বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -3 !! Part- 15

আবিরঃ (হে আল্লাহ এই মেয়ে কি দিয়ে তেরি আল্লাহ জানে,,এতো ফালতু গান কি ভাবে শুনে,,,,পুরো এলিয়েন এই মেয়ে৷ আমার কপালে এই মেয়ে জুটার ছিলো,, লাস্টে আমি কি না এক এলিয়েন কে পছন্দ করি😟)
তিথি গাল ফুলিয়ে গাছের সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে,, আবির নুডুলস টি তেরি করে তিথিকে দেয়,,,তিথি আর আবির খেতে থাকে,,,তিথির তো খুব আনন্দ লাগছে মনে হচ্ছে সে পিকনিক এ আসছে
তিথিঃ আচ্ছা লাইভ ভিডিও করলে কেমন হবে
আবিরঃ ওয়াট
তিথিঃ হুম আমরা যে জঙ্গলে তা লাইভ ভিডিও করবো আর কি
আবিরঃ মাথা কি গেছে নাকি??তুমি আসলে একটা,,,,,
তিথিঃ আসলে একটা কি?😠
আবিরঃ ঝগড়াটি এলিয়েন
তিথিঃ বজ্জাত এনাকন্ডা তোকে আমি এখানে কিমা বানিয়ে আগুনে রেঁধে খাবো
আবির আর তিথির ঝগড়া তো লেগে আছে,,,তারা তাদের ঝগড়া শুরু করে,,,কিছু ক্ষন পর কিছু একটার শব্দ পেয়ে দুইজনে একে অপরের দিকে তাকায়,,,,,
তিথিঃ এ,,এই টা কি,,,কিসের আও,,আওয়াজ
আবিরঃ আল্লাহ জানে
তিথি আবিরের পাশে এসে যায়,,আবিরের হাতটি শক্ত করে ধরে বলে
তিথিঃ আ,,আমার ভয় করছে
আবিরঃ কেন তুমি তো নাকি ভয় পাও না তাহলে এখন কেন ভয় পাচ্ছো হুম
তিথিঃ হুর
আবিরঃ হ্যাঁ কিছু বললে তে এই টায় হুর(পাগল এর পাল্লায় পড়লাম উফ)
আবির তিথি তো আছেই ঝগড়া করতে,,, রি দিকে ভয়ংকর আওয়াজ করে তাদের দিকে এসে দেয় আর একটা আওয়াজ,,,দুইজন যা দেখে তা দেখে থরথর করর কাঁপতে থাকে,,,,
তিথিঃবা,,বাঘ
আবিরঃ বা,,,ঘ তো আনিও দেখছি
তিথিঃ ওই বজ্জাত এনাকন্ডা আমি কি সিংহ বলছি হুম
আবিরঃ মিস ঝগড়াটি এলিয়েন আমি কি বলছি হাতি
এই দুইটা আবার লেগে যায়,,,আর এই দিকে বাঘ বেচারা ওদের ঝগড়া দেখে আরো জোরে আওয়াজ করর,,হয়তো ওদের ঝগড়াতে বাঘ ও বিরক্তি হয়ে যায় তাই😂
তিথিঃ বা,,বাঘ মামা আমি না আপনার অনেক বড় ফ্যান
আবিরঃ ফ্যান???বাসায় বাতাস খাওয়ার জন্য লাগায় যে সে টা??
তিথিঃ বজ্জাত এনাকন্ডা চুপ,,
আবিরঃ মিস ঝগড়াটি এলিয়েন একটু বুজে শুনে কথা বলিও কি বলো নিজে জানো
তিথিঃ বজ্জাত এনাকন্ডা তোকে আমি এখন কাবাব বানামু
বাঘ এক বার তিথির দিকে তাকায় আর একবার আবিরের দিকে,,, হয়তো বাঘ ভাবছে এই দুই পাগলের মাঝে সে কি ভাবে আসছে,,দুইটা যে পাগল মনে হয় বাঘ বেচারাকে পাগল করে ছাড়বে,,,,বাঘ জোরে আরো একটা আওয়াজ করে,,,তিথি ভয়ে আবিরকে জড়িয়ে ধরে,, বেচারা আবির কি করবে নিজে ও জানে না,,এই দিকে তিথি যে ভাবে তাকে ঝাপটা মেরে ধরেছে সে লড়তে ও পারছে না,,,,
তিথিঃ ওই বজ্জাত
আবিরঃ কিই

তিথিঃ আমরা কি আজকে এই বাঘের ডিনার হয়ে যাবো? (কান্না কান্না ভাব করে)
আবিরঃ মনে তো তাই হচ্ছে,,, হয়তো আজ আমাদের শেষ দিন
তিথিঃ আমার এখনও বিয়ে হয় নাই😭আমার স্বপ্ন 😭
আবিরঃ কি স্বপ্ন
তিথিঃ বিয়ে করা,,সংসার করা,,ছেলে মেয়ে অনেক গুলো বড় করা,,তারপর তাদের বিয়ে দিয়ে তাদের ছেলেমেয়ে বিয়ে দিয়ে তাদের সাথে হানিমুনে যাওয়া😍
আবিরঃ ওয়াট(চিৎকার করে)
তিথিঃ উফফফ বজ্জাত আস্তে চিল্লা কানে শুনি আমি,,,
আবিরঃ সিরিয়াসলি এই সময় এই টা কি ভাবে মাথায় আনলে???আসলে তুমি যে এলিয়েন এতে আমার বিন্দু মাত্র সন্দেহ নাই,,,,
এই দুইটা তো আবার লেগে যায়,,বাঘ আওয়াজ করে তাদের দিকে আসছে,,,তিথি আর আবির থরথর করে কাঁপছে,,,
তিথি দোয়া পড়তে থাকে,,আর আল্লাহ কে ডাকে
তিথিঃ হে আল্লাহ প্লিজ আমায় বাঁচাও আমার তো এখনও বিয়ে হয় নাই,,,আমি তো এখনও বাচ্চা
আবির তিথির দিকে তাকিয়ে দেখে চোখ বন্ধ করে আল্লাহ কে ডাকছে আর বিড়বিড় করে কি কি বলে ফেলছে,,,
আবির জ্বলন্ত কাঠ একটা হাতে নিয়ে দাঁড়াও,,বাঘ আগুন কে ভয় পায়,,আগুন টা বারবার বাঘের দিকে নিচ্ছে এতে বাঘ একটু সরে যাচ্ছে,,,আর তিথি তো এই দিকে তার ফালতু বকবক শুরু করে দেয়
তিথিঃ দেখলে বাঘ মামা আমি তোমায় কিছু করছি না আর এই বজ্জাত এনাকন্ডা তোমাকে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে এক কাজ করো বাঘ মামা তুমি বজ্জাত টা কে খেয়ে ফেলো আমায় ছেড়ে দাও দেখো আমি কতো মাসুম কিউট সিউট
আবিরঃ তিথিইইইইইই একদম চুপ
আবির পুরো বিরক্তি হয়ে যায় তিথির কান্ড দেখে,, এমন অবস্থায় কেউ এই সব বলে,,,,আবির বেচারা এক তো ভিতরে ভয়ে মরছে বাঘের ভয়ে,,তার মধ্যে আমাদের এলিয়েন তিথি তো তার ফালতু বকবক শুনাই আরো মারছে তাকে😂
আগুন টা বাঘের দিকে বারবার নেওয়ায় বাঘ কিছু টা ভয় পায়,,,,কিছু ক্ষন পর বাঘ চলে যায়,,আবির দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে এক পাশে ধপাস করে বসে পড়ে,,
তিথিঃ দেখলে বাঘ আমায় ভয় পেয়ে চলে গেছে হু(নিজের চুল গুলো এক পাশ থেকে অন্য পাশে নিয়ে গিয়ে,,)
আবিরঃ (আল্লাহ এই মেয়ে কি দিয়ে তেরি,,,আমার বাপের জন্মে এমন মেয়ে দেখি নাই উফফফ)
তিথিঃ অই বজ্জাত কি ভাবছেন,,
আবিরঃ ভাবছি তুমি কতো সাহসী বাহা
তিথিঃ হুম
আবিরঃ এক কাজ করিও বাঘ যখন আবার আসবে তখন তুমি আবার তাড়িও কেমন আমি কিছু করবো না,,
তিথি আবিরের পাশে দূরে গিয়ে বসে পড়ে আর বলে
তিথিঃ আ,,আবার আসবে মানে??
আবিরঃ দেখো বাঘ এখন আগুন দেখে চলে গেছে একটু পরে আবার আসতে পারে,,,সারারাত আগুন জ্বলে আমরা সেফ না হলে নয়
তিথি আবিরকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে
তিথিঃ এ,,এখন
আবিরঃ আমাদের জেগে থাকতে হবে,,,
তিথি ভয়ে শেষ,,, দুইজনে কথা বলতে থাকে,,ঝগড়া নয় এমনি কথা বলছে,,,,এই প্রথম দুইজনে সুন্দর করে একে অপরের সাথে ঠিক করে কথা বলছে,,,,আবির এই প্রথম তিথির সে মিষ্টি সুর শুনে,, তিথির আওয়াজ আসলে অনেক সুন্দর,,,, সব সময় ঝগড়া করে এই জন্য হয়তো আবির কখনো এই রুপ দেখে নাই,,,,আবির ও কথা বলে
কিছু ক্ষন পর আবির বলতে বলতে তিথির দিকে তাকিয়ে দেখে তিথি ঘুম,,,আবিরের ঘাড়ের মধ্যে মাথা রেখে তিথি ঘুমিয়ে যায়,,,,আবির তো তার তোতাপাখিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,,, সে তো প্রতি দিন তাকিয়ে থাকে কিন্তু এই প্রথম তিথি তার ঘাড়ে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে,,,,,, আবির তিথিকে একটু হালকা ভাবে জড়িয়ে ধরে যাতে তিথি পড়ে না যায়,,,বাতাসে তিথির চুল গুলো আবিরের মুখে আসছে,,,তিথির সে চুলের ঘ্রাণ যা আবিরকে মুগ্ধ করে,,, আবির তার চোখ দুটি বন্ধ করে তিথির চুলের সুভাস নিতে থাকে,,, কখন যে তার ও ঘুম এসে যায় খবর ও নাই,,,
সকালে পাখির ডাকে তিথির ঘুম ভাঙ্গে,,,,চোখ খুলে দেখে আবিরের সে মায়াবী চেহারা,,, একটা ছেলে যে এতো সুন্দর হয় তা আবিরকে না দেখলে হয়তো তিথি জানতো না,,ঘুমান্ত চেহারায় এই প্রথম তিথি আবিরকে দেখছে কি না সুন্দর লাগছে আবিরের ঘুমান্ত চেহারায়,, এক কথায় তিথি ক্রাশ খেয়ে বসে আছে,,,আবিরের সে ছোট ছোট চুল যা কপালে এসে পড়ে আছে,,হালকা দাঁড়ি যার কারণে আবিরকে কি না লাগছে,,
তিথি কিন্তু আবিরকে পছন্দ করে আজ থেকে নয় বরং অই দিন থেকে যে দিন আবির তাকে কিস করে,,,অই দিন থেকে আবিরের জন্য তিথি ফিল করা শুরু করে,,,দুইজন দুইজনকে পছন্দ করে কিন্তু কেউ কাউকে জানতে দেয় মাই,,,ভালোবাসা দুইজনের মধ্যে জন্ম নেয় কিন্তু কেউ কখনো প্রকাশ করে নাই,,হয়তো ভালোবাসা টা এমন যে দূরে থেকে আগলে রাখাকে বলে,,,
তিথি আবিরের কপালে আসা ছোট ছোট চুল গুলো আসতে করে সরিয়ে দেয়,,আবিরের গাল দুটো ছুঁয়ে দিতে তার খুব ইচ্ছে করছে,,কিন্তু ভয়ে করছে না যদি আবির জেগে যায়,,তাহলে তো অনেক কৈফিয়ত দিতে হবে তাকে,,,,,, তিথি অনেক ক্ষন ভাবে শেষ মেষ আবিরের গালে আস্তে করে ছুঁয়ে দেয়,,আবির কিছু টা নড়ে উঠে তিথি তাড়াতাড়ি হাত সরিয়ে দেয়,,
তিথিঃ ওই বজ্জাত এনাকন্ডা
আবিরঃ হুম
তিথিঃ সকাল হয়ে গেছে আমাদের যাওয়া উচিত
আবির আস্তে করে চোখ খুলে দেখে সকাল হয়ে আসছে,,,তিথির মুখ খানি কেন জানি এখন আবিরের কাছে এখন বেশি সুনাম লাগছে হয়তো ঘুম মাখা চেহারা তাই,,,
আবিরঃ মিস বকবক তুমি উঠলে তো আমি উঠবো তাই না
তিথি তাড়াতাড়ি সরে যায় আবির তিথিকে বলে
আবিরঃ কি হলো
তিথিঃ আমার ক্ষেধে পাইছে
আবিরঃ রাতে এতো নুডুলস খেয়ে এখন আবার ক্ষেধে???
তিথিঃ ক্ষেধে পাইলে আমি কি করবো হুম
আবিরঃ (তাও কথা যে খাদক দুইদিনে আমায় ফকির করবে)
আবির আর তিথি ব্যাগটা একটু গুছিয়ে নেয়,,,আবির আর তিথি হাঁটা শুরু করে,,, ক্ষেধায় তো তিথি হাঁটতে ও পারছে না,,,কিছু ক্ষন পর পর সে নিচে বসে যায়,,,আবির পিছনে তাকিয়ে দেখে তিথি পেটে হাত দিয়ে বসে আছে
তিথিঃ আমি আর পারবো না হাঁটতে প্লিজ
আবিরঃ তিথি এখানে ভয়ানক প্রাণী থাকতে পারে,,,যদি ওরা এসে তোমায় খেয়ে পেলে তাহলে???তোমার তো এখনও বিয়ে ও হয় নাই,,,ভাবো তিথি
তিথি ভয়ে দূরে আসে আবিরের দিলে,,,,দূরে আসার সময় জুতা দুটো ছিড়ে যায়,,,ব্যস আর কি তিথি কান্না শুরু
তিথিঃ এক তো ক্ষেধা লাগছে তার মধ্যে মরার জুতা ও ছিড়ে গেছে 😭এখন আমি কি করবো
আবিরঃ (ড্রামাকুইন)

তিথি জুতা গুলো নিয়ে এ পাশ ও পাশ করছে আর কান্না করছে,,,,শেষ মেষ হাঁটা শুরু করে আর পায়ে কি যেন ডুকে,,
তিথিঃ আয়ায়ায়ায়ায়া আমার পায়ায়ায়ায়া আম্মুরেএএএ আমার পা গেছে গা(চিৎকার করে)
আবিরঃ উফফফ তিথি আস্তে চিল্লাও জঙ্গলের সব প্রাণী তোমার চিৎকার শুনে এসে যাবে,,
তিথিঃ আমার পা বজ্জাত 😭
আবির তিথির কাছে যায় বসে তিথির পা টা নিজের হাঁটুর মধ্যে রাখে আর দেখে প্রচুর রক্ত পড়ছে,,বড় একটা কাঁটা ডুকে আছে,,আস্তে করে টান দেয়,,,
তিতজিঃ ওহ আম্মুউউ গো(চিৎকার দিয়ে)
আবিরঃ শিসসসস তিথি
আবির এই আবার রাগী লুক দেয় আর পকেট থেকে রুমাল বের করে বেঁধে দেয়,,,তিথি আবিরের দিলে তাকিয়ে আছে,,,,কিছু ক্ষন পর তিথি আবিরের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,, আবির বুজতে পারে আর তিথিকে কোলে নিয়ে বলে
আবিরঃ আমার কোলে উঠতে ইচ্ছে করে তা বললে তো হয় অযথা নিজের পায়ের ১২ টা না বাজালে হতো
তিথিঃ কিইইইই
আবিরঃ কোল থেকে এখন জোরে আছাড় দিবো এতো জোরে চিল্লাও কা সব সময় হুম
তিথিঃ অই হারামি লাল কাক আমি ইচ্ছে করে নিজের পায়ে ব্যাথা পাই হুম,,
আবিরঃ হয়তো

তিথিঃ বয়ে গেছে আমার তোর কোলে থাকতে,, নামা আমায় এখন নামা
আবির তিথিকে আর একটু শক্ত করে ধরে তিথি নামার জন্য ঝটপট করে,,আবির তিথি ঠোঁটে আস্তে করে নিজের ঠোঁট বসিয়ে দেয়,,তিথি তো তার চোখ দুটি মারবেল এর মত করে পেলে,,,,
কিছু ক্ষন পর,,,
আবিরঃ যা আমার তো সকালের নাস্তা হয়ে গেছে মিস বকবক তোমার কি আর নাস্তা খেতে হবে,, আমার তো আর খাওয়া লাগবে না,,,
আবিরের কথায় তিথি অনেক টা লজ্জা পায়,,লজ্জায় মুখ টা আবিরের বুকে লুকিয়ে পেলে,, দুইজনে চুপ,,,কোথায় ও না কোথায় দুইজনের মনের ফিলিংস সেম,,,কেউ কাউকে জানতে দিচ্ছে না তাদের ফিলিংস সেম একে অপরের জন্য,৷ দুইজনের মন একটা জিনিস চায় কিন্তু কেউ কাউকে বুজতে দিচ্ছে না,,
চলবে,,,,,,