পারফেক্ট ভিলেন

পারফেক্ট ভিলেন !! Part- 08

ভিলেনে master plan মেরিন চৌধুরী বাড়িতে ঢুকলো। কাজের মানুষ হিসেবে। specially রোজকে সামলানোর জন্য । মেরিন যেহেতু রোজের মা । তাই স্বাভাবিকভাবেই রোজ মায়ের কাছে গেলেই শান্ত হয়ে যায়। এভাবেই দিন কাটতে লাগলো । মেরিন তো মেয়েকে কাছে পেয়ে ভীষন খুশি । সেই সাথে মেরিনের প্রতি নীড়ের ভালোবাসা দেখে অভিভূত হয় । আর অবাক হয় ১টা বিষয় নিয়ে। সেটা হলো খান বাড়ির সাথে নীড়ের শত্রুতা । specially মেঘের ওপর রাগ দেখিয়ে নীড়ের বলা কথার কারন মেরিন কিছুতেই খুজে পায়না ।
.
কিছুদিনপর…
মেরিন : বস ত.. মানে আইপনে আমাকে আজকে আসতে বললেন যে? জরুরী কোনো কাজ আছে?
ভিলেন : হামম। আছে ।তোমাকে মেরিন হতে হবে। মেরিনের চেহারা নিতে হবে । নীড়ের বউ হতে হবে।
মেরিন : 😱। কন কি?
ভিলেন : হামম।
মেরিন : ক্যামনে কি?
ভিলেন : তোমাকে কিছু ভাবতে হবে না। সব ব্যাবস্থা আমিই করবো ।
মেরিন : কিন্তু আমি ক্যামনে মেরিন হতে পারি ? আমি তো জান্নাত । তাছারাও মাইনষের জামাইরে আমি কিল্লায় জামাই বানাইবো?
ভিলেন : তোমার সাথে নীড়ের বিয়ে হবে। তাও নীড়-মেরিনের next anniversary তে ।
মেরিন : আইপনে কন কি ? কিচ্ছু বুঝতে পারছিনা ।
ভিলেন : মেরিন বন্যার পৃথিবীতে থাকা ভীষন জরুরী। এই নামটা থাকা জরুরী । তাই সারা দুনিয়ার কাছে তোমাকে জান্নাত না । মেরিন বন্যা হতে হবে ।
মেরিন : 😵। কিন্তু তেনারা তো জানেন যে আমি জান্নাত ।
ভিলেন : হামম। জানে । আর ভবিষ্যতেও জানবে যে তুমি মেরিন নও জান্নাত । খানেরাও জানবে যে তুমি মেরিন নও জান্নাত । কিন্তু সারা দুনিয়া জানবে যে তুমিই মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী। আর এমনটা হলে মেরিন বন্যা যেখানেই থাক ফিরে আসবে। আর আমি…. 😏।
মেরিন মনে মনে : এতো মহা ভয়ংকর ।
ভিলেন : যাও এই বিকৃত চেহারা নিয়ে ৩-৪ মাস কাটাও । এরপর তোমাকে জান থেকে real জান বানিয়ে দিবো । এই নাও টাকা । now out …
.
আরও কিছুদিনপর…
রোজের হাত থেকে মেরিনের ফোনটা পরে ভেঙে গেলো । তাই নীলিমা মেরিনকে ১টা ফোন কিনে দিলো । মেরিন এতোদিন ভিলেনের দেয়া ফোন ব্যাবহার করতো । তাই নিজের কাছে লুকিয়ে রাখা সিম কার্ডটা ব্যাবহার করার সাহস পাচ্ছিলোনা । তবে আজকে নীলিমার ফোন পেয়ে washroom ও গিয়ে সেই গোপন সিম কার্ডটা নতুন ফোনে লাগালো। এরপর সুমিকে ফোন করলো।
সুমি : হ্যালো আপু… আমি কতোদিন ধরে তোমার ফোনের অপেক্ষা করছিলাম । তুমি ঠিক আছো?
মেরিন : হামম । আমি ঠিক আছি। তোমরা ভালো আছো ?
সুমি : হ্যা আপু ।
মেরিন : শোনো তোমাকে আবার আমার ১টা কাজ করতে হবে ।
সুমি : তোমার জন্য তো জানও হাজির ।
মেরিন : তোমাকে আবার খান বাড়িতে যেতে হবে। সাহায্য চাওয়ার ছলে খুবই সাবধানে আমার ভাইয়ার হাতে আমার ১টা চিঠি দিবে। খুবই সাবধানে । যেন ভাইয়া ছারা কেউ না জানে । আর হ্যা ২দিন যাবে তুমি ওই বাসায়। ১ম দিন সাহায্য চাওয়ার উছিলায় তোমার ছোট ভাইকে দিয়ে আমার ভাইয়ের হাত ধরাবেই ধরাবে। আর তোমার ভাইয়ের হাতে লিখে নিবে যে চুপ থাকুন আমাকে মেরিন পাঠিয়েছে । সেটা আমার ভাইয়ার হাতে সেই লেখার ছাপ দিবে। তোমার ভাইয়ের হাতে লেখাটা উল্টো করে লিখবে । যেন ভাইয়ার হাতে লেখাটা সোজা হয়। বুঝেছো?
সুমি : হামম।
মেরিন : সেদিন কান্নার ছলে তুমি ভাইয়া কে ২দিনপর যাওয়ার কথা বলবে। আর ২দিনপর গিয়ে ভাইয়ার হাতে খুবই সাবধানে চিঠিটা দিবে। ১টা thank u card এর ভেতরে চিঠিটা ভরে দিবে । got it …?
সুমি : হামমম। তোমার সাথে দেখা কবে করবো?
মেরিন : আপাদত সরাসরি দেখা করতে পারবো। তবে কালকে হাতিরঝিল চলে আসবে। তুমি তো আমাকে দেখেই চিনবে । কারন সেদিন আমি যেই পোশাক পরে তোমাদের বাসা থেকে বেরিয়ে ছিলাম সেটা পরেই আসবো। তুমি আমাকে ডাক দিবেনা। কোন react করবেনা। আমি ১টা বই নিয়ে আসবো । সেই বইটা রেখে আমি চলে আসবো । আমি আসার ১০মিনিট পর তুমি বইটা তুলে নেবে। বুঝেছো ?
সুমি : হামম।
.
সুমি মেরিনের কথা মতোই কাজ করলো । মেঘ চিঠি পেলো ।
চিঠিতে লেখা।
“ভাইয়া আমি মেরিন । আমি সুস্থ আছি ঠিক আছি । আপাদত কাউকে কিছু বলোনা। কোনো reaction ও দিওনা । নিচে আমার ফোন নাম্বার দেয়া আছে। না এখনই ফোন কোরোনা । নতুন ১টা সিম কার্ড কিনবে । washroom এ গিয়ে লাগাবে। ২দিনপর রাত ১০টায় তুমি আমাকে ফোন করবে। washroom এ গিয়ে । সবার খেয়াল রেখো ।”
.
২দিনপর…
মেঘ : হ্যালো মিষ্টি বাচ্চা…
মেরিন : ভাইয়া …
মেঘ : তুমি কোথায় বাচ্চা… 😢.. ভুল হয়েছে সেদিন তোমাকে নীড়ের কাছে যেতে বলা। যেতে হবেনা তোমাকে নীড়ের কাছে । please চলে আসো…
মেরিন : ভাইয়া … কান্না বন্ধ করো। আমি ঠিক আছি । বন্ধ করো কান্না ।
মেঘ : তুমি ফিরে আসো।
মেরিন : ভাইয়া আমি তোমার ওপর রাগ করে চলে আসিনি… নতুন ভিলেন আমদানি হয়েছে ।
মেঘ : মানে?
মেরিন সব বলল।
মেঘ : what? এতো কিছু হয়ে গেলো ।
মেরিন : হ্যা এতোকিছু হয়ে গেলো ।
মেঘ : তাকে পেলে আমি জানে মেরে ফেলবো। কালই আমি বাসা থেকে সব গোপন ক্যামেরা বের করানোর চেষ্টা করবো।
মেরিন : এই না। কালই না । ২০-২৫ দিন বা ১মাস করবে।
মেঘ : হামম।
মেরিন : আচ্ছা ভাইয়া নীড় তোমার ওপর এতো রেগে আছে কেন ?
মেঘ : জানিনা … তবে সেদিন ওরা এসে যখন তোমাকে পেলোনা সেদিন নীড় ভেঙে পরেছিলো। সবাই ওকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করছিলো । আমি যেই নীড়ের কাধে হাত রাখলাম ও তেরে এলো আমার ওপর । বলল সব আমার দোষ । আমার জন্যেই নাকি সব হয়েছে ।
মেরিন : কি ?
মেঘ : হামমম ।
মেরিন : ভাইয়া এখন রাখি । next কথা বলবো ৫দিনপর। same time এ।
মেঘ : হামমম।
.
৩মাসপর…
মেরিন : বস ভালা আছেন?
ভিলেন : হামম। আমি ভালোই থাকি । এই জানের হাতে ওটা দে তো…
১জন এসে মেরিনের হাতে কিছু ১টা দিলো।
ভিলেন : খুলে দেখো ।
মেরিন ওটা খুলে ১টা duplicate skin type কিছু পেলো। দেখতে খুবই বিকট । মেরিন yuck বলে ছুরে ফেলে দিলো ।
ভিলেন : কি হলো ?
মেরিন : ঘৃন্যকর … কেমন দেখা যায় ? ছিঃ…
ভিলেন : এতো react করার কি আছে ? ওটাকো duplicate …
মেরিন : তাও…
ভিলেন : ওটা তোমার মুখে লাগাতে হবে …
মেরিন : কি!!!
ভিলেন : হ্যা… পরশু চৌধুরীরা ওদের গ্রামের বাড়িতে যাবে। সেখানে আগুন লাগবে। যেখানে ছোয়াকে বাচাতে গিয়ে তুমি ব্যাপকভাবে আহত হবে। তোমার মুখ পুরে যাবে…
মেরিনের পায়ের নিচের মাটি সরে গেলো। একে তো আগুন তার ওপর রোজ কে বাচানোর কথা। যার অর্থ রোজ বিপদে পরবে।
মেরিন : না …
ভিলেন : কি না ?
মেরিন : এমনটা করতে পারেননা… বাড়িতে আগুন? ছোট ১টা বাচ্চারে বিপদে…? অসম্ভব … এটা ঠিক না। আমি আপনার এই plan s… এ কাজ করতে পারবো না।
ভিলেন : impressive … তোমার নিজের মুখ পুরে যাওয়ার চিন্তা নেই অথচ চৌধুরীদের চিন্তা…. ছোয়ার চিন্তা… বাহ বাহ…
মেরিন : দেখুন মানবিকতা বলতেও কিছু আছে ।
ভিলেন : মানবিকতা। হাহাহা । তো শোনেন মিস মানবিকতার দেবী… আগুন তো লাগবে। কিন্তু কারো কোনো ক্ষতি হবে না । চুল পরিমানের ক্ষতিও হবেনা । কারো জান মালের ক্ষতিও হবেনা।
মেরিন : মানে?।
ভিলেন : মানে তোমাকে বুঝতে হবেনা । ওটা আমার দায়িত্ব। আর তুমি যেটাকে বাচাবে আসলে সেটা ১টা পুতুল হবে। কিন্তু বাকীরা মনে করবে যে ওটা ছোয়া ।
মেরিন: ….
ভিলেন : বুঝতে পারবেনা । তাই মাথা খাটানোর দরকার নেই । আর হ্যা তোমার মুখও পুরবেনা । তুমি just মুখে ওই duplicate skin টা মুখে লাগিয়ে অজ্ঞান হওয়ার অভিনয় করে পরে থাকবে।
মেরিন : ….
ভিলেন : তোমাকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হবে । তোমার মুখ দেখ doctor বলবে যে খুবই খারাপ অবস্থা । immediately তোমার মুখের সার্জারি করতে হবে । নতুন চেহারা দিতে হবে। তখন সবাই চিন্তায় পরে যাবে । নীলিমা চৌধুরী চিন্তায় পরে যাবে । ১টা ছবি দিবে। যে ছবিই দিক না কেন তুমি তো মেরিনেরই চেহারা পাবে।
মেরিন: কিন্তু ডাক্তার এগুলো বলবে কেন? তিনি তো দেখেই বুঝে যাবেন যে আমার কিছু হয়নি । তাহলে?
ভিলেন : হ্যা হ্যা অবশ্যই বুঝবেন । কিন্তু বলবেন তো এগুলোই । কারন ডক্টরও যে আমারে হাতের পুতুল। 😏
মেরিন : 😱।
মনে মনে : what a villain … actually #Perfect_Villain ।
ভিলেন : এরপর দেশের সেরা সার্জেনের ডাক পরবে । ডক্টর কেদার নাথ। সে তোমার এই এসিড মার্কা চেহারাটা most beautiful lady মেরিন বন্যার চেহারায় পরিনত করে দিবে ।
মেরিন : 😱। ওই ডক্টরও আপনার পুতুল?
ভিলেন : no… অতো বড় ডক্টর কে কেনার সাহস আমার নেই ।
মেরিন মনে মনে : কিন্তু আমার তো আছে ।
ভিলেন : তুমি এখন আসতে পারো ।
.
মেরিন মনে মনে : হাতে মাত্র ২৪ঘন্টা আছে । আর এই ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আমাকে যা করার করতে হবে । ডক্টর কেদার নাথের কাছে পৌছাতে হবে । ভাইয়াকে ফোন করি ।
মেরিন মেঘকে ফোন করলো । সব বলল। এরপর ২ ভাইবোন মিলে ডক্টর কেদার নাথের কাছে গেলো । ওনাকে সবটা বলল । বোঝালো । আর convince ও করলো । যেন সার্জারি করতে নিজের মেম্বারদের নিয়ে যায় । আর সার্জারি না করেও যেন বলে যে সার্জারি হয়েছে । আর নিজের মেম্বার নেয়ার মানে হলো এই যেন ভিলেনের ডক্টর ওদের এই ঘাপলাটা না ধরতে পারে । কেদার নাথকে ২জনের কথা মানতেই হলো। KhanS বলে কথা ।
.
যা হবার ভিলেনের ইচ্ছা হয়েছে । আর সার্জারী ড্রামা মেরিনের ইচ্ছায় হলো । তবে বিপত্তি বাজলো তখন যখন মেরিনের মুখের ব্যান্ডেজ খোলা হলো । নীলিমা-নিহাল-নীড় তো ধা হয়ে গেলো।
নিহাল : মমমেরিন…
নীড় তো fire হয়ে গেলো ।
নীড় : ডক্টর… ডক্টর… ডক্টর…
ডক্টর : yes মিস্টার চৌধুরী ।
নীড় : এই মেয়েকে মেরিনের চেহারা কেন দেয়া হয়েছে ? কেন কেন কেন? answer me damn it…
ডক্টর : stop মিস্টার চৌধুরী। এমন react করছেন কেন ? আপনারা যে ছবি দিয়েছেন যে চেহারা দিয়েছেন সেটাই তো দিয়েছি।
নীড় : যে চেহারা দিয়েছি মানে ? এই চেহারা দেয়া হয়েছে ?
ডক্টর : হ্যা ….
নীলিমা : অসম্ভব। আমি মেরিনের ছবি দেইনি ।
ডক্টর : তা নয়তো কি ভুতে দিয়েছে? যে ছবি দিয়েছেন সেই চেহারাই দেয়া হয়েছে ।
নীলিমা : না।
নিহাল : তুমি কোন ছবি দিয়েছিলে ?
নীলিমা: আমি আমি তো… কোন ছবি … না মানে আমি খেয়াল করিনি । কিন্তু ওটা মেরিনের ছিলোনা। কারন ওখানে মেরিনের কোনো ছবিই ছিলোনা ।
ডক্টর : সেটা জানিনা কিন্তু যেটা দিয়েছেন সেই চেহারাই দিয়েছি। excuse me …
বলেই ডক্টর চলে গেলো।
নীড় : তুমি এমনটা ইচ্ছা করে করেছো তাইনা মামনি?
নীলিমা : কি বলছো কি তুমি? আমি …
নীড় রেগে হসপিটাল থেকে বেরিয়ে গেলো ।
নীলিমা : নিহাল বিশ্বাস করো…
নিহাল : ঠান্ডা হও নীলা । হয়তো এটা আল্লাহর ইশারা ।
নীলিমা : মানে …
নিহাল : রোজের মা আর নীড়ের স্ত্রী এর ভূমিকা পালনের জন্য… নীড় কতোদিন থাকবে।
নীলিমা : তুমি জানো তুমি কি বলছো?
নিহাল : হামমম।
.
কিছুদিনপর…
নীড় : জান্নাত… জান্নাত…
মেরিন এলো ।
মেরিন : জে স্যার ।
নীড় : cover your face…
মেরিন : কি???
নীড় : মুখ ঢাকো।
মেরিন : কিল্লায়?
নীড় : আগে তো সবসময় মুখ ঢেকে রাখতে । এখন কেন খুলে রাখো।
মেরিন : এতততো সুন্দর ১টা চেহারা পেয়েছি সেটা ঢেকে রাখবো কিল্লায় ?
নীড় : shut up … ঢাকো মুখ।
মেরিন ধমক খেয়ে মুখ ঢেকে ফেলল।
নীড় : এই নাও টাকা । বেরিয়ে যাও বাসা থেকে ।
মেরিন : কি? 😱 ।
নীড় : কানে কম শোনো? বেরিয়ে যাও।
মেরিন : কিন্তু কেন ?
নীড় : কারন তোমার চাকরি শেষ। এখানে আর কাজ করতে পারবেনা ।
মেরিন : এ্যা… হ্যা হ্যা হ্যা …
.
চলবে…