বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 60
এমন মিষ্টি মুহূর্ত গুলো দুইজনে আজ আবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে বারবার,,,তাদের ভালোবাসার ছোট ছোট মুহূর্ত গুলোর যেন সাক্ষী হয়ে যায় এই শীতল বাতাস,,আকাশের সে সুন্দর চাঁদ,,সাগরের ঢেউ,,,
ভালোবাসায় আজ দুইজনে লিপ্ত হয়ে যায়,,
কিছু ক্ষন পর আবির তিথির হাতটি ধরে বসে আছে,,,
তিথিঃ বাড়ি যেতে হবে না???
আবিরঃ কেন যেতে চাও বুজি?
তিথিঃ ইচ্ছে করছে না যেতে,,,খুব ইচ্ছে করছে আপনার হাতটি ধরে আপনার ঘাড়ে মাথা রেখে সারারাত পার করে দিতে,,,,
আবিরঃ তাহলে তো আর সমস্যা কই??
তিথিঃ হু,,,কিন্তু মামনি যদি কিছু বলে?
আবিরঃ ম্যাডাম আপনি আপনার হাজবেন্ড এর সাথে আছেন এতে কেউ কিছু কেন বলবে??
তিথিঃ হুম তাও কথা,,,
আবির তিথির হাতটা টেনে ধরে বসে,,,তিথি আবিরের ঘাড়ে মাথা রাখে,,,অনেক টা শান্তি লাগছে তার আবিরের ঘাড়ে মাথা রেখে সাগরের ঢেউ উপভোগ করতে,,,,,আর আবিরের কাছে আজকের মুহূর্ত টুকু বেস্ট কারণ সে তার জীবনের সব চেয়ে প্রিয় মানুষটার সাথে এই সময় টুকু উপভোগ করছে,,,,
আবির তিথি এক সাথে অনেক টা সময় কাটায়,,,,
রাত প্রায় অনেক হয়ে আসে আবিরের ঘাড়ে তিথি মাথা রেখে যে কখন ঘুমিয়ে যায় সে খবর তিথির একদম নাই,,,আবির ও জানে না যে তার ঘাড়ে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে তিথি,,,সে তো অজানা কিছু কথা আজ তিথিকে বলেই দিবে ভাবে,,,বলতে শুরুও করে দেয় সে চায় না তাদের মাঝে আর কিছু আসুক,,,,,
আবিরঃ জানো তিথি তোমাকে বড্ড বেশি ভালোবেসে ফেলেছি,,,তিথি তোমাকে কিছু কথা বলে দেওয়া বেটার এখন আমি চাই না মায়রার কথা তখন না বলায় যে প্রবলেম হয়েছে তা নিয়ার জন্য হোক,,,,নিয়ার সব কিছু বলতে চাই আমি আর শিহাবের ব্যাপার ও,,,আর নিয়া আসলে কে তাও,,,, ওর কারনে কত প্রবলেম হয়েছে তা বলতে চাই,,,
তিথি এতো চুপচাপ যে আবির ভাবে আজ তিথি এতো চুপ কেন,,,,
আবিরঃ কি হলো কিছু তো বলো তিথি,,,
আবির তিথির দিকে তাকিয়ে দেখে তিথি ঘুম,,,কিছুটা রাগ লাগে এই ভেবে এই মেয়ে এতো ঘুমাতে পারে কিভাবে,,,,,তারপর ও তিথির মুখের দিকে তাকিয়ে যেন রাগ নিমিষেই শেষ হয়ে যায় তার,,,,ঘুমান্ত তিথিকে বেশ সুন্দর লাগছে যে তার কাছে,,,অজান্তেই মুখে হাসি এসে যায় আবার ভাবে কথাটা পরে জানলে যদি প্রবলেম হয়,,,,
আবিরঃ তোমাকে খুব তাড়াতাড়ি আমি বলে দিবো পুরো সত্যি,,আমাদের মাঝে আর কিছু আসতে দিবো না শুধু থাকবে ভালোবাসা,,,অনেক ভালোবাসি আমি আর আমি থাকতে তোমাকে আর কষ্ট পেতে দিবো না কারো জন্য প্রমেস,,,,
আবির তিথিকে নিজের কোলে শুয়ে দেয়,,ঘাড়ে এইভাবে শুয়ে থাকতে থাকতে তিথির ঘাড়ে ব্যাথা করবে তাই,,,,সে নিজে বসে আছে কিন্তু তিথিকে আরামে ঘুমাতে দিচ্ছে,,,আবিরের কোলে পরম যত্নেই তিথি ঘুমাচ্ছে আর আবির তাকিয়ে আছে তিথির দিকে চোখের পলক যেন সরছেই না,,,
সারারাত এইভাবে কাটে তাদের,,,চারপাশে হালকা আলো হয়ে আসে সূর্য ও উঠা শুরু করে,,,আবির এখনও তাকিয়ে আছে তার মায়াবতীর দিকে,,,,,অনেক টা সময় আবার পাড় হওয়ার পর চারপাশে পুরো আলো হয়ে যায়,,,সূর্যের আলো এসে তিথির চোখে পড়ে আবির তাড়াতাড়ি তিথির চোখে হাতটা দিয়ে ঢেকে ছায়া দেয় যাতে তিথির চোখে আলো না পরে আর ঘুম না ভাঙ্গে,,,,
,,তিথির ঘুম ভাঙ্গে আর কিছু ক্ষন পর,,,ঘুম ভাঙ্গতেই প্রথম নজর যায় আবিরের দিকে,,, আবির তাকিয়ে আছে তার দিকে সে অপলক ভাবে,,,,,,
আবিরঃ গুড মর্নিং জানেমান,,,,
তিথি মুচকি হেসে উপরে তাকিয়ে দেখে খোলা আকাশ,,,আর আবিরের মুখে এক রাশ হাসি দেখেই ভালো লাগে,,,হুট করে মনে পড়ছে তার যে তারা তো বীচ পাড়ে,,তাড়াতাড়ি উঠে বসে
আবিরঃ সে কি উঠে গেলে যে?
তিথিঃ আমরা সারারাত এখানে ছিলাম??
আবিরঃ হুম কেন কি হইছে?
তিথিঃ যদি ডাকাত বা চোর আসতো তখন??
আবিরঃ হাহা আমি আছি না,,আমার বউকে আমি পাহারা দিয়েছি,,,
তিথিঃ আপনি সারারাত ঘুমান নাই??
আবিরঃ ঘুম কেড়ে নিয়ে বলছো ঘুমান নাই কেন?
তিথিঃ কেন?
আবিরঃ আপনি জানেন না ম্যাডাম আপনাকে বুকে না নিয়ে ঘুমাতে পারি না,,,আজ তো আপনি কোলেই ঘুমিয়ে গেলেন তাই আর কি আমার ঘুম শেষ
তিথিঃ তাহলে কি করলেন রাত জেগে?
আবিরঃ কি আর করবো বউকে দেখলাম মন ভরে যদিও মনটা ভরে নাই এখনও,,,,
তিথিঃ হু হইছে আচ্ছা চলেন
আবিরঃ কোথায়?
তিথিঃ কেন বাড়ি যাবো না?
আবিরঃ হুম যাবে বাট আমাদের বাড়ি,
তিথিঃ কিন্তু মামনি???
আবিরঃমামনি কিছু বলবে না কারণ আমি আমার বউকে তার শশুড়বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি বুজলা,,,,তো কেউ কিছু বলবে না ওকে,,,
তিথিঃ হু,,,
তিথি উঠে দাঁড়ায় গ্রাউনে বালু অনেক তা ঝেড়ে আবিরের দিকে তাকায় আবির মুচকি হাসছে,,,
তিথিঃ হাসেন যে?
আবিরঃ আমার পাগলির কান্ড দেখে,,,,
তিথিঃ হু,,,,
আবিরঃ আচ্ছা চলো পাশে একটা হোটেল আছে অইখানে ফ্রেশ হয়ে চেঞ্চ হয়ে তারপর বাড়ি যাবো,,,
তিথিঃ আমি তো কাপড় আনি নাই?আগে জানলে নিয়ে আসতাম,,,আচ্ছা আমরা বাড়ি চলে যাই তারপর অইখানে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিবো,,,
আবিরঃ আচ্ছা ঠিক আছে চলো,,,,
আবির আর তিথি বাড়ি ফিরে আসে,,সকাল সকাল কেউ তেমন ঘুম থেকে উঠে নাই,,আবিরের মা শুধু উঠেছে উনি নামাজ পড়ে বাগানে হাঁটার অভ্যাস তাই,,,আবির আর তিথিকে দেখে এগিয়ে আসে তাদের সামনে,,,
আবিরের মাঃ তিথি এসেছো?
তিথিঃ হুম মা কেমন আছো?
আবিরের মাঃ এখন থেকে আরো বেশি ভালো থাকবো আমার ঘরের লক্ষি যে ফিরে এসেছে এখন,,,
আবিরঃ বাহা আমাকে ভুলে গেলে?
আবিরের মাঃ চুপ থাক,,আজ আমার বউমাকে তো অনেক সুন্দর লাগছে,,, বাহা(তিথির দিকে তাকিয়ে ভালো করে)
আবিরঃ আর আমাকে? (অভিমানি সুরে)
আবিরের মাঃ পুরো পাগল লাগছে,,,
তিথি হেসে উঠে,,,
আবিরের মাঃ আচ্ছা যাও তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নাও আমি খাবার পাঠাছি তারপর ঘুমাইও কেমন
তিথিঃ আচ্ছা মা,,,
আবির ফ্রেশ হয়ে আসার পর তিথি শাওয়ার নিয়ে আসে,,,চুল গুলো মুছতে মুছতে বের হচ্ছে তিথি,,,আবির হা করে তাকিয়ে আছে তিথির দিকে ভিজা চুলে এতো কিউট লাগছে তার কাছে তার মায়াবতী,,,বিছানা থেকে উঠে তিথির কাছে গিয়ে হাত থেকে তাওয়াল টা নিয়ে ফেলে,,,
তিথিঃ এই কি কেন নিলেন এইটা???
আবিরঃ চুপচাপ এখানে বসো(আয়নার সামনে বসাই,,)
তিথির চুল গুলো আবির অনেক যত্নে মুছে দিতে লাগে,,তিথির কাছে বেশ ভালোই লাগছে এই ভেবে যে আবির তার প্রতি কত টা কেয়ারিং,,,,আচ্ছা ভালোবাসা বুজলে কি কেয়ারিং বেড়ে যায় আরো নাকি এমনিতেই কেয়ারিং জিনিস টা এসে যায়,,,,,
তিথি তো শুধু আয়নার দিকে তাকিয়ে আছে আর দেখছে তার বজ্জাতটাকে,,,সত্যি যে এখন আবির তিথিকে অনেক লাভ করে বসেছে,,,চুল গুলো মুছে তিথির সামনে গিয়ে বসে,,,
তিথিঃ এখন কি?
আবিরঃ তোমার কাজল কালো চোখ আমার ভালো লাগে বেশ,,,
তিথিঃ আমি তো তেমন কাজল দেই না আপনি জানেন,,,,
আবিরঃ হুম মাঝে মধ্যে যখন দাও তখন তো চোখ সরাতে পারি না,,,উফফ সে লাগে আমার বউকে
তিথিঃ বাপুরে এতো তারিফ আমার হজম হচ্ছে না,৷
আবিরঃ সেটাই এলিয়েনরা আবার বুজবে নিজের তারিফ,,,
তিথিঃ এই একদম এলিয়েন ডাকবেন না হু,,,
আবিরঃ অহ সরি সরি তুমি তো এলিয়েন না,,,
তিথিঃ হুম এখন বুজলেন তাইলে,,,(একটু ভাব নিয়ে)
আবিরঃতুমি তো হলে ঝগড়াটি এলিয়েন,,,
তিথি প্রচুর ক্ষেপে যায় প্রচুর রাগ লাগে তার এই ভেবে আবির এখনও তাকে পঁচায়,,,
তিথিঃ একদম কথা বলবেন না আমার সাথে হু,,,,
আবিরঃ ওকে আর কি বলবো না তোমার সাথে কিছু আমি আমার বউয়ের সাথে বলবো,,,
তিথিঃ একদম নয়,,,
আবিরঃ আচ্ছা কথা বলবো না,,,
তিথি তো আরো রেগে যায়,,,তিথি উঠেই চলে যেতে লাগে আবির হাতটি ধরে নিজের কাছেই টেনে নেয়,,,ঘুরিয়ে আয়নার দিকে ফিরে তিথির পেটে হাত রেখে নিজের বুকের সাথে লাগিয়ে বলে
আবিরঃ রাগলে বেশ কিউট লাগে তোমাকে,,উফফ এতো কিউট যে আমি তো ফিদা বারবার
তিথিঃ ছাড়েন আমাকে
আবিরঃ মাত্র তো ধরলাম ছাড়াছাড়ি আর নয়,,এতো দিন বেঁচে যেতে কারন আমি ধরতাম না ভালো করে বাট এখন আর ছাড়াছাড়ি নাই ম্যাডাম কারণ আমি আমার বউকে ছাড়তে চাই না,,,
তিথি কিছু টা ছুটার চেস্টা করে কিন্তু পারে না আবিরের সাথে,,,আবির তিথির ঘাড়ে একটা কামড় বসিয়ে দেয়,,,এতো জোরে দেয় যে প্রচুর ব্যাথা পায় ধাক্কা দিয়ে বলে
তিথিঃ উফফ রাক্ষস নাকি আপনি???
আবিরঃ হুম আগে বলো তুমি এইভাবে হাত পা নাড়াচাড়া করবে না যখন আমি জড়িয়ে ধরবো,,,
তিথিঃ আমি কি পুতুল নাকি যে চুপচাপ পাথরের মত দাঁড়িয়ে থাকবো হুম???
আবিরঃ না তা না বাট রোমাঞ্চের সময় সুন্দর করে থাকবা,,,
তিথিঃ আপনি একটা,,,,,,,,,,!
আবিরঃ অনেক কিউট তাই না?
তিথিঃ না গোলাপি বান্দর,,,,
আবিরঃ জীবনে দেখেছিলে গোলাপি বান্দর?
তিথিঃ হ্যাঁ আপনাকে,,,,
আবিরঃ হুম তাও কথা এলিয়েনরা আবার সব দেখে তো সমস্যা নাই,,,
আবির তিথি তাদের এই দুষ্টু মিষ্টি ঝগড়া করতে থাকে,,,কিছু ক্ষন পর খাদিজা ডেকে যায় নাস্তা করতে তারা দুইজনে নিচে নেমে নাস্তা করতে থাকে,,,নাস্তা করার সময় আবির তিথির হাতটা শক্ত করে ধরে আছে
তিথিঃ কি করছেন কি হাত ছাড়ুন,,,,
আবিরঃ এই তিথি পরটা দাও তো,,,(তিথিকে চোখ টিপ দিয়ে)
তিথিঃ হে???(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
আবিরঃ পরটা দিতে হে করতে বলি নাই,,,(মুচকি হেসে)
আবির ইচ্ছে করে এমন করে,,রেগে তো তিথির অবস্থা খারাপ,,কাল এতো সুন্দর করে প্রোপজ করেছে আর আজ তিথিকে জ্বালাছে,,,,রেগে পরটা দেয় আবিরকে,,,
আবিরঃ কি হলো খাচ্ছো না যে?
আবিরের মাঃ কি হলো তিথি খাচ্ছো না কেন?
তিথিঃ (খাবো কিভাবে এই বজ্জাত টা যে আমার হাত ধরে রেখেছে)
আবিরঃ মা তিথিকে মনে হয় খাইয়ে দিতে হবে আচ্ছা আমি খাইয়ে দেই,,,
আবিরের মাঃ তোমাকে আর খাইয়ে দিতে হবে না তুমি তোমার টা খাও বাবা,,আমি খাইয়ে দিচ্ছি
তিথি ভেঙ্গচি দিয়ে অন্য দিকে ফিরে যায়,,বেচারা আবির ভেবেছে বউটাকে নিজের হাতে খাইয়ে দিবে কিন্তু আর কই হলো তাই হাতটা ছেড়ে দিয়ে নিজের খাওয়া নিজে খাচ্ছে,,,,আবিরের মা এসে তিথিকে খাইয়ে দিতে থাকে,,,
আবির নাস্তা করে নিজের রুমে চলে যায় গিয়েই ঘুম,,তিথি আর যায় নাই রুমে সবার সাথে গল্প আলাপ করছে কত দিন পর আজ এসেছে তাই সবার সাথে গল্প করে,,,
বিকালে আমান আর তিশা ও আসে,,তাদের দেখে বেশ ভালোই লাগছে তিথির,,,সবাই এক সাথে বসে গল্প করছে,,আবির তিথি এক পাশে বসা,,আহাদ আর আরিশা এক পাশে,,তিশা আমানের পাশেই আছে হাতটা ধরে,,,রিতু আয়ুশকে কোলে নিয়ে বসে আছে শিহাব পাশেই,,,
তিথিঃ আজ অনেক ভালো লাগছে তাই না???
আবিরঃ কেন?
তিথিঃ কেন আবার এতো দিন পর বাড়ি আসলাম তাই,,,
আমানঃ তো কাল কেমন গেলো?
তিথিঃ সে রকম আমান,,বিশ্বাস করবে না কত ভালো লেগেছে আমার,,আর জানো উনি যখন আমাকে কি,,,
তিথি আর কিছু বলতে পারে নাই কারণ আবির তিথির মুখ চেপে ধরে,,,
এইদিকে সবাই তো হা করে তাকিয়ে আছে তিথির দিকে,,,আমান হেসে বলে উঠে
আমানঃ কি.?সম্পন্ন তো বলো তিথি(ফাজলামি করে)
আবিরঃ আরে দূর ওর মাথায় এমনি গন্ডগোল ওর কথা কি শুনছিস,,,,,
তিথি আবিরের হাতটা সরিয়ে বলে
তিথিঃ আমি একদম ঠিক আছি হু,,,আর আপনি তো আমাকে প্রোপজ করলেন এইটা বললে কি হয় হ্যাঁ????
আবিরঃ চুপ থাকবে একটু,,,,,
তিথি মুখে হাত দিয়ে চুপ করে বসে আছে,,,,আবিরের মা বাবা সবাই আসে,,,
আবিরের মাঃ আবির বিয়ের পর কেউ কোথাও ঘুরতে যেতে পারিস নাই তাই তোর বাবা আর আমি তোদের ৪ কাফেলের জন্য হানিমুনের টিকেট কেটেছি,,,
তিথিঃ ইয়াহুউউ হানিমুন যাক ফাইনালি আমার স্বপ্ন পূরন হবে,,,
সবাই তো হা করে তাকিয়ে আছে তিথির দিকে,,,,আবির তো কপালে হাত দিয়ে বসে আছে,,,সবাই এইভাবে তাকিয়ে আছে দেখে তিথি কিছু টা লজ্জা পায়,,,লজ্জা পেয়ে বলে উঠে
তিথিঃ না মানে আমার না তিশা আরিশার স্বপ্ন পূরন হব্র আর কি,৷
তিশাঃ আমাদের স্বপ্ন মানে?
তিথিঃ আরে অইযে বিয়ের দিন বললে হানিমুনে যাওয়া তোমাদের স্বপ্ন তাই,,,,
তিশাঃ কবে বললাম এইটা???
সবাই হেসে উঠে,,,,
আবিরঃ হ্যাঁ কার স্বপ্ন সবাই জানে তো আপনি প্লিজ চুপ থাকেন,,,,
আবিরের মাঃ পাগলী একটা,,,,
তিথিঃ না মানে আমার আবার এতো হানিমুনে যাওয়ার ইচ্ছে নাই,,,,সবাই এতো জোর করছে তাই,,,
আরিশাঃ ভাবি কেউ জোর করে নাই না শুধু মাত্র টিকেট এর নাম নিয়েছে,,,,,
তিথি তো লজ্জায় শেষ বেচারি হুট করে এমন কথা বলে ফেলেছে যে এখন নিজেই লজ্জায় শেষ হচ্ছে সবার সামনে,,,,,
রিতুঃ তোর যে এই স্বপ্ন তা আমরা সবাই জানি বুজলি,,,,
তিথিঃ হু,,,,,
আবিরের মাঃ আচ্ছা হইছে ওকে আর পঁচাতে হবে না,,,,টিকেট কাটা হইছে সবাই রেডি হয়ে নাও,,,
আবিরঃ মা আমরা সবাই নানুর বাড়ি যেতে চাই,,,অইখানে জায়গা এতো সুন্দর যে বাহিরে আর যাওয়ার দরকারই নাই,,,, তাই তুমি যদি অনুমতি দাও তাহলে আমরা সবাই অইখানে যেতে পারি,,
আবিরের বাবাঃ হ্যাঁ এইটা গুড আইডিয়া,,,তোমরা ৮ জন কালকেই বের হয়ে যাও,,,
শিহাবঃ আংকেল ৮ জন মানে ওরা তো ৬ জন,,,,
আবিরের মাঃ ওদের সাথে তোরা ও যাবি,,,তুই আর রিতুও
রিতুঃ কিন্তু আন্টি আমরা কেন?আমাদের তো নতুন বিয়ে হয় নাই,,,
শিহাবঃ হ্যাঁ ফুফু আমাদের যেতে হবে না,,আমরা বরং আমাদের বাড়ি যাই,,,
আবিরের মাঃ বেশি কথা বলিস না তো,,,,
আমানঃ হ্যাঁ শিহাব আয় মজা হবে,,,
আরিশাঃ মাম্মা শুধু কি আমরা?
আবিরের মাঃ হুম,,,বিয়ের পর তো যে তুফান গেলো আর যাওয়া হয় নাই,,,ভেবেছি তোদের এই সারপ্রাইজ বিয়ের পর এই দিবো কিন্তু সব কিছু,,,,
আবিরের বাবাঃ বাদ দাও সে কথা,,কাল সকালেই বের হবে সবাই
সবাই তো অনেক খুশি,,,সব চেয়ে বেশি কেউ খুশি হলে সেটা তিথি,,,,নিজের রুমে গিয়ে গালে হাত দিয়ে বসে আছে,,,,
আবির রুমে ডুকেই দেখে গালে হাত দিয়ে গভীর ভাবে যেন কি চিন্তা করছে তিথি,,,
আবিরঃ কি ব্যাপার আমার বউটা এতো কি ভাবছে,,,
তিথিঃ কাল যে আমরা সবাই হানিমুনে যাবো আমার তো একটা কাপড় ও এখানে নাই সব তো আমাদের বাড়ি,,,,
আবিরঃ অহ এই ব্যাপার তাহলে
তিথিঃ এতো বড় সমস্যা আর আপনি এমন ভাবে বলছেন মনে হচ্ছে কিছু না,,,,
আবিরঃ হুম সেটাই ছোট ব্যাপার এইটা,,,,
তিথিঃ আপনার সাথে কথা বলাই বেকার,,,,
আবিরঃ আচ্ছা আমি আমানের সাথে একটু বাহিরে যাচ্ছি আসতে লেট হবে,,,,
আবির এই বলে রুমে থেকে চলে যায়,,,তিথির প্রচুর রাগ উঠে এই ভেবে যে তার একটা ড্রেস নাই আর আবির ও কিনা তার হেল্প না করে উল্টো চলে গেলো,,,,
তিথির মন খারাপ হয়ে যায়,,,,রিতু তিশা আরিশা ওরা এসে তিথির সাথে গল্প করতে থাকে,,সময় টা এইভাবে পার হয়ে যায় তার,,,
রাত অনেক হলো আবির এখনও আসে নাই তিথির খুব চিন্তা হচ্ছে এইভেবে যে আবির এতো রাত পর্যন্ত কই গেলো?অনেক গুলো কল মেসেজ দিচ্ছে কিন্তু ধরছেই না,,,,রুম থেকে বের হতে লাগেই অই সময় আবির আসে,,,
তিথিঃ আপনার কি আক্কেল জ্ঞান বলতে কিছু নাই হ্যাঁ (প্রচুর রেগে)
আবিরঃ আমি আবার কি করলাম যে এইভাবে রেগে যাচ্ছো???
তিথিঃ কয়টা কল দিচ্ছি হ্যাঁ???
আবিরঃ ওহ সরি পকেটে ছিলো ফোন,,,,আর হাতে শপিং প্যাকেট যে বের করতে পারি নাই,,,
তিথিঃ হু,,,,,
আবিরঃ আচ্ছা এই দিকে আসো,,,
আবির প্যাকেট গুলো বিছানায় রেখে তিথিকে টেনে এনে একটা প্যাকেট থেকে একটা শাড়ি বের করে দিয়ে বলে
আবিরঃ কেমন?
তিথিঃ কার জন্য?
কিছু টা বিরক্তি ভাব নিয়ে বলে উঠে
আবিরঃ আমার সেকেন্ড বউয়ের জন্য,,,,
আবিরের কলার চেপে ধরে রেগে গজগজ করতে করতে বলে উঠে
তিথিঃ আমি ছাড়া অন্য মেয়ের কথা মাথায় আনলেও খুন করবো হুম,,
আবিরঃ জানি তাই এতো সাহস নাই যে এলিয়েন ছেড়ে আবার অন্য কারো পাল্লায় পড়বো,,একটা তো সামলাতে পারি না আবার অন্য কেউ,,,
তিথিঃ কি বললেন,,,
আবিরঃ উফফ কিছু না,,,চুপচাপ এখানে বসবে একটা কথা বললে কিন্তু সোজা কিস করে দিবো হুম,,,
কিস করার নাম শুনেই তিথি চুপচাপ বসে পড়ে,,,প্যাকেট গুলো খুলেই আবির দেখাতে থাকে তিথিকে একটা একটা বেশ সুন্দর সুন্দর শাড়ি আর থ্রি পিছ নিয়ে আসে,,,,
আবিরঃ এখন সব প্যাকিং করে নাও সকালে তাড়াতাড়ি বের হতে হবে তো,,,,,
তিথিঃ আচ্ছা আপনার নানার বাড়ির পাশে তো সার্জেক তাই না?
আবিরঃ হুম কিছু টা দূর বাট বেশি না,,,,
তিথিঃ অইখানে যাবেন?শুনেছি অনেক সুন্দর জায়গা
আবিরঃ হুম অসাধারণ জায়গা,,,কাল নানার বাড়ি আগে উঠি তারপর অইখানের কিছু বিখ্যাত জায়গায় তোমাকে নিয়ে যাবো হেপ্পি,,,,
তিথি আবির আর তার প্যাকিং করে নেয়,,,
সকালে,,,,
সবাই রেডি যাওয়ার জন্য,,,,দুইটা গাড়ি নেয় তারা আবির ড্রাইভ করছে পাশেই তিথি,,পিছনের সিটে তিশা আর আমান,,,,অন্য গাড়িতে শিহাব ড্রাইভ করছে তার পাশে রিতু আর রিতুর কোলে আয়ুশ পিছনের সিটে আহাদ আর আরিশা,,,,
তারা আট জন চলে যায় নানার বাড়ি,,,গ্রাম এলাকা অনেক সুন্দর পরিবেশ টা,,
তিথি তো গাড়ির জানালার গ্লাস খুলে দিয়ে বাতাস উপভোগ করছে, বাতাসে চুল গুলো আবিরের মুখে আসছে, তিথির মুখের হাসি টুকু আবিরের কাছে বেশ লাগছে,,,তিথির সে চঞ্চলতা হাসি মাখা মুখ খানি সব সময় ফাজলামি দুষ্টুমি সব কিছু যেন আবিরের মন কেড়ে নেয়,,,,তিথির মধ্যে বাচ্চামি অনেক কিন্তু সিরিয়াস মুডে সে অনেক টা সিরিয়াস হয়ে সব সামলায় আর তার মধ্যে বাচ্চামিটা হয়তো বেশি কিন্তু এইটা যে আবিরের কাছে বেস্ট লাগে,,,,নিজে সব সময় হাসে আর অন্যকে হাসায়,,,রাগ অভিমান যত থাকুক না কেন বেশি সময় যেন তার মধ্যে থাকেই না একটু হেসে বললেই সে হেসে দেয় সব ভুলে আগের মত হয়ে যায়,,,
অনেক ক্ষন পর তারা একটা বড় বাড়িতে আসে,,বাড়িটা বেশ পুরানো,,,গাড়ি সাইট করে সবাই নামে এতো সুন্দর এলাকা যে তিথি তিশা দুইজনে হাত ধরে দাঁড়িয়ে চারপাশ দেখছে,,আর আবির আমান তারা ব্যাগ নামাছে,,,,বাড়ির মধ্যে থেকে কয়েকজন লোক এসে ব্যাগ গুলো নিয়ে যায়,,,
আমানঃ শিহাব তারা এখনও আসে নাই যে?
আবিরঃ হয়তো রাস্তায় দাঁড়া কল দেই,,,
আমানঃ আর দেওয়া লাগবে না অই তো এসে গেছে,,,
শিহাব রিতু আহাদ আরিশা ওরা ও গাড়ি থেকে নামে,,,সবাই এক সাথে বাড়ির মধ্যে যায়,,আবিরের নানি তো বেশ খুশি সবাই কে দেখে,,,আবিরের মামি এসে আরিশাকে জড়িয়ে ধরে আগে,,বাড়ির সবাই তো এতো খুশি ওদের দেখে যে এইভেবে তারা এখানে আসার জন্য প্লেন করেছে,,,
চলবে,,,,,