আড়ালে ভালোবাসার সংসার

আড়ালে ভালোবাসার সংসার !! Part- 04

তারপর বিধান নিজের বেডরুমে চলে গেলো। বেডরুমে যেয়ে দেখে বিথী হিজাব খুলছে কিন্তু বিথীকে দেখে ও ততটা অবাক যতটা তার নিয়ে আসা বস্তুটাকে।
বিথীর পাশে ছিলো ওর বাবার দেয়া উপহার যেটা কাল রাতে বিথী ভুলবশত ভেঙে ফেলেছিল।
,
,
বিধানঃ বিথী এটা কোথায় পেলো? এটা তো জোড়া লাগানোও যাবে না কারণ ভাঙা অংশগুলো কাল রাতেই রহিমা ফেলে দিয়েছিল! আর নতুন কোথা থেকে কিনবে এটা তো অনেক এক্সপেনসিভ! (মনে মনে)
বিথী হিজাব খুলে ওয়াসরুমে যায় ফ্রেশ হতে আর বিধান সেই সোপিস নিয়ে চেক করে দেখে এটা ব্র্যান্ড নিউ।
তারপর বিধানের একটা কল আসায় ও ব্যালকনিতে চলে যায়। ফলে বিথী ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে ভাবে ঘরে কেউ নেই।
,
,
ঠিক তখনই বিথীর মোবাইলে দিপ্তর কল আসে। দিপ্ত বিথীর বেস্ট ফ্রেন্ড এবং বড়লোক পরিবারের ছেলে তবে একদম অহংকার করে না। বিথীর একটা বাজে অভ্যাস ও সবসময় স্পিকারে কথা বলে আর আজ যেহেতু ও ভেবেছে ঘরে কেউ নেই তাই স্পিকারেই কথা বলতে লাগলো আর নিজের ভিজে চুল মুছতে লাগলো।
,
,
দিপ্তঃ কিরে বিথু তুই কিন্তু বললি না এতো এক্সপেনসিভ শোপিস তুই কেন কিনলি?
বিথীঃ আরে একজনের এই সেম শোপিসটা ভেঙে ফেলেছিলাম তো তাই তার জন্য নিয়ে আসছি। (জোরপূর্বক হেসে)
দিপ্তঃ তাই বলে তুই নিজের এতোদিনের জমানো টাকা দিয়ে কিনবি? তোর কতো স্বপ্ন ছিলো এই টাকা দিয়ে নিজস্ব একটা কোচিং সেন্টার দিবি যেখানে হতদরিদ্র শিশুদের ফ্রি পড়াবি!
বিথীঃ কত স্বপ্নই তো পরিবারের জন্য বলি দিতে হলো এটা আর এমনকি!
দিপ্তঃ দেখ তোর মা বাবা এমনেই তোকেই অনিচ্ছার বন্ধনে বেধে তোর সব স্বপ্ন চূর্ণবিচূর্ণ করলেও এটা আমি চূর্ণবিচূর্ণ হতে দিবো না।
বিথীঃ তো কি করবি? (দুঃখের হাসি হেসে)
দিপ্তঃ তোর কাছে একটা পাওনা দাবি করেছিলাম এতো কম সময়ে এই রেয়ার পিসটা এনে দেয়ার জন্য মনে আছে তো?
বিথীঃ হুম আছে! তবে এখন তো আমার কাছে তোকে দেয়ার মতো কিছু নাই। ( বিনীতভাবে )
দিপ্তঃ দিপ্তর সবচাইতে বড় পাওয়া বিথীর মুখের মুক্ত ঝরা হাসি! আমার চাওয়া বেশি কিছু না তুই তোর কোচিং এর জন্য দরকারি মূলধন আমার কাছ থেকে নিবি বলছি না একেবারে নিবি ধার হিসেবে নিস। তবে স্বপ্ন অবশ্যই পূরণ করবি!
বিথীঃ কিন্তু………
দিপ্তঃ কোনো কিন্তু নয় এখন এই মায়াবীনির হাসিটা কি দেখতে পারে তার ডোরেমন?
বিথীঃ (সবসময়কার মতো এ কথায় হেসে দিল)
,
,
এদিকে একজন তাদের কথোপকথন শুনে লুচির মতো ফুলছে আর ভালোবাসার হিংসার আগুনে দগ্ধ হচ্ছে। সে হলো বিধান। বিধান সম্পূর্ণ কথোপকথনে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে ছিল বিথীর দিকে তবে বিথী তা কথায় এতোটাই মশগুল ছিল যে তা টেরই পায়নি।
বিধানঃ পরপুরুষের সাথে ঠিকই হেসে খেলে কথা বলবে শুধু আমাকেই ভালো লাগে না! কেনো কোনো দিন তো কোনো কমতি আছে কেউ বলেনি! মিস্টার পারফেক্ট ছিলাম সবার কাছেই! তাহলে এই মেয়ে….. এই মেয়ের সাহস কি করে হয় বিধান চৌধুরীকে টাকার গরম দেখানোর! (মনে মনে)
,
,
,
বিথীর কথা শেষ হতেই সে ব্যালকনিতে যায় ভেজা তোয়ালে রৌদ্রে শুকাতে দিতে।
,
বিথী ব্যালকনিতে যেতেই বিধান বিথীকে দেয়ালের সাথে ঠেসে ধরে। বিথীর পিচ্ছি পিচ্ছি হাত দুটো নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে। বিথীর কড়া কিছু কথা শোনানোর থাকলেও বিধানের চোখের দিকে তাকিয়ে কেন জানি কিছু বলতে পারলো না বরং অজানা ভয় তাকে চেপে ধরলো।
বিধানঃ বিথী ছেলেটা কে ছিল? ( দাঁতে দাঁত চেপে ধীর কণ্ঠে )
বিথীঃ (ভয়ে চুপ করে আছে)
বিধানঃ কি হলো বলছো না কেনো! ( রেগে চিৎকার করে )
বিথীঃ ক-কোন ছ-ছে-ছেলে? ( ভয়ে তোতলাতে তোতলাতে )
বিধানঃ বোঝো না কোন ছেলে! নাটক করছো! যার সাথে এতক্ষণ প্রেমালাপ করছিলে সে! ( রাগী কণ্ঠে )
বিথী প্রেমালাপ বলায় রেগে যায় কারণ ও আর দিপ্তর সম্পর্ক ভাইবোনের মতো।
বিথীঃ ও দিপ্ত ছিল আর আমি ওর সাথে প্রেমালাপ করি আর যা-ই করি আপনার কী?
বিধানঃ আমার কী তাই না! দেখাচ্ছি আমার কী! ( মাত্রাতিরিক্ত ক্ষেপে যেয়ে )
বিথীঃ করেন কী……..উমমম……. ( বিথীকে আর বিধান কথা খরচ করার সুযোগ দিলো না )
বিধান অনেক রাফলি চুমু দিচ্ছে বিথীকে যার ফলে চুমু কম কামড় বেশি দিচ্ছে। বিথী জান বেরিয়ে যাচ্ছে বিধানের কামড়ের ফলে আর হঠাৎ করে দেয়ায় দম বন্ধ হয়ে আসছে তবে হাত দুটো আবদ্ধ হওয়ায় আটকানোর চেষ্টাও করতে পারছে না।
আস্তে বিধানের রাগ কমতে থাকে আর বিথীর ভালোবাসার নেশায় আসক্ত হতে থাকে। বিথীও ঠোঁটে বিধানের ভালোবাসায় সিক্ত স্পর্শ পেয়ে ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে যায়। প্রায় ১০ মিনিট বিধান বিথীর ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে কপালে, চোখে, নাকে, গালে, ঠোঁটে নিজের ঠোঁটের আলতো স্পর্শে ভরিয়ে দিতে থাকে আর বিথী চোখ বন্ধ করে বিধানের ঠোঁটের শীতল পরশে কেপে উঠতে থাকে। বিধান এই কেপে উঠায় যেনো আরও মাতাল হয়ে যায়ে সম্পূর্ণ গলায় ঠোঁটের স্পর্শ দিতে থাকে আসক্ত ব্যক্তির মতো। তখনই ওরনার আড়ালে ঢেকে থাকা ছাই রঙা তিলে নজর গেলে তাতেই সব ভালোবাসার বর্ষণ করে।
কিছুক্ষণ পর বিথীর চেতনা আসে কি করছে মাগরীবের আজানের সাথে এবং নিজের হাতও খোলা পায় কারণ বিধানের দুই হাত তখন শাড়ির নিচ দিয়ে বিথীর পেট কোমরে স্পর্শ দিতে ব্যস্ত। এই সুযোগে বিথী বিধানকে হালকা ধাক্কা দেয় ফলে বিধানেরও হুশ আসতেই ও হনহন করে ঘর থেকে বের হয়ে যায়।
,
,
বিধান বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় গাড়ি নিয়ে। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়ার স্থানে যেয়ে ব্লাক কফির উপর কফি খেতে থাকে। ( অনেকে ভাবতে পারেন এই জায়গায় নেশাদ্রব্য লাইক সিগারেট বা মদ হলে মানাতো তবে আমি কোনো নেশাদ্রব্যকে কোনোভাবেই প্রমোট করতে চাই না আমার গল্প কারণ আমার মতে এসবে দুঃখ ঘুচবে না বরং সর্বদা বাড়ে)
বিধানঃ বিথী আমার স্পর্শ সহ্য হয় না তোমার তাই না! এতো অপছন্দ আমায়! এতো অহংকার নিজের উপর! আমাকে অপমান! তোমাকে এতো কষ্ট দিবো তুমি ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে। ওয়েলকাম টু দ্য হেল লাইফ মিসেস বিথী বিধান চৌধুরী! ( পৈশাচিক হাসি দিয়ে)

চলবে,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *