প্রেমের পাঁচফোড়ন

প্রেমের পাঁচফোড়ন !! Part- 47

শান্ত আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে
মন খারাপ করে বললো মা??দেখতেসো তো?
তুমি বলে দাও কি করবো আমি,এই মেয়েটা আমার টাইপের না তাও কেন ওর কষ্ট আমি সহ্য করতে পারি না,কেন ওকে না দেখলে আমার বুকটা পুড়ে যায়,আমি ওকে ভালোবাসি না মা,বাসি না কিন্তু।।।
ভাবতে ভাবতে ঔষুধ নিয়ে বাসায় ফিরে আসলো সে
দরজায় নক করলো ৩/৪বার কিন্তু আহানা দরজা খুলতেসে না,বাধ্য হয়ে চাবি দিয়েই দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলো সে
বেডরুমে খাটের পাশে ফ্লোরে বসে আছে আহানা,দেয়ালে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে গেছে সে
শান্ত হাঁটু ভেঙ্গে নিচে বসে আহানার কপালে হাত দিলো তারপর গলায়,জ্বর তো জ্বরের জায়গাতেই আছে
ওকে ছেড়ে যাওয়ার শক্তি/মনোবল দুটোই আসতেসে না তাও যেতে হবে

শান্ত আহানাকে নাড়িয়ে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুললো
আহানা চোখ ডলতে ডলতে বললো ঔষুধ রেখে যান আমি খেয়ে নিব
.
না,তুমি খাবে না আমি জানি,আর নিচে বসেছো কেন?জানো না ফ্লোর অনেক ঠাণ্ডা? বিছানায় এসে বসো
.
না,আমি আমার টাকার কেনা বিছানায় শুবো,অন্য কারোর না
.
মেজাজ গরম করবা না একদম!!
.
শান্ত আহানার হাত টেনে বিছানায় এনে বসালো,রান্নাঘর থেকে ভাত তরকারি প্লেটে নিয়ে আহানার পাশে বসে লোকমা তুলে ওর মুখের সামনে ধরলো
আহানা বাধ্য হয়ে খাচ্ছে কারণ সে জানে শান্ত ওর কথা শুনার মতো ছেলে না
না খেলে শান্ত ও এখান থেকে নড়বে না
ঔষুধ খাওয়া শেষে শান্ত বাই বলে চলে গেলো
আহানা দরজা লাগিয়ে ছিটকিনিও লাগিয়ে নিলো,শান্তকে বিশ্বাস নাই,পরে যদি আবার আসে
.
শান্ত তার বাসায় ফিরে বারান্দাতে দাঁড়িয়ে আহানার বাসার দিকে চেয়ে আছে সেই কখন থেকে
চোখে এক বিন্দু ঘুম ও নেই তার,বারবার একটা কথাই মাথায় ঘুরপাক করতেসে যে আহানা ঠিক আছে তো?
ওর কিছু দরকার হয়নি তো!
সিগারেট আজ ১২টার জায়গায় ১৫টা খাওয়া হয়ে গেছে
নাহ আর এভাবে থাকা সম্ভব না
শান্ত বিছানা থেকে টিশার্টটা নিয়ে পরে নিলো তারপর জ্যাকেটটা পরতে পরতে বেরিয়ে পড়লো বাসা থেকে
নওশাদ আর বাকি সবাই ঘুমাচ্ছে নাক ডেকে
.
শান্ত আহানাদের বাসার দোতলায় এসে লকে চাবি ঢুকিয়ে ঘুরালো তাও দরজা খুললো না,বুঝতে বাকি নেই যে আহানা ছিটকিনিও লাগিয়েছে
মন খারাপ করে শান্ত বাসা থেকে বেরিয়ে চলে যাওয়ার সময় বারান্দার দিকে চোখ পড়লো তার
সেই মইটা খুঁজে এনে বারান্দায় উঠে আসলো সে,এখন কথা হলো গিয়ে বারান্দার দরজাও লক
কি একটা ঝামেলা!

পরে শান্তর মনে পড়লো তার কাছে বাসার যে চাবিটা আছে তাতে বারান্দার এক্সট্রা চাবিও আছে
তাড়াতাড়ি পকেট থেকে চাবিটা নিয়ে বারান্দার দরজা ও খুললো সে,এটাতে আর ছিটকিনি লাগায়নি আহানা
ভিতরে এসে বেডরুমের দিকে গিয়ে দেখলো আহানা নিচে ফ্লোরে গুটিশুটি দিয়ে ঘুমাচ্ছে
এই মেয়েটা এত নাছোড়বান্দা!বিছানায় শুলে যেন টাকা দিতে হবে আমাকে
.
শান্ত কাছে এসে নিচে বসলো
আহানার কপালে হাত দিয়ে জ্বর চেক করলো,আগের থেকে একটু বেড়েছে,বাড়বেই তো
আহানা এরকম ঠাণ্ডা ফ্লোরে শুয়ে আছে,জ্বর তো কত জোরে বাড়বে!
.
শান্ত আহানাকে আস্তে করে কোলে তুলে নিলো
আহানা ঘুমের ঘোরে ওর জ্যাকেট মুঠো করে ধরে বললো শান্ত এসেছো!ভালো করেছো,আর যেও না কোনোদিন
.
শান্ত আহানাকে বিছানায় নিয়ে গেলো,চাদরটা টান দিয়ে ওর গায়ে জড়িয়ে দিলো
আহানা শান্তর হাত মুঠো করে ধরে ঘুমাচ্ছে,আর বিড়বিড় করে কিসব বলে যাচ্ছে
শান্ত আহানার পাশে বসে ওর দিকে তাকিয়ে থাকলো
কপালে পোটি দেওয়া উচিত,তবে পোটি দিতে গেলে ও জেগে যাবে আর গোটা মহল্লা মাথায় করবে,আমাকে তো বাসা থেকে বেরই করে দিবে
রাত ২:৩০বেজে গেছে
শান্ত কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে,চোখ খুলে দেখলো তার মাথা আহানার মাথার সাথে লেগে আছে আর আহানার হাতটা ওর বুকের উপর
ঘুমের ঘোরে আহানা ওকে কতটা কাছে টেনে নিয়েছে
শান্ত সাথে সাথে সরে গেছে
আহানা নড়ে উঠে আরেকদিকে ফিরে গেলো
চাদরটা ভালো করে ওর গায়ে টেনে দিয়ে চোখ ডলতে ডলতে চলে গেলো শান্ত তার বাসার দিকে
আর রিস্ক নেওয়া ঠিক হবে না,আহানা কাঁচা গিলেই ফেলবে আমাকে এখন এসময়ে এখানে দেখলে
বারান্দা দিয়ে বেরিয়ে মই দিয়ে নিচে নেমে চলে গেলো সে
বাসায় ফিরে এপাশ ওপাশ করে ১/২ঘন্টা ঘুমালো এর বেশি না
ভোরে ঘুম থেকে উঠে আহানার বাসায় যাওয়ার সময় পড়লো সূর্যর সামনে
ওকে মর্নিং ওয়াকের বাহানা দিয়ে কোনোমতে আহানার বাসায় চলে আসলো সে
এবারও সেই বারান্দা দিয়েই বাসায় ঢুকলো

৬টা বাজে তখন,আহানা এখনও ঘুমাচ্ছে,শান্ত আসার সময় মিষ্টির মাকে বলে দিয়েছে আহানার শরীর খারাপ সে আজ আসতে পারবে না
রুমে এসে আহানার পাশে বসলো সে,আহানাকে দেখে যেন মনে শান্তি পেলো
জানালা দিয়ে বাইরের সিগ্ধ আলো আহানার সারা গায়ে এসে পড়েছে,এটাকে বলে ভোর বেলার আলো,রোদের আলো নয়
এই আলোয় একটা মিষ্টি ভালো লাগা কাজ করে তাই হয়ত মানুষ এসময়টায় হাঁটতে বের হয়
আহানা হাত পা ছড়িয়ে গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন, তার সামনে বসে কেউ একজন ওকে খুব নিখুঁত ভাবে দেখে যাচ্ছে তা তার অজানা
শান্ত আহানার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে আছে,লিপস্টিক নেই,নির্জীব ঠোঁটজোড়া,উসকো খুসকো
তাও শান্তর কাছে এই ঠোঁটটাই সবচাইতে বেশি সুন্দর লাগতেছে
আঙ্গুল দিয়ে ঠোঁটটা স্পর্শ করলো সে
হাত কাঁপতেসে অনবরত,কিসব ভেবে এক ঝটকায় হাত সরিয়ে ফেললো সে
উঠে রুম থেকে বেরিয়ে চলে গেলো
.
৭টার দিকে আহানা চোখ খুলে নিজেকে বিছানায় পেয়ে লাফ দিয়ে উঠে পড়লো
আমি তো ফ্লোরে শুয়েছিলাম তাহলে এখানে এলাম কি করে?
বিছানা থেকে নেমে গিয়ে মেইন দরজার কাছে আসলো সে
মেইন দরজা ও তো বন্ধ,তার মানে শান্ত আসেনি
আহানা মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বারান্দার দিকে তাকালো একবার,বারান্দার দরজা খোলা
দৌড়ে বারান্দায় এসে নিচে তাকিয়ে দেখলো একটা মই,তার মানে শান্ত?
.
আহানা?এত খুঁজতে হবে না আমি রান্নাঘরে
.
আপনি?এখানে এলেন কি করে আমি তো বারান্দার দরজা লক করেছিলাম
.
আমার কাছে বারান্দার চাবি ও ছিলো
.
আর আমি তো ফ্লোরে শুয়েছিলাম,আপনি আমাকে বিছানায় এনেছেন?

না তো,তুমি বিছানায় শুয়ে ছিলে😁
.
মিথ্যা বলেন কেন?
.
মিথ্যা কেন বলবো,তোমাকে টাচ করার চেয়েও আমার কাছে আরও অনেক ভালো কাজ আছে বুঝছো
.
আহানা রান্নাঘরে এসে দেখলো শান্ত রুটি বানাচ্ছে
.
শান্ত আটা নিতে নিতে বললো আমি মিষ্টির আম্মুর সাথে কথা বলে নিয়েছি,আজ পড়াতে হবে না,আজ তুমি রেস্ট নাও
.
এরকম পানি দিসেন কেন?এত পাতলা দিয়ে তো কাই হবে না
আরও আটা দিন
.
না,আমি এটা ইউটিউব দেখে শিখেছি,তুমি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো
.
আবার ইউটিউব?আমার আর খেতে হবে না তাহলে
আপনি যান আমি বানাবো, সরুন!
.
নাহ,ডিল ইজ ডিল,কাল তুমি নাস্তা বানিয়েছো আজ আমি
যাও এখন
আহানা বিরক্ত হয়ে চলে গেলো
শান্ত ঐ পাতলা আবরণটা তাওয়ায় ঢেলে দিলো
বাহ সিম্পল রুটি রেডি,বেলতেও হয়নি, গোল ও হয়ে গেসে,শান্ত ইউ আর গ্রেট!😎

আহানা ফ্লোরে বসে রান্নাঘরের দিকে চেয়ে আছে
শান্ত নাস্তা বানিয়ে বাইরে এসে দেখলো আহানা নিচে বসে আছে
রেগে এক ধমক দিয়ে বললো তোমাকে যে বারবার বলি ঠাণ্ডা ফ্লোরে বসিও না কথা কানে যায় না তোমার?
.
আমি আপনার বিছানায় বসবো না,শুবো ও না
.
শান্ত খাবার বিছানায় নিয়ে রেখে ওর দিকেই আসতেসে জ্যাকেট খুলতে খুলতে
.
আহানা যেতে যেতে দেয়ালের সাথে লেগে গেলো
শান্ত জ্যাকেট খুলে আহানার গায়ে দিয়ে ওকে নিচ থেকে কোলে তুলে নিলো
.
এই আপনার সাহস তো কম না,ছাড়ুন আমায়,এটা কিরকম অসভ্যতামি,আপনি বলছেন আমাকে টাচ করবেন না কখনও
.
শান্ত যেন আহানার কোনো কথায় শুনতেসে না ওকে বিছানায় এনে নামালো
.
আমি বসবো না মানে বসবো না
.
আহানা বেড থেকে নিচে নেমে যেতে নিতেই শান্ত এবার ওর হাত টেনে হিঁছড়ে বেডের সাথে চেপে ধরলো
.
আপনি এমন করতেসেন কেন,আমি কান্না করবো এখন
.
শান্ত হাত চেপে ধরতে ধরতে বললো করো কান্না,আই ডোন্ট কেয়ার!
কথাটা বলে আহানার গায়ের ওড়নাটা টেনে নিয়ে নিলো সে,এরপর সেটা দিয়ে হাত বেঁধে দিলো খাটের পায়ার সাথে

আহানা চুপ করে শান্তর দিকে চেয়ে আছে
শান্ত খাবার নিয়ে ওর পাশে বসলো
শান্ত থেকে চোখ নামিয়ে রুটির দিকে তাকালো আহানা
রুটি দেখে ওর তো চোখ কপালে,যেমন গোল তেমনই সুন্দর

এভাবে তাকাতে হবে না হুহ!ইউটিউব দেখে যেমন সব উৎপাত করা যায় তেমনি মাঝে মাঝে পারফেক্ট ও করা যায়,নাও হা করো
.
খাবো না আমি,আমার হাতের বাঁধন খুলেন বলতেসি
.
খুলবো না,তুমি আমার একটা কথাও শুনতে চাও না,বাঁধবো না তো কি করবো আমি?চুপচাপ খাও তাহলে হাতের বাঁধন খুলে দিব
.
খাব না আমি!
আহানা নিজের দাঁত দিয়ে হাতের গিট্টু খুলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে
হঠাৎ বুকের ভেতর কেমন যেন করতেছে,সাথে সাথে ওড়না থেকে দাঁত উঠিয়ে মুখটা ঘুরালো সে,শান্ত ওর খুব কাছে এসে গেছে ততক্ষণে,এতটা কাছে এর আগে কখনও আসেনি
আহানা হতভম্ব হয়ে গেছে এমনটা দেখে
শান্ত ফিসফিস করে বললো খেয়ে নাও নাহলে কিছু বাকি রাখবো না যেটা বাঁধা থাকবে না
.
আহানা বললো ঠিক আছে,কিন্তু সে নিজের হাতে খাবে
শান্ত তাই হাতের বাঁধন খুলে দিলো
আহানা ব্রু কুঁচকে একটা রুটির অর্ধেক খেলো,আর পারবে না গিলতে,আর এক টুকরা খেলেই বমি হয়ে যাবে
আহানা ঔষুধ খেয়ে দুম করে শুয়ে পড়লো আবার
শান্ত রান্নাঘরে এসে চা বানাচ্ছে
ইউটিউব দেখে বানাচ্ছিলো হঠাৎ কল আসলো বাবার
বাবা নাকি একটা কাজে ঢাকায় এসেছে এখন শান্তর ফ্ল্যাটের দিকে আসতেসে,বারবার করে বলে দিয়েছে শান্ত যেন সময় করে আসে
শান্ত ঠিক আছে বলে ফোন পকেটে ঢুকালো
কি ব্যাপার বাবা কেন ডাকলো,কি এমন জরুরি কাজ! যে আমাকে সময় নিয়ে যেতে হবে?
চা নিয়ে এসে আহানাকে দিয়ে সাথে সাথে বেরিয়ে পড়লো বাসা থেকে
আহানা বুঝে উঠতে পারলো না শান্ত হুট করে এভাবে চলে গেলো কেন

শান্ত বাসায় ফিরে বুয়াকে দিয়ে পুরো ফ্ল্যাট গুছিয়ে নিলো
বাবা ৩০মিনিটের ভিতরেই বাসায় এসে পড়লো,তবে একা না সাথে এলিনা আর তার বাবা মা ও আসছে
শান্ত ওদের দিকে তাকিয়ে আন্দাজ করলো যে কি ঘটতে চলেছে
বাবা চায়ে চুমুক দিয়ে পুরো বাসাটায় একবার চোখ বুলিয়ে নিলেন,হেসে বললেন কতদিন পর এসেছি এখানে
চা খেতে খেতে বললেন এলিনা আমাকে সব বলেছে ও যে তোকে ভালোবাসে,এবং তার বাবা মাও রাজি তবে এক শর্তে
সেটা হলো তোর একটা ভালো জব হওয়া লাগবে,তাই আমি তোকে আমার অফিসে বসিয়ে দিব তুই তোর temporary জবটা ছেড়ে দিস এখন
বিয়ে কদিনেই সম্পূর্ন হয়ে যাবে,ব্যস হয়ে গেলো
.
শান্ত চুপ করে থেকে বাবার হাত ধরে সবাইকে এক্সিউজ মি বলে বেরিয়ে আসলো করিডোরের দিকে
.
কি ব্যাপার?আমাকে এখানে নিয়ে এসেছিস কেন?তোর কি বিয়েতে মত নেই?
.
না নেই,আমার মত থাকলে তো হতোই,তুমি উনাদের ডাকার আগে আমার সাথে একবার কথা বলে নিতে পারতা
.
এলিনা তোর ভালো বান্ধুবী,তাহলে কি সমস্যা? তুই কি অন্য কাউকে পছন্দ করিস নাকি?
.
বাবা চলো আমার সাথে
শান্ত বাবাকে নিয়ে সোজা আহানার বাসার সামনে আসলো
আহানাকে কল করে নিচে আসতে বললো
আহানা শান্তর বাবার কথা শুনে মাথায় ঘোমটা দিয়ে তাড়াতাড়ি করে নিচে নেমে আসলো
.
আসসালামু আলাইকুম
.
ওয়ালাইকুম আসসালাম
.
সালাম নিয়ে বাবা শান্তর দিকে তাকালেন
এই মেয়েটা কে??আর তুই আমাকে এখানে এনেছিস কেন?

বাবা ও হচ্ছে আহানা,আহানা ইয়াসমিন,মনে আছে তোমার?
.
বাবা কিছুক্ষন চুপ করে থেকে মনে করার চেষ্টা করলো তারপর চোখ বড় করে বললেন আহানা?তোমার মা যার ভরণপোষনের দায়িত্ব নিয়েছিল?
.
হ্যাঁ,এটাই সেই আহানা
.
বাবা চমকে আহানার দিকে তাকিয়ে আছেন
এরপর শান্ত যা বললো তার জন্য তিনি মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না
শান্ত বললো আহানা ওর স্ত্রী
.
এসব কি বলতেছিস তুই শান্ত?
তোর স্ত্রী মানে?বিয়ে হলো কবে? আর কিভাবে?তুই আহানাকে পেলিই বা কোথায়?বিয়ে কেন করলি তাও আমাকে না জানিয়ে
.
শান্ত নিচের দিকে তাকিয়ে আছে
.
বাবা শান্তকে আপাতত আর কিছু বলবেন না ভেবে নিলেন কারণ বিয়ে হয়ে গেছে এখন চিল্লাইলেও লাভ নাই
এসব ভেবে তিনি আহানার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখতেসেন
পরনে তার হালকা গোলাপি রঙের সুতির জামা,চোখে মুখে অসুস্থতা ফুটে উঠেছে
আহানাকে দেখলে রুপের ফুলকি না পড়লেও মায়ার ঠেলাঠেলিতে চোখ ফেরানো যায় না,মায়া জিনিসটা সৌন্দর্যকেও হারিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে
মুচকি হেসে হাত নিয়ে আহানার মাথায় রাখলেন তিনি
তারপর বললেন মা গিয়ে চা বানাও তো
দেখি আমার পুত্রবধূর হাতের চা কেমন
.
আহানা খুশি হয়ে চলে গেলো
.
শান্ত ভূত দেখার মতন বাবার দিকে তাকিয়ে আছে,মনে মনে ভাবতেসে মূহুর্তেই বাবা এমন বদলে গেলো কি করে
.
বাবা শান্তর কাঁধে হাত দিয়ে হাঁটা ধরলেন
তা দেনমোহর কত দিয়েছিলি?
.
দদদদদশশ হহহাজাররর🤭
.
এরকম বেকুবি তোরে করতে কইসে কে?মাত্র ১০হাজার?আমাকে একবার কল করলে কি হতো তোর?তোর মাকে আমি ২০লাখ নগদে দেনমোহর দিয়েছিলাম
আর তুই কিনা তার ৫০%ও দিলি না
মানসম্মান কিছু রাখলি না আমার!
.
আমার কাছে এত টাকা ছিল না বাবা
.
আমি ছিলাম না?একটা কল করলেই ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফার করে দিতাম আমি,আমাকে বিশ্বাস করতে তোর এত ভাবা লাগে?মনে রাখিস তোর মা চলে যাওয়ার পর একা হাতে আমি তোকে বড় করেছি, তোর লালন পালনে রেণু কোনো ভূমিকা পালন করেনি,আর তুই কিনা এতবড় একটা ঘটনার কথা আমার থেকে লুকালি?আজ এলিনার পরিবারকে নিয়ে না আসলে হয়ত আমি এটা জানতাম ও না
.
বাবা তুমি বিয়েটা মানতেসো?
.
শুন শান্ত!এটা আমার সিদ্ধান্ত না,এটা তোর মায়ের সিদ্ধান্ত
তোর মা চেয়েছিলো আহানাই যেন ভবিষ্যতে তোর বউ হয়,আমাকে বলেও গেছিলো,আমার একদম মনে ছিল না এই কথাটা
আর এখন আহানাকে দেখে স্পষ্ট সব মনে পড়ে গেলো আমার
আমার উচিত ছিল আহানাকে খুঁজে বের করার আর সেখানে তুই খুঁজে বের করেছিস আই এম সো প্রাউড অফ ইউ মাই বয়
একেই বলে মেড ফর ইচ আদার,তোর মায়ের ইচ্ছা এভাবে পূরন হবে আমি ভাবতেই পারিনি
.
শান্ত হা করে বাবার দিকে তাকিয়ে থেকে হাঁটা ধরলো,তার মানে আমি যা করেছি তা ঠিক করেছি?
.
হুম,আমাকে আরও আগে জানালে ধুমধাম করে বিয়ে দিতাম তোদের,যাই হোক,আমার একটা মাত্র ছেলের বিয়ে এমন নরমাল ভাবে হতে দিব না আমি
ধুমধাম সব হবে

কথা বলতে বলতে শান্ত বাবাকে নিয়ে আহানার বাসায় ঢুকলো
আহানা চা আর বিসকুট এনে রেখেছে বিছানার উপর
শান্ত মাথা চুলকাচ্ছে লজ্জায়,কারন বাসায় একটা বেড ছাড়া একটা চেয়ারও নেয় যে বাবা বসবে
.
বাবা বেডরুমের বেডটার দিকে তাকিয়ে হেসে বললেন এটা তুই কিনছিস তাই না?তোর চয়েস চিনি আমি,যাই হোক চা টা অনেক ভালো হয়েছে আহানা মা
এখন তুমি রেস্ট নাও তোমার তো মনে হয় শরীর খারাপ
.
শান্ত বললো হুম,জ্বর ওর
.
আচ্ছা আমি তাহলে যে আগুন লাগাইসি সেটা নিভিয়ে আসি
.
বাবা তুমি প্লিস এলিনাকে বলিও না আমি যে বিয়ে করেছি,আমি ব্যাপারটা আপাতত চাপা রাখতে চাই
চলবে♥