সে কি জানে

সে কি জানে Season 2 ! Part- 16

ব্লেক জিন্সের সাথে রেড শার্ট। ব্লেক টাইয়ের নাট-টা অনেকটা ঢিলে করা।পাশাপাশি শার্টের প্রথম বোতামটা খোলা।ব্রাউনি রঙের চুলগুলো এলোমেলো হয়ে পরে আছে কপালে। মুখে আছে সেই চিরচেনা বাঁকা হাসি! বাম হাতে কালো ঘড়ি আর একগুচ্ছ লাল টকটকে তাজা গোলাপ! সব মিলিয়ে অসাধারন লাগছে রেয়ানকে। কেন যেন চোখ সরাতে ইচ্ছে করছে না। বড় বড় চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছি তার দিকে। সে হাসছে! মুখ ভরে হাসছে। আমার দিকে কিছুটা ঝুঁকে রেয়ান বলে উঠেন….
— আমাকে বেশি সুন্দর লাগছে বুঝি? এভাবে হা করে না তাকিয়ে থেকে ফুলগুলো নাও। আমি তো আছি মিস মরুভূমি!পরেও প্রাণ ভরে দেখতে পারবে।
রেয়ানের কথায় কিঞ্চিত লজ্জা পেলাম আমি। সাথে সাথে মুখ ফিড়িয়ে নিলাম। সে আবারও হাসলো। প্রথমে আমার হাতে গোলাপগুলো গুঁজে দিয়ে পাশে থাকা চেয়ার থেকে একটা পেকেট নিয়ে ধরিয়ে দিলেন আমায়। দরজার দিকে যেতে যেতে বলে উঠলেন….
— আমি নিচে যাচ্ছি আন্টির কাছে। তুমি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে পড়ো। ভার্সিটি যেতে হবে আবার। আর হ্যাঁ! খবরদার পেকেটের জামাগুলোর বদলে অন্য জামা পড়ে বের হলে। শাস্তি আছে কিন্তু তোমার!
বলতে বলতেই বের হয়ে গেলেন উনি। আমি এখনও নির্বাক। আচ্ছা মামীর রেয়ানের সাথে এত ভাব কেন? যখন তখন আমার রুমে আসলেও কিছু বললেন না রেয়ানকে? আমাকে সুস্থ করেছেন বলে? নাকি অন্য কিছু?
পেকেট-টা খুলে দেখলাম সেখানে একটা সিল্কের লাল শাড়ি! লালের ভেতর সবুজ কাজ একেবারে ফুটে উঠেছে।বেশ সুন্দর শাড়িটা। সাথে লাল কাঁচের চুড়িও আছে। পেকেট-টা আরেকটু ঘাটাঘাটি করতেই সেখানে একটা চিরকুট পেলাম। যেখানে লিখা….
“প্রেয়সী আমার! শাড়িটা পড়বে কিন্তু। চুলগুলো খোলা রাখবে। হাতে চুড়ি গুলো পড়বে।কপালে টিপ দিবে না একদম! টিপ আমার মোটেও ভালো লাগে না। আর হ্যাঁ! বেশি সাজবে না। নাহলে বুঝোই তো তোমার পেত্নি মার্কা চেহারা দেখে আমি তো অজ্ঞান হবোই সাথে বাইরে যারা যারা তোমাকে দেখবে তাদেরও হসপিটালে যেতে হবে। আমার পেত্নি মরুভূমিটা!”
চিরকুট-টা পড়ে আমি হাসবো নাকি রাগ করব বুঝতে পারছি না। তবে এ মুহুর্তে রেডি হওয়া প্রয়োজন। ভার্সিটির দেড়ি হয়ে যাচ্ছে। ফ্রেস হয়ে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিলাম।নিচে যেয়ে দেখলাম মামী রেয়ানকে আচ্ছা মতো খাতিরদারি করছেন। কিন্তু আবদ্ধ আর দীঘি নেই ওদের সাথে।হয়তো দীঘিকে নিয়ে স্কুলে গেছে আবদ্ধ! আমাকে দেখতেই মামী মুখে হাসি ফুটিয়ে বলে উঠলেন….
— মাশাল্লাহ! তোদের দু’জনকে তো বেশ মানিয়েছে লাল রঙে।
রেয়ান হাসলেন৷ তবে আমি হাসলাম না। আচ্ছা! মামী কি রেয়ানের উপর বেশিই সেন্সিটিভ না? হয়তো! কোনো মতে নাস্তা খেয়ে দু’জনেই বের হয়ে গেলাম বাড়ি থেকে।এরমধ্যে মামী অনেক কথা বলেছেন।কিন্তু আমি সেগুলোর “হু-হা” ছাড়া কোনো জবাব দি নি। রেয়ানেই যা বলার বলেছেন। খুব অল্প সময়ে মামীর সাথে অনেক ভাব জমেছে রেয়ানের। তবে আমার সাথে একটুও না। ভাবতেই রেয়ানের দিকে একবার তাকালাম আমি। সে আমাকেই দেখছে। মুচকি হেসে আমার হাত ধরে বলে উঠেন…
— আজকে গাড়ি আনি নি মরুভূমি! দু’জনে মিলে রিকশায় ঘুড়বো আজকে।প্রথমে তোমার ভার্সিটি যাবো।এরপর বাকিবাদ ঘুড়াঘুড়ি আর খাওয়া-দাওয়া।
বলতে বলতেই একটা রিকশা দার করান উনি। ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও রিকশায় উঠলাম আমি। কিন্তু বিপত্তি ঘটলো শাড়ি নিয়ে। কোনোমতে বসতে পারছি না। মনে হচ্ছে, এই বুঝি পরে যাবো। রেয়ান হয়তো বুঝতে পেরেছেন। এক হাত দিয়ে আমাকে উপেক্ষা করে পাশের কাঠটা ধরে রইলেন। আর অন্য হাত দিয়ে আমার ডান হাতটা শক্ত করে ধরে শান্ত সরে বলে উঠলেন….
— ভয় পেয়ো না মরুভূমি! আমি আছি।
তার দিকে অবাক নয়নে তাকালাম আমি।কথাটা অনেকটা ভরসার ছিল আমার জন্য।কেন যেন মনে হচ্ছে, চোখ বন্ধ করেও এ মানুষটাকে বিশ্বাস করতে পারবো। যেন আমার মনের এক টুকরো বিশ্বাস উনি।
.
ভার্সিটিতে এসেই আমরা আগে প্রিন্সিপালের রুমে ঢুকলাম। আমি আগে আগে হাঁটছি আর রেয়ান পিছনে পিছনে। প্রিন্সিপালের রুমে ঢুকতেই সালাম দিলাম তাকে। প্রতিউত্তর উনিও দিলেন। মুচকি হেসে রেয়ানকে উদ্দেশ্য করে বললেন….
— তোমার হাসবেন্ড নাকি উনি? বেশ মানিয়েছে তো তোমাদের!
আড়চোখে তাকালাম রেয়ানের দিকে। তার মুখে বিশ্বজয়ের হাসি লেগে আছে। চোখ ফিরিয়ে নিলাম তার থেকে। প্রিন্সিপালকে কিছু বলতে যাবো তার আগেই রেয়ান প্রিন্সিপালের দিকে হাত বাড়িয়ে বলে উঠলেন….
— আমি ডক্টর রায়হান আহমেদ রেয়ান। আপনার সাথে দেখা করে ভালো লাগলো।
প্রিন্সিপালও পরম আনন্দের সাথে হাত মেলালেন রেয়ানের সাথে। আমি পাশে দাঁড়িয়েই নিরব দর্শকের মতো ওদের তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি।কথার এক পর্যায়ে রেয়ান আমার আর আবদ্ধের ভর্তি করিয়ে দিলেন। কিঞ্চিত অবাক হলাম আমি।উনি কিভাবে জানলেন আমি আবদ্ধকেও ভর্তি করাতে চেয়েছি? আবদ্ধ বলেছে? নাকি মামী?

ভার্সিটির কাজ শেষ হতেই রেয়ান আমাকে নিয়ে একটা পার্কে আসলেন। পাশাপাশি হাঁটছি আমরা। তবে দু’জনের মধ্যে যথেষ্ট দূরত্ব আছে। সকাল হওয়ায় পার্কে মানুষের তেমন ভিড় নেই। তবে কিছু কিছু জায়গায় বাচ্চারা খেলছে, বেঞ্চে কাপলরা সামাজিক ভাবে বসেই গল্প করছে আর সবচেয়ে মন ভরানো জিনিস হলো, একজোড়া বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রী একে অপরের হাত ধরে পাশাপাশি হাঁটছে। এ দৃশ্যটা দেখতেই মনটা জুড়িয়ে যায় আমার। কত পবিত্র তাদের ভালোবাসা। আজকাল কি এমন ভালোবাসা পাওয়া যায়?হয়তো আবার হয়তো না!
হাঁটতে হাঁটতেই থেমে গেলাম আমি। শাড়ি পড়তে পারলেও তেমন পটু না। কোনোরকমে পড়েছি শাড়িটা। হাঁটতে হাঁটতে শাড়ির কুচি এলোমেলো হয়ে গেছে আমার।এখন একটু এগোলেই পায়ের সাথে বেজে শাড়ি খুলে যেতে পারে।এখন কি করব আমি? এদিকে রেয়ান দু’পা এগোতেই পেছন ফিরে তাকান আমার দিকে। আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভ্রুঁ কুঁচকালেন উনি। যার অর্থ”কি হয়েছে?” কোনো কিছু বললাম না আমি। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম। রেয়ান আমার মাথা থেকে পা অব্দি একবার তাকিয়ে আমার একদম কাছে এসে দাঁড়ালেন।পরক্ষনেই আমার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে শাড়ির কুচি ঠিক করতে করতে বলে উঠলে….
— এভাবে দাঁড়িয়ে থাকে কেউ? আমাকে বলতে।এই যে এখন যেভাবে শাড়ির কুচি ঠিক করছি তখনও তেমনই করতাম।
বলেই আবার লেগে গেলেন শাড়ি ঠিক করতে।এদিকে পার্কের সব মানুষ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে আর মুচকি মুচকি হাসছে। একটা কাপল আমার মতোই শাড়ি পড়ে এসেছে। রেয়ানকে আমার শাড়ির কুচি ঠিক করতে দেখে মেয়েটা তার “সে” কে বলে উঠল….
— দেখেছো ওর হাসবেন্ড কত কেয়ারিং আর তুমি! ইগোর ডিব্বা।
মেয়েটার কথা শুনে হাসলাম আমি। ওরা এত বোকা কেন? কেউ একটু কেয়ার করলেই কি সে তার হাসবেন্ড হয়ে যাবে? অবশ্যই না। রেয়ান হলেন আমার শুভাকাঙ্ক্ষী। আর কিছু না। ভাবতেই দীর্ঘশ্বাস ফেললাম আমি। রেয়ান সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আমার হাত ধরলেন শক্ত করে৷ আর হাঁটতে লাগলেন পার্কের পেছনে থাকা নদীর দিকে।
নদীর কাছাকাছি একটা টং আছে। সেটাকে উদ্দেশ্য করে রেয়ান বলে উঠলেন….
— চলো মরুভূমি পানিতে পা ভিজিয়ে ওই টংটায় বসে পরি। ভালো লাগবে।
উত্তরের অপেক্ষা করলেন না উনি। আমাকে টানতে টানতে নিয়ে গেলেন ওখানে। আমিও পায়ের জুতো খুলে পানির মধ্যে পা ভিজিয়ে বসে পড়লাম রেয়ানের পাশে। কেমন যেন এক প্রশান্তি লাগছে মনে। মাথার উপর খোলা আকাশ, চারপাশে বাতাসের আনাগোনা। বেশ ভালো লাগছে মুহুর্তটা। আর যখন বাতাসের দমকা হাওয়া গায়ে ধাক্কা খেয়ে শিহরণ বইয়ে দেয় তখন মুখে আপনা-আপনিই চলে আসে প্রশান্তির হাসি! এমন রোমাঞ্চক মুহুর্তে রেয়ান হুট করে গান গাওয়া ধরলেন….
….”সে কি জানে, তোকে অভিমানে হাসাতে?”….
….”সে কি পারে, বুকে ধরে তোকে ভোলাতে?”….
….”তোর প্রিয় গান কে গেয়ে শোনাবে?”….
….”বল আমার থেকে কে তোকে ভালো জানে!”….
….”ইশারাতে তোকে খুঁজে বেড়াই স্বপ্নে।”….
….”তোর নাম ডেকে হেসে ফেলি আনমনে।”….
….”কে নিয়ে যাবে তোকে রুপকথার দেশে?”….
….”বল আমার থেকে কে তোকে ভালো জানে!”….
৫.
দীঘিকে স্কুলে দিয়েই আবদ্ধ চলে যায় মিটিং করতে। ভেবেছিলো মিটিং শেষ হওয়ার পর দীঘির বাবার কাছে গিয়ে তাকে শায়েস্তা করবে। কিন্তু দীঘির বাসায় যেতেই কামরুল আবদ্ধকে করুন গলায় বলে উঠে….
— দীঘির ইস্কুল থেকে ফোন আইসে। দীঘি পায়ে বলে ব্যথা পাইসে। রক্তও পরছে বলে। এখন ইস্কুলে যাইতে বলছে দীঘির শিক্ষক। তুমি যাবা নাকি আ…
কামরুলের আর কোনো কথা শোনার প্রয়োজন বোধ করে নি আবদ্ধ। বাসা থেকে বের হয়ে তাড়াতাড়ি চলে গেল দীঘির স্কুলে। সেখানে যেতেই দেখে দীঘি একটা বেঞ্চে বসে আছে। তার বাম পায়ে বেন্ডেজ করা। চোখ থেকে পানি পড়ছে অনবরত। সাথে সাথে আবদ্ধের বুক মোচড় দিয়ে ওঠে। কোনো মতে শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানিয়ে দীঘিকে কোলে নিয়ে গাড়ির দিকে হাঁটা ধরে সে। আবদ্ধের এহেন কান্ডে এখন কান্না থেকে লজ্জা লাগছে দীঘির। কেমন অসভ্য মানুষটা।সবার সামনে কোলে তুলে নিলো?
.
বিছানায় বসে আছে দীঘি। মামী এই মাত্র তার জন্য স্যুপ বানাতে চলে গেল রান্নাঘরে।এদিকে আবদ্ধ তার রক্তিম চক্ষু দিয়ে তাকিয়ে আছে দীঘির দিকে।দীঘি মনে মনে দোয়া-দরুদ পড়ছে। এই বুঝি আবদ্ধ তাকে ঝাঁঝালো কন্ঠে বলবে….” গর্ধব মেয়ে কোথাকার। নিজের খেয়াল রাখতে পারিস না। ইচ্ছে তো করছে তোকে এখন ঠাঠিয়ে দি কয়েকটা চড়”। তবে দীঘির ভাবনাকে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করে আবদ্ধ শান্ত সরে বলে উঠল….
— আমি আর পারছি নারে। খুব কষ্ট হচ্ছে। ভয় লাগে প্রতিনিয়ত! এই বুঝি তুই চলে যাবি। প্রথমে মিরাপু আর এক্সিডেন্ট, বিজনেসের লস,আমার পড়ালেখা ছেঁড়ে দেওয়া,তোর বিয়ে হতে হতে না হওয়ার,তোর বাপের জানোয়ারগিরি সম্পর্কে জানা সবশেষে এখন এটা। আর পারছি না এত স্ট্রেস নিতে। সত্যি পারছি না।
বলতে বলতেই আবদ্ধ দীঘিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। দীঘি ব্যথা পেলেও কোনো আওয়াজ করে না।আলতো হাতে আবদ্ধের পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে শুরু করে।

রেস্টুরেন্টে বসে আছি আমি আর রেয়ান। রেয়ান খাবার অর্ডার করতে যেতেই ফোন বেজে উঠে আমার। দিহানের কল! এ পর্যন্ত ৭-৮ বার কল দিয়েছে সে। বিরক্ত হয়ে এবার ফোন সাইলেন্টই করে দিলাম আমি। তবে ছেলেটার জন্য একটু খারাপও লাগছে। কালকেও তার সাথে বাইরে ঘুড়তে যাই নি।আবার আজকে প্রিন্সিপালের সাথে ওকে নিয়ে দেখা করতেও পারি নি। ভাগ্যিস ভার্সিটিতে দিহানের সাথে দেখা হয় নি। নাহলে রেয়ান কেলেঙ্কারি করে ফেলতেন! ভাবতেই একটা লম্বা দম নিলাম। ততক্ষনে রেয়ানও এসে গেছেন খাবার নিয়ে। কিছুক্ষন টুকটাক কথা বলে খাবার খাওয়া শুরু করলাম আমরা। রেয়ান চামচ দিয়ে খাবার মুখে দিতে যাবে হঠাৎ কোথা থেকে একটা মেয়ে এসে রেয়ানের হাত থেকে চামচ নিয়ে খাবারটুকু খেয়ে ফেলে। মেয়েটার এহেন কান্ডে ভালোভাবে তাকালাম মেয়েটার দিকে। মুখে একগাদা মেক-আপ আর হাঁটুর ওপর অব্দী জামা পড়ে আছে সে। বলতে গেলে অশ্লীল মেয়েরা যেমন কাপড় পড়ে তাই। মেয়েটার দিক থেকে চোখ সরিয়ে রেয়ানের দিকে তাকালাম আমি। উনি তার রক্তচক্ষু দিয়ে তাকিয়ে আছেন মেয়েটার দিকে। কিছু বলতে গিয়েও আর বললেন না।এ মুহূর্তে কোনোধরণের সিনক্রিয়েট করতে চাচ্ছেন না উনি। প্যান্টের পকেট থেকে ওয়ালেট বের করে, টেবিলের ওপর খাবারের বিল দিয়ে উঠে দাঁড়ান রেয়ান। কোনো কথা না বলে আমার হাত ধরে সোজা বেড়িয়ে যান রেস্টুরেন্ট থেকে।পেছন পেছন মেয়েটাও আসলো। রেয়ানের অন্য হাত ধরে ন্যাকামো ভাবে বলে উঠল…
— রেয়ান বেবি আমাকে ইগনোর করছো কেন তুমি? আর এ ক্ষ্যাত মেয়েটা কে?
মেয়েটির হাত ঝাঁড়ি দিয়ে নিজের হাত সরিয়ে ফেললেন রেয়ান। ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে উঠলেন….
— ও ক্ষ্যাত না জেনি তুমি ক্ষ্যাত।ইউ নো ওয়াট! তুমি একটা অশ্লীল মেয়ে। যার কাছে লজ্জা বলতে কোনো ওয়ার্ডই নেই।
চোখ রাঙিয়ে রেয়ানের দিকে তাকালো জেনি। দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠল….
— তুমি কিন্তু আমাকে অপমান করছ রেয়ান।
— ও রেইলি? অপমান তো তাকে করে যে সেটার যোগ্য। তুমি তো অপমানেরও যোগ্য না।
— রেয়ান!

— সাট আপ! আমার সামনে উচু আওয়াজে কথা বলবে না। মাটিতে পুতে ফেলবো একদম।পরেরবার যেন তোমাকে চোখের সামনে না দেখি।
এত অপমান করায় জেনির ফর্সা মুখ লাল হয়ে যায়। কিছু না বলে রাগে গজগজ করতে করতে সে চলে যায় সেখান থেকে।
জেনি যাওয়ার পর থেকে বাড়ি অব্দী নামিয়ে দেওয়া পর্যন্ত কোনও কথা বলেন নি রেয়ান। একদম কোনো কথাই না! আমিও চুপ ছিলাম। কিন্তু বাড়ির সামনে যখন রিকশা থামে তখন উনি অতি শান্ত কন্ঠে বলে উঠেন….
— নিজের খেয়াল রেখো। আর শুনো, আজকে রাতে আসব না তোমার কাছে। জরুরি অপারেসন আছে আমার। তাই নিশ্চিন্তে রাতে ঘুমাতে পারবে। কেউ ডিস্টার করবে না তোমাকে।
.
.
#চলবে🍁