The villain lover

The villain lover ।। পার্ট : ০৭

ছোয়া অবাক হয়ে আছে কারন আজ তো সে পুরোটা সময় ভালো হয়েই ছিলো, কোনো সিনক্রিয়েট ও করেনি তবে রুদ্রের এমন ব্যাবহারের কারন সে বুঝতে পারছে না।

– আমাকে এভাবে কেনো নিয়ে যাচ্ছেন। কি করেছি আমি?

রুদ্র ছোয়াকে রুমে নিয়ে যাচ্ছে! ছোয়ার কোনো কথার উত্তর না দিয়ে।

– আমার হাতে লাগছে প্লিজ ছাড়ুন।

রুদ্র ছোয়াকে রুমে নিয়েই,

– খুব লাগছে তাইনা জান?( মাতলামো করে) জানো আমারো খুব লাগে যখন তুমি আমার সাথে হেসে কথা না বলো,আর তার থেকেও বেশি লাগে যখন আমারি সামনে অন্য কারো সাথে হেসে,হেসে কথা বলো।

– মানে কি বলছেন আপনি,আমি কার সাথে হেসে কথা বললাম?( করুণাময় ভাবে)

– বাহ,মনে নেই এখন। তা থাকবে কি করে বলো? তোমার তো ভালো লাগে তাইনা কেও তোমার দিকে লোভনীয় চোখে তাকাক তাইনা??? আমাকে দিয়ে হয়না,( ছোয়ার খুব কাছে যেয়ে)

– ঠাসসসসসস, ছিঃ আপনার চিন্তা ভাবনা কতো নোংরা। ( হ্যা ছোয়া থাপ্পড় মেড়েছে রুদ্রকে)

রুদ্রের চোখ দুটো লাল হয়ে আছে,

রুদ্র ছোয়ার কাছে যেয়ে শক্ত করে ধরে বলতে লাগলো?

– মানুষের সাথে হেলে দুলে কথা বলবে আর আমি বললেই দোষ তাইনা???( রেগে) মাতলামো করে।

আমার নোংরামো কি দেখেছো জান তোমার জন্য সব নোংরামি করতে রাজি আমি।

– আপনি আমার সামনে থেকে সরুন,আপনার মুখ থেকে মদের গন্ধ আসছে,আমার বমি পাচ্ছে, মদ খেয়ে এসে মাতলামো করছে, জানোয়ার মাতাল একটা।

– কি বললি তুই? আমি জানোয়ার? আমি মাতাল? তোর মতো আরো ২০/ ৩০ টা মেয়ে এভাবে এনে রাখা আমার কাছে কোনো ব্যাপার না বুঝেছিস? কিসের এতো অহংকার তোর? এই রুপের? এই শরীরের?( চুলের মুঠি ধরে।

ছোয়া অঝোরে কেঁদে যাচ্ছে।

– আপনার মতো একটা মানুষ যে মানুষ রুপী অমানুষ, তাকে আমি কখনো ক্ষমা করোবোনা,কখনো না।

– ছোয়া বিশ্বাস কর আমি তোকে খুব ভালোবাসি, তুই আমার বেচে থাকার অংশ হয়ে গিয়েছিস। চাইলেও পাড়বো না তোকে দূরে সরাতে।কেনো বুঝিস না ছোয়া,কেনো???

– ছোয়া তার সব শক্তি দিয়ে রুদ্রকে জোরে ধাক্কা মাড়ল, আর দৌড়ে পালাতে রুম থেকে বেড় হয়ে গেলো,

পরে গিয়ে রুদ্রর কপালের অনেকক্ষানি কেটে গেছে।

তারপর রুদ্র উঠে ছোয়ার পেছনে ছুটলো,

ছোয়া সিরি দিয়ে নামতে যাবে, তখন রুদ্র ছোয়াকে ধরে ফেললো আর ছোয়া ছোটার জন্য ছোটফোট করতে লাগলো।

রুদ্র ছোয়াকে জোর করে রুমে নিয়ে এসে বিছানায় শুইয়ে দিলো।

– প্লিজ আমাকে যেতে দিন প্লিজ।

-অনেক হয়েছে, আর না। খুব পালানোর শখ তোর তাইনা???কি করে তুই আমার না হোস আমি দেখবো,

রুদ্র শার্ট খুলে ঝাঁপিয়ে পড়লো ছোয়ার ওপরে ছোয়া চিৎকার করে কাঁদছে, কিন্তু রুদ্র তো আজ মাতাল,

মদে আর ছোয়ার নেশাতে।

ছোয়া ছোটার জন্য আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু পারছে না।

 

অতীত,,,

 

সবাই পৌছে গেলো খাগড়াছড়ি, পাহাড় ছোয়ার খুব পছন্দ।

সবাই হোটেলে যেয়ে ফ্রেস হয়ে নিলো, বিকেলে ঘুরতে বের হলো সবাই।

– এই ছোয়া তাড়াতাড়ি হাট।

– হাটছি তো, আমার পা কি গাড়ির চাকা নাকি।( মুখ বাকিয়ে)

– ছোয়া আপু?( রোদেলা)

– আরে রোদেলা বলো?

– আপু আসো সেলফি তুলি!

– হুম চলো, তারপর ছোয়া আর রোদেলা অনেকগুলো সেলফি তুললো।

আর রুদ্র পেছনে, পেছনে হাটছে ছোয়াদের।

– মেয়েরা আজ কিন্তু কেও পাহারে উঠবে না,কারন সন্ধ্যার পর এই যায়গাটা নিরাপদ না। ( স্যার)

 

– ছোয়া আশপাশ টা দেখছে,ছোটবেলা বাবা বলেছিলো পাহাড়ে নিয়ে আসবে, আম্মু, আমি,আপু,আর দোহা পাহাড়ে উঠে ছবি তুলবো আর সেই ছবিটা আমাদের ড্রয়িং রুমে বড় করে, বাধাই করে রাখা হবে, সেই স্বপ্নটা পুড়ন হওয়ার আগেই বাবা চলে গেলো,

 

– কি ভাবছো এতো??(রুদ্র)

কারো কথায় ঘোর কাটলো ছোয়ার,

– কিছুনা ভাইয়া,

– মিথ্যা তুমি বলতে পারোনা,বললেও ধরা পরে যাও।

– মুচকি হাসলো ছোয়া।

– আমাকে কি বলা যায় কি ভাবছো? জানো কষ্টের কথা সেয়ার করলে কষ্ট হয়তো কমেনা কিন্তু হ্যা,একটু হলেও ভালো লাগে।

– জানেন ভাইয়া! বাবা বলেছিলো পাহাড়ে বেড়াতে নিয়ে আসবে। আর আমাদের ফ্যামিলি পিকচার তুলে সেই পিকচার টা বড় করে বাধাই করে ড্রয়িং রুমে লাগাবে।

ইচ্ছাটা অপূর্ন রয়ে গেলো। (দীর্ঘশ্বাস ফেলে) ছোয়া আর রুদ্র হাটছে।

 

হাটতে,হাটতে অনেকটা দূর চলে গেলো

 

– ছোয়া চলো আমাদের যেতে হবে,

– ওকে ভাইয়া চলুন,

পেছনে তাকাতেই দেখলো কেও নেই তার মানে,তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে সবার থেকে।

ব্যাপারটা তাদের কাছে ছিলো চমকপ্রদ কারন স্যার বলে দিয়েছিলো সন্ধ্যার পর যায়গাটা ঠিক না।

– ভাইয়া এখন কি হবে?

– কি আর হবে? যা ভয় পেয়েছিলাম তাই হবে,

– মানে???( চোখ বড়, বড় করে)

– কি আর মানে,শুনেছি রাতে এখানে বাঘ, টাঘ নাকি বেড় হয়।( দুষ্টুমি করে)

– ভাইয়া এসব কি বলছেন( ভিতু,ভিতু ভাবে।)

– হ্যা, আমরা আলাদা হয়ে গিয়েছি আর মনে আছে স্যার বলেছিলো রাতের বেলা যায়গা টা নিরাপদ না।

– আল্লাহ কি হবে এখন( কাঁদো, কাঁদো ভাবে)

– বোকা মেয়ে এখানে বাঘ আসবে কোথা থেকে, স্যার তো বন জংগুল,পাহাড় তাই বলেছে নিরাপদ না।( রুদ্র মনে, মনে এসব ভাবছে আর হাসছে)

– ভাইয়া এখন কি হবে( কেঁদে দিয়ে)আমিতো ভাবছি অনেক ঘুরবো এখন যদি আমাকে বাঘে খেয়ে ফেলে তবে তো আর আমার ঘোরা হবেনা।

– রুদ্র ছোয়ার কথা শুনে হাসবে না কাদবে বুঝতে পারছে না, এই মেয়ে মড়ার জন্য কষ্ট পাচ্ছে না, কষ্ট পাচ্ছে বাঘে খেয়ে নিলে ঘুরতে পারবে না তার কষ্ট। কি মেয়েরে বাবা

একে নিয়ে নাকি সারাজীবন কাটাতে হবে। রুদ্র তু তো গায়া শেষ মেস পাগলের প্রেমে। ( এসব মনে, মনে ভাবছে রুদ্র)

– ভাইয়া আপনি সাইলেন্ট হয়ে গেলেন কেনো??

– থতমত খেয়ে,কই না তো।

– এখন কি হবে( নেকা কান্না করে)

– কিছু হবে না, চলো হাটা শুরু করি

আর নয়তো বাঘের পেটে যেতে হবে।

– রুদ্র আর ছোয়া হাটছে,

– হঠাৎ ছোয়া রাস্তার ওপরে বসে পড়লো,

– ভাইয়া আর পারছিনা,

– একি বসে পড়লে কেনো?

– পা ব্যাথা হয়ে গিয়েছে,

– হুম বুঝতে পেড়েছি, কিন্তু কি যে করি!!! আচ্ছা তোমাকে একটা লাঠি দেয় তুমি তা দিয়ে হাটো।

– মানে আমিকি বুড়ি? ( রেগে)

– আরে একদিন তো হবে আজ প্রেকটিস করে নাও।

– মুখ বাকিয়েই লাঠি নিয়ে হাটতে লাগলো ছোয়া,

– আচ্ছা ভাইয়া কথা বলতে,বলতে হাটলে নাকি কষ্ট কম হয়।

– তাই নাকি, তাইলে আজ আমরা কথা বলতে, বলতে হাটি আমাদের ও কষ্ট কম হবে কি বলো?

– হুম গুড আইডিয়া,

ছোয়া আর রুদ্র হাটছে,

– আচ্ছা ভাইয়া আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে?

– এমন প্রশ্ন শুনে রুদ্র কি উত্তর দিবে নিজেও বুঝতে পাড়ছে না,

নাহ নেই তবে কাউকে খুব ভালোবাসি।

– তাই নাকি? নাম কি মেয়েটার,দেখতে কেমন??

হুম এখন বলবো না, একদিন একেবারে তোমার সাথে দেখা করাবো। যেদিন সে আমাকে ভালোবাসবে,

– Oh so sad vaia, one side love!

মেয়েটা আপনাকে এখনো ভালোবাসে না?

– না বাসেনা,তবে খুব তাড়াতাড়ি বাসবে।

– ভাইয়া ট্রিট দিতে হবে কিন্তু।

– হুম সব দিবো তুমি যা চাও,আমার সব কিছু তোমার, আস্তে,আস্তে.

– কি বললেন ভাইয়া? কিছু বললেন?

– আরে না, না বললাম। তোমাকে ট্রিট দিবো তুমি যা খেতে চাইবে খাওয়াবো।

– so sweet of you ( খুশি হয়ে বললো ছোয়া)

– আচ্ছা তুমি কাউকে পছন্দ করো না?

– আমি পছন্দ তো দূর প্রেম ভালোবাসা বিশ্বাস ও করিনা।( রেগে)

– কেনো, কেনো?

– সবার হয়তো এসবের কপাল থাকেনা তাই। আর আমার জীবনের অনেক বড় একটা কাজ বাকি আছে ভাইয়া।( আনমনে হয়ে) আমাকে আমার বাবার খুনিকে শাস্তি দেয়া বাকি আছে, আমাদের জীবন কে যে ওলট পালট করে দিয়েছে,যতোদিন না সে শাস্তি পাচ্ছে ততোদিন আমার জীবনে অন্য কোনো কিছু, কোনো অনুভূতির স্থান নেই। একটানা কথা গুলো বলে যাচ্ছে ছোয়া।

 

হঠাৎ ছোয়ার কথাগুলো কেমন বেধে আসছে লক্ষ করলো রুদ্র। কয়েক সেকেন্ডের মাঝেই ছোয়া জ্ঞান হারিয়ে ঢোলে পরলো, আর রুদ্র তাকে জড়িয়ে নিলো নিজের বাহুতে।

রুদ্র কিছুই বুঝতে পারছে না কি হলো, সে তাড়াতাড়ি করে ছোয়াকে কোলে নিলো। আর হাঠতে লাগলো।

 

বর্তমান,,,

সকালে ছোয়া কোনো রকম চাদর আকরে বসে,বসে আছে রুদ্রর তো কোন হুস নেই রুদ্র ঘুমাচ্ছে।

রুদ্রের ঘুম ভাঙতেই দেখলো, ছোয়া বসে আছি।

রুদ্রের মাথা খুব ব্যাথা করছে,আর রাতের কথাগুলো মনে পড়ছে,

সে রাতে বেশি করে ফেলেছে, যা তার করা ঠিক হয়নি।

রুদ্র ছোয়াকে জড়িয়ে ধরে,

– প্লিজ জান, রাতের জন্য আমি সরি।

আসলে আমার হুস ছিলোনা, ড্রিংক বেশি করে ফেলেছিলাম।

 

ছোয়া বসে আছে আগের মতোই কোনো কথা বলছে না,আর আজ রুদ্রকে বাধাও দিচ্ছেনা। অন্য সময় হলে তো বাড়ি মাথায় করে ফেলতো কিন্তু আজ ছোয়াকে এভাবে চুপ দেখে রুদ্রের আরো কষ্ট হচ্ছে।

– এই ছোয়া, বউ। সরি বললাম তো

( কি মনে হয় আসলেই কি রুদ্র ওতোটা খারাপ নাকি ছোয়া শুধু, শুধু ভুল বুঝছে রুদ্রকে? ছোয়া কি ভালোবাসবে রুদ্রকে?আগে যে কি হবে আমি নিজেই কনফিউজড)

চলবে,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *