বদনাম

বদনাম—– পর্বঃ ২

শার‌মিন আক্তার
–তু‌লি তনয়া‌কে একটা রুম দে‌খি‌য়ে বল‌লো আপ‌নি ফ্রেস হ‌য়ে বিশ্রাম নি‌য়ে নিন। কিছুক্ষ‌নের ম‌ধ্যেই ফজ‌রের আযান দি‌বে। কোন কিছু লাগলে আমা‌কে ডাক দি‌বেন। কোন সং‌কোচ বোধ কর‌বেন না প্লিজ।
তনয়াঃ ঠিক আছে।
তু‌লি তনয়া‌কে রু‌মে রে‌খে নি‌জের রু‌মে গে‌লো। রু‌মে ডোকা মাত্র আয়াত তু‌লি‌কে শক্ত ক‌রে জ‌রি‌য়ে ধ‌রে বল‌লো——
আয়াতঃ আই মিস ইউ! আই মিস ইউ! আই মিস ইউ সোওও——মাস!
তু‌লিঃ ঢঙ দে‌খে বাঁ‌চি না। ব‌লি এতই যখন মিস করতা তাহ‌লে ছয়‌দিন ঢাকা গি‌য়ে একা কিভাবে থাক‌লে? তখন মিস ক‌রো‌নি?
আয়াতঃ স্য‌রি লাভ। আমার বজ্জাত বসটার জন্য। শালায় নি‌জের বৌ‌কে তো সময় দেয়ই না , অন্যরা যা‌তে তা‌দের বৌ‌য়ের কা‌ছে না থাক‌তে পা‌রে তার জন্যও সবসময় তা‌দের উপর কা‌জের চাপ দি‌য়ে রা‌খে।
তু‌লিঃ নি‌জের বস‌কে কেউ এভা‌বে গা‌লি দেয়?
আয়াতঃ তাহ‌লে কি কর‌বো? আস্ত হারা‌মি। অন্য কোম্পা‌নি‌তে ভা‌লো একটা জব পে‌লেই এই জবটা ছে‌ড়ে দি‌বো।
তু‌লিঃ সেটা তখন দেখা যা‌বে এখন যাও ফ্রেস হ‌য়ে নাও।
আয়াতঃ ফ্রেস হওয়ার আগে যদি একটু——। মা‌নে মি‌ষ্টি জাতীয় কিছু খে‌তে পারতাম!
তু‌লিঃ একদম না। তোমার গা থে‌কে ঘা‌মের গন্ধ আস‌ছে। যাও গোসল ক‌রে এসো।
আয়াতঃ আন‌রোমান‌ন্টিক বৌ কোথাকার!
তু‌লিঃ অতি‌রিক্ত মি‌ষ্টি স্বা‌স্থ্যের পক্ষে হা‌নিকারক সা‌হেব!
আয়াতঃ হুহহহ। বে‌শি জ্ঞান দি‌তে হ‌বে না। ব‌লে ওয়াশ রু‌মে ডু‌কে গে‌লো। তু‌লির আয়া‌তের অবস্থা দে‌খে ভিষন হা‌সি পা‌চ্ছে।
তু‌লি ‌নি‌জের একটা ড্রেস আর কিছু শুকনা খাবার নি‌য়ে তনয়া‌র রু‌মে গে‌লো। রু‌মে গিয়ে দেখে তনয়া জানালার গ্রিল ধ‌রে বাই‌রের দি‌কে তা‌কি‌য়ে কাঁদ‌ছে। তু‌লি গি‌য়ে তনয়ার কাঁ‌ধে হাত রে‌খে ব‌লে
তু‌লিঃ এটা আপনার জন্য (ড্রেসটা এগি‌য়ে দি‌য়ে)। দেখুন আমি আপনার বিষ‌য়ে তেমন কিছু তো জা‌নিনা ত‌বে এতটুকু ব‌ুঝতে পার‌ছি আপনি বড় ধর‌নের সমস্যায় আছেন। টেনশন নি‌বেন না আল্লাহর উপর ভরশা রাখুন সব ঠিক হ‌য়ে যা‌বে। যান ফ্রেস হ‌য়ে নিন। তারপর কিছু খে‌য়ে নিন। বা‌কি কথা প‌রে হ‌বে।
তনয়াঃ তু‌লি শুনুন! একটা কথা জি‌গেস ক‌রি?
তু‌লিঃ হ্যা অবশ্যই। সং‌কোচ কর‌বেন না। ব‌লে ফেলুন!
তনয়াঃ আপনার স্বামী রা‌তের শেষ ভা‌গে একটা যুব‌তী মে‌য়ে‌কে নি‌য়ে ঘ‌রে আস‌লো অথচ আপ‌নি তা‌কে কোন প্রশ্ন কর‌লেন না? উল্টা মে‌য়ে‌টি‌কে নিঃসং‌কো‌চে হে‌সে তার সা‌থে উত্তম ব্যবহার কর‌ছেন। আপনার কি বিন্দু মাত্র স‌ন্দেহ হয়‌নি?
তু‌লিঃ মৃদু হা‌সি দি‌য়ে। না!
তনয়াঃ কে‌নো?
তু‌লিঃ কারন আমি আয়াত‌কে চি‌নি জা‌নি বু‌ঝি! আমি আয়াত‌কে পৃ‌থিবী‌তে সব থে‌কে বে‌শি বিশ্বাস ক‌রি। আমি জা‌নি ও এমন কিছু কর‌বে না যা‌তে আমার বিশ্বাস ভা‌ঙে। ও যাই করুক না কেন তার পিছ‌নে একটা ভা‌লো কারন থাক‌বে।
তনয়াঃ আপনা‌দের বি‌য়ে হ‌য়ে‌ছে কত বছর?
তু‌লিঃ ছয় বছর!
তনয়াঃ কি? আপনার বয়স ক‌তো?
তু‌লিঃ ২৪ বছর।
তনয়াঃ খুব অল্প বয়‌সে বি‌য়ে হ‌য়ে‌ছে আপনার ম‌নে হয়? আর বি‌য়ের এত বছর পর নি‌জে‌দের ভিতর এত ভা‌লোবাসা?
তু‌লিঃ সময়ের ব্যাবধান দি‌য়ে ভা‌লোবাসা হয় না। বরং ভা‌লোবাসা দি‌য়ে সময় হয়। বা‌কিটা প‌রে ধী‌রে সু‌স্থে বল‌বো। কেমন! তু‌লি রুম থে‌কে বের হ‌য়ে গে‌লো। আর তনয়া ভাব‌ছে এমন নি‌র্ভেজাল একটা সম্পর্ক‌ আমি চে‌য়ে‌ছিলাম কিন্তু উপর ওয়ালা সবার কপা‌লে সব লি‌খে না।
তু‌লি রু‌মে গি‌য়ে দে‌খে আয়াত গোসল সে‌রে বের হ‌য়ে‌ বিছানায় শু‌য়ে পড়‌ছে।
তু‌লিঃ আয়াত আযান দি‌ছে নামাজ প‌ড়ে তারপর ঘুমাও। ওঠো!
আয়াতঃ তু‌লি খুব ক্লান্ত লাগ‌ছে।
তু‌লিঃ ঠিক আছে মস‌জি‌দে যে‌তে হ‌বে না। ঘ‌রে ব‌সে নামাজ প‌ড়ে ঘু‌মি‌য়ে প‌ড়ো।
আয়াতঃ ঠিক আছে চ‌লো আজ একসা‌থে নামাজ প‌ড়ি। কি ব‌লো?
তু‌লিঃ চ‌লো।
নামাজ প‌ড়ে আয়াত বিছানায় গা মে‌লে দি‌লো আর তু‌লি আয়া‌তের হাতের উপর শু‌য়ে পর‌লো।
আয়াতঃ তু‌লি একটা কথা ব‌লো ডোর‌বেল বাজা‌নোর সা‌থে সা‌থে তু‌মি দরজা খুল‌লে কিভা‌বে?
তু‌লিঃ তু‌মিই তো রা‌তে ফোন দিলা আস‌তে‌ছো তাই ড্র‌য়িং রু‌মেই সোফায় ব‌সে ছিলাম। তু‌মি বাড়ি না থাক‌লে আমার ঘ‌ুম হয়না জা‌নো না বু‌ঝি!
আয়াতঃ ওরে আমার ল‌ক্ষি বউটা। আই লাভ ইউ।
তু‌লিঃ লাভ ইউ টু। আচ্ছা আয়াত তনয়ার কি প্রব‌লেম তু‌মি কি কিছু জা‌নো?
আয়াত যতটুকু তনয়ার কাছ থে‌কে শুন‌ছে ততটুকুই তু‌লি‌কে বল‌লো। আর বল‌লো বা‌কিটা প‌রে জে‌নে নি‌বো। এখন ওনা‌কে ফোর্স করা ঠিক হ‌বে না। আয়া‌তের কথা শু‌নে তু‌লি চোখ বড় বড় ক‌রে বল‌লো।
তু‌লিঃ আল্লাহ! মে‌য়েটার সা‌থে কি কি হইছে! বি‌য়ের মাত্র একমা‌সের মাথায় কতটা খারাপ সময় দেখ‌লো। আল্লাহ ওর ভা‌লো করুক। জা‌নো আয়াত এসব ঘটনা শুন‌লে নি‌জে‌কে এতটা ভাগ্যবতী ম‌নে হয় তা তোমা‌কে ব‌লে বুঝা‌তে পার‌বো না।
আয়াতঃ কে‌নো?
তু‌লিঃ কারন আমি তোমাকে পে‌য়ে‌ছি। খু্ব বে‌শি ভাগ্যবতী না হ‌লে কেউ তোমার মত জীবন সঙ্গী পায় না। লাভ ইউ মাই লাভ!
আয়াতঃ আমার ময়না একটা।
এ‌দিকে তনয়া ফ্রেস হ‌য়ে নামাজে ব‌সে অনেকক্ষন কান্না কর‌লো। তারপর বিছানায় শু‌তেই ঘুমে দে‌শে ত‌লি‌য়ে গে‌লো। ক‌য়েক‌দি‌নের ক্লা‌ন্তি মে‌য়েটা‌কে বড্ড হা‌ঁপিয়ে তু‌লে‌ছি‌লো। সকাল আটটার দি‌কে তু‌লির ডা‌কে তনয়ার ঘুম ভাঙ‌লো। তনয়া চলুন নাস্তা কর‌বেন। তনয়ার‌ নি‌চে এসে দে‌খে বেশ ক‌য়েকজন লোক নি‌চে টে‌বি‌লে ব‌সে আছে। তনয়া সবাই‌কে সালাম দি‌লো। তু‌লি সবার সা‌থে তনয়া‌র পরিচয় ক‌রি‌য়ে দি‌লো।
তু‌লিঃ তনয়া এই হ‌চ্ছে আয়া‌তের বাবা-মা, ওনারা আয়া‌তের ভাইয়া-ভা‌বি (আকাশ আর নীরা), আর আয়া‌তের এক বোন আছে অর্থি সে তার শ্বশুর বা‌ড়ি। বসুন নাস্তা খে‌য়ে নিন।
তনয়া কোনার একটা চেয়া‌রে চুপচাপ ব‌সে রই‌লো। তু‌লি তনয়ার প্লে‌টে খাবার দি‌য়ে বল‌লো খাওয়া শুরু করুন। আয়াত অফি‌সে গে‌ছে। ওর প্র‌জেক্ট সাব‌মিট কর‌তে হ‌বে তাই। আপনার কিছু লাগ‌লে আমা‌দের বল‌বেন।
আয়া‌তের বাবাঃ হ্যা মা একদম লজ্জা পা‌বে না। নি‌জের ঘ‌রের মতই ভাব‌বে। তোমার যত‌দিন ইচ্ছা তত‌দিন থা‌কো এখা‌নে। কেমন? এখন খাও।
তনয়াঃ হুমমম। আচ্ছা তু‌লি এখান থে‌কে সদর রোড যে‌তে কতক্ষন লা‌গে?
তু‌লিঃ বে‌শিক্ষন না আধাঘন্টার মত। কে‌নো?
তনয়াঃ আয়াত আপনা‌কে ব‌লে‌নি যে সকা‌লে আমি আমার বান্ধবীর বাসায় যা‌বো!
তু‌লিঃ হুমমম ব‌লে‌ছে। ব‌লে‌ছে আপ‌নি যে‌তে চাই‌লে আপনা‌কে যে‌নো আমি নি‌জে না‌মি‌য়ে দি‌য়ে আসি।
তনয়াঃ তাহ‌লে নাস্তা ক‌রে দি‌য়ে আস‌তে পার‌বেন!
তু‌লিঃ আপ‌নি চাই‌লে আমা‌দের বা‌ড়ি ক‌দিন থাক‌তে পা‌রেন। আমা‌দের কোন সমস্যা হ‌বে না।
তনয়াঃ না আস‌লে জরু‌রি কিছ‌ু কাজ আছে।
তু‌লিঃ ঠিক আছে।
নাস্তা করার পর তু‌লি তনয়া‌কে নি‌য়ে ওর বান্ধীর বাসায় গে‌লো। কিন্তু তনয়ার বান্ধবীর বর তনয়াকে যা নয় তাই ব‌লে অপমান কর‌তে লাগ‌লো। তু‌লির সেটা দে‌খে মে‌জাজ গরম হ‌য়ে গে‌লো। তু‌লি তনয়ার বান্ধীর স্বামী‌কে ক‌য়েকটা কথা ব‌লে তনয়া‌কে নি‌য়ে সোজা বা‌ড়ি চ‌লে আস‌লো। তু‌লি তনয়া‌কে বল‌লো
তু‌লিঃ এমন বান্ধীর বাসায় থাকার চে‌য়ে নর‌কে থাকা হাজার গুন ভা‌লো। আপনার সমস্যা যত‌দিন না সমাধান হয় তত‌দিন পর্যন্ত আপ‌নি আমা‌দের বাসায় থাক‌বেন, তা‌তে কা‌রো কোন আপ‌ত্তি নেই।
তনয়াঃ কিন্তু!
তু‌লিঃ কোন কিন্তু না! আচ্ছা আপনার বয়স কত হ‌বে!
তনয়াঃ এবার গ্রাজু‌য়েসন শেষ কর‌ছি।
ত‌ু‌লিঃ ওহ তাহ‌লে তো ত‌ু‌মি আমার থে‌কে প্রায় দেড় বছ‌রের ছোট। শোন এ আপ‌নি বলা বাদ এখন থে‌কে আমরা বোনের মত থাক‌বো ত‌ুই বা তু‌মি বল‌বে। ঠিক আছে!
তনয়া তু‌লি‌কে জ‌ড়িয়ে ধ‌রে কান্না ক‌রে দি‌লো। আর বল‌লো।
তনয়াঃ পৃ‌থিবী‌তে তোমা‌দের মত ভা‌লো মানুষও‌ আছে! যেখা‌নে আমার নি‌জের বাবা মা আমায় বা‌ড়ি থে‌কে বের ক‌রে দি‌য়ে‌ছে সেখা‌নে তোমরা একটা অচেনা মে‌য়ে‌কে আশ্রয় দি‌য়ে এতোটা ভা‌লোবাসা দি‌চ্ছো!
তু‌লিঃ বোকার মত কাঁদ‌বে না তো। আল্লাহ সব ঠিক ক‌রে দি‌বে। কিন্তু তোমার বাবা-মা তোমার সা‌থে এমন কেন কর‌লো? কিছু ম‌নে না কর‌লে আমা‌কে বল‌বে? তু‌মি আয়াত‌কে যতটুকু ব‌লে‌ছো আমিও ততটুকুই জা‌নি। প‌রে কি হ‌য়ে‌ছি‌লো বল‌বে প্লিজ!
তনয়াঃ সে‌দিন বা‌ড়ি যাবার পর দে‌খি বা‌ড়িটা কেমন নীরব হ‌য়ে আছে। বা‌ড়ি‌তে কেউ নাই। পা‌শের বাসার আন্টির কা‌ছে শু‌নি কাল রা‌তে না‌কি বাবা অসুস্থ হ‌য়ে প‌রে। সবাই তা‌কে নি‌য়ে হাসপাতা‌লে গে‌ছে। আমি হাসপাতা‌লে যাবার জন্য বা‌ড়ির বাই‌রে বের হ‌তেই দে‌খি বাবা মা বা‌ড়ি ফির‌ছে। আমি দৌ‌ড়ে বাবার কা‌ছে গি‌য়ে বললাম বাবা তোমার কি হ‌য়েছে? বাবা কোন কথা না ব‌লে অন্য দি‌কে মুখ ঘু‌রি‌য়ে নিলো আর মা আমা‌কে ঠাস ক‌রে একটা চড় মার‌লো। আমি স্তব্ধ হ‌য়ে গেলাম। ঠিক কি বল‌বো বুঝ‌তে পার‌ছিলাম না! মা কেন আমায় মার‌লো? কি হ‌য়ে‌ছে মা?
মাঃ বা‌ড়ির মান সম্মান ডু‌বি‌য়ে নি‌জের বাবা‌কে মৃত্যুর দুয়া‌রে ঠে‌লে দি‌য়ে এখন জি‌গেস কর‌ছিস কি হ‌য়ে‌ছে? লজ্জা ক‌রে না তোর? নি‌জের মুখ দেখা‌তে এখা‌নে আস‌ছিস আবার?
তনয়াঃ মা তু‌মি কি বল‌ছো এসব? কি ক‌রে‌ছি আমি?
মাঃ চুপ কর! এমন ভাব কর‌ছিস ম‌নে হয় কিছ‌ু জা‌নিস না। তোর মত মে‌য়ে‌কে আমি পে‌টে ধ‌রে‌ছি ভাব‌তেই লজ্জা লা‌গে, ঘৃনা হয় নি‌জের উপর। বে‌রি‌য়ে যা আমার বা‌ড়ি থে‌কে। আর কোন দিন যে‌নো তোর ঐ নোংড়া চেহারা না দে‌খি। আর য‌দি বে‌ড়িয়ে না যাস তাহ‌লে আমার আর তোর বাবার মরা মুখ দেখ‌বি।
আ‌মি মা‌য়ের কথা শু‌নে ঠিক বল‌বো ভে‌বে পা‌চ্ছিলাম না। কিন্তু এটা খ‌ুব ভা‌লোভা‌বে বুঝ‌তে পার‌ছিলাম যে এসব কিছুর পিছ‌নে নিশ্চই অভির হাত আছে। মা‌য়ের কথা শোনার পর নিঃশব্দে বা‌ড়ি থে‌কে বের হ‌য়ে এলাম। কোথায় যা‌বো কি কর‌বো? ঠিক ভে‌বে পা‌চ্ছিলাম না। মাথা কাজ করা বন্ধ ক‌রে দি‌লো। আনম‌নে রাস্তায় এতিমের মত হাঁট‌ছিলাম। তখন আমার এক বান্ধবীর সা‌থে রাস্তায় দেখা হয়। ও আমার সব কথা শু‌নে আমা‌কে ওর বাসায় নি‌য়ে যায়। ‌কিন্তু সেখা‌নে থাকাও আমার কপা‌লে সই‌লো না। ওর বাসায় ওর এক দেবর থাক‌তো। তার নজর খুব নোংড়া ছি‌লো। যে নোংড়া নজর দি‌তে পা‌রে তার নোংড়া‌মি কর‌তেও সময় লাগে না। একসময় তো সে ইনডায়‌রেক‌লি আমা‌কে নোংড়া প্রস্তাব দি‌য়ে ব‌সে। সেখা‌নে থাকা আমার প‌ক্ষে আর সম্ভব হ‌লো না। গত কাল সন্ধ্যার বা‌সেই ব‌রিশা‌লের উদ্দে‌শ্যে রওনা দি‌ছিলাম। কিন্তু আসার আগে আমি জান‌তে পে‌রে‌ছিলাম কেন বাবা মা আমার সা‌থে ওমন কর‌ছে? তার প‌রের ঘটনা‌তো তোমরা জা‌নোই।
তু‌লিঃ একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছে‌ড়ে আচ্ছা তোমার বাবা কেন অমন ক‌রে‌ছি‌লো?
তনয়াঃ আস‌লে——
তনয়া কিছু বলার আগে তু‌লি! তু‌লি! ব‌লে আয়াত দৌ‌ড়ে এসে তু‌লি‌কে জ‌ড়ি‌য়ে ধর‌লো।
তু‌লিঃ কি কর‌ছো আয়াত! কি হ‌য়েছে ? এত খু‌শি কে‌নো?
আয়াতঃ আরে যে প্র‌জেক্টটার জন্য এত দিন প‌রিশ্রম কর‌ছি সে প্র‌জেক্টটা পে‌য়ে গে‌ছি।
তু‌লিঃ আলহ‌ামদু‌লিল্লাহ্! আল্লাহর দরবা‌রের লাখ লাখ শুক‌রিয়া।
আয়াতঃ সব তোমার জন্য। তু‌মি পা‌শে না থাক‌লে আমার এসব কিছু হ‌তো না।
তু‌লিঃ নাহ সব তোমার প‌রিশ্র‌মের ফল।
এতক্ষন আয়াত তনয়া‌কে একদম খেয়াল ক‌রে‌নি। তনয়ার দি‌কে চোখ পড়‌তেই বললো
আয়াতঃ আরে কেমন আছেন? অনেক্ষন পর দেখা হ‌লো।
তনয়াঃ ভা‌লো! কন‌গ্রেচ‌ু‌লেসন!
আয়াতঃ ধন্যবাদ
তু‌লিঃ চ‌লো সব‌াই মি‌লে মি‌ষ্টি মু্খ ক‌রি।
আয়াতঃ আমার তো স্পেশাল মিষ্টি চাই।
তু‌লিঃ হুসসস! লজ্জার মাথা খে‌য়ে‌ছে‌া নাকি? চ‌লো সাম‌নের রু‌মে! তনয়া চ‌লো।
ঘ‌রের সবাই ভিষন খু‌শি কিন্তু তনয়ার মনটা কেমন যে‌নো কর‌ছি‌লো। ম‌নে হ‌চ্ছে খারাপ কিছু হ‌বে।
চল‌বে———