বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 04

মাঃ আবির হচ্ছে টা কি?বিয়ে করেছো ভালো কথা তাই বলে বেচারি কে এইভাবে বকবে,, তুই কি আমার ছেলে নাকি অন্য কেউ
আবিরঃ (অহ এই জন্য এতো ড্রামা এই মেয়ের)
আবিরের খুব রাগ লাগে কিছু না বলে অফিসে চলে যায়,,
এই দিকে তিথি তার সারাদিন কাটায় আবিরের মায়ের সাথে,,,,
সন্ধ্যা হয়ে আসে,,বাড়িটা সাজানো হয়েছে ফুল দিয়ে তিথি তেমন পাত্তা দেয় নাই,,,
আরিশার রুমের বারান্দা টা বেশ সুন্দর চারপাশে ফুল গাছ লাগানো,,বাতাস টা ও শীতল খুব ভালো লাগছে তিথির,,,বসে বসে ভাবছে কি করা যায় ফ্যামিলি সাথে কিভাবে যোগাযোগ করতে পারবে,,,
মা একজন পার্লারের মেয়ে ডেকে আনায়,,নীল বেনারসি শাড়ি আর কিছু গহনা বিছানায় রাখা হয় তিথি হা করে তাকিয়ে আছে হচ্ছে টা কি,,
মাঃ তিথি এইদিকে আসো
মা তিথির মাথায় হাত রেখে বলে
মাঃ তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও,,
তিথিঃ কিন্তু কেন?

মাঃ পরে দেখবে কেন,,, এখন চুপচাপ রেডি হয়ে নাও
মা চলে যায় তিথিকে সাজানো হয় আর তিথি তো জানে না কেন তাকে সাজানো হচ্ছে,,,নীল বেনারি পড়ানো হয়,,চুল গুলো খোপা করে কাচা গোলাপ দিয়ে বাঁধা হয়,,,,
এই দিকে আবির চুপচাপ বসে আছে তার কেবিনে,,,কারো সাহস হচ্ছে না ভিতরে যাওয়ার আজ আবির অনেক টা গরম,,,প্রচুর রেগে আছে কিন্তু কেন কেউ জানে না,,,
আমানঃ মেনেজার আবির কই?
মেনেজারঃ স্যার আজ আবির স্যার অনেক রেগে আছে,,,কেবিনে আছে সবার উপর অনেক রাগারাগি করে চিল্লাচিল্লি করেছে অনেক বলেছে সবাই কে ফায়ার করে দিবে,,
আমানঃ বুজছি,,সবাই কে নিজের কাজ ঠিক করে করতে বলুন আর হ্যাঁ দুইটা কফি কেবিনে পাঠাই দেন,,
আমান কেবিনের ভিতরে গিয়ে দেখে আবির লেপটপে কাজ করছে,,,
আমানঃ কি ব্যাপার আজ এতো রেগে?
আবিরঃ ওহ তুই,,
আমানঃ কি হয়েছে?
আবিরঃ কিছু না,,বাদ দে
আমানঃ কিছু তো হয়েছে যার জন্য আবির রহমান অনেক টেনশনে আছে,,,
আবিরঃ আর বলিস না একটা মেয়ে,,,,
আমানঃ আরে বাহা বাহা তুই একটা মেয়ের জন্য আরে বাহা এখন ভাবি তার কি হবে যদি জানে না তুফান তুলবে,,
আবিরঃ এই চুপ থাক,,কথা না শুনে বকবক করবি না তো,,,
আমানঃ আচ্ছা বল কি হইছে
আবির সব খুলে বলে কি কি হয়েছে সব,,,আমান হাসতে হাসতে শেষ
আমানঃ ভাই সাহস আছে অই মেয়ের আসলে,,
আবিরঃ হাসি অফ কর তো,,,এমন বেয়াদব ফাজিল মেয়ে জীবনে দেখি নাই,,এক তো সাহায্য করেছি উপরে উল্টো আমার ঘাড়ে চেপে বসেছে,,,বাসার সবাই ভাবে আমি ওকে বিয়ে করেছি,,,
আমানঃ এই কথা যদি মায়রা জানে ভাব কি হবে???ভাই অই মেয়ের নাম কি
আবিরঃ মিস বকবক ড্রামা কইন
আমানঃ হাহা এইটা তুই দিলি এমনি নাম কি
আবিরঃ তিথি,, আর নিজের নাম এমন ভাব নিয়ে নেয় মনে হয় কোথার মহারানি৷, আস্তা একটা ড্রামা কইন অই মেয়ে,,,আর মিথ্যা মাশাল্লাহ সেভাবে সাজায়,,৪ বছর ধরে নাকি আমি ওর সাথে প্রেম করি বিশ্বাস কর ভাই এই কথা শুনে আমার মা আর বাবা যেভাবে তাকাইছে আমার দিকে ইচ্ছে করে অই মেয়ের গলা টিপে ধরি,,,
আমানঃ হাহা আসলেই অই মেয়েটার সাহস অনেক,,,মেয়েরা তোর জিএফ হতে চায় আর এই মেয়ে এক লাফে বউ বাহা এখন মায়রার কি হবে,,
আবিরঃ মায়রা মায়রা একদম করবি না,
আমানঃ দেখ আবির রি প্রবলেম থেকে বাঁচার একটা সুযোগ তা হলো অই মেয়ে আই মিন তিথি ওর মুখ থেকে সত্যি শিকার করা,,সবাই কে সে বললে প্রবলেম শেষ বুজলি,,,
আবিরঃ হুম আচ্ছা আমি আসি,
আমানঃ যা,,,
আবির বাড়ি ফিরে এসে যা ফেখে তা দেখে যা শকড খায় সে,,
আবিরঃ এই আরু শুন,,,
আরিশাঃ কি তাড়াতাড়ি বলো
আবিরঃ কি হচ্ছে এখানে,,,
আরিশাঃ আপনি যে কাল রাতে কান্ড করে রেখেছেন তার ক্ষতি পূরন হচ্ছে
আবিরঃ মানে?

আরিশাঃ মানে একটু পরে জানবেন স্যার আর হ্যাঁ পাপ্পা ডেকেছে বলেছে উনার রুমে যেতে
এই দিকে,,
মা তার হাত থেকে দুইটা চুড়ি খুলে তিথির হাতে পড়িয়ে দেয়,,
মাঃ আমার শাশুড়ি আমাকে দিয়েছে যখন আমি এই ঘরে বউ হয়ে এসেছি আর আজ আমি আমার বউমাকে দিলাম,,,জানি আবির এইভাবে বিয়ে করেছে তা ঠিক না কিন্তু তুমি এই ঘরের বউ,,
মায়ের অনুভূতি গুলো দেখে তিথির খুব খারাপ লাগছে,,তার মিথ্যার জন্য সবার অনুভূতি নিয়ে খেলা হচ্ছে সবাই কত সিরিয়াস,,,,তিথি খুব গিলটি ফিল করছে তাই মাকে সব বলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়,,
তিথিঃ আমার আপনাকে কিছু বলার ছিলো
মাঃ হুম বলো
তিথিঃ আসলে আপনি যা
আরিশা রুমে এসে যায় তিথি বলতে পারে না তবুও সাহস করে
আরিশাঃ মা রুম সাজানো শেষ আর ভাইয়া ও এসে গেছে পাপ্পা তোমায় ডাকছে,,
মাঃ তিথিকে রুমে নিয়ে যা আর সুন্দর করে ওকে ফাজলামি একদম না
মা চলে যায় তিথি আবিরের রুমে নেওয়া হয়,,পুরো রুম টা সাজানো হয় ফুল দিয়ে,,অসাধারণ লাগছে এই রুম বারান্দায় কিছু ছোট ছোট লাটিং করে দেখতে বেশ সুন্দর,,,,
তিথি ঢোক গিলছে হচ্ছে টা কি,,,ভয়ে আত্মা যেন শুকিয়ে গেছে,,,আরিশা ও চলে যায় আর তিথি তো ভয়ে ভয়ে নিজেকে বকতে থাকে,,
তিথিঃ কয়বার বলেছি তিথি বেশি মাস্টারি করিস না বেশি আগে চলিস না দেখলি তো ফেসে গেলি নিজের জালে নিজে,,,ভেবেছি কি আর হলো কি বিয়ে ছাড়া বাসর অহ আল্লাহ প্লিজ দড়ি পালাও আমি অই সাদা বজ্জাত কে তুলে দেই না হলে আমি উঠে যাই,,,তার সাথে না না না
এই দিকে বাবা আবিরকে বলে
বাবাঃ যা হয়েছে তা বাদ দেওয়া হোক,,,এখন নতুন জীবনে পা দিলে আশা করি নিজের রাগ কন্ট্রোল করবে এখন আর হ্যাঁ যা সিদ্ধান্ত নিবে ভেবে নিবা,
আবিরঃ নতুন জীবন মানে?
মাঃ ঘরে নতুন বউ এনেছিস নতুন জীবন শুরু করবি না?
আবিরঃ মা যা ভাবছো এমন কিছু না,,,
বাবাঃ আবির যাও নিজের রুমে যাও,,,
মাঃ হ্যাঁ আবির যা তিথি তোর জন্য অপেক্ষা করছে,,,
আবিরঃ আমার রুমে কেন করবে?

মাঃ কেন করবে না আজ থেকে অই রুম তার ও,,,চুপচাপ যা
আবির অসহায় এর মত নিজের রুমের দিকে রয়না হলো,,,দরজার সামনে আরিশা দাঁড়িয়ে আছে আবিরের দিকে হাত পেতে বলে
আরিশাঃ টাকা দাও ভাই না হলে রুমে ঢুকতে দিবো না,,,
আবিরঃ একটা কষে চড় লাগাবো যে ফাজলামি সব যাবে,,এই সব তোর জন্য হইছে এক চামচ বেশি বুজিস সব জায়গায় পড়ালেখায় তো ডিম পারিস,,
আরিশাঃ অনেক বাজে তুমি অনেক
আবিরঃ যাবি নাকি চড় খাবি
আরিশা চুপচাপ চলে যায়,,আবির প্রচুর রেগে আছে রুমের দরজা খুলে তো অবাক তার রুম পুরো গোলাপ ফুল দিয়ে সাজানো আবার তো ছোট ছোট মোম বাতি জ্বালানো এইসব দেখে আবিরের গা জ্বলছে,,,
বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে তিথি,,দরজা খুলার আওয়াজ পেয়ে তাড়াতাড়ি বারান্দা থেকে ভিতরে যায়,,আবিরের প্রচুর রাগ উঠে তিথিকে দেখে,,
আবিরঃ বাহা নিজেকে তো নতুন বউ সাজিয়ে নিলে,,,এক রাতে আমার বউ হলে আবার আমার রুমে বউ সাজে বাহা বাহা
তিথিঃ দেখুন আপনার মা জোর করে এইসব করেছে,,
আবিরঃ হ্যাঁ সেটায় দেখছি,,,নতুন বউ আজ বাসর করবে তাও আবার বিয়ে ছাড়া
তিথিঃ মানে?
আবিরঃ মানে সোজা আমার বউ নাকি তুমি তো বাসর হবে,,
তিথিঃ হেএএএএ
আবিরঃ হ্যাঁ
তিথিঃ দেখুন আমার কথা শুনুন
আবিরঃ বউ আমার যখন আগে বাসর করি তারপর না হয় শুনবো,,,
তিথি ভয়ে শেষ তাড়াতাড়ি দৌড়ে আবির এর কাছ থেকে দূরে যায়,,,
তিথিঃ এ,,একদম কাছে আসবেন না বলে দিলাম,,আমি চিৎকার দিবো
আবির খাটে শুয়ে পড়ে তিথির দিকে তাকিয়ে বলে
আবিরঃ করো কিন্তু কেউ আসবে না উল্টো ভাববে,,,আর হ্যাঁ সবাই ভাবে তুমি আমার বিয়ে করা বউ নিজের মুখেই বললে আর আমি আমার বউকে যা ইচ্ছে করতে পারবো ওকে
তিথিঃ আ,,পনি এমন কেন,,,অসহায় মাসুম মেয়ে একটাকে পেয়ে এমন করছেন?আল্লাহ পাপ দিবে বুজলেন,,
আবিরঃ হ্যাঁ তাও কথা কিন্তু আমি তো আমার বউকে কিছু করবো মানে আমার বিয়ে করা বউ
তিথিঃ অই তোর বউ কে হ্যাঁ কখন থেকে বউ বউ করিস কিসের বিয়ে করা বউ,,,
আবিরঃ কেন কাল যে বললে বউ
তিথিঃ উফফফ আল্লাহ নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারলাম৷
আবির তিথিকে একটা টান দিয়ে বুকের উপর ফেলে তিথির চুল টুকু মুচড়ে বলে
আবিরঃ বাহা আমার বউ তো সুন্দর আছে,,,
তিথিঃ বাড়াবাড়ি হচ্ছে এইসব
আবিরঃ চুপ থাকো তো বউ,,,,
তিথি একটা ধাক্কা দিয়ে উঠে প্রচুর রাগে বলে
তিথিঃ কালো জিরাফ সাদা হাতি সাহস হয় কি করে তোর আমার গায়ে দাত দেওয়ার আর হাত কেটে মাছদের খাওয়াবো অই মাছ চায়নায় পাঠাবো হারামি লোক একটা
আবিরঃ কেন আমার বউ আমি যা ইচ্ছে করবো এতে তোমার কি হ্যাঁ
তিথিঃ অই আর একবার বউ ডাকবি তো খবর আছে,,,
আবিরঃ আহা বাসর করবো আজ,,
তিথিঃ ছি কি মানুষ
আবিরঃ কেন তোমার স্বামী সকালে বললে না,,,,
তিথিঃ এই আপনি বেশি বকছেন ওকে,,,
আবিরঃ আজ তো চাঁদে চাঁদ ইয়াহুউউ বাসর বাসর বাসর আর বউ তো মাশাল্লাহ
তিথি রেগে মেগে শেষ পারছে না কিছু বলতে,,,
আবির তিথির দিকে আসে
তিথিঃ প্লিজ এমন করিয়েন না,,
আবিরঃ আমার বউ আমার ইচ্ছে
তিথি ভয়ে ভয়ে পিছনে যাচ্ছে যেতে যেতে দেওয়ার সাথে লেগে যায়,,আবির তিথির দিকে এগিয়ে এসে তিথির কানের কাছে মুখ এনে বলে
আবিরঃ ভয় পাচ্ছো?পাওয়ার কথা হাজার হোক তোর ফেক স্বামী আর আজ বাসর কি রিয়েল হবে সো গেট রেডি,,,,,
তিথিঃ আ,,পনি,,,,,
আবিরঃ হ্যাঁ আমি কি?আমি তো জানি আমি তোমার স্বামী
তিথি একটা ধাক্কা দিয়ে তাড়াতাড়ি দরজা খুলতে লাগে আবির বলে
আবিরঃ অই কই যাও আজ আমাদের বাসর আর তুমি কি না পালাও
তিথিঃ অই চুপ কে তোর বউ কিসের বাসর
আবিরঃ কেন আজ তো আমাদের বাসর,,,
তিথিঃ ইউউউউউউউ

আবিরঃ বাসর ঘর ছেড়ে এইভাবে নতুন বউ বের হয় না ওকে
আবির তিথির হাতটা শক্ত করে ধরে
আবিরঃ বাহা বউয়ের হাত তো অনেক নরম তো,, তো বউ বলো ফিলিংস কেমন
তিথিঃ আপনার এতো টা নিচ ছি
আবিরঃ তুমি যদি আমার বউ হতে পারো আমি কেন বাসর করতে পারি না হ্যাঁ
তিথি রেগে আবিরকে ধাক্কা দেয় থাপ্পড় মারার জন্য হাত তুলে আবির হাতটা ধরে মