বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 51

তিথিঃ আমি তো জানি না মা,,আচ্ছা খুজে দেখি
মায়ের মনটা যে খুব অস্তির হয়ে আছে,,,কেন জানি বুকটা হাহাকার করছে তার কারণ টা শুধু অজানা,,,,
আবিরের বাবা বাহির থেকে আসে সাথে আমানের বাবা ও,,,আবিরের বাবা এসে সোফায় বসে আর তিথিকে ডেকে বলে
আবিরের বাবাঃ তিথি মা গিয়ে আরুকে ডেকে নিয়ে আসবে,,আর সবাই কে
তিথিঃ আচ্ছা বাবা,,,
আবির আমান ওরা সবাই নিচে নেমে দেখে আবিরের বাবা বসে আছে সামনে পিজ্জার প্যাকেট,,আবির তো এসেই পিজ্জার প্যাকেট ধরতে যায় বাবা ডাক দিয়ে উঠে
আবিরের বাবাঃ একদম হাত দিবি না,,,
আবিরঃ কেন বাবা??পিজ্জা তো খাওয়ার জন্য আনলে এতো গুলো প্যাকেট একটা নিলে কি হয়,,
আবিরের বাবাঃ আগে আমার আরু পরীটা খাবে তারপর সবাই,,,আরুর পছন্দের পিজ্জা এনেছি,,,
আবিরঃ বাহা তোমার মেয়ের জন্য আনলে আর আমরা কি নদীর জলে ভেসে এসেছি হু,,,
আবিরের বাবাঃ একটা ধরে দিবো আগে আমার মেয়ে টেস্ট করে দেখবে কেমন,,তারপর সবাই,,,
আহাদঃ বাহা শশুড়আব্বা আমি তো খেতে পারি তাই না?
আবিরের বাবাঃ একদম না,,,আগে আমার পরীটা খাবে,,যদি এসে দেখে কেউ হাত দিয়েছে একটা প্যাকেটে তাহলে যুদ্ধ লাগাবে বলবে পাপ্পা তুমি জানো আমার প্রিয় তবুও তুমি ওদের ধরতে দিলে,,
আবিরঃ হ্যাঁ আজ পর্যন্ত তাই হয়ে এসেছে,,,পিজ্জা বাবা সব সময় আরুর পছন্দের আনে,,,আমাকে মাকে কাউকে ধরতে দেয় না যত ক্ষন না আমাদের মহারানি টেস্ট করে দেখে কেমন,,,
সবাই হেসে উঠে
আবিরের বাবাঃ আমার এক মাত্র আদরের মেয়ে তার ইচ্ছাতে সব হবে ওকে,, এখন কেউ একদম হাত দিবি না আগে আমার কলিজার টুকরাকে ডাক তারপর
আমানঃ বাহা আংকেল তুমি আজও আরুকে সবার উপরে রাখো,,,ছোট বেলায় কত যে মাইর খাইছি আমি আবির শুধু আরুকে সামান্য একটু জ্বালালেই,,,
সবাই হেসে উঠে,,,
আবিরঃ হুম ও আবার বেশি পড়ে যেতো,,,কখনো যদি ভুলে ওর হাত পা ছিলে যেতো হইছে অইদিন আমাদের পুরো বাড়ি মাথায় তুলতো মা বাবা দাদিমা,,,
আবিরের বাবাঃ আমার মেয়েটাকে অনেক যত্নে বড় করেছি আহাদ,,,কখনো ওকে কষ্ট পেতে দিও না,,
আহাদঃ কখনো না বাবা,,,আরু আমার কাছে অনেক ইম্পর্টেন্ট,,,
আবির লুকিয়ে একটা প্যাকেট আবার ধরতে যায় যে আবিরের বাবা হাত ধরে বলে
আবিরের বাবাঃ এতো বড় হয়েছিস এখনও বাচ্চামি যায় নাই হুম,,,আমার মেয়ের ভাগ আগে তারপর সবাই বলছি না,,,
আমান আকাশ আর আহাদ ও কিছু টা হেসে উঠে আবিরের বাবার এমন কান্ড দেখে,,,
আবির হেসে আহাদকে বলে উঠে
আবিরঃ জানো আহাদ ছোট থেকে বাবা আরুর সব ইচ্ছে পূরন করছে আরু যা চাইছে সব,,,কখনো আমার বোনটাকে আমরা সামান্য টুকু অভাব রাখি নাই,,,
আহাদঃ হ্যাঁ ভাইয়া দেখেছি,,,ওর কাছে ওর বাবা-ভাই তো সুপারহিরো,,,
আবিরের মা এসে আবিরের বাবাকে বলে
আবিরের মাঃ আমার কেমন যেন লাগছে?
