অদ্ভুত ভালোবাসা

অদ্ভুত ভালোবাসা ! পর্ব- ০৪

গল্প বিলাসী

যখনি চিরকুটটা হাতে নিয়ে খুলতে লাগলাম কল এলো

কি হয়েছে বলো?

স্যার সেই ছেলেটা পালানোর চেষ্টা করেছিলো যদি আবার পালিয়ে
যায়

ওকে আমি আসছি।
চিরকুট টা খাটের উপর রেখে চলে গেলাম।

বল কেনো আমাকে Follow করেছিলি?

স্যার আমি follow করিনাই

তাহলে আমাকে দেখে দৌড়ে পালাচ্ছিলি কেনো?

এএএমমমনি

তোতলাচ্ছিস কেনো?
বল কেনো follow করেছিলি?
কে পাঠিয়েছে তোকে?

আমি এমনি আপনাকে দেখতেছিলাম আমারে কেউ পাঠায়নাই স্যার

তোকে শেষ করতে আমার বন্দুকের একটা গুলিই যথেষ্ট পুরোটাই
লোড করা সো বলবি না উপরে চলে যাবি?

স্যার আমারে কেউ পাঠায়নাই স্যার আমায় কেউ পাঠায়নাই।

ওকে তাহলে ওপরে যাওয়ার জন্য তৈরি হ

স্যার আমার বউ বাচ্চা আমারে ছাড়া বাঁচবোনা স্যার দয়া করে এমন করবেননা
না

তাহলে বল

এইভাবে অনেক সময় পর ঐ ছেলেটার মুখ খুললো

রফিক স্যারের বড় পোলায় পাঠাইছে আমারে

আমি জানতাম চাচ্চু তুমি আমার পিছু ছাড়বেনা। আমার সাথে লড়াইতে জিততে
পারছোনা তাই নিজের ছেলেকে লাগিয়ে দিয়েছো

কতদিন আমাকে follow করছিস?

ঐমাইয়ারে মাইরা ফেলানোর পর থাইকা

কোন মেয়েটাকে?

স্যার একদিন একটা মাইয়া আপনারে Follow করনের লাইগা পাঠায়ছিলো

মাইয়াটা ককইলো আপনি নাকি একটু হলে ট্রেনের ভিতর ধরে
ফেলতেন তাই সে আপনার আগের স্টেশনে নেমে গিয়েছিলো।

আর সে যখন বড় স্যারকে এইসব বলতাছিলো তখন পিছন থাইকা ছোট
স্যার ওই মাইয়ারে গুলি কইরা মাইরা ফালাইসে।

তার মানে আমি ঠিকই ধরেছি কেউ Follow করেছিলো

ওকে তুই এইখানেই থাক বলেই চলে আসলাম

Sorry নিশি তোমার কোনো দোষ ছিলোনা শুধু আমার ভূলের জন্য
তোমার এতো বড় ক্ষতি হলো

খাটের ওপর বসতে গিয়ে চিরকুটটা চোখে পরলো
এইটাতো পড়া হয়নি

মি নীল চৌধুরী
আপনি হয়তো অনেক বড়লোক প্রভাবশালী লোক, আপনার বাড়ি গাড়ি
এতো এতো ব্যাংকব্যালেন্স কোনো কিছুর ই আপনার অভাব নেই
কিন্তু একটা জিনিসের খুব অভাব আপনি হয়তো বুঝতে পারছেন না? তাইনা
যার এতো কিছু আছে তার কিসের অভাব?
হ্যা অভাব আপনার সুন্দর একটা মনের অভাব।

আপনার এই মনে কোনো মায়া দয়া কোনো কিছুই নেই শুধু আছে
অহংকার।

আর আপনি কি জানেন অহংকার পতনের মূল

আপনি মনুষ্যত্বহীন মানুষ।
যার মনুষত্ব্য আছে তাদের দ্বারা মানুষের উপকার হয়

আর আপনি?
আপনার কারনে মানুষের উপকার নয় অপকার হয়।

আমার হয়েছে। আমার অপকার হয়েছে।
আপনার সামান্য একটু ভূলের জন্য আমার জিবনটা শেষ হয়ে গেছে। শুধু
আপনার ভূলের জন্য

একবারও কি ভেবেছেন আমার কি হবে?
যে মেয়েটা এতোদিন বাড়ির বাহিয়ে তাকে সমাজ মেনে নিবে কিনা তার
দিকে আজ্ঞুল তুলে দেখাবে কিনা?

ভাবেন নি আপনি কেনো ভাববেন তাইনা?
শুধু তাই নয় আপনার জন্য আমাকে সমাজ এখন দিক্ষার দিবে

কি দোষ ছিলো আমার আমার তো কোনো দোষ ছিলোনা তারপরও
আমি দোষি।
সমাজের কাছে দোষি।
আপনার কি আসে যায় তাতে?
কিচ্ছু না।

আর আমার দুই বছরের কষ্ট করে লেখাপড়া করার ফল আজ বিফলে তাও
শুধু আপনার জন্য।

একদিকে এনেছেন ভালোই হয়েছে আপনাদের মতো বড়
লোকদের ভালো মানুষ মুখুশধারী লোকদের চিনতে পারলাম।
জানতে পারলাম আপনারা কতটা নিচু মনের মানুষ।

আপনি সেদিক কি বলেছিলেন? আমি আপনাকে কাছে কাছে রেখেছি
আপনার গলায় ঝুলার জন্য?
আপনাকে কাছে রাখতে চেয়েছিলাম সেই জন্য আমাকে কেনো
নিয়ে এসেছেন তা জানার জন্য।

আর হ্যা তারাই আপনাদের মত লোকদের গলায় ঝুলে পড়ে যাদের
মনুষত্ব্য নেই যারা লোভী তারা।

আপনার আমাজে ধরে নিয়ে যাওয়ার ভূলটা হয়তো এখনো খুঁজে বের
করতে পারেন নি নিশ্চয়ই।

জেন্সকে জিজ্ঞাস করেন সব পেয়ে যাবেন আশা করি তাতে আপনার
ভূলটা ভাংবে।

ভবিষ্যতে এইসব ভূল করার আগে একটু চিন্তা ভাবনা করে তারপর কাজ
করবেন।

জানিনা আমার ভাগ্যে কি আছে আপনার ভূলের জন্য মাসুল দিতে হবে
আমার এই আপনাদের মনুষত্ব্য।

আল্লাহ্ হাফেয
নিশি।

চিরকুটটা পড়ে আমার মুখের ভাষা যেনো হারিয়ে গেছে আমি কিছুই
বলতে পারছিনা

আজ আমার ভূলের জন্য মেয়েটার জিবনটা এলোমেলো হয়ে
গেলো।

এর পায়শ্চিত্ত আমি কিভাবে করবো। আমিযে মরেও শান্তি পাবোনা।।

আমাকে ক্ষমা চাওয়ার একটা সুযোগ ও দিলেনা নিশি আমি কোথায় খুঁজবো
তোমায়?

জেন্স থেকে সব শুনলাম। আমাকে ক্ষমা করে দিওও নিশি

আরে এইটাইতো রহমান চাচার মাইয়াটা?
আরেকজন বলতে লাগলো
কি কাম কইরাইছে আল্লাহ ভালো জানে

গ্রামবাসীদের সবার কথাগুলো শুনে চোখের পানি রাখতে পারছিলাম না
দৌড়ে বাড়ির দিকে চলে আসছিলাম

কিরে আমাদের বাড়িতে এতো মানুষ কেনো?
মানুষের এতো ভীড় ঠেলে বাড়িতে গেলাম
বাড়িতে গিয়ে যা দেখলাম তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।

আমার বাবা আমাকে একা করে চলে গেছে আমার কথা বলার শক্তি হারিয়ে
গেছে চোখ দিয়ে অঝোর ধারার বন্যা বইছে মা পাগলের মতো
প্রলাম করছে

দৌড়ে মাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম মা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে
দিলেন বললেন আমি কলংকীনি।
আমি কাল নাগীনি আমাকে আমার বাবার মুখটাও দেখতে দেয়নি
গ্রামবাসীরা

সবাই বলছে আমি পাপী।
আমি চিৎকার করে বলছি আমার কোনো দোষ নেই তোমরা আমার কথা
শুনো কেউ আমার কথা শুনেনি।

আমাকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলছে সবাই।
আমি যখন বের হচ্ছিলাম না তখন মা একটা দা দিয়ে এসে বললো হয়তো
তুই এই বাড়ি ছাইড়া যাবি নয়তো এই দা দিয়া আমারে খুন করবি।

মার কথা গুলো শুনে আর থাকতে পারছিলাম না দৌড়ে চলে এলাম সবাই
আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি কাঁদছি আর হাটছি।

নিশি এই নিশি? কি হইতাছে এই গুলা বলতো? তুই কি কইইরা এই কাজ করতে
পারলি আমার তো এখনো বিশ্বাস হইতাছেনা

কথা শুনে সামনের দিকে তাকালাম এই যে নিরা আমার সবচেয়ে বেষ্ট
ফ্রেন্ড।

কি করেছি আমি?

তারপর নিরা যা বললো তাতে আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে
গেলো মনেহয়।

কি বলছিস এইগুলা তুই?

হ্যা। তুই একটা ছেলেকে দিয়ে চিঠি পাঠাইছোস আর সেই চিঠি নাকি
চেয়ারম্যানের হাতে পরছে আর সে আইসা চাচারে কতরকম কথা শুনাই
গেছে।

কিন্তু আমিতো চিঠি দেইনি?
আমি কেনো চিঠি দিবো?
আচ্ছা চিঠিতে কি লিখাছিলো তুই জানিস?

আমি নিজে পড়িনাই তবে শুনছি তুই নাকি লিখছোস যে তুই কারে
ভালোবাসোস তার সাথে পালাই গেসোস
। আর গতকালকে চাচা চাচীদের গ্রাম থাইকা চইলা যাইতে কইছে আর
কিছুক্ষন আগে শুনলাম রহমান চাচা মারা গেসে।

ভালোবাসি আমি?
নিরা তুইতো আমার বেস্টফ্রেন্ড তুই এগুলো বিশ্বাস করিস বল

আমি তো জানি তুই কেমন কিন্তু কি হইছিলো সেইটা তো বল

তারপর নিরাকে সব খুলে বললাম দেখলি চেয়ারম্যান এ কি প্যাচ টা লাগাইছে?

চল বাড়ি চল

নারে আমি আর কিভাবে বাড়ি যাবো।
একটা অনুরোধ রাখবি?

কি অনুরোধ?

মা যখন একটু সুস্থ হয় তারে আমার ঘটনাটা বলিস
বলেই চলে আসলাম আমার যে আররো কান্না পাচ্ছে

কোথায় যাবো আমি?

হঠাৎ হাত থেকে কি যেনো পড়ে গেলো
তাকিয়ে দেখি আন্টির কার্ডটা।

আন্টির কাছে যাই।
ওনার কাছে আশ্রয় চাইলে ওনি ফিরিয়ে দিবেনা নিশ্চয়ই।

চলে এলাম আন্টির বাসায় আন্টিকে সব খুলে বললাম

কাঁদিস নারে মা। তোর পাশে আমি আছি। ধৈর্য্য ধর আল্লাহ তোর পরিক্ষা
নিচ্ছে।

আজ থেকে আমি আর একা না আমার মেয়ে আছে আমার সাথে বলেই
জড়িয়ে ধরলেন কি থাকবিনা আমার কাছে?

এর কিছুদিন পর নিশির পড়ালেখা আবার শুরু হলো শুরু হলো নতুন জিবন।
কিন্তু নিজের মা, ভাইকে ছাড়া আর কেমন ভালোথাকা যায় তারপরও সবার
সামনে কিন্তু রাতের অন্ধকারে চোখের পানি তার সজ্ঞী।

দেখতে দেখতে পরিক্ষার দিন চলে আসলো পরিক্ষা ভালোভাবেই
দিলো

লাস্ট প্রেক্টিকেল পরিক্ষার দিন

কলেজ থেকে বের হলাম

কিরে এইখানে এতো ভীর কেনো?

নিলা : কি জানি

নিশি : চলতো দেখি।
গিয়ে দেখলাম একটা লোক এক্সিডেন্ট করে পরে আছে কিন্তু
কেউ ধরছেনা। মুখ রক্তে রঞ্জিত হয়ে আছে যার জন্য মুখটাও বুঝা
যাচ্ছেনা

কিহলো আপনারা ওনাকে হাসপাতালে নিচ্ছেন না কেনো?
কেউ আগাচ্ছেনা দেখে ওরা কিছু স্টুডেন্টস মিলে তাকে হসপিটালে
নিয়ে গেলাম।

আন্টি যে হসপিটালে কাজ করতো ওই হসপিটালে নেওয়ার ব্যাবস্থা
করলাম। ওই হসপিটালের অনেক ডাক্তার ই এখন আমার পরিচিতো।
আন্টির সাথে যেতাম আন্টির বয়স হয়েছে তাই ছেড়ে দিয়েছে

ওনাকে ভর্তি করে আমরা চলে আসলাম।

নিশি : সবাই আগামীকাল একবার ওনাকে দেখে যাবো কি বল সবাই?

ওকে ঠিকাছে।

চলে আসলাম বাসায়।

সকালবেলা

continue. ….
.বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *