বধুবরন-সিজন-2 ! Part- 04
নীলের মনটা ফুরফুরে মেজাজে হয়ে গেল শুভাকে যথার্থ কাজ দিতে পেরে।মন থেকে অনেক বড় পাপবোধের ভাড়টা মনে হলো নেমে গেছে।আসলে কি তাই? নীল দুপুরে অফিস চলে গেল।কাজ কে নীল জীবনের চেয়েও ভালোবাসে।কাজের প্রতি এই ভালোবাসা, একাগ্রতার জন্যই নীল আজ এই জায়গায় দাড়িয়ে আছে।কাজের সাথে কখনোই কম্প্রোমাইজ করে না।আজ অস্ট্রেলিয়ার একটা কোম্পানির সাথে গুরুত্বপূর্ন ডিল আছে।ডিনারও তাদের সাথেই করতে হবে।একটা নির্দিষ্ট রুটিন মাফিক নীলের দিনপঞ্জি চলে।এর হেরফের সচরাচর হয় না।তবুও আজ শুভাকে আনতে গিয়ে যথেষ্ট সময় নষ্ট হয়েছে। এই সময়টুকু পুষিয়ে নিতে হবে।এসব ভাবতে ভাবতে নীল ব্যস্ত হয়ে পড়লো নিজের কাজে।এদিকে শুভা জানে আর কি কি কাজ তার জন্য বরাদ্দ এ বাড়িতে।যদিও রান্নার জন্যই এসেছে অন্য কিছুও কি করা লাগবে?যেমন থালাবাসন মাজা,ঘর মোছা এসব কাজ।শুভা চুপচাপ কিচেনের এককোনে দাড়িয়ে আছে ২ ঘন্টা যাবত।এরমধ্যে দুএকজন রান্নাঘরে ঢুকেছে আবার বের হয়েছে।তাদের দৃষ্টির ভাব শুভাকে আরও অস্বস্তিতে ফেলেছে। ঐ দিনের ঘটনা না ঘটলে শুভা হয়তো আমতা আমতা করে হলেও কাওকে কিছু জিজ্ঞেস করতো। কিন্তু এখন সেটাও পারছে না লজ্জায়। এরা কি আর জানবে ঐদিন ওমন কিছুই হয় নি।এদের চোখের ভাষা বলে দিচ্ছে শুভার সাথে ঐ দিন নীলের শারিরীক সম্পর্ক হয়েছে। যার জেরেই শুভার মতো দু পয়সার গরিব মেয়ে এ বাড়িতে কাজ পেয়েছে।শুভা মনমরা হয়ে কিচেনের জানালার থাই গ্লাসের বাইরে তাকিয়ে দেখছে।এ পাশটা অনেক সুন্দর। ছোট খাটো একটা পার্কের মতো।সবুজ সবুজ ছোট ঘাসের উপর ছাউনি দেওয়া চারপাশে খোলা বসার জায়গা। দোলনাও আছে এক পাশে।ও পাশটায় একটা নেট টানানো।হয়তো ব্যাডমিন্টন খেলে এখানে।বাহারি ফুল,গাছের সমাহার একটু দূরেই।শুভা নড়েচড়ে বসলো বাগানের পাশের পাখির ঘরটা দেখে।চারপাশে নেট দিয়ে ঘেরা ঘরটায় বাজিগর,লাভবার্ড সহ নাম না জানা পাখির লাফালাফি, উড়াউড়ি দেখছে শুভা।এসব দেখতে দেখতে নিজের অবস্থান ভুলেই গেল একসময়।
“- এই মেয়ে ভাইজান তোমাকে আজ চলে যেতে বলেছে।হঠাৎ করে পেছন থেকে কারও রুক্ষ গলার আওয়াজ শুনে চমকে উঠলো শুভা।উঠে দাড়িয়ে বললো,
“-কিন্তু এখনও তো রাত হয় নি।
“- কেন রাতেও থাকোনের কথা নি? বুয়ার টিপুনি মারা কথা শুনে শুভার কালো মুখটা অপমানে আরও কালো হয়ে গেল।
“- আপনি যা ভাবছেন তা নয়।আমাকে বলা হয়েছিল রাতের খাবার তৈরি করে তারপর চলে যেতে।
“- স্যার রাতে ডিনার করে আসবেন।তুমি বাড়ি যাও।ওহ হ্যাঁ! কাল সকাল ৮ টা বাজার আগে আগে ড্রাইভার তোমাকে নিয়ে আসতে যাবে।
“- জ্বী! শুভা বোরকা গায়ে জড়িয়ে চলে যাবে তখনিই রিনা বুয়া আবার পেছনে ডাকলো।
“-এইগুলাও নিয়ে যাও।আমরা এসব বিদেশী খাবার খায় না।যার জন্য রান্না করছ সে তো খাবে না তাই তুমিই নিয়ে যাও।রিনা বুয়া কথাটা বলেই ঠেলা দিয়ে খাবার ভর্তি বাটিটা শুভার হাতে ধরিয়ে দিয়ে মুখ বাকিয়ে চলে গেল।
শুভার এবার কেঁদেই দিতে ইচ্ছা হচ্ছে। এমন কেন মানুষ? খাবে না ফেলে দিক।মুখের উপর এভাবে বলে? শুভা কাঁদো কাঁদো মুখে বাড়ি ফিরে আসে।সামি,রাবু,রাতুল খাবারগুলো পেয়ে সেই খুশি হয়।শুভার মাথাটা ঝিমঝিম করছে।জ্বরটা বোধহয় এখনও আছে। কাপড় বদলে মুখের উপর হাত রেখে শুয়ে থাকে চুপচাপ। মনিরা সুলতানা মেয়েকে এভাবে অসময়ে শুয়ে থাকতে দেখে পাশে এসে বসে।কপালে হাত বুলিয়ে দিতেই শুভা মাকে জড়িয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে।মেয়েকে এভাবে শব্দ করে কাঁদতে দেখে মনিরা ভয় পেয়ে যায়।
“- ও মা! কি হয়েছে? ও বাড়িতে কিছু হয়েছে? শুভা শুধু মাথা না সূচক ঝাকায়।তারপর আবার কাঁদতে থাকে।
“- বল না! কি হয়েছে?
“- বড় মা! আল্লাহ আমাকে পৃথিবীতে কেন পাঠিয়েছে বলো তো? মানুষের কটু কথা শোনানোর জন্য! নাকি প্রতিনিয়ত মানুষের কাছে ছোট হওয়ার জন্য। আমি মরে যাবো বড় মা।আমার বাঁচতে ইচ্ছা হয় না এমন জীবন নিয়ে।
“- ছি! এসব বলতে নেই রে মা।সৃষ্টিকর্তা সব জানেন,বোঝেন।তার চেয়ে ভালো কেউ কিছু জানে না।তোকে তিনি এই রূপেই পছন্দ করেছেন তাই তুই এমন।তার কাছে যা সুন্দর তা পৃথিবী সবকিছু থেকে উত্তম।মন্দ লোকে তো মন্দ কথা বলবেই।তবে সবাই কি মন্দ বলে বল?
“- না!শর্মির মা,শর্মি বলে শুভা তোর গায়ের রঙ কালো তাতে কি? তুই আর সব দিক দিয়ে সবার থেকে সুন্দর। তোর চোখের দিকে নাকের দিকে তাকালেই মনে হয় কোনো দক্ষ কারিগর অতি সুনিপুন ভাবে মেপে ঝুকে বসিয়েছে। মানুষ হাজার হাজার টাকা খরচ করে চুল সুন্দর করার পেছনে।আর দেখ আল্লাহ তোর চুলগুলো কতো সুন্দর করে বানিয়েছে।কোমড় অব্দি রিশমি সুতার মতো চিকচিক করে তোর চুলগুলো।বড় মা! আন্টি যদি সত্যি বলে তাহলে ঐ দোকানদার চাচা কেন বলে আমার বিয়ে হবে না।কেউ নাকি এমন কালা কুটকুটে, জারজ মেয়ে ঘরেও নেবে না।আমি জারজ কেন হলাম বড় মা! আল্লাহ আমায় পাক পবিত্র করে তোমার ঘরে কেন দিল না?একজন বলে আমি সৃষ্টিকর্তার অপূর্ব সৃষ্টি আরেকজন বলে নিকৃষ্ট সৃষ্টি। ও বড় মা কে সত্যি বলে বলো না?
মনিরা মেয়ের কান্না দেখে বুকের সাথে জড়িয়ে নেয় শক্ত করে।মনিরারও কষ্ট লাগে। মানুষগুলো এতো খারাপ কেন মনিরা বোঝে না।এমন ভালো মেয়ের মনে বিনা কারনে কষ্ট দেয়।
“- চুপ কর মা! চুপ কর! যে খারাপ সে সবকিছুই খারাপ চোখে দেখে।কে বলে তুই অসুন্দর, তোর বিয়ে হবে না? আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে এমন ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করলে আল্লাহ নিজেও সহ্য করবে না দেখিস? তুই তো তারই দেওয়া রূপ রঙ ধারণ করছিস। তোর তো এতে কোনো হাত নেই তবুও এসব নিচু স্বভাবের লোকরা এসব বলে।তুই কাদিস না সোনা মা আমার।যে যা খুশি বলুক।তুই আমার সন্তান। ধৈর্য ধর মা! দেখবি আল্লাহ একদিন এদের মুখে কষে ন্যায়ের থাপ্পড় লাগাবে।
“- আমার জন্মই পাপ বড় মা! তাইতো আল্লাহও আমাকে কষ্ট দেয় বার বার।
“- এমন কথা বলতে নেই মা।আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের সবসময় পরীক্ষায় ফেলে।ধৈর্য হারা হোস নে। ভরসা রাখ দেখবি তোকে আল্লাহ নিরাশ করবে না।
“- স্বান্তনা দিও না মা।আমি তো জানি এই কালো শরীর আর জারজ হওয়ার দাগ আমি কোনোদিন মুছতে পারবো না।কোনোদিনই না।এই সমাজ আমাকে কোনোদিন ভালো চোখে দেখবে না। ঐ দোকানদার কাকা ঠিকই বলেছে এমন অসুন্দর,জন্মপরিচয়হীনা মেয়েকে কে গ্রহন করবে? এ সমাজ এসমাজের মানুষ এতো উন্নত হয় নি এখনও বড় মা।মনিরা মেয়েকে বুঝিয়েও শান্ত করাতে পারলো না।দোকানদার বারেক সেই ক্লাস নাইন থেকে শুভাকে তার চার নম্বর বউ বানানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।শুভার মন মানসিকতা ভাঙার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে।মনিরা কয়েকবার বলেও বারেক কে শায়েস্তা করতে পারে নাই।
দুশ্চিন্তা আর কান্নার জোয়ারে শুভার জ্বরটা রাতে গা কাঁপিয়ে এলো।পরদিনও এক অবস্থা।একদিন কাটতেই জ্বরটা কমতে লাগলো।কিন্তু শরীর দূর্বল সাথে ব্যথা তো আছেই।বেশিক্ষণ দাড়িয়ে থাকা যায় না। তবুও মায়ের কথা অগ্রাহ্য করে শুভা নিজেই গাড়ি করে ও বাড়ি গেল।শুভাকে আসতে দেখে বুয়া হাসি মুখে এগিয়ে এসে হাত ধরে সোফায় বসালো।শুভা অবাক হলো বুয়ার আচরণে।শুভাকে আরও অবাক করে বুয়া শুভার ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করলো।
“- তোমার শরীর এখন কেমন মা!
“- জ্বী আন্টি আলহামদুলিল্লাহ। আন্টি সরি! আসলে
“- আরে সরি বলার দরকার নাই।আমরা সব জানি।ভাইজান আমারে সব বলেছে।আমারে মাফ করে দিও মা।আমি তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করছি।
“- না! না! আন্টি ঠিক আছে।আপনি গুরুজন। বকতেও মারেন ধমকও দিতেন পারেন। কিন্তু আন্টি খারাপ ভাববেন প্লিজ।
“- না! আর ভাববো না।শুভার মুখে মাথায় হাত বুলিয়ে বলে রিনা বুয়া।
“-সাহেব কি বাসায় আন্টি?
“- না! এই তো একটু আগেই জ্যাক কে নিয়ে বের হলো।
“- ওহ!তাহলে এখন আমি কি করবো আন্টি।
“- কিছুই না।
“- মানে!
“- মানে তোমার শরীর মোটেও ভালো নেই।এখনও গা গরম আছে।মুখ চোখ শুকিয়ে একটুখানি হয়ে গেছে আর তুমি কিনা কাজ করতে চাও? ভাইজান জানলে আস্ত রাখবে না আমাকে।
“- তাহলে কি চলে যাবো আমি।
“- উমম।আসছো যখন একটু বসো।ভাইজান চলে আসলে দেখা করেই যেয়ো।
“- ঠিক আছে।
রিনা বুয়া আরও কিছুক্ষণ শুভার সাথে কথা বলে রান্না ঘরে শুভাকে নিয়ে গেল।বুয়া সব গোছাচ্ছে শুভা একটু একটু এগিয়ে দিচ্ছে বুয়ার নিষেধ উপেক্ষা করে।আধা ঘন্টায় এই অচেনা পরিবেশ শুভার কাছে চেনা হতে লাগলো।বুয়া বাড়ির মালি,দারোয়ান, আরও একজন কাজের মেয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।সবাই শুভাকে আজ সাদরে গ্রহণ করে।অনেক কথায় হয় বুয়ার সাথে।শুভার মা,বাড়ির অন্যান্য সবার কথাই বুয়া শোনে।বুয়াও নিজের বিষয়ে বলে।তার এক মেয়ে আছে যে কিনা এখন রাজশাহী বোডিং স্কুলের ৯ম শ্রেনীতে পড়ে।স্বামী পরিত্যক্তা রিনা বুয়া নিজের দুঃখের অতীত বলতে গিয়ে ভাবুক হয়ে পড়ে। নেশাখোর, উন্মাদ স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে কোলের শিশুকে নিয়ে ঢাকা চলে আসলে ভাগ্যক্রমে নীলের বাড়িতে কাজ পায়।তখন থেকেই এখানে আছে।নীলই বুয়ার মেয়ে রূপাকে রাজশাহী বোডিং স্কুলে রেখে পড়াচ্ছে।শুভা রিনা বুয়াকে স্বান্তনা দিল।নিজের কষ্ট ততক্ষণই বিশাল লাগে যতোক্ষণ অন্যের পাহাড়সম কষ্টের কথা না জানা থাকে।শুভার মনে হলো জীবন ওকে সত্যি ওতোটাও খারাপ রাখে নি।মনে মনে শুকরিয়া করলো রবের।শুভা বসার ঘরে সোফা ঝাড়া মোছা করছিল তখনি একটা নাদুস নুদুস বড় বড় লোমওয়ালা কুকুর এসে ঘেউ ঘেউ করতে লাগলো।সামনে কুকুর দেখে শুভা চিৎকার করে সোফায় উঠে চোখ বন্ধ করে বসে রইল।বুকটা জোরো জোরে ধকধক করছে।চোখ খুলতেই দেখে সামনে নীল বসে হাসছে কুকুরটাকে হাত দিয়ে আদর করতে করতে।
শুভা আস্তে আস্তে সোফা থেকে নেমে যাবে তখনই এতোক্ষন একনিবিষ্টে চেয়ে থাকা জ্যাক ঘেউ ঘেউ করে উঠলো।শুভা আবার চিৎকার দিয়ে কাঁদো কাঁদো হয়ে সোফায় শিটে বসে রইল।
“- জ্যাক! কুল ডাউন মাই বয়।রিলাক্স। শুভার দিকে মৃদু হেসে তাকিয়ে জ্যাককে আদর করতে করতে বললো নীল।শুভার মায়াবী মুখটা নীলকে কেন যেন খুব আকৃষ্ট করে।এমন ফিল কোনোদিন হয় নি যেমন টা এই মেয়েকে প্রথম ছুয়ে হয়েছিল।এবং এখনও দেখলে হয়।মেয়েটার কালো মুখটা ভয়ে অপূর্ব কালো দেবী মূর্তির মতো লাগছে।ঠিক যেন ক্লিওপেট্রা। সাদামাটা গরিবের ক্লিওপেট্রা।কথাটা ভেবে নীলের মনে অদ্ভুত অনুভূতি খেলা করলো।এই ২৮ বছরেও যে অনুভূতির সংকেত নীল পায় নি।
এতোক্ষনে বুয়া ছাদ থেকে নিচে নেমে শুভাকে ওভাবে ভয়ার্ত চোহারায় বসে থাকতে দেখে এগিয়ে যায়।
“- কি হয়েছে!
“- আন্টি! কুত্তা।
“- সাট আপ! কুত্তা কি! বলো জ্যাক।
নীলের আচমকা ধমকে শুভা বুয়ার পেছনে মুখ লুকায়।
“- ভয় পেয়ো না। ওর নাম জ্যাক।ও কিছুই করবে না তোমাকে।
“- করবে! দেখছেন না কিভাবে ঘেউ ঘেউ করছে কুত্তাটা।
“- আবার কুত্তা বলেছ তুমি জ্যাককে?
“- আন্টি!
“- ভাইজান আমি দেখছি।আপনি শান্ত হন
“- শুভা! এ তোমাদের গলির কুকুর গুলোর মতো না।একদম শান্ত শিষ্ট আর পোষ মানা।তুমি অচেনা তো তাই এমন করছে।একবার পরিচয় হয়ে গেলে দেখবা কতো ভালোবাসা দেয়।জ্যাক বাবা! এদিকে আসো!
বুয়ার ডাক শুনে জ্যাক ঝুলানো কান নাড়াতে নাড়াতে জিহ্বা বের করে এসে ঘেউ ঘেউ করতে করতে দাড়ায় শুভার সামনে।রিনা বুয়া জ্যাককে আদর করে শুভার পাশে নিয়ে আসে।
“- শুভা ওর মাথায় গলায় হাত বুলাও।বুলাও
“- না! না! আমার ভয় করে।এই টা আমাকে ঠিক কামড় দেবে।হুস! হুস! শুভার প্রত্যাখ্যান পেয়ে জ্যাক আরও জোরে ঘেউ ঘেউ করে।নীল রেগে মেগে শুভাকে জোর করে হাত ধরে টেনে উঠিয়ে জ্যাকের হাতে গলায় হাত বুলিয়ে দেয়।শুভা চোখ বন্ধ করে নীলের পিঠের নাক ঠেসে অন্য হাতে নীলের টিশার্ট খামচে ধরে থাকে।হাতে একটু পর যখন লোমশ কিছু অনুভব করে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে জ্যাক জিহ্বা বের করে খুশি খুশি চোখে তাকিয়ে আছে।শুভা জ্যাকের উপর থেকে চোখ সরাতেই নিজেকে আবারও নীলের খুব কাছে আবিষ্কার করলো।শুভা লজ্জায় মাথা নুয়ে সরার চেষ্টা করেও পারছে না।নীল শক্ত করে ওর একটা হাত জ্যাকের উপর ধরে রেখে মোবাইলে কথা বলছে।শুভার টানাটানি করা দেখে কথা বলার এক ফাঁকে চোখ গরম দিয়ে তাকাতেই শুভা চুপসে যাওয়া ফাটা বেলুনের মতো চুপ করে বসে থাকে।নীলের গায়ের ঘাম মিশানো তীব্র পারফিউমের সুগন্ধ এসে নাকে লাগছে।ঘোর লেগে যাচ্ছে শুভার। মারাত্মক ঘোর!জ্যাক হঠাৎ শুভার হাত চাটতে লাগায় শুভার শরীর শিরশিরিয়ে ওঠে।নিরুপায় হয়ে চোখ মুখ খিচে নীলের পিঠে আবার নিজের নাক কপাল ঠেসে জোরে খামচে ধরে নীলের টিশার্ট।নীল চেষ্টা করেও হাসি থামাতে পারছে না।মৃদু হাসি ফুটে ওঠে নীলের ঠোঁটের কোনে।অসম্ভব ভালোলাগার বহিঃপ্রকাশ সে হাসি।
চলবে,,,