলো। পায়েলের দিকে তাকাতেই সে আবারও বলে উঠল,
— “বলো না মজা ব্যাপারটা কি? আমার আর তর সইছে না।”
নুহান আরেকদফা হেসে পায়েলকে এক হাতে জড়িয়ে ধরে বলে উঠল,
— “রিহান হওয়ার পর মহিলা ডাক্তাররা যখন আমাদের কাছে তাকে নিয়ে এসেছিল, রেয়ান ভাইয়া তখনও ভাবির কাছে বসে ছিল। জানো ডাক্তাররা রিহানকে আম্মুর কাছে দিয়ে কি বলেছিল?”
— “বললেই না জানবো। বনিতা না করে তাড়াতাড়ি বলো।”
নিজের স্ত্রীর এত কৌতূহল দেখে বিস্ময়ে নুহানের হাসি আরও প্রসস্ত হলো। পরক্ষনেই বলে উঠল সে,
— “ভাবি নাকি অনেক ভাগ্যবান। ভাইয়া অনেক ভালোবাসে তাকে। ভাবির ডেলেফারি করার সময় ভাইয়া নাকি কাঁদছিল। বারবার চোখের পানি মুছয়ে মুছতে ডেলেফারি করেছিল সে। তারওপর ভাইয়া মাত্র কিছু সেকেন্ডের জন্য রিহানকে কোলে নিয়েছিল। তার জেদ ছিল ভাবি আর সে একসাথে তাদের বাবুকে কোলে নিবে। ভাবির জ্ঞান ফেরার আগ পর্যন্ত ভাইয়া ভাবির হাত ধরে ছিল। ভাবির যখন জ্ঞান ফিরেছিল এতসময় পর তখনই ভাইয়ার মুখে হাসি দেখতে পেয়েছিলাম সবাই। ভাইয়া তো আশেপাশের সবাইকে উপেক্ষা করে ভাবির সারা মুখে চুমু খাচ্ছিলো যা দেখে ভাবি লজ্জায় শেষ হয়ে যাচ্ছিল আর আব্বু ভাইয়াকে ধমকে বলে উঠেছিল,
— ” নির্লজ্জ ছেলে। নিজের বাবা-মা যে সামনে আছে খেয়াল আছে তোমার?”
কথাটা বলতেই পায়েলও হেসে দিল এবার। পরপরই আমার আর রেয়ানের দিকে তাকালো সে। সেই মুহুর্তে রেয়ান আমার চুল ঠিক করে দিচ্ছিলেন আর আমি রেয়ানের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। চোখের সামনে এমন দৃশ্য ভেসে উঠতেই পায়েলের মুখ থেকে আপনা-আপনিই বেরিয়ে আসে- “ভালোবাসাময় দু’টি প্রাণ।”
এদিকে রেয়ান চুল ঠিক করছেন আর ফিসফিসিয়ে বলছেন,
— “উফফ! তোমার ভাই এত্ত কাঁদতে পারে। কান শেষ হয়ে গেল আমার।”
— “আপনি আরও বেশি কেঁদেছেন রেয়ান।”
আমার কথায় ক্ষাণিকটা চুপসে গেলেন উনি। প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে বলে উঠলন,
— “আমরা কালবাদে পরশু রাঙামাটি যাচ্ছি।”
— “কি উপলক্ষ্যে?”

— “ভুলে গেলে? আজকে রিহানের জন্মদিন। আর সেই উপলক্ষ্যে আমরা রাঙামাটি যাবো।”
— ” রাঙামাটিই কেন? অন্য কোথাও তো যেতে পারি।”
— “হুম যেতে পারি। তবে রাঙামাটিতেই আমি তোমাকে প্রথম বিয়ের কথা বলেছিলাম। সুতরাং সেখানেই যাবো।”
বলতে বলতেই আমার কপালে আলতো স্পর্শ এঁকে দিলেন। সাথে সাথে আমি এক কদম পিছিয়ে বললাম,
— “রেয়ান মা আছেন এখানে।”
রেয়ান শান্ত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে মামীর দিকে তাকালেন এবার। মামী আবদ্ধকে শান্ত করায় ব্যস্ত ছিলেন। রিহান তার পাশেই দাঁড়িয়ে। রেয়ান বিনাবাক্য ব্যয়ে রিহানকে কোলে তুলে নিলেন। রিহান যেন তার বাবাইকে পেয়ে খুশি হলো প্রচুর। রেয়ানের অংসে(কাঁধে) মাথা এলিয়ে দিলো সে।
এসময় একজন মহিলা ডাক্তার বের হলেন ওটি থেকে। সাথে সাথে দাঁড়িয়ে গেল আবদ্ধ৷ ব্যগ্র হয়ে বলে উঠল,
— “আমার স্ত্রী আর বেবি! ঠিক আছে ওরা? আমার স্ত্রীর কিছু হয় নি তো?”
ডাক্তার মুচকি হেসে বললেন,
— “মিষ্টি আনুন মিস্টার! আপনার মেয়ে হয়েছে।”
— “আর আমার স্ত্রী?”
— “চিন্তার কোনো কারন নেই। আপনার স্ত্রী আর সন্তান দু’জনেই ভালো আছেন। একটু পর কেবিনে সিফট করা হবে ওদের। তখন দেখা করতে পারবেন ওদের সাথে।”
কান্নার বদলে এবার মুখে হাসি ফুটে উঠল আবদ্ধর। এদিকে মেয়ে হয়েছে শুনে রিহান লাফিয়ে উঠল প্রবল উচ্ছাসে। রেয়ানের কোল থেকে নেমে আবদ্ধর কাছে গিয়ে বলল,
— “মামু আমি আমার বউয়ের সাথে দেখা করব কখন? আমাকে তার কাছে নিয়ে যাও।”
আবদ্ধ অবাক হয়ে বলে উঠল,
— “বউ মানে? কে তোর বউ?”
রিহান মুখ ফুলিয়ে বলে উঠল,
— “আর কে! তোমার মেয়ে তো আমার বউই হবে। বড় হলে আমি ওকে বিয়ে করব তো।”
উপস্থিত সবাই এহেন কথা শুনে দু’তিন সেকেন্ড স্তব্ধ হয়ে রইল। পরক্ষনেই সবাই হেসে উঠল একসাথে।
________________________
দীঘির জ্ঞান ফিরতেই মাথাটা প্রথমে চিনচিন করে উঠল তার। কিচ্ছুক্ষন চোখ খোলার প্রয়াস করে ঝাপসা চোখে তাকাতেই আবদ্ধকে দেখতে পেল সে। আবদ্ধ তাদের মেয়েকে কোলে নিয়ে হাসি-মুখে তাকিয়ে আছে তার দিকে। যা দেখে হাসলো দীঘিও। সাথে সাথে আবদ্ধ দীঘির দিকে একটু ঝুঁকে তার কপালে চুমু এঁকে দিলো। কণ্ঠে আনন্দ আর উচ্ছাস নিয়ে বলে উঠল,
— “প্রচুর ভালোবাসা মেয়ে বাবুর আম্মু।”
দীঘিও হেসে বলে উঠল,
— “আপনাকেও প্রচুর ভালোবাসা মেয়ে বাবুর আব্বু।”
আবদ্ধ আরেকদফা হেসে বলল,
— “জানিস দীঘি রিহান আমাদের মেয়ে হওয়ার কথা শুনে কি বলেছে?”
— “কি?”
— “আমাদের মেয়ে নাকি ওর বউ লাগে। ও বড় হয়ে বিয়ে করবে আমাদের প্রিন্সেসকে।”
দীঘি নাক কুঁচকে হাসলো এবার। বলল,
— “সবাই এখন কোথায়?”
বলতে না বলতেই সবাই এসে হাজির হয়ে গেলাম কেবিনে। রিহান তো লাফিয়ে লাফিয়ে আবদ্ধের কাছে গিয়ে প্রথমেই নিজের বউয়ের কপালে চুমু খেয়ে নিলো। এবারও সবাই একসাথে হেসে উঠলাম। কথায় কথায় মামী এবার বলে উঠলেন,
— “আমাদের মেয়ে! আমাদের মেয়ে! কতক্ষন পর্যন্ত বলবি? একটা সুন্দর দেখে নাম রাখ আমার দাদু ভাইয়ের।”
রিহান দ্রুত বলে উঠল,
— “আমার বউয়ের নাম আমি রাখবো।”
রেয়ান ভ্রুঁ কুঁচকে বললেন,
— “কি রাখবি তুই?”
— “রিহানের কায়া।”
খুশির আমেজে আরও একবার হাসির রোল গড়ে উঠল। সবার অগোচরে রেয়ান এবার ফিসফিসিয়ে আমার কানে বলে উঠলেন,
— “তো মিসেস মরুভূমি। আমাদের পাকনার জন্য তো এখন একটা পাকনি দরকার। কি বলো তুমি?”
আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললাম। রেয়ান বাঁকা হাসলেন। মৃদু কণ্ঠে বলে উঠলেন,
— “কপালে তার বিন্দু বিন্দু ঘাম,
কপোল(গাল)জোড়া মিষ্টি লাল।
ওগো কমলবতী(পদ্মবতী),
ভালোবাসি।”

___________________
কবরস্থানের বড্ড চেনা কবরের সামনে দাঁড়িয়ে আছে জেনি। তার পাশেই দিহান দাঁড়িয়ে আছে৷ এক হাতে আগলে রেখেছে জেনিকে। জেনির চোখে পানি বিদ্যমান। মুখে বেদনা স্পষ্ট। দিহানেরও তাই। তাদের প্রথম সন্তান দিয়ানের কবর এটি। জন্ম নেওয়ার পরপরই সে তাদের ছেড়ে চলে গেছে। তারপর থেকে মনমরা হয়ে পড়েছিল জেনি। দিহানকে ছাড়া যেন সে কিছুই বুঝে না। একদম কিচ্ছুটি না।
দীর্ঘ দু’বছর পর জেনি আবারও মা হতে চলেছে। মনে অদম্য আনন্দ তার। তবে ভয়ও কাজ করছে প্রচুর। যদি আবারও তার সন্তান__! দীর্ঘশ্বাস ফেললো জেনি। দিহান তার কপালে আলতো স্পর্শ দিয়ে বলল,
— “চলো। শ্বশুড়মশাইয়ের বাসায় যেতে হবে আবার।”
হেসে মাথা নাড়ালো জেনি। পরক্ষনেই গম্ভীর হয়ে কবরের দিকে স্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। জীবনের সব অভাব, কষ্ট দূর হয়ে গেছে তার। এক বছর কষ্ট করার পর দিহান আজ ভালো চাকরি করে। তার বাবা-মা দিহানকে মেনে নিয়েছে আরও অনেক আগে। সুখের এক ফোটা কমতি নেই জেনির। তবে এই সুখের মাঝে তার সবচেয়ে অমূল্য সম্পদ, তার প্রাণ প্রিয় সন্তানই তার কাছে নেই। ভাবতেই চোখ ভরে উঠল জলে। দিহান এবার দীর্ঘশ্বাস ফেললো। প্রতিবার এভাবেই কান্না করে জেনি। প্রতিবারের মতো দিহানও এবার বলে উঠল,
— “ভালোবাসি।”

.
____________সমাপ্ত____________
এত দীর্ঘ গল্প কখনোই লিখি নি আমি৷ এবারই প্রথম। গল্পে অনেক ভুল ছিল আমার। সর্বপ্রথম বানানের দিকটা ধরা যায়। শত ভুলের মাঝেও আমার পাশে থাকার জন্যে অবিরাম ভালোবাসা সবাইকে। আশা করি সবাই ভালো আছেন, ভালো থাকবে সবসময়।।
#’মরুভূমি’❤

 

বিঃ দ্রঃ ” লেখাঃ ঈশানির তাসমিয়া মিরা ” লেখকের লেখা অন্য গল্প গুলো পড়তে এখানে ক্লিক করুন………

👉আমাদের ফেসবুক পেজ