প্রেমের পাঁচফোড়ন

প্রেমের পাঁচফোড়ন !! Part- 49

“নাহ,নার্স একটা ফালতু স্যুপ দিয়ে গেছিলো আমি সেটা খাইনি”
.
“আচ্ছা আপনি থাকেন,আমি বাসা থেকে খাবার বানাই আনতেছি”
.
“না দাঁড়াও,আমি সহ যাবো তোমার সাথে,ডাক্তার বলসে এখন যেতে পারবো”
.
“আচ্ছা তাহলে চলুন”
.
“এক মিনিট!”
.
“কি?”

শান্ত আহানার হাত খপ করে ধরে উল্টো করলো
“তোমার হাতে কি হয়েছে,এরকম দাগ কেন,এত খারাপভাবে কাটা গেছে কি করে?”
.
“ও কিছু না,আসলে আয়নাটা ভেঙ্গে গেসিলো তো সেটা পরিষ্কার করতে গিয়ে হয়েছে,এটা কিছু না”
.
“কিছু না মানে কি বুঝাতে চাও,হাতের তো একটু জায়গাও খালি নাই যেখানে কাটা দাগ নেই,আমার তো মনে হয় ইচ্ছে করে কেটেছো!”
.
“না ইচ্ছা করে কেন করবো,এত কথা বলেন কেন,চলুন বাসায় যাই”
.
“আহানা আমাকে বোকা বানানো এত সহজ না,চুপচাপ বলো কি হয়েছে?”
.
প্রশ্নের জবাব না দিয়েই আহানা শান্তর হাত ধরে আরেক হাত ওর পিঠে রাখলো ওকে উঠানোর জন্য
শান্ত নামার জন্য সিট থেকে ফ্লোরে পা রাখতেই চোখ মুখ খিঁচিয়ে ফেললো ব্যাথায়,পায়ের চোটটা বেশি
আহানা শক্ত করে ওকে ধরে ফেলেছে
দেরি না করে সে নওশাদ আর রিয়াজকে ডাক দিলো তাড়াতাড়ি
নওশাদ এসে শান্তকে ধরলো আর রিয়াজকে বললো হসপিটালের ফর্মালিটিস পূরন করে আসতে
২টো রিকসা নিয়েছে রিয়াজ,একটাতে নওশাদ আর সে
আরেকটাতে আহানা আর শান্ত
আহানা শান্তর দিকে তাকিয়ে গাল ফুলিয়ে আছে
আর শান্তর চোখ আহানার হাতের দিকে
সোজা শান্তর বাসায় এসেছে সবাই
শান্তকে রিয়াজ ধরে রুমে ঢুকাচ্ছিলো,নওশাদ বললো সে সিলিন্ডারের আগামাথা বুঝতেসে না জলদি আসতে
রিয়াজ আহানার হাতে শান্তর হাত দিয়ে দৌড় দিলো রান্নাঘরের দিকে
আহানা শান্তকে কোনোরকম ধরে হাঁটতে গিয়ে নিজেই স্লিপ খেয়ে পড়তে গেলো শেষে শান্তই ওকে ধরে ফেললো
মুচকি হেসে বললো “পা তোমার ভেঙ্গেছে নাকি আমার?”

“আসলে টাইলসে আমি বেশি স্লিপ খাই”
.
শান্ত আহানার হাত মুঠো করে ধরে আগাতে চেষ্টা করলো কিন্তু মনে হচ্ছে পায়ের ওজন তার শরীরেরও চেয়ে বেশি
হুমড়ি খেয়ে বিছানায় গিয়ে পড়লো আর সাথে আহানাকেও টান দিলো
আহানা গিয়ে ওর গায়ের উপর পড়লো
.
“আউচচচ”
.
“কি হয়েছে হাতে লেগেছে?”
আহানা তাড়াতাড়ি উঠে গেলো শান্তর বুকের উপর থেকে
শান্তকে ধরে উঠে বসালো সে
আহানা ব্যস্ত হয়ে শান্তর হাত দেখতেসে
অপরাধী লুক নিয়ে বললো “আমি আর আপনাকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিতে যাবো না,শুধু শুধু আপনি ব্যাথা পেলেন”
.
“ইটস ওকে,৫৩কেজির মেয়ে হয়ে ৭৬কেজির ছেলেকে টেনে ধরা তোমার কাম্য নয়”
.
“আপনি আমার ওজন জানেন কি করে?”
.
“বিরাট কাহিনী”
.
“শুনি”
.
“তো শুনো!আলু আর চাল মিলে ৫৩কেজি ছিল সেদিন বাবা আসার সময় এনেছিলো মোহনগঞ্জ থেকে,আমাদের তো নিজস্ব ক্ষেত আছে,বাবা মাসকাবার করে দিয়েছে,আমি রিকসা থেকে তুলে গার্ডের হাতে দিসিলাম,তো সেই ওজন আর তোমার ওজন সেম লাগলো,আন্দাজ করে নিলাম,তোমাকে তো সেদিন ফ্লোর থেকে তুলে বিছানায় এনেছিলাম”
.
“ওহ,বাপরে আপনার আন্দাজ তো দারুন,যাই হোক বসুন,আমি আপনার জন্য খাবার নিয়ে আসতেসি”
শান্ত আহানার হাত টেনে ধরলো
আহানা থেমে পিছন ফিরে তাকালো শান্তর দিকে,শান্ত গম্ভীরভাবে বললো ওয়ারড্রবের সেকেন্ড ড্রয়ার খুলো”
.
“কেন?”
.
“একটা বক্স দেখতে পাবা সেটা দাও আমাকে”
.
আহানা গিয়ে ড্রয়ার খুলে বক্স নিয়ে শান্তর দিকে বাড়িয়ে ধরলো শান্ত বক্সটার সাথে সাথে আহানাকেও টান দিয়ে বসিয়ে দিলো
.
“কি হয়েছে”?
.
“তোমার মন্ডু হয়েছে,বেয়াদব মেয়ে একটা,সবসময় উনার হেলথ আর কেয়ার নিতে হয় আমাকে,ইচ্ছে করে এমন করসো যেন কাল সকালে নাস্তা বানাতে না হয় তাই না?”
.
“এই যে শুনুন উল্টা পাল্টা কথা বলবেন না একদম আমি তো এলিনা!!!!!
না আসলে আমার হাতের সাথে লেগে আয়না ভেঙ্গে গেছিলো”

“এলিনা কি?ও তোমাকে কিছু বলেছে?”
.
“না,এলিনা আপু ভালো অনেক,উনি কেন আমাকে কিছু বলবে”
.
শান্ত ব্রু নাচিয়ে আহানার হাত নিয়ে ওর মাথায় রাখলো
“এবার বলো,এরকম তুমি ইচ্ছে করে করেছো নাকি অনিচ্ছাকৃত? ”
আহানা এবার কি বলবে,হা করে শান্তর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে সে,হাত সরাতেও পারতেসে না,শান্ত যেন আঠার মত লাগিয়ে ফেলেছে ওর হাতকে তার মাথার উপর
.
আহানা নিচের দিকে তাকিয়ে চুপ করে থেকে আস্তে করে বললো”রাগ উঠেছিল বলে ইচ্ছে করে এমন করেছি,আর কিছু জিজ্ঞেস করবেন না প্লিস!”
কথাটা বলে আহানা উঠে দূরে চলে গেলো
বারান্দার গ্লাস দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে সে,কিছুক্ষন পর একটা হাত ওর পাশ দিয়ে গিয়ে গ্লাস ছুঁলো
আহানা চমকে পিছনে তাকালো শান্ত ওর দিকে না তাকিয়ে ওর হাত ধরে একটা মলম লাগাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে
.
“আপনি বেড থেকে উঠতে গেছেন কেন?আমার খেয়াল রাখতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়ে দিতে চান?এমন করে তো আমি বাঁচবো না,বরং মরে যাব”
.
শান্ত মলম লাগানো থামিয়ে চোখ তুলে আহানার দিকে তাকালো একবার তারপর আবারও মলম লাগাতে লাগাতে বললো”আমার জীবন না থাকলে তুমি মরে যাবা কেন আহানা?”
.
আহানা স্তম্ভিত হয়ে মুখ আরেকদিকে ফিরিয়ে নিলো,রাগের মাথায় মুখ দিয়ে উল্টা পাল্টা বের হচ্ছে তার
মলম লাগানো হতেই চলে গেলো সে
বুয়াও এসেছে ততক্ষণে,আহানা বুয়ার হেল্পে সবার জন্য নাস্তা বানাচ্ছে
.
“আপা একটা কথা কমু?”
.
আহানা চুলায় মুরগীর মাংস নাড়তে নাড়তে বললো”হ্যাঁ বলুন”
.
“আপনি শান্ত বাবার কি হোন?”
.
আহানা অনেক ভেবেচিন্তে বললো” ভালো বান্ধুবী”

শান্ত মুচকি হাসতেসে বসে বসে আর আহানার পাগলামো গুলো মনে করে দাঁত কেলাচ্ছে
আহানা টেবিলে খাবার আনতে আনতে বললো এই যে শুনুন!
শান্তর বুকে যেন কেউ দুম করে বাড়ি দিয়ে দিয়েছে,এভাবে আহানার ডাকটা একদম বুকের ভেতরে গিয়ে লাগে,বুকে হাত দিয়ে ডাইনিংয়ের দিকে চেয়ে বললো “জি বলুন আহানা ম্যাডাম”
.
“খাবার রেডি আমি নওশাদ ভাইয়া আর রিয়াজ ভাইয়াকে ডাকতেসি,আপনি কি ওখানে খাবেন নাকি এখানে এসে খাবেন”
.
“(আহানার হাতে)নাহ মানে আসতেসি
.
আহানা ওড়নায় হাত মুছে এগিয়ে আসলো,শান্ত ওয়াল ধরে চোখ মুখ বাঁকিয়ে আস্তে আস্তে আসতেসে
আহানা গিয়ে ওর হাতটা ধরলো
.
“শুধু শুধু ধরতেসো,তুমি আমাকে সামলাতে পারবা না”
.
“নওশাদ ভাইয়া মনে হয় বাথরুমে আর রিয়াজ ভাইয়া ফোনে কথা বলতেসেন,তাই আমি এলাম”
শান্ত চেয়ারে বসে হা করে চেয়ে বললো”এসব তুমি রেঁধেছো?”
.
“হুম,বুয়ার থেকে জেনে নিয়েছি আপনার কি কি প্রিয়,নিন খাওয়া শুরু করেন
বুয়া রান্নাঘরের দিকে যেতেই শান্ত আহানার হাত টেনে ওকেও চেয়ারে বসিয়ে দিলো
“তুমি কিছু খাওনি জানি আমি,আমার সাথে খাও এখন”
.
“নাহ,আমার বাসায় রান্না করা আছে,আমি সেটা খাবো”

“চুপ!এখন আমার সাথে খাবা,বেশি কথা নয়”
.
আহানা আলাদা একটা প্লেটে খাবার নিয়ে রান্নাঘরে গিয়ে প্লেটটা বুয়ার হাতে দিয়ে আবার ফেরত এসে নিজের জন্য প্লেটে খাবার নিতে থাকলো
শান্ত অবাক হয়ে বললো “কি ব্যাপার?ঐ প্লেট নিয়ে কই গেসিলা?”
.
আহানা তার প্লেটে খাবার নিতে নিতে বললো” বা রে বুয়া ও তো কিছু খায়নি,উনি খাবেন তো,উনাকে না দিয়ে আমি কি করে খাই?”
.
“কিন্তু আমি তো সবসময় সকালে উনাকে জিজ্ঞেস করলে উনি বলেন বাসায় রান্না করা আছে সেটা খাবেন”
.
“এটা মিথ্যা!কিছু কিছু কথা শুনলেই বুঝা যায় সেটা মিথ্যা,আর যদি সত্যিও হয় তো হোক না,আপনার দায়িত্ব আপনি পালন করবেন,বাসার যারা কাজ করে তাদের রেখে কিছু খাওয়া মোটেও ভালো কথা নয়”
.
“এত নলেজ বাপরে বাপ! তার মানে তুমি যে বললা বাসায় গিয়ে রান্না করা খাবার খাবে সেটাও মিথ্যা?”
.
আহানা হেসে দিয়ে বললো”হুম”
খাওয়া দাওয়া শেষে যে যার কাজে চলে গেলো,কিন্তু আহানা গেলো না,শান্ত একা কি করে থাকবে এই ভেবে রয়ে গেলো
শান্ত বারবার তার হাত, পা, গলা চুলকাচ্ছে,গোসল করা জরুরি,তবে হাত পায়ের যে অবস্থা একজন হেল্পিং হ্যান্ডের খুব প্রয়োজন
আহানাকে বলা যাবে না আর বলতেও চাই না
কারণ বললে সে মুখের উপর না করে দিবে আর আমার ও তো লজ্জা শরম আছে নাকি
আহানা শান্তর রুমের বারান্দার পর্দা সরাচ্ছে বারান্দা দিয়ে আলো বাতাস আসার জন্য
শান্ত হালকা কেশে বাধ্য হয়ে বলেই দিলো “শাওয়ার নেওয়া জরুরি”
কথাটা বলেই কাঁথা মুড়িয়ে মুখ লুকিয়ে ফেললো সে
আহানা পর্দা সরানো শেষে বারান্দার গাছগুলোতে পানি দিতে দিতে বললো “তো করেন”
গাছগুলো মনে হয় নতুন এনেছে,এর আগে এই ফুল সে এই বারান্দায় দেখেনি,অবশ্য এই বারান্দায় তেমন আসাও হয়নি তার
.
শান্ত মুখ থেকে কাঁথা সরিয়ে বললো “মানে?নিজে নিজে শাওয়ার নেওয়া পসিবল না😒”
কথাটা শুনে আহানা চোখ তুলে ওর দিকে তাকালো
“সত্যি তো!এখন কি করবো!
আচ্ছা চলুন আমি হেল্প করবো”
.
কিহহহহ?তুমি? তুমি আমাকে হেল্প করবে?
.
হ্যাঁ কেন?কি হয়েছে?
.
পরে কথা শুনাতে পারবা না কিন্তু!
.
শুনাবো না

দুজনে বাথরুমে,শান্ত বামপাশের দিকে তাকিয়ে আছে আর আহানা ডান পাশের দিকে
কি দিয়ে শুরু করবে সেটাই ভাবতেসে দুজনে
শেষে আহানা শান্তর টিশার্টটা ধরে খুললো,চোখ একবার বন্ধ করতেছে আবার খুলতেসে
“হইসে তুমি যাও,আমি ঝর্না অন করবো এখন”
.
আচ্ছা,কিছু লাগলে বলবেন
.
শান্ত চুপ করে ঝর্নার নিচে দাঁড়িয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে আছে,দরজা দিয়ে রুমে আহানাকে দেখা যাচ্ছে,বিছানা গুছিয়ে যাচ্ছে সে
ঝর্না অফ করে নিজে নিজে বের হওয়ার চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না,আহানাকে ডাক দিলো না পেরে
আহানা তোয়ালে নিয়ে এসে আগে ওর মাথার চুল মুছে দিলো ভালো করে
তারপর হাত ধরে বের করলো ওকে,বিছানায় বসিয়ে আলমারি খুলে একটা টিশার্ট নিয়ে শান্তকে পরিয়ে দিলো সে
তারপর তোয়ালে দিয়ে আবারও চুল মুছে দিচ্ছে শান্তর
শান্ত অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে,ঠিক সেভাবে যত্ন নিচ্ছে আহানা যেমন করে তার মা যত্ন নিতো,মা যত্ন নিতে নিতে বলতো “তোর বউ ও তোর এমন করে যত্ন নিবে”
আর আজ সেটা সত্যি হয়ে গেলো
.
আহানা তোয়ালে সরিয়ে ব্রু কুঁচকিয়ে বললো “কি ব্যাপার?এরকম মিটমিট করে হাসতেসেন কেন?”
.
“এমনি”
.
“আজ অফিসে যেতে হবে না আপনার,আমি রাফি স্যারকে বলে দিব কল করে”
.
“তুমি আমার ফোন এনে দাও,ঐ তো টেবিলের উপর রাখা”
.
আহানা গিয়ে ফোনটা শান্তর হাতে দিয়ে শান্তর জামা ধুতে চলে গেলো
শান্ত রাফিকে কল করে জানালো তার এক্সিডেন্টের কথা
রাফি চিন্তিত হয়ে বললো বেডরেস্ট নিতে
শান্ত বুদ্ধি খাটিয়ে বললো সে বাসায় একা এখন আহানাকে দরকার তাই আহানাও আসতে পারবে না,এক বলাতেই রাফি রাজি হয়ে গেলো,ডান বলে দিলো সাথে সাথে
আহানা জামাকাপড় বারান্দায় দিয়ে এসে দেখলো শান্ত খিলখিল করে হাসতেসে
.
“কি হইসে আবার?এরকম হাসতেসেন কেন?রাফি স্যার ছুটি দেয়নি বলে মাথা কি গেছে আপনার?”
.
“নাহ,আমি তো ছুটি পেয়েছি সাথে তোমার ও ছুটি নিয়ে” নিসি
.
“কিহ!!স্যার আমাকেও ছুটি দিয়েছেন?”
.
“হুম”

“আচ্ছা তাহলে আপনি বসুন আমি রাঁধতে যাই”

