পারফেক্ট ভিলেন ! Season- 02 !! Part- 24
মেরিন : আপনি বাবা হতে চলেছেন…
বলেই মেরিন চলে গেলো ।
নীড় : আআআমি বববাবা হতে চলেছি? বববাবা…😌.. thank u আল্লাহ…. এতো খারাপ অবস্থার মধ্যেও ভালোকিছু দেয়ার জন্য ।
৩দিনপর মেঘ অধরার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিলো অনুভবকে। legal custody পেয়ে গেলো । plan অনুযায়ী ৭দিনপর অধরাকে জেল থেকে বের করানো হলো । অধরা পুরোপুরি ভেঙে পরলো। অধরাকে শ্বান্তনা দেয়ার ক্ষমতা নীড়ের নেই । ও জানেনা যে ও কি বলবে অধরাকে ।
.
পরদিন…
খানবাড়িতে…
অনুভব কে নিয়ে সবাই ব্যাস্ত । তখন অধরা-নীড় খান বাড়িতে ঢুকলো ।
মেরিন: ওখানে দারান মিস্টার চৌধুরী….
মেঘ : & you মিস চৌধুরী…
কবির :আহ আসতে দাওনা ভেতরে।
মেরিন : এদেরকে ভেতরে ঢুকতে দেয়াই মানে খাল কেটে কুমির আনা । এরা হলো বিষধর সাপ । যারা কারো ভরসার যোগ্যনা । আবার নতুন করে বিপদ ডাকতে চাইনা।
মা কে দেখে অনুভব কি খুশি। মায়ের কোলে যাওয়ার জন্য কেমন করতে লাগলো। অধরা দৌড়ে এলো ছেলের কাছে । কিন্তু মেঘ দিলোনা ।
মেরিন : ভাইয়া…
মেঘ : কিন্তু…
মেরিন: ভাইয়া ।
মেঘ অনুকে অধরার কোলে দিলো । অধরা ছেলেকে কোলে নিয়ে হাউমাউ করে কাদতে লাগলো । অনুর চোখে মুখে চুমু দিতে লাগলো ।
মেঘ : সোনাবাচ্চা অনুকে নাও….
মেরিন : ….
মেঘ : নিতে বলেছি।
মেরিন নিলো ।
মেঘ : ওকে রুমে নিয়ে যাও। আম্মু ওকে নিয়ে খেলুক রুমে । আর বাবাও যাও । আর কোনো কথা না…
কনিকা বাধ্য হয়ে অনুকে নিয়ে রুমে গেলো ।
.
মেঘ divorce paper এনে অধরার সামনে ধরলো ।
মেঘ : এই নাও divorce paper… আমি signature করে দিয়েছি । আর এই দেরমোহরের টাকা।
নীড় : ভাইয়া….
মেঘ : don’t call me ভাইয়া… তোমার চেহারাটা দেখতেও আমার ঘৃণা করে ।
whatever …. signature করো অধরা চৌধুরী মনি…
অধরা পেপারটা ধা ধা করে ছিরে ফেলল। মেঘের পা ধরে কাদতে লাগলো।
অধরা : আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইবোনা। কারন আমি যা করেছি তা ক্ষমার অযোগ্য । আমাকে যতো ইচ্ছা শাস্তি দাও । কিন্তু তোমার আর অনুর কাছ থেকে আমাকে আলাদা করোনা প্লিজ ….
মেঘ অধরার হাত ছারিয়ে পিছে গেলো । এরপর নীড়ের দিকে তাকালো । মেঘের চোখে সেই দিনের দৃশ্য ভেসে উঠলো যেদিন নীড় ওর চোখের সামনে মেরিনের চুলের মুঠি ধরেছিলো। আজকে মেঘের পালা। মেঘও অধরার চুলের মুঠি ধরলো। এরপর দার করালো।
নীড় : আপু…
অধরা বাধা দিলো।
মেঘ : কষ্ট লাগলো মিস্টার চৌধুরী? মনে আছে আমার চোখের সামনে আমার বোনের চুলের মুঠি এভাবে ধরেছিলে? আমার কলিজাটা ছিরে যাচ্ছিলো । যে বোনের গায়ে ফুলের কখনো আঘাত লাগতে দেইনি সেই বোনকে…
মেরিন এসে অধরাকে ছারিয়ে নিলো ।
মেরিন : ভাইয়া… এটা কেমন স্বভাব?
মেঘ : সোনাবাচ্চা we had a deal… তোমার বিষয়ে আমি কিছু বলবোনা আর আমার বিষয়ে তুমি কিছু বলবেনা।
মেরিন : ভাইয়া ভাবি…
মেঘ : ভাবি? 😠
মেরিন : ok… মিসেস মনি তোমাকে ধোকা দিয়েছে জানি। তোমার মন ভেঙেছে । ছেলেকে দূরে করেছে ।
কিন্তু যা করেছে একদিনে করেছে।
দিনের পর দিন তোমাকে mentally & physically torture করেনি। তার থেকেও বড় কথা she actually loves you…
তোমার ছেলে কেরে নিয়েছে তুমিও নিয়েছো। অন্য যেভাবে শাস্তি দেয়ার দাও। কিন্তু মারধর করোনা। প্লিজ।
মেরিনের কথায় অধরার মনে পরলো যে ওর চোখের সামনে নীড় মেরিনকে কতোবার মেরেছে কিন্তু ও কখনো মেরিনকে বাচায়নি।
অধরা : মের…
মেরিন : stay there…. ভাইয়া do what you want…
বলেই মেরিন সোফায় গিয়ে বসলো ।
মেঘ : ভালোবেসেছে? ভালোবাসলে ধোকা দিতে পারতোনা।
অধরা : ….
মেঘ : out… both of you get out….
অধরা : আমাকে তোমার থেকে দূরে করোনা । মরে যাবো আমি…
মেঘ : ok…মরে যাও…
বলেই মেঘ অধরাকে ধাক্কা মারলো । পরে যেতে নিলো কিন্তু নীড় ধরে ফেলল।
মেঘ টেবিল থেকে পানি নিয়ে হাতে ঢালল।
মেঘ : একে টাচ করে নোংরা হয়ে গেলো হাত। whatever …. security …. throw them out…
নীড় : চলে যাচ্ছি আমরা… তবে ভাইয়া সব মিথ্যা হলেও তোমার প্রতি আপুর ভালোবাসা
আর না….
আর না আমার ভালোবাসা মেরিনের প্রতি….
.
কথাটা শুনে মেরিন হা হা করে পাগলের মতো হাসতে লাগলো ।
মেরিন : ভাইয়া এই লোকটা কি বলল? ভালোবাসা? এই লোকটাকে জিজ্ঞেস করো তো যে ভালোবাসা কি সেটা এই লোকটা জানে কিনা?
নীড় : …
মেরিন নীড়ের সামনে গেলো।
মেরিন: you know what মিস্টার চৌধুরী আপনার বোন তো তাও আমার ভাইয়ার ঘৃণাটা পেয়েছে। কিন্তু আপনি? আপনি তো আমার ঘৃণাও পাবেন না ।
নীড় : আমার অপরাধের কোনো তুলনা হয়না। ঘৃণারও যোগ্য না। আর ক্ষমার তো নাই… কিন্তু …. i love you…
মেরিন : love? ওটা আবার কি?
মেঘ : ভালোবাসা… নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন আর ভালোবাসা? isn’t it wired ? ও বুঝেছি এখন তো একটু ভালোবাসার দরকার। টাকা নেউ পয়সা নেই হাতে। feeling ভিখারী।
বলেই ২ ভাইবোন হাসতে লাগলো।
নীড় : you know মেরিন প্রতিশোধের নেশা অনেক খারাপ। যেটা আমাদের ৪জীবন তো শেষ করেই দিয়েছে । এখন নতুন করে অনু আর তোমার আমার অনাগত সন্তানের জীবনটা নষ্ট করোনা। প্লিজ…
মেরিন : অনু ভালোই থাকবে। কিন্তু আপনার সন্তানের ভবিষৎ বলতে পারিনা। guard আবর্জনা দূর করো।
২জন চলে গেলো।
.
পরদিন…
অধরা আর নীড় বসে আছে। তখন court থেকে নোটিশ এলো ৭দিনের মধ্যে যেন অধরা আর নীড় বাড়ি খালি করে দেয় । আর এটা মেঘ-মেরিন পাঠিয়েছে ।
অধরা : নীড়… কোথায় যাবো আমরা?
নীড় : দেখি… আপু তবে ভয় করছে। মেরিন কি কি করবে ভেবে। না আমাদের সাথে কি করবে সেটা ভেবেনা। সকলের সাথে কি করবে সেটা ভেবে। ওর জেদ রাগ অনেক বেশি । ও সব শেষ করে দিবে । নিজের সব হাসি কান্না সব শেষ করবে ।
.
ওদিকে …
মেরিন : ভিক্ষা করাবো আমি নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনকে দিয়ে। ভিক্ষা । আমার ওপর টাকা ছুরে মেরেছিলো । এই সেই নীড়… আমার পরিবারের মুখ থেকে সব হাসি কেরে নিয়েছে। আমার জীবন থেকে সব কেরে নিয়েছে। আমার হাসি আনন্দ … সব । শেষ করে দিয়েছে আমাকে।
মেঘ : ঠিক আছে। কিন্তু তুমি যেটা ভেবেছো সেটা কিন্তু অনেক …
মেরিন : ভাইয়া… সন্তানের গায়ে আঘাত পিতার কাছে যে কতোটা কষ্টের সেটা আমি হারে হারে বোঝাবো । আর যদি আল্লাহ খুশি হয়ে কন্যা সন্তান দেয়। তবে তো …. আলহামদুলিল্লাহ ভাইয়া।
মেঘ : নিজের সন্তানকে নিয়ে তুই … বেশি হয়ে যাবেনা?
মেরিন : ভাইয়া আমার সন্তান সুস্থই থাকবে। কোনো বাবাই সন্তানের কষ্ট কোনো বাবাই চায় না। নীড়ও চাইবেনা। নিজের হাজার কষ্ট হলেও সন্তানের কষ্ট মেনে নিবেনা।
পরদিনই
নীড়-অধরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো ।
.
৩দিনপর…
নীড় না তো কোনো বন্ধুদের সাহায্য পেলো আর না কোথাও কোনো কাজ । ছোট ১টা বাসা নিয়েছে । হাতে যে কয়টা টাকা ছিলো সেগুলোও প্রায় শেষ হতে চলল ।
নীড় : কি করি? টাকাও তো প্রায় শেষ হতে চলল। এই bloody busটাও আসছেনা। ধ্যাত… হেটেই বাসায় যাই ।
নীড় হাটতে লাগলো । তখন মেরিন স্পিডে গাড়ি চালিয়ে এলো। আর নীড়ের গায়ে কাদা ছিটালো।
নীড় : you bloody blind … চো…
তখন গাড়ি থেকে মেরিন নামলো।
মেরিন : awwe… নষ্ট হয়ে গেলো। শার্ট?
বলেই মেরিন নীড়ের ওপর টাকা ছুরে মারলো।
মেরিন : শাবান দিয়ে ধুয়ে নেবেন। না আসলে ১হাজার টাকা দিলাম। এটা দিয়ে তো আপনার অনেকগুলো নতুন শার্ট কেনা যাবে। কিনে নেবেন । উফফ … খুব গরম পরেছে আজকে। আর দারিয়ে থাকা সম্ভব না।
মেরিন চলে গেলো।
.
কিছুদিনপর…
অধরার ধুম জ্বর। অথচ ডক্টর ডাকার অবস্থা ওদের নেই । তখন ১জন এসে বলল যে গলির মোরে ১জন এসে সবাইকে দান করছে। খাবার , পোশাক আর ২হাজার দিচ্ছে ।
নীড় : আপুর তো অনেক জ্বর। ডক্টর দেখাতে হবে। যাবো? গিয়ে সাহায্য আনবো? না ছিঃ…. কিন্তু আমার ego এর থেকে আপুর সুস্থ হওয়া বেশি মূল্যবান।
নীড় নিজের ego side এ রেখে গলির মাথায় গেলো। লাইনে দারালো। কিন্তু যখনই নীড়ের টাকা নেয়ার সময় এলো তখন লোকটা
বলল : আমি চৌধুরীদের ভিক্ষা দেইনা।
নীড় : কি?
মেরিন : ঠিকই শুনেছেন।
মেরিন এগিয়ে এলো ।
নীড় : তুমি?
মেরিন : হামম। আমি। যেই 3rd class গলিতে থাকছেন সেটা আমার property ….
নীড় : ….
মেরিন : আচ্ছা আপনার ২হাজার টাকা অনেক দরকার। তাইনা? দিতে পারি। বেশিই দিবো। ৫হাজার টাকা দিবো। তবে ২ঘন্টা রাস্তায় দারিয়ে ভিক্ষা করুন।
নীড় : কি?
মেরিন : হামম। ভিক্ষা করে যতোটুকু পাবেন সেগুলোও আপনার আর এই ৫হাজার টাকাও আপনার । লাভ ই লাভ।
নীড় : ….
মেরিন : করবেন না? বেশ আপনার বোন জ্বরে ভুগুক। bye….
নীড় : মেরিন…
মেরিন : call me madam….
নীড় : আমি মানুষের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা করলে তুমি খুশি হবে?
মেরিন : 😎।
নীড় : বেশ । তোমার খুশিতেই আমি খুশি ।
নীড় ১টা ছেরা শার্ট পরে ভিক্ষা চাইতে শুরু করলো।
.
৩০মিনিটপর…
মেরিন : মিস্টার চৌধুরী। come back… আসুন । অনেক ভিক্ষা চেয়েছেন। আসুন আসুন…
নীড় এলো ।
মেরিন : খুব সুন্দর ভিক্ষা করেছেন। খুব সুন্দর চেহারা আপনার। কিন্তু সুন্দর চেহারায় তো আর সুন্দর ভিক্ষা পাওয়া যায় না। তাইনা? সুমন।
সুমন নীড়ের হাতে ১০হাজার টাকা দিলো । নীড় টাকা হাতে নিয়ে মুচকি হাসলো।
নীড় : trust me… একটুও খারাপ লাগছেনা। তুমি কি আমার পর? যতো মন চায় শাস্তি দাও। কিন্তু শাস্তি শেষে তুমি তো আবার নীড়েরই হবে। নীড়কে বেশিদিন তুমি শাস্তি দিতে পারবেনা। কারন নীড় তোমার ভালোবাসা… আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি । তোমার জায়গাতেই তো আমি ছিলাম। তাই জানি । যাকে ভালোবাসি তাকে যদি কষ্ট দেই তবে তার চেয়েও ২গুন কষ্ট আমরা পাই । তোমারও তার ব্যাতিক্রম হবেনা। যাওয়ার আগে কেবল ১টা কথাই বলতে চাই… i love you…
বলেই নীড় চলে গেলো।
অধরা-নীড়ের জীবন অনেক কষ্টে চলতে লাগলো ।
.
দেখতে দেখতে মেরিনের ডেলিভারির সময় হয়ে গেলো । নীড় কোন রকমে জানতে পারলো বিষয়টা। ছুটে গেলো হসপিটালে । মেরিনের ১টা মেয়ে হলো। নরমাল ডেলিভারি ।
ডক্টর : congratulations মিসেস চৌধুরী… মেয়ে বাবু হয়েছে ।
বাবুকে মেরিনের কোলে দেয়া হলো । মেয়েকে কোলে নিয়ে মেরিন নিজের সব দুঃখ ভুলে গেলো। নিহাল-নীলামাও সৌদি আরব থেকে উরে এলো ।
৭দিনপর মেয়ের নামকরনের অনুষ্ঠান হলো। মেয়ের নাম রাখা হলো রোজ চৌধুরী ছোয়া।
মেয়েকে দেখার ভাগ্য নীড়ের হলোনা।
মেরিন : নীড় চৌধুরী শাস্তি কি নতুন করে শুরু হলো নাকি শেষ ?
.
৬মাসপর…
নীড়দের ছোটঘরে কেউ দরজার করা নারলো। নীড় গিয়ে খুলল। দেখলো ১টা ঝুড়ির মধ্যে ১টা বাচ্চা রাখা। পাশে কয়েক প্রকার বেবি ফুড। নীড় বাচ্চাটকে কোলে তুলে নিলো। অনেক আদর করলো। ১টা চিঠি পেলো। তাতে লেখা।
”
হ্যালো আমার মেয়ে বাবা…
এটা আপনার মেয়ে। দেখুন । মাশাল্লাহ। তাইনা? ওর নাম
রোজ চৌধুরী ছোয়া ।
অনু ওর বাবার কাছে আছে। তবে ছোয়া কেন ওর বাবার কাছে থাকবেনা কেন? রাখুন মেয়েকে আপনার কাছে।
খবরদার আমার মেয়ের যেন খাওয়া দাওয়ায় সমস্যা না হয়। কেমন?
”
নীড় কিছুই বুঝতে পারলোনা। এর মানে কি?
নীড় বুঝতে পারলো মেরিনের উদ্দেশ্যটা কি?
.
চলবে…