পাথরের বুকে ফুল ! সিজেন 2 !! Part- 13
ওয়াসেনাত ঘুরে তাকাতেই অরিত্রানের চোখে চোখ পরে।অরিত্রান এদিকেই তাকিয়ে ছিলো।দু’জনের চোখ হঠাৎ একসাথে মিলিত হয়ে এক অদ্ভুত অনুভুতির জন্ম দিয়ে যাচ্ছে।অরিত্রান চোখ সরাচ্ছে না।ওয়াসেনাত গভীর মনোযোগী হয়ে অরিত্রানের চশমার ফ্রেমে বন্ধি চোখে কিছু খুঁজছে।কিছুসময়ের পরেও অরিত্রান চোখ সরিয়ে নিলো না।রিমি দরজা ঠেলে ওয়াসেনাতের পাশে এসে দাঁড়িয়ে পড়লো।সামনে না তাকিয়েই ওয়াসেনাতের বাহুতে ধাক্কা দিয়ে বললো,
—” কি রে দাড়িয়ে আছিস কেনো??চল।”
—” হুম।”
ওয়াসেনাত ছোট করে জবাব দিয়ে সামনে হেঁটে আসে।সাথে চোখটাও সরিয়ে নেয়।কিন্তু কেউ গভীর ভাবে তাকিয়ে আছে।নিজের চোখটা আর সরালো না সে।ওয়াসেনাত মনে মনে বিড়বিড় করে,নুহাশশ সাহেব আসবে এটা তো বলেনি রিমি??”
টেবিলের নিকটে এসেই রিমি সামনে তাকায়।অরিত্রান চোখ নামিয়ে ফোনের স্কিনে রাখে।অরিত্রানকে দেখে রিমি কয়েক সেকেন্ড চুপ করে দাড়িয়ে থেকে রিমনের দিকে তাকিয়ে খুদ্দ গলায় বলে উঠে,
—” আপনি এই নুহাশকে ও নিয়ে এসেছেন??আশ্চর্য এই লোকের মতো নিরামিষকে নিয়ে মানুষ ক্যাফে তো দূরে থাক বাসার বাহিরেই আসবে না।আর আপনি একদম আমাদের সাথে বসিয়ে দিলেন??”
রিমিকে অরিত্রানের এখন ডিরেক্ট shoot করতে ইচ্ছে করছে।একটা ফাজিল টাইপের মেয়ে বলেই তার মনে হয় রিমিকে।রিমন মুখ কাচুমাচু করে বললো,
—” দেখো রিমি ও আমার জান!!
রিমি ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই রিমন দু’হাত নাড়িয়ে বললো,
—” আরে ওই রকম না।প্রিয় বন্ধু টাইপের জান।তুমি যেমন ওয়াসেনাতকে ছাড়া কোথাও যাও না আমিও ওকে ছাড়া যাই না।আরে বেস্টফ্রেন্ড ফরএভার বলে একটা ব্যাপার আছে না।”
রিমন মিষ্টি করে একটা হাসি দিয়ে অরিত্রানের পাশে চলেগেলো।ওয়াসেনাত আর রিমি একপাশে বসে পরেছে।অরিত্রানের সামনেই ওয়াসেনাত। আর রিমন রিমির সামনে।ওয়াসেনাত নিচের দিকে তাকিয়ে বার কয়েক অরিত্রানের দিকে তাকাচ্ছে।অরিত্রান ফোনের প্রতি অধীক মনোযোগী। কেউ যে তাকে বার কয়েক করে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখার চেষ্টায় আছে এটা তার চোখে পড়ছে না।পরবে কি ভাবে!! রিমির প্রতি তার রাগ এখন টগবগ টগবগ করছে।যা রিমনের উপর তুলবে সে।ওয়াসেনাতের চোখ বিচরন করছে অরিত্রানের লালছে ঠোঁটে।শ্যামবর্ণের ছেলেদের ঠোঁট গোলাপি হওয়া সাজে কিন্তু এমন লালছে কেনো তাই সে বুঝতে পারছে না।সাদা টিশার্টের উপরে আবার কালো জ্যাকেট পরেছে।সামনে চলে আশা সিল্কি চুলগুলো চশমার উপরে পরে আছে।একটু সরিয়ে দিলে কি ক্ষতি হবে??কথাটা ভেবেই ওয়াসেনাত নিজের প্রতি অবাক হয়।কি সব ভাবছে সে??ওয়াসেনাতের হঠাৎ করেই মনে হচ্ছে এই শ্যামবর্ণের বলিষ্ঠ দেহের অধীকারি ছেলেটা আসলেই খুব সুন্দর। তার মাঝে লুকিয়ে আছে অঘাত সৌন্দর্য্য। যা পরক করতে গেলে কেঁপে উঠে বুক।ধুকপুকুনি বাড়ে হাজার গুনে।যেনো মুহূর্তে অদ্ভুত ভাবে ডানা ঝাপ্টে বেড়ায় মনের আকুতি।অরিত্রান চোখ তুলে তাকাতেই আবার ওয়াসেনাতের চোখে চোখ পরে।দৃষ্টি এক হয়।ওয়াসেনাত লজ্জায় মাথা নতজানু করে।সে লুকিয়ে দেখতে চেয়েছে।প্রকাশ্যে ধরা খাবে বুঝতে পারে নি।চুরি করে ধরা খাওয়ার মত মুখটা ছোট করে ওয়াসেনাত লজ্জায় লাল হয়।অরিত্রানের দৃষ্টি যেনো সেখানেই থমকায়।কালো হেজাবের মাঝে এই মুহূর্তে লাল হয়ে আসা মুখের মাঝে অরিত্রান ডুবতে বাদ্ধ। মনের একটা সত্তা কাজ করা ভুলে তাকে সত্যি ডুবিয়ে দিচ্ছে।রিমির কথায় ছেঁদ ঘটে তাদের।রিমি বললো,
—” কি খাবি তুই??আর আপনি ও বলেন মিস্টার নুহাশ??
অরিত্রান চোখ তুলে একবার রিমির দিকে কড়া নজরে তাকিয়ে বললো,
—” আই ডোন্ট নিড এন অর্ডার!!”
—” এই আপনি সব সময় এত গুমড় মেরে থাকেন কেনো বলেন তো??নিজেরে কি ভাবেন প্রেসিডেন্ট?? হু??এত এট্যাটিউড কেনো আপনার??”
রিমির খুদ্দ গলা।অরিত্রান বিরক্তি নিয়ে আবার ফোনের দিকে মনোযোগী হয়।তার একদম মুখে মুখে তর্ক করা পছন্দ না।এই মেয়ে যে কত বড় ঝগড়ুটে তা তার ভালো করেই জানা হয়েগেছে। কারনে অকারনে শুধু গায়ে পরা স্বভাব।রিমি ওয়াসেনাতের দিকে তাকিয়ে বললো,
—” দেখলি দেখলি কত ঢং??
ওয়াসেনাত শান্ত গলায় বললো,
—” ছাড়না।তোরা নিজেদের ইচ্ছে মত খাবার অর্ডার দে।ঝগড়া করছ কা শুধু শুধু।”
রিমি কিছু বলতে নিয়েও বললো না।খাবার অর্ডার করে রিমি আর রিমন নিজেদের মাঝে কথা বলায় মগ্ন হয়ে গেছে ওয়াসেনাত কিছুক্ষণ পর পর তাদের দিকে তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে ফেলছে।অরিত্রান আড়চোখে তাকিয়ে ভাবছে রিমন এত সুন্দর করে গুঁছিয়ে কথা বলতে পারে!!আশ্চর্য!! তার সাথে তো সব সময় বোকা বোকা টাইপের কথা বলবে আর তার রাগ বাড়াবে।কিন্তু এখন!!
কিছুসময় চুপ থেকে ওয়াসেনাত বললো,
—” এই যে নুহাশ সাহেব আপনি আমার সাথে চলুন??”
অরিত্রান চোখ তুলে তাকিয়ে অবাক হয়ে বললো,
—” হোয়াট??”
—” আরে বাহিরে চলুন।এখানে কাবাব মে হড্ডি হয়ে লাভ কি??চলুন তো।”
রিমি বিস্ময়ে বললো,
—” পাগল নাকি তুই?? কই যাবি??তাও এই ভয়ংকর লোকের সাথে??
—” আরে এত কথা রাখ।আমি একটু বাহিরে যাবো।তোরা থাক।আর এই যে আপনি আমার সাথে চলুন।দ্রুত।”
কথাটা বলেই ওয়াসেনাত দাড়িঁয়ে পরলো।অরিত্রান হা করে তাকিয়ে থেকে এই মেয়ের মতিগতি বুঝার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলো।তবুও উঠে দাড়াঁলো না।ওয়াসেনাত ধাপ ধাপ পা ফেলে কিছু দূর এগিয়ে গিয়েও পিছনের দিকে তাকিয়ে আবার ফিরে আসে।লোকটাকে উঠতে বলেছে সে!! আর সেই লোক নবাবের মত বসে আছে।যেনো পাত্তাই নেই।চোখ রাঙিয়ে ওয়াসেনাত বললো,
—” পালকির যুগ নেই যে আপনাকে পালকিতে করে নিয়ে যাবো।চলেন!!”
অরিত্রান উঠে দাড়াঁলো।গায়ের কুঁচকে যাওয়া গেঞ্জিটা টেনে রিমনের দিকে একবার রাগী চোখে তাকালো।জ্যাকেট ঠিক করে নাক মুখ ফুলিয়ে ওয়াসেনাতের পিছনে পিছনে হাটা শুরু করে।ওয়াসেনাত দ্রুত পা ফেলে ক্যাফে থেকে বাহিরে চলে আসে।রেগে অরিত্রান বললো,
—” Is that your problem??এভাবে বাহিরে নিয়ে আসার মানে কি??ইউ নো হোয়াট তোমাকে আমি এমনেই সমস্যা বলি না।আসলেই সমস্যা আছে তোমার মাঝে।সো বলো কেনো বাহিরে নিয়ে এসেছ??এত কি প্রয়োজন??”
ওয়াসেনাত বিরক্তি নিয়ে তাকালো।ভ্রুজোড়া বাকিঁয়ে বললো,
—” ওদেরকে প্রাইভেসি দেওয়ার জন্য।”
অরিত্রান যেনো কিছুই বুঝলো না।অবাক হয়ে বললো,
—” আমরা কি ওদের প্রাইভেসি দিচ্ছি না??”
—” না।”
বলেই ওয়াসেনাত ফুটপাত ধরে হাটা শুরু করে।অরিত্রান কিছুই বুঝতে না পেরে ওয়াসেনাতের পিছনে পিছনে হাঁটছে।ওয়াসেনাতের পায়ের গতি কম।অরিত্রান কিছুটা দ্রুত পা ফেলে বললো,
—” বাই দ্যা ওয়ে, ওদের প্রাইভেসি কেনো লাগবে??হোয়াই??আর ওরা একা একা করবেটা কি??”
ওয়াসেনাত দাড়িঁয়ে পরে।অরিত্রানের দিকে তাকিয়ে বলে,
—” প্রথমত ওদের প্রাইভেসি প্রয়োজন।আর ওরা প্রেম করবে!!প্রেম!!”
অরিত্রান চেঁচিয়ে বললো,
—” হোয়াট??র..মাহির এটা করতেই পারে না?”
ওয়াসেনাত কানে এক হাত দিয়ে বললো,
—” আরে বাবা চিৎকার করেন কেনো?আর পারে না মানে কি?উনি কি ছেলে হয়!!”
অরিত্রান বিরক্তিতে মুখটা ছোট করে রাগে ফঁসফঁস করে বললো,
—” ওকে দেখে কি তোমার মেয়ে মনে হয়??”
—” তা মনে হয় না।কিন্তু আপনি বললেন তাই তো প্রশ্ন করলাম।কিন্তু উনি প্রেম করলে আপনার সমস্যা কি??আপনার কি রিমিকে পছন্দ?হহু বলেন?”
ওয়াসেনাত ভ্রু নাচিয়ে দুষ্টু হাসি দিয়ে প্রশ্ন করে। তার এমন প্রশ্নে অরিত্রানের রাগ তুঙ্গে। জবাব না দিয়ে সে রাগে ফঁসফঁস করেই চলেছে।ওয়াসেনাত সন্দেহ চোখে তাকিয়ে বললো,
—” বলেন কি!!এটা সত্য!!
—” আমি কি একবারো বলেছি,এটা সত্য !! ”
—” আরে নীরবতা সম্মতির লক্ষণ তাই ধরে নিলাম।ঠিক বলেছি না!!”
অরিত্রান চোখ রাঙিয়ে বললো,
—” না ভুল বলেছ।ওই ঝগড়ুটে মেয়েকে আমি!!ইম্পসিবল!! তার উপর প্রেম!!ডাবল ইম্পসিবল।
ওয়াসেনাত ভারী অবাক হওয়া কন্ঠে বললো,
—” ওরে আল্লাহ্!!এই যুগের এত হ্যান্ডসাম ছেলে হয়ে প্রেম আপনার জন্য ডাবল ইম্পসিবল!! ভাবা যায়!!মোটেও ভাবা যায় না।এটা বিশ্বাস করাও আমার জন্য ইম্পসিবল। এসব ছাড়ুন চলেন আজ আমরাও ঘুরি।ঘুরার জন্য তো আর প্রেমিক প্রেমিকা হতে হয় না।ঠিক বলেছি না??”
অরিত্রান জবাব দিলো না।শুধু দৃষ্টি স্থির রেখেই তাকিয়ে থাকে।ওয়াসেনাত ডান চোখ টিপে বললো,
—” আপনাকে কিন্তু বড়লোক টাইপেরই মনে হয়।ভাবছি প্রেম করমু!!”
অরিত্রান হা করে তাকিয়ে থাকে কিছুসময়। হঠাৎ তার মেজাজ খিঁচড়ে যায় বড়লোক কথাটা শুনেই।মনে মনে রাগে কটমট করে সে।ভাবে প্রত্যেকটা মেয়ে লোভী!টাকাই এদের কাছে সব।স্টাইলিশ, হ্যান্ডসাম, গাড়ি চালিয়ে ঘুরে এমন ছেলেদের দেখলেই এরা হামলে পরে।ভাবে একবার পটাতে পারলেই লাখপতি। এদের জন্যেই ছেলেরা স্টাইলের দিকে বেশি ঝুঁকছে দিন দিন।ওয়াসেনাতকে অন্যরকম ভেবে ছিলো।কিন্তু এও তো ওদের মতো।কি ভাবে এরা টাকাই সব??তাহলে এটা কেনো ভাবে না টাকা দিয়ে এদের মত হাজারটা মেয়ে আমরা বেডে নিয়ে রাখতে পারি।কথাগুলো মনে মনে বিড়বিড় করতে করতে অরিত্রানের কপালের রগ গুলো দপদপ করতে শুরু করে।মুহূর্তেই চোখের দুই কার্নিশ লাল হয়ে উঠে।
এর মাঝেও ওয়াসেনাত দাঁত বের করে হেসে বললো,
—” আমার প্রেম করার ইচ্ছা নেই।করলেও মধ্যবিত্ত করবো।আমার জানা মতে বেশি বড়লোকরা মদ গাঁজা খায় আর বাসায় এসে বউ পিটায়।সবচাইতে বড় কথা বউ বাদেও এদের হাজার জন থাকে।তাই এদের সাথে প্রেম করে লাভ কি বলেন??তার চেয়ে প্রেম না করে থাকা ভালো।”
অরিত্রান আবার একবার অবাক হয়।তার হঠাৎ করেই কষ্ট হচ্ছে ওয়াসেনাতকে বাকি সবার মতো মনে করায়।মনে হচ্ছে এ সবার থেকে আলাদা।এর চোখ সচ্ছ কাঁচের মতো।একদম সত্য বলে এর চোখ।নিজের প্রতি একটা চাপা রাগ হয় তার।সে কিভাবে এমন ভাবলো??মেয়েটা লোভী হলে অবশ্যই তার কাছে হাত ভাঙার টাকা চাইতো।ব্লাকমেইল করতো।এত ব্যাথা দেওয়ার পরেও সে এত সহজ হয়ে মিশতে পরতো না।অরিত্রানের ঠোঁটের কোণ বেয়ে হাসি নামে।অদ্ভুত সে হাসি। সবার চোখ এড়িয়ে গেলেও ওয়াসেনাতের চোখে বন্ধী হয় সেই হাসি।হা করে তাকিয়ে থাকে সে।মনে মনে বলে”ইশশ কত সুন্দর করে হাসতে পারে উনি।কিন্তু হাসে না কেনো??”অরিত্রান চোখ সরিয়ে রাস্তা ধরে হাঁটে।
দু’টি মানুষ পাশাপাশি হাঁটছে। সূর্যটা ঢুলে পরেছে পশ্চিমের আকাশে।লালছে লালছে দেখাচ্ছে সামনের বিশাল বটগাছের ফাঁকে ফাঁকে।যেনো উঁকি দিয়ে জানান দিচ্ছে আজ আমার ছুটি।সত্যি আজকের জন্য সূর্যের ছুটি।ছায়াঁ নেমেছে পিছঢালা রাস্তার বুকে।সেই বুকে মানুষের আনাগোনা চলছে।তার পাশ ঘেঁষে চলমান ফুটপাত ধরে হাঁটছে দু’জন তরুণ তরুণী। কথা নেই দু’জনের মাঝে।এত নীরবতা কেনো প্রকৃতিও জানে না।দু’জন দুই প্রকৃতির মানুষ বলেই এত নিশ্চুপতা এতো নীরবতা!!ক্যাফেটেরিয়া থেকে অনেকটা দূরে চলে এসেছে অরিত্রান আর ওয়াসেনাত। অনেক সময় নিয়ে তারা চুপ।একজনে ভাবছে,”ছেলেটা এত নিশ্চুপ কেনো?”অপর জনে ভাবছে,”মেয়েটা আজ কথা কেনো বলছে না??”অনেকসময় পরে ওয়াসেনাত বললো,
—” আপনার কি সবসময় মন খারাপ থাকে??”
আকর্ষীক এমন প্রশ্ন অরিত্রানের গতিময় পা থামিয়ে দিলো।একটু অবাক হয়েই বললো,
—” না তো কেনো??”
ওয়াসেনাত উতফুল্লু কন্ঠে বললো,
—” এই যে সব সময় এত নিশ্চুপ হয়ে থাকেন।কথা বলেন না।নীরব নীরব সব কিছু তাই প্রশ্নটা করলাম।”
অরিত্রান হঠাৎ নিজের গম্ভীরতা ছেড়ে বললো,
—” তুমি নিজেও তো চুপ করে ছিলে!! ”
ওয়াসেনাত সামনে থেকে চোখ সরিয়ে অরিত্রানের দিকে তাকায়।এই মুহূর্তের “তুমি” তে কি যেনো একটা ছিলো।যা ওয়াসেনাতের মনে হঠাৎ বসন্তের মত বাতাস বহমান করে চলেগেছে।কিছু সময় থেমে সে বললো,
—” আরে কার সাথে কথা বলবো??আপনার সাথে??আপনার আর রোবটের মধ্যে আমি পার্থক্য দেখি না।তাই চুপ করে ছিলাম।”
অরিত্রান সামনে থেকে চোখ ঘুরিয়ে ওয়াসেনাতের দিকে তাকালো।ওয়াসেনাত আগে থেকেই তার দিকে দৃষ্টি দিয়ে ছিলো।হঠাৎ অরিত্রানের তাকানোতে তাদের চোখাচোখি হলো।অরিত্রান চোখ সরিয়ে ফেললো।এই চোখের কোণে কোণে তার কেমন যেনো ভাংচুর হয়।মনে হয় এই সূর্যডুবির সাথে যেভাবে ছাঁয়া নেমে এসেছে ঠিক একুই ভাবে তার সর্বনাশ নেমে আসছে এই চোখে।💕
________________________
ড্রাইভারের পাশের সিটে উদাম পা জোড়া তুলে রেখেছে মাদৌলি।ব্যাপারটায় বৃদ্ধ ড্রাইভার খুবই লজ্জিত হচ্ছে ।পেটের দায়ে কাজ করতে হয় তা না হলে মেয়ের সমান একটা মেয়ের এমন বেহায়াপনা তার দেখার ইচ্ছে কোনো জন্মেও ছিলো না।মনে মনে একরাশ ঘৃণা নিয়ে তিনি সামনের দিকে তাকিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করছে।মাদৌলি পার্টিতে যাচ্ছে।পার্টিতে ছোট ছোট ড্রাস না পড়লে তো ঘেয়ো ভূত লাগবে। তার উপর সে কোটিপতি বাবার একমাত্র মেয়ে। সে মডার্ন ড্রেস পরবে না তো কে পড়বে!!মাদৌলি গাড়ির একপাশের জানালার সাথে ঠেসে কাত হতে বসে আছে।হাতে একটা জ্বলন্ত সিগারেট। কিছুক্ষণ পর পর তা মুখে পুড়ে দীর্ঘ টান দিয়ে গাড়ির ভেতরে ধোঁয়া ছড়াচ্ছে সে।সিগারেটের নেশায় সে বুদ হয়ে আছে।চারপাশে তার তেমন মন নেই।মন থাকলে সামনের গ্লাসে সে বৃদ্ধা ড্রাইভারের কুচঁকে আসা চামড়ার মুখশ্রীতে বিরক্ত আর মুখ চেপে কাশি দেওয়া দেখতে পেতো।মাদৌলির বাম হাতে তার ফোনটা।যার স্কিনে অরিত্রান খানের ছবি।ইনস্টাগ্রামে অরিত্রান খানের ঢালা ঢালা ছবি।তবে ইনস্টাগ্রাম তার নামে হলেও এটা তার একাউন্ট না।তার নামে অনেক একাউন্ট আছে।আসল আইডি কারো জানা নেই।আদো আছে কি না তাও কেউ জানে না।মাদৌলি অরিত্রানকে দেখেছে লন্ডনে একটা পার্টিতে।তারপর থেকেই তার নেশায় ডুবে আছে সে।বহুবার তার কাছে যেতে চেয়েছে।কিন্তু অরিত্রান না চাইলে তার কাছে কেউ যেতে পারে না।কথাটা কতটা সত্য তা সে অরিত্রানের হোটেল পর্যন্ত গিয়েই বুঝতে পেরেছে।মাদৌলি ফোন থেকে চোখ সরিয়ে সামনে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বললো,
—” ড্রাইভার গাড়ি থামাও, দ্রুত থামাও।”
বৃদ্ধা গাড়ি থামাতেই মাদৌলি জানালা দিয়ে মাথাটা বের করে আবার বলতে লাগলো,
—” পিছনে নেও,আর একটু,আর একটু,থামো।”
মাদৌলি দেখছে নুহাশ নামের ছেলেটার পাশে ওয়াসেনাত হাঁটছে।মাঝে মাঝে একটা দুইটা কথা হচ্ছে তাদের মাঝে।মাদৌলির হঠাৎ খুব জেলাসি কাজ করছে।ছেলেটার পাশে এই মেয়েকে তার একদম পছন্দ হচ্ছে না।ফোনটা নিয়ে কাউকে কল করে সে বললো,
—” নুহাশ নামক ভার্সিটির ছেলেটার সব তথ্য আমার চাই।at any cost.and soon.
ফোনটা রেখে আবার একবার তাকিয়ে ড্রাইভারকে বললো,
—” চলো।”
________________________
—” চলেন আজ আমি আপনাকে ট্রিট দি??”
অরিত্রান সামনে তাকিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বললো,
—” কেনো??”
—” এমনেই।আপনি আজ একটা অদ্ভুত জিনিস দেখিয়েছেন তাই।”
—” কি অদ্ভুত জিনিস দেখিয়েছি বলো??”
অরিত্রানের ঠান্ডা গলা।পা চলানো থামিয়ে সে দাঁড়িয়ে ওয়াসেনাতের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো।ওয়াসেনাত মিষ্টি করে হেসে বললো,
—” আজকে মনে হয় সূর্য নিজের গতিপথ পরিবর্তন করেছে নুহাশ সাহেব!!তাই তো আপনি কথা বলছেন।তার উপর আপনি হেসেছেন।এত দিনের পরিচয়ে আমি এই প্রথম আপনাকে এত মিষ্টি করে হাসতে দেখেছি।”
অরিত্রান ভারী অবাক হয়ে বললো,
—” আমি আবার কখন হেসেছি??”
ওয়াসেনাত জবাব দিলো না।মাথা নামিয়ে হাঁটায় মনোযোগ দেওয়া শুরু করে।অরিত্রান কিছুসময় দাঁড়িয়ে স্তব্ধ হয়ে ভাবে সে আসলে কখন হেসেছে!!মনে পরতেই সে অবাক হয়ে ওয়াসেনাতের পিছনের অংশে তাকায়।মেয়েটা কি তার সব গোপন হাসি ধরতে পারে!!সে তো গোপনেই হেসেছিলো।পরক্ষনে নিজেকে পিছিয়ে পরতে দেখে দ্রুত পা ফেলে ওয়াসেনাতের পাশ ঘেঁষে হাঁটা শুরু করে। কিছুদূর যেতেই চায়ের দোকান চোখে পরলো ওয়াসেনাতের।চা সে কম খায়।তবে আজ কেনো যেনো পাশের লোকটার সাথে মাটির পাত্রে এক’কাপ গরম চা খেতে ইচ্ছে করছে।দু’জন পাশাপাশি
বসবে।গরম ধোঁয়া উঠবে চায়ের পাত্র থেকে।দারুণ একটা ব্যাপার হবে।তার তো ইদানীং সবুজ চোখের মানবের চাইতে শ্যামবর্ণের চশমিশ নুহাশকেই ভালো লাগে।অদ্ভুত সে ভালো লাগা!!ভারী অদ্ভুত!অরিত্রানের দিকে তাকিয়ে কথা গুলো ভেবে ওয়াসেনাত অনুনয়ের স্বরে বললো,
—” চা খাবেন??”
অরিত্রান চোখ বাঁকিয়ে একবার ওয়াসেনাতের দিকে তাকালো।আবার সামনের দোকানটার দিকে।রাস্তার অপর প্রান্তে একটা চায়ের দোকান দেখা যাচ্ছে। দোকানে একটা, দুইটা লম্বা বেঞ্চ আছে।ফুটপাতের দোকান।ছোট একটা দোকানে জিনিসের কাদা কাদি অবস্থা। আর সেই দোকানেই বহু কষ্টে বসে আছে দোকানদার।হাসি মুখে চামচের টুন টুন শব্দ করে মাটির কাপে চা বানাচ্ছে হয় তো।শব্দ কানে না আসলেও এটাই মনে হচ্ছে দূর থেকে।আর বাচ্চা একটা ছেলে সে চায়ের পাত্র এগিয়ে দিচ্ছে বেঞ্চে বসা সবাইকে।অনেক মানুষই আছে।চারপাশের পরিবেশ ভারী নোংরা।অরিত্রান চোখমুখ কুঁচকে তাকিয়ে থাকে কিছুসময়। একটা কুকুর এগিয়ে আসতেই ওয়াসেনাত লাফিয়ে অরিত্রানের হাত চেপে ধরে নিজের বাম হাতে।ভীতু মুখে বলে,
—” হেসস, হেসস, যা, যা।”
কিন্তু কুকুরটা তার কথায় খুব একটা পাত্তা দিলো না।আরো একধাপ এগিয়ে আসতেই ওয়াসেনাত জাপ্টে ধরে অরিত্রানকে।ফুটপাতের দিকে কারো চোখ না গেলেও আশেপাশের অনেকেই তাকিয়ে আছে।অরিত্রান চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে ওয়াসেনাতের দিকে।সে এখন এই মুহূর্তে কি করবে বা বলবে বুঝতে পারছে না।তার এই মুহূর্তে কি বলা উচিত তাও সে জানে না।অদ্ভুত একটা ফিলিংস কাজ করছে।মেয়েটা তার এত কাছে কেনো??কথাটা বার বার মনে মনে বলছে সে।তার মনে হচ্ছে মাতাল করা একটা গায়ের গন্ধ তার শরীরে মিশে যাচ্ছে।অদ্ভুত এর মাতালতা।এর নেশা তার স্কচ,হুইস্কি,ভয়ংকর অ্যালকোহলের চাইতেও বেশি কড়া।নেশাতুর!!ভয়ংকর নেশাতুর এই গন্ধ।যা মারাত্মক কাঁপনির সৃষ্টি করছে তার হৃৎপিণ্ড নামক যন্ত্রে।ধুকপুকানি বাড়ছে। যার শব্দ সে নিজের কানেও শুনতে পাচ্ছে।অরিত্রান হঠাৎ করেই অন্যমনস্ক হয়ে পরে।ওয়াসেনাত অরিত্রান টিশার্ট টেনে কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো,
—” এই যে আপনি, একটু তাড়ান কুকুরটাকে।কামড়ে দিবে তো!!ছু ছু যা ভাগ!!”
অরিত্রান নিজেকে ঝাঁকিয়ে তুললো।ওয়াসেনাত নামক নেশায় ডুবতে ডুবতে সে ভুলেই গেছে তাদের সামনে কুকুর দাঁড়িয়ে। কুকুরটা অবলীলায় ঘেউ ঘেউ করেই চলেছে।ওয়াসেনাত নিজেকে গুটিয়ে ছোট হয়ে অরিত্রানের বাহু সহ তার হাত জাপ্টে ধরে আছে।ভয়ংকর খামছি দিচ্ছে সে অরিত্রানের হাতে।নখের দাগ যে বসে গেছে তা অরিত্রান না দেখেই বুঝতে পেরেছে।ওয়াসেনাত আরো খামছি দিয়ে ধরছে বার বার।কুকুরটা যেই ঘেউ করছে সে আগের চাইতে আরো শক্ত করে ধরছে।ভয়ে ওয়াসেনাতের কপালে ঘামের বিন্দু বিন্দু ক্ষুদ্র কণা তৈরি হচ্ছে।তার হৃৎপিণ্ডের তুমুল শব্দ অরিত্রানের কানে এসে ধাক্কা খাচ্ছে।ওয়াসেনাতের ভীতু চোখ দেখে অরিত্রান হালকা মাথা দুলিয়ে হেসে উঠে।ওয়াসেনাত চমকিত চোখে সে দিকে একবার তাকিয়ে আবার কুকুরের দিকে তাকিয়ে বললো,
—” হাসছে কেনো??আরে এই কুকুরটাকে আগে তাড়ান।না হলে এখনি আমাকে কামড়ে দিবে সাথে আপনাকেও।”
অরিত্রান হাসি চেপে বললো,
—” আমাকে কুকুর কামড়ালে তেমন কিছুই হবে না।যেহেতু তোমার মতে আমি রোবট।কিন্তু তোমাকে কামড়ালে সমস্যা আছে।”
—” তাই তো বলছি তাড়ান প্লিজজ।”
অরিত্রান ভাবলেশহীন ভাবে বললো,
—” এতে আমার লাভ কি??”
অরিত্রানের এমন কথায় ওয়াসেনাতের রাগে মাথা দপদপ করছে।তবুও সে চুপ করে আছে।আসলেই তো তাকে বাঁচালে উনার লাভ কি??লাভ ক্ষতির দুনিয়ায় মানুষ লাভ ছাড়া কিছুই করে না।তাহলে তাকে কেনো বাঁচাবে। কথাটা ভাবতে ভাবতেই ওয়াসেনাত দেখলো কুকুটা প্রায় ফুটপাতের দিকে চলে এসেছে।ওয়াসেনাত অরিত্রানের হাত আরো শক্ত করে ধরে।অরিত্রানের ব্যাথা লাগছে।তারপরে ও সে চুপ করে দাঁড়িয়ে হালকা হালকা হাসছে।ওয়াসেনাতের ভীতু মুখটা তার দারুণ লাগছে।কোনো মেয়ের ভীতূ হওয়া মুখটাও যে এত সুন্দর হয় তা অরিত্রানের জানা ছিলো না।ওয়াসেনাত কিছুসময় ভেবে মুখে ইনোসেন্ট ভাব এনে বললো,
—” লাভ তো আছেই।এই যে আমি আপনাকে ট্রিট দিবো বললাম। আমার কিছু হলে আপনি তো আর ট্রিট পাবেন না।আপনি যা খেতে চান সব খাওয়াবো।আমার সব জমানো টাকা আপনার খাবারের পিছনে দিয়ে দিলাম।বিশ্বাস করেন সত্যি বলছি!!সব মনে সব।”
অরিত্রান পকেটে দু’হাত গুঁজে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বললো,
—” বিশ্বাস!!এই নামের কোনো শব্দ আমার ডিকশনারিতে নেই।সো তোমাকে বিশ্বাস করতে পাড়লাম না।”
ওয়াসেনাতের রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। লোকটাকে একটু ভালো ভেবেছেসে।কিন্তু এ তো একটা বদমাইশ বের হয়েছে।এর মাঝে তো সামান্য মানবতাও নেই।একটা আস্ত খারাপ লোক।ওয়াসেনাত কথাটা ভেবে দৌড়ে পালাবে বলে অরিত্রানের হাত ছেড়ে দিতে চায়।হাতটা আলগা হতেই অরিত্রান পকেট থেকে হাত বের করে ওয়াসেনাতের বাম হাতটা আরো একটু নিজের হাতে জড়িয়ে দিয়ে কুকুরটার দিকে এগিয়ে যায়। ওয়াসেনাত হাঁসফাঁস করে বললো,
—” আরে আরে করেন কি??কামড়ে দিবে তো!!ছাড়েন!!আরে বাপ ছাড়েন!!”
সামনের দোকানের ছেলেটা এদিকেই তাকিয়ে ছিলো।অধীক আগ্রহে সে ওয়াসেনাতের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করছে।অরিত্রান হাত দিয়ে ইশারা করে কিছু একটা দেখিয়ে আনতে বলে।ছেলেটা হাতে একটা পাউরুটি ঝুলিয়ে নিয়ে আসে অরিত্রান পাউরুটিটা কুকুরের মুখে ধরতেই সে খপ করে পাউরুটি নিয়ে নেয়।অরিত্রান হাত দিয়ে ইশারা করতেই সে লাফিয়ে লাফিয়ে নিজের লেজ নাড়তে নাড়তে সামনে চলে যায়।ওয়াসেনাত খুশিতে, অবাকতায়,অরিত্রানের বাহু আরো জোড়ে চেপে ধরে।অরিত্রান ঘাড় কাত করে তাকাতেই ওয়াসেনাত হাতটা ছেড়ে কাছুমাছু করে লজ্জায় লাল হয়ে বললো,
—” সরি।কিন্তু কুকুরটা আপনার কথা কি সুন্দর ইশারায় বুঝে গেছে!!আর আপনি কিভাবে বুঝলেন ওর খিদে লেগেছে??”
অরিত্রান পা সোজা করে দাঁড়িয়ে বললো,
—” আমার লন্ডনে একজোড়া কুকুর আছে।তাই জানি।আর কুকুর বা প্রানীরা ধোঁকা দেয় না।মানুষের চাইতে এরা বেশি বিশ্বস্ত। সবচেয়ে বড় কথা এরা বিনা কারনে কারো ক্ষতি করে না।খুদা লেগেছে বলেই শব্দ করছিলো।”
ওয়াসেনাত ভারী অবাক গলায় বললো,
—” আপনার মানুষের চেয়ে কুকুর বিশ্বাসী মনে হচ্ছে??”
অরিত্রান নিঃশঙ্কচে বললো,
—” অবশ্যই। এতে বিন্দুমাত্র ডাউট নেই।”
ওয়াসেনাত তাকিয়ে আছে একদৃষ্টিতে।কথাটা বলার সময় অরিত্রানের চোয়াল শক্ত হয়ে উঠে ছিলো।সেটাও ওয়াসেনাতের চোখ এড়িয়ে যায় নি।লোকটা প্রানী পছন্দ করে।আর যারা প্রানী পছন্দ করে মন থেকে তারা খুবই ভালো আর দয়াবান হয়।কথাটা ভেবেই ওয়াসেনাত হাসে।অরিত্রান নিজের চশমাটা ঠিক করতে করতে বললো,
—” ট্রিট দিবে বলেছ।এখন চা খেতে চাই।খাওয়াবে?না কি ভুলে গেলে??”
ওয়াসেনাত খুশিতে চকচক করে বললো,
—” আমি ধোঁকা দিতে পারি না।এই শব্দটা আমার ডিকশনারিতে নেই।চলেন।কিন্তু একটা কথা জিজ্ঞেস করবো??”
অরিত্রান জবাব দিলো না।ছোট ছেলেটার পিছন পিছন রাস্তা ক্রস করে সে দোকানের সামনে এসে দাড়ায়।খুদ্দ হয়ে ওয়াসেনাত শব্দ করে পা ফেলে।লোকটার এমন ভাবলেশহীন ব্যাপারটা তার মোটেও পছন্দ না।জাস্ট বিরক্তিকর।
.
.
#চলবে____