ভালোবাসার প্রতারণা ! সিজন 2 ! Part- 10
—কি হলো কিছু বলছোনা যে!
আরিয়ানের ডাকে হুশ ফেরে তারার। আরিয়ানকে কি জবাব দেবে সে বুঝতে পারছেনা। আসলেও কি প্রভাতকে (ফোনের ব্যক্তিটি) ও ভালোবেসেছে নাকি আবেগ! হয়তো আবেগি হবে যদি ভালোবাসা হতো তাহলে তো তারা তার কাছে ছুটে যেত আর সেই যদি ভালোবাসতো তাহলে ওকে সাহায্য করতো। তাহলে এটাই দাড়ায় যে তারা কাউকে ভালোবাসেনি। তাহলে ভালোবাসা বস্তুটাকে এতো ঘৃণা করছে কেন? মি. এহসান(প্রভাত) এর কারণে! যে কিনা ভালোবাসা জিনিসটাকে নিয়ে একটা নোংরা খেলা খেলেছে! সে যাই হোক আরিয়ানের কাছে এসব বলা যাবেনা ও হয়তো এমনিতেও তারাকে এভাবে দেখে অনেকটা আপসেট হয়ে পড়েছে।
—-কি হলো তোমার বলবে তো!
—-না কিছুনা।
—-যাক বাবা! জবাব তো দিলে আমি তো ভাবছি তুমি বোবা হয়ে গেছো।
(বলেই হাঁসতে লাগলো কি অমায়িক তার হাঁসি অথচ এই লোকটাকে ঐদিন কিভাবে পারলো এতটা অপমান করতে! একবারো কি তার মনে কথাটা বাধলো না!)
—-কি যা তা বলছেন!
—আমি তোমার থেকে কিছু জানতে চাই তারা।
—কি?
—তোমার বিয়ে হয়েছে কি?
তারা কিছুক্ষণ ভেবে না বলল কারণ এভাবে আরিয়ানকে কিছু বললে সে যদি প্রভাতকে বলে দেয় বা ওর বাবাকে!
—–কোথায় যাবে ঠিক করেছো?
—-জানিনা।
—-তাহলে আমার বাড়িতেই থাকতে পারো যদি তুমি চাও।
—-আমি কিভাবে আপনার বাড়িতে!
—-সমস্যা নেই অলরেডি কানা ঘুসা হয়ে গেছে আমি তোমাকে বিয়ে করে ফেলেছি।
—-মানে!
—-কাল তোমাকে কোলে করে আনাতে পাশের বাড়ির আন্টি দেখে ফেলেছিল চারিদিকে ছড়িয়েও দিয়েছে।
—-হোয়াট!
—-ইয়েস।
—-এখন কি হবে?
—-কি আর হবে সংসার হবে বাচ্চা কাচ্চা হবে।
—-আপনি কি বলছেন এসব!(রেগে)
—-সরি সরি। আমি মজা করছিলাম।
—-হুহ।
—-আমার সাথে থাকতে আপত্তি আছে?
—-হুম। তাও থাকতে হবে যতদিন না আমি কোথাও সেটেল হচ্ছি। আমেরিকায় একটা জব পেয়েছি তারা বলেছে তিন মাস পর আমাকে নিয়ে যাওয়া হবে।
কথাটা শুনে মুহুর্তেই আরিয়ানের মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল।
—আচ্ছা আপনার বাবা মা!
—বাবা বিজনেসের কাজে লন্ডন গেছে সাথে মাও গেছে।
—-ওনারা কখন ফিরবেন?
—-সামনের সপ্তাহে।
—-এসে যদি আমাকে দেখে তাহলে!
—-কি আর হবে তোমাকে আমার বউ ভেবে বরণ করবে। কিন্তু তুমি চিন্তা করোনা আমি বলে দিব সব কিছু তাহলে ওনারা বুঝবে।
—-আপনি কি কোথাও যাচ্ছেন?
—-হসপিটাল যাচ্ছি। তোমার ব্রেকফাস্ট রেডি ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে নিবা। আর এই মেডিসিনটা নিও তুমি খুব দুর্বল তো তাই।
—-আমার কোনো ড্রেস নেই তো।
—ওহ আমি তো ভুলেই গেছি। আচ্ছা আমার আপুর একটা ড্রেস এনে দিচ্ছি আমি আসার সময় তোমার জন্য ড্রেস নিয়ে আসবো।
—-আচ্ছা।
তারা ওয়াশরুম চলে গেল। একটা লম্বা শাওয়ার নিয়ে বের হলো তখন বিছানায় একটা কালো জর্জেট শাড়ি পেল সাথে একটা চিঠি। চিঠিতে লেখা
“আপুর ড্রেস তেমন কিছু নেই তবে এই শাড়িটা পেলাম আসলে ড্রেস ফিট হতে নাও পারে তাই শাড়ি দিয়ে দিলাম। সাথে পুরো সেট আছে দেখে নিও।”
—-আরিয়ান।
তারা শাড়ি পড়তে পারে তাই সমস্যা হলো না সুন্দর করে শাড়ি পড়ে নিল। ব্রেকফাস্টে দেখলো জ্যাম পাউরুটি অবশ্য তারা এসব খায়। তবে ও এটা জানে যে আরিয়ান এসব পছন্দ করে না। রান্নাঘরে গিয়ে দেখলো কিছুই নেই আরিয়ান ফিরে এসে কি খাবে! তাই নিজেই রান্না করা শুরু করলো।
দুপুরের দিকে আরিয়ান বাসায় এসে দেখে তারা কোমরে শাড়ি গুজে পাক্কা গৃহিনীর মতো টেবিলে খাবার সাজাচ্ছে। আরিয়ান খুব খুশি হলো আজ হয়তো এই মেয়েটা সত্যিই তার বউ হতো ঐদিন যদি আরিয়ানকে তারা না ফিরিয়ে দিত তাহলে আজ তারা শুধুই ওর থাকতো। প্রভাতের নয়। হুম আরিয়ান সব জানে তারা কিছু না বললেও জানে কারণ প্রভাত আরিয়ানের বন্ধু তাদের বিয়েতে আরিয়ান উপস্থিত ছিল। তারাকে তখন খুব বিষণ্ণ লাগছিল মনে হয় সব ওর অমতে হচ্ছিল তাও নিজেকে ভুল মনে করে ফিরে আসে আর আহার সময় তারাকে ওভাবে পায়। নিজের ভালোবাসার মানুষটা বিপদে আছে তাই তাকে ফিরিয়ে না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দিল। খুব তাড়াতাড়ি ও তারাকে নিজের করে নিবে প্রভাতের সাথে ওর ডিভোর্স করাবে।
—-আরে আপনি এসে গেছেন!
—হুম।
—ফ্রেশ হয়ে আসুন খাবার সার্ভ করে দিচ্ছি। (হাসি মুখে)
—ঠিক আছে।
এদিকে প্রভাত তো পাগল প্রায় তারাকে না পেলে যে ও মরে যাবে। এখনো খুঁজছে পাগলের মতো খুঁজছে একবার যদি তারাকে পায় তাহলে ওর পায়ে শিকল দিয়ে আটকে রাখবে।
তারার বাবা নিজেকে দোষারোপ করছে। নিজের কলিজার টুকরাটা কোথায় যে গেল! আজ যদি উনি তারাকে এভাবে জোর না করতো তাহলে এসব কিছু হতোই না।
তিনি লোক লাগিয়েছে ওনারা সবাই তারাকে খুঁজছে।
চলবে।