সে কি জানে

সে কি জানে Season 2 ! Part- 51

ভাদ্র মাস। তবুও গরমে চারপাশে নাজেহাল অবস্থা৷ সূর্যের কড়া রোদের দারুণ উত্তপ্ততায় অসুস্থ প্রায় আমি। সকাল থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার বমি হয়েছে আমার। এখনও তাই। এসি ফুল স্প্রীড করে কোনোমতে বিছানায় হেলান দিয়ে বসে আছি আমি। ভোর ৪টার দিকে রেয়ানকে ইমার্জেন্সি হাসপাতালে যেতে হয়েছিল। সেখান থেকে ফিরেছেন সকাল ১০টা নাগাত। রুমে এসেই আমার এমন অবস্থা দেখে প্রথমে রেগে যান রেয়ান। রাগী কণ্ঠে বলে উঠেন,
— “সমস্যা কি তোমার? এসি ফুল স্প্রীডে দিয়ে রেখেছো কেন? ঠান্ডা লাগানোর ফন্দী করছো নাকি?”
আমি নিষ্পলক তাকিয়ে রইলাম মাত্র। কিছু বললাম না। উনি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে এসির স্প্রীডটা কমিয়ে দিলেন। সাদা শার্টের বটানো হাতায় কপালের ঘাম মুছে কালো টাইটা খুলতে খুলতে আমার কাছে এসে বসে কপালে আলতো স্পর্শ এঁকে দিলেন। আমার দু’গালে নিজের দু’হাত রেখে শান্ত স্বরে বললেন,
— “বেশি খারাপ লাগছে তোমার?”
মাথা ঝাঁকিয়ে হ্যাঁ জানালাম। উনি আবারও কপালে চুমু খেয়ে বললেন,
— “তুমি একটু বসো। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি, কেমন!”
আমি এবারও কিছু বললাম না। মুখ খুললেই কেমন বমি বমি পায় আমার। এজন্য কথা বলাও যেন দায় হয়ে পড়েছে। শুধু ইশারা দিয়েই উনাকে “হ্যাঁ” “না” এসব বলছি আমি। রেয়ান ১০ মিনিটের মতো সময় নিয়ে আবারও এসে হাজির হোন আমার সামনে। ড্রয়ার থেকে কিসের একটা ঔষধের প্যাকেট বের করে ঔষধ খাইয়ে দেন আমায়। পরক্ষনেই আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়েন উনি। মৃদু স্বরে বলে উঠেন,
— “আমার প্রিন্স কিংবা প্রিন্সেস! তোরা মোটেও তোদের ওয়াদা রাখিস নি। মাম্মামকে কষ্ট দিচ্ছিস। এটা কিন্তু ঠিক না। মাম্মামকে কষ্ট দিতে হয় না। যদি আবার কষ্ট দিস তাহলে বাবাই কিন্তু আদর করব না তোদের। সো, নো কষ্ট দেওয়া দেওয়ি। মনে থাকবে?”
তার এমন বাচ্চামোতে হাসলাম আমি। হেসে বললাম,
— “মনে থাকবে।”

এবার আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালেন রেয়ান। বিরক্তি নিয়ে বললেন,
— “তোমাকে আমি কিছু বলেছি?”
— “বলেছেন তো!”
— “কখন?”
— “আমার বেবিদের বলেছেন মানে আমাকেও বলেছেন।”
— “তাই?”
বলেই আমার পেটে মুখ গুঁজে ফিসফিসিয়ে বলে উঠলেন,
— “ভালোবাসি।”
আবার আমার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে বললেন,
— “এখন এটার প্রতিউত্তর দাও। বাবুদের বলেছি মানে তোমাকেও বলেছি তাই না? তো উত্তর দাও মিসেস মরুভূমি।”
ভ্রু নাচিয়ে কথাটা বলে দম ছাড়লেন রেয়ান। আমি বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে আছি তার দিকে। হঠাৎ কি হলো কে জানে! প্রচন্ড রকমের বিরক্তি আর অস্বস্থি লাগছে আমার। রেয়ান আমার এমন বিরক্তি মাখা চেহারায় তাকিয়ে রইলেন কিছুক্ষন। কি মনে করে উঠে বসলেন আমার কোল থেকে৷ তারপর বেড়িয়ে গেলেন রুম থেকে। আমি ভাবলাম হয়তো রাগ করেছেন আমার উপর। রাগ করাটাই স্বাভাবিক। বিয়ের এতগুলো দিন পার হয়ে গেছে অথচ আমি একবারও মুখ ফুটে তাকে বলিনি- “ভালোবাসি”। আর সে! প্রতিদিন হাজারবার নিজের কাজ কিংবা কথা দ্বারা প্রতিনিয়ত ভালোবাসি বলে বেড়াচ্ছেন আমাকে। নিজের ওপর নিজেরই রাগ হতে শুরু করল আমার। মাথার দু’পাশে হাত রেখে একটু ঝুঁকে বিছানায় বসে রইলাম আমি। ক্ষাণিকবাদ হঠাৎ মাথায় কারও স্পর্শ পেতেই মাথা তুলতে চাইলাম। কিন্তু মাথায় বিরাজমান হাতদুটো বাঁধা দিলো আমায়। ক্ষীণ স্বরে বললেন,
— ” উহুমঃ! নড়াচড়া করো না মরুভূমি। আমাকে আমার কাজ শেষ করতে দাও।”
আমি তাই-ই করলাম। রেয়ানের কাজ শেষে উনি নিজেই সরে এলেন আমার থেকে। মুখে হাসির রেখা ফুটিতে কোলে তুলে নিলেন আমায়। আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে মাথার চুলে গেঁথে থাকা বেলী ফুলের মালার দিকে ইশারা করলেন। আমি অবাক হয়ে তাকালাম মালাটির দিকে। তাহলে এতক্ষন উনি এটা লাগিয়ে দিচ্ছিলন আমার মাথায়। রেয়ানের মতো এবার আমারও মুখে হাসি ফুটে উঠল। উনাকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
— “থ্যাংক ইউ মিস্টার মরুপেঁচা। আপনাকে অনেক গুলো ধন্যবাদ আমাকে এত সুন্দর উপহার দেওয়ার জন্য৷”
— “তোমাকেও ধন্যবাদ মরুভূমি। আমার জীবনের সুন্দরতম মুহুর্ত হওয়ার জন্য।”
প্রতিউত্তরে দু’জনেই হেসে উঠলাম একসাথে। যেন একরাশ সুখ এসে হানা দিয়েছে আমাদের মাঝে।
________________________
আবদ্ধ এখন অনেকটাই সুস্থ। তবে কিছু মেডিসিনের জন্য সারাদিন শুধু ঘুমাতে ইচ্ছে করে তার। এই যে এখন! সকাল প্রায় ১১টা বেজে ৩৩ মিনিট। আবদ্ধ এখনও পরে পরে ঘুমাচ্ছে বিছানায়। পাশেই বসে আছে দীঘি। তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষন করছে আবদ্ধকে। দীঘি জানতো শুধু মেয়েদেরই ঘুমালে অপরুপ লাগে। অথচ তার সামনে ঘুমিয়ে থাকা সুদর্শন পুরুষটাকে কি অপরুপ লাগছে ঘুমন্ত অবস্থায়। দীঘির একটা ইচ্ছে জেগে উঠল মুহুর্তেই। ইচ্ছে দমিয়ে না রাখতে পেরে কাজটা করেই ফেললো সে। আবদ্ধের গালে আলতো স্পর্শ এঁকে দিতেই আবদ্ধ চোখ খুলে তাকালো হঠাৎ। দীঘি যেন লজ্জায় মাটিতে মিশেই যাবে৷ গালদু’টো ইতিমধ্যে লাল হয়ে গেছে তার। তা দেখে আবদ্ধ হাসে। পরক্ষনেই কোলবালিশটা আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ঘুমু ভাব নিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠে,
— “তুই তো দিন দিন নির্লজ্জ হয়ে যাচ্ছিস দীঘু। লজ্জা করল না একটা নিরিহ ঘুমন্ত ছেলেকে চুমু খেতে? এখন আবার লজ্জায় টমেটো হয়ে যাচ্ছিস৷ ব্যাপার কি বলতো?”
ভ্রু কুঁচকে তাকালো আবদ্ধ। দীঘি আর এক মুহুর্তও থাকলো না সেখানে। চলে এলো নিচে। আবদ্ধের সামনে বেশিক্ষন থাকলে নির্ঘাত আবদ্ধ তার মানসম্মান নিয়ে টানাটানি শুরু করতো। যা মোটেও কাম্য নয় দীঘির।
________________________
রাত এগারোটা বেজে গেছে অথচ দিহানের আসার কোনো নামই নেই। এদিকে টেবিলে খাবার গুঁছিয়ে সেই কখন থেকে দিহানের অপেক্ষায় বসে আছে জেনি। দীর্ঘশ্বাস ফেলে টেবিলে রাখা খাবারগুলোর দিকে তাকালো সে। ভাত, আলু ভর্তা আর ডাল রাখা সেখানে। এখন নিজের বাসায় হলে নিশ্চয়ই এসব খেতে হতো না তার। কোনো কিছুর অভাবই হতো না। কিন্তু এত কিছুর মাঝেও কিছু জিনিসের অভাব থাকতো ঠিকই। তা হলো ভালোবাসা, স্নেহ, সুখ আর যত্ন। যা এই ছোট্ট তিনরুমের বাসার কোণায় কোণায় রয়েছে। সারাজীবন তো রাণীর মতো বসবাস করেছে সে। এখন যদি এই ছোট্ট ঘরে অভাবের সাথে থাকতে হয় তাহলে ক্ষতি কি? অভাবের বিনিময়ে অবিরাম ভালোবাসা তো পাবে সে। পাবে সঠিক কিছু করার নির্দেশ আর ভুল কিছু করার বিনিময়ে কঠিন শাষণ। হঠাৎ বাসার কলিং বেল বেজে ওঠে। জেনি তড়িৎ গতিতে উঠে দরজা খুলে দিলো। দিহান ক্লান্ত মুখে দাঁড়িয়ে আছে। হাতে কিছু কাঁচা বাজার। জেনিকে দেখেই মলিন হাসলো সে। জেনির কেন যেন চোখ ভরে এলো জলে৷ দিহানকে জড়িয়ে ধরল সে। কাঁদো কণ্ঠে বলল,
— “এত দেড়ি হলো কেন তোমার? আমি সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছিলাম তোমার। দেড়ি করে আসবে এটা ফোন করে বলে দিতে আমায়।”
— “ফোনে চার্জ ছিল না। তাছাড়া প্রথমে বাজার করে একটা কাজে যেতে হয়েছিল আমার। তাই দেড়ি হয়ে গেছে। সরি।”
— “হুম।”
— “এখন সরো। আমার শরীরে ঘাম তো। ফ্রেশ হয়ে নি।”
সরে এলো জেনি। দিহান বাজারগুলো রান্নাঘরে রেখে চলে গেল ফ্রেশ হতে। আর জেনি! টেবিলে থাকা ডাল আর ভাত আরও একবার গরম করতে দিয়ে বাজার গুলো ঠিক করে রাখতে লাগলো। কাজ শেষে দিহানকে ডাকতে এলো রুমে। দিহান তখন চুল মুছছিল। জেনিকে আসতে দেখে বলল,
— “চুলগুলো মুছে দাও তো একটু।”
দিহান তোয়ালে হাতে ধরিয়ে দিলো জেনির। বিছানায় বসে আবারও বলল চুল মুছে দেওয়ার কথা। জেনি ধীর পায়ে এগিয়ে গেল দিহানের দিকে। আলতো হাতে মুছে দিতে লাগলো দিহানের ভেঁজা চুল। এসময় দিহান গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠল,
— “আমি ভাবি নি তুমি আমার সাথে এত সহজে চলে আসবে। আমার মতো মধ্যবিত্ত ছেলের সাথে থাকতে তোমার সমস্যা হবে না?”
— “মোটেও না। বরং ওখান থেকে আমি এখানে আরও বেশি সুখে আছি। কেননা ওখানে কেউ ছিল না আমাকে ভালোবাসার, কেউ দিন শেষে আমার ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করতো না। সঠিক সিধান্ত দেওয়ার ছিল না কেউ। সবাই শুধু ব্যস্ততাই দেখাতো আমাকে। সেদিকে এখানে এসব কিছু অফুরন্ত ভাবে আছে। আর কি লাগে আমার?”
— “অভাবে দিন কাটবে তোমার। মাঝে মাঝে হয়তো দু’বেলা খাওয়াতেও পারবো না তোমাকে।”
— “লাগবে না খাওয়ানো। না খাওয়ার অভ্যাস আছে আমার। শুধু তুমি পাশে থাকলেই চলবে।”
হাসলো দিহান। জেনি আবারও বলল,
— “খাবে না? আসো। টেবিলে খাবার বেড়ে রেখেছি আমি।”
দিহান উঠে দাঁড়ালো। হেসে বলল,
— “যহা আজ্ঞা মহারাণী।”

________________________
দেখতে দেখতে নয় মাস পূর্ণ হয়ে গেল আমার। রাত গভীর তখন। বিছানার এপাশ ওপাশ করছি আমি। কিছুতেই ঘুম আসছে না আমার। ক্ষুধা লেগেছে প্রচুর। পাশ ফিরে রেয়ানের দিকে তাকালাম একবার। মুখ কেমন শুকিয়ে গেছে তার। চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে। সব আমার জন্য। অনেক জ্বালাই তাকে আমি। মাঝরাতে খাবারের আবদার করি। উনি ইউটুব দেখে-দেখে আমার আবদার করা খাবার তৈরি করে দেন আমায়। মাঝে মাঝে হুটহাট রেগে যাই। উনি খুব শান্ত ভাবে আমার সব আবদার, জেদ পূরণ করেন। বিরক্তি প্রকাশ করেন না মোটেও। তবে রেয়ানের এত নিশ্চিন্তের ঘুম ভাঙ্গতে ইচ্ছে করছে না এখন মোটেও। তাই ধীর পায়ে চলে এলাম বারান্দায়। সোফায় বসে রাতের আকাশটা দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম মুহুর্তেই। হঠাৎ রেয়ান এসে হাজির। ঢুলু ঢুলু পায়ে আমার পাশে এসে বসে আমার কাঁধে মাথা রেখে আবারও চোখ বন্ধ করে ফেলেন উনি। তার এহেন কান্ডে আমি হাসলাম। আস্তে আস্তে এক হাত দিয়ে তার চুল টেনে দিতে লাগলাম। ক্ষাণিকবাদ রেয়ান বলে উঠলেন,
— “ক্ষুধা লেগেছে তোমার মরুভূমি?”
— “হু!”
— “কি খাবে?”
— “চকলেট কেক।”
চোখ বন্ধ করেই হাসলেন রেয়ান। বসা থেকে উঠে বললেন,
— “তুমি বসো। আমি বানিয়ে আনছি।”
— “আমিও আসি?”
— ” না। ”
উত্তরের অপেক্ষা না করেই চলে যান রেয়ান। আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম মাত্র। উনি কখনই নিজের সাথে নিয়ে যান না আমায়। তার ধারণা, রাতে সব জায়গার তো লাইট জ্বালানো সম্ভব না। রাতের আধারে বেখেয়ালীভাবে যদি আমি কোনো আঘাত পাই? তখন? তার এসব যুক্তিতে শুধু চুপ করে থাকি আমি। তবে আজ খুব নিচে যেতে ইচ্ছে করছে আমার। ইচ্ছে দমিয়ে না রেখে মনে সাহস যোগালাম আমি। ধীরে ধীরে এগোতে লাগলাম রেয়ানের কাছে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। আর বিপত্তি ঘটলো সেখানেই। বেখেয়ালী ভাবে পা পিছলে পড়ে গেলাম ফ্লোরে। সাথে সাথে মুখ থেকে একটা চিৎকার বেড়িয়ে এলো আমার। মনে প্রথম যে কথাটি আসলো- “আমার বেবির কিছু হবে না তো?”

এদিকে আমার চিৎকার শুনে বাসার সবাই প্রায় জেগে গেছে। রেয়ান হন্তদন্ত হয়ে উপরে আসতেই আমাকে নিচে পড়ে থাকতে দেখেন। বুকটা কেঁপে উঠে তার। পুরো ফ্লোর রক্তে ভীজে গেছে। একটা শুকনো ঢোক গিললেন রেয়ান। তাড়াতাড়ি আমার কাছে এসে পাজাকোলে তুলে নিলেন আমায়। এগিয়ে যেতে লাগলেন বাড়ির বাইরে। আমি নিষ্পলক তাকিয়ে রইলাম তার লাল হয়ে থাকা চোখ গুলোর দিকে। নিজের এক হাত বহু কষ্টে রেয়ানের গালে রাখতেই আমার দিকে তাকালেন উনি। লম্বা একটা নিশ্বাস টেনে আমি বললাম,
— “রেয়ান আমার যদি কিছু হয় আপনি মোটেও আরেকটা বিয়ে করবেন না। আমাদের বেবিকে খুব আদর করবেন। ভালোবাসবেন। আর হ্যাঁ, যদি আমাদের ছেলে হয় তাহলে তার নাম রিহান রাখবেন। আর যদি মেয়ে হয় তাহলে রুহি রাখবেন। ঠিকাছে?”
রেয়ান রেগে গেলেন ক্ষাণিকটা। নিজের মুখ আমার গলার কাছে এনে দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলেন,
— “কিছু হবে না তোমার। কিছুই হতে দেবো না আমি।”
বলতে বলতেই আমাকে নিয়ে গাড়ির পেছনের সীটে বসে পড়লেন উনি। ইতিমধ্যে বাড়ির সবাই চলে এসেছেন গাড়ির কাছে। রাহুল আহমেদ আর নীলা রাহমান অন্য একটা গাড়িতে আসছেন আর নুহান আমাদের গাড়ির ড্রাইভিং সীটে বসে তাড়াতাড়ি গাড়ি স্টার্ট দেয়৷ কিছু পথ যেতে না যেতেই রেয়ান হঠাৎ নুহানকে চিল্লিয়ে বলে ওঠেন,
— “কি সমস্যা তোর? গাড়ি জোড়ে চালানো যায় না? জোড়ে চালাচ্ছিস না কেন?”
রেয়ান তীব্র থেকে তীব্র ভাবে রেগে যাচ্ছেন। তবে দু’হাত দিয়ে আগলে ধরেছেন আমাকে। রেয়ানের গালে আবারও হাত রাখলাম আমি। ক্ষীণ স্বরে বলে উঠলাম,
— “ভালোবাসি প্রিয়।”
রেয়ান আমার দিকেই তাকিয়ে ছিলেন। আমার এহেন কথায় চমকে উঠলেন উনি। তার চোখ দু’টো আগের চেয়ে আরেকটু লাল হয়ে উঠল। ঝাপসা চোখে দেখতে পেলাম রেয়ানের গাল বেয়ে অবিরাম পানির ধারা দৃশ্যমান হয়ে উঠছে!
.
.
চলবে…