বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 03

আবির রাগে শেষ এই মেয়ে কি এক তো সাহায্য করছে তার উপরে তাকে আচ্ছা মত বাঁশ আর ঝাড়ি খাওয়াইছে সবার কাছে,,,,
আবিরঃ হাশেম আমার রুমে কফি পাঠা তাড়াতাড়ি
তিথি আরিশার রুমে গিয়ে হা অনেক বড় রুম আর কি সুন্দর করে সাজানো হয়েছে,,
তিথিঃ এইটা তোমার রুম?
আরিশাঃ হ্যাঁ
তিথিঃ বাহা অনেক সুন্দর তো,,,
আরিশাঃ আচ্ছা চেঞ্চ করে নাও না হলে ঠান্ডা লাগবে পুরো ভিজে তো চুপচুপ
তিথিঃ হ্যাঁ জানো তোমার ভাইকে কত বলেছি ভিজবো না কিন্তু সে রোমান্টিক মুডে ছিলো (লজ্জা মাখা মুখ করে)
আরিশাঃ ভাইয়া রোমান্টিক???ভাইয়া ঠিক করে হেসে কথা বলে তো??
তিথিঃ বলে মানে তোমার ভাই তো কত কি কি বলে আমাকে (লজ্জায় পুরো লাল)
আরিশাঃ আমার বিশ্বাস এই হচ্ছে না,,
তিথিঃ আর তো কত কি জানো
আরিশাঃ আচ্ছা শুনবো কিন্তু তুমি আগে চেঞ্চ করে নাও কারণ বেশি ক্ষন ভিজা কাপড়ে থাকলে ঠান্ডা লাগবে,,
তিথিঃ ওকে,,,কিন্তু পরে কিন্তু সব শুনবা,,
আরিশা চুপ হয়ে যায়,,তার ভাই এমন সে তো ভাবতে পারছে না,,,
এই দিকে,,,

আবির ফ্রেশ হয়ে নেয়,,একটা কালো গেঞ্চি পড়ে চুল গুলো মুছে খেয়াল করে বারান্দার দরজা খুলা থাকায় প্রচুর বৃষ্টি হওয়াতে রুমে অনেক পানি আসে,,,তাড়াতাড়ি দরজা অফ করতে যাবে তখন খুব ইচ্ছে করছে এই বৃষ্টি টা উপভোগ করতে
আবিরঃ অলরেডি এতো ভিজেছি যে আবার ভিজলে অবস্থা খারাপ হবে আচ্ছা থাক আর না নাই বা ভিজলাম,,,
দরজা টা লাগিয়ে দেয়,,খুব ক্লান্ত লাগছে বিছানায় গিয়ে হেলান দিয়ে বসতে না বসতেই দাদি হাজির,,
দাদিঃ আমি অনেক রেগে আছি তোর উপর
চোখ খুলেই দেখে দাদি খুব রাগী মুডে আছে,,
আবির উঠে দাদিকে এনে পাশেই বসায়,,
আবিরঃ আমার কিউটি কেন রেগে আছে শুনি,,
দাদিঃ তুই প্রেম করিস আমাকে বলিস নাই আবার বিয়ে ও করেছিস???
আবির অই সময় পারে নাই তিথিকে কাঁচা গিলে খেতে,,,রাগী ভাব নিয়ে বলে
আবিরঃ এমন কিছু না যা ভাবছো সব কিছু মিথ্যা অই মেয়েকে তো আমি জানি পর্যন্ত না আজ প্রথম আর সে কিনা বলে,,,,,একবার হাতের কাছে পাই আমি আছাড় মারবো মাথার উপর থেকে ফাজি মেয়ে একটা,,
দাদিঃ হইছে এখন আর ড্রামা করতে হবে না,,,যা যা মাফ করলাম,,
আবিরঃ কিসের ড্রামা?
দাদিঃ এই যে অই মেয়েটা মানে তোর বউ এর উপর আর দোষ চাপাতে হবে না,,কেউ কিছু বলবে না আমি আছি,,
আবিরঃ দাদি আমি সিরিয়াস,,,আর আমি কাউকে ভয় পাই না তা জানো তো কাকে ভয় পেয়ে বলবো
দাদিঃ তা তো জানি তুই ভয় পাস না বিদায় তো বিয়ে করে এতো রাতে বউ নিয়ে হাজির,,
আবিরঃ আজিব ফ্যামিলি আমার,,আমার কথা বিশ্বাস না করে অই মেয়েটার,,,একবার পাই তখন ওকে আমি
দাদিঃ বাসর করবি বুজি,,,
আবিরঃ ছি দাদি কি সব বলো?আচ্ছা সত্যি তুমি আমার দাদি তো নাকি,,,
দাদিঃ বা রে আমি বললেই দোষ,,,
আবির এর রাগ প্রচুর লাগছে কিন্তু এই মুহূর্তে দাদিকে বিদায় করতে হবে তাই সে বলে উঠে
আবিরঃ যাও ঘুমাও চোখের নিচে কালো দাগ এখন পড়ছে সকালে আরো পড়বে পরে তোমার মেজাপ বসবে না,,
দাদিঃ ওহ তাই তো যাই ঘুমাই,,লাভ ইউ মাই ডারলিং
আবিরঃ আসল ড্রামা তো এই ফ্যামিলি তে হয় আর একটা জুটছে,, কপাল করে এক ফ্যামিলি পেয়েছি যারা আমার কথা পর্যন্ত আজ শুনে নাই,,অই মেয়েকে হাতের কাছে পাই এমন চড় দিবো যে নিজের নাম টাও ভুলে যাবে ফাজিল মেয়ে,,,
দাদি চলে যায় আবির হাঁচি দেওয়া শুরু করে,,এতো ভিজায় তার শরীর টা অনেক গরম হালকা জ্বর ও আসে,,,নাক মুখ পুরো লাল হয়ে যায়,,,,সে লাইট অফ করেই ঘুমিয়ে যায়,,,
এই দিকে,,,,

তিথি তার বারি গহনা গুলো খুলে আরিশার একটা ড্রেস পড়ে চুল গুলো বেশ লম্বা তিথির,, আরিশা হা করে তাকিয়ে আছে,,,তিথির তো বেশ ভালো লাগছে বেশ কয়েক দিন আরামে থাকবে,,,আর কিনা আবিরকে বকা খাওয়াইছে এই জন্য বেশ ভালো লাগছে,,,
হুট করে খেয়াল করে একটা পেন্টিং,,,খুব সুন্দর করে আঁকা,,
তিথিঃ তুমি বুজি ছবি আর্ট করো?
আরিশাঃ হ্যাঁ ভাবি,,ছোট থেকে আমার শখ,,তাই আর কিছু একটু
তিথিঃভাবি কে??(অনেক গভীর ভাব নিয়ে)
আরিশাঃ কেন তুমি,, আবির ভাইয়ের বউ তো আমার ভাবি৷
তিথির তখন মনে পড়লো সে আসলে কি করেছে,,,,তিথি মুচকি হেসে মাথা নাড়ায়,,,
তিথি চেয়ারে বসে,,,আরিশা পাশে বসে,,,
আরিশাঃ ভাইয়ার সাথে প্রথম দেখা কবে হয়েছে?
তিথি ভাবতে থাকে কি বলবে,,গভীর চিন্তায় পড়ে যায় কি বলবে,,,
আরিশাঃ কি হলো ভাবি?
তিথিঃ না তো কিছু না,,অই তো বৃষ্টির রাতে দেখা,,
আরিশাঃ বাহা আর বৃষ্টির রাতে বউ ও হয়ে আসলা ভালো তো,৷ তো ভাবি কত দিন প্রেম
তিথিঃ এই তো ৪ বছর আর কি(একটু হাসি দিয়ে)
আরিশাঃ ৪ বছর ধরে প্রেম করে ভাইয়া(অবাক হয়ে)
তিথিঃ কেন?
আরিশাঃ ভাইয়া যে রাগী কিভাবে এতো বছর থাকলে তাই ভাবতেছি,,,
তিথিঃ হাহা অইটা ব্যাপার না,,তোমার ভাই আমার সাথে আছে এইটা বড় কথা,,
তিথি সব বানিয়ে বানিয়ে কাহিনী বলছে তার আর আবিরের,,,আরিশা তিথি অনেক গল্প করে,,,তিথির বেশ ঠান্ডা লাগে নাক টানছে আর হাঁচি দিচ্ছে
আরিশাঃ তোমার তো ঠান্ডা লেগেছে অনেক
তিথিঃ হ্যাঁ অনেক ক্ষন ভিজেছি তো তাই,,,
মা রুমে আসে তিথির এমন অবস্থা দেখে তিথির জন্য গরম দুধ আনায়,,,আর ওষুধ ও দেয়,,,তিথি খেয়ে নেয় ভয়ে আছে যদি উল্টো পালটা কিছু প্রশ্ন করে আবিরের মা তখন তার কি হবে,,,

মাঃ তিথি তুমি আজ রাত আরুর সাথে ঘুমিয়ে যাও আর হ্যাঁ কাল সকালে সবাই কথা বলবে,,,,
তিথি রাত টা আরিশার সাথে থাকে,,,,সবাই ঘুমিয়ে পড়ে শুধু ঘুম নাই তিথির,,,বাবা মা কেমন আছে এই চিন্তা করছে,,,,আর কত দিন একটা মিথ্যা নিয়ে টানবে,,,এইভাবে পাড় করে রাত,,,,
সকালে,,,
সবাই ডাইনিং টেবিলে বসা,,,রহমান ফ্যামিলির সবাই সকাল ৯ টায় ডাইনিং টেবিলে এক সাথে বসে নাস্তা করে,,,
দাদিঃ নাতনি বউ কই আরু?
আরিশাঃ আসছে,,
তিথি এসে দেখে সবাই আছে শুধু আবির নাই,,,,
তিথিঃ আরে বাহা এতো নাস্তা,,খুব ইয়ামি লাগছে,,,
মাঃ আসো তিথি
বাবাঃ তোমার আদরের ছেলে কই(মাকে বলে)
মা আমি ডেকে আনি,,,
মা আবিরের রুমে যায় আর দেখে আবির রেডি হয়ে নিচে নামবে অই সময় আসছে,
আবিরঃ কিছু কথা ছিলো মা,,,
মাঃ নিচে আয় সবাই অপেক্ষা করছে
আবিরঃ মা প্লিজ কথা শুনবা,,,
মাঃ যা কান্ড করে রেখেছিস এর পর আর কিছু শুনার নাই,,,
মা নিচে নেমে যায় আবিরের আরো রাগ লাগে,,,আবির ও নিচে দেখে তিথি খাচ্ছে,,প্লেট পুরাই খাওয়া শুরু,,
দাদিঃ আর নিবা?
তিথিঃ এতো কম খাবার আমার কি পেট ভরে বলুন,,,
আবিরঃ হাতি এনে দিলে ও কম হবে,,,,রাক্ষসের মত খাচ্ছে দেখে মনে হয় জীবনে খায় নাই,,,
তিথি খাচ্ছে আর বলে উঠে
তিথিঃ আপনার মত নীল হাতি তো আমি না,,,আপনি তো ডিমের শরবত ও খান
সবাই হা করে তাকিয়ে আছে আরিশার খাওয়া অফ হয়ে যায়,,দাদি বমি করার অবস্থা আর বাবা আর চাচা তো হা করে তিথির দিকে তাকিয়ে আছে
আবিরঃ পাগল নাকি,,,,,
আরিশাঃ ভাইয়া নীল হাতি?

তিথিঃ শুধু তাই নয় হলুদ ইঁদুর ও,,,আর উনি তো আমার সাথে দেখা করলে আমার হাতের ডিমের শরবত খেতো,,,,আর হ্যাঁ তার সাথে কিছু চকলেট পাউডার মিশানো লাগতো না হলে খেতো না,,,
দাদিঃ রাহিশা আর আমার জন্য ডিম করিস না, আজ থেকে ডিম খাওয়া অফ আমার
আবির তো রাগে শেষ,,,
আবিরঃ আমার কিছু কথা ছিলো
বাবা আর চাচা উঠে চলে যায়,,দাদিমা ও উঠে যায় কেউ আবিরকে পাত্তা দিচ্ছে না,, আর এই দিকে তিথি খেয়েই যাচ্ছে আবির তিথির হাতটা শক্ত করে ধরে নিজের রুমে নিয়ে যায়,,
তিথিঃ উফফফ শান্তিতে খেতে ও দিলেন না,,,
আবিরঃ সমস্যা কি আপনার হ্যাঁ??? আমি সাহায্য করেছি বিদায় আমার উপর উঠে বসবেন?
তিথিঃ আপনার মাথায় তো চেয়ার বা দাঁড়ানোর কিছু নাই যে উঠে বসবো,,,(চিন্তিত ভাব নিয়ে)
আবিরঃ আপনি কি পাগল?
তিথিঃ অই পাগল হবে তোর,,,,, ,,
আবির তিথির হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে বলে
আবিরঃ এক থাপ্পড় মারবো যে এই বকবক সব ভুলে যাবনে,,,মিথ্যা কি জন্য বলেছেন হ্যাঁ? আমি আপনার জীবনে দেখেছিলাম যে প্রেম করবো আর আপনার মত এমন ফাজি বেয়াদব মেয়ের সাথে প্রেম জীবনে না সারাজীবন সিঙ্গেল থাকবো তবুও আপনার মত মেয়েকে কখনো না ওকে
তিথি আবিরকে ধাক্কা দিয়ে বলে
তিথিঃ আপনার মত এমন লাল গন্ডার নীল হাতিকে আমি বিয়ে হাহা কচু গাছে ফাঁসি খেতে রাজি তবুও আপনার মত হলুদ বিড়ালকে বিয়ে আত্নহত্যা করার শখ নাই ওকে,,,
আবিরঃ এক থাপ্পড় মারবো যে এইসব স্টুপিড কথা বলা ভুলে যাবেন,,,
তিথিঃ এই আপনি কথায় কথায় থাপ্পড় মারবেন থাপ্পড় মারবেন কতেন কেন হ্যাঁ আমি কি আপনার খাই নাকি যে আপনি আমাকে মারবেন,,
আবিরঃ এখন যে গিলে আসছেন দশ প্লেট তা আমার বাসার খাবার মানে আমার,,
তিথিঃ ছি ছি লজ্জা শরম এর মাথা খেয়েছেন কিছু খাবার কি খাওয়াইছেন খোটা দিচ্ছেন ছি ছি আপনার মন কত ছোট
আবিরঃ ফালতু কথা না বলে আমার বাড়ি থেকে এখন বের হবেন,,সুন্দর করে বলতেছি যদি না যান তাহলে
তিথিঃ তাহলে কি হ্যাঁ তাহলে কি
আবিরঃ থাপ্পড় মারবো বলেছিলাম মেরেই দিবো তখন ওকে,,
তিথিঃ কিইই আপনি আমাকে মারবেন আপনার এতো বড় ডাহস থুক্কু সাহস
আবিরঃ উফফ আস্তা মাইক আসতে কথা বলুন
তিথিঃ আপনি জানেন আমি কে?
আবিরঃ কে আপনি?

মা আবিরের রুমে আসে আবির দেখে নাই তিথি খেয়াল করেছে,,ন্যাকা কান্না করে বলে
তিথিঃ আমি তোমার বউ,,৪ বছর প্রেম করে কাল আমাকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করে এখন জিজ্ঞেস করছো আমি কে?আমি কই যাবো তোমাকে ছাড়া? হে আল্লাহ আমাকে তুলে নাও আমার প্রাণের স্বামী আমাকে অশিকার করছে এই জীবন রেখে কি লাভ,(ফ্লোরে বসে পড়ে কপালে হাত দিয়ে কাঁদতে থাকে)
আবিরঃ পাগল নাকি,, কি সব বলছে এই মেয়ে,,,
তিথিঃ আজ আমি গরীব বলে অসহায় শান্ত মেয়ে বলে আমাকে বিয়ে করে এইভাবে অশিকার করছেন,,ওহ আম্মু রে দেখো তোমার মাসুম মেয়েকে কি অত্যাচার করছে বিয়ের পর এর দিন(প্রচুর কেঁদে দেয় চোখে তো পানিও এসে যায়)
তিথির কান্না দেখে আবির হা করে আছে আসলে এই মেয়ে কি তাই ভাবছে সে মুহূর্তে চোখে পানিও এসে গেছে,,,,পিছন থেকে মা প্রচুর রেগে বলে উঠে
মাঃ আবির হচ্ছে টা কি?বিয়ে করেছো ভালো কথা তাই বলে বেচারি কে এইভাবে বকবে,, তুই কি আমার ছেলে নাকি অন্য কেউ
আবিরঃ (অহ এই জন্য এতো ড্রামা এই মেয়ের)
চলবে,,,,,,,,