ভালোবাসার প্রতারণা

ভালোবাসার প্রতারণা ! সিজন 2 ! Part- 04

তারা নিজের সামনে যেই ব্যক্তিকে দেখে অবাক ভলো সে আর কেউ নয় প্রভাত।

—হুম আমি। কেন অন্য কাউকে আশা করছিলে বুঝি!

— আপনি কিন্তু নিজের লিমিট ক্রস করে যাচ্ছেন। এর ফল ভালো হবে না কিন্তু।

—কি ভালো হবে আর কি ভালো হবে না তা আমার দেখার বিষয় না। আমার দেখার বিষয়, জানার বিষয়, বোঝার বিষয় শুধুই তুমি।

— হোয়াট! আমি আপনার জানার বিষয়, বোজার বিষয়, দেখার বিষয়? আপনার কথার তো আগা গোড়া কিছুই বুঝতে পারছিনা। আমাকে আপনি আবারো টাচ্ করলেন? আপনার সাহস তো কম না!

—-আমার সাহস বরাবরের মতোই খুব বেশি।

—-তা তো দেখেই বোঝা যাচ্ছে। আপনি আমাকে ছাড়ুন আর ট্রায়াল রুম থেকে বেরিয়ে যান। যদি তা না করেন আমি কিন্তু চিৎকার করবো।

—চিৎকার করবে? কর মানা করেছে কে! সবাই জানুক যে তুমি একটা ছেলেকে নিয়ে একটা বদ্ধ রুমে,,,,,(ডেভিল স্মাইল দিয়ে)

এবার তারা থতমত খেয়ে গেল আসলেই তো সে তো এটা ভাবেনি। তাছাড়া এখন যদি ওদের কেউ এভাবে একসাথে বের হতে দেখে তাহলে কি হবে! সবাই কি ভাববে? এসব ভাবতে ভাবতে তারার মাথায় জট লেগে গেল। নিজেকে শান্ত করে প্রভাতকে কিছু বলতে যাবে তখন খেয়াল করলো প্রভাত তারাকে খুব ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তারা এতক্ষণ তো এটা মাথা থেকেও মনে হয় ঝেরে ফেলেছে যে সে প্রভাতের বুকের সাথে লেগে আছে। তারার বুকটা এখন ধুক করে উঠল প্রচন্ড ভয় লাগছে এই লোকটা সুবিধার নয় ঐদিন যা করলো তা কম কিছু ছিলনা। আজ যদি তেমন কিছুই করে ফেলে বা তার চেয়ে খারাপ কিছু তারার মাথা ব্যাথা করছে কোনো ভাবেই শক্তি পাচ্ছেনা প্রভাতকে সরানোর। তারা ঘামাতে লাগলো ওর প্রচন্ড অস্বস্তি হচ্ছে।

প্রভাত তারাকে দেখছে আর ভাবছে মেয়েটা ওকে সহ্য করতেই পারে না। অথচ কিছুদিন পর ওদের বিয়ে বাকি জীবন তারা কিভাবে কাটাবে প্রভাতের সাথে! আর তার চেয়ে বড় কথা আকাশের সাথে খুব বেশিই ঘনিষ্ট হয়ে গেছে তারা। এভাবে চললে সব কিছু নষ্ট হয়ে যাবে। তাছাড়া তারার পাশে অন্য ছেলেকে দেখলে ওর গা জ্বলে ইচ্ছে করে তাকে খুন করে দিতে। আকাশ ওর আপন ভাই তাই আকাশের কোনো প্রকার ক্ষতি ও করবেনা তবে ওদের মধ্যে আসতেও দিবেনা।

—-আপনি এখানে কেন এসেছেন?

তারার প্রশ্নে ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে এলো প্রভাত।

—কেন আমি আসতে পারি না!

—তা পারেন কিন্তু আমার সাথে এভাবে

—-হুম। তোমাকে একটা কথা বলতে এসেছি।ধরে নাও তোমাকে ওয়ার্নিং দিচ্ছি।

—-মানে?

—-আকাশের থেকে দূরে থাকো। শুধু আকাশ নয় যেকোনো ছেলের থেকেই দূরে থাকবে।

—-আমি আপনার কথা শুনতে যাবো কেন? কে হোন আপনি আমার!

—আমি কে তা নিয়ে তোমার এত না ভাবলেও চলবে যা বলছি তাই করবে না হলে এর ফল ভালো হবেনা।

প্রভাত আর দেরি না করে বেরিয়ে গেল সেখান থেকে তখনিই একটা সেলার বলে উঠল

—স্যার আপনি এই রুম থেকে বের হলেন যে? ঐখানে তো একজন ম্যাম

—-হুম ঐ ম্যাম আমার ওয়াইফ। আপনার কোনো প্রবলেম আছে!( রাগী চোখে)

—-সরি স্যার।

রাগে গজগজ করতে কলতে প্রভাত শপিংমল থেকেই বেরিয়ে গেল।
এদিকে তারা ভাবছে এই লোকটা কেন এরকম করছে? ওর সাথে কিসের শত্রুতামি করছে? লোকটার তো কোনো ক্ষতি করেনি ও! মেজজটাই বিগড়ে গেল তাই কোনো শাড়ি ট্রাই না করেই বের হয়ে আসল ট্রায়াল রুম থেকে।

আকাশ তারাকে বলল

—কি হলো শাড়ি পড়োনি?

—হুম পড়েছি।

—তো আমাকে একবার বের হয়ে এসে দেখালে কি হতো?

—-আমার ভালো লাগছেনা আকাশ বাড়ি যাবো। আর এই শাড়িটা প্যাক করে দিতে বলো।

—-ঠিক আছে।

তারাকে আকাশ শাড়িটা গিফ্ট করে তারা অনেকবার নিজে টাকা দিতে চেয়েছে কিন্তু আকাশ নিজেই আগে টাকা দিয়ে দেয়। পরে তারাকে একটা ধমক দেয় আর বলে এটা ওদের বন্ধুত্বের ওর দেয়া প্রথম উপহার। তাই তারা আর কিছ বলে না।

শপিংমল থেকে বের হয়ে নিচে এসে আকাশ তারাকে বলে একটু অপেক্ষা করতে। তারপর কোথায় যেন চলে যায়। তারাও অপেক্ষা করতে থাকে তখনিই আকাশ আসে সাথে একটা মেয়েও। তারা চোখের ইশারায় বলে “কে মেয়েটা?”

—-তারা আজকে তোমাকে এখানে ডাকার মেইন রিজন হচ্ছে ও। আই মিন ইলিয়ানা।

—-ইলিয়ানা?

—-আমার গার্লফ্রেন্ড। আমরা চার বছর রিলেশনে আছি কেউ এই ব্যাপারে জানে না তুমি আমার বেস্টফ্রেন্ড তাই আমি তোমাকেই জানালাম। ইলিয়ানা এই হলো তারা।

—হ্যায়।

—-হেলো।

—-আকাশ আপনার কথা আমাকে অনেক বলে তাই বায়না ধরলাম আপনার সাথে দেখা করার।

—-আরো আগে দেখা করলেও তো পারতে।

—‘সময় ছিল না।

—-তাই নাকি?

—হুম।

—আচ্ছা এখন তো সময় আছে তাহলে এখন থেকে আমরা প্রায় দেখা করবো কেমন?

—ওকে।

—আচ্ছা তাহলে পরে আবার মিট করবো। তুমি আর আকাশ এখন কিছুটা সময় একা কাটাও আসলে আমার ভালো লাগছেনা তাই বাসায় যাবো।

—-আর ইউ ওকে তারা?

—-ইয়েস আকাশ। এটা সামান্য ব্যাপার অনেকক্ষণ ঘুরাফেরা করার ফলে খারাপ লাগছে। বাসায় গিয়ে একটু রেস্ট নিলেই ঠিক হয়ে যাবো।

—-আচ্ছা। তাহলে চলো আমি তোমাকে ড্রপ করে দিচ্ছি।

—-তার কোনো দরকার নেই আমি ড্রাইভারকে ফোন করে আসতে বলেছি ঐ তো এসেও গেছে। তুমি ইলিয়ানাকে সময় দাও। আর ইলিয়ানা আকাশের সাথে কিন্তু আমাদের বাসায় যাবে। কেমন?

—হুম।

—-ওকে বাই।

আকাশ আর ইলিয়ানাকে বিদায় দিয়ে তারা নিজের বাড়িতে চলে আসে। প্রভাতের কথা গুলোই শুধু ওর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। লোকটা ওর সাথে এমন করছে কেন? তাছাড়া তারা তো প্রায় ভুলেই যাচ্ছিল ঐদিনের কথা। আজ প্রভাত ওর সামনে আসাতে সব মনে পড়ে গেল আর ঐ রাগটাও পুনরায় মাথায় চেপে বসলো।

রাতে….

তারা ঘুমিয়ে আছে তখন ওর ফোনে একটা কল আসে। আননোন নম্বর তাই ধরেনি দ্বিতীয়বার ফোন দিলে তারা কিছুটা বিরক্ত হয়েই কল রিসিভ করে। তখন ওপাশের লোকটি বলে

—-কি ম্যাডাম ফোন ধরতে এত দেরি যে?

—-আপনি ?

—-কি ভুলে গেলেন কাল রাতে কল করা সেই ব্যক্তিকে।

—-ওহ আপনি আবার কল করলেন কেন?

—-ইচ্ছে করছিল তাই।

চলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *