তারে আমি চোখে দেখিনি ! সিজনঃ-2 !! Part- 03
মেঘের জন্য টেবিলে খাবার বেরে ডাকছিলো শুধা।এমন সময় শুধা খেয়াল করলো তার মাথার উপরে টাকা উঁড়ছে।এক একটা নোট পাঁচশত টাকার।পেছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখে নেহা উঁড়াচ্ছে টাকাগুলো।
শুধাঃ একি নেহা চৌধুরী..আপনি এভাবে টাকা ছড়াচ্ছেন কেন?
নেহা একটু ভাব নিয়ে সোফাতে গিয়ে পায়ে পা তুলে বসে।তারপর মাথা ঝাকিয়ে ঝাকিয়ে বলে,
নেহাঃ আপনার ছেলের দাম কত?
শুধাঃ মানে?
নেহাঃ মানে বুঝছেন না? ভালোই ভালোই আমার মেয়ের জন্য আপনার ছেলের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলাম।একদিনের মাথায় আপনার ছেলে না বলে দিলো।এটা কেমন হয়ে গেলো না? আপনি জানেন আমার মেয়েকে আমি কখনো কোনো কিছুর অভাব বুঝতে দেয় নি? যখন যা চেয়েছে মুহূর্তের মাঝে এনে দিয়েছি।আর আপনার ছেলেকে পারবো না? বলুন কতো টাকা হলে ছেলেকে রাজি করাতে পারবেন?
নেহা চৌধুরীর এমন কথায় শুধা যেন অবাক হয়ে গেল।নেহা চৌধুরীর মন এতোটা নিচ যে আমার ছেলেকে টাকা দিয়ে কিনতে এসেছে! কিন্তু শুধা কি বলবে এই মুহূর্তে সেটা বুঝে উঠতে পারছে না।
নেহা একটা চেকে সিগনেচার করে শুধার দিকে বাড়িয়ে দেয়।আর বলে,
নেহাঃ এখানে টাকার ঘড়টাতে যতো মন চায় সংখ্যা বসিয়ে নিন।আমার এ্যাকাউন্টে কতোটাকা আছে সেটা আপনার কল্পনারও বাইরে।শুধু একটাই চাওয়া আপনার ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দিবেন।
নেহার কথাগুলো শুনে শুধার নিজেকে ছোট মনে হচ্ছে। অপমান বোধ হচ্ছে।কিন্তু নেহার পাওয়ারের কথা ভেবে শুধা ভয় পেয়ে যায়।তাই কিছু বলে না।শুধু ছেলেকে কিনতে চেয়েছে শুনে শুধার চোখ দিয়ে পানি পরে।
এমন সময়ে মেঘ রুম থেকে বের হয়ে দেখে নেহা চৌধুরী তার মায়ের সাথে এমন ব্যাবহার করছে।যা দেখে মেঘ রেগে যায়। মেঘ চিৎকার দিয়ে ওঠে,
মেঘঃ নেহা চৌধুরীর???
নেহা বসা ছেড়ে উঠে দাড়ায়। তারপর খুব ভাব নিয়ে এগিয়ে মেঘের কাছে আসে।
নেহাঃ মেঘ বাবা তুমি বাড়িতে আছো।ভালোই হয়েছে।তোমার মাকে একটু হিসােবটা বুঝিয়ে দাও তো।বয়স হয়েছে হয়তো টাকা পয়সার মূল্য বোঝে না।
মেঘ নেহার হাত থেকে চেকটা নিয়ে টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে নেহার মুখের উপর ছুড়ে মারে।তারপর মাকে এসে জড়িয়ে ধরে।আর বলে,
মেঘঃ আপনার সাহস কি করে হয় আমার মাকে এইভাবে অপমান করার?
নেহাঃ মেঘ বাবা আমার কথাটা তো শোনো?
মেঘঃ চুপপপপ! আর একটাও কথা বলবেন না।আপনার মেয়েকে আমি কখনো বিয়ে করবো না।এটাই আমার স্বীদ্ধান্ত। বেড়িয়ে যান আমার বাড়ি থেকে।
নেহাঃ মেঘ!!
মেঘঃ একবার বলেছি আপনার কানে যায় নি কথা? বেড়িয়ে যান আমার বাড়ি থেকে।
কথাটা মেঘ চিৎকার দিয়ে বলে।
নেহাঃ কাজটা তুমি ভালো করলে না মেঘ।
বলেই একটা মুখ ঝামটা দিয়ে বেড়িয়ে যায় নেহা চৌধুরী মেঘের বাড়ি থেকে।
নেহা চলে গেলে মেঘ তার মাকে নিয়ে নোফাতে বসায়।মায়ের চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বলে।
মেঘঃ এসব মানুষের মুখের উপর জবাব দিয়ে দিবে। চুপ করে থাকো কেন মা?
শুধাঃ তো কি করবো? নেহা চৌধুরীর যা পাওয়ার তাতে তোর যদি কোনো ক্ষতি করে দেয়, সেই ভয়ে।
মেঘঃ আরে রাখো ওর পাওয়ার। দেশে এ
ওমন বড় বিজনেসম্যান আর রাজনীতিবিদ কম নেয়। আমরা যদি ওকে ভয় পাওয়ার চেস্টা না করি তাহলে দেখবে ভয় লাগবে না।তোমার মনে হয় লাবন্য কে বিয়ে করলে আমি সুখী হবো? যদি তুমি চাও তাহলে ঠিক আছে আমি লাবন্যকেই বিয়ে করবো।
শুধাঃ আরে না।লাবন্যকে আমার মোটেও পছন্দ না।যা শুনেছি তাতে মা মেয়ে দুটোই একই স্বভাবের। তবে ওইযে একটা মেয়ের কথা বলেছিলি না দুপুরে! কি যেন নাম! ওওও হ্যাঁ মনে পড়েছে আয়াত! ওকে তোর বউ করলে কেমন হয়?
মেঘঃ কি যে বলো না মা! মেয়েটাকে আমি কখনো দেখিনি।শুধু কথা বলেছি।এমনও তো হতে পারে মেয়েটা বিবাহিত!
শুধাঃ তা আমি জানি না।তোর ভার্সিটিতেই তো ভর্তি হয়েছে।তুই সব খোঁজ খবর নিয়ে আমাকে জানাস।আমি গিয়ে ওর বাড়িতে কথা বলবো।
মেঘঃ আচ্ছা হয়েছে! এখন খেতে দাও তো! খুব খুদা লেগেছে!
শুধাঃ হুমমম চল!
,
,
,
,
চলবে,,,,,,