পারফেক্ট ভিলেন

পারফেক্ট ভিলেন !! Part- 09

মেরিন : এ্যা… হ্যা হ্যা হ্যা…
নীড় : shut up…
মেরিন : এ্যা… হ্যা হ্যা হ্যা…
নীলিমা ছুটে এলো ।
নীলিমা : কি হলো ? কি হয়েছে ? কাদছো কেন ?
নীড় : please ওকে থামাও। কানের মাথা খেয়ে ফেলল ।
নীলিমা : কি হয়েছে জান্নাত তুমি কাদছো কেন ?
মেরিন : স্যার টাকা গুলো দিয়ে বলতেছে যে যেন আমি চইলে যাই।
নীলিমা : কি? কেন? নীড় কি বলছিস কি ?
নীড় : ঠিকই বলেছি … আমার মেরিনের চেহারা নিয়ে এই 3rd class মেয়েটা এই বাসায় , আমার চোখের সামনে থাকবে… অসম্ভব ।
নীলিমা : মাথা খারাপ তোমার ? ভুলে গেছো জান্নাত কেন এ বাড়িতে। রোজের জন্য । ও ছারা রোজকে সামলানো সম্ভবনা ।
নীড় : ছোয়ার চিন্তা তোমাকে করতে হবেনা । আমার মেয়েকে আমি সামলে নিবো । আর মেরিনও চলে আসবে।
নীলিমা : মানে?
নীড় : অবাক হওয়ার কি আছে? আমার মেরিন কি আজীবন আমার থেকে দূরে থাকবে নাকি? ওকে ফিরতেই হবে ।
নীলিমা : নীড়…
নীড় : কোনো কথা না মামনি।
মেরিন : স্যার… আমি মুখ ঢেকে রাইখবো । দয়া করি আমাকে বের করে দিয়েন না… আমার যে যাওয়ার মতো জায়গা নেই ।
নীড় : নতুন কাজ খুজে নিবে । যতোদিন কাজ না পাও ততোদিন এই টাকা দিয়ে চলবে। but now out…
.
মেরিন ধীর পায়ে বের হচ্ছে। তখন রোজ গুটি গুটি পায়ে হেটে এসে মেরিনের ওড়না ধরলো । হালকা টান দিলো । তাতে মেরিনের ঘোমটা পরে গেলো। যা দেখে রোজ খিলখিল করে হেসে উঠলো । এটা যেন ওর কাছে ১টা খেলা। মেরিন রোজকে কোলে নিয়ে অসংখ্য ভালোবাসার পরশ দিলো।
নীড় : এই যে ড্রামা কুইন আমার মেয়েকে আমার কাছে দিয়ে বের হও ।
মেরিন : আআআমাকে থথথাকতে দিননা। please …
নীড় : no…
নীড় রোজ কে কোলে নিতে গেলে রোজ এলোনা। মা কে ধরে রাখলো ।
মেরিন: রোজও আমাকে ছারা থাকতে পারবেনা ।
নীড় জোর করে রোজকে কোলে নিলো । আর রোজ তো কান্না করতে লাগলো।
নীলিমা : আহ মেয়েটা কি কান্না করছে… নীড়…
নীড় চুপচাপ মেয়েকে নিয়ে ওপরে চলে গেলো । মেয়েকে কাদতে দেখে তো মেরিনের কলিজা ফেটে যাচ্ছে । মেরিনও কান্না করছে ।
নীলিমা : জা..
মেরিন দৌড়ে ওপরে গেলো । নীড় রুমে। গিয়ে সপাত করে রোজকে কোলে নিলো। বুকিয়ে জরিয়ে ধরলো। আর রোজের কান্নাও থেমে গেলো । নীড় ১ভ্রু উচু করে তাকিয়ে আছে । মেরিন মেয়ের মধ্যে ডুবে আছে । তাই নীড়ের তাকানোটা দেখলো না। আর যখন দেখলো তখন অবাক হলো ।
মেরিন : সসস্যার আপনি এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?
নীড় : অতিভক্তি চোরের লক্ষন ।
মেরিন : মানে ?
নীড় : কিছুনা । আমার মেয়েকে দাও। then out…
মেরিন : রোজকে ঘুম পারিয়ে তারপর যাই ।
নীড় : ok …
রোজকে ঘুম পারিয়ে মেরিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো ।
.
মেরিন : ভাবা যায় মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী এভাবে পথের পথিকের মতো রাস্তায় হাটছে । ওরে আমার জামাইরে । কতো ভালোবাসা মেরিনের ওপর। আভা … এতোই যখন ভালােবাসিস তবে তখন প্রতিশোধ নিচ্ছিলি কেন? তুই কি জানতি না যে তোর বউ কতো dangerous … ১টা সুযোগ পেলে তোকে ধংব্স করে দিবে । হতচ্ছারা হারামজাদা । এখন এতো ভালোবাসা দেখিয়ে কি লাভ? যখন ছিলাম তখন তো দেখাস নি। শালা পাগলের মাথা ছাগলের ঠ্যাং গলা কাটা ব্যাং শিং কাটা হনুমান মার্কা ভিলেন । তোর জন্য আজকে আমার জামাইটা আমাকে ঘর থেকে বেরে করেদিলো । আমার জামাইর ভালোবাসা নিতে পারছিনা … আহারে আমার বেচারা জামাইটা । বেচারা জামাই…? মেরিন তুই কি নীড় কে ক্ষমা করে দিয়েছিস? না না মোটেও না … আহারে আমার বাচ্চাটা … ঘুম থেকে উঠে আমাকে না পেলে কতো কান্না করবে । আমার কলিজাটা । ১কাজ করি এখানেই বসে থাকি । আর দূরে যাবো না । যদি রোজের কান্না শুনে আমাকে খুজতে বের হয়। !!!
মেরিন ওখানেই ১টা জায়গায় বসে পরলো । আর নীড় & ভিলেনের গুষ্ঠি উদ্ধার করতে লাগলো । তখন ভিলেন ফোন করলো । মেরিন ওর স্বভাব অনুযায়ীই না দেখে receive করে আনমনেই কথা বলতে শুরু করলো ।
মেরিন : যেই হন পরে ফোন করেন ।
ভিলেন : জান …
মেরিন : এতো সাহস আমাকে ঝাড়ি । আমাকে আমাকে ….
ভিলেন : কেন তুমি এমন কে যাকে ঝাড়ি মারা যাবেনা …
মেরিন : আমি…
মেরিনের খেয়াল হলো। তারাতারি দেখলো কার ফোন।
মনে মনে : oh my goodness…
মেরিন : আমি কে সেটা না জেনেই আমাকে ফোন করেছেন ? আমি কে সেটা জেনে ফোন মারবেন। আমি এখন বুজি আছি । হুহ।
বলেই মেরিন ফোন কেটে দিলো । ৩মিনিট পর ভিলেন আবার ফোন করলো ।
মেরিন : কে রে?
ভিলেন : তোমার বস।
মেরিন : আমার বস? আমার বস। ও বস। সুরি সুরি বস … আসলে আমি একটু চিন্তায় ছেলাম । ওই নীড় আছে না …
ভিলেন : তোমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে । আর তাই তুমি চৌধুরী বাড়ির কিছুটা সামনে বসে আছো ।
মেরিন : আইপনে সেটাও জানেন!!!
ভিলেন : হামমম।
মেরিন : এ্যা … হ্যা হ্যা হ্যা … বস আমাকে মারবেন না ।
ভিলেন : shut up…
মেরিন : বস এখন কিতা করবো!!!
ভিলেন : যেখানে আছো সেখানেই থাকো। দেখছি কি করা যায় ।
মেরিন : হামম।
.
৩-৪ঘন্টাপর …
নিহাল-নীলিমা-নীড় অস্থির হয়ে বের হলো । আগে নীলিমার নজর পরলো মেরিনের ওপর ।
নীলিমা : থামো থামো থামো …
নীলিমা গাড়ি থেকে নেমে ছুটে মেরিনের কাছে গেলো ।
নীলিমা : জান্নাত …
মেরিনতো বসে বসে ঘুমিয়েই পরেছে ।
নীলিমা : এই জান্নাত জান্নাত … ওঠো । এই জান্নাত।
মেরিনের ঘুম as usual অনেক বেশি ।তাই নীলিমার অনেক কষ্ট হলো মেরিনের ঘুম ভাঙাতে ।
মেরিন : কে কে কে?
নীলিমা : আমি?
মেরিন : রোজ ঠিক আছে ?
নীলিমা : হামম। কিন্তু কিছু খাচ্ছে না । খালি কান্না করছে । চল মা । তুই না গেলে ও যে খাবেনা।
মেরিন : হ্যা চল… না না ম্যাডাম আমি যাবোনা । পরে নীড় স্যার আবার বের করে দিবে ।
নীড় : এখন আমিই বলছি । চলো ।
মেরিন তাকিয়ে দেখলো নীড় রোজকে কোলে নিয়ে দারিয়ে আছে । রোজ কান্না করছে । যা দেখে মেরিনের ভীষন কষ্ট হচ্ছে। নীড় এগিয়ে এসে রোজকে মেরিনের কোলে দিলো।
নীড় : আমার মেয়ের কান্না আমি সহ্য করতে পারিনা । এই নাও। থামাও ওকে।
মেরিন warmly রোজকে কোলে নিয়ে আদর করলো। মেরিন আবার চৌধুরী বাড়িতে ঢুকলো ।
এভাবেই দিন কাটতে লাগলো ।
.
কয়েকমাসপর…
নিহাল : নীড় পরশু যে খুলনা যেতে হবে মনে আছে ?
নীড় : হামম ।
নিহাল : কয়টার flight এ যাবে?
নীড় : না না flight এ যাবোনা ।
নীলিমা : কেন ?
নীড় : ছোয়া তো এখনও অনেক ছোট । ওকে নিয়ে flight এ যাওয়া ঠিক হবেনা।
নিহাল : কি ? তুমি রোজ কে নিয়ে যাবে নাকি ?
নীড় : হ্যা।
নীলিমা : অসম্ভব। তোর সাথে আমি রোজকে কিছুতেই যেতে দিবোনা । তোর কি ভরসা? মাতাল হয়ে পরে থাকবি। তুই একাই যা ।
নীড় : অসম্ভব । আমি আমার মেয়েকে ছারা থাকতে পারবোনা । ১দিনও থাকতে পারবোনা । আর এখানে তো ১সপ্তাহের ব্যাপার ।
নীলিমা : আমি যেতে দিবোনা রোজকে।
নীড় : আমি তো আমার মেয়েকে নিয়েই যাবো ।
নীলিমা : বেশ তবে আমিও যাবো ।
নিহাল : কিন্তু তোমার এই পা নিয়ে যাবে কি করে?
নীলিমা : আমি পারবো। তবুও আমার রোজকে আমি ওর সাথে একা ছারবোনা ।
নিহাল : কিন্তু আমি তোমাকে এই পা নিয়ে যেতে দিবোনা ।
নীলিমা : কিন্তু যেতে যে আমাকে হবেই। রোজকে ওর সাথে কিভাবে?
নিহাল : জান্নাত যাবে।
নীলিমা-নীড় : কি?
নিহাল : হ্যা ।
নীড় : অসম্ভব ওই 3rd class মেয়েকে আমি কোনোদিনই সাথে নিবোনা ।
নিহাল : আচ্ছা… তো মেয়ে কে নিয়ে রাখবে কি করে? তুমি যেমন তোমার মেয়েকে ছারা ১দিনও থাকতে পারোনা তেমনি তোমার মেয়েও জান্নাতকে ছারা ১দিনও থাকতে পারেনা । তাই যদি রোজকে নিতে চাও তবে জান্নাতকেও নিতে হবে।
নীড় : not at all… ওই মেয়েটাকে আমি কিছুতেই নিবোনা ।
নিহাল : নীড় তুমি কি জানোনা যে রোজ জান্নাত কে ছারা থাকতে পারে না … তাহলে?
নীড় : কিন্তু…
নিহাল : যদি তুমি রোজকে নিয়ে যেতে চাও তবে জান্নাতকেও নিয়ে যেতে হবে। thats all …
নীড় : ok… fine… জান্নাত কে নিয়ে যাবো ।
.
২দিনপর …
নীড় রোজ আর জান্নাতকে খুলনা পৌছালো । খুলনা নীড়দের ফার্মহাউজ আছে । ওখানে caretaker & তার বউ আছে। তারা সব কিছু গুছিয়ে রেখেছে । নীড় জান্নাতকে নিয়ে মহাবিরক্ত । নীড় তো office এর কাজে চলে গেলো । তখন ভিলেনের ফোন এলো।
মেরিন : হ্যালু বস।
ভিলেন : শোনো ।
মেরিন : বলেন। 😒।
ভিলেন : এটাই সময় ।
মেরিন : কিসের সময় ?
ভিলেন : মেরিন হওয়ার সময় ।
মেরিন : মানে?
ভিলেন : মানে মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরীর স্থান নেয়ার সময় ।
মেরিন : কিছুই বুঝলাম না ।
ভিলেন : যা যা বলছি তা মনোযোগ দিয়ে শোনো। পরশুদিন রাতে তোমাকে ১টা কাজ করতে হবে।
মেরিন : কি কাজ ?
ভিলেন : নীড় রোজ রাতে drinks করে। তাইনা?
মেরিন : হামম ।
ভিলেন : তো পরশু রাতে যেভাবেই হোক নীড়ের খাবারে ঘুমের ঔষধ মিলিয়ে দিবে।
মেরিন : অ্যা…
ভিলেন : অ্যা না হ্যা ।
মেরিন : আমি ঘুমের ঔষধ পাবো কোন ধারে?
ভিলেন : কেয়ারটেকারের বউ কবিতা দিবে। সেও আমার লোক ।
মেরিন : 😱। আচ্ছা ।
ভিলেন : আরো কাজ আছে ।
মেরিন : আরো কাজ ?
ভিলেন : হামম। কবিতা তোমাকে বলে দিবে। যাও ওর রুমে যাও।
বলেই ভিলেন ফোন রেখে দিলো।
মেরিন মনে মনে : এই ভিলেন শালা আমার জামাইটাকে মেরে ফেলার plan করছেনা তো?? আল্লাহ ।
মেরিন কবিতার রুমে গেলো।
কবিতা : আসছো?
মেরিন : হামম।
কবিতা : এই নাও এটা drugs টাই তুমি নীড়ের খাবারে দিবে । বুঝেছো ?
মেরিন : হামমম ।
কবিতা : তোমাকে আরও কাজ করতে হবে ।
মেরিন : বলন ।
কবিতা : নীড় কে তো ঘুমের ঔষধ খাইয়ে ঘুম পারিয়ে রাখবে। তবে সকালবেলা তোমাকে এমন বোঝাতে হবে যে তোমার আর নীড়ের মধ্যে রাতে কিছু হয়েছে ।
মেরিন : কি ? 😱।
কবিতা : হামম।
মেরিন : কিন্তু…
কবিতা : কোনো কিন্তু না … ভিলেনের order ….
.
২দিনপর…
রোজ ঘুমিয়ে পরেছে । নীড় মনের সুখে drinks করছে। মেরিন তো খাবারে drugs মিশিয়ে দিয়েছে । তাই বারবার চেক করছে যে নীড় ঘুমিয়েছে কিনা? উকি মারছে । নীড় ১বার দেখে ফেলছে ।
নীড় : who’s there ?
মেরিন : ….
নীড় : কে ওখানে?
মেরিন : আমি সসস্যার।
নীড় : come inside…
মেরিন ঢুকলো।
নীড় : who are you ?
মেরিন : জজজান্নাত।
নীড় : কোন জান্নাত? দেখি চেহারাটা?
মেরিন ঘোমটা তুলল। নীড় এগিয়ে মেরিনের কাছে গেলো ।
নীড় : মেরিন…
মেরিন : মেরিন না জজজান্নাত ।
নীড় মেরিনের ঠোটে আঙ্গুল দিয়ে
বলল : hush…. কোনো কথা না। let me see you … কতোদিন পর দেখছি তোমাকে … ভালোবাসি… খুব বেশি ভালোবাসি…
বলেই মেরিনকে জরিয়ে ধরলো । কান্না করতে লাগলো ।
নীড় : নিজেও জানিনা কতোটা মিস করেছি তোমাকে । কেন ছেরে চলে গিয়েছিলে জান…. i love you … i really very love you….
এরপর মেরিনের ঠোটজোরা দখল করে নিলো। মনমতো romance করলো । 😅😅😅।
.
চলবে…