বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 53
নেহালঃ মায়রা আমাকে একটা বক্স দেয় যেটা তিথি ভাবিকে দিতে বলা হইছে সে বলে যে এইটা নাকি তিথি ভাবির বিয়ের গিফট সে দিলে নাকি তিথি ভাবি নিবে না,,আমি ভাবিকে দিবো সামনে আরিশা আসে আমি ভুল করে তাকিয়ে দিয়েই চলে যাই কিছু না ভেবে সে হয়তো তার জন্য ভেবে খুলে আর ছাদে যায় আর এইসব কিছু,,,এইসব কিছু আমার জন্য হইছে
আমানঃ না নেহাল তোকে শুধু ব্যবহার করেছে এই মেয়ে,,,ওর মত মেয়ে সব পারে
আবির এতো পরিমাণ রেগে যায় মায়রার গলা চেপে ধরে,,,মায়রার গলা চেপে ধরে এতো জোরে যে মায়রার চোখ লাল হয়ে যায়,,পরিবারের সবাই তো আবিরের এমন রুপ থেকে অনেক টা ভয় পেয়ে যায়,,,
আবিরঃ সাহস হয় কি করে আমার বোনের গায়ে হাত দেওয়ার???
আমান আর আকাশ মিলে আবিরকে ধরে
আমানঃ আবির ছাড় ওকে মরে যাবে,,,
আকাশঃ হ্যাঁ আবির ছেড়ে দে,, পুলিশ আসছে পুলিশকে পুলিশের কাজ করতে দে,,
আবিরঃ না পুলিশ পরে আগে আমি ওকে নিজের হাতে শাস্তি দিবো,,,,
মায়রা অনেক চেস্টা করছে আবিরের হাত থেকে ছাড়ার কিন্তু পারছে না,,,তিথিও প্রচুর পরিমাণ ঘাবড়ে যায় আবিরের এমন রুপ দেখে,,,
আবিরঃ না ওকে আমি নিজের হাতে মেরে ফেলবো,,,
তিথিঃ প্লিজ ছেড়ে দেন,,,
আমান আকাশ নেহাল ওরা অনেক কষ্ট করে আবিরকে এক পাশে এনে দাঁড়ায়,,মায়রা শ্বাস নিচ্ছে জোরে জোরে,,,
খালামনিঃ দুধ কলা দিয়ে এতো দিন কাল সাপ ঘরে রেখেছি আপ্পা আমরা,,,কি মারাত্মক ডেঞ্জারাস মেয়েরে বাবা আমাদের বাড়িতে থেকে আমাদের মেয়েকেই খুন করতে চেয়েছে,,,,
আমানের মাঃ ছেলে দেখে তো অনেক ভালো ভেবেছি কিন্তু এতো শয়তানি বুদ্ধি যে তার মাথায় আছে কে ভেবেছে,,,
আবির আকাশকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বলে
আবিরঃ ছাড় তো ওর মত মেয়ে বেঁচে থাকার অধিকার নাই,,,এমন ক্রিমিনাল মাইন্ড তার আগে ভাবা উচিত ছিলো আমার,,,
মায়রাঃ ব্যস অনেক বলেছো তুমি আবির অনেক,,,
আহাদের মাঃ এক তো অন্যায় করেছে কোথায় চুপ থাকবে তা না উল্টো গরম দেখাচ্ছে,,কথায় আছে না চোরের মার বড় গলা,,,,
মায়রাঃ আমি কোনো অন্যায় করি নাই ওকে,,,আমি যা করেছি একদম ঠিক করেছি,,,কিন্তু হ্যাঁ আমি আরিশাকে মারতে চাই নাই আমি তিথিকে মারতে চেয়েছি মাঝ খানে আরিশা এসেছে,,
তিশাঃ তুমি অন্যায় করো নাই রেলি মায়রা???কাউকে খুন করা অন্যায় না???
মায়রাঃ হ্যাঁ অন্যায় করি নাই আমি,, আমি যা করেছি সব আবিরকে পাওয়ার জন্য,,,,আমি আবিরকে ভালোবাসি ব্যস
তিশাঃ তোমাকে আমি তাহলে অইদিন কি বুজালাম মায়রা যে জোর করে সব পাওয়া গেলে ও ভালোবাসা পাওয়া যায় না,,,
আবির আমানের হাতটা সরিয়ে এসে মায়রাকে ঠাস করে চড় লাগিয়ে দেয়,,,
আবিরঃ পাগলামির লিমিট থাকে ওকে,,সব পাড় করে ফেলছো তুমি সব
মায়রাঃ তুমি আমাকে মারলে আবির??
আবিরঃ যা আমার অনেক আগে করা উচিত ছিলো,,,
আবিরের মা এক পাশে দাঁড়িয়ে সব দেখছে আর শুনছে,,,
মায়রাঃ আমি যা করেছি শুধু তোমার জন্য,,,আজ আমি কাউকে খুন করতে বাধ্য হলে তার জন্য শুধু মাত্র দায়ী তুমি,,,
তিথিঃ থাপ্পড় মনে হয় কম হয়ে গেছে তাই না?
মায়রাঃ হে ইউ আমার আর আবিরের মধ্যে একদম কথা বলবে না ওকে,,,
আবিরঃ ওয়েট তিথি সে কি বলতে চায় আমি একটু শুনি,,,
মায়রাঃ হ্যাঁ তুমি দায়ী আবির শুধু তুমি,,,তুমি আমাকে প্রমেস করেছিলে তুমি আমাকে বিয়ে করবে,৮ বছর ধরে তোমাকে ভালোবেসে এসেছি আমার জীবনের ৮ টি বছর আমি শুধু অপেক্ষা করছি তোমার বউ হতে,,আর তুমি কি করলে আবির এই মেয়েকে বিয়ে করে নিলে তাও আবার ভুল বুজে,,,,তুমি তো ওকে কখনোই ভালোবাসো নাই শুধু তোমার বোনের জন্য তাকে জোর করে বিয়ে করলে,
সবাই এই কথাটা শুনেই থমকে যায় আবিরের মা তো আরো বেশি,,,
আবির রেগে মায়রাকে বলে
আবিরঃ আমি যদি আমার বোনের জন্য তিথিকে বিয়ে করতে পারি তাহলে একবার ভাবো যে আমার বোনকে কেউ খুন করতে চাইলে তাকে আমি খুন করতে এক সেকেন্ড ভাববো না,,,
মায়রাঃ কয়বার বলেছি আমি যে আমি আরিশাকে নয় তিথিকে মারতে চাইছি,,আর তুমি তো তিথিকে ভালো ও বাসো না যে তার কিছু হলে তোমার কিছু যায় আসবে,,,
তিথি এই কথা শুনেই ভাবে আসলেই তো তাকে মারতে চাইছে আর আরিশাকে এইভাবে মৃত্যুর সাথে লড়াই করতে হচ্ছে,,আর আবিরের কিবা যায় আসে তিথির কিছু হোক বা না হোক,,,,মনটা মুহূর্তে ছোট হয়ে যায়,
তিশা মায়রার হাত ধরে নিজের দিকে ফিরিয়ে কষে সেও একটা চড় দেয়,,
তিশাঃ আমার ভাবতে ও ঘৃনা করে যে তোমার মত এতো নিচু মনের মেয়েকে এতো দিন আমি সার্পোট করেছি যার মন বলতে কিছু নাই,,,মায়রা ভালোবাসলে হয় না ওকে ভালোবাসার মানুষকে তার মত ছেড়ে দিতে হয় যে তোমার সে তোমারই হবে,,যার যে তোমার নয় হাজার কিছু করলে ও তোমার নয়,,
নেহালঃ রাইট তিশা ভাবি আমিও একটা ভুল মেয়েকে নিয়ে অনেক টা স্বপ্ন দেখে ফেলছি ভেবেছিলাম মেয়েটা অহংকারি জিদে রাগী কিন্তু এতো টা থ্রাড ক্লাস টাইপের মাইন্ড হবে তা ভাবি নাই,,,আজ নিজের উপর রাগ লাগছে এমন মেয়েকে আমি পছন্দ করেছি,,,আল্লাহ বাঁচাইছে আমাকে যে এমন মেয়ে আমার কপালে জুটে নাই,,,
আকাশঃ যাক দেরি হলেও বুজেছিস সঠিক টা,,,,
মায়রা অনেক ক্ষন ধরে সবার বকবক শুনছে পাশ দিয়ে নার্স যাচ্ছে নার্সের হাতের প্লেট থেকে একটা সিজার কেড়ে নিয়ে তিথির গলায় ধরে
মায়রাঃ অনেক হয়েছে অনেক,,,এই মেয়ে সব নষ্টের মুল্য,,এই মেয়ে যদি আবিরের লাইফে না আসতো তাকে বিয়ে না করতো তাহলে আজ আবির আমার হতো,,, এই মেয়ে সব কিছুর জন্য সে না থাকলে সব কিছু সমাধান হবে,,,
আবিরঃ তিথির গায়ে একটা টুকা লাগবে তো দেখবে মায়রা,,,তিথিকে ছেড়ে দাও
মায়রাঃ আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি আবির অনেক,,,
সবাই ভয় পেয়ে যায়,,,
তিথির মাঃ আমার মেয়েকে ছেড়ে দাও,,,
তিশাঃ মায়রা খুব খারাপ হচ্ছে তিথি ছেড়ে দাও কিছু টা হলেও মানবতা রাখো নিজের মধ্যে,,,
মায়রাঃ অহ প্লিজ চুপ তো এতো লেকচার দিবে না ওকে,,,যার কারনে এইসব হচ্ছে তাকেই আমি শেষ করে দিবো তারপর আবির আমার,,,,
আমানঃ মায়রা এইসব করে জীবনে তুমি আবিরকে পাবে না,,পাগলামি অফ করো,,
মায়রা কারো কথায় পাত্তা দিচ্ছে না,,তিথির গলায় এতো জোরে ধরে যে হালকা কেটে ও যায়,,তিথি তো তিথি সে মায়রার পায়ে এতো জোরে লাথি মারে যে মায়রা চিৎকার দিয়ে উঠে
মায়রাঃ আউচ,,,,
মায়রার পায়ের ব্যাথা চিল্লাতে থাকে আর তিথি সে সুযোগ নিয়ে মায়রার হাতটা ধরেই পিছনে ঘুরিয়ে মুচড়ে ধরে
তিথিঃ যদি ভুলে যাস মিস ডাইনি আমার নাম তিথি,,আর আমার সাথে সহজে কেউ পাঙ্গা নিতে আসে না আর তুই যখন সাহস করলি তাহলে একটু গিফট টা ও নিয়ে যা,,,,
মায়রার হাত এতো জোরে মুচড়ে ধরে যে অবস্থা খুবই খারাপ তার,,,কিছু ক্ষনে পুলিশ এসে যায়,,,এসেই মায়রাকে নিয়ে যেতে লাগে মায়রা বলে
মায়রাঃ আমি ঠিক আবার আসবো আর তিথি তোমাকে আমি ছাড়বো না কখনো না,,,
তিথিঃ আগে তো ধরে দেখা তারপর না হয় ছাড়িস মিস কায়রা,,,ইসস আমি এখন কাকে যে মায়রা কায়রা থুক্কু ডাইরিয়া বলবো,, সমস্যা নাই জেলে গিয়ে বলে আসবো কেমন,,৷
মায়রাকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়,,,
এইদিকে এতো কিছু হয়েছে কিন্তু আবিরের মা একদম চুপ সে একটা কথা পর্যন্ত বলছে না,,উনি গিয়ে আবিরের বাবার কেবিনে চলে যায়,,
আমানঃ মেডিকেল এতো মানুষ থাকা উচিত না,,আর আরিশা আল্লাহর ভরসায় ঠিক আছে এখন এখানে কম মানুষ থাকা বেটার,,,
আবিরঃ হ্যাঁ সবাই বাড়ি যান আমি এখানে আছি,,
আমানঃ না আবির তোকে রেস্ট নিতে হবে,,,বরং আমি থেকে যাই তুই গিয়ে রেস্ট নে,,,
খালাম্মাঃ কাউকে থাকতে হবে না আমি আছি আর সবাই বাড়ি গিয়ে একটু ঘুমাও,,,অই বেয়াদব মেয়েটার চাপ্টার তো কোলজ,,,,
তিশাঃ তিথি তুমি আর আবির ভাই আর বাকি সবাই যাও আজ রাত আমি আর খালামনি থেকে যাই কাল না হয় সকালে তাড়াতাড়ি তোমরা চলে আসিও,,,
সবাই বাড়ি চলে যায়,,,
এইদিকে আবিরের মা আবিরের বাবার পাশে বসে আছে,,তার হাতটি ধরে গভীর ভাবে কি যেন ভাবছে,,চোখ খুলেই আবিরের বাবা বলে
আবিরের বাবাঃ আমার পরী..?
আবিরের মাঃ ঠিক আছে আমাদের পরীটা,,,রেস্ট নিচ্ছে এখন দেখা করার এলাও না একবারে কাল সকালে দেখা করা যাবে,,আর তোমার ও তো শরীর টা খারাপ তুমি ও রেস্ট নাও,,
আবিরের বাবাঃ আমার মেয়েটা অনেক ব্যাথা পেয়েছে আমি জানি,,দেখবে সে আমাকে বলবে পাপ্পা তুমি কেন আমাকে বাঁচাও নাই আমি কত ব্যাথা পেয়েছি কত অভিযোগ করবে,,
আবিরের মাঃ হুম,,,
আবিরের মা অনেক টা চুপ আবিরের বাবা ভাবে মেয়ের কারনে সে চিন্তিত তাই আর কিছু বলে না,,,
এইদিকে,,
আবির ফ্রেশ হয়ে নেয় ফ্রেশ হয়ে বিছানায় হেলান দিয়ে শুয়ে পড়ে আর ভাবতে থাকে এতো বড় ঘটনা ঘটে গেলো শুধু তার জন্য,,সে মায়রাকে অনেক হালকা ভাবে নিয়েছে যার কারনে এমন হয়েছে,,
অইদিকে,
তিথি খাদিজাকে নিয়ে রান্না করে নেয়,,সে ও প্রচুর ক্লান্ত সারারাত না ঘুমানোর কারনে খুব খারাপ তার ও লাগছে কিন্তু ভাবে সেও যদি ঘুমিয়ে পড়ে গিয়ে সবাই কে খাওয়াবে কে সবার মনের যা অবস্থা,,,
খাদিজাঃ ভাবিমনি আমি করে নিতে পারমু আপনি যান,,
তিথিঃ না আমিও করি,,,খাদিজা
খাদিজাঃ জ্বি ভাবিমনি
তিথি খাদিজাকে হুট করে জড়িয়ে ধরে বলে
তিথিঃ যে উপকার তুমি আমাদের জন্য করলে তা কখনো ভুলতে পারবো না,,,আজ তোমার কারনে অই ডাইনির আসল রুপ এসেছে সবার সামনে আমাদের আরু বেঁচে গেছে,,,
খাদিজাঃ কি বলেন না ভাবিমনি এই পরিবার আমাকে সব সময় নিজের পরিবারের সদস্য ভাবছে,,ছোট থেকে আমি খালাম্মার কাছে কখনো আমাকে কাজের মাইয়া ভাবে নাই সব সময় নিজের মাইয়ার মত দেখছে আমার জন্য যা করছে এই কিছু না,,এই পরিবারের লাই নিজের জীবন টা দিতে ও পারমু,,
তিথিঃ তুমি অনেক ভালো তাই,,,
খাদিজাঃ এখন তাড়াতাড়ি গিয়ে আমরা সবাইরে ডাইকা আনি খাইতে না হলে কেউ যে খাবে না,,,
তিথিঃ সবাই কে খেতে দাও তুমি আমি উনার জন্য খাবার উপরে নিয়ে যাচ্ছি,,,
খাদিজাঃ আইচ্ছা,,,
তিথি খাবার নিয়ে রুমে গিয়ে দেখে আবির গভীর ভাবে চিন্তা করছে,,খাবার গুলো টেবিলে রেখে আবিরকে বলছে
তিথিঃ আমি শাওয়ার নিয়ে আসি আপনি তাড়াতাড়ি খেয়ে নেন,,,
তিথি ওয়াশরুমে যায়,,,কিছু ক্ষন পর শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে এসে দেখে খাবার খাবারের জায়গায় আবির এখনও চুপচাপ কি যেন ভাবছে,,,
তিথিঃ আপনি এখনও খান নাই???
আবিরঃ,,,,,,
আবিরকে এমন চুপ থাকতে দেখে তিথি খাবারের প্লেটটা নিয়ে আবিরের সামনে গিয়ে বসে,,ভাত টুকু মাখছে আর বলছে
তিথিঃ যা কিছু হয়েছে আপনার দোষ নাই,,আমাদের সাথে মাঝে মাঝে এমন কিছু হয়ে যায় যে আমরা কল্পনা করতে পারি না,,,,
আবির তিথির দিকে তাকায় গলায় চোখ পড়ে দেখে যে অনেক টুকু কেটে গেছে,,,
আবিরঃ তুমি এখনও ওষুধ কেন লাগাও নাই?
তিথিঃ আরে এইটা দূর কিছু না তো ছোট সেরে যাবে,,,
আবিরঃ তা দেখছি কিছু কিনা,,,
আবির তাড়াতাড়ি উঠে ওষুধ নেয় তিথির সামনে বসে তুলয়ায় সেভলন ঢেলে তিথির গলায় লাগাতে থাকে আর ফুঁ দিতে থাকে,,তিথি জাস্ট আবিরের মুখের দিকেই তাকিয়ে আছে,,,আবিরের এমন কেয়ারিং যে তিথির খুব পছন্দ কে বলেছে আবির তিথিকে ভালোবাসে না???যদি নাই বা বাসতো এতো টা কেয়ার
কখনো নিতো না,,,,
আবির সেভলন লাগাতে লাগাতে বলে
আবিরঃ আমার কারনে এইসব হয়েছে,,,
তিথিঃ আপনার কারনে কিছু হয় নাই,,,
আবিরঃ না তিথি শুধু মাত্র আমার ভুলের কারনে আজ আরিশা মেডিকেল তোমার এমন অবস্থা আমার পরিবারের এমন হাল শুধু মাত্র আমার কারনে,,,
তিথিঃ আপনার কারনে কিছু হয় নাই,,বুজলেন আপনি
আবির কিছু বলে না আর চুপ করে আছে,,,
তিথিঃ আচ্ছা আমাকে তো ওষুধ লাগিয়ে দিলেন এইবার প্লিজ খেয়ে নেন,,,
আবিরঃ ক্ষিধে নাই আমার তিথি,,,,
তিথিঃ কাল থেকে আমিও কিছু খাই নাই আর আপনি যদি এখন না খান তাহলে আমিও কিন্তু কিছু খাবো না বলে দিলাম হুম,,
আবির চুপ করে আছে,,,
তিথিঃ আমার পেটে কিন্তু ইঁদুররা ফুটবল খেলছে তাদের খাবার দেই নাই যে,,,
আবিরঃ মানে??পেটে ইঁদুর?
তিথিঃ হ্যাঁ আমার পেটে ইয়া বড় বড় ইঁদুর আছে জানেন ওদের যদি ঠিম মত খেতে না দেই না তাহলে তারা আমার পেটে কামড় মারে,,,
তিথির এমন কথা শুনেই আবির হেসে দেয়,,,
আবিরঃ পাগলি একটা,,,
আবিরের হাসিমাখা মুখ দেখে তিথিও হেসে দেয়,,
তিথিঃ আপনার হাসিমাখা মুখ সব চেয়ে কিউট,,অইভাবে বাংলার পাঁচ করে রাখলে পুরো পেঁচা লাগে,,,
আবিরঃ তাই নাকি আর কি লাগে তোমার কাছে?
তিথিঃ অনেক কিছু,,,কিন্তু আগে খান তারপর বলছি,,
তিথি আবিরকে নিজের হাতে খাইয়ে দিতে থাকে আর বকবক করছে আবির শুধু তাকিয়ে আছে তিথির দিকে যে কিনা আসলে কি বুজে উঠতে পারছে না,,ফাজলামি দুষ্টুমি অল টাইম করে আর সিরিয়াস কিছু তে সবার পাশে ঢাল হয়ে থাকে,,,আবিরকে তার পরিবারের সবাইকে যে এইভাবে সামলিয়ে নিয়েছে তা আবির কখনো কল্পনা করতে পারে নাই,,,তিথির প্রতি তার মায়া আরো বেড়ে যায়,,,
খাওয়া শেষে আবির ঘুমিয়ে যায় তিথিও খেয়ে এসে আবিরের বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে,,,শুতে না শুতেই ঘুম যা গেছে তাদের উপর যে সবাই ক্লান্ত,,
এইদিকে,,
আহাদকে জোর করে তিশা কিছু খাওয়ায়,,আহাদ তার চোখের পাতা গুলো এক করতে পারছে না,,আরিশাকে এইভাবে রেখে বাসায় গিয়ে রেস্ট নিবে তা কি হয়,,ডাক্তারদের অনেক রিকুয়েস্ট করে আরিশার পাশে আছে হাতটি ধরে তাকিয়ে আছে তার প্রিয়তমার দিকে,,,
আহাদঃ আমি আমাদের বাসর রাতে বলেছিলাম যে তোমায় ঘুমান্ত অবস্থায় অনেক বেশি মায়াবী লাগে এর মানে এই না যে তুমি এতো ঘুমাবে হুম,,,তাড়াতাড়ি উঠে যাও আমাদের বাড়িও তো যেতে হবে,,আমি অফিসে যাওয়ার সময় আমার শার্টের বুতাম লাগিয়ে দিবে নাস্তা দিবে,তোমার কপালে চুমু একেঁ দিয়ে প্রতিদিন অফিসে যাবো আমি,,,আর হ্যাঁ প্রতি শুক্রবার আমরা ঘুরতে যাবো তোমার প্রিয় জায়গা গুলোতে,,,
আহাদ তার ফিলিংস গুলো বলছে আরিশার হাতটি শক্ত করে ধরে,,,
আহাদঃ কথা দিয়েছিলাম এই হাত কখনো ছাড়বো না আরু আমাকে আমার কথা রাখতে একটু সাহায্য করো না হলে আমি কিভাবে আমার কথা রাখবো,,,,
আহাদ আরিশাকে তার মনের সব কথা বলতে বলতে আরিশার পাশেই শুয়ে পড়ে কখনো সে নিজেও জানে না,,,
সকালে,,,
অনেক টা বেলা হয়ে যায়,,,আরিশা চোখ খুলে আসতে আসতে,,,চোখ খুলেই চোখ পড়ে আহাদের মুখে তার হাতটি শক্ত করে ধরে ঘুমিয়ে আছে,,মুচকি হেসে চারপাশে তাকিয়ে দেখে সে একটা ছোট রুমে যা দেখে বুজা যাচ্ছে সে কোথাও,,মাথা টা প্রচুর ব্যাথা তুলবে যে অইটুকু শক্তি তার নাই,,,আহাদের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে অন্য হাত দিয়ে অক্সিজেন মাক্সটা খুলে আস্তে আস্তে বলে
আরিশাঃ আ,,,হাদ,,,আ,হাদ
হঠাৎ আওয়াজ পেয়ে তাড়াতাড়ি উঠে যায় ঘুম যেন খুব হালকা আজ আহাদের,,আরিশাকে তাকাতে দেখেই খুশিতে কেঁদে উঠে
আহাদঃ তুমি চোখ খুলেছে?
আরিশাঃ কা,,,ন্না অ,,,ফ করো
আহাদঃ আমি কাঁদছি না পাগলি আমি তো খুশি যে আমার আরু আমার কাছে ফিরে এসেছে,,,
আরিশাঃ কই যাবো আমি তোমাকে ছেড়ে হুম,,,
আহাদঃ মেরে ফেলবো আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা মাথায় ও আনলে,,,তুমি ছেড়ে গেলে আমি কি নিয়ে বাঁচবো হুম,,
আরিশা হালকা মুচকি হাসি দেয়,,আহাদ আরিশার কপালে পাগলের মত চুমু দিতে থাকে,,হালকা জড়িয়ে ধরে বলে
আহাদঃ অনেক ভালোবাসি আরু অনেক বেশি প্লিজ আমাকে এইভাবে একা ফেলে যাইও না সত্যি আমি পারবো না থাকতে এই দুইদিন কত কষ্ট হয়েছে আমার আমি আর আল্লাহ জানে,,,
আরিশাঃ আমি ঠিক আছি পাগল,,
আহাদ উঠে আরিশার হাতটি ধরে বলে
আহাদঃ সত্যি আমি অনেক ভালোবাসি,,
আরিশাঃ আমিও তো ভালোবাসি,,,
আহাদঃ না তুমি একদম না হু,,
আরিশাঃ আচ্ছা বুজলাম,,মাম্মা পাপ্পা ভাই আর বাকিরা সবাই কই?
আহাদঃ আচ্ছা আম্মু পাশের কেবিনে?
আরিশাঃ মাম্মার কি হইছে?
আহাদঃ আম্মুর কিছু হয় নাই সবাই আছে এমনি,,দাঁড়াও আমি এখনই ডেকে আনছি,,
আহাদ গিয়ে সবাই কে ডেকে আনে,,আবিরের মা তো আজ অনেক খুশি মেয়েকে ঠিক দেখে,আবিরের বাবা তো কেঁদেই দেয় মেয়ের হাতটি ধরে
আরিশাঃ পাপ্পা তুমি জানো তোমার চোখে আমি পানি সহ্য করতে পারি না,,,
আবিরের বাবাঃ আমি ঠিক আছি,এখন বল কেমন লাগছে ব্যাথা করছে কি বেশি,,কই করছে পাপ্পাকে বল
আরিশাঃ পাপ্পা আমি ঠিক আছি দেখবে কিছু দিনে লাগাতে পারবো,,,
সবাই হেসে উঠে,,,,আবিরের মা তার মেয়ের অন্য হাতটি ধরে বসে আছে চুপচাপ চোখে পানি মেয়েকে এইভাবে দেখবে সে কখনো ভাবে নাই কিন্তু খুশিও এইভাবে যে এতো বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছে,,,
কিছু ক্ষনে আবির তারা ও এসে যায়,,,আবির তার আদরের বোনটিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেই দেয় আবিরের চোখে সহজে কেউ পানি দেখে নাই কিন্তু আরিশার এমন হালে সে যে কত কেঁদেছে হিসাব নাই,,,
আরিশাঃ এই ভাই একদম কাঁদবে না হুম,,তুমি কাঁদলে আমিও কেঁদে দিবো,,,
আবিরঃ তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আয় অনেক গুলো চকলেট পিজ্জা সব সব তোর জন্য আনবো,,,
আরিশাঃ হুম নিয়ে আসবে আর একটা ও ধরবে না কিন্তু,,,
আবিরঃ হ্যাঁ ধরবো না,,,
আরিশাঃ আমাকে সবাই তোমার থেকে বেশি ভালোবাসে মনে রাখিও
আবির তার বোনকে আবার জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরঃ হ্যাঁ আমরা সবাই তোকে অনেক ভালোবাসি তুই যে আমাদের চোখের মনি,,,,
ভাই বোনের এমন আদর মাখা মুহূর্ত দেখে সবাই অনেক খুশি,,,সবাই আরিশার সাথে দেখা করে অল্প কথা ও বলে,,,
আবিরের সাথে তার মা একটা কথা ও বলছে না,,আবির যত তার মায়ের কাছে যাচ্ছে মা কেন জানি ইগনোর করছে,,,
এইভাবে কেটে যায় এক সপ্তাহ,,,এই এক সপ্তাহে আবিরের মা আবিরের সাথে কথা বলছে না,,আবির ভাবে হয়তো আরিশাকে নিয়ে চিন্তিত তাই সময় পাচ্ছে না,,,এইদিকে আরিশা ও আগে থেকে অনেক টা সুস্থ হয়ে উঠে,,,মেডিকেল থেকে একবারে তাকে আবিরদের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে,,আর আবির আর বাকি সবাইও ফিরে যায় তাদের বাড়িতে,,,
দুইদিন পর,
আরিশাকে আনা হয়,,আরিশার রুমে আরিশাকে রাখা হয়,,আমান আর তার ফ্যামিলি ও নিজের বাড়ি যাবে সবাই এখনও আছে আবিরদের বাড়িতে,,,আবিরের মা নিচে নেমে এসে দেখে সবাই হলরুমে বসে আছে গল্প করছে,,
আবিরঃ মা নাস্তা করে নাও,,,
আবিরের মা আবিরের কথায় পাত্তা না দিয়ে তিথিকে বলে
আবিরের মাঃ তিথি আহাদ আর আরিশার জন্য কিছু খাবার উপরে পাঠাই দাও,,আর আরিশার কি কি খেতে হবে তা তো জানো সে অনুযায়ী পাঠাইও
তিথিঃ ওকে মা,,,
আবির তার মায়ের সামনে এসে হাতটি ধরে বলে
আবিরঃ কি হলো মা অনেক দিন ধরে দেখছি তুমি আমার সাথে কথা বলছো না ইগনোর করছো আমাকে,,,
আবিরের মাঃ তিথি আমার সাথে কিচেনে আসো
আবিরঃ না তুমি আগে আমার সাথে কথা বলবে তার যাবে,,,,
আবিরের বাবা ও নিচে আসে সবাই নিচে বসা,,সবাই ভাবছে সত্যি তো আবিরের মা তার আদরের ছেলের সাথে এতো দিন কথা না বলে আছে আর এখনও কেমন যেন করছে,,,
চলবে,,,,,