ঘৃণার মেরিন

ঘৃণার মেরিন Season 3 !! Part- 17

মেরিন : ৪জনকে মেরে ফেলতে পারতাম… ধ্যাত… যাই অফিসে যাই…
মেরিন অফিসে গেলো।
নীড় : কি হলো অফিসে কেন তুমি?
মেরিন : আমার অফিস আমার ইচ্ছা । huh…
নীড় : পাগলি… আসো বসো…
মেরিন : আপনি না বললেও বসবো । দেখি সরেন।
নীড় : always atom bomb হয়ে থাকাটা কি জরুরী?
মেরিন : হ্যা… 📢
নীড় : আমার কান…
জন : may i come in???
নীড় : come…
জন : হ্যালো স্যার … হ্যালো ম্যাম…
মেরিন : আপনি কেন এলেন স্যার ? আপনি ওখানেই settle হয়ে যেতেন…
জন : ম্যাম আপনিই তো…
মেরিন : কি আমিই তো…
নীড় ইশারা দিয়ে বলল চুপ থাকতে।
জন : sorry mam…
মেরিন : যাও গিয়ে কাজ করো। out…
জন : sure mam..
মেরিন : দারাও।
জন : জী ম্যাম…
মেরিন : তুমি এখন তোমার বাসায় যাও…
জন : কেন?
মেরিন : নিজের বাসায় মানুষ কেন যায়? relax করতে তো… তাইনা?
জন : জজজী ম্যাম…
মেরিন : তো যাও… আজকে আরাম করো।
জন : no mam… not needed…
মেরিন : আমি বলেছিনা…
জন : ok mam …
জন বাধ্য হয়ে চলে গেলো।

নীড় : ভালো কথাটাও কি খারাপভাবে বলা জরুরী?
মেরিন : 😒।
নীড় : অনেকক্ষন তো হলো। এখন বাসায় যাও। শরীরটা তো ভালোনা…
মেরিন : কেন আমার কি ক্যান্সার হয়েছে না এইডস হয়েছে ?
নীড় : ওরে বইন তুই থাক অফিসে। বাসায়ও যেতে হবেনা। 😤।
মেরিন মনে মনে : কে জানে আমার কি হয়েছে? আমি মরে গেলে নীড়কে কিভাবে ভালোবাসবো…
নীড় মনে মনে : সবই তো ঠিক আছে। কিন্তু মামিমনি চিন্তায় ফেলে দিলো । কি যে করি? বুঝতে পারছিনা… কোথায় গেলো মামিমনি??? কিছু বুঝতে পারছিনা… damn it…
কাজ করতে করতে tired হয়ে মেরিন ঘুমিয়ে পরেছে। নীড় তাকিয়ে দেখে মেরিন ঘুম । নীড় মুচকি হাসলো। নীড় কোলে করে গাড়িতে করে বাসায় নিয়ে গেলো। মেরিনকে শুইয়ে দিলো। নিচে নামলো।
নীলিমা : নীড়…
নীড় : হ্যা মামনি…
নীলিমা : ভাবিকে নাকি পাওয়া যাচ্ছেনা ?
নীড় : হ্যা মামনি… মামিমনিকে কোথাও পাচ্ছিনা… কোথায় যে গেলো…
নীলিমা : বন্যা কিছু…
নীড় : না মামনি মেরিন কিছু করেনি। অযথা মেরিনের ঘাড়ে দোষ দিওনা …
নীলিমা : আরে আমি দোষ দিচ্ছিনা। বন্যার রাগ তো আমরা সবাই জানি।
নীড় : কাজ আছে অফিসে গেলাম।

গাড়িতে…
নীড়ের ফোন বাজলো। দেখলো সেতু করেছে। নীড় ধরলো না । সেতু লাগাদার দিতেই লাগলো। বাধ্য হয়েই নীড় ধরলো।
নীড় : হ্যালো আন্টি …
সেতু : দেখা করতে পারবে ?
নীড় : না আমি একটু busy আছি …
সেতু : তা তো থাকবেই… তোমার তো just মামিমনি… আমার তো বোন… খুব তো বলছিলে যে তোমার মেরিন কিছুই করেনি… দেখে যাও …
নীড় : আমার মেরিন কিছু করেনি তো করেনি… আর কোনো কথানা…
সেতু : যা দেখাতে চাইছি তা দেখে তো যাও…
নীড় : মেরিনের বিপক্ষে কোনো কিছুই দেখতে চাইনা…
সেতু : মেরিনের বিপক্ষে নাই বা দেখলে তোমার মামিমনির পক্ষে তো কিছু দেখবে? ১টা বার আসো প্লিজ…
নীড় : ok … আসছি।
নীড় গেলো।
.
নীড় : কি হয়েছে কি?
মনির : কিছুই বলবোনা just এই ভিডিওটা দেখো।
বলেই মনির ১টা ভিডিও প্লে করলো । যেখানে দেখা যাচ্ছে যে কনিকা হাত-পা বাধা আহত অবস্থায় বসে আছে ।
আর বলছে : ছেরে দে… মেরিন… ছেরে দে… মেরিন…
আসলে কনিকা বলছে : ছেরেদে… মেরিন তোদের কে ছারবেনা…
এটাকে edit করে ওরা এমন বানিয়েছে।
সেতু : দেখেছো তোমার “মেরিন” কি করেছে…?
নীড় : না মেরিন এসবের কিছুই জানেনা। আমাকে বলেছে…
সেতু : ও বলল আর তুমি বিশ্বাস করলে?
নীড় : হ্যা করলাম ।
মনির : ওকে কি বিশ্বাস করা যায় ?
নীড় : হ্যা যায়। কেন যাবেনা?
নীরা : ভালো লাগলো এটা দেখে যে তুমি মেরিনের সাথে সুখী আছো …
নীড় : হামম। অনেক সুখী আছি। কারন মেরিন আমাকে দুঃখের কোনো কারন দেয়নি…
সেতু : এতোদিন আমার মেয়ের সাথে প্রেম করে এখন হঠাৎ এতো ভালোবাসা?
নীড় : মেরিনের প্রতি নীড়ের ভালোবাসা হঠাৎ নয় অনেকদিনের। কেবল অভিমানের নিচে চাপা পরেছিলো। anyway আসছি।
সেতু : তুমি আরেকটাবার মেরিনকে জিজ্ঞেস করো।
নীড় : মেরিনের এক কথা ২বার বলার প্রয়োজন হয়না।
সেতু : তুমি ভালোবাসায় অন্ধ । কিন্তু আমরা না… কনা তো আমার বোন। তাই আমি বুঝি আমার মনটা কেমন ছটফট করছে। ১টাই তো কলিজার টুকরো বোন আমার। কষ্টই পেয়ে গেলো। যদি ১দিনের জন্যে মামিমনিকে ভালোবেসে থাকো তবে সেই ভালোবাসার দোহাই … তোমার মামিমনির স্নেহের দোহাই… তুমি কিছু করো…
নীড় : করছি… আমি লোক লাগিয়ে রেখেছি… ওরা যেখান থেকেই হোক মামিমনিকে খুজে বের করবে…
মনির : মেরিন বন্যা ওর নাম… ওর চাল বোঝা অসম্ভব… ও যদি লুকিয়ে রাখে তোমার কেন তোমার মতো ১০০জন হলেও খুজে পাবেনা।
নীড় : মেরিন আমাকে মিথ্যা বলতে পারেনা…
নীরা : যদি না পারে তবে ১টা বার narco test করাও…
নীড় : narco rest?
মনির : হ্যা narco test…
নীড় : কোনো দরকার নেই । মেরিনের মুখের কথাই আমার জন্য।
সেতু : কিন্তু আমার জন্য নয়। আমার বোনকে আমি চাই। যদি তুমি কিছু না করো তাহলে press conference করতে বাধ্য হবো। তখন বাচিও বউয়ের ইজ্জত…
নীড় : …
মনির : narco test করাও। সব সত্যি বলে দিবে ।
নীড় : ও কোন অপরাধী নয় যে হসপিটালে নিয়ে narco test করাবো।
মনির : হসপিটালে নেয়া সম্ভবও নয়। কারন ও মেরিন বন্যা । তাই বাসাতেই করতে হবে
। এই truth serum use করে।
নীড় : …
মনির bottle টা নীড়ের পকেটে ঢোকালো।

মনির : বউকে আবার দুনিয়ার সামনে মায়ের খুনী না বানাতে চাইলে করাও । যদি মেরিন না করে থাকে তাহলে তো আর কোনো ঝামেলাই নেই।
নীড় চলে গেলো ।

নীরা : কি মনে হয় নীড়কি ওই বিষটা মেরিনকে খাওয়াবে?
সেতু : খাওয়াবে খাওয়াবে… নীড় এখন মেরিনের প্রেমে পাগল… তাই খাওয়াবে ।
নীরা : আচ্ছা মেরিনের কিছু হয়ে গেলে আমরা ফাসবো না?
মনির : না… নীড় ফাসবে ।
নীরা : নীড় আমাদের কিছু করলে?
সেতু : আমরা কি আর প্রকাশ্য থাকবো? আড়ালে থাকবো ।
নীরা : নীড়ের কাছে কি আমাদের খুজে পাওয়া সম্ভব নয়?
মনির : তা হয় তো নয় । কিন্তু তখন মেরিনের চিন্তায় মগ্ন থাকবে। আর তাছারাও ও নীড় মেরিন না। যে বিষাদে থাকলেও প্রতিশোধ ভুলবে না …
সেতু : সবই ঠিক আছে । কিন্তু নিলয়… ও তো আবার মেরিনের পাগল প্রেমিক…
নীরা : না মামনি… নিলয় নীড়কেই দোষী মনে করবে…
.
ওদিকে…
অনেক ভাবনা চিন্তা করে নীড় বাসায় গেলো। কোনো decision নিতে পারেনি। রুমে ঢুকতেই মেরিন দৌড়ে এসে নীড়কে জরিয়ে ধরলো। এরপর মুখ তুলে নীড়ের সারামুখে ইচ্ছামতো ভালোবাসার পরশ দিয়ে আবার নীড়ের বুকে মুখ লুকালো।
মেরিন : i love u … love u love u love love u love love u…
নীড় মেরিনের মাথায় কিস করলো ।
মেরিন : যান fresh হয়ে নিন… আপনার জন্য ১টা surprise আছে।
নীড় মেরিনের কপাল থেকে চুলগুলো সরিয়ে
বলল : কি?
মেরিন : উফফ surprise কি বলতে হয়? যান তো।
নীড় : যাচ্ছি বাবা যাচ্ছি…
নীড় fresh হয়ে এলো । এসে দেখে মেরিন খাবার নিয়ে বসে আছে।
মেরিন : আসুন আসুন আসুন…
নীড় গিয়ে মেরিনের পাশে বসলো। এরপর মেরিনকে কোলে বসালো। প্লেটের দিকে তাকিয়ে দেখলো চিজি নান & ঝাল ফ্রাই । নীড় মুচকি হাসলো। কারন এটা নীড়ের favorite dish…
মেরিন : নিন হা করুন।
নীড় মুচকি হেসে নিজেও একটু নিয়ে মেরিনের মুখের সামনে তুলে ধরলো ।
নীড় : আগে তুমি…
গন্ধে মেরিনের গা গুলিয়ে আসছে। তাও মুখে নিলো ।
মেরিন : এখন আপনি খেয়ে নিন…
২জন মিলে মিশে খেতে লাগলো ।
মেরিন : জানেন আমার কি মনে হচ্ছে? আমার মনে হচ্ছে আমি মরে যাবো। আর তাই আপনার কাছ থেকে ভালোবাসা পাচ্ছি… শুনুন না… আমি মরে গেলে প্লিজ নীরাকে বিয়ে করবেন না । অন্য যাকে ইচ্ছা করবেন। তা না হলে আমি মরেও আত্মা হয়ে ঘুরে বেরাবো। যাই হোক আপনার ভালোবাসা সত্যি সুন্দর…
নীড় : আমার ভালোবাসা? আমি কবে ভালোবাসলাম? তোমার ভালোবাসা নেয়া থেকেই ফুরসত পাইনা… ভালোবাসার তো সুযোগই পাইনা…
মেরিন : কে বলেছে? এটাই আমার কাছে অনেক অনেক অনেক বেশি ।
নীড় : তাই ?
মেরিন : হামম। শুনুন…
নীড় : বলো…
মেরিন : আজকেও ভালোবাসবেন রোজকার মতো… actually রোজকার থেকে বেশি… 🙈🙊🙈🙊🙈🙊…
নীড় : আজকে আমার বউটার কি হয়েছে হামম?
মেরিন : কিছুনা। 😁।
মনে মনে : যদি কালকে রিপোর্টে উল্টা পাল্টা কিছু পাই । মরে যাওয়ার মতো… তাহলে তো আপনাকে মনের মতো ভালোবাসার সুযোগটাই পাবোনা। সেই শোকেই যদি heart attack করি। তারথেকে ভালো আপনার ভালোবাসা বুকে জরিয়ে মরবো…

পরদিন…
মেরিন রিপোর্ট আনতে গেলো । হাতে নিয়ে মেরিনের হাত কাপছে । না জানি কি দেখবে। সোজা মিলার কাছে নিয়ে গেলো ।
মেরিন : এই রিপোর্টগুলো দেখে বলো যে আমার কি বড় রোগ হয়েছে ? যতোবড় রোগই হোক আমাকেই বলো।
মিলা : কুল কুল।। let me see…
মিলা রিপোর্টগুলো দেখলো । দেখে মুচকি হাসলো ।
মেরিন : হাসছো কেন ?
মিলা : কারন মিষ্টি খাবো । তুমি মা হতে চলেছো।
মেরিন : ইশ মিথ্যা কথা …
মিলা : একদম সত্যি । এই দেখো। সবকটাতেই পজিটিভ । তুমি মা হতে চলেছো ।
মেরিন : সসসত্যি ?
মিলা : হামমম।
আনন্দে মেরিনের চোখে পানি চলে এলো । কোনোরকমে হসপিটাল থেকে বেরিয়ে পাগলের মতে লাফাতে লাগলো খুশিতে …
মেরিন : yeah… আমি মা হতে চলেছি … thank u thank u আল্লাহ। আমি কথা দিলাম আমি অনেক ভালো আম্মু হবো। মিসেস খানের মতো বাজে আম্মু হবোনা … এখনই নীড়কে বলি … না না special ভাবে বলবো। আর বলবো যে আর নয় ঘৃণার খেলা । এখন থেকে ভালোবাসা আর ভালোবাসা।
.
ওদিকে…
নীড় : আমি মেরিনকে পুরো বিশ্বাস করি… ও যখন বলেছে ও জানেনা মামিমনি কোথায় তাহলে হয়তো সত্যিই বলছে। আজও তো মামিমনিকে খুজলাম পেলামনা…. আচ্ছা মেরিনতো নিজেই বলে যে ওকে ও নিজেই বোঝেনা … আমি তাহলে কিভাবে…
না নীড় যে তোকে এতো ভালোবাসে এতো বিশ্বাস করে তাকে আর ধোকা দিসনা।
নীড় সেই truth serum এর ছোট্ট বোতলটা পানিতে ছুরে ফেলতে নিলো । তখন কনিকার অবস্থাটা ওর মাথায় এলো । ছোটথেকে কনিকার সাথে কাটানো সেই স্নেহের মুহুর্ত গুলো কল্পনা করতে লাগলো । সেই সাথে মেরিনের অপমান হওয়ার কথা।
নীড় : মেরিনের রাগ উঠলে তো ও যাতা করতে পারে … আল্লাহ পথ দেখাও … ১দিকে ভালোবাসা আরেকদিকে স্নেহ…. কাকে বেছে নিবো … ১টা বার এই narco test করলে কেমন হয় ? আগে দেখি এর কোনো side effect আছে কিনা …
নীড় ইন্টারনেটে দেখতে লাগলো। দেখলো নেই …
নীড় : sorry বনপাখি … আমাকে করতে হবে এমন … তোর ওপর অবিশ্বাস করে নয় তোকে ভালোবেসে আমাকে এমনটা করতে হবেরে।

রাতে…
নীড় ice cream নিয়ে বাসায় ফিরলো।
মেরিন : নী…ড়… জান…
নীড় : কি ব্যাপার এতো happy যে?
মেরিন : হামম। শুনুন…
নীড় : শুনবো তবে fresh হয়ে এসে। ততোক্ষনে তুমি ice cream serve করোনা । i badly want to have this…
মেরিন : ok…
নীড় fresh হতে হতে মেরিন নিহাল-নীলিমাকে ice cream দিয়ে নিজেদের জন্যেও নিয়ে এলো। … নীড়ও বেরিয়ে এলো fresh হয়ে ।
মেরিন : জানেন আ…
নীড় : ১গ্লাস পানি দাওনা প্লিজ…
মেরিন : হামম।
মেরিন পানি ঢালতে ঢালতে নীড় মেরিনের ice cream এ poison টা মিশিয়ে দিলো।
মেরিন : এই নিন পানি। আচ্ছা আপনার চোখ এমন লাগছে কেন? মনে হচ্ছে কান্না করেছেন? কি হয়েছে?
নীড় : ইশ কান্না করবো কেন? আজকে তো আমি happy …
মেরিন : সত্যি? জানেন আজকে আমিও happy …
নীড় : এখন আসো ice cream খাবে… তোমার favorite flavor …
মেরিন : হামম। কিন্তু তার আগে…
নীড় :কোনো কথানা…
নীড় মেরিনকে বসিয়ে কাপা কাপা হাতে মেরিনকে ice cream খাওয়াতে লাগলো। পুরোটা শেষ করলো।
মেরিন : বাপরে আজকে এতো ভালোবাসা। যাই হো…
কথাটা complete করতে পারলোনা । মেরিনের গলা-বুক জ্বলতে লাগলো…
.
((( আচ্ছা আমার মনে হয় অনেকে মেরিনের মা হওয়া নিয়ে confusion … গল্পটা ভালোমতো পরলে বুঝে যাবেন… 😅😅😅…)))
চলবে…