প্রেমের পাঁচফোড়ন

প্রেমের পাঁচফোড়ন !! Part- 59

রুপার পাশে চুপ করে বসে আছে আহানা,শরীর খারাপ করছে তাও মুখে ফুটে বলা বারণ,এসব জানলে শান্ত অনেক চিন্তা করবে তার উপর সে শান্তকে বলেছে এখানে আসলে শরীর খারাপ হবে না তার,গ্যারান্টি দিয়ে এসেছে তাই এখন কিছু মোটেও বলা সাজে না
সেই শরীর তো খারাপ হলোই,বড় বড় শ্বাস নিয়ে নিজেকে ঠিক করার চেষ্টা করছে সে,পাশে তাকিয়ে শান্তর দেওয়া পানির বোতলটা দেখতে পেয়ে পানি নিয়ে খেলো
এখন কোনোরকম লাগতেসে,একেবারে ভালো ও না আবার খারাপ ও না
রুপার বাবা এসে বললেন বিয়ের সব প্রস্তুত,বিয়ে পড়ানো শুরু হয়ে গিয়েছে
রুপা আহানার হাত ধরে চোখ বন্ধ করে বসে আছে,প্রত্যেকটা মেয়ের কাছে এই অনুভূতিটা বিশেষ,,বুকের ভেতর কেমন কেমন করে এই সময়টায়
আহানার তার আর শান্তর বিয়ের কথা মনে পড়ে গেলো,সেদিন কি পরিস্থিতিতে তাদের বিয়েটা হয়েছিল,আগে থেকে আবাশ ও পায়নি সে,হুট করে এসে জানতে পারলো আজ তার বিয়ে,শান্তর নরমাল বিহেভ দেখে ভয়টা আরও বেশি লাগছিল সেদিন
ভাবতে ভাবতে আহানা চোখ বন্ধ করে হাসলো
আবার চোখ খুলে তাকিয়ে দেখলো দরজার সামনে থেকে শান্ত ও হেসে চলে যাচ্ছে,হয়ত তারও আমার মত একই অনুভূতি হচ্ছে
বিয়েটা সুন্দরভাবেই সম্পন্ন হয়ে গেলো,,সবাই খেতে বসেছে
হইচই লেগে গেছে,রিয়াজ সূর্য আর শান্ত দৌড়ের উপর আছে
নওশাদ বিলাইয়ের মত স্টেজে বসে ওদের ব্যস্ততা দেখতেসে
বসে বসে নিজের বেস্টফ্রেন্ডদের কামলা খাটতে দেখাটায় এক পৈশাচিক আনন্দ পাওয়া যায় নওশাদ সেই মজাটাই নিতেসে
আহা এই হারামিগুলোকে দিয়ে জীবনে কোনো কাজ করাতে পারিনি আর আজ দৌড়ে দৌড়ে কামলা খাটতেসে,মন তো করতেসে ভিডিও করে ওদের টাইমলাইনে ছেড়ে দিই,ধুর!!এমন সুবর্ণ সুযোগ হাত ছাড়া করতে হচ্ছে

শান্ত এক প্লেট খাবার নিয়ে আহানা যে রুমে বসে আছে রুপার সাথে ঠিক সেই রুমে ঢুকলো
সবাই তো ওকে দেখে নড়েচড়ে বসে পড়েছে,শান্ত সোজা এসে আহানার সামনে চেয়ার টেনে বসে পড়লো,রুপা হেসে বললো কি ভাইয়া?আমাদের গার্লস জোন এ বসে খাবার খেতে মন চাইলো নাকি?
শান্ত লোকমা বানাতে বানাতে বললো “জি না,আমার বউকে খাওয়াতে এসেছি কারণ সে নিজের হাতে ২লোকমার বেশি খেতে পারবে না তাই আমি খাইয়ে দিব পুরো এক প্লেট”
সব মেয়েগুলো জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে,এরকম হাসবেন্ড আর কার হয় যে বিয়েবাড়িতে নিজে স্ত্রীকে খাইয়ে দেয় সবার সামনে
আহানা চুপচাপ শান্তর হাতে খাবার খেয়ে যাচ্ছে,তার একটা হাত শান্তর হাঁটুতে কখন যে রেখেছে তার খেয়ালই ছিল না
শান্ত তার বাঁ হাত দিয়ে আহানার চুলগুলো কানের কাছে গুজে দিয়ে উঠে চলে গেলো
আহানা পানি খাওয়ার জন্য বোতলটা নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বললো “আপনি??”
.
শান্ত চলে যাওয়ার সময় থেমে বললো “নওশাদের সাথে এখন খেতে বসবো”
.
কথাটা শুনে আহানা মাথা নাড়ালো
.
একটা মেয়ে চুল ঠিক করতে করতে এগিয়ে এসে বললো তোমাকে অনেক ভালোবাসে তাই না?
.
আহানা মুচকি হেসে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে
.
তা কিভাবে প্রেমে পড়লো তোমার?
.
রুপা দাঁত কেলিয়ে বললো””” চড় দেওয়ার পর থেকে দুজনে ঝগড়া করার জন্য এমন চুইংগামের মতো লাগছে যে একেবারে সেটা বিয়ে পর্যন্ত চলে এসেছে,হাহাহা”””

চড়??তুমি উনাকে চড় দিয়েছিলা?তোমাকে পাল্টা কিছু করেনি? তারপর??
.
আহানা পানি খেতে খেতে বললো “২বালতি পানি ঢেলে দিসিলো আমার গায়ে”
.
সবাই হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে,বাহহহ ইন্টারেস্টিং তো!!তারপর প্রোপোজ করলো কবে?
.
আহানার সেইদিনের কথা মনে পড়লো,লজ্জায় লাল হয়ে গেলো সে
একটা মেয়ে এগিয়ে এসে বসে বললো প্রোপোজের কথা জিজ্ঞেস করসি kiss এর কথা নয়,তোমার গাল এত ব্লাশ হচ্ছে কেন
.
আহানা উঠে চলে গেলো বাইরের দিকে,বাইরে শান্ত নওশাদ আর রিয়াজের সাথে খেতে বসেছে
আহানা শান্তকে দেখে আবার ফিরে আসলো,একটা মেয়ে চমকে বললো “তোমার হাতে ক্যানেলার কেন?”
.
আসলে আমাকে রক্ত দেওয়ার জন্য এটা লাগাইসে
.
ও মাই গড তুমি তো তাহলে সিক,বসো এখনে
.
সবাই মিলে ধরে ওকে বসিয়ে দিলো
.
বাবার ফোন আসতেই শান্ত বিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে খালি রাস্তায় এসে দাঁড়ালো

কিরে শান্ত??তুই কই?? আর এত শোরগোল শোনা যাচ্ছে কেন?
.
বাবা আমি নওশাদের বিয়েতে,,, নরসিংদী এসেছি,তোমাকে বলসিলাম না?
.
ওহ আচ্ছা,শুন
.
হুম বলো

আমি মাছ,মাংস,সবজি চাল ডাল সব কিনে বাসায় ঢুকাইসি,গরু ১টা আনছি,তোদের কাল গায়ে হলুদ,পরশু আল্লাহ দিলে তোদের বিয়ে,তোদের তো রেজিস্টার করে বিয়ে হয়নি,সেদিন রেজিস্টার করে বিয়েটা দিয়ে দিব তোদের,তুই আহানাকে নিয়ে আজ সন্ধ্যায় মোহনগঞ্জের জন্য ট্রেন ধর
.
বাবা এক মিনিট,এসব কি বলতেসো তুমি?আমাকে একবারও জিজ্ঞেস করসো??
.
এটা জিজ্ঞেস করার কি আছে?আমি তো তোদের ধুমধাম করে বিয়ে দিব বলসি তাহলে এত চমকাস কেন?সবাইকে জানাতে হবে না যে আমার ছেলে বিয়ে করতেসে
.
বাবা কাল বৌভাত,নওশাদ আমাকে যেতে দিবে না
.
না দিক,ওদের সহ নিয়ে চলে আয় তাহলে,আলহামদুলিল্লাহ আমার বাসায় রুমের অভাব নেই,আর নওশাদ তো অনেকদিন থেকে মোহনগঞ্জ আসতে চেয়েছিল
.
বাবা এটা সম্ভব না
.
তুই চুপ কর,নওশাদকে ফোন দে,ওর সাথে কথা বলবো আমি
শান্ত বিরক্ত হয়ে নওশাদকে ফোন দিলো
নওশাদ হ্যালো বলতেই বাবা অফার করে বসলেন
.
নওশাদ তুমি তোমার ওয়াইফকে নিয়ে মোহনগঞ্জে হানিমুন করতে চলে আসো,কোনো কমতি হবে না,এখানে রিসোর্ট আছে তোমরা ইঞ্জয়ও করতে পারবা
সব খরচ আমার তুমি শুধু শান্তকে বুঝাও যেন কাল আসে
আমি আমার আত্নীয়স্বজন সবাইকে দাওয়াত দিয়ে ফেলেছি
.
ঘোড়ার গাড়ীর ব্যবস্থা হবে?বরের দোস্তরা প্রবেশ করার জন্য?
.
হেহেহে,দুষ্টু ছেলে,ঠিক আছে যাও,ব্যবস্থা করে দিব তুমি শুধু আমার অবুঝ ছেলেকে বুঝাও

শান্ত ব্রু কুঁচকে বললো কি ওমন করে চেয়ে আছিস কেন?আমাকে এখন বলবি না যে মোহনগঞ্জ চল,আমি যাব না,আরে আজব আহানাকে এখনও ২ব্যাগ রক্ত দিতে হবে,আমার দ্বারা হবে না,আই কান্ট ডু দিস
.
ইয়েস ইউ ক্যান,তোর কি মন চায় না আহানাকে নিজের করে নিতে?তোদের এখনও আগলা আগলা ভাব দেখে তো বুঝায় যায় একজন আরেকজনকে ছুঁয়েও দেখোস নি
.
কিন্তু আহানা?
.
আরে ওর চিন্তা করিস না,এক ব্যাগ তো অলরেডি দিয়েই দিছিস তাহলে এখন টেনসন একটু হলেও তো কমেছে তাই না??
বিয়ের পরে নাহয় বাকি ২ব্যাগ দেওয়া যাবে
আর তোর যদি ভালো না লাগে তাহলে তোর হয়ে আমি আঙ্কেলকে বুঝিয়ে দিব,মতামত জানা আমাকে
.
আচ্ছা দেখি আহানা কি বলে
.
শান্ত বাসায় ঢুকে এদিক ওদিক তাকিয়ে আহানাকে কোথাও দেখতে পেলো না,মনে ভয় জাগলো এই ভেবে যে আহানার কিছু হয়নি তো
আহানা রুপার জন্য সাজানো বাসরে গুটিশুটি দিয়ে এক কোণায় ঘুমিয়ে পড়েছে
শান্ত মুচকি হেসে এগিয়ে এসে ওকে কোলে তুলে নিলো কারন এভাবে এই রুমে থাকাটা ভালো দেখায় না
নওশাদ রুপার কাজিনরা হাততালি দেওয়া ধরতেই শান্ত চুপ করতে বললো,আহানা গভীর ঘুমে
শান্ত ওকে নিয়ে আরেকরুমে আসলো,বিছানায় রাখতেই আহানা জেগে গিয়ে চমকে পিছিয়ে গেলো
শান্ত মুখটা গম্ভীর করে বললো বাবা আমাদের বিয়ের সব রেডি করে ফেলেছে
কাল নাকি গায়ে হলুদ,আমাদেরকে আজ রাতেই মোহনগঞ্জ যেতে বলেছে
আজ তো নওশাদের বিয়ের কথা বলে রাফিকে মানিয়ে অনেক রিকুয়েস্ট করে ছুটি নিয়েছি,কিন্তু এরপর? সেটা না হয় অ্যাপলিকেশন করে ছুটি নেওয়া যাবে কিন্তু তোমাকে রক্ত দেওয়ার কি হবে?
.
আহানা চমকে বললো “বিয়ে??””
.
তুমি বলো কি করবো?বাবা নাকি সবাইকে দাওয়াত ও দিয়ে ফেলেছে তার উপর নওশাদকে বলছে রুপাকে নিয়ে আমাদের সাথে যেতে,এত জলদি সব করে ফেললো আমাকে একবার বললো ও না,সব রেডি করে এখন বলতেসে

আহানা চুপ করে থেকে বললো কি আর করার সব যেহেতু সব রেডি করে ফেলেছে
.
শান্ত মাথা তুলে তাকিয়ে বললো “আহানা ম্যাডাম!!আপনি আমাকে বিয়ে করতে তৈরি??আমি কিন্তু ঐ কাগজের শর্ত ভাঙ্গবো!!!
.
আহানা হেসে আরেকদিকে ফিরে বসলো
.
তাহলে তুমি রাজি যখন আমি বাবাকে বলে দিচ্ছি
.
শান্ত বাবাকে ফোন করে জানিয়ে দিলো,বাবা তো খুশিতে শেষ,নওশাদ রাজি করিয়েছে ভেবে ওর উপহার স্বরুপ রিসোর্ট ও বুক করে ফেললেন
বিকাল ৪টা বাজে,নওশাদ আর রুপা বাসর ঘরে বসে ছবি তুলার জন্য বিভিন্ন পোজ দিতেসে,রিয়াজ আর সূর্য পিক তুলতেসে
একবার জানালায় ঝুলে আবার বিছানায় গোল হয়ে বসে
কত প্রকার পোজ আছে সব গুগল করে বের করিয়েছে রুপা
আর রুমের এক কোণায় আহানা মুচকি হেসে ছবি তোলা দেখছে আর শান্ত???
সে তো আহানার শাড়ীর আঁচল নিয়ে গিট্টু দিতেসে আর ফোনে বাবার সাথে কথা বলতেসে
বাবা কি ফুল আনবে,কাউকে দাওয়াত দেওয়া বাকি আছে কিনা সেটা জানার জন্য সব জেনে নিচ্ছেন শান্ত থেকে
আহানা পিঠের উপর কিছুর স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠলো,হাতের নয় তবে ফুলের
শান্ত ফুল দিয়ে ওর পিঠের উপর নাড়াচ্ছে,সুড়সুড়ি দিচ্ছে
আহানা ব্রু কুঁচকে ওর দিকে তাকাতেই ও বাইরের জানালার দিকে তাকিয়ে বললো “হ্যাঁ বাবা টুটুল মিয়াকে দাও
হ্যাঁ টুটুল মিয়া ভালা আছোনি??বাসর কিন্তু পুরো গোলাপের হতে হবে”
.
আইচ্ছা বাবা!!
.
আহানা কথাটা শুনে লজ্জা পেয়ে চলে গেলো

ফটোশুট শেষ হতেই নওশাদ সবার মুখের উপর দরজা লাগিয়ে ফেলছে
এমন করার কারন আছে,কারণটা হলো কেউ ওকে রুপার সাথে কথা বলতেই দিচ্ছিলো না,একবার একজনে এসে এক ধরনের কথা বলে মাথা খাচ্ছিলো
আহানা আর শান্ত হাসতে হাসতে শেষ নওশাদের কান্ড দেখে
.
আহানা চলো বাসায় ফিরতে হবে,দাদা দাদিকে পার্সোনালি ইনবাইট করে অফিসের সবাইকে ইনবাইট করতে হবে তারপর আমার সেই ১৮/২০জনের শান্ত গ্যাংয়ের সবাইকে ইনবাইট দিতে হবে,তুমি এই ফাঁকে সব গুছিয়ে নিবে কি কি লাগবে সব
.
আহানা মাথা নাড়ালো,শান্ত নওশাদ আর রুপার রুমের বাইরে এসে গলা ঠিক করে বললো
ঐ হারামি নওশাদ!!!আমি যাচ্ছি,মোহনগঞ্জে কি আমার সাথে যাবি নাকি পুরো রাত শেষ করে যাবি?
.
হারামি স্কয়ার- শান্ত তুই যা
সন্ধ্যা ৭টার ট্রেনে করে যাবো আমরা,,কমলাপুর রেলস্টেশনে দেখা হবে,গেলে তো তোর সাথেই যাবো
.
আচ্ছা বাই,অল দ্যা বেস্ট!!
.
শান্ত আহানাকে নিয়ে বেরিয়ে আবারও বাস ধরলো
শান্ত এক এক করে বলে যাচ্ছে আহানাকে তাদের বাসায় ঢুকে কি কি বলতে হবে,কি কি করতে হবে
আহানা শুধু মাথা নাড়িয়ে যাচ্ছে
.
আচ্ছা রুপার বৌভাত হবে না?
.
নওশাদ এমনিতেও অনুষ্ঠান চায়নি,বৌভাত এমনিতেও হতো না
.
ওহহ
.
হ্যাঁ বাবা ওকে রিসোর্টের লোভ দেখায়াইসে ব্যস হয়ে গেলো!!এবার ও ১৪গুষ্টিকে রাজি করাতেও প্রস্তুত

বাসায় ফিরতে ফিরতে ৬:৩০বেজে গেসে,শান্ত সোফায় বসে একটা ছোট নোটবুক নিয়ে সেখান থেকে সবার নাম্বার ফোনে উঠিয়ে ফোন করে বলতেসে বিয়েতে আসার জন্য
দাদা দাদিকে অনেক করে বলার পর ও তারা মাথায় হাত রেখে বললেন আসা সম্ভব নয়,তারা বাড়ি ছেড়ে কোথাও যায় না কখওনও
আহানা তার বাসায় পরার জন্য কয়েকটা শাড়ী নিলো সব গুছিয়ে নিতে গিয়ে থমকে গেলো হঠাৎ
আচ্ছা!!এই বিয়েটা মানে হলো আমি শান্তকে আমার কাছে আসার সম্মতি দিয়ে দিচ্ছি??
কিন্তু আমি আসলেই বাঁচবো কদিন??আমার তো মনে হয় আমি বেশিদিন বাঁচবো না,রুগী জানে সে আসলেই সুস্থ হবে কি হবে না
আর আমার মন বলছে আমি আর বেশিদিন নেই
আহানা বারান্দার দিকে তাকালো,শান্ত হেসে হেসে ওর বন্ধুদের সাথে কথা বলে যাচ্ছে
ওর এই হাসি কি আমি রক্ষা করতে পারবো??
.
শান্ত ফোন রেখে এসে আহানার হাত ধরে ওকে সোফায় বসিয়ে নিজে নিচে হাঁটু গেড়ে বসলো
.
কি হয়েছে?
.
ডাক্তারের সাথে কথা বললাম,উনি বললেন যেহেতু বিয়েতে দেরি হবে ক্যানেলার যেন খুলি ফেলে
.
আপনি খুলবেন?
.
হুম
.
আহানা ঢোক গিলে ঠিকঠাক হয়ে বসলো
শান্ত আহানার চোখে হাত দিয়ে ওর চোখ বন্ধ করে আস্তে আস্তে ক্যানেলার খুলে ফেললো
আহানা হালকা ব্যাথা পেলো বেশি না
.
চলো ৭টা বেজে আসছে জলদি করে কমলাপুর রেলস্টেশন যেতে হবে
.
হুম
.
আহানা তার বাসার দিকে একবার তাকিয়ে বের হয়ে গেলো,এরপর যখন সে শান্তর সাথে এই বাসায় আসবে তখন অফিসিয়ালি মিসেস আহানা শাহরিয়ার রুপে আসবে
কমলাপুর রেলস্টেশন এসে শান্ত এদিক ওদিক তাকালো কিন্তু নওশাদ আর রুপাকে কোথাও দেখতেসে না এর ভিতর ওরা ফোন ও তুলতেসে না
শান্ত আহানাকে নিয়ে ট্রেনে উঠে দেখলো নওশাদ আর রুপা বসে বসে সেলফি তুলতেসে
নওশাদ থ্রি কোয়াটার প্যান্ট আর টিশার্ট পরেছে যেন কক্সবাজার যাচ্ছে সে
শান্ত রেগে দুম করে ঘুষি মেরে দিলো নওশাদকে
.
আরে কুল ডাউন,কুল ডাউন,তোরা আসতে দেরি করেছিস কিন্তু আমরা করিনি,দেখ কেমন বসে পড়েছি
.
তুই ফোন ধরতেসিলি না কেন?
.
পিক তুলতেসিলাম ভাই,
.
তাই বলে ফোন ধরা যায় না?
.
যায় তো,তোকে জানালা দিয়ে দেখতে পেয়ে আর ফোন ধরিনি,তোকে ডাক দিলাম তুই তো আমাদের রেখে আহানার দিকে তাকাচ্ছিলি ২০০বার আর ঐ পাশের রোডের দিকে তাকাচ্ছিলি ১০০বার,কি আর করতাম??
.
তোর মত!!! আর বললাম না সর এখন
.
মানে কি আমি আমার নতুন বিয়ে করা বউয়ের পাশে বসবো তুই তোর বউয়ের পাশে বস
.
শান্ত আহানাকে নিয়ে ওদের সামনে বরাবর সিটে বসলো
.
শান্ত সিগারেট একটা ধরিয়ে মুখে দিয়ে হেসে দিলো,তারপর শয়তানি হাসি দিয়ে নওশাদের দিকে তাকালো,নওশাদ ফোনে গেমস খেলতেসে
.
নওশাদ?তোর কপালে লিপস্টিকের দাগ

নওশাদ এদিকওদিক না তাকিয়ে পাগল হয়ে টিসু নিয়ে কপাল ঘষতে ঘষতে শেষ
আহানা মুখ টিপে হাসতেসে আর রুপা নওশাদকে ঝাঁকিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো-বুদ্ধু কোনো দাগ নেই,শান্ত ভাইয়া মজা করতেসে
.
নওশাদ রেগে শান্তর সাথে মারামারি শুরু করে দিলো
মাইর শেষে দুজনে চুপ করে বসে সিগারেট খাওয়া শুরু করলো আবার
.
ট্রেন চলতেসে,রাতের পরিবেশ,আহানা গাল ফুলিয়ে বাইরে তাকাচ্ছে আবার নওশাদ রুপার দিকে তাকাচ্ছে,রুপা ফেসবুকে পিক আপলোড করায় বিজি আর নওশাদ ফোনে কথা বলায় বিজি
পাশে শান্ত গেমস খেলতেসে
আহানা বাইরে তাকাতে তাকাতে ঘুমিয়ে পড়েছে
শান্তর গলার আওয়াজে চোখ খুললো সে
মোহনগঞ্জ নাকি এসে পড়েছে
শান্তর হাত ধরেই মোহনগঞ্জে পা রাখলো সে
চলবে♥
(সবাইকে শান্ত আর আহানার বিয়ের দাওয়াত দিলাম,আসবেন কিন্তু,আসার সময় চিপস,চকলেট নিয়ে আসবেন, আপনাদের লেখিকা ম্যাম খাবে)