আমার ক্রাশ বর

আমার ক্রাশ বর সিজন- 2 !! Part- 50

অনু আরিয়ান অফিসে চলে আসে।
আজ একটা বড় কোম্পানির সাথে তারা ডিল সাইন করে।
সেই ডিল সাইনের জন্য শুক্রবার একটা বড় পার্টির আয়োজন করে আরিয়ান।
সেই উপলক্ষে অফিসের সবার দাওয়া থাকে।

তাই অনু আরিয়ান খুব ব্যস্ত নানারকম আয়োজন করতে হবে তাদের।
এখন রুবির সাথে অনুর আর বাধে না কারণ রুবির ঘাড়ে আরিয়ান বহু কাজ চাপিয়ে দিয়েছে যার কারণে রুবির ইচ্ছা থাকলেও অনুর পেছনে লাগতে পারবে না।
এদিকে দেখতে দেখতে অনুষ্ঠানের দিন চলে আসে।
অনু,আরিয়ান, রিমি,রিদি,রাজ,আয়াত সহ চৌধুরী বাড়ির সবাই সেখানে পৌঁছে যায়।
এদিকে অনুর বাড়ি থেকে আবির রিমা আর মিষ্টি সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়।
এখানে রুবি ব্যস্ত থাকার জন্য সে অনুকে আরিয়ানের সাথে আসতে দেখে নাই।
অনু মিষ্টি কে দেখে দৌড়ে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে।
মিষ্টিকে কোলে করে সে ভেতরে নিয়ে আসে।
রুবি মিষ্টিকে অনুর কোলে দেখে ভাবে এটা হয়তো অনুর মেয়ে তাই ভেবে রুবি একটা তাচ্ছল্যের হাসি দিয়ে মনে মনে বলে,”শেষ পর্যন্ত আরিয়ান কারো ভাগ্যে জোটে নাই।না সে আমার হয়েছে না অনুর যাক দুজনের কেউ পায়নি এটা ভেবে আমার কলিজায় শান্তি লাগছে।”
অনু রিমা কে বলে,”ভাবী তোমার পেট দেখে বোঝা যাচ্ছে তোমার বাবু হবে।কিন্তু সেই খবর আমি এতোদিন পরে পেয়েছি। এটা কি ঠিক কাজ করলে তুমি বলো তো? ”
রিমা বলে,”যে ফুপি হবে সে যখন খবর রাখে না।তখন তাকে খবর টা লেট করে দিলে সমস্যা হয় না।এই জন্য বলে মেয়েরা বিয়ের পরে পর হয়ে যায়।তার উদাহরণ তুমি অনু।”

অনু এক হাত দিয়ে কান ধরে বলে,”সরি ভাবী সংসারের নানা রকম সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আমি তোমাদের খোঁজ নেওয়ার কথা ভুলে গিয়েছিলাম।”
অাবির এসে অনুকে জড়িয়ে ধরে বলে,”আরে পাগলি আমরাও জানতাম না যে রিমা প্রেগন্যান্ট। ওর তো এমনি সমস্যা ছিলো তাই বুঝতে পারি নাই।আমরাও তো তিন মাস পরে জানতে পারি যে সে প্রেগন্যান্ট। এতে তোর মন খারাপ করার মতো কিছু নেই।আর বাকি টা তো তোকে রাগানোর জন্য বলেছি।ধুর পাগলি আমি কি তোর সাথে মজা করতেও পারবো না।এই জন্য তো বলি আমার অনু মনু টা বুঝি আর বড় হবে না।তোর থেকে বেশি বুদ্ধি মতি আমাদের মিষ্টি। ”
অনু মিষ্টি কে বলে,”আচ্ছা মিষ্টি সত্যি করে বলতো তোমার কি মনে হয় আমি তোমার থেকে ছোট?”
মিষ্টি একটু চিন্তা করে বলে,”অবশ্যই তুমি আমার থেকে ছোট।”
এই কথা শুনে আরিয়ান পাশ থেকে বলে,”মিষ্টি কোন দিক দিয়ে আমার বউ কে তোমার ছোট মনে হয়? ”
মিষ্টি বলে,”ফুপা এই যে ধরো,আমার আব্বুর ছোট বোন, দাদা দাদুর ছোট মেয়ে সে।সেই দিক দিয়ে তো ফুপি বাড়ির ছোট সদস্য। আর আমি আমার আব্বু আম্মুর বড় মেয়ে সেই দিক থেকে কিন্তু আমি ফুপির থেকে বড়। এবার তুমি হিসার মিলিয়ে নাও।তোমাদের আর বোঝাতে পারবো না।
সবাই এতো বড় হয়ে গেছো অথচ এই ছোট হিসাবটা কেউ বুঝতে পারো না এটা কেমন কথা।”
পেছন থেকে মৌ বলে,”ওরে আল্লাহ এ-ই পিচ্চি মেয়ে এতো ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বলে দিতে পারছে ভাবা যায় না।”
রিমা বলে,”আমার মেয়েটা একদম ওর ফুপির মতো হয়েছে।ও যখন পেটে ছিলো তখন তো অনু সারাদিন আমার আশেপাশে ঘুরঘুর করতো তাই একদম ওর কপি হয়েছে।”

অনু একটা ভ্রু কুঁচকে রিমার দিকে তাকিয়ে বলে,”পেটের বাবুটা আমার ছায়া পাবে না দেখবো সে কার মতো হয়।মিষ্টি কে তো আমার ঘাড়ে চাপিয়ে বেঁচে গেছো।”
এদিকে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যায় আরিয়ান খুব ব্যস্ত হয়ে যায়।
অনু আবিরদের সাথে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে থাকে।
এমন সময় আরিয়ানের সব পার্টনার গুলো মিসেস আরিয়ানের সাথে দেখা করতে চাই।
এমন সময় আরিয়ান মাইক হাতে নিয়ে অ্যানাউন্সমেন্ট করে যে মিসেস আরিয়ান চৌধুরী প্লিজ আপনি স্টেজে আসুন।
আরিয়ানের মুখে মিসেস কথাটা শুনে রুবি একটু চমকে যায়। তারপর বলে,”এতো সুন্দর ছেলে সে কি আর পাঁচ বছর ফাঁকা থাকে।আমরা বিয়ে করে সংসার করতে পারি আর সে করলে সমস্যা কেনো হবে।এই সব ভেবে নিজেকে বোঝাতে থাকে।”
এমন সময় রিমি অনুর পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলে,”চল তুই আমার পিছনে পিছনে আসবি।”
অনু রিমির কথা মতো ওর পেছনে পেছনে যেতে থাকে।
রুবি ভাবে রিমি হয়তো আরিয়ানের বউ।
তাতে ওর কষ্ট হচ্ছে না।যদি রিমির স্থানে অনু থাকতো তাহলে অবশ্যই সে কষ্ট পেতো।
যথাযথ সময় রিমি স্টেজের কাছে গিয়ে সরে যায়।আর আরিয়ান এসে অনুর দিকে হাত বাড়িয়ে তাকে স্টেজের উপর উঠিয়ে মাইক হাতে নিয়ে বলে,”এই মিসেস আরিয়ান চৌধুরী।”

রুবি আরিয়ানের বউ হিসাবে অনুকে দেখে রাগে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে।সে সেখানে থেকে বাহিরে চলে যায়।
আরিয়ান মাইকে বলার পর সবাই করতালি দিয়ে ওদের অভিনন্দন জানাই।
আরিয়ান তার পার্টনার সহ অফিসের সব কর্মচারীদের সাথে অনুর পরিচয় করিয়ে দেয়।
ম্যানেজার সাহেব আরিয়ান কে বলে,”স্যার অনু ম্যাডাম আপনার বউ তা তো আমার কেউ আগে থেকে জানতাম না।আজকে জানতে পারছি উনি আমাদের ম্যাডাম হয়।”
আরিয়ান বলে,”কিছু সময় সঠিক হয় যখন কিছু পরিচয় সামনে আনতে হয়।অনু আমার বউ সেই কথাটা সবার জানা দরকার ছিলো আজ তা সবাই কে জানিয়ে দিলাম।”
অনু বলে,”আমি আরিয়ানের বউ ঠিক আছে তবে অফিসে আর সব সাধারণ কর্মচারীদের মতো আমিও সাধারণ। শুধু মিসেস চৌধুরী বলে আমার কাজে কোনো গাফিলতি দিতে পারবো না আমি।

বা আমি চাইবো না আপনারা সবাই আমাকে মিসেস চৌধুরী বলে বেশি সম্মান করবেন। ”
এরপর নানারকম আয়োজনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
অনুষ্ঠান শেষে সব অতিথিদের বিদায় দিয়ে আরিয়ান আবির কে বলে তাদের সাথে তাদের বাড়িতে যেতে।
আবির বলে,”তোমাদের কিন্তু আজ আমাদের বাড়িতে যাবার কথা ছিলো তাহলে সেই কথার কি হবে আরিয়ান? ”
আরিয়ান বলে,”মিষ্টি কে আমাদের কাছে রেখে জান আজ।কাল সকালে সব কিছু ঠিকঠাক করে মিষ্টি কে নিয়ে আপনাদের বাড়িতে যাবো।আর মিষ্টি যদি আমাদের সাথে থাকে তাহলে তো অবশ্যই আমাদের যেতে হবে ঐ বাড়িতে।”
মিষ্টি আরিয়ানের কথা শুনে বলে,”আব্বু আমি ফুপির সাথে আজকে তাদের বাড়িতে থাকবো বলে কান্না শুরু করে।”
মেয়ের কান্নাকাটি দেখে আবির মিষ্টি কে অনুর সাথে থাকার পারমিশন দিয়ে দেয়।
এরপর সবাই নিজেদের গাড়িতে করে নিজ নিজ বাড়ির পথে রওনা দিয়ে দেয়।
কিন্তু মাঝ পথে ওদের জীবনে ঝড় নেমে আসে।
তাদের সব গাড়ির মধ্যে একটা গাড়ি মাঝ পথে খুব খারাপ ভাবে এক্সিডেন্ট করে।
সেই গাড়ির মানুষের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়।
খুশির রং গুলো যেনো বেদনার রং এ বদলে যাবে জানি না কার জীবনের রংধনু মিলিয়ে যাবে।
(সরি খুব ব্যস্ত তার জন্য পর্ব বড় করে দিতে পারছি না।আর ভুল এুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন সবাই।ইনশাআল্লাহ গল্পটা আর বেশি বড় করবো না কয়েক পর্ব পরে শেষ করে দিবো।)



চলবে…..