প্রেমের পাঁচফোড়ন

প্রেমের পাঁচফোড়ন !! Part- 48

আচ্ছা,আমি বুঝিয়ে বলবো ওদের
একটা কথা বল তুই আহানাকে এই বাসায় রেখেছিস কেন?ফ্ল্যাটে নিয়ে গেলেই পারোস
.
আহানা যেতে চায় না,আর বললাম তো বিয়েটা আপাতত সবার থেকে অজানা আছে একটা কারণে
.
বাবা শান্তর মাথায় হাত রেখে ওর চুলগুলো এলিয়ে দিয়ে হেসে চলে গেলেন বাসা থেকে
.
আহানা শান্তর বাবার চলে যাওয়া দেখতেসে,শান্ত দুষ্টুমি করে এক ধাক্কা মেরে বললো জানো?? মা তো আমাদের আগে থেকেই বিয়ে ঠিক করে রেখেছিল,বাবা মাত্র বললো আমাকে

মিথ্যা বলেন কেন?হুহ!
.
সত্যি বলতেসি,যাই হোক,এখন বাই!
আমি বাবার সাথে যাচ্ছি
কথাটা বলে শান্ত ও চলে গেলো,আহানা চুপচাপ এসে ব্যাগ গুছানোয় মন দিলো,ভার্সিটিতে যেতে হবে
শরীর তেমন ভালো না কিন্তু এভাবে ক্লাস তো মিস করা যায় না
শান্ত বাবার সাথে বাসায় ফিরেছে,বাবা একটু কাশ দিয়ে সোফায় বসে নম্রভাবে বললেন এই বিয়ে সম্ভব না
.
এলিনার বাবা বিস্মিত হয়ে বললেন কি কারণ?
.
আসলে আমি জানতাম না শান্ত এলিনাকে লাভ করে না,আমি তো ভাবসি করে তাই আমি আপনাদের নিয়ে এসেছি,কিন্তু ও আমাকে সত্যিটা জানালো,আমি তো আর আমার ছেলেকে জোর করতে পারি না তাই না?
.
এলিনার বাবা এলিনার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললেন শান্ত তোমাকে লাভ করে না এটা তুমি জানতে না?
.
বাবা আমি মনে করেছি ও ফান করে বলতেসে
.
লাভ নিয়ে ফান কেন করবে মানুষ?শুধু শুধু সময় নষ্ট করেছো আমার,এখন কি আর করার!
আমরা আজ আসি তাহলে
এলিনার বাবা সোফা থেকে উঠে এলিনার হাত ধরে হনহনিয়ে চলে গেলেন
.
শান্ত দরজার পাশে দাঁড়িয়ে আছে চুপ করে,বাবা কাছে এসে বললেন আমি যাই
অল দ্যা বেস্ট,কোনো কিছুর দরকার হলে জাস্ট কল করে দিবি
আর হ্যাঁ যখন মনে হবে বিয়েটা পাবলিক করা উচিত তখন আমাকে জানাবি,আমি ধুমধাম করে আমার পুত্রবধূকে বরণ করে আনবো
.
শান্ত বাবাকে জড়িয়ে ধরলো,বাবা ওর পিঠে হাত বুলিয়ে বললেন আমার ছেলের কোনো কিছুতে আমি কমতি রাখিনি আর রাখবো ও না কোনোদিন,আল্লাহ হাফেজ

আহানা ভার্সিটির জন্য বেরিয়ে পড়েছে,রোদের মধ্যে আস্তে আস্তে কেঁপে কেঁপে হেঁটে চলেছে সে,শরীর খারাপ বলে মাথা ঘুরাচ্ছে বারবার
এখনও অনেকটা পথ বাকি
হঠাৎ শান্ত বাইক নিয়ে এসে ওর সামনে থামলো,চোখ রাঙিয়ে বললো তোমার সাহস তো কম না,অসুখের ভেতর তুমি ভার্সিটিতে যাচ্ছো!তাও হেঁটে হেঁটে!একদম চুল টেনে ছিঁড়ে ফেলবে,একটা চুলও মাথায় অবশিষ্ট রাখবো না,বেয়াদব মেয়ে কোথাকার!
.
আপনার কি?
.
আমার কি?তোমার জ্বর না থাকলে পানিতে চুবিয়ে বুঝাইতাম আমার কি,নাও উঠো বাইকে
.
না
.
তুমি উঠবে না তোমার ঘাড় উঠবে
শান্ত আহানার হাত টেনে বাইকে উঠিয়ে নিলো,এখনও ওর হাত ছাড়তেসে না
আহানা মুখটা গম্ভীর করে বললো আপনার বাবা হঠাৎ আজ সকালে আপনাকে ডাকলো কেন?আর এলিনা আপু আসলো কই থেকে?
.
এলিনা ওর ফ্যামিলি নিয়ে বাসায় হাজির হয়েছিল আমার আর ওর বিয়ের কথা পাকা করতে
.
কিহহহ

হুম,এখন সব গেছে,বাবা বুঝাই দিসে ভালো করে

এলিনা তার ক্লাসরুমে দাঁড়িয়ে ভার্সিটির গেটের দিকে চেয়ে আছে
শান্ত আহানাকে নিয়ে এসে ভার্সিটির সামনে বাইক থামালো
আহানা আর শান্ত সেখানে কথা বলতেসে,কথা বলতে বলতে একটা সময় শান্ত আহানার চুল ধরে টেনে ওকে কাছে নিয়েও এসেছিলো,এরপর দুজনে একসাথে ভার্সিটিতে ঢুকেছে
এলিনা সব দেখতেসে গাল ফুলিয়ে
এলিনার আর বুঝতে বাকি নেই যে শান্ত ওকে কেন ভালোবাসে না কারন হলো শান্ত তো আহানাকে ভালোবাসে
এলিনার রাগে মাথা খারাপ হয়ে গেছে কি করবে সেটাই ভাবতেসে সে
আহানা তার ক্লাস রুমের দিকে চলে গেলো
শান্ত ও তার ক্লাসের দিকে গেসে
আহানা রুপার সাথে কথা বলতে বলতে দেখলো এলিনা এসেছে ওদের ক্লাসরুমে
.
এলিনা রুপাকে বললো আহানার সাথে তার কিছু পার্সোনাল কথা আছে
রুপা ঠিক আছে বলে সরে গেলো
এলিনা আহানার পাশে বসে আহানার হাত ধরলো,তারপর বললো আমি জানি আহানা তুমি শান্তকে লাভ করো আর হয়ত শান্ত ও
বাট!
তুমি এটা ভাবোনি যে তুমি শান্তর যোগ্য না??কোথায় শান্ত আর কোথায় তুমি,স্টেটাস ও তো মিলে না,এক বিন্দু না!
শুনলাম তুমি অনাথ,তোমার কেউ নেই,২বেলা ভাত নুন খাও আরও কত কি!!
তুমি জানো?এসব শান্তর বাসার বুয়াও খায় না
আর তুমি কিনা সেই লেভেলের হয়ে শান্তর পাশে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখো?নিজের দিকে তাকিয়েছো কখনও?
কোন দিক দিয়ে তুমি নিজেকে ওর যোগ্য ভাবো? আচ্ছা আমি না বললে কি তুমি এসব ভাবতে না?
আমার দিকে তাকাও,আমি তো তোমার থেকে কতটা উপরের লেভেলের তার পরেও শান্ত আমাকে একসেপ্ট করলো না,কেন বলোতো?কারণ ওর পছন্দ আরও উচ্চ!
তোমার কি লজ্জা শরম নাই??সারাদিন সবখানে শান্তর আশেপাশে ঘুরঘুর করো!
অবশ্য তোমাকে এসব কেন বলতেসি,তোমার মত রাস্তার সরি অনাথ আশ্রমের মেয়েরা এসব ম্যানারস জানলে তো হতোই
একবার ভেবো কেমন?নেক্সট টাইম শান্ত আশেপাশে আসার আগে,বাই
.
আহানা কিছু বললো না,কারণ এলিনা যা বলেছে তার সব ঠিক
আমি এটা ভুলে গোছিলাম আমি কে,আমি সে যার কোনো পরিচয় নেই,অবৈধ সন্তান আমি
আমার তো কোনো যোগ্যতাই নেই শান্তর পাশে দাঁড়ানোর আর সেখানে আমি কিনা!
আহানা নিজেকে শক্ত করার চেষ্টা করতেসে
রুপা নওশাদকে বাই বলে আহানার কাছে ফিরে আসলো
.
কিরে আহানা ঐ ডাইনিটা কি বললো তোকে?

কিছু সত্যি
.
কি সত্যি?
.
কিছু না,আমার বাসায় অনেক কাজ আছে,আমি আসি
কথাটা বলে আহানা ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে চলে গেলো
শান্ত ক্লাস সেরে বটতলায় এসে বসেছে,বারবার আহানার ক্লাসরুমের দিকে তাকাচ্ছে,আহানাকে একবারও দেখলো না
এদিকে নওশাদ এসে মাথা খারাপ করে দিচ্ছে তার সাথে মার্কেটে যেতে,কাবিনে পরার জন্য শেরওয়ানি কিনবে
.
শেষে বাধ্য হয়ে সে নওশাদের সাথে বেরিয়ে গেলো
.
আহানা বাসায় ফিরে আয়নাটা নিয়ে বসে আছে
তার নিজের প্রতি আজ এই প্রথম এত ঘৃনা হচ্ছে
কেন আমার জীবনটা এমন হলো,কেন আমার মা বাবা নেই??
আমি কি দোষ করেছিলাম,কেন আমি ঐ আশ্রমেই ঠাঁই পেলাম
আমার কোনো পরিচয় নেই কেন!আমি আর একটা রাস্তার মেয়ের তফাৎ নেই কেন!!!
আহানা আয়নাটা ভেঙ্গে গুড়োগুড়ো করে ফেললো,আয়নার ভাঙ্গা প্রতিটা খন্ডে আহানা নিজেকে দেখতে পাচ্ছে,এতে করে রাগ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে তার
খুব রাগ হচ্ছে,আয়নার সব টুকরো হাত দিয়ে আরও টুকরো টুকরো করতে লাগলো সে
এতটা রাগ তার নিজেকে নিয়ে যে তার হাত কেটে যাবে এই চিন্তা তার মাথায় ছিল না,যতক্ষন না কাঁচ গুড়ো হয়েছে ততক্ষণ হাত দিয়ে সেগুলোকে সে ভেঙ্গেছে,সবগুলো ফ্লোরের সাথে মিশিয়ে শান্ত হলো সে
.
নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে রইলো,ব্যাথায়,মনের কষ্টে যন্ত্রনায় চিৎকার করলো সে,দম বন্ধ হয়ে আসতেসে তার
কেঁপে কেঁপে ফ্লোর থেকে উঠে দাঁড়ালো
বাথরুমে গিয়ে ভেসিনে হাত ধুয়ে রক্ত পরিষ্কার করলো,পুরোনো কাপড়ের টুকরা হাতে বেঁধে নিয়ে বসে থাকলো আবার
তারপর কিসব ভেবে ঝাড়ু নিয়ে আয়নার সব ভাঙ্গা টুকরো ফেলে দিলো ময়লার ঝুড়িতে
অফিসের সময় হয়ে গেছে,তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বের হতে নিতেই থেমে গেলো সে
শান্ত হাতে কাপড়ের টুকরো বাঁধা দেখলো সব ওলটপালট করে ফেলবে,আর যদি হাতে কোনো কাপড়ের টুকরো না থাকে তাহলে সহজে শান্তর চোখেও পড়বে না এত কিছু

ইস কেন রাগের বসে এসব করতে গেলাম আমি,এখন এসব লুকাতে কাঠ খড় পোড়াতে হচ্ছে আমাকে!
আহানা কাপড়ের টুকরাটা ফেলে দিলো,হাতের তালুতে তার কাঁটার মত লাল দাগ হয়ে আছে,হাতের তালুতে বিন্দু মাত্র জায়গা খালি নেই যেখানে দাগ নেই,ভিতরটা টনটন করতেসে অসহ্যকর যন্ত্রনায়,মন চাচ্ছে হাতটা কেটে ফেলে দিলে এই ব্যাথা কমতো
আহানা হেঁটে চলেছে,মাঝে মাঝে ওড়না দিয়ে হাত লুকানোর প্র্যাকটিস করতেছে
কিছুতেই শান্তকে এটা বুঝতে দেওয়া যাবে না,আর হ্যাঁ শান্ত থেকে আমাকে এখন দূরুত্ব বজায় রাখতে হবে,এলিনা আপু যা বলেছে সব ঠিক বলেছে,আমাকে আমার লেভেলেই থাকা উচিত
শান্তর সাথে সারাদিন থাকলে কেমন দেখায় আমি একদমই এসব ভাবিনি আগে,ভাবলে এতদিন এতদূর কথা গড়াতো না!

সব কাজ সেরে শান্ত ১টার দিকে সোজা অফিসে আসলো,আহানা আগে থেকেই সেখানে
আহানাকে দেখে মনে হলো মনটা শান্তি পেয়েছে,মুচকি হেসে আহানার পাশে গিয়ে বসলো সে
আহানা চুপচাপ বসে ফাইলে কিসব চেক করতেসে
.
কখন আসলে তুমি?ভার্সিটিতে তোমাকে দেখলাম না,অবশ্য আমিও ছিলাম না,নওশাদকে নিয়ে মার্কেটে গেছিলাম ওর বিয়ের শেরওয়ানি কিনতে,কি হলো?কথা বলতেসো না কেন?
.
নিজের কাজ করেন,অনেক কাজ পড়ে আছে!
আহানা আর একটা কথাও বলেনি
শান্ত গাল ফুলিয়ে তার কাজ করে যাচ্ছে
ব্রেক টাইমে আহানা এক গাদা ফাইল নিয়ে বসলো যাতে শান্ত ওকে ক্যানটিনে না নিতে পারে
শান্ত ও রাগতে রাগতে শেষ,গাল ফুলিয়ে আহানার দিকে তাকিয়ে টেবিলের উপর বসে সিগারেট খেয়ে যাচ্ছে,খাওয়া শেষ হলেই সেটা আহানার গায়ের দিকে মারতেসে
এই নিয়ে ৮টা খাওয়া শেষ
আহানা এখন যদি ওকে না আটকায় তাহলে মনে হয় ২০টা পার করে দিবে,কাশি উঠে গেছে তার এক নাগাড়ে এতগুলো খেতে খেতে
আহানা উপায় না পেয়ে কাজ রেখে উঠে এসে প্যাকেটটা নিয়ে নিলো ওর থেকে
.
কি সমস্যা আপনার?মরতে চান?
.
তুমি আমাকে ইগনোর করতেসো কেন সেই কারন জানতে চাই আমি
.
আহানা উত্তরে আর কিছু বললো না,নিজের কেবিনে এসে বসে পড়লো,ব্রেক টাইম ও শেষ
শান্ত কাশতে কাশতে ওর কেবিনে বসে পানি খেয়ে কাজে মন দিলো
আজ অফিস ছুটি হতেই আহানা এক মিনিট ও দাঁড়ালো না,হাঁটা ধরলো
শান্ত বাইক নিয়ে এসে দেখলো আহানা কোথাও নেই,চিন্তিত হয়ে আহানাকে কল করলো সে
আহানা ততক্ষণে বাসার কাছে চলে এসেছে,ফোন ধরে বললো বাসায় পৌঁছে গেছি
.
পৌঁছে গেছি মানে?তুমি আমার জন্য ওয়েট করলে না কেন?একা একা চলে গেলে কেন?বেয়াদব!
শান্ত ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখলো আহানা কল কেটে দিয়েছে ততক্ষণে, রেগে বাইকের স্পিড বাড়িয়ে যাচ্ছে সে আহানার বাসার দিকে

বাসায় ফিরে আহানা কাঁথা মুড়িয়ে শুয়ে পড়লো,শান্তকে এড়িয়ে চলা খুব কঠিন,নিশ্চয় এখন হনহনিয়ে এদিকে আসতেসে!একদম কড়া করে দুচারেক কথা শুনিয়ে দিব যেন আর আমার কাছে না আসে,ভাবতে ভাবতে দরজার দিকে চেয়ে ঘুমিয়ে গেলো সে
পরেরদিন সকালে আহানা উঠে পড়ে সবার আগে দরজার দিকে তাকালো,দরজা যেভাবে বন্ধ রেখেছিল ঠিক সেরকমই আছে,শান্ত আসেনি,যাক একদিনের ইগনোর কাজে লেগেছে তাহলে
বাসা থেকে বেরিয়ে মিষ্টিকে পড়াতে আসলো সে,মিষ্টি কান্না করতে করতে অংক করতেসে খাতায়
আহানা চমকে বললো কি হয়েছে মিষ্টি?কাঁদতেসো কেন?কি হয়েছে তোমার?
.
মিষ্টি আহানাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বললো” আমার santur এক্সিডেন্ট হয়েছে”
আহানা সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে গেলো,হাত পা কাঁপতেসে তার,কেঁপে কেঁপে বললো কি হয়েছে উনার,উনি কোথায়!
.
হসপিটালে😭

কথাটা শুনে আহানা মাথায় হাত দিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো,শান্তর বাসার দরজায় নক করতে লাগলো বারবার
রিয়াজ শান্তর জন্য বারতি পোশাক নিতে এসেছিল,সে দরজা খুলতেই আহানাকে দেখে চমকে বললো তুমি?
.
প্লিস ভাইয়া বলুন না শান্ত কোথায়,কোন হসপিটালে?
.
শান্ত ওয়েলকেয়ার হসপিটালে,আমি যাচ্ছি,আমার সাথে চলো
আহানা চোখের পানি আটকাতে পারতেসে না
জীবনে আপন বলতে কেউ ছিল না তার
শান্তকে সবচেয়ে আপন মনে হতো আর সেই শান্তর এক্সিডেন্ট হয়েছে সেটা সে এখন জানলো
হসপিটালে এসেই দৌড় দিলো সে,কেবিন নাম্বার জেনে নিয়ে পাগলের মত খুঁজতে লাগলো শান্তকে
অবশেষে সেই কেবিনে এসে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে দেখলো শান্ত নওশাদের সাথে কথা বলতেসে,আহানাকে দেখে কথা থামিয়ে ওর দিকে তাকালো সে
আহানা দৌড়ে এসে শান্তর হাত ধরে ওর পুরো শরীর পরোক করে নিলো
কাঁদতে কাঁদতে বললো আপনি ঠিক আছেন তো,আপনার কিছু হয়নি তো?কখন এক্সিডেন্ট হয়েছে?আমাকে জানান নি কেন?কি হলো কথা বলতেসেন না কেন আপনি?
শান্ত চুপ করে থেকে আহানার পাগলামো দেখতেসে
আহানা শান্তর কথার উত্তর না পেয়ে নওশাদকে ধরলো,নওশাদ বললো আহানা বসো এখানে আমি বলতেসি,ঠাণ্ডা হও,বেশি কিছু হয়নি
বাইক অন্য একটা বাইকের সাথে সংঘর্ষে দুটো বাইকই উল্টে গেছিলো,আল্লাহ মাফ করেছে বেশি কিছু হয়নি,জাস্ট পায়ে আর হাতের কুনুইতে চোট পেয়েছে শান্ত
.
তাহলে বেডে ভর্তি কেন উনি?
.
পায়ে ব্যান্ডেজ করেছে আর হাতে, ডাক্তার বলেছেন একদিন হাত পা নাড়ানো যাবে না তাই এখানেই রুম বুক করিয়েছি আমরা,এখন ঠিক আছে,চিন্তা করিও না
.
নওশাদ মুচকি হেসে রিয়াজকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে
আহানা চোখের পানি মুছে শান্তর পাশে বসে ঠাস করে চড় মেরে দিলো ওর গালে
শান্ত কিছু বলতে যাবে তার আগেই চড় খেয়ে হতভম্ব হয়ে গেছে সে
গালে হাত দিয়ে চোখ বড় করে বললো এখন মারলে কেন?

আপনি এত জোরে বাইক চালাতে গেছেন কেন?আর আমাকে খবর দেওয়া জরুরি ছিল না?আমি আপনার স্ত্রী! আপনার এক্সিডেন্ট হয়েছে সেটার জানার অধিকার নেই আমার?নওশাদ,রিয়াজ ভাইয়াকে জানাতে পেরেছেন আমাকে জানালে কি হতো?বেয়াদব কোথাকার,দেখি আমি দেখবো কিরকম চোট পেয়েছেন
আহানা উঠে শান্তর গায়ের টি-শার্ট খুলে নিলো
.
আরে আহানা কি করতেসো!
.
আহানা শান্তর হাত উল্টিয়ে দেখলো কুনুইতে ব্যান্ডেজ করা,পিঠে কোনো চোট নেই
ব্রু কুঁচকে আবারও টিশার্টটা পরিয়ে দিলো ওকে
.
তুমি জানলে কি করে যে আমার এক্সিডেন্ট হয়েছে??
.
মিষ্টি বলেছে,নাহলে তো জানতামই না,আমি ভাবতাম আমি শুধু এই বিয়ে মানি না আপনি মানেন,কিন্তু আজ সিউর হলাম আপনিও এই বিয়ে মানেন না
মানলে,আমাকে স্ত্রী মেনে থাকলে আমাকে একটিবার জানাতেন,আমাকে এরকম পাগলের মত ছুটতে হতো না,আপনি খুব খারাপ একটা লোক
.
শুনো,আমার ফোনে এমনিতেও চার্জ ছিল না,৩%ছিলো যখন আমি রোডে বসে নওশাদকে কল করতেসিলাম,তারপর ফোন অফ হয়ে গেছে,নওশাদকে বলতে গেসিলাম তোমাকে জানাতে তখন রাত ১০টা বাজে,তাই আর বলিনি,সামান্য একটা ব্যাপার,তুমি যেভাবে কাঁদতেসো যেন আমার হাড় ভেঙ্গেছে আর হাঁটতে পারবো না কোনোদিন
.
চুপ!এসব আনাব সানাব কে বলতে বলছে আপনাকে?? একটু চুপ থাকুন এখন
এবার বলেন কিছু খেয়েছেন?
চলবে♥