শান্ত টিভি অন করে ফোনে গেমস খেলতেসে এক হাত দিয়ে
এটা তার অভ্যাস,টিভি অন করে গেমস খেলা
কেন যে টিভি অন করে সে নিজেও জানে না,তবে টিভি অন না করলে ফোন দেখাতে মজা নেই
আহানা রান্নাবান্না শেষ করে এসে দেখলো শান্ত মাথা বিছানার নিচে ঝুলিয়ে ফ্লোরে ফোন রেখে গেমস খেলতেসে
“ওমা এটা আবার কেমন স্টাইলে গেমস খেলা?”
.
“আমি আরও অনেক স্টাইলে গেমস খেলতে পারি,রান্না শেষ হইছে কিনা বলো,খেয়ে ঘুমাবো,ঘুম আসতেসে অনেক”
.
“হুম শেষ”
.
“বুয়া আছে?”
.
“না আমাকে হেল্প করে চলে গেছে”
.
“তাহলে ভেরি গুড,যাও খাবার এনে আমাকে নিজ হাতে খাইয়ে দাও”
.
“😒হাত পা ভেঙ্গে এখন আমাকে দিয়ে কামলা খাটাচ্ছে,স্টুপিড!”
.
“কিছু বললে?”
.
“না,আনতেসি”
.
আহানা খাবার এনে শান্তকে নিজের হাতে খাওয়াই দিলো তারপর ঔষুধ
শান্ত গেমসে মন দিয়ে কখন যে এক প্লেট খাবার শেষ করলো বুঝতেই পারলো না,ঔষুধ খেয়ে বিছানায় মাথা এলাতেই গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলো সে
এত তাড়াতাড়ি মানুষ কিভাবে ঘুমাতে পারে তাই ভাবতেসে আহানা
খেতে মন চাচ্ছে না তার,এদিকে শান্ত বাসায় একা তাকে ফেলে রেখেও যাওয়া যাচ্ছে না,নওশাদ,সূর্য আর রিয়াজ ভাইয়া ৩জনেই কি কাজ করতে গেছে,তাকেও বলেনি আর শান্তকেও বলেনি,কি এমন কাজ যেটা শান্তর চেয়েও জরুরি?
আমার কেন জানি মনে হচ্ছে শান্তর জন্যই কাজ করতে গেছে তারা,কারণ শান্ত তো উনাদের কলিজা,এভাবে উনার দুঃসময়ে আমার সাথে একা রেখে যেতে পারে না তারা কিন্তু তার পরেও গেলো,কিছু তো একটা আছে
ভাবতে ভাবতে আহানা পানির গ্লাসটা নিয়ে বেড থেকে উঠে দাঁড়াতেই দেখলো শান্ত ওর ওড়না মুঠো করে ধরে ঘুমাচ্ছে
কি জ্বালা,আমার ওড়না ধরলো কখন আবার!
আহানা ওড়না টানতেসে আস্তে আস্তে যেন শান্ত জেগে না যায় ওমা তার পরেও ছুটতেসে না শেষে ওড়না রেখেই চলে গেলো সে
কিছুক্ষন পর এসে দেখলো পুরো ওড়না শান্ত তার গায়ে পেঁচিয়ে হাত পা ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে ঘুমাচ্ছে,আহানা হেসে দিয়ে বারান্দার পর্দা টেনে দিলো,আলোর কারণে ঘুমের ঘোরে মুখ বাকাচ্ছে শান্ত তাই

তারপর মনে হলো এভাবে বোরিং সময় না কাটানোর চেয়ে কিছু কাজ করলে কেমন হয়,শান্তর আলমারির ভেতর কেমন কেয়ামত হয়ে আছে,আমি বরং গুছিয়ে দিই
আহানা শান্তর আলমারিটা ভালো করে গুছিয়ে দিলো
শেষে নিচের তাকের জামাগুলে হাতে নিতেই কিসের যেন শব্দ হলো
নিচু হয়ে দেখলো ফ্লোরে একটা কাঁচের চুড়ি যেটা ভেঙ্গে ২টুকরো হয়ে গেছে
এটা কার?ভাবতে ভাবতে সেটা রেখে দিয়ে আলমারির দরজা আটকালো সে
শান্ত চোখ খুলে ঘড়ির দিকে তাকালো,বিকাল ৫টা বাজে তখন
একটু মাথা উঠিয়ে হেলান দিয়ে বসলো সে
দূরের চেয়ারে আহানা বসে আছে চোখ বন্ধ করে
শান্ত ওর দিকে তাকিয়ে নিজের দিকে তাকালো,গায়ে ওর ওড়না,হেসে দিয়ে গায়ের থেকে সেটা খুলে নিলো সে
নিজে নিজে উঠার চেষ্টা করলো,এখন কিছুটা ঠিক লাগতেসে,পায়ে ব্যাথা হালকা হালকা অনুভূত হয়,বেশি না
চলবে♥