আবিরের বাবা উঠে বলে
আবিরের বাবাঃ কেন কি হয়েছে শরীর খারাপ কি?
আবিরের মাঃ জানি না বিকাল থেকে কেমন যেন অস্তির লাগছে,,,মনে হচ্ছে কিছু খারাপ হবে,
আবিরের বাবাঃ আরে চিন্তা করিও না,,,কয়েকদিন এতো কাজ ছিলো যে তাই,,,রেস্ট নাও ভালো লাগবে,,
আবিরঃ হ্যাঁ মা রেস্ট নাও,,
এইদিকে
তিথি পুরো রুম খুঁজে সবার কোথাও যেন আরিশা নাই,,,তিশার রুমে গিয়ে দেখে সেখানে কি না
তিথিঃ তিশা আরু কি তোমার সাথে?
তিশাঃ না তো,, আমি অনেক ক্ষন আগে ওকে দেখেছিলাম ডেকেছিলাম ও আমার রুমে আসতে কিন্তু সে বলেছে আসছে কি নাকি কাজ আছে তার,,
তিথিঃ ওহ ওকে আসলে পাচ্ছি না,,,
তিশা উঠে আসে,,,
তিশাঃ আচ্ছা আমিও খুঁজি দাঁড়াও,,,
দুইজনে খুঁজতে লাগে কিন্তু কোথাও যেন পাচ্ছে না,,,
তিথি আর তিশা এসে সবাই কে বলে
তিথিঃ আরু কোথাও নাই,,,ওকে খুঁজে পাচ্ছি না,,
আবিরঃ খুঁজে পাচ্ছি না মানে?ও আছে কোথাও দেখো গিয়ে
তিশাঃ আবির ভাই আমরা সব জায়গায় দেখেছি কিন্তু পাচ্ছি না,,,
সবাই অনেক চিন্তিত হয়ে যায়,,,
আবিরের মাঃ আমার মেয়েটা এই রাতে গেলো কই?আবির আমান তাড়াতাড়ি খুঁজ কই গেছে সে,,,
আবিরঃ মা চিন্তা করিও না,,আছে হয়তো কোথাও আমরা খুঁজতেছি,,
সবাই আরুকে খুঁজতে লাগে,,
এইদিকে,,
মায়রা তাড়াতাড়ি হাতটা মুছে ছাদ থেকে নিচে নামতে লাগে মনের সুখে গান গেয়ে গেয়ে,,সিড়ি দিয়ে নামার পর হুট করে খালামনির সাথে ধাক্কা লাগে,,,
খালামনিঃ উফফ দেখে হাঁটবা তো মায়রা,,,
মায়রা খালামনিকে দেখে ভয় পেয়ে যায় তবুও সে নরমাল থাকে,,,খালামনি মায়রাকে বলে উঠে
খালামনিঃ এতো রাতে ছাদে কেন গেলে মায়রা?
মায়রা কিছু টা ভয় পেয়ে যায়,,খালামনি এইভাবে তাকে দেখবে সে ভাবে নাই,,,একটু নরমাল হয়ে বলে
মায়রাঃ আ,,সলে খালামনি আমার ভালো লাগছে না তাই ছাদে গেলাম একটু বাতাস খেতে,,,,
খালামনিঃ ওহ,,, আচ্ছা তুমি কি আরুকে দেখেছিলে?
মায়রাঃ আরু না তো কেন?
খালামনিঃ না ওকে খুঁজে পাচ্ছি না,,,
মায়রাঃ(সবাই তো এখন তিথিকে খুঁজার কথা কিন্তু সবাই খুঁজে আরুকে বাহা তিথি তোমার ইম্পর্টেন্ট দেখি নাই,,মরে গেলে আর দেখো সবাই ব্যস্ত অন্য দিকে)
খালামনিঃ কি ভাবো?
মায়রাঃ না কিছু না,,,আরু হয়তো আহাদের সাথে আছে,,,
খালামনিঃ না নেই সবাই তো ওকে খুঁজছে,,,
মায়রা হল রুমে আসে এসে দেখে সবাই কেমন যেন চিন্তিত,,,তার আজ এতো শান্তি লাগছে যে সে তার প্লেন অনুযায়ী সব করেছে আর কেউ বুজতে ও পারলো না,,,
আহাদ তো ভয়ে শেষ যে এই সময় আরু কই যেতে পারে,,,,আরুর কিছু ফ্রেন্ড ছিলো তারা ও খুঁজতে লাগে,,,,আবিরের মা তো কেঁদেই দেয়,,,
আবিরের মাঃ আমার মেয়েটা এই সময় কই গেলো আবির প্লিজ ওকে এনে দে,,
আবিরঃ মা প্লিজ শান্ত হও আরুকে ঠিক পাবো,,,,
আহাদঃ ভাই আমি অনেক কল দিয়েছি কিন্তু কল ধরছে না,,,রিং হচ্ছে শুধু
তিথি আর তিশা ওকে খুঁজে,,,মায়রা আবিরের মায়ের পাশে বসে হাত ধরে বলে
মায়রাঃ আন্টি ঠিক আরুকে পাবেন,,আরু হয়তো তিথির সাথে গেছে তিথিকে ও তো দেখছি না অনেক ক্ষন,,
মায়রা তিথির কথা বলে কারণ ভাবে এখন সবাই তিথিকে ও খুঁজবে,,,
তিথি বাহির থেকে খুঁজে এসে আবিরকে বলে
তিথিঃ আরু কোথাও নাই,,,
হুট করে তিথির আওয়াজ শুনে সামনে তাকিয়ে দেখে তিথি,,মায়রার অবস্থা তখন খারাপ হয়ে যায়,,ভুঁত দেখার মত অবস্থা তার এই মুহূর্তে,দাঁড়িয়ে যায় ভয়ে,,,
মায়রাঃ তুমি এখানে.??
তিথিঃ কেন আমি কোথায় যাবো?
মায়রাঃ না মানে ভেবেছি আরু তোমার সাথে তাই,,,(কিছু টা ভয়ে বলে উঠে)
তিথিঃ আরু আমার সাথে নাই ওকে তো খুঁজছি সে তখন থেকে পাচ্ছি না,,,
মায়রা এক পাশে গিয়ে দাঁড়ায় আর ভাবতে থাকে সে তাহলে কাকে মেরেছে
মায়রাঃ(তিথি যদি এখানে হয় তাহলে আমি কাকে মেরে ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছি??তাহলে কি সেটা আ,,,রু নো নো এইটা হতে পারে না শিট কি করলাম আমি,,,আবির যদি জানে একটু ও যে আরুকে আমি,, না না আবির আমাকে মেরে ফেলবে,,,)
মায়রা প্রচুর ভয় পেয়ে যায় ঘামতে থাকে প্রচুর,,,,হাত পা কাঁপতে থাকে তার যে সে কি না ভুল করে ফেলেছে,,,খেয়াল করে তিথির শাড়ি আর আরুর শাড়ি সেম হওয়াতে এমন হয়েছে,,নিজে নিজের উপর রাগ তুলে সে যে কি করে ফেলেছে,,
তিথিঃ বাগানে দেখি আমরা
তিশাঃ আমিও সাথে চলি দাঁড়াও,,খাদিজা টর্চ লাইট নাও কিছু আর বাড়ির সব লাইট অন করো,,,
তিথি তিশা আর খাদিজা মিলে বাগানে খুঁজতে যায় টর্চ লাইট নিয়ে,,,পুরো বাড়ির বাগানের রাস্তার সব লাইট অন করা হয় চারপাশটা আলো হয়ে যায় অনেক,,, বাগান খুঁজে ও আরুকে পাওয়া যায় নাই,,,
তিশাঃ আরু তো কোথাও নাই,,,
খাদিজাঃ ভাবিমনি আমরা বাড়ির পিছনে একবার দেখে আসলে ভালা হয়,,,
তিথিঃ এতো রাতে বাড়ির পিছনে কেন যাবে সে?
তিশাঃ একবার চেক করে আসি অন্তত,,,
তারা তিন জন বাড়ির পিছনে যায়,,লাইট মারে অইখানে তিথির পায়ের নিচে ফোন,,,তিথি পা টা সরিয়ে দেখে ফোন কিন্তু রক্ত লাগানো,,
তিথিঃ তিশা ফোন তাও আবার রক্ত
তিশা ফোনটার দিকে টর্চ মেরে বলে
তিশাঃ এইটা তো আরুর ফোন,,,,
খাদিজা একটু সামনে যায় খুঁজতে,,,
খাদিজা একটা চিৎকার দেয়,,

খাদিজাঃ ছোট আপ্পায়ায়ায়ায়া
তিশা আর তিথি দৌড়ে যায় গিয়ে দেখে আরিশা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে যায়,,মাথা থেকে প্রচুর পরিমাণ রক্ত আর রক্ত,,,তিথি আরিশার পাশে বসে আরিশার মাথা টা কোলে নিয়ে বসে পড়ে
তিথিঃ আরু এই আরু কি হইছে আরু প্লিজ উঠো,,
তিশাঃ খাদিজা তাড়াতাড়ি গিয়ে সবাইকে খবর দাও,,,
খাদিজা দৌড়ে যায় গিয়ে সবাই কে বলে
খাদিজাঃ ছোট আপ্পা বাড়ির পিছনে পড়ে আছে রক্তাক্ত অবস্থায়,,মাথা থেকে অনেক রক্ত যাচ্ছে
কথাটা শুনেই যেন সবাই থমকে যায়,,আবিরের মা তো তো পুরো বরফ হয়ে যায়,,আহাদ আমান আবির ওরা সবাই দৌড়ে যায়,,সবাই গিয়ে দেখে তিথি আরিশাকে ডাকছে,,,তিশা হাত ধরে চেক করে বলে
তিশাঃ তিথি তাড়াতাড়ি আরুকে মেডিকেল নিয়ে যেতে হবে,,ওর শ্বাস এখনও চলছে,,,
আবির এসেই তার বোনকে এমন দেখে যেন নিজের মধ্যে আর নেই,,,ফুলের মত বোনটা তার আজ রক্তে মেখে শুয়ে আছে,,আহাদ তো বসে পড়ে,,,
আহাদঃ আরু এই আরু কি হইছে তোমার?দেখো আমি আসছি প্লিজ চোখ খুলো প্লিজ,,,
তিশাঃ আহাদ এখন সময় নষ্ট করার মত সময় হাতে নাই আরুর শ্বাস এখনও আছে ওকে তাড়াতাড়ি মেডিকেল নিয়ে যেতে হবে,,,
আমানঃ আমি এখনই এম্বুলেন্সকে ফোন করছি আনতে,,
তিশাঃ আমান এম্বুলেন্স এর অপেক্ষা আমরা করতে পারবো না,,সময় খুব কম আমাদের ওকে এইভাবে নিয়ে যেতে হবে যত জলদি সম্ভব,,,
আহাদ আর আবির মিলে আরিশাকে কোলে তুলে নেয়,,কোলে নেওয়ার সাথে সাথে যেন অনেক গুলো রক্ত নিচে পড়ে,,
আবিরের মা তো মেয়ের এমন খবর শুনেই বেহুঁশ হয়ে যায়,,আবিরের বাবা তো নড়ছে ও না,,আদরের মেয়েটাকে এমন হবে কখনো ভাবে নাই,,,
আবির ড্রাইভ করছে অনেক ফাস্ট আর আহাদ সামনের সিটে আরিশার মাথা টা তিথির কোলে পিছনের সিটে সাথে তিশা ও,,,তিশা তার ডাক্তারি যত টুকু জানে তা কাজে লাগাচ্ছে,,,
তিশাঃপ্লিজ তাড়াতাড়ি ওর অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে
আহাদ তো যেন আজ নিজের মধ্যে নাই প্রিয় মানুষের এমন রক্তাক্ত অবস্থা যে কেউ সহ্য করতে পারে না,,,,আর আবির সে সবার সামনে শক্ত কিন্তু ভিতরে যেন ভেঙ্গে গেছে,,,
সবার যেন পুরো দুনিয়া টা উল্টোই গেলো,,,কেউ ভাবে নাই এমন হবে,,,
গাড়ি এতো ফাস্ট চালায় যে সামনের গাড়ি একটা সাথে অনেক জোরে ধাক্কা খায়,,, ট্রাফিক পুলিশ থাকায় আটকায় সামনে যেতে পারছে না,,,আবির তো বের হয়ে বলে
আবিরঃ প্লিজ আমাদের যেতে দেন,,আমার বোন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে,
ট্রাফিক পুলিশঃ রাস্তা কি তোর বাপের যে এতো ফাস্ট ড্রাইভ করিস,,,
আবিরঃ দেখেন আমার বোনের অবস্থা খুব খারাপ আমাদের এখন মেডিকেল যেতে হবে প্লিজ
ট্রাফিক পুলিশঃ আগে থানায় চল তারপর
আবিরের প্রচুর পরিমাণ রাগ উঠে,,ট্রাফিক পুলিশকে অইখানে কয়েকটা ঘুষি দিয়ে নাক থেকে রক্ত বের করে দেয়,,,
আবিরঃ আমার বোনের অবস্থা খারাপ কয়বার বলতেছি তোকে হ্যাঁ,,,
আহাদ নিচে নেমে এসে আবিরকে ধরে
আহাদঃ ভাই প্লিজ আমাদের এখন আরুকে নিয়ে যেতে হবে,,
আবিরঃ তোকে আমি পরে দেখে নিবো,,,
আবির ট্রাফিক পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে তাড়াতাড়ি দৌড়ে এসে আবার গাড়িতে উঠে ড্রাইভ শুরু করে,,কিছু ক্ষনের মধ্যে তারা মেডিকেল এসে যায়,,,মেডিকেল আসার সাথে সাথে ডাক্তার আবিরকে চিনায় তাড়াতাড়ি আরিশাকে আই সি ইউ তে নেয়,,,
আবিরের শার্টে রক্ত,,,নিজের বোনের রক্ত গুলো দেখেই কেঁদে উঠে
আবিরঃ আমার বোন,,আমার বোনের রক্ত
তিথি আবিরকে সামলায় নেয়,,,আবিরকে ধরে বলে
তিথিঃ কিছু হবে না আমাদের আরুর,,দেখবেন ঠিক হয়ে যাবে,,,
আহাদ তার বোন তিশাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠে
আহাদঃ আপু আমার আরু,,এতো কষ্টের পর ওকে পেয়েছি আপু আমি ওকে হারাতে পারবো না মরে যাবো আমি,,,
তিশাঃ আহাদ প্লিজ ধৈর্য দর সব ঠিক হবে ভাই,,,কিছু হবে না আরুর,,
তিথি আবিরকে বলে
তিথিঃ আপনি যদি এইভাবে ভেঙ্গে পড়েন তাহলে সবাই কে সামলাবে কে?প্লিজ নিজেকে শক্ত করুন দেখুন আহাদের অবস্থা খুব খারাপ,,,
আবির চোখের পানি মুছে আহাদের পাশে যায়,,,তিশা আবিরকে বলে
তিশাঃ আবির ভাই আমার ডাক্তারি অনেক টা শেষ প্লিজ ডাক্তার কে বলুন আমাকে সাথে নিতে,,,প্লিজ ভাই
আবির তাড়াতাড়ি একটা ডাক্তার এর সাথে কথা বলে ডাক্তার এর সাথে তিশা ও অনেক কিছু বলে অনেক রিকুয়েস্ট করার পর আই সি ইউতে তিশাকে ঢুকতে দেয় যেহেতু সে ও ডাক্তার,,
এই দিকে পুরো বাড়ির মানুষ এসে যায়,,,
আবিরের বাবাঃ আবির আমার মেয়ে?
আবিরঃ বাবা আই সি ইউ তে আছে সে,,,
আমানের মাঃ কি থেকে কি হয়ে গেলো? মেয়েটার বিয়ে হয়েছে মাত্র ২ দিন হয়েছে আর তার সাথে এতো বড় দূর্ঘটনা ঘটে গেলো,,,
আমানঃ মা প্লিজ কান্না করিও না সব ঠিক হবে,,,,
আবিরঃ বাবা মা কই?

আবিরের বাবাঃতোর মা বেঁহুশ হয়ে গেছে,,,বাসায় আছে আমি ডাক্তার কে কল দিয়েছে সে গেছে বাসায়,,
আবিরঃ মায়ের সাথে কে আছে তাহলে?
আবিরের বাবাঃ তিথির মা আছে আর তোর খালাম্মা ওরা সবাই,,,
সবাই চিন্তিত হয়ে যায়,,,অপেরশন হচ্ছে অইখানে কিন্তু এখানে সবার অবস্থা খুবই খারাপ,,,আবিরের বাবা এক পাশে গিয়ে কেঁদে ফেলে কখনো সহজে তার চোখ থেকে পানি পড়ে নাই কিন্তু তার আদরের কলিজার টুকরা মেয়ের এমন অবস্থা দেখে যে সে আর পারছে না নিতে,,,আবির তার বাবার হাতটি ধরে বলে
আবিরঃ কিছু হবে না বাবা,,
বাবা হুট করে জড়িয়ে ধরে আজ যেন আবিরের কাঁধ তার বাবার জন্য অনেক কিছু,,,,ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে উনি,,,
আবিরের বাবাঃ আমার পরীটাকে এনে দে আবির,,,ওকে আমি হারাতে পারবো না,,,মরে যাবো আমি আমার পরীকে ছাড়া,,,,আমার মেয়েটা কত ব্যাথা পেয়েছে আল্লাহ জানে,,যে মেয়েকে সামান্য টুকু ব্যাথা পেতে দিতাম না আজ সে কত ব্যাথা পেয়েছে কে জানে,,,
আবিরঃ বাবা প্লিজ নিজেকে সামলাও,
আবিরের বাবাঃপ্লিজ আমার মেয়েকে এনে দে আমার যা কিছু আছে সব কিছুর বিনিময়ে হলে ও আমার মেয়েকে এনে দে আবির,,,
আবির নিজের চোখে পানি টুকু পারছে না ধরে রাখতে তবুও রেখেছে শুধু মাত্র নিজের বাবাকে সামলাতে,,,তার বাবা এইভাবে তাকে জড়িয়ে ধরে কাদবে কখনো কল্পনা করে নাই,,,আরু যে আবির তার বাবার কলিজার টুকরা,,,,
তিথি আজ সবাই কে সামলাছে চোখে পানি টুকু মুছে সবাই কে সাহস দিচ্ছে,,,আহাদের পাশে গিয়ে বসে
তিথিঃ আহাদ প্লিজ ভেঙ্গে পড়িও না,,তোমার আরু ঠিক সুস্থ হয়ে যাবে,,,
আহাদঃ ভাবি তুমি তো জানো কত কিছুর পর ওকে পেয়েছি,,,বিশ্বাস করো ভাবি আমি পারছি না আর আমার আরুকে এমন দেখে পারছি না ঠিক থাকতে,,,অনেক ভালোবাসি আমি ওকে ভাবি অনেক,,,অনেক অপেক্ষার পর আমি তাকে পেয়েছি কিন্তু আজ আমার আরুর এমন অবস্থা,,,
তিথিঃ আহাদ এখন শুধু মাত্র আল্লাহ পারে আমাদের আরুকে সুস্থ করতে প্লিজ আল্লাহর কাছে চাও ধৈর্য হারাইও না,,,
সবাই যেন ভেঙ্গে পড়ে আজ,,অনেক টা সময় হয় তবুও ডাক্তার বা কেউ এখনও বের হয় নাই,,,
এইদিকে,,
আবিরের মায়ের হুঁশ ফিরে আরুর কথা বলেই কেঁদে উঠে
আবিরের মাঃ আমার আরু,,আমি আরুর কাছে যাবো আমাকে নিয়ে যাও,,,
তিথির মা খালাম্মা ওরা কেঁদে দেয় এমন দেখে আবিরের মায়ের,,,
খালাম্মাঃ আপ্পা প্লিজ শান্ত হও কিছু হয় নাই আরুর আরু ঠিক আছে,,,
আবিরের মাঃ মিথ্যা বলিস না আমি জানি আমার মেয়ে ঠিক নাই একদম মিথ্যা বলবি না,,,
কেউ আবিরের মাকে শান্ত রাখতে পারছে না,,,অনেক জিদ করছে সে মেডিকেল যাওয়ার,,,অনেক জোর করে বিদায় তাকে নিয়ে খালাম্মা আর তিথির মা নিয়ে যায়,,
এইদিকে,,,
সবাই অনেক অপেক্ষা করছে পুরো ৪ ঘন্টা হয়ে যায় এখনও কেউ আই সি ইউ থেকে বের হয় নাই,,,আবিরের বাবার অবস্থা খুব খারাপ প্রেশার বেড়ে যায় তার তাড়াতাড়ি তাকে অন্য একটা কেবিনে ভর্তি করে,,,
আর আহাদের অবস্থা তো পুরো খারাপ,,,ভয়ে যেন সে শেষ তবুও সে বিশ্বাস রেখেছে তার আরু ঠিক সুস্থ হয়ে তার কাছে ফিরে আসবে,,,,
পুরো পরিবার আজ চিন্তিত,,,আর তিথি সবাই কে শান্তনা দিলেও সে নিজে অনেক কান্না করছে,,,আবিরের দিকে তো তাকানোই যাচ্ছে না বেচারা পারছে না মন খুলে কাঁদতে,,,একদিকে তার আদরের বোন তার মধ্যে তার বাবা ও ভর্তি হতে হইছে,,,
এইদিকে,,
মায়রা ভয়ে তার রুমে বসে আছে,,,
মায়রাঃ এই আমি কি করলাম?মুখ না দেখেই কেন মারলাম,,এতো বড় ভুল কিভাবে হলো,,,এইসব কিছু হয়েছে অই তিথির জন্য তার কারনে আজ আরুকে মরতে হইছে,,,আবির যদি সামান্য টুকু জানে যে এইসব কিছুর পিছনে আমি তাহলে সে আমাকে খুন করে ফেলবে আমাকে ঘৃনা করবে,,আবির তার বোনের জন্য সব কিছু করতে পারে আর আমি কিনা না না আমি কিছু করি নাই সব কিছু অই তিথির জন্য হইছে,,কেউ জানবে না যে এইসব কিছুর পিছনে আমি,,,হুম আজকেই আমি চলে যাবো লন্ডনে,,,
মায়রা অনেক ভাবতে থাকে,,,
মায়রাঃ না এখন যাওয়া যাবে না যদি যাই তাহলে সন্দেহ হবে সবার আমার উপর,,,আমি নরমাল থাকবো আমি কিছু জানি না,,,আমাকে মেডিকেল যেতে হবে দেখতে হবে আরু কি বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে,,আরু মরে গেলে আমার জন্য ভালো কারণ সে আমার নাম টা বলবে না সবার কাছে,,,হুম আমাকে তাড়াতাড়ি যেতে হবে আরু যাতে না বাঁচে তা দেখতে হবে,,,সরি আরু আমার কিছু করার নাই তুমি করে আসলে আর তিথির জায়গায় তুমি আজ,,,,
মায়রার সব কথা খাদিজা শুনে যায়,,ভয়ে তার অবস্থা খারাপ তাড়াতাড়ি সে লুকিয়ে যায় এই ভেবে যে যাতে মায়রা বুজতে না পারে যে খাদিজা সব শুনেছে,,,
এইদিকে,,,
অনেক ক্ষন পর ডাক্তার আর তিশা বের হয় আই সি ইউ থেকে,,,সবাই তাড়াতাড়ি আসে তাদের সামনে
আহাদঃ আপু আমার আরু?
সবাই তাকিয়ে আছে ডাক্তার রা কি বলবে,,ভয়ে তো অবস্থা শেষ
ডাক্তারঃ দেখুন উনার অবস্থা অনেক খারাপ,,,অপেরশন ঠিক মত হয়েছে কিন্তু উনার মাথায় রক্ত জমাট হয়ে গেছে,,,উনার বাঁচার আশা অনেক কম,,,
কথাটা শুনেই যেন সবাই থমকে যায়,,,আহাদ তো বসে পড়ে,,,
ডাক্তারঃ ৭২ ঘন্টায় হুঁশ না ফিরলে আমার কিছু বলতে পারছি না,,,যেহেতু মাথায় আঘাত টা বেশি লেগেছে,,,
তিশাঃ হ্যাঁ আরিশাকে কেউ মাথায় আঘাত করে,,ছাদ থেকে পড়ে যাওয়াতে এমন হয় নাই ওর মাথায় এমন কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে যে মাথায় রক্ত জমাট হয়ে যায়,,,

আবিরঃ মানে???আরুক কেউ মেরেছে?
তিশাঃ হ্যাঁ আবির ভাই,,,আরিশা ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে এতো টা রক্তাক্ত হয় নাই,,তাকে কেউ মাথার পিছন থেকে আঘাত করে যার কারনে তার এমন অবস্থা,,,ছাদ থেকে পড়াতে তার পায়ের হাড্ডি শুধু ভেঙ্গে এর বেশি কিছু না,,,কিন্তু মাথায় এমন কিছু দিয়ে আঘাত করা যার কারনে আরুর এমন অবস্থা,,,,
সবাই এই কথা শুনে অবাক যে কেউ আরুকে মারতে চেয়েছে,,,
আহাদঃ কেউ কেন আরুকে মারতে চাইবে আপু,,,
তিশাঃ তা জানি না আহাদ,,কিন্তু কেউ চেয়েছে আরুকে মেরে ফেলতে,,,
তিথিঃ তিশা আরু ঠিক হয়ে যাবে তো?
তিশাঃ তিথি আরুর হুঁশ আসলে হবে,,,যদি তার জ্ঞান না ফিরে তাহলে,,,,,,,,,!
এই কথাটা যেন আবিরকে ভেঙ্গে দেয়,,,
রাত ২ টা বাজে কারো চোখে ঘুম নাই,,,,সবার অবস্থা অনেক টা খারাপ,,
মেডিকেলে নামাজের ব্যবস্থা আছে মেয়েরা গিয়ে অযু করে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে থাকে,,আবির আহাদ আমান আকাশ আমানের বাবা ওরা সবাই মিলে ও নামাজে দাঁড়ায়,,সবার দোয়া আজ আরিশা,,,,
তিথিঃ (প্লিজ আল্লাহ আরুকে ঠিক করে দাও,,,আল্লাহ এতো বড় অন্যায় করিও না আল্লাহ মেয়েটার জীবন মাত্র শুরু হলো,,,,,)
এইদিকে,,
আবিরঃ (আল্লাহ দরকার হলে আমার প্রাণ নিয়ে নাও তবুও আমার বোনকে বাঁচিয়ে দাও আল্লাহ,,,আমার বোন আমার জীবনের চেয়ে প্রিয় আল্লাহ,,,আমার বোনকে ফিরিয়ে দাও আল্লাহ,,)
আহাদের চোখে পানি পড়ছে মোনাজাতে,,সে পুরো ভেঙ্গে পড়ে তবুও সে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে থাকে তার ভালোবাসার মানুষের জন্য,,,,প্রিয় মানুষকে হারানোর ভয় যে সব চেয়ে কষ্ট,,,,
নিজের চেয়ে বেশি যাকে আমরা ভালোবাসি তাকে হারানোর ভয়টুকু যে আমাদের তিল তিল করে শেষ করে,,
চলবে,,,,,