My Mafia Boss- Season- 1 !! Part- 06
কানের দুলটিকে ড্রয়ারে রেখে দিলো রোয়েন।মায়াবতী কে দিয়ে দিবে।পরদিন সকালে রুহী পুরো রুম খুঁজলো কিন্তু কানের দুল পেলনা।চোখের পানি থামছেইনা। সারাদিন কিছু খেল না রুহী।মার কথা বলে বলে কাঁদছিলো বারবার।রোয়েন চেয়ারে বসেছিলো দুজন লোক ওর রুমে এলো স্যার ওই মেয়ের নাম রুহী অনাথ আশ্রমে থাকে।অনাথ আশ্রুমের কথায় রোয়েনের বুক ধক করে উঠলো।অনাথ আশ্রমে থাকে!!কেউ নেই ওর? রোয়েন রাগী গলায় জিজ্ঞেস করলো।স্যার মা জন্মের সময় মরে গেছে বাপ অন্য জায়গায় বিয়ে করছে। মামা মামীর সাথে থাকতো। মামী সহ্য করতে পারেনা তাই মামা অনাথ আশ্রমে দিয়ে গেছে।অনাথ আশ্রমের নাম কি?
গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করলো রোয়েন।
দিপাঞ্জলী এতিম খানা।রোয়েন উঠে দাঁড়ালো গাড়ি বাহির করো।ওকে স্যার লোক দুটি বেরিয়ে গেল।রোয়েন বাসায় ফিরে ড্রয়ার থেকে কানের দুলটি বের করে প্যান্টের পকেটে রাখলো।চকোলেট কালারের একটি শার্ট পরে হাতা দুটো ফোল্ড করে নিলো রোয়েন। জেল দিয়ে সেট করে নিলো চুল গুলো।দামী কালো রং এর একটি ঘড়ি পরেছে রোয়েন।ব্ল্যাক জিন্স প্যান্ট অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে ওকে।বেরিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো রোয়েন।আধঘন্টা জার্নির পর পৌছে গেল দিপাঞ্জলী এতিম খানায়।গেটের ভিতর ঢুকতেই অনেক গুলি ছোট বাচ্চা দৌড়ে এলো।হাসা হাসি করে খেলছে বাচ্চা গুলি। রোয়েনের দলের লোক গুলো বাচ্চাদের চুপ করাতে গেলে ওদের থামালো রোয়েন ডোন্ট ডু দিস।হাঁটতে হাঁটতে জেনিফারের কেবিনে ঢুকলো রোয়েন।জেনিফার উঠে দাঁড়ালো আপনার সাথে কথা হয়েছে।কি খাবেন বলুন স্যার?খেতে আসিনি।
ওদের টেবিলের ওপর টাকার ব্রিফকেসটা রাখলো এটা বাচ্চা দের জন্য।ভালো খাবারের ব্যাবস্থা করতে হবে।আপনার আপত্তি না থাকলে সেলাই মেশিন কিনে দিতে পারি মেয়ের জামা কাপড় সেলানো শিখবে।বিদেশ থেকে কিছু অর্ডার আনবো সেগুলো ওদের তৈরি করতে হবে নির্দিস্ট দিনের মধ্যে। যে টাকা গুলো আসবে সেগুলো ওদের পড়াশুনার জন্য খরচ হবে।ওদের পড়াশুনা করতে হবে। যা লাগে আমি দিবো। জেনিফার অবাক হয়ে আছে স্যার আপনি আমাদের এতিমখানার জন্য এতো কিছু করবেন?কোন সন্দেহ রোয়েন জিজ্ঞেস করলো?না স্যার।পাশের বড় মাঠটায় কিছু লাইক স্লিপার কাঠের ঘোড়া আরো কিছু খেলনা লাগাতে চাই কারন কিছু ছোট্ট বাচ্চা আছে দেখলাম।জি জি মিস জেনিফার হালকা হাসলেন।রুহী কোন রুমে থাকে? স্যার রুহীর কথা কেন জিজ্ঞেস করছেন মিস জেনিফার প্রশ্ন করলেন।শুধু বলুন কোথায় রুহী রোয়েন রাগ আটকে জিজ্ঞেস করলো।জি স্যার চলুন জেনিফার রোয়েন কে রুহীর রুমের সামনে দিয়ে গেল।
রুহী বিছানায় বসে চোখের পানি ফেলছে নিঃশব্দে।রুমে কারোর পায়ের শব্দে মাথা তুলল রুহী।রোয়েন ভিতরে ঢুকে দরজা আটকে দিলো।আ আ আপনি!!!!!রোয়েন নিঃশব্দে রুহীর কাছে এগোচ্ছে।
রুহী উঠে দাড়িয়ে পিছাতে শুরু করেছে।রোয়েন আগাচ্ছে আর রুহী পিছাচ্ছে সসত্যি কাউকে কিছু বলিনি বলবো ও না।প্লিজ কিছু করবেন না।রুহী দেয়ালে আটকে গেল।আশেপাশে তাকালো। পালানোর জায়গা নেই।রোয়েন খুব কাছে এসে গেছে।কিছু বলতে পারলো না রুহী।মাথা নিচু করে আছে।
রোয়েন কানের দুলটি রুহীর কানে পরিয়ে দিলো।রুহী অবাক হয়ে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে কানে হাত দেয়। কি বলবে বুঝতে পারছেনা রুহী।চোখ থেকে দ্রুত বেগে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।ধন্যবাদ আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আর কিছু বলতে পারলোনা রুহী ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেছে।
এই এভাবে কাঁদবেনা আমার সামনে। সামান্য একটা কানের দুলের জন্য এভাবে কাঁদতে হয়?সামান্য বলবেন না এটা আমার মায়ের শেষ স্মৃতি। মাকে দেখার সৌভাগ্য তো হয়নি এ কানের দুল কাছে থাকলে মায়ের উপস্থিতি অনুভূত হয়।সেলাই পারো? গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করলো রোয়েন।না পারিনা। ওকে একজন এখানে এসে তোমাদের সেলাই শিখিয়ে দিয়ে যাবে বিদেশ থেকে কিছু অর্ডার আসবে সেগুলো তোমাদের কমপ্লিট করতে হবে।মেশিন কই পাবো?আজ রাতে চলে আসবে রোয়েন বলল।ঠিক আছে আস্তে করে বলল রুহী।কাল সকাল ১০টায় রেডি থেকো। কেন? অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো রুহী। দাঁতে দাঁত চেপে রোয়েন বলল পাল্টা প্রশ্ন পছন্দ করিনা। হনহনিয়ে বেরিয়ে গেল রোয়েন।সেদিন রাতে ৮টা সেলাই মেশিন এলো। পরেরদিন বিকেলে একজন এসে ওদের সেলাই করা শিখাবে।সব মেয়ে গুলো ভীষন এক্সাইটেড হয়ে আছে৷ অন্তত কিছু করতে পারবে বাঁচার জন্য।স্নিগ্ধা রুহী মেশিন গুলোকে বারবার ছুঁয়ে দেখছিলো কি চকচক করছে মেশিন গুলো।ওদের জীবন ও এমন চকচক করবে একসময়ে।
রাতে সবাই খেয়ে শুয়ে পড়লো।রুহী আর স্নিগ্ধা পাশাপাশি শুয়ে আছে।রুহী এমন কিছু হবে জানওস ভাবতেই পারিনি স্নিগ্ধা হেসে হেসে বলছিলো। সত্যি বলেছিস স্নিগ্ধা কয়েকদিন পর আমাদের ও সুন্দর একটা জীবন হবে।হুম রে আমি খুব খুশি রুহী।লোকটি নাকি আমাদের পড়াশুনা ও করাবে। কি!?রুহী অবাক হয়ে গেল।হ্যারে সত্যি জেনিফার ম্যামকে বলছিলো লোকটি।সে সাহায্য করছে কেন ওদের? (কাল এভাবে লেক গুলোকে মারলো আর আজ ওদের এভাবে সাহায্য করছে।কাল দেখা ও করতে বলেছে।সে কে আসলে কেন এমন করছে?)রুহী ভাবছিলো কথা গুলি।
পরদিন নাস্তা সেড়ে নীল একটি স্যালোয়ার কামিজ পরে নিলো রুহী। চুল গুলিকে পিঠের ওপর ছড়িয়ে দিলো। চোখে কাজল লাগালো রুহী। নীল পরী লাগছে রুহীকে।আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ভাবছিলো লোকটি কোথায় নিয়ে যাবে ওকে?মেরো টেরে ফেলবে নাতো?ঠিক তখনই মিস জেনিফার ধড়ফড়িয়ে রুমে আসলো……
চলবে