ভালোবাসার প্রতারণা

ভালোবাসার প্রতারণা ! সিজন 2 ! Part- 05

তারা প্রভাতের এমন কথায় কিছুটা বিচলিত হলো। তারপর প্রভাতকে জিজ্ঞেস করলো

—-ইচ্ছে করছিল কেন?

—–তা বলা কি খুব দরকার!

—-হুম।

—-যদি বলি ভালোবাসি?

—-মানে !

—-মানে হলো আমি আপনাকে ভালোবাসি। আমি চাই আপনিও আমাকে ভালোবাসুন ঠিক আমার মতো আমি যেমন আপনাকে ভালোবাসি।

—-মামার বাড়ির আবদার নাকি যে বললেই ভালোবাসবো?

—-আমি আপনাকে এখুনি কিছু বলতে বলেনি। আপনি সময় নিন। আপনার যত সময় লাগে আপনি নিন কিন্তু বেশি সময় নিবেন না।

—-আজব তো! আপনি জোর খাটাচ্ছেন?

—-তা না।

—-আমার তো মনে হচ্ছে সেটাই।

—-আপনার মন কি ভুল হতে পারেনা!

—-পারে।

—-তাহলে?

—-কি!

—-আমার সাথে প্রেম করতে আপত্তি আছে?

—-আপনি কি পাগল নাকি?

—-হুম। তোমার প্রেমে।

—-হেলো মিস্টার বি সিরিয়াস ! আপনাকে আমি চিনি না জানি না আপনার সাথে কিভাবে আমি প্রেম করি। আর তাছাড়াও আমি এসব পছন্দ করিনা।

—ভয় হচ্ছে?

—-কেন?

—-আমি যদি দেখতে কুৎসিত হই তাই আপনি আমার সাথে প্রেম করতে চাইছেন না।

—-তা নয়।

—-যদি তা না হয় প্রেম করতে আপত্তি কিসের? ভেবে দেখুন রিয়েল লাভ কিন্তু সবার কপালে জুটে না। আপনার জুটেছে তাই আপনি দূরে ঠেলে দিচ্ছেন।

—-আপনি আমাকে রিয়েল লাভ করেন নাকি?

—-কোনো সন্দেহ?

—-হুম। অবশ্যই সন্দেহ হবে আর হওয়ারই কথা।

—-আপনি এখনো বিশ্বাস করছেন না আমাকে। আচ্ছা আপনাকে আমি সময় দিচ্ছি আপনি একটু ভাববেন ব্যাপারটা নিয়ে। আমি আপনাকে তখনিই ফোন দিব যখন আপনি নিজে থেকে আমার সাথে কথা বলতে চাইবেন আমার কথা চিন্তা করবেন আমাকে নিয়েও আপনি হারিয়ে যাবেন এক ভাবনার জগৎে। সেদিন আপনি নিজে থেকে বলার আগে আমি ফোন দিব। এবং আপনার সামনে এসে দাঁড়াবো। আমার বিশ্বাস সেদিন আমাকে আপনি ফিরিয়ে দিবেন না যদি দেন তাহলে আমি ধরে নিব পৃথিবীতে ভালোবাসা বলতে কিছুই নেই যা আছে তা শুধু মিথ্যে ছলনা।

—-আপনি ভুল প্রমাণিত হবেন। আমি আপনাকে নিয়ে ভাববো না।

—-সেটা পরিস্থিতি বলে দিবে। আজ এখন এখানেই আমাদের ফোনালাপ শেষ করলাম। আবার কবে শুরু করবো তা জানিনা। আল্লাহ হাফেজ ভালো থাকবেন।

—-জ্বী। আল্লাহ হাফেজ।

সেদিন শেষ কথা হয়েছে প্রভাত চৌধূরী নামের লোকটার সাথে। তারা না চাইতেও সেই সভয় থেকেই প্রভাতকে নিয়ে ভেবেছে। তবে মিস করেনি প্রভাত যা যা বলেছে সব কিছু পুরোটা হয়নি তবে আস্তে আস্তে কিছুটা হচ্ছে।

এভাবেই এক সপ্তাহ কেটে গেল। তারার বাবাও বিদেশ থেকে ফিরে এসেছেন। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকের কোলাহলের আওয়াজে তারা কিছুটা অবাক হলো। এই সময়ে এত মানুষ ওদের বাসায় কি করছে। নিচে গিয়ে দেখতে হবে ব্যাপারটা। তারা ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে গেল গিয়ে দেখে পুরো বাড়িতে বিয়ের ডেকোরেশন করা হচ্ছে। কার বিয়ে হবে কেউ তো তারাকে কিছু জানালোনা। বাবাকে জিজ্ঞস করতে হবে কারণ যাকেই জিজ্ঞেস করছে সেই কেমন অবাক চোখে তারার দিকে তাকাচ্ছে।যার ফলে তারার একটা অদ্ভুদ ভয় হচ্ছে একটা চিন্তা ওকে এসে ঘিরে ফেলেছে।

তারার বাবা কারো সাথে ফোনে হেসে হেসে কথা বলছে তাই তারা চোপ করে দাড়িয়ে তাদের কথা শুনার চেষ্টা করছে কিন্তু আফসোস কিছুই শুনলো না। তারার বাবা কল কেটে পেছন ফিরে দেখলো তারা দাঁড়িয়ে আছে। তারাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলল

—-তৈরি হয়ে নাও মামুনি।

—-কেন?

—–একটু পর তোমার এংগেজমেন্ট।

—-হোয়াট!

—-হুম।

—-বাবা এসব কি বলছো আমাকে না জানিয়ে তোমরা আমার এংগেজমেন্ট ঠিক করে ফেলেছ?

—-হুম। আমি এতে তোমার মতের উপর বসে থাকবোনা। তোমার বাবা হই আমি। আমিই বুঝবো তোমার জন্য কি ঠিক আর কি বেঠিক আর তোমার বিয়ে কার সাথে হবে তাও আমি বুঝবো। আমার কথার অবাধ্য হলে আমি কিন্তু নিজের ক্ষতি করে বসবো।

—বাবা!

—-হুম। এবার তুমিই বলো তুমি কি চাও আমি নিজের ক্ষতি করি?

—-আমি বিয়ে করবো।

—-তোমার থেকে আমি এমনটাই আশা করেছি। যাও গিয়ে তৈরি হয়ে আসো।

—হুম। (ছলছল চোখে)

আমাকে ক্ষমা করিস মা আমি তোর ভালোই চাই তাই তোর অমতেও এই বিয়েটা দিচ্ছি।—-কায়েস সাহেব

সন্ধ্যার দিকে …..

তারাকে পার্লারের মেয়ে গুলো এসে সাজিয়ে দিয়ে যায় তারা খুব কান্না করেছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তাও নিজের বাবার কথা ভেবে রাজি হয়ে গেল বিয়ে করতে। সে নিজের জন্য তার বাবাকে তো ভারাতে পারবেনা। তারাকে হোয়াইট গাউনে তারাকে অপ্সরী লাগছে।

তারার এংগেজমেন্ট হচ্ছে কার সাথে এখনো তারা সেটা জানেই না। আর জানার ইচ্ছেও নেই কোনো। তারাকে স্টেজে বসিয়ে সবাই যার যার মতো ব্যস্ত হয়ে পড়লো। সবাই বলাবলি করছে বর এসেছে এমন ভাবে বলছে যেন আজই বিয়ে। তারার তাতে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই সে তো প্রভাত চৌধূরীর কথা ভাবছে। যাকে মনের এক কোণায় স্থান দিয়ে ফেলেছে তারা। লোকটি ঐদিন ঠিকই ছিল। আজ যে না চাইতেও খুব করে প্রভাতকে চাইছে।

(মজার ব্যাপার তারা জানেই না এই প্রভাত হলো ঐ পার্টির অসভ্য লোকটা যে কিনা তারার সাথে মিস বিহেভ করেছে। জানবেই বা কি করে সে কি কখনো লোকটির নাম শুনেছে? তাই প্রভাত ঐদিন নিজের নামটি সত্যিই বলে দেয়।)

তারার সাথে যার বিয়ে হতে চলেছে তারা তার মুখটা এখনো দেখেনি তবে পেছন থেকে দেখেছে খুব হ্যান্ডসাম একজন পুরুষ। তবে চেহারাটাই দেখছেনা। তখন একটু নড়েচরে বসল আর সামনে যাকে দেখলো তাতে তো অবাকের চূড়ায় এটা তো ঐ অসভ্য লোকটা!

চলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *