ঘৃণার মেরিন

ঘৃণার মেরিন Season 3 !! Part- 10

নীড় : মেরিন …
সুচি : তুমি ওকে চিনো mr. friend ?
নীড় : না মানে ইয়ে মানে … কি জানি বলে … ও আমার মামাতো বউ…
সুচি : মামাতো বউ? 😒।
নীড় : আসলে কি…
মেরিম : আমি উনার মামাতো বোন…
সুচি : ও… আমিও কানে বেশি শুনি। তাইতো বলি নীরা ছারা কি আর কেউ নীড়ের বউ হতে পারে?
নীড় মনে মনে : তুই জঘন্য মৃত্যু পাবিরে পাগলা…
মেরিন : ok then চলো।
সুচি : নীড় চল আমাদের সাথে ।
নীড় মনে মনে : দেখি তুই করে খুন হস।
সুচি : কি রে বল কিছু।
নীড় : চল…
মেরিন : তোমরা যাও আমি তোমাদেরকে follow করছি ।
সুচি : ok…
নীড় মনে মনে : মনেহয় আমাকেও মেরে দিবে।

গাড়িতে…
সুচি : কি রে তোর চেহারার রং উরে গেছে কেন ?
নীড় : …
সুচি : আতংকে পরে আছিস মনে হচ্ছে ।
নীড় : ….তুই ওকে কিভাবে চিনিস ?
সুচি : সে অনেক লম্বা কাহিনী। সময় নিয়ে বলবো।
নীড় : কোথায় যাচ্ছি আমরা ?
সুচি : হসপিটালে ।
নীড় : কিন্তু কেন ?
সুচি : আমার মেয়ের জন্য ।।
নীড় : তোর মেয়ে?
সুচি : হ্যা আমার মেয়ে।
নীড় : শালি ,, মিষ্টিও দিলিনা ।
সুচি : আর মিষ্টি …divorce হতে চলল। জানিনা কি হবে ?
নীড় : কি বলছিস কি ? কি হয়েছে ?
সুচি : রবি কারো সাথে relation এ আছে ।
নীড় : what? ভাইয়া তো অমন ছিলোনা । হঠাৎ এমন কি করে হলো? তুই কিছু বলিসনি?
সুচি : কি বলবো? ওকে বিশ্বাস করেছিলাম। তাই কখনোই কিছুতে বাধা দেইনি । dominate করিনি … ওর best friend এর সাথে যে ও এমন করে জরিয়ে যাবে বুঝতেই পারিনি ।
নীড় : রবিকে তো আমি জানে মেরে ফেলবো । আজই ওর জীবনের শেষ দিন হবে …
সুচি : এই না… তুই ওকে কিছু বলবিনা…
নীড় : কেন কিছু বলবোনা কেন ? ওই লোকের তো বেচে থাকারই কোনো অধিকার নেই…
সুচি : অমন করে বলিসনারে … ওর কিছু হলে আমি মরে যাবো ..
নীড় : তুই কি পাগল? যে লোকটা তোকে এতো বড় ধোকা দিলো তাও তুই ওকে এতো ভালোবাসছিস? তোর কি আত্মসম্মান নেই…
সুচি : আমার কোনো অভিযোগ নেইরে ওর প্রতি। কেবল মেয়েটা আমার কাছে থাকলেই চলে ।
নীড় : এই তোদের মতো মেয়েদের জন্যেই না রবিদের মতো মানুষ সুযোগ পায়…
সুচি : আচ্ছা তোর ভালোবাসা মানে নীরা যদি কখনো এমন ধোকা দেয় তখন তুই কি করবি বলতো???
নীড় : …
সুচি : মেরিনকে আসতে বলেছি যেন কোনো রকমে ও আমার মেয়েটাকে আমাকে পাইয়ে দেয়… আমার তো আর কেউ নেই যে আমার সাহায্য করবে… মেরিনের তো অনেক power …
নীড় : …
সুচি : নে চলে এসেছি….

মেরিন আগেই এসে দারিয়ে আছে ।
মেরিন : চলো…
সুচি : হামম।
ওরা ওপরে গেলো। সুচির মেয়ের নাম রিচি । রিচি একটু অসুস্থ । তাই হসপিটালে admit । সুচির সামর্থ্য নেই রিচির চিকিৎসার ব্যায়-ভার নেয়ার । তাই রবি মেয়েকে নিজের কাছে নিয়ে গেছে । আর বলেছে যে রিচিকে আর সুচির কাছে দিবেনা । আর তাই সুচি চিন্তায় পরে গেছে ।
নীড় : no worry … all will be fine…
সুচি : হামম।
মেরিন রিচির মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে । সুচিকে রবি ঢুকতে দেয়নি ।
রবি : মেরিনকে আনার মানে কি ?
সুচি : আমার মেয়েকে ফিরে পাওয়া।
রবি : দেখো মেরিনের কাছে আমি ৠণী। কারন ও আমার মেয়ের জীবন বাচিয়েছিলো… কিন্তু তুমি আমার মেয়ের থেকে দূরে থাকবে…
নীড় : you…
সুচি নীড়কে বাধা দিলো ।
রবি : বাহ ভালোই তো… নতুন কাউকে পেয়েছো দেখি…
নীড় রবির মুখে নাক বরাবর ১টা ঘুষি মারলো। সুচি টানতে টানতে নীড়কে নিয়ে গেলো ।
.
রাতে…
নীড় আর সুচি বসে আছে । মেরিন এখনও আসেনি…
নীড় : মেয়েটা এতো দেরি করছে কেন?
সুচি : সেটাই তো… ওই তো চলে এসেছে ।
নীড় : এতো করলে যে? আর রিচি কোথায় ?
মেরিন : ওর বাবার কাছে ।
সুচি : বাবার কাছে মানে ?
মেরিন : বাবার কাছে মানে বাবার কাছে । ওর বাবা যতোদিন বেচে আছে ও ওর বাবার কাছেই থাকবে ।
সুচি : তুমি এমন করতে পারোনা মেরিন …
মেরিন : আমার যা ইচ্ছা আমি করতে পারি ।
সুচি : প্লিজ তুমি আমার মেয়েকে এনে দাও ।
মেরিন : sorry …
সুচি : দারাও মেরিন … আমি তোমাকে রক্ত দিয়ে বাচিয়েছিলাম… সেই রক্তের প্রতিদান স্বরুপ আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দাও…
মেরিন : তোমার মেয়েকে বাচিয়ে প্রতিদান দিয়েই দিয়েছালাম…
বলেই মেরিন চলে গেলো । সুচি তো পুরো ভেঙে পরলো । কান্না করতে লাগলো ।
নীড় : কান্না করিসনা… প্লিজ কান্না করিসনা ।
সুচি : ওর ওপর বিশ্বাস ছিলো বলেই আমি ওকে সব বলেছি… ভেবেছিলাম ও আমার help করবে…
নীড় : আমি আছি তো … তোর মেয়েকে তোর কাছেই ফিরিয়ে আনবো আমি । কথা দিলাম ….

একটুপর …
ঝড়ো বাতাস বইছে । মেরিন বারান্দায় দারিয়ে আছে ।
নীড় : তুমি আর কতো মানুষকে কাদাবে বলতে পারো ? আর কতো মানুষকে কষ্ট দিবে ? সুচি তোমাকে বিশ্বাস করেছে । আর তুমি? বিশ্বাসঘাতকতা ছারা কি আর কিছুই পারোনা?
মেরিন যেন কিছু শুনতেই পায়নি ।
নীড় : আমি তোমাকে কিছু বলছি মেরিন …
মেরিন : …
নীড় মেরিনের সামনে এসে মেরিনের বাহু টেনে নিজের দিকে ঘুরালো ।
নীড় : কি বলেছি শুনতে পাওনি?
মেরিন নীড়ের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে ।
নীড় : কি হলো কথা বলছোনা কেন? তুমি এতো খারাপ কেন ? নিজেকে ছারা অন্যকাউকে নিয়ে কেন ভাবতে পারোনা?
মেরিন : …
নীড় : তুমি রিচিকে কেন ফিরিয়ে আনলেনা ?
মেরিন : …
নীড় : ও… বুঝেছি… আমার বন্ধু বলে? আমাকে জরিয়ে ধরেছে বলে?
মেরিন : …
নীড় : কি হলো বলো?
মেরিন : …
নীড় : তোমার ভালোবাসাই ভালোবাসা আর অন্যদেরটা কিছুইনা। কেউ আমার দিকে তাকালে তার চোখ তুলে দাও, ভুল করে ধাক্কা মারলে বা কটু কথা বললে তাকে জানে মেরে দাও… এখন সুচি আমার বন্ধু বলে , বন্ধু হিসেবে জরিয়ে ধরেছে বলে ওকে এতো বড় শাস্তি দিবে ?
মেরিন : …
নীড় : তুমি যে দিনরাত আমাকে তিলে তিলে মারছো সেই শাস্তি তুমি কিভাবে দিবে ?
মেরিন : …
নীড় : আর এতোসব করে তুমি কি প্রমান করতে চাও ? হ্যা? আমাকে খুব ভালোবাসো ? আরে ভালোবাসা কি সেটা তো তুমি জানোই না। ওই সুচির কাছে থেকে ভালোবাসা শিখে আসো । রবি এতোবড় অন্যায় করলো তবুও রবির প্রতি কোনো অভিযোগ নেই সুচির মনে। সুচি আজও রবির জন্য শুভকামনা করে ।
অন্যদিকে তুমি… যদি রবির জায়গায় আমি হতাম তবে আগে তুমি ওই মেয়েকে নৃসংশভাবে মারতে । আর আমার জন্য ভয়ানক শাস্তি ঠিক করতে ।
মেরিন : …
নীড় : তুমি না তো ভালোবাসতে জানো আর না তুমি ভালোবাসার মানো বোঝো…
ভালোবাসার মানে হাতের মুঠোয় বন্দী করে রাখা নয়…
ভালোবাসা মানে খোলা আকাশে উরতে দেয়া …
যেটা তুমি কখনো বুঝবেনা… কারন তুমি আমাকে ভালোবাসোনা… infact তুমি কাউকেই ভালোবাসতে পারোনা নিজেকে ছারা ।
বলেই নীড় চলে গেলো। মেরিন ছাদেই দারিয়ে রইলো।

পরদিন…
নীড় রবিকে শাস্তি দিতে গিয়ে , রিচিকে ফিরিয়ে আনতে গিয়ে নীড় যা জানতে পারলো তা শুনে নীড় অবাক হয়ে গেলো। কারন রবির ব্লাড ক্যান্সার। last stage … খুব শীঘ্রই রবি মারা যাবে। আর মারা যাওয়ার আগে ও চায় যেন সুচি ওকে ঘৃণা করে। কারন সুচি রবিকে ভীষন ভালোবাসে । আর শেষ একটু সময় রবি মেয়েকে চায় । মেয়ের সাথে সময় কাটাতে চায় । মেরিন কথাটা জানতে পেরে চুপ হয়ে গেছে। সুচিকে কিছু বলেনি । কারন রবি বারবার না করেছে । নীড় বুঝতে পারছেনা যে ও কি করবে? ওর মাথা কাজ করছেনা ।
নীড় : এই কারনেই বোধহয় বনপাখি…
.
বিকালে…
সুচি : মেরিন… ও মেরিন… প্লিজ একটু help করোনা…
নীড় : সুচি…
সুচি আর মেরিন পিছে ঘুরলো। দেখলো নীড়-রবি দারিয়ে আছে। নীড়ের কোলে রিচি। মেরিন বুঝতে পারলো যে নীড় জেনে গেছে । সুচি দৌড়ে গিয়ে মেয়েকে কোলে নিলো । অসংখ্য চুমু দিলো মেয়ের সারা মুখে ।
সুচি : thank u … thank u … thank u thank u thank u very much … তুই আমার জন্য যা করেছিস তা কেউ করেনা …
সুচি মন ভরে মেয়েকে ভালোবাসলো ।
নীড় : সুচি…
সুচি : হামমম ।
নীড় : আজকে তোকে আমি ১টা কথা বলবো… মনটাকে শক্ত করে শুনবি…
সুচি : কককি এমন বলবি?
নীড় সুচি কে সব বলল। সুচি তো স্তব্ধ হয়ে গেলো। দৌড়ে গিয়ে রবিকে জরিয়ে ধরলো রবিকে।
মেলোড্রামা হলো ।

কিছুক্ষনপর…
সুচি মেরিনের হাত ধরে
বলল : আমি তোমাকে ভুল ভেবেছিলাম… i am really very sorry … আসলে আমার কপালটাই খারাপ…
মেরিন : not at all… you are too much lucky … এমন ১জন স্বামী পেয়েছো যে তোমার ভালোর জন্য নিজের ভয়ংকর রোগটা তোমার কাছে আড়াল করেছে । কেবলমাত্র তোমার ভালোর জন্য…
তবে এমনও স্বামী আছে যারা নিজের ভালোরজন্য নিজের মিথ্যা অসুখের নাটক সাজায়… স্ত্রীকে স্ত্রী হিসেবেও পরিচয় দেয়না ।
তখন মেরিনের ফোনটা বেজে উঠলো । মেরিন কথা বলল।
মেরিন : i have to go… important কাজ চলে এসেছে।
বলেই মেরিন চলে গেলো । মেরিনের কথার আগাগোরা সুচি-মেরিন না বুঝলেও নীড় ঠিকই বুঝেছে ।
সুচি : মেয়েটা কি বলে গেলো ?

রাত ১টা…
মেরিন এখনো ফিরেনি। নীড় জানেনা মেরিন কোথায় ? নীড় বারান্দায় দারিয়ে একের পর এক সিগারেট ধরাচ্ছে ।
নীড় মনে মনে : না জেনে কতোকিছ ভুলভাল বলে ফেলেছি… ভুলভালের কি আছে ? ওর স্বভাবের কথা তো ঠিকই বলেছি… ও তো এমনই…
নীড় আরো ১টা সিগারেট ধরালো তখন ১টা হাত এসে ওর সিগারেটটা ফেলে দিলো। এরপর সেই হাতের মালিক নীড়ের হাতের নিচে দিয়ে নীড়ের বাহুডোরে নিজেকে বন্দী করে নিলো । নীড়কে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : ভালোবাসি…
নীড় : এতোরাত পর্যন্ত কোথায় ছিলে?
মেরিন : রুমডেটে। 😊।
নীড় : 😒। দেখি ছারো। always এতো চিপকাও কেন ?
মেরিন : আমার জামাই আমার ইচ্ছা… শুনুন …
নীড় : কি?
মেরিন : আমাদের নতুন বিয়ের কতো বছর পুরন হলো?
নীড় : নতুন বিয়ে মানে? বিয়ে তো বিয়েই…
মেরিন : ১টা তো ছোটবেলার বিয়ে… আপনার ভাষায় নাজায়েজ বিয়ে । আরেকটাতো বড়সময়ের বিয়ে … জায়েজ বিয়ে। সেটাই নতুন বিয়ে।
নীড় : তো?
মেরিন : বলুন না কতো দিন হলো?
নীড় : জানিনা…
মনে মনে : ৯মাস ১৭দিন…
মেরিন : ৯মাস ১৭ দিন…
নীড় : তো?
মেরিন : আপনি তো কোথাও আমাকে হানিমুনেও নিলেন না…
নীড় :😒
মেরিন : এখন যখন আমরা abroad চলেই এলাম তখন চলুন আমরা হানিমুন পালন করি… 😍…
নীড় : do u really think i have any interest on you…
মেরিন : no… আপনার সব interest তো নীরার ওপর… তাইনা জান?
নীড় : i have nothing to say… ঘুম পাচ্ছে।
মেরিন : আমারও… চলুন… কালকে থেকে হানিমুন করবো…
নীড় খানিকটা অবাক হলো । কারন এই দুই আড়াইমাসে ১দিনও মেরিন নীড়ের বুকে মাথ রেখে ঘুমায়নি । কিন্তু আজকে ঘুমালো । নীড় কিছু বললনা ।

সকালে…
নীড়ের ঘুম ভাংলো । মহাঅবাক হলো । কারন মেরিন কালো রঙের ১টা জামদানী শাড়ী পরেছে । বাঙালীভাবে। সাথে গা ভরতি গহনা…
মেরিন : good morning জান… তারাতারি উঠে fresh হয়ে নিন… আমরা ঘুরতে বের হবো … 😊।
নীড় : তুমি জার্মানে এই dress up এ ঘুরতে বের হবে?
মেরিন : হামমম ।
নীড় কোনো কথা না বলে washroom এ চলে গেলো। এর dress নিতে এলে মেরিন ওকে ১টা কালো ধুতি আর কালো পাঞ্জাবি দিলো ।
নীড় : what is all this…
.
চলবে…