The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 49

রুপন্তী আর রেহান পাশাপাশি শুয়ে আছে।বিকেল চারটা বাজে।সুদূর মসজিদ থেকে আসরের আজানের ধ্বনি ভেসে আসছে।রুপন্তী উল্টো দিকে ফিরে চোখের পানিতে বালিশ ভিজাচ্ছে।অপরদিকে ফিরে রেহান ও কাঁদছে।মেয়েটা ওদের কাছে নেই আজ একদিন হয়ে গেলো।রুপন্তী গলা ঠিক করে বলল
..রেহান মসজিদে যাও নামাজ পড়বে।
..রেহান ভাঙ্গা গলায় বলল হুম।
রুপন্তী মুখে কাঁথা চেঁপে ধরলো।বুকটা ফেঁটে আসতে চাইছে ওর।রেহান উঠে পাঞ্জাবী গায়ে জড়িয়ে নিলো।কিছুসময় পর রুপন্তী ও ওযু করে নামাজে বসলো।রেহান খেয়াল করলো রুপন্তীর শরীরটা বারবার কেঁপে উঠছে।রেহান মৌনতাকে শ্রেয় মনে করে বেরিয়ে পড়ে।মসজিদে পৌছাতেই রোয়েনকে দেখতে পায় রেহান।ভাইকে দেখে রোয়েন এগিয়ে এলো
..ভাই আপনি মসজিদে আসছেন নামাজ পড়তে কষ্ট হবেনা?জিজ্ঞাস করে রেহান।
..চেয়ারে বসে পড়বো।বলে উঠে রোয়েন।
..হুম।রেহান আর রোয়েন ওযু খানায় গেলো।
নামাজ শেষ করে বেরিয়ে এলো দুই ভাই।কিছুসময় নিয়ে রোয়েন বলে,
..মেয়েটার সাথে কথা হয়েছে রেহান?
..নাহ।ওর সাথে আমাদের সম্পর্ক নেই।যা ছিলো শেষ।
..রেহান ও তোর মেয়ে।ছোট মানুষ ভুল হয়ে গেছে।
..ভাই ভালো লাগছেনা এসব কথা বলতে এখন।বাসায় চলেন।
..রোয়েন বলল নারে রুহী বাসায় একা।ঘরেই যাই।ওর শরীর ভালো নাই।আরেকদিন আসবো।তুই আয়।
..না ভাই আরেকদিন আসবোনে।বলে গাড়িতে বসে পড়ে রেহান।
রোয়েন ভাইয়ের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে গাড়িতে ঢুকে বসলো।
..How dare you Arvin?চেঁচিয়ে উঠে আরাবী।
..ডোন্ট সাউট ডার্লিং।এসে ভাইকে নিয়ে যাও।
..কোথায় আসবো?রাগী গলায় জিজ্ঞাস করে আরাবী।
..মেসেজ করে দিচ্ছি এ্যাড্রেস।কাম ফাস্ট।
আরাবী ফোন কেঁটে দিলো।কিছু সময় পর ওর ফোনে মেসেজ এলো।আর্ভিনের গার্ডেন হাউজের এ্যাড্রেস দেয়া হয়েছে।আরাবী তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে পড়ে।গন্তব্যে পৌছুতেই আরাবী ঘরে ঢুকে পড়লো।পুরো বাড়ি খালি।
..আর্ভিন কই আপনি?চেঁচিয়ে ডাকে আরাবী।
উপর থেকে আর্ভিন বলল এখানে এসো।তোমার ভাইকে পেয়ে যাবে।আরাবী দৌড়ে উপরে এলো।আরাভকে চেয়ারে বেঁধে রাখা হয়েছে।সেন্সলেস অবস্থায় পড়ে আছে আরাভ।আরাবী আর্ভিনের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলল
..আমার ভাইকে কি করেছেন?
..জাস্ট সেন্সলেস করেছি।তোমাকে আমার একটা শর্ত মানতে হবে।তাহলে ওকে ছেড়ে দিবো।
..কি শর্ত??জিজ্ঞাস করে আরাবী।
..আজ এখন বিয়ে করবে আমায়।তোমার বাসায় যাবো আমরা তুমি তোমার বাবা মাকে বলবে আমায় বিয়ে করতে চাও তুমি।একনাগাড়ে কথা গুলো বলল আর্ভিন।
তখনই আরাবীর মাথায় এলো হয়ত ইশরাক মাহবুব আর আর্ভিনের প্ল্যান আরাভকে কিডন্যাপ করে ছয়মাসের বিয়ের কন্ট্রাক্ট সাকসেসফুল করার।আরাবী কে চিন্তিত দেখে আর্ভিন বলল,
..কি ভাইকে এ অবস্থায় দেখে এখন এতো কিছু কি ভাবছো?
..আমি রাজি তবে ওর সাথে কথা বলবো আমি।বলে উঠে আরাবী।
..আগে বিয়ে করবে আমায় তারপর ও নিজেই তোমাদের বাসায় আসবে।তখন কথা বলে নিও।
আরাবী আর্ভিনের সাথে বেরিয়ে এলো।ঘরে পৌছাতেই আরাবী ইকরাম আর ওর পরিবারকে দেখতে পেলো। রোয়েন আরাবী আর্ভিনকে একসাথে দেখে সোফায় বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।তারপর মিষ্টি হেসে বলল,
..কেমন আছো আর্ভিন?
..এই তো আঙ্কেল ভালো।আপনি?
..ভালোই।মেয়েকে চিন্তিত দেখায় রোয়েন বলল কিরে মা কিছু বলবি?
..জি বাবাই আমি আর্ভিনকে বিয়ে করবো।
মেয়ের কথায় অবাক হয় রোয়েন।তাহলে ইকরাম!!!
তখনই ইকরাম বলল,
..আঙ্কেল আমি আরাবীর ফ্রেন্ড।আমি এসেছিলাম আরাবী আর আর্ভিনকে এক করতে আর কিছুনা।
..রোয়েন কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।
..বাবাই তুমি সবাইকে কল দিয়ে আসতে বলো।আজ এখনই বিয়ে হবে।গম্ভীর ভাবে বলল আরাবী।
রোয়েন আজহার পরিবার আর রেহান রুপন্তীকে আসতে বলে।আর্ভিন নিজের মাকে আসতে বলল।কিছুক্ষনের মাঝে মিসেস ইসরাত মাহবুব চলে আসে।আরাবীকে ওনার বেশ পছন্দ হয়েছে।আসার সময় লাল টুকটুকে জামদানী শাড়ী নিয়ে এসেছেন ওনি। ঘন্টাখানিকের মাঝে সবাই চলে আসে।কাজী ও ঠিক করা হলো।
আরাবী ইয়ারাবী কে নিয়ে উপরে গেলো।ইয়ারাবী বোনকে রেডি হতে সাহায্য করছে।আরাবী আড়চোখে বোনকে দেখে নেয়।এতোটা মলিন আগে কখনোই ইয়ারাবীকে দেখেনি আরাবী।
..কি হলো ইয়ারাবী?কি নিয়ে ভাবছিস অতো?
..ভাবছিলাম ওনি নিজের পরিচয় কেন লুকালো?
..অভিমানের গুরুত্বটাই ওর কাছে বেশি ইয়ারাবী।বলে উঠে আরাবী।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
ইয়ারাবী আরাবীকে নিয়ে নিচে নামলো।কাজী সাহেব চলে এসেছেন।রুপন্তী রেহান মেয়েকে দেখে ও না দেখার ভান করছে।আরাবী আর্ভিনের বিয়ে সম্পন্ন হলো।আরাবী খেয়াল করলো আর্ভিন হাসছে মিটিমিটি।
..আর্ভিন আমি শর্ত পালন করলাম।এখন আমার ভাইকে ফিরিয়ে দিন।ফিসফিসিয়ে বলল আরাবী।
..আর্ভিন ফোন বের করে একটা নম্বরে কল দিয়ে কি যেন বলল।
সবাইকে অবাক করে দিয়ে আরাভ রোয়েনের ঘরে এলো।আরাবী আরাভ কে দেখে দৌড়ে এসে জড়িয়ে কাঁদতে লাগে।আর বলল,
..আরাভ আমার ভাই?এতো দিন কই ছিলি তুই?পরিচয় দিসনি কেন?
আরাভ চুপচাপ বোনকে জড়িয়ে ধরলো।বাসার সবাই অবাক আরাবীর কথায়।রোয়েন রুহী হেঁটে হেঁটে আরাভের কাছে এসে দাঁড়ায়।আরাভ বাবা মাকে দেখে নিলো এক ঝলক।রুহী ভাঙ্গা গলায় বলল,
..কি বলিস এসব আরাবী?ও আমাদের আরাভ!!!
..হুম মা ও আরাভ আমার ভাই আরাভ তোমাদের ছেলে আরাভ।সরে এলো আরাবী।
রোয়েন রুহী ছেলের কাছে এসে দাঁড়ায়।রুহী আরাভের গাল স্পর্শ করে কেঁদে বলল আরাভ বাবা কই ছিলি তুই?এতো কাছে থেকে ও কেন পরিচয় দিসনি তুই?আরাভ চুপ করে আছে।রুহী ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে আরম্ভ করে।রোয়েন সেই কখন থেকে ছেলেকে দেখেই যাচ্ছে।আরাভ কিছুটা ইতস্তত বোধ করছে বাবার এভাবে তাকিয়ে থাকায়।রুহী সরে এসে ছেলেকে প্রান ভরে দেখছে।আরাভ মায়ের গাল স্পর্শ করলো।রোয়েনের চোখ জলে ভরে উঠেছে।
..মা ভালো আছো তুমি?জিজ্ঞাস করে আরাভ?
..তোকে দেখে খুব ভালো লাগছে বাবা।কেঁদে কেঁদে বলল রুহী।
..আরাভ এতোদিন নিজের পরিচয় কেন লুকালি?জিজ্ঞাস করে রোয়েন।
আরাভ নিশ্চুপ।রুহী ছেলে কে এনে বসালো।তারপর নিজ হাতে রান্নাবান্না করলো সবার জন্য।রোয়েন কথা বলার চেষ্টা করছে ছেলের সাথে কিন্তু আরাভ কিছু বলছেনা।রোয়েন ভিতর ভিতর থেকে খুব কষ্ট পাচ্ছে।নিজেকে খুব নিকৃষ্ট মনে হচ্ছে ওর।আরাবী আরাভের সাথে বসে আছে।
এদিকে আরাবী আর্ভিনকে একটা রুমে নিয়ে এলো।আর্ভিন বলল,
..কি হলো ডাকলে যে?
..আপনি আর আপনার বাবা দুজনেই নিচ প্রকৃতির মানুষ।একটা কন্ট্রাক্টের জন্য আমার ভাইকে কিডন্যাপ করলেন ছিহ!!
..আর্ভিন অবাক।কোন কন্ট্রাক্ট?
..না জানার ভান করছেন কেন আর্ভিন?আপনার বাবা তো এসে বলল ছয়মাসের বিয়ের কন্ট্রাক্ট।তারপর আরাবী রেকর্তার অন করলো।
..রেকর্ড শেষ হতেই আর্ভিন বলল এটা অসম্ভব বাবা এটা কেন বলবে?ওনার সাথে আমার সম্পর্কও ভালো নেই।
..বিশ্বাস হচ্ছেনা আপনার।কালই এর প্রমান পেয়ে যাবেন।
আরাবীর কথা শেষ হতেই আর্ভিন রুম থেকে বেরিয়ে পড়লো।আরাবী এসে আরাভের পাশে বসলো।তারপর বলতে শুরু করলো,
..আর্ভিন কতো টা নিচ দেখলি?আমাকে বিয়ে করার জন্য তোকে কিডন্যাপ করলো।
..আরাভ হেসে বলল এখানে আর্ভিনের দোষ নেই আরাবী।পুরো প্ল্যানটাই আমার ছিলো তোদের এক করার।
আরাবী অবাক হয়ে ভাইকে দেখছে।ওর ভাই কি করে পারলো এটা?
ইয়ারাবী আরাভের কাছে এসে আস্তে করে বলল,
..জেঠুর সাথে কথা বলছেননা কেন?কষ্ট পাচ্ছেন ওনি।
..চুপ থাকো।চোখ রাঙ্গিয়ে বলল আরাভ।
রুহী রান্না শেষ করে সবাই কে ডেকে পাঠালো।খাবার শেষে আরাভ আকরাম আজহারকে বলল
.. চলুন বাবা।
..আরাভ তুই আমার ছেলে আমার কাছে চলে আয় বাবা।বলে উঠে রোয়েন।
..নাহ।আমি এখানে থাকবোনা।
..আরাভ!!!!
..যে ঘরে নিজের বাবা আমাকে বিশ্বাস করেনা।আরেকজনের কথায় আমার গায়ে হাত তুলে সবার সামনে।আর্ভিনের কারনে নয় আমি আপনার কারনে আমার বোন মা সবার থেকে আলাদা ছিলাম।দশ বছর মাকে ডাকতে পারিনি বোনকে ডাকতে পারিনি।সেটা শুধু আপনার জন্য।আমি এখানে থাকবো কি করে বলুন?রাগী গলায় বলল আরাভ।
আকরাম আজহার আরাভকে থামানোর চেষ্টা করলেন।আরাভ জোর করে ইয়ারাবীর হাত ধরে বেরিয়ে গেলো।গাড়িতে ইয়ারাবী বারবার বলছিলো রোয়েন কে মাফ করে ফিরে যেতে। আরাভ জবাবে চোখ রাঙ্গিয়েছে ইয়ারাবীর দিকে।আর বলল,
..যা জানো না তা নিয়ে কথা বলতে এসোনা।
মন খারাপ করে চুপ হয়ে যায় ইয়ারাবী।স্বামীর দিকে একপলক তাকায় ও।আরাভের জ্বলজ্বলে চোখজোড়া ওর নজর এড়ায় নি।আপনাকে তো আমি শিক্ষা দিবো আরাভ।ভাবতে থাকে ইয়ারাবী।
ঘরে ফিরে ইয়ারাবীকে নিয়ে রুমে চলে এলো আরাভ।রুমে ঢুকতেই বৌকে কোলে তুলে নিলো আরাভ। তারপর ইয়ারাবী কে খাটে শুইয়ে দিয়ে ওর গলা থেকে আঁচল সরিয়ে ওর ওপর নিজের ভর হালকা করে ছেড়ে দিলো।তারপর ইয়ারাবীর গলায় ঠোঁট ছোঁয়াতেই ইয়ারাবী সরাতে চেষ্টা করে আরাভকে।ধাক্কা দিতে থাকে আরাভকে।আরাভ মাথা তুলে রাগী চোখে তাকায় ইয়ারাবীর দিকে।তারপর ওর হাত জোড়া শক্ত করে চেঁপে ধরে ওর গলা অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দিতে থাকে আরাভ।
ইয়ারাবীর দম আটকে আসছে।চাইছে আরাভকে সরাতে।কিন্তু আরাভ নিজের ভালোবাসার রাজ্যে স্ত্রীকে ভালবাসা দিতে মগ্ন।গলায় চুমু দিয়ে ইয়ারাবীর দিকে তাকায় আরাভ।ইয়ারাবীর শাড়ী ভেদ করে ওর ব্লাউজে হাত লাগাতেই চোখ খিচে বন্ধ করে ইয়ারাবী।আরাভ হাত নামিয়ে আনে ইয়ারাবীর পেটে।তারপর ইয়ারাবীর নরম পেটে হাত স্লাইড করতে শুরু করে আরাভ।ইয়ারাবীর রসালো ঠোঁটজোড়ায় আরাভ নিজের ঠোঁটজোড়া ডুবিয়ে তৃষ্ণা মিটাচ্ছে।এতোক্ষন খুব মিস করছিলো ছোট্ট বৌটাকে।
ইয়ারাবীর ঠোঁটে আর আলতো করে পাঁচ থেকে ছয়বার চুমু খেয়ে নিচে নেমে আসে আরাভ।তারপর ইয়ারাবীর পেটের কাপড় সরিয়ে সেখানে উষ্ণ চুমুতে ভরিয়ে দিতে থাকে।
ইয়ারাবীর শরীর কাঁপছে।আরাভের স্পর্শ গুলো ওকে নিঃশেষ করে দিতে চাইছে।কিছু সময় পর আরাভ উপরে উঠে আসে।ইয়ারাবীর কপালে আরো একবার চুমু দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে।ইয়ারাবীর কাঁধে আরাভের নাক লেগে আছে।সেদিন রাতেই আরাবী কে নিজের ঘরে নিয়ে আসে আর্ভিন।ঘরে ঢুকতেই ইশরাক মাহবুবের দিকে চোখ পড়ে আরাবীর।লোকটা শয়তানি মার্কা হাসি দিয়ে ওদের সামনে এসে দাঁড়ায় তারপর বলল,
..ওয়েলকাম ডটার ইন ল।
আরাবী মাথা নিচু করে আছে।আর্ভিন আরাবীর হাত ধরে ইশরাক মাহবুবের সামনে থেকে নিয়ে চলে আসে।ইসরাত আরাবীকে বলল,
..মামনি তোমাদের বিয়েটা এতো ঘটা করে হলো যে রুমটা তেমন সাজাতে পারিনি।
..আরাবী হেসে বলল সমস্যা নেই মা।আপনি রেস্ট করুন যেয়ে।
..হুম মামনি।তুমি ও রুমে যাও।
আরাবী আর্ভিনের সাথে ওর রুমে চলে এলো।রুমে ঢুকতেই ওদের চোখ ছানা বড়া।পুরো রুম অন্ধকার।জায়গায় জায়গায় মোমবাতি রাখা।খাটে গোলাপের চাদর বিছানো।পাশের টিটেবিল ও গোলাপের পাপড়ি দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।সেখানে তিনটা মোমবাতি জ্বালানো।
চলবে