বধুবরন-সিজন-2 ! Part- 03
মনিরা সুলতানা মাথায় শাড়ির আঁচল টেনে চুপচাপ চিন্তিত ভঙ্গিতে বসে আছেন বেতের চেয়ারটায়।সামনের রায়ান খান নীল অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে মনিরা সুলতানার জবাবের।অবশেষে মনিরা সুলতানা ভাবনা চিন্তার নিঃশব্দতা ভেঙে বললো,
“- দেখুন! মেয়ে আমার ছোট।এই কদিন আগেই এসএসসি দিল।১৮ হতে এখনও মাস ৬ লাগবে।এই বয়সে কি করে আপনার বাড়িতে কাজে দেই?
“- আমি তো ওকে দিয়ে পাহাড় সমান কাজ করাবো না জাস্ট আমার রান্নার কাজ টা করে দেবে।এর জন্য মাস গেলে ১০ হাজার আপনি চান তো আরও দিতে রাজি আমি।
“- না! না! কি বলছেন এসব? সামান্য রান্নার জন্য এতো কেন দেবেন আপনি?সত্যি বলুন তো কি চাচ্ছেন আপনি? দেখুন আমার ঘরে পুরুষ নেই। আমি একা মেয়ে মানুষ ওদের দেখভাল করি।আয় রোজগার কম বিধায় মেয়েটা সময় পেলে টিউশনি, বিয়ে বাড়ি,জন্মদিনে রান্নার কাজ করে দু পয়সা সাহায্য করে।তাই বলে তো ওকে আমি এই কাজেই ঠেলে দিতে পারি না। আগে ওর পড়ালেখা তারপর বাকি কাজ।রান্না করাটা ওর শখ তাই কিছু বলি না আমি।কিন্তু আপনার বাড়ি রাধুনীর কাজ?
“- আপনি কি ভাবছেন জানি না। বাট সত্যি বলতে ও কাল আমার বাসায় গিয়েছিল। ওর রান্না আমার পছন্দ হয়েছে বিধায় এখানে এসেছি। এর বেশি কিছু না।আপনি আমাকে বিশ্বাস করতে পারেন।তাছাড়া ওর পড়াশোনার সকল সুযোগ সুবিধায় আমি করে দেবো জাস্ট ও আমার রান্নাঘরের দায়িত্ব টা নিলেই হবে।
“- বাবা! আমাকে একটু ভাবার সময় দিন।পরে না হয় আমি জানাবো!
নীলের একদম সহ্য হচ্ছে না।আশ্চর্য এতো বুঝানোর পরও এ মহিলা তার মেয়েকে নীলের বাড়িতে রাধুনীর কাজ করতে দিতে চাচ্ছে না।নীল ঐ দালাল কে খুজে বেদম পিটিয়ে সব ঘটনা জেনে ঠিকানা যোগাড় করে তবেই এখানে এসেছে।শুভাদের আর্থিক সহায়তা করে নিজের পাপবোধ একটু কমাতে চায়।না হলে স্বস্তি পাচ্ছে না কোনোমতেই।অধৈর্য হয়ে পড়েছে নীল মনিরা সুলতানার সাথে কথা বলে।অফিস বা বাসায় থাকলে যেখানে এক বার ফের দুবার কাওকে অর্ডার করে না সেখানে হাতে পায়ে ধরার মতো অবস্থা করেও এ মহিলাকে রাজি করানো যাচ্ছে না।মিডেল ক্লাস মহিলারদের নিয়ে এ এক ঝামেলা।অতিরিক্ত বোঝে এরা।খুবই সচেতন হয় সন্তানের বিষয়ে।কারন তাদের সচেতনতার একটু হেরফের হলেই বড় কিছুঘটে যেতে পারার হুমকি থাকে।একমাত্র অবলম্বন কে যেন তেন ভাবে ছেড়ে দিতে পারে না।নীল পড়েছে মহামুশকিলে।রাগে মাথা টনটন করছে।অনেক কষ্টে সামনে বসা মনিরা সুলতানাকে সমিহ করে শেষবারের মতো বললো,
“- আন্টি! আমার খুবই প্রয়োজন তাই এসেছিলাম।আপনার কোনো ভয়,সংশয় থাকলে আপনি চলুন আজ আমার বাড়িতে।ঘুরে ফিরে দেখে এসে যদি খারাপ মনে হয় তাহলে ও না হয় যাবে না।বাট আজ ওকে পাঠিয়ে দিন।আমি কথা দিচ্ছি কোনো সমস্যা হবে না।রোজ গাড়ি করে দিয়ে যাবে নিয়ে যাবে আমার ড্রাইভার।প্লিজ আন্টি এই ছেলের রিকুয়েষ্ট ফেলবেন না।নীল এতোটুকু বলে দম নিলো।ইচ্ছা করছে ডাম্বেল দিয়ে নিজের মাথা নিজেই ফাটাতে।সব ঐ আতিকের দোষ।ব্যাটাকে তো!নীলের অন্তরের রাগ মুহুর্তে ছু মন্তর হয়ে গেলো মনিরার জবাবে,
“- আচ্ছা ঠিকআছে! শুধু আপনার কথার উপর নির্ভর করে দিচ্ছি বাবা।বলেই অশ্রু ছেড়ে নীলের হাত ধরে কেঁদে ফেললো।” বাবা গো আমারা গরিব মানুষ।অর্থ সম্পদ কিছুই নাই। থাকার মধ্যে ঐ মানসম্মান টুকুই আছে।যা আজ আপনাকে বিশ্বাস করে আপনার হাতে তুলে দিলাম।আমার মেয়েটাকে দেখে রেখেন বাবা।
নীল কিভাবে স্বান্তনা দেবে ভেবে পাচ্ছে না।এমন পরিস্থিতিতে জীবনেও পড়তে হয় নি।নিজেকে বিয়ে করতে আসা নতুন বর বর মনে হচ্ছে।আর মনিরা সুলতানাকে কন্যার মা।যে কিনা জ্বামাতার হাত ধরে কেদে কেটে কন্যা সম্প্রদান করছে।নীল কোনোমতে অস্বস্তি কাটিয়ে মনিরাকে আশ্বাস দিলো।এবং শুভাকে তৈরি করে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করলো।মনিরা খুশি মনে ভেতরে চলে গেল।মনিরা বেগম উঠতেই নীল কপাল ঠেসে চোখের পাতা চেপে দাড়িয়ে রইল।
একাউন্টিং, ফিন্যান্সের চেয়েও কঠিন ছিল এই মহিলাকে বোঝানো।উফ!নীলের চোখে মুখে তীব্র বিরক্তি ভাব চলে আসলো।তার উপর এই গিঞ্জি পরিবেশ!অসহ্য!নীল গাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াতে দেখলো দুটো ৭/৮ বছরের বাচ্চা উঁকি ঝুঁকি মারছে আর গাড়িকে সপ্তাশ্চর্য দেখার মতো দেখছে।
নীলের ভাব ভঙ্গি কোনোটাই শুভার নজর এড়ায় নি।জানালার ফাক দিয়ে সব দেখছিল শুনছিল ওদের কথা।বড় মা কেন রাজি হলো? শুভার তো ভয় লাগছে বড় মা রাজি হওয়ায়।”-এই লোক আশেপাশে থাকলেই হৃদপিণ্ড ড্রামের মতো বাজে।কথা এলোমেলো হয়ে যায়।আর তার বাসায় নাকি কাজ করতে হবে? ইয়া আল্লাহ! রক্ষা করো এই জালিমের হাত থেকে।শুভা মনে মনে প্রার্থনা করে।মা’ কে ভেতরে আসতে দেখে শুভা দৌড়ে মায়ের কাছে যায়।
“- শুভা রে! আল্লাহ মুখ তুলে চেয়েছে আমাদের দিকে।যা তৈরি হয়ে আয় মা।
“-বড় মা আমি যাবো না। মুখটা পান্ডুর করে জবাব দিল শুভা।শুভার মুখ কালো দেখে মনিরা ভয় পেয়ে গেল।
“- ও মা! কেন? কোনো সমস্যা শুভা।ইশ আমিই কি বোকা তোকে আগে জিজ্ঞেস না করেই ছেলেটাকে কথা দিয়ে ফেললাম।আচ্ছা এখনই না করে আসছি।
মায়ের হাসি মুখটা মলিন হয়ে যাওয়ায় শুভা মন পরিবর্তন করে।মায়ের খুশির আগে কিছুই না।
“- আরে বড় মা! বড় মা! এতো ইমোশনাল কেন তুমি বলো তো? আমি তো মজা করেছি তোমার সাথে।মনিরার চুপসে যাওয়া মুখটায় খুশির রেশ ফুটে উঠলো।শুভার মাথায় হালকা চাপড় দিয়ে বললো,
“-খুব দুষ্টু হয়েছিস তাই না?মা কে ভয় দেখানো হচ্ছে হুমম।শোন না!
