ভালোবাসা এমনও হয় Season 2 !! লেখাঃ নুসরাত জাহান
ভালোবাসা এমনও হয় Season 2
তরীঃ ফুপি ফুপি দেক মেগ ভাইয়া আমাল তুলে কি লাগিয়ে দিতে🥺
ঈশাঃ মেঘ এই কাজ করেছে
তরীঃ হুম(ঠোঁট উল্টিয়ে
ঈশাঃ দাড়াও মামনি ওকে আমি ধরছি।
ঈশাঃ মেঘ তুমি তরীর চুলে চুইংগাম লাগিয়েছো
মেঘঃ হুম লাগিয়েছি
ঈশাঃ কেন শুনি
মেঘঃ দুইবছর আগে এই দিনে ও আমার বার্থেডে টা নষ্ট করে দিয়েছিলো।।আর তাই আজ ওর শাস্তি হলো এটা।।এখন ও বুঝবে মজা।।কাল পার্টিতে চুল ছাড়া যেতে হবে
বলেই মেঘ চলে গেল।।
আসলে হয়েছি কি কাল মেঘ আর তরী দুইজনের বার্থডে।। আর তরী যেদিন জন্ম নিয়েছিলো সেইদিন মেঘ কি বলেছিলো সবার নিশ্চয়ই মনে আছে।।সেই শোধ আজ নিলো তরীর থেকে। (ভালোবাসা এমনও হয় Season 2)
ঈশা কিছুক্ষণ মেঘের যাওয়ার দিকে হা করে তাকিয়ে রইলো।।
মাত্র ৫ বছর বয়স বাট কি attitude। কিছুই ভুলে নাহ সহজে।।একদম চুপচাপ আর গম্ভীর স্বভাবের ছেলে।।সহজে কারো সাথেই মিশতে চায় নাহ।।
ঈশা তরীর দিকে তাকালো।।পিচ্ছি বাচ্চাটা কান্না করে চোখমুখ ফুলিয়ে ফেলেছে।।
ঈশার মায়া হলো।।কোলে তুলে নিলো।।তরীর দুই বছর।।একদম কিউট এর ডিব্বা।খুব দুষ্টু।। ওর কাজই হলো মেঘকে রাগানো।।
ঈশাঃ কাদে নাহ সোনা।।আমি মেঘ কে বকে দেবো
তরীঃ বাত ফুপি আমাল তুল একন তি হবে।।আমাল তুল তো কেতে ফেলতে হবে(আবার ঠোঁট উল্টিয়ে কেঁদে ফেললো।)
ঈশাঃ কিছু করতে হবে নাহ সোনা।।চুল ধুলেই এইগুলো উঠে যাবে।।
তরীঃ তত্তী(খুশি হয়ে)
ঈশাঃ হুম মামনি সত্যি।
তরীঃ তাহলে তল তল।।আমাল এগুলো উতিয়ে দাও
ঈশাঃ হুম চলো।
পরেরদিন সকালে
যেহেতু আজ মেঘ আর তরীর বার্থডে তাই সবাই একসাথেই তাদের বার্থডে টা পালন করে।।তাই সবাই খুব সকালে উঠে কাজে লেগে পড়েছে।।আর তরী পাকুনি ও উঠে পড়েছে।মেঘকে উঠতে নাহ দেখে তার মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি এলো।।চুপিচুপি মেঘ যে ঘরে ঘুমিয়েছে সেই ঘরে ঢুকলো।
তরীর হাসির শব্দে মেঘের ঘুম ভেঙে যায়
মেঘঃ তুই আমার রুমে কেন।।আর ডাফারের মতো হাসছিস কেন
তরীঃ 🤭তোমাল তুল
মেঘঃ মানে
তরীঃ দেকো দেকো।। আয়না তে গিয়ে দেকো
মেঘ আয়নার সামনে গিয়ে দেখেই মাথায় আগুন ধরে গেল।।
মেঘঃ বৃষ্টি 😤📣
(তরী কে শুধু মেঘই বৃষ্টি বলে।।কারন ওর হওয়ার দিন মেঘ কি বলেছিলো সবার নিশ্চয়ই মনে আছে)
তরী তো ভো দৌড়। এক দৌড়ে গিয়ে নীড়ের পিছনে লুকানো।
মেঘ ও রেগে মেঘে আসলো
।আসলে হয়েছে কি তরী কাঁচি নিয়ে মেঘের চুল কেটে দিয়েছে (ভালোবাসা এমনও হয় Season 2)
তরীকে দেখে নীড় তাকে কোলে তুলে নিলো।
নীড়ঃ ঘুম ভেঙেছে আমার বার্থডে গার্লের
তরীঃ হুম
সেই সময়ই মেঘ আসলো
মেঘঃ মামা ওকে নিচে নামাও
নীড়ঃ কেন কি হয়েছে।।আর তোমার চুল??
তরীঃ 🤭
মেঘঃ মামা তুমি ওকে নিচে নামাও তারপর বলছি(রেগে)
নীড়ঃ বাট কেন(নীড় তো কিছুই বুঝছে নাহ)
মেঘঃ মামা দেখেছো ও আমার চুলের কি হাল করেছে আজ তো আমি একে ছাড়বো নাহ(রাগে ফোপাঁতে ফোপাঁতে)
তরীঃ আব্বু ও না কাল আমাল তুলে তুইংগাম লাগিয়ে দিতিলো।।তাই আমি ওল তুল কেতে দিয়েতি😁
নীড়ঃ 😳(মনে মনে-😂)
মেঘঃ মামা তুমি হাসছো
নীড়ঃ কই নাহ তো(🤣)
মেঘঃ ওকে নিচে নামাও।।
নীড়ঃ আচ্ছা আচ্ছা আর রাগারাগি করো নাহ।।তুমি ওর চুলে চুইংগাম লাগিয়েছো এখন ও চুল কেটে দিয়েছে।।সমান সমান তাই নাহ।।সো নো ফাইটিং ওকে
মেঘঃ😒
নীড়ঃ আর দুইজন দুইজনের পিছনে লাগবে নাহ ঠিকাছে।
মেঘঃ হু
তরীঃ ওকে আব্বু
নীড়ঃ এইতো গুড।। এখন যাও মেঘ ভাইয়ার সাথে গিয়ে বাইরে খেলা করো।।আমরা এখানে কাজ করি।।
তরীঃ ওকে।
নীড় তরী কে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল।।
তরীঃ তল ভাইয়া বাইলে যাই
মেঘঃ যাস্ট গো ফর্ম হেয়ার।(বলেই মেঘ চলে গেল) (ভালোবাসা এমনও হয় Season 2)
তরীঃ হুহ দং😏
নীড় কোনমতে হাসি আটকিয়ে নিজের রুমে ঢুকলো।
নেশাঃ হাসছেন কেন
নীড়ঃ আসলে আমার পাকুনি বুড়িটা আজ কি করেছো জানো😅
নেশাঃ কি করেছে
নীড় নেশাকে সব ঘটনা খুলে বললো।।
নেশাঃ 😕আমার মেয়েটা দিন দিন এতো দুষ্টু হয়ে যাচ্ছে
নীড়ঃ তো কি হয়েছে।।আমার কিন্তু বেশ লেগেছে(হেসে)
নেশাঃ হুহ।।মেয়ে দুষ্টুমি করবে আর বাবা আস্কারা দিবে।।আরকি লাগে তাহলে।।তা কোথায় পাকুনি টা শুনি
তরীঃ এইতো আম্মু আমি একানে😃
নেশাঃ এইদিকে আসো।।
তরী গুটিগুটি পায়ে আসলো।
নেশাঃ তুমি মেঘ ভাইয়ার সাথে আজ দুষ্টুমি করেছো হুম???
তরীঃ একতু করেতি🤭
নেশাঃ এই রকম দুষ্টুমি আর করবে নাহ কেমন
নীড় পিছন থেকে তরী কে ইশারা করছে ওকে বলতে।।না হলে মাইর দিবে নেশা।
তরীও চোখ পিটপিট করে ওকে বলে দিলো।
নেশাঃ এইতো আমার সোনা মা(তরীকে কোলে তুলে কপালে চুমু দিলো)
তরীঃ হুম আমি তো গুত গাল।।তবার কথা তুনি
নীড়ঃ হুম তুমি তো আমার গুড গার্ল।।
নেশাঃ অনেক কথা হয়েছে।।এখন রেডি হয়ে নেও।।সবাই এসে পরবে একটুপর।
নেশা তরীকে রেডি করিয়ে দিলো
।হোয়াইট কালারের বার্বিডল জামা,দুইপাশে দুইটা জুটি করে দিলো।একদম পুতুলের মতো লাগছে।
নীড়ঃ বাহ আমার প্রিন্সেস কে তো আজ পরীর মতো সুন্দর লাগছে
তরীঃ তত্তী(মিষ্টি হেসে)
নীড়ঃ হ্যা বাবাই।
তরীঃ তাহলে কি আমি আদ পরীর মতো উততে পালবো😃
নেশাঃ 🤭
নীড়ঃ 😑নাহ বাবাই তুমি তো এখন ছোট।।বড় পরীরা উড়তে পারে।।তুমিও বড় হলে উড়তে পারবে।।
তরীঃ ওওঅঅ
সন্ধ্যা বেলা সব মেহমানরা উপস্থিত হলো।তরী তো সেই খুশি।।কারন মামনি তার পিঠে দুইটা ফেরি পাখা লাগিয়ে দিয়েছে।।ঘুড়ে ঘুড়ে সেটা সবাইকে দেখাছে।
মেঘ ব্লাক কালারে সুট আর হোয়াইট কালের শার্ট, আর জিন্স প্যান্ট পড়েছে।।সিল্কি চুল গুলো একপাশে পরে আছে।।দেখতে সুন্দর লাগছে।।বাট রাগে বোম হয়ে আছে।।কারন তরী তার চুল গুলো কেটে দিয়েছে।।যদিও তরী ওতোটা কাটেনি।।চুল কাটা তা বুঝা যায় নাহ।।বাট মেঘ তবুও প্রচন্ড পরিমানে রেগে আছে। আর তাছাড়াও নয়েস,কোলাহল একদম পছন্দ নাহ ছেলেটার।।আর নাহ কারো সাথে বেশি কথা বলা পছন্দ।।তাই সবার থেকে একটু দুরেই বসে আছে সে।।কিন্তু মেঘকে দেখে তরী তার কাছে ছুটে এলো
তরীঃ মেঘ ভাইয়া মেঘ ভাইয়া
মেঘঃ কি হয়েছে(বিরক্তি নিয়ে)
তরীঃ আমাকে কেমন লাগতে
মেঘঃ কেমন আবার লাগবে প্রতিদিন যেমন লাগছে সেইরকমই লাগছে(বিরক্তি নিয়ে)
তরীঃ মানে আমাকে আদ তুন্দর লাগতে নাহ(ঠোঁট উল্টিয়ে)
মেঘঃ উফফ কথায় কথায় ঠোঁট উল্টাস কেন তুই।।চোখে কি অটোমেটিক পানি এসে থাকে তোর(রেগে)
তরীঃ 😭তুমি তো বলতো আমাকে তুন্দর লাগতে নাহ🥺
মেঘঃ উফফ খুব সুন্দর লাগছে।হেপি।।এখন কান্না অফ কর।।তুই কাদলে আমার ভালো লাগে নাহ জানিস নাহ😠ডাফার একটা(তরীর চোখ মুছে দিয়ে)
তরীঃ তলি
মেঘঃ সরি বলতে হবে নাহ।।ফুপির কাছে যা।।আর বল মুখের এগুলো ঠিক করে দিতে।।কেদে একদম সব নষ্ট করে ফেলেছিস
তরীঃ ওকে
রাতে সব মেহমানরা খেতে বসেছে।।মেঘ নিজের হাতেই খাচ্ছে।।যদিও ও ছোট।।বাট ও অন্যের হাতে খাওয়া পছন্দ করে নাহ।।
এইদিকে তরীর ও খিদে পেয়েছে ভিষণ। বাট নিজের হাতে খেতে পারে নাহ।।আর নেশাকে ও খুজে পাচ্ছে নাহ।তাই গুটিগুটি পায়ে মেঘের সামনে গিয়ে তার পাশে বসলো।
মেঘ দেখেও পাত্তা দিলো নাহ।
তরী এইদিক ওদিক তাকিয়ে মেঘের হাতে এক আঙ্গুল দিয়ে খোঁচাতে লাগলো।
মেঘঃ হোয়াট(ভ্রু কুচকে)
তরীঃ খিদে পেয়েতেঠোঁট উল্টিয়ে)
মেঘঃ তো খা কে আটকাচ্ছে
তরীঃ আম্মু কে তো পাততি নাহ
মেঘঃ তো নিজের হাতে খা
তরীঃ আমি নিদের হাতে খেতে পালি নাহ(মন খারাপ করে)
মেঘঃ তো আমি কি করবো।।(বলেই চুপচাপ খেতে লাগলো।
এইদিকে তরী আর মেঘকে জোর করলো নাহ।।চুপচাপ এদিক ওদিক তাকাচ্ছে মন খারাপ করে।
একটুপর মেঘ দেখলো তরী গাল ফুলিয়ে বসে আছে।
মেঘঃ উফফ অসহ্য।। দেখি হা কর। আমি খাইয়ে দিচ্ছি
তরীঃ তুমি আমাকে খাইয়ে দিবে🤗
মেঘঃ হুহ।।হা কর(খাবার সামনে ধরে)
তরীঃ আমি তাতিত দিয়ে খাবো নাহ।।নিতে পলে যায়🙁
মেঘঃ তো এখন কি তোকে হাতে করে খাওয়াবো নাকি(রেগে)
তরীঃ তাক তোমাকে খাওয়াতে হবে নাহ।তুমি খাও🤕
মেঘঃ তুই সত্যি আমাকে জ্বালিয়ে মারবি😤নে হা কর হাত দিয়েই খাইয়ে দিচ্ছি।
(মেঘ ও যথেষ্ট ছোট।।মাত্র ৫ বছর সে কি আর ওতো ভালো করে খাওয়াতে পারে।।তবুও খাইয়ে দিলো কোন রকমে)
তরীঃ ইয়াম্মি।।আমি আলো খাবো
মেঘঃ রাক্ষসী।। আমাকে খা(রেগে)।।দেখছিস খাইয়ে দিতে পারছি নাহ।।এখন যতোটুকু খেয়েছিস তাই হবে।।পরে ফুপি আরো খাইয়ে দিবে।।
বলেই উঠে হাত ধুতে চলে গেল।।তরী ও পিছনে পিছনে গেল।
মেঘঃ কি আবার আমার পিছনে এসেছিস কেন
তরীঃ মুখ ধুইয়ে দিবা নাহ
মেঘঃ 😤।।হু দিচ্ছি।।
মেঘ তরীর মুখ ধুইয়ে দিয়ে মুছে দিলো।।তারপর গিয়ে সোফাতে বসলো।
তরীও পিছো পিছো গিয়ে সোফায় বসলো।
মেঘঃ তুই আবার আমার পিছনে এসেছিস।।।
তরীঃ আতলে তোমাকে তেঙ্কিউ দিতে এতেছি
বিরক্তিকর ফেস নিয়ে তরীর দিকে তাকালো।
মেঘঃ এটা তেঙ্কিউ নাহ thank you
তরী দুইবার চোখ পিট পিট করলো।।তারপর আবার বলার চেষ্টা করলো।
তরীঃ তেঙ্কিউ
মেঘঃ thank you
তরীঃ তেঙ্কিউ
মেঘঃ তোর ধারা কিচ্ছু হবে নাহ।।সর এখান থেকে।।
তরী এইদিক ওদিক ঘুরে কাউকে দেখতে না পেয়ে মেঘের পাশে আবার বসে পড়লো
মেঘঃ?
তরীঃ আম্মু যাবো
মেঘ বিরক্তিকর ফেস নিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে নীড়কে দেখতে পেল।।
তরীর হাত ধরে সেদিকে এগোতে লাগলো।
।
চলবে
বিঃ দ্রঃ একটু নিচে ভালো করে লক্ষ করুন পরবর্তী পর্বের লিংক দেয়া আছে
👉 এক পলকে দেখে নিন সহজে গল্প খুঁজে পাওয়ার সুবিধার্থে দেওয়া হল