বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 54

আবিরের বাবা ও নিচে আসে সবাই নিচে বসা,,সবাই ভাবছে সত্যি তো আবিরের মা তার আদরের ছেলের সাথে এতো দিন কথা না বলে আছে আর এখনও কেমন যেন করছে,,,
আবিরের মাঃ তিথি কিছু বলেছি কথা কানে যায় নাই,,,
তিথি আজ তার শাশুড়ির এমন ধমক শুনবে কখনো ভাবে নাই,,যে সব সময় শান্ত মেজাজের সে আজ রেগে কথা বলছে,,,
তিথিঃ জ্বি মা,,,
আবির তার মায়ের হাতটি ধরে বলে,
আবিরঃ মা প্লিজ আমার সাথে কথা তো বলো কি কারনে তুমি আমার সাথে কথা বলছো না তা তো বলবে?
আবিরের মা রেগে আবিরের দিকে তাকায়,,,,হাতটা আবিরের হাত থেকে সরিয়ে যেতে লাগে আবির সামনে গিয়ে দাঁড়ায়
আবিরঃ প্লিজ কি হইছে বলবে তো? আমাকে কেন ইগনোর করছো তুমি,,,
আবিরের মাঃ কি কথা বলবো তোর সাথে হ্যাঁ?? কিছু বলার মত কি রেখেছিস বল??
আবিরঃ মা প্লিজ কি হইছে বলবে তো,,,
আবিরের মাঃ ওকে যা,,,আমি এখন যে প্রশ্ন করবো তার উত্তর দিবি সোজা,,, আমাকে আমার কিছু প্রশ্নের উত্তর দিবি,,,
আবিরঃ ওকে যা জানার আছে জিজ্ঞেস করো,,,
বাড়ির সবাই তাকিয়ে আছে তিথি তো পুরো অবাক আবিরের মায়ের এমন রুপ দেখে,,উনি এতো রাগী তা কখনো তিথি টের পায় নাই,,,আবিরের মা আবিরের দিকে খুব রাগী ভাবে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে
আবিরের মাঃ মায়রাকে তুই প্রমেস করেছিলি যে তুই ওকে বিয়ে করবি?
আবিরঃ মা আমার কথা টা শুনো আমি বলতেছি সব,,,
আবিরের মাঃ হ্যাঁ অথবা না বলবি এর বেশি কিছু না
আবিরঃ হ্যাঁ দিয়েছি,,,কিন্তু,,,,,
আবিরের মা হাত দিয়ে ইশারা করে বলে
আবিরের মাঃ ব্যস আর কিছু শুনতে চাই না,,,
আবিরের বাবাঃ এইসব কিছু তো কবে শেষ হয়ে গেছে কেন টানছো আজ?
আবিরের মাঃ আমি আমার ছেলের সাথে কথা বলছি কেউ মাঝ খানে কথা বলবেন না ব্যস,,,
সবাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে,,,আবিরের বাবা ও আর কিছু বলে মা কারণ আবিরের মা সহজে রাগে না আর যখন রাগে তখন কারো কথা শুনে না,,,আবিরের মা আবিরের দিয়ে আবার তাকিয়ে আবার জিজ্ঞেস করে
আবিরের মাঃ তিথিকে জোর করে বিয়ে করেছিস তাই না??
আবিরঃ মা কারন টা তো শুনো
আবিরের মাঃ জাস্ট উত্তর দিবি ভারতি কথা নয়
আবিরঃ হ্যাঁ করেছি কিন্তু এর পিছনে কারণ ছিলো তাই,,,
এই কথা টা শুনে আবিরের মা আবিরকে সবার সামনে একটা চড় মারে,,,,তিথি পুরো অবাক হয়ে যায়,,,আবিরের মা প্রচুর পরিমাণ রেগে আছে তার এমন রাগ আজ পর্যন্ত কেউ দেখে নাই আর আজ সে এতো রেগে যে বলার বাহিরে,,,,আবির গালে হাত দিয়ে তাকিয়ে আছে তার মায়ের দিকে,,,মা রেগে অন্য গালে আবার চড় মারে,,,
আবিরের মাঃ তুই জানিস তুই কি করছিস হ্যাঁ?জোর করে বিয়ে করেছিস আমার ছেলে হয়ে?অই মায়রা তোর থেকে প্রতিশোধ নিতে আমার মেয়েটাকে মারতে চেয়েছে?আজ আরুর এমন অবস্থা কার জন্য জানিস তুই
আবির চুপ করে আছে,,,আবিরের মা আবিরের কলার চেপে ধরে বলে
আবিরের মাঃ আমার ফুলের মত মেয়েটা মরতে বসছে শুধু মাত্র তোর কারনে,,,তুই দায়ী আমার মেয়ের এমন অবস্থার কারনে,,,
আবিরের বাবাঃ কি বলছো কি তুমি?? মুখে যা আসছে তাই বলে যাচ্ছো কখন থেকে,,,, আবির তার বোনকে কত ভালোবাসে তা জানো তুমি,,, আবিরের দোষ নাই এখানে অই মেয়ে একটা সাইকো তা জানো,,,,
আবিরের মাঃ হ্যাঁ তার এই ভালোবাসা আমার মেয়েটার মৃত্যুর কারন হয়ে দাঁড়াচ্ছে,,,অই মেয়ে এতো সাইকো কেন কারণ তোমার এই ছেলের কারনে,,তোমার ছেলের জন্য অই মেয়ে তিথিকে মারতে চেয়েছে তিথির জায়গায় সে আমার মেয়েকে মেরেছে,,দায়ী কে বলো আমাকে??? (চিৎকার দিয়ে)
আবিরের চোখ বেয়ে পানি টপকে পড়ে,,,আবিরকে এমন দেখে তিথির অনেক কষ্ট হচ্ছে,,,পরিবারের সবাই এমন অবস্থাতে থমকে আছে,,,ভয়ে তিথির অবস্থা খারাপ তার এতো শান্ত শাশুড়ির এমন রাগী আওয়াজ শুনে সে পুরো অবাক,,,
আবিরের মাঃ সে বিদেশ গেছে পড়তে অইখানে গিয়ে একটা মেয়েকে প্রমেস করে এসেছে তাকে বিয়ে করবে,,দেশে এসে তার জিদ রাগ সব বেড়েছে তবুও কিছু বলি নাই,,,সব সময় আমি তাকে সার্পোট করতাম,,,তার জিদ এতো বেড়েছে যে তার জিদের কারনে সে অই বেচারি মেয়েকে জোর করে বিয়ে করেছে,,(তিথির দিকে ইশারা করে) আর অই মায়রা সে দেশে এসে যখন দেখছে আবির বিয়ে করছে সে তিথিকে মারতে গেছে কিন্তু দেখো হামলা আমার মেয়ের উপর হইছে মেডিকেলে তিথির উপর হামলা সবার সামনে,,, এদের দুইজনের উপর যা কিছু গেছে দায়ী কে???আবির শুধু আবির দায়ী
আবির উপরে তাকাতে পারছে না তার কষ্ট গুলো আজ এমন যে বলার বাহিরে,,,
আমানের মাঃ ভাবি প্লিজ শান্ত হও আবির ইচ্ছে করে তো আর করে নাই,,,যা কিছু হয়েছে সব কিছুর জন্য দায়ী অই ডাইনিটা,,,ডাইনিটা গিয়ে ও শান্তি দিচ্ছে না আমাদের,,,
আবিরের মাঃ পরের মেয়ের উপর দোষ কিভাবে চাপাই ভাবি যেখানে সব চেয়ে বড় দোষ আমার নিজের ছেলের,,,
আবির এতো টা গিলটি যে বলার বাহিরে,নজর পর্যন্ত তুলতে পারছে না তার মায়ের দিকে,,
আবিরের মাঃ আমাকে সব কথা বলিস সব এই কথা কেন লুকালি??আমাকে জানাতি তাহলে কিছু তো করতে পারতাম কিন্তু এই দিনটি তো দেখতে হতো না,,,আজ যদি আমার মেয়ের কিছু হতো কি করতাম আমি?আর যদি তিথির কিছু হতো কি জবাব দিতাম তার বাবা-মায়ের কাছে,,,,
তিথিঃ প্লিজ মা উনার কোনো দোষ নাই,,,বিশ্বাস করো আমাকে কোনো জোর করে নাই আমি নিজের ইচ্ছেতে বিয়েটা করেছি,,
আবিরের মাঃ দেখ আবির যে মেয়েটাকে তুই এতো কষ্ট দিলি সে তোর পক্ষ নিচ্ছে,,,তোকে সার্পোট করছে,,,আর তুই কিনা তাকে এইভাবে কষ্ট দিয়ে বিয়ে করলি বাহা,,,
তিথিঃ আমাকে কোনো কষ্ট দেয় নাই মা,,,প্লিজ উনাকে ভুল বুজিও না
আবিরের মাঃ আবির একটা শেষ প্রশ্ন করবো এর উত্তর দিবি আর তা সত্যি যেন হয়,,,
আবিরঃ হুম
আবিরের মাঃ তিথিকে ভালোবাসিস???
আবির চুপ করে আছে আর বাকি সবাই আবিরের উত্তরের অপেক্ষা করছে সাথে তিথিও
তিথিঃ(প্লিজ আজ তো বলে দেন আপনি আমাকে ভালোবাসেন,,প্লিজ)
আবিরের এমন চুপ দেখে আবিরের মা মুচকি হেসে বলে
আবিরের মাঃ উত্তর পেয়ে গেছি,,
আবিরঃ মা আমার কথা শুনো,,,
আবিরের মাঃ যেখানে তুই তিথিকে ভালোবাসিস না,,যে সম্পর্কে ভালোবাসা নাই সে সম্পর্ক থেকে লাভ নাই,,,
তিথির মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ছে এমন কথা শুনায়,,আর আবিরের ও
আবিরের মাঃ তিথি আজকেই তার বাবা-মায়ের সাথে তার বাড়ি চলে যাবে আর এইটায় আমার শেষ কথা,,,
তিথি কেঁদেই দেয় আবিরের মায়ের এমন কথা শুনে,,,
আবিরঃ মা প্লিজ
আবিরের মাঃ তিথি অইদিন এই বাড়িতে আসবে যেদিন তুই তাকে পুরো স্ত্রীর মর্যাদা সম্মান দিয়ে আনতে পারবি এর আগে নয়,,একটা মিথ্যা সম্পর্ক আমি কখনো মেনে নিবো না,,
আবিরের মা অইখান থেকে চলে যায় তিথি বসে পড়ে তার মা এসে তাকে ধরে,,তিশা ও তিথিকে কি বলে শান্তনা দিবে তাই ভাবছে,,আবির তো যেন তার মধ্যেই নাই,,
এইদিকে,,
আবিরের মা বসে আছে চোখের পানি গুলো অজোরে পড়ছে,,,আবিরের বাবা এসে পাশে বসে
আবিরের বাবাঃ এমন কেন করলে..?কেন তিথিকে তার বাপের বাড়ি পাঠাই দিচ্ছো?
আবিরের মাঃ যদি এই না করি তাহলে আবির কখনো বুজবে না যে সে তিথিকে ভালোবাসে,,একটা সম্পর্কে ভালোবাসা ছাড়া কেমন যেন নিরামিষ,,, আর তিথির অধিকার আছে সুখে থাকার,,
আবিরের মাঃ আবিরকে এইভাবে না মারলে ও পারতে,,কখনো ওর গায়ে হাত তুলো নাই আর আজ কিনা তুললে তাও সবার সামনে
আবিরের মাঃ কখনো কখনও এমন শাসন করতে হয়,,,আবিরের ভালোর জন্য তা করবো আমি যা উচিত,,,ভালোবাসার মানুষ কাছে থাকলে বুজা যায় না যে কত খানি ভালোবাসে যখন দূরে থাকবে তখন বুজবে আসলে কত খানি ভালোবাসে,,,,আর আবিরকে বুজাতে হবে এইটা,,,আর ওকে মেরে আমিও শান্তি পাই নাই আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে ওর গায়ে হাত তুলেছি তাই,,,
আবিরের বাবা আবিরের মাকে জড়িয়ে ধরে বলে,,
আবিরের বাবাঃ আমি জানতাম তুমি এমনি এমনি কিছু করবে না,,আমি জানি যেমন আমাদের কাছে আমাদের আরু তেমন তিথিও,,,
আবিরের মাঃ ওকে নিজের মেয়ে বলেছি আর আমার মেয়ের সুখ আমি ফিরে দিবো শুধু তোমার সার্পোট চাই,,,
আবিরের বাবাঃ আমি সব সময় তোমার পাশেই আছি,,,
এইদিকে,,
তিথির মাঃ তিথি ব্যাগ গুছিয়ে নে,,,

তিথিঃ মামনি তুমি ও???
তিথির মাঃ হ্যাঁ আর এক মুহূর্ত তুই এখানে থাকবি না,একটা মিথ্যা সম্পর্কে আছিস তুই আমি যদি আগে জানতাম অনেক আগে নিয়ে যেতাম তোকে,,আর এক মুহূর্ত ও এখানে থাকবি না,,যদি নিজের বাবা মায়ের সামান্য টুকু সম্মান করিস তাহলে এখন উঠে আসবি আমাদের সাথে,,,আর এতো কিছুর পর ও যদি না আসিস তাহলে আর কখনো আমাদের মুখ দেখবি না,,,
তিশাঃ আন্টি প্লিজ আপনি তো বুজেন,,,
তিথির মাঃ আর কত বুজবো বলবে আমার মেয়েটার কি দোষ বলবে?আজ যদি আমার মেয়েকে মেরে ফেলতো কই পাইতাম আমি,তিথি আর এক মুহূর্ত এখানে থাকবে না,,তিথি এখন গিয়ে কাপড় ব্যাগে গুছিয়ে তাড়াতাড়ি নিচে নাম আমরা এখনই চলে যাবো,,,,
তিথি কান্না করতে করতে নিজের রুমে চলে যায়,,আলমারি থেকে কাপড় গুলো নিচ্ছে আর কাঁদছে,,,
এইদিকে,,
তিথির মা বাবা আবিরের বাবা-মায়ের রুমে যায়,,,
আবিরের মাঃ আমার বউমাকে কিছু দিন আপনাদের কাছে রাখেন একবার আমার অই বেক্কল ছেলেটা বুজলে তাড়াতাড়ি নিয়ে আসবো আমার বউমাকে,,,
তিথির মাঃ আমাদের ছেলে মেয়ের ভালোর জন্য যদি একটু কঠোর হতে হয় তাহলে তাও রাজি,,,
চারজন মিলে প্লেন করছে কিভাবে সব ঠিক কিরবে,,,,,,
এইদিকে,,
কান্না করে করে চোখ লাল করে ফেলে তিথি,,আবির রুমে আসে এসে দেখে তিথি কাঁদছে আর ব্যাগ গোছাচ্ছে,,,
আবিরঃ ব্যাগ গোছাচ্ছে যে?
তিথিঃ হুম এখন চলে যেতে হবে,,,
আবিরের মনটা খারাপ হয়ে যায়,,,তিথির কাছে গিয়ে বলে
আবিরঃ সরি,,,
তিথিঃ কেন?
আবিরঃ আমার কারনে আসলেই সব কিছু হয়েছে,,,
তিথিঃ আমি যেতে চাই না আপনাকে ছাড়া,,
তিথি আবিরকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়,,আবিরের ও চোখ ভিজে যায় অনেক,,,আবির তবুও বলতে পারছে না সে তিথিকে না যেতে
তিথিঃ প্লিজ কিছু তো করেন যাতে আমি আপনার থেকে দূরে যেতে না হয়,,,
আবির তিথিকে কিছু বলতে যাবে অই সময় আবিরের মা এসে নক করে দরজা,,মাকে দেখে আবির সরে দাঁড়ায়
আবিরের মাঃ তিথির সাথে আমার কিছু কথা আছে,,,
তিথিঃ প্লিজ মা আমি যাবো না,আমাকে এতো বড় শাস্তি দিয়েন না আমি পারবো না আপনাদের ছাড়া থাকতে,,,,
আবিরের মাঃ আবির রুম থেকে বাহিরে যাও,,আর তিথি তুমি এখানে থাকতে পারবে না এইটা আমার শেষ কথা আশা করি এর উপরে আর একটা কথা ও বলবে না,,,
আবির রুম থেকে বের হয়ে যায়,,আবিরের মা দরজা লাগিয়ে তিথিকে টেনে নিজের পাশে বসায়,,চোখের পানি গুলো মুছে দিয়ে বলে
আবিরের মাঃ আমি যা কিছু করছি তোমার আর আবিরের ভালোর জন্য,,,তুমি চাও না আবির তোমাকে ভালোবাসুক
তিথিঃ মানে??
আবিরের মাঃ তিথি তুমি আবিরের কাছে আছো বিদায় আবির তার ফিলিংস বুজতে পারছে না যদি দূরে থাকো একটু কষ্ট করে তাহলে হয়তো আবির তার ফিলিংস ও বুজবে আর বলে ও দিবে,,,
তিথিঃ মানে তুমি এইসব করছো অই হিটলারকে তার ফিলিংস গুলো বুজতে?? (একটু নরমাল হয়ে নাক টেনে টেনে)
আবিরের মাঃ হুম,,,তুমি যদি আমার কথা মত চলো আমি যা বলি তা করো তাহলে দেখবে আবির তার ফিলিংস গুলো তোমাকে বলবে,
তিথি আবিরের মাকে হুট করে জড়িয়ে ধরে বলে
তিথিঃ তোমাদের ছাড়া আমি থাকতে পারবো না মা,,খুব কষ্ট হবে আমার
আবিরের মাঃ কিছু দিন কষ্ট করলে যদি সারাজীবন সুখ পাও তাহলে সে কষ্ট টুকু করতে হবে,,,আর হ্যাঁ প্রতি দিন আমি তোমার সাথে কথা বলবো দেখা করবো,,,
আবিরের মা তিথিকে অনেক বুজায়,,,তিথি শেষে রাজি হয়ে যায়,,,আবিরের মায়ের সাথে তিথি নিচে নামে,,,আবির তিথির দিকে তাকিয়ে আছে মনটা যে কষ্টে ফেটে যাচ্ছে,,,,আর তিথি একটি বার ও আবিরের দিকে তাকায় না,,,এই ইগনোর জিনিসটা যেন আবিরের বেশি কষ্ট হয় আরো,,,
তিথির মা বাবা তিথিকে নিয়ে যায়,,এইদিকে আবির তার রুমে গিয়ে চুপচাপ বসে আছে,,
আবিরঃ একটি বার আমার দিকে তাকালে না তুমি তিথি?আমি জানি আমার উপর অভিমান করলে কেন আটকাই নাই,,,আমি জানি না তিথি কেন পারি নাই আমি আটকাতে,,,আজ মায়ের যা অভিযোগ ছিলো সব ছিলো সত্যি আমি আমার ভুলের কারনে তোমার আর আরুর জীবন ঝুঁকিতে ফেলেছি,,,তোমার সাথে সব চেয়ে বড় অন্যায় করেছি,,,ক্ষমা করে দিও আমাকে,,,
উঠে বারান্দায় যায় তিথির কিছু কিছু কথা খুব মনে পড়ছে,,,
এইদিকে,,,

তিথি নিজের রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নেয়,,,আজ অনেক দিন পর নিজের রুমে সে,,বারান্দায় গিয়ে গাছ গুলো তে পানি দেয়,,আর আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে
তিথিঃ কে জানে অই বজ্জাতটা কি করছে?আচ্ছা আমাকে মিস করছে তো?
তিথির মা রুমে এসে তিথি ডেকে বলে
তিথির মাঃ আয় খেতে আয়
তিথি গিয়ে তার বাবা- মায়ের সাথে খেয়ে নেয়,,,খেয়ে নিজের রুমে গিয়ে টম এন্ড জেরি দেখতে থাকে আর হাসতে হাসতে শেষ,,,তার এতো হাসি পাচ্ছে যে কার্টুন দেখে যে সে ভুলেই গেছে তার এখন কান্না করা উচিত আবিরের থেকে দূরে বলে বাট তিথি তো উল্টো কার্টুন দেখতে ব্যস্ত,,
এইদিকে,,,
আবির সবার সাথে খেতে বসে কিন্তু কিছু খেতে পারছে না খুব মিস করছে তিথিকে,,তিথি এই সময় খেতে বসলে উড়াই ফেলতো,,,ভাবতে থাকে আবির তিথির দুষ্টুমি গুলো খেতে বসলে তার দুনিয়ার কাহিনী মনে পড়ে যায়,,,
আবিরের বাবাঃ আবির কাল থেকে অফিস যেতে হবে,,,কয়েকদিন পর একটা ডিল আছে যা ইম্পর্টেন্ট অনেক,,
আবিরঃ জ্বি বাবা,,,,
আবিরের মাঃ আমার খাওয়া শেষ আমি উঠছি,,আরুকে দেখে আসি কি অবস্থা
আবির কিছু বলতে গিয়ে ও কিছু বলছে না কারণ জানে তার মা রেগে আছে তার উপর,,,
আবিরের মা রুমে গিয়ে কল দেয় একজনকে,,,
আবিরের মাঃ তোর হেল্প দরকার আমার,,,কালকেই এসে যাবি কিন্তু হ্যাঁ আমার সাথে দেখা করবি আমাদের বাড়ির পাশে যে রেস্টুরেন্ট আছে অইখানে,,,
অই পাশ থেকেঃ ওকে
এইদিকে,,
আবির ঠিক মত খেতে ও পারে নাই নিজের রুমে যায়,,রুমটায় যেন জান নাই আজ,,তিথি থাকলে তো যা করে রুমের ১২ টা বাজিয়ে ছাড়ে,,,মন কাজে লাগানোর জন্য লেপটপ টা নিয়ে হালকা কাজ করতে থাকে কাজ করতে ও আজ মন বসছে না,,কিছুতে যেন মন টিকছেই না,,,
আবিরঃধ্যাত সব কিছু এমন কেন লাগছে,,,আগে ও তো একা থাকতাম এমন লাগতো না কিন্তু আজ কেন এমন লাগছে,,,হয়তো ঘুমালে ঠিক হবে
আবির ঘুমাতে যায় কিন্তু কিছুতেই যেন চোখের পাতা গুলো এক করতে পারছে না,,তিথিকে বুকে নিয়ে ঘুমানো যে তার অভ্যাস হয়ে যায়,,এপাশ ওপাশ অনেক ঘুরে কিন্তু তার চোখে যেন আজ ঘুম এই নাই,,,
আবিরঃ আমি পারবো না ঘুমাতে,,,তিথিকে ছাড়া ঘুমাতে পারবো না,,আমি সিউর সেও আমাকে ছাড়া ঘুমাতে পারছে না,,আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমানোর যে তার অভ্যাস,,,জানি পাগলী টা হয়তো এতো ক্ষনে কান্না করে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে একটা কল দেই দেখি ঘুমিয়েছে কিনা,,,
আবির তিথিকে কল দেয় অনেক টা কিন্তু কল রিসিভ করে নাই তিথি,,ভয়ে যেন আবিরের কলিজাটা শুকিয়ে যায়,,,
আবিরঃ আল্লাহ জানে ঠিক আছে কিনা,,কিছু হয় নাই তো,,,, আমার এখনই যাওয়া উচিত কিন্তু রাত এক টা বাজে এখন যাওয়া কি ঠিক হবে,,,
আবির অনেক টা ভাবে শেষ মেষ না আর না ভেবে তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় গাড়ি নিয়েই,,,
তিথির বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামিয়ে ভাবে কিভাবে যাবে ভিতরে,,,গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে আবার কল দেয় তিথিকে কিন্তু সেম তিথি এইবার ও রিসিভ করে নাই কল,,,
আবিরঃ এই মেয়েটা কল কেন ধরছে না,,,মনে হয় কান্না করছে এখনও
আবির তিথির বাড়ির দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ায় নক করবে কিভাবে তা ভাবে এতো রাতে কি বলবে সবাই কে তখন আবার ফিরে আসে গাড়ির সামনে কিন্তু তিথির সাথে দেখা না করে তো আর যাওয়া যাবে না,,,তিথির রুমের দিকে তাকিয়ে দেখে হালকা আলো যেন রুমে পড়ছে আবার অফ হচ্ছে,,,রুমে এমন আলো পড়তে দেখে আবিরের আরো ভয় লাগে,,,আশেপাশে তাকিয়ে দেখে কিছু নাই যে রুমে যাবে,,একটা গাছ আছে বারান্দার পাশে যা সোজা তিথির বারান্দায় গিয়ে পৌছায়,,,আবির আর না ভেবে ফোন টা পকেটে রেখেই গাছে উঠা শুরু করে গাছে উঠতে উঠতে বলে
আবিরঃ মিসেস তিতা তোমার সাথে দেখা করতে কি কি করতে হচ্ছে আমার,,,গাছ থেকে যদি পড়ি না একবার তাহলে আমার কোমড় ভাঙ্গবে তবুও কি করার অই এলিয়েনের জামাই তো তাই গাছে উঠে অই এলিয়েনের সাথে দেখা করতেই হবে,,,,
আবির অনেক কষ্ট করে বারান্দায় গিয়ে পৌছায়,,,হাঁফ ছেড়ে বুকে হাত দিয়ে বলে
আবিরঃ আল্লাহ রে চোরের মত দেখা করতে আসতে হইছে তাও আবার নিজের বউকে দেখতে,,,
বারান্দার দরজা খুলা দেখে আবির অবাক,,,
আবিরঃ বাহা ম্যাডাম দরজা খুলে রাখছো চোর আসলে তো টের ও পাবা না,,,যাক আমার জন্যই ভালো হলো,,,
আবির রুমে ডুকেই যা দেখে তা দেখেই থমকে যায় এই কি হাল রুমের,,,,পুরো রুমটা এলো মেলো আইসক্রিমের কাফ চিপসের প্যাকেট নিচে পড়ে আছে,কাপড় অনেক গুলো মেঝেতে পড়ে আছে ,আর টিভিও অন তাও কার্টুন,,,, আর তিথি কোলবালিশকে জড়িয়ে ধরে ঘুম বিছানায় চিপস ও পড়ে আছে,,,বিছানা টা যে পরিষ্কার করে শুবে সে সময় টা মনে হয় তিথি পায় নাই,,
আবির কপালে হাত দিয়ে বলে
আবিরঃ হে আল্লাহ এই কেমন বউ জুটলো আমার কপালে,, ভেবেছি সে কেঁদে এক হবে কিন্তু এখানে এসে তো দেখি মহারানি নাক ঢেকে ঘুমাচ্ছে রুমের এমন হাল করেই,,,কবে এই মেয়ের মাথায় বুদ্ধি হবে উফফ,,,
আবিরের একদম অপছন্দ অপরিষ্কার রুম,,,সে আইসক্রিমের কাফ গুলো তুলে ময়লার ঝুড়িতে ফেলে,,চিপসের প্যাকেট গুলো ও পুরো রুম সুন্দর করে গুছিয়ে রাখে কাপড় যা মেঝেতে পড়ে আছে তা তিথির আলমারিতে তুলে রাখে,,,তিথিকে কোলে নিয়ে মেঝেতে শুয়ে দেয় আর তিথির তো খবর ও নাই যে তাকে কেউ তুলে নিচে শুয়ে দিচ্ছে,,পুরো বিছানা টা সুন্দর করে পরিষ্কার করে তিথিকে আবার তুলে শুয়ে দেয়,,
আবিরঃ আল্লাহ আমি তো ক্লান্ত হয়ে গেলাম এই মেয়ে কি,,,
তিথির পাশে শুয়ে পড়ে,,,তিথির কপালে চুমু দিয়ে তাকিয়ে আছে অনেক ক্ষন,,,ঘুমান্ত তিথিকে যে অনেক মায়াবী লাগছে,,তিথির চেহারায় যে মায়া সে মায়ায় আবির যে আটকে গেছে,,,

আবিরঃ অনেক মিস করেছি আজ,,,একটা দিন ও না হাফ দিন ও পারি নাই তোমাকে ছাড়া থাকতে আল্লাহ জানে কিভাবে আর দিন গুলো থাকবো,,,,তোমার ঘুমান্ত চেহারা দেখা আমার অভ্যাস হয়ে গেছে,,,
নিজের কিছু ফিলিংস বলে আবির তিথিকে টেনে নিজের বুকে নিয়ে শুয়ে পড়ে,,,তিথি ঘুমে বকবক করছে
আবির হেসে দেয় পাগলীটা যে তার আবিরকে ঘিরেই আছে,,,,আবির ও যে শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ে তিথিকে জড়িয়ে ধরে,,,
সকালে,,,,
আজানের মিষ্টি সুর শুনেই আবিরের ঘুম ভাঙ্গে চোখ খুলে তার বুকে তিথিকে দেখে তার বেশ ভালোই লাগে,,,তিথির চুল গুলো কপাল থেকে সরিয়ে কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে বলে
আবিরঃ পাগলিটা ঘুমে অনেক মায়াবী লাগে,,,ঘুমিয়ে থাকো ম্যাডাম আমি যাই আমার যাওয়া উচিত এখন না হলে কেউ বলতে পারলে আবার কি না কি ভাববে,,
আবির উঠে বাহিরে তাকায় দেখে যে এখনও অন্ধকার আছে,,,এখন তাড়াতাড়ি চলে গেলে কেউ বুজবে না,,,
তিথিকে শুয়ে দিয়ে গায়ে চাদর মুড়িয়ে দিয়ে তিথির দিকে একটু তাকিয়ে থাকে,,,মায়াবী মুখ খানি যে আবিরের অনেক ভালো লাগে,,,তারপর সে তাড়াতাড়ি বারান্দা দিয়ে গাছ বেয়ে নিচে নেমে চলে যায়,,,আর তিথি বলতে ও পারে না যে রাতে আবির এসেছে,,,
সকাল সকাল আবিরের মা তাদের বাড়ির পাশে যে রেস্টুরেন্ট আছে সেখানে বসে আছে ফোন হাতে নিয়ে কল দেয় একটু কথা বলে,,কয়েক মিনিট পর একটা সাদা গাড়ি থেকে একটা ছেলে নামে দেখতে বেশ সুন্দর লম্বা গায়ের রং ফর্সা চেহারাটা অনেক মায়াবী,,,ব্লু সার্ট কালো প্যান্ট চোখে সানগ্লাস ক্লিন সেভ দেখতে পুরো হিরোর মত,,মুচকি হেসে আবিরের মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে বলে
অচেনাঃ এসে গেছি,,,
আবিরের মা তাকে দেখে এতো খুশি হয়ে যায়,,,জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরের মাঃ আমি জানতাম তুই আসবি শিহাব,,,আমার কথা তুই যে কখনো ফেলতে পারিস না,,,,
শিহাব মুচকি হেসে বলে
শিহাবঃ তুমি ডাকলে আর আমি আসবো না এই কি হয়,,,
(ওয়েলকাম শিহাব🤣সবাই অনেক মিস করছে তোমাকে শিহাব তাই নিয়ে আসলাম তোমাকে)
চলবে,,,,,