“- বলো! আদরে আহ্লাদে মাকে জড়িয়ে ধরে।
“- সত্যি কি তুই শখ পূরণ করার জন্য কাজ নিচ্ছিস? দেখ এই সংসার টানার মতো সামর্থ্য এখনও আমার আছে।এর জন্য তোকে জোর করে মনের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু করতে হবে না।তোর খুশিই আমার খুশি। তুই খুশি মনে রাজি হচ্ছিস তো রে!
“- উফ! তুমিও না। খুশি কেন হবো না।আমার শখ কে আমি আমার রোজগারের মাধ্যমে করতে পারছি।তুমি তো জানোই বড় শেফ হওয়ার ইচ্ছা আমার।রান্নার কাঁচা হাত পাকা করতে এমন একটা চাকরিরই আমার প্রয়োজন ছিল।এখন তুমি সরো আমি কাপড় পড়ে তৈরি হয়ে নি।শুভা তাড়াতাড়ি আলমারি থেকে ছাই রঙের একটা সুতি থ্রি পিছ নিয়ে বাথরুমে চলে আসে।পানির কল ছেড়ে মুখে হাত দিয়ে কাঁদে। মাকে কি করে বলবে শেফ হওয়ার স্বপ্ন দেখে রান্নার বুয়া হতে চলছে শুভা।গরিবদের স্বপ্ন দেখতে নেই।স্বপ্ন ভাঙার জ্বালা যে মৃত্যুসম।শুভা চোখ মুখ ধুয়ে কাপড় পড়ে বের হয়ে আসে।ঘরে গিয়ে বোরকা পড়ে তৈরি হয়ে নেয়।শুভা খেয়াল করছে ওর মা অসহায়ের মতো তাকিয়ে আছে খাটের পাশে ঠেস দিয়ে দাড়িয়ে। মাতৃদুগ্ধ পান করা শিশু যেমন মায়ের দূরে যাওয়া দেখে কাঁদো কাঁদো ভঙ্গিতে চেয়ে রয়।বড় মাও সেভাবে চেয়ে আছে।শুভার বিরক্ত লাগছে এই দমবন্ধ পরিবেশে দাড়িয়ে থাকতে।মায়ের মুখটা দেখলে কলিজা ছিড়ে কান্না পাচ্ছে। দূর্বল হয়ে যাচ্ছে মনটা।না! শুভা তোকে সাহসী হতে হবে।এভাবে ভয়ে সংকোচে থাকলে তো রাবু,সামি,রাতুলকে মানুষের মতো মানুষ করতে পারবি না।রাবুর চিকিৎসা করাতে হবে।এদের দায়িত্ব যে আমারই উপর।বড় মার চিন্তা কমাতে হবে।সবকিছুর জন্য এই চাকরি করতেই হবে।হোক যা কিছু!
শুভা মায়ের সাথে বাইরে বেরিয়ে আসলেই সামি, রাতুল একটা ভরা পলিথিন ব্যাগ সহ ভাগতে ভাগতে আসলো।
“- আপু! আপু দেখ সাহেব আমাদের কি কিনে দিয়েছে। চিপস,চকলেট,কোক,আইসক্রিম রাতুলকে ১ হাজার টাকাও দিয়েছে।
“- তোকে না বলেছি যার তার দেওয়া জিনিস নিবি না।নিলি কেন?
“- ও মা! যার তার কেন হবে? এটা তো তোমার সাহেব কিনে দিয়েছে। বলেছে এখন থেকে আরও দেবে। তাই না রাতুল বল? রাতুল মাথা ঝাকাতে যাবে তখনই আপুর হিজাবের আড়ালের রেগে যাওয়া চোখ দুটো দেখে মাথা নত করে রইল।সামি এটা দেখে বুঝলো এসব নেওয়া ওর আপু পছন্দ করে নি।মনমরা হয়ে তাই বললো,
“- আপু তাহলে ফেরত দিয়ে আসি।
মনিরা বাচ্চা দুটোর মন বুজতে পেরে ইশারায় শুভাকে শান্ত থাকতে বললো।
“- সামি,রাতুল গুরুজন আদর করে কিছু দিলে সেটা ফেরত দিতে নেই।এটা বেয়াদবি।যাও এসব নিয়ে ঘরে যাও।যাও! রাতুল সামি খুশিতে চোখ মুখ উজ্জ্বল করে বাড়ির ভেতর চলে গেল ঘুমন্ত রাবুকে ডেকে তুলে দেখাতে।
শুভা সামনে তাকাতেই দেখে গাড়িতে হেলান দিয়ে অসুর রাজপুত্র মোবাইলে কথা বলছে শুভাদের দিকে তাকিয়ে। এ তাকানোর মাঝে কি ভাব আছে শুভা বোঝে না।কারন বোঝার জন্য বেশ কিছু সময় ঐদিক তাকিয়ে থাকতে হবে যা শুভার পক্ষে সম্ভব নয়।শুভা ভীরু ভীরু এগিয়ে আসতেই ড্রাইভার কে ইশারায় দরজা খুলতে বলে সামনে সরে দাড়ায় নীল।
শুভা মায়ের দিকে তাকিয় হাত টা ধরে আশ্বস্ত করে গাড়িতে উঠে পড়ে।শুভাকে উঠতে দেখে মনিরার চোখ ছলছল হয়ে যায়।মেয়ে যেন সাত সমুদ্র দূরে যাচ্ছে এমন ভাব।
“- আন্টি তাহলে আসি।
“- জ্বী! আল্লাহ ভরসা।নীল একটু আগাতেই শুভার মা পিছু ডাকে।
“- বাবা! কিছু মনে না করলে একটা কথা বলতাম?
“- নিঃসংকোচে বলুন আন্টি।
“-বাবা! আমার মেয়েটা এ যুগের মেয়েদের মতো চালাক চতুর না।একদম বোকা সোকা কিসিমের।বাবা! ও ভুল ত্রুটি করে ফেললে ক্ষমা করে দিয়েন। ছোট মানুষ তো ভুল হলে হতেও পারে।
“- ও নিয়ে আপনি চিন্তা করবেন না।আমার বাড়ির কাজের লোক আমার পরিবারের একটা অংশ।তাদের সুবিধা অসুবিধা অবশ্যই আমার খেয়ালে থাকে।আপনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন।আচ্ছা চলি আমার একটু তাড়া আছে।
“- আচ্ছা বাবা!
নীল অন্য পাশের গেটটা খুলে শুভার পাশে বসে পড়ে।শুভার তাতেই গলা শুকিয়ে আসে।গাড়ি দৃষ্টির সীমানার বাইরে চলে যাওয়ার পরও মনিরা আঁচলে মুখ ঢেকে দাড়িয়ে থাকে।গাড়ি চলছে আপন গতিতে।নীলের মাথা ধরে এসেছে এমন সরু গলির বাসায় এসে।এই মেয়েকে আনতে যতো কাঠ খড় পোড়ানো লাগলো তার অতি অল্প চেষ্টাই নীল কোটি টাকার ডিল সাইন করতে পারতো।এই মেয়েকে কেন নিয়ে যাচ্ছে জানে না।ব্যস নিয়ে যাচ্ছে। দরিদ্র মেয়েটাকে সাহায্য করে ক্ষমা চাওয়ার বিকল্প পদ্ধতি অনুসরন করলো আরকি নচেৎ এই মেয়ের রান্না নীল কোনোদিন খাবে না।নীল ইটালিয়ান ডিশ ছাড়া আর কিছুই খাই না।এই গরিব মেয়ে তো এসবের নামও শোনে নি বানাবে তো দূরের কথা।এমনিতেও আজ প্রচুর সময় নষ্ট হয়ে গেছে এই মেয়ের পেছনে। আর ম্যাডাম কি সুন্দর পেঁচার মতো ঘাপটি মেরে বসে আছে।নীল একবার শুভাকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখলো পুরো একটা নাদুস নুদুস হুতুম পেঁচা। তবে আরেকটু মোটা হলে পারফেক্ট হতো।ধুর কি সব ডাইরেক্টটরি চিন্তা ভাবনা করছি।গাড়ি একসময় শান্তি নীড়ে এসে থামলো।নীল শুভাকে নিয়ে এসে বড় হলরুমটাই বসলো।শুভা দাড়িয়ে ছিল দেখে ধমক দিয়েসামনের সোফায় বসালো।শুভাকে যখন নিয়ে এসেছে ভাবনা চিন্তা ছাড়া তাহলে কিছু না কিছু তো করানোই লাগবে নয়তো উল্টো পাল্টা কিছু ভেবে বসবে।
“- তুমি কি কি রান্না করতে পারো?
“- জ্বী! আপনি কি খাবেন বলুন আমি রান্না করে এনে দিবো।হাত মুচড়াতে মুচড়াতে ভীত শান্ত গলায় জবাব দিল।
শুভার এই কথাটা শুনে নীলের কেন যেন হাসি পেল।একটু মজা করার জন্যই বলে বসলো
“- ওহ রিয়েলি!দেন মাশরুম রিসোটো,ক্যাপরিস স্যালাড উইথ পেস্টো সস তৈরি করে নিয়ে আসো।
“- জ্বী! শুভা নীল কে অবাক করে দিয়ে উঠে গেল।বুয়াকে নীল ইশারায় শুভাকে রান্নাঘরে নিয়ে যেতে বললো। নীল জাস্ট হা হয়ে রইলো বিস্ময়ে।আনমনে শুভার বোকামি দেখে হেসে উপরে ফ্রেশ হতে গেল।ফ্রেশ হয়ে নিচে নামতেই দেখে থ্রি পিছ পড়া মেয়েটা খাবার টেবিল সাজিয়ে দাড়িয়ে আছে নীলের অপেক্ষায়।নীল এবার একটু চওড়া হাসি মুখে ঝুলিয়ে চেয়ার টেনে বসলো শুভার বোকামির চিত্র দেখতে।শুভা ঢাকনা সরিয়ে খাবার গুলো তুলে ধরতেই নীলের চোখ বিস্ময়ে বিস্ফোরিত হয়ে গেল।
“- ও মাই গড! দিস আর,,, নীলের গলা দিয়ে শব্দই বের হচ্ছে না এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনার মুখোমুখি হয়ে।
শুভা খাবারগুলো নীলের প্লেটে তুলে দিয়ে পাশে দাড়িয়ে রইল চুপচাপ। নীল অনেক ভাবনা চিন্তা শেষে মুখে এক চামচ নিতেই উমম উমম করে শব্দ করলো।
“- ইউ মেড ইট! উপস!এটা তুমি তৈরি করেছ?
“- জ্বী সাহেব! আপনার পছন্দ হয় নি।শুভা আতঙ্কিত স্বরে প্রশ্ন করে।
“- ওভিয়েসলি আমার পছন্দ হয়েছে।বাট তুমি! কি করে সম্ভব।ওকে তোমার চাকরি ফিক্সড আজ থেকে।শুভাকে আতঙ্কিত হওয়া দেখে নীল নিজের অপ্রত্যাশিত হওয়ার বিহ্বলতা চেপে গেল।মনে মনে প্রচন্ড খুশি হলো এই কালো মেয়ের রান্না খেয়ে।
শুভা চুপচাপ মাথা নিচু করে রান্নাঘরে ঢুকে মোবাইলের নেট কানেকশন অফ করে ব্যাগে রাখলো ভাগ্যিস ইউটিউব সৃষ্টি হয়েছিল নয়তো আজ চাকরি টাই হতো না।শুভা পৃথিবীর যে কোনো রান্নার ভিডিওর দু একটা টিউটোরিয়াল দেখলেই সিদ্ধহস্ত হয়ে যায় সে রান্নায়।এটাই শুভার সবচেয়ে বড় গুন।আল্লাহ কালো করে তৈরি করলেও বিনিময়ে অনেক বড় একটা নিয়ামত দিয়েছেন শুভাকে।আজ পর্যন্ত শুভার হাতের রান্না খেয়ে খুশি হয় নি এমন কেউ নাই।তাহলে নীল কিভাবে অখুশি হবে? শুভা সে চান্স দিলে তো?
চলবে,,,