ভালোবাসার প্রতারণা

ভালোবাসার প্রতারণা ! সিজন 2 ! Part- 03

তারা রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে আছে। তখনিই মেসেজের টুং শব্দটা শুনে ফোনটা হাতে নেয়। আকাশের মেসেজ এসেছে কাল বসুন্ধরাতে দেখা করবে সাথে কিছু কেনা কাটাও। তারা “ঠিক আছে” রিপ্লাই দিয়ে দিল। আকাশকে আগে অসহ্য লাগলেও এখন ভালোই লাগে। আকাশের সাথে অনেক সুন্দর টাইম স্পেন্ড করা হয়। ফোনটা রেখে যেই না আবার চোখটা বন্ধ করবে তখনিই একটা কল আসে। আকাশ কল দিয়েছে ভেবে স্ক্রিনে থাকা নাম্বারটা না দেখেই কল রিসিভ করে “আকাশ আবার কি হলো ! বললাম তো যাব।”
ঐ পাশের ব্যক্তি বলে উঠল “কোথায় যাবে তুমি?”
তারা যেন এমন জবাব আশা করেনি। করবেও বা কি করে ও তো ভেবেছিল আকাশ কল করেছে। তারা নম্বরটা চেক করতে গিয়ে দেখে এটা আকাশের নম্বর না একটা আননোন নম্বর। তারা কিছুটা অপ্রস্তুত ভাবেই বলে উঠল

“আপনি কে?”

“আমি কে তা জানাটা কি খুব বেশি জরুরী!”

“জ্বী। আমাকে ফোন দিয়েছেন আমার সাথে কথা বলছেন এখন কি আমার এটা জানার অধিকার নেই যে আপনি কে?”

“এখানে অধিকার কথাটা কেমন বেমানান লাগছে না!”

“হয়তো। তবে আপনি কে তা জানাটা আমার জন্য খুব প্রয়োজোন। কারণ যার তার সাথে কথা বলে আমি নিজের গুরুত্বপূর্ণ সময়টা নষ্ট করে চাইনা।”

“আপনি তো কোনো কাজ করছেন না। আপনি তো শুয়ে আছেন হয়তো আপনার দুচোখেরা ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর এই মুহূর্তে একটু কথা বললে আপনার ঘুমোতে একটু দেরি হবে হয়তো, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হবে না।”

“আপনি জানলেন কি করে আমি শুয়ে আছি?”

“এত রাতে তো মানুষ শুয়েই থাকবে কারণ এখন যে ঘুমানোর সময়।”

“আচ্ছা তা ঠিক আছে কিন্ত সময়ের কাজ সময়ে করা ভালো নয় কি?”

“আমি তো তা বলিনি।”

“তাহলে?”

“আমার সাথে কথা বলতে কি খুব বেশি সমস্যা হবে?”

“আমি তা বলিনাই বলেছি আপনার নাম পরিচয় কিছু জানাতে।”

“প্রভাত। প্রভাত চৌধূরী আমার নাম।”

“প্রভাত চৌধূরী! আমি কি নামটা কোথাও শুনেছি ?”

“শুনেছেন হয়তো তা আমি জানবো কি করে!”

“যাই হোক আমায় ফোন দিয়েছেন কেন?”

“যদি বলি প্রেম করতে!”

“তাহলে গুড বাই”

“আরে বাবা আমি কি সত্যি প্রেম করতে বললাম নাকি?”

“তাহলে বলুন ফোন দিয়েছেন কেন?”

“আপনাকে জানতে, আপনাকে চিনতে।”

“তাই নাকি! তাহলে তো সরাসরি কথা বলেই জানতে পারবেন।”

“তা যে হওয়ার নয়।”

“কেন?”

“তা এখন বলা যাচ্ছেনা। আচ্ছা আমার মনে হয় আপনার ঘুম পাচ্ছে।”

“তো ?”

“এখন ফোনটা রাখছি। আর শুনুন “নজর না লাগে যেন চাঁন্দের গায়ে”

“মানে”

“গুড নাইট”

“আরে শুনুন কি বললেন এটা! হেলো হেলো!যা বাবা কলটা কেটে দিল। লোকটা কে? আর শেষের কথাটা কি বলে গেল!”নজর না লাগে যেন চাঁন্দের গায়ে?”পাগল মনে হয়। এত রাতে একটা মেয়েকে ফোন দিয়ে যত্তসব পাগলামি করছে। আচ্ছা আমি তখন লোকটাকে কিছু বললাম না এখন কেন বলছি? তাকে বললেই তো হতো। ধূর ভালো লাগেনা আমার ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাই সকালে আকাশের সাথে বের হতে হবে তো।”

এদিকে….

কাল তুমি কোথায় যাচ্ছো তারা তা না জানলে যে আমার চোখে আজ ঘুমেরা ধরা দিবে না। প্রভাত আকাশের রুমে গেল। আকাশ মোবাইলে কারো পিক দেখছে। প্রভাত ভালো করে খেয়াল করে দেখলো তারার ছবি। রাগে প্রভাতের চোখ লাল হয়ে গেল তাও কিছু বলল না কারণ এই মুহূর্তে রাগটা কন্ট্রোল করা খুব দরকার তা না হলে সে জানবে কি করে কাল আকাশ আর তারা দেখা করতে কোথায় যাচ্ছে!

—-আকাশ আসবো?

—-আরে ভাই যে!এসো এসো তোমার আমার ঘরে আসতে আবার অনুমতির দরকার হলো কবে থেকে?

—-না এমনিতেই তুই ব্যস্ত ছিলি হয়তো তাই আগেই নক করে নিলাম যাতে তোর মনোযোগটা অন্যদিকে আসে।

আকাশ বুঝে গেল প্রভাত কি বলতে চাইছে। লজ্জা পেয়ে বলল

—-ভাই তুমিও না! ঐটা তো শুধু

—-থাক থাক এত ভেঙ্গে বলতে হবে না। তোর সাথে একটা জরুরী কথা ছিল।

—-আমার সাথে! লাইক সিরিয়াসলি?

—-কেন? তোর সাথে কি আমার কোনো জরুরী কথা থাকতে পারে না!

—-তা হবে কেন?

—-তাহলে!

—-প্রভাত চৌধূরীর মতো একজন বিখ্যাত বিজনেসম্যান আমার সাথে জরুরী কথা বলতে আসছে তা কি অবাক হওয়ার বিষয় নয়?

—-আকাশ!(রাগি চোখে)

—–স্যরি ভাই। আমি ফান করছিলাম বল কি কথা ছিল।

—-কাল কি তোর কোনো দরকারি কাজ আছে?

—-কেন?

—-যা জিজ্ঞেস করছি তা বল।

—-হুম। আসলে একটু বসুন্ধরাতে যাবো।

—-ওহ।(তাহলে আকাশ তারা বসুন্ধরাতে যাচ্ছে। আমার অগোচরে এত কিছু ঘটছে!ওয়াও তারা গুড জব। আমার দিকে তো ফিরে তাকাতেও তোমার মন চায় না আর সেখানে আমার ভাইয়ের সাথে ঘুরতে যাচ্ছো? জাস্ট ওয়েট এন্ড সি আমি কি করি!)

—কি হলো ভাই? কেন বললে নাতো!

—-না থাক ভেবেছিলাম তোকে নিয়ে একটা মিটিং এ যাবো। তোর যদি দরকারি কাজ থাকে তাহলে দরকার নেই।

—-ভাই বেশি ইমপোর্টেন্ট কিছু?

—-না তা হলে তো তোকে জোর করে নিয়ে যেতাম। আচ্ছা আমি তাহলে আসি কালকে চট্টগ্রাম থেকে আমার ক্লায়েন্ট আসবে। এখন দেরি করে ঘুমালে কালকে সঠিক টাইমে যেতে পারবো না।

—-ওকে গুড নাইট।

—-গুড নাইট।

প্রভাত আকাশের রুম থেকে চলে আসলো। কাল যে তারাকে খুব বড় একটা শক দিবে প্রভাত। তার জন্য তারাকে প্রস্তুত হতে হবে। আর মাত্র 7 দিন আছে ওদের বিয়ে হওয়ার। বিয়ের ডেট একটু পিঁছিয়েছে কারণ তারার বাবা একটা দরকারি কাজে দেশের বাহিরে গেছে।

সকালে….

আকাশ তারাকে তার বাসা থেকে পিক করে শপিংমলে গেল। দুজনেই নানান শপে ঢুকে দেখছে আকাশ তারাকে অনেক গুলো শাড়ি দেখালো কিন্তু তারার পছন্দ হলো না। তখন আকাশ ওকে একটা গোল্ডেন সিল্কের শাড়ি ট্রাই করে দেখতে বলে তারা ট্রায়াল রুমে যায় ওমনি পেছন থেকে কেউ ওর হাত টান দিয়ে ওকে নিয়েও ট্রায়াল রুমে ডুকে পড়ে। তারা লোকটির চেহারা দেখে অবাক হয়ে বলে

—আপনি!

চলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *