আড়ালে ভালোবাসার সংসার

আড়ালে ভালোবাসার সংসার !! Part- 17

বিথী তো কেঁদেই যাচ্ছে বিধান বেচারা মাথা চাপড়াচ্ছে। বিথী কাঁদছে ইফতেখারের বলা শেষ কথায়। ঐ যে বলেছিলো বিথী বিধানকে বশ করে রেখেছে।
বিধানঃ আল্লাহ বুঝি না এমন করে কাঁদার কি হয়েছে!
বিথীঃ কেঁদেই যাচ্ছে।
বিধানঃ এই মেয়ে! একদম চুপ!
বিথীঃ নিশ্চুপ।
বিধান মনে মনে একটু শান্তি পেলো বিথীর চুপ করায়। কিন্তু বিথী বিধানের হঠাৎ ধমকে কিছুটা বিচলিত হয়ে যাওয়ায় কান্না থামিয়ে দিয়েছিলো। তাই হুশ ফিরতেই আবার সেই কান্না।
বিধানঃ উফফ! বিথী এবার না থামলে খবর আছে বললাম! ( রেগে )
বিথী এ কথায় জোরে জোরে কান্না করা থামালেও ফুপিয়ে কাঁদছে। বিধান তো এই আওয়াজে আরও বিরক্ত হচ্ছে। যাকে বলে মহাবিরক্ত। বিধান এবার যা করলো বিথীকে অবাকের সপ্তম পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। বিথীর গোলাপি ঠোঁট জোড়া এখন বিধানের দখলে। ঘটনার আকস্মিকতায় বিথী থ হয়ে গেলো। বুঝতেই পারলো না কি থেকে কি হলো। যখন বিথীর জ্ঞান হলো ও কি করছে তখন ওর দম বন্ধ হয়ে আসছে কিন্তু বিধানকে সরাতে পারছে না। কারণ বিধান বিথীর দুই হাত বিধানের হাত দ্বারা বিছানার সাথে চেপে ধরে রাখছে। কিছুক্ষণ পর ছাড়া পেতেই বিথী জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। আর বিধান বিথীর দিকে তাঁকিয়ে বাকা হাসি দিলো।
বিথীঃ আমাকে মেরে ফেলার প্ল্যানিং করেছিলেন নাকি! আল্লাহ আর একটু জলে দম বন্ধ হয়ে মারা যেতাম। ( রেগে বলল )
বিধানঃ উফফফ জান তুমি রেগে গেলে না তোমাকে রেড চেরির মতো লাগে। ইচ্ছে করে এক কামড়ে খেয়ে ফেলি! ( ঠোঁট কামড়ে বলল )
বিথীঃ এই লোকটার কি জ্বর টর আসলো নাকি কি সব বলছে! ( মনে মনে )
বিধানঃ কি গো মায়াবীনি কোথায় গায়েব হলেন?
বিথীঃ আচ্ছা আপনি ঠিক আছেন তো এমন অদ্ভুত আচারণ করছেন! জ্বর টর আসছে নাকি? ( অবাক হয়ে )
বিধানঃ জ্বর আসে নাই মাথা ঠিক হয়েছে। তোমাকে শাস্তি তো অনেক দিলাম। এবার তোমাকে আমার ভালোবাসায় রাঙাতে চাই! ( মনে মনে )
বিথীঃ কি হলো! বললেন না এমন করছেন কেন!
বিধানঃ তা বুঝার বয়স হয়নি তোমার বাবুই পাখি! ( বলে বিথীর গালে টুপ করে চুমু দিয়ে চলে গেলো )
বিথীঃ কি হলো আবার এই রাক্ষসটার! ভুতে টুতে ধরে নাই তো!
,
,
,
,
দুপুরের আগেই বিধানের মামা ইফতেখার ও তার পরিবার মিসেস চৌধুরীকে বলে চলে গেলেন তাদের বাড়ি। আর বিধান অফিসে এবং বিথী ভার্সিটিতে চলে গেলো। বিথীকে আজ বিধান ভার্সিটিতে দিতে গেলো। ভার্সিটিতে পৌঁছে বিথী নামতে নিলে বিধান টান দিয়ে আবার সিটে বসালো।
বিথীঃ কি হলো লেট হবো তো! ( অবাক হয়ে )
বিধানঃ আমাকে গুড বাই তো উইশ কর!
বিথীঃ ওহ গুড বাই! ( মুচকি হেসে )
বিধানঃ এভাবে তো সবাই গুড বাই উইশ করে কিন্তু হাসবেন্ড ওয়াইফের বাই তো স্পেশাল! ( বাকা হেসে )
বিথীঃ তো কিভাবে করে? ( বিরক্ত হয়ে )
বিধান টুপ করে বিথী ঠোঁটের কোণে যেখানে টোল পড়ে সেখানে আলতো করে চুমু দিয়ে দিলো। বিথী তো অবাক আর লজ্জাও পেলো কারণ ওর সাইডের ডোর খোলা। তাই তাড়াতাড়ি এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলো কেউ দেখে ফেলেছে কিনা।
বিথীঃ যাক বাবা সম্মান বাঁচলো! ( বুকে হাত দিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে )
বিধানঃ কি হয়েছে জান! এখন লেট হচ্ছে না নাকি আরে আদর নিতে ইচ্ছে করছে? ( ঠোঁট কামড়ে চোখ টিপ দিয়ে )
বিথীঃ বলি লাজ লজ্জা কি সব দান করেছেন নাকি! ( রেগে বলল )
বিধানঃ দেখো জান আমি কিন্তু আগেই বলেছি তুমি রাগ করলে তোমাকে পাকা চেরির মতো লাগে তারপরও তুমি রাগ করছো এখন আমি যদি খেয়ে ফেলি আমার দোষ দিতে পারবেনা!
বলে বিধান বিথীর একদম কাছে এসে পড়লো আর বিথী পিছুতে সিটে শুয়ে পড়লো।
বিথীঃ ধুররর! আপনার সাথে কথা বলাই বৃথা!
বলে এক ধাক্কায় বিধানকে সরিয়ে গাড়ি থেকে নেমে আসলো এবং কলেজে চলে যেতে লাগলো।
বিধানঃ বিথী! শুনে যাও! ( কার থেকে নেমে )
বিধানকে দেখে সবাই থমকে গেলো। কারণ বিধান বাংলাদেশের নামকরা ইয়াং বিজনেস ম্যানদের মধ্যে একজন। সবদিক দিয়েই বেস্ট হওয়ায় অনেক যুবতি নারীদেরই ক্রাস সে।
বিথীঃ কি? ( বিধানের কাছে এসে বলল )
বিধানঃ টেক কেয়ার এন্ড ছুটির পর আমি নিতে আসবো। কোনো প্রবলেম হলে কল দিয়ো। ওখেহ? ( বিথীর কপালে চুমু দিয়ে রোমান্টিক ভাবে বলল )
বিথীঃ হুম! ( লজ্জায় মাথা নিচু করে )
,
,
,
,
এরপর বিধান অফিসে চলে গেলো। আর বিথী কলেজে ঢুকতেই সবাই প্রশ্নের ঝড় তুলে ফেলছে। সবার একটাই প্রশ্ন বিধান কি বিথীর বয়ফ্রেন্ড! কারণ বিথী বিধানের বিয়ে হুট করে হওয়ায় কলেজে কেউ জানতো না বিথীর বিয়ের কথা আর সময় স্বল্পতার কারণে বিয়েতে মিডিয়া ডাকানো বা প্রেস কনফারেন্সও হয় নাই। সবার প্রশ্নের ঝড়ে বিথী কি বলবে বুঝতে পারছে না। তবে তিশা নামক একটা সুন্দরী ও অহংকারী মেয়ের কথায় বিথির রাগ তুঙ্গে উঠে গেলো। বিথী বিধানকে বিয়ে করার পর চুপচাপ হয়ে গেলেও ওর রাগ আসলে সীমাহীন যার প্রতিচ্ছবি সকালেও দেখা গিয়েছে।
তিশাঃ আরে তোমরা সবাই কি বলছো ওর কি বিধানের বউ হওয়ার যোগ্যতা আছে নাকি! না আছে রূপ না আছে টাকা! হবে বিধানের টাইম পাস এছাড়া এসব মেয়েরা আর কি হতে পারে! ( তাচ্ছিল্যের স্বরে )
বিথীঃ ঠাসসসস!
তিশা থাপ্পড় খেয়ে রাগে ফোপাচ্ছে।
তিশাঃ হাও ডেয়ার ইউ! ( ফোপাতে ফোপাতে বলল )
বিথীঃ আমার ডেয়ার কতটুকু তা তোমার অজানা নয়! আর তোমার সাহস কি করে হয় স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে বাজে বলার! বিধান চৌধুরীর ওয়াইফ আমি! ( রেগে চিৎকার করে )
তিশাঃ তোমাদের মতো মেয়েরা পারে কি বড়লোক ছেলেদের সাথে সম্পর্ক থাকার গুজব ছড়ানো ছাড়া! আচ্ছা তুমি যদি বিধানের ওয়াইফ হয়ে থাকো গিভ আস প্রুফ! রাইট গাইস!
সবাইঃ প্রুফ ইট! প্রুফ ইট!
বিথীঃ প্রুফ লাগিবে ওয়েট! ( বলে বিথী ফোন বের করে ওদের কাপ‍্যাল পিক দেখালো )
তিশাঃ বুল শিট! এই সব পিক তো তুমি ওর বউ না হলেও থাকতো আর তোমার মেকআপ কোন দিক দিয়ে বউয়ের মতো লাগছে! ডু ওয়ান থিং বিধানকে কল করে বলো কলেজে আসতে যদি তোমার হাজবেন্ড হয়ে থাকে এক কলেই চলে আসবে!

চলবে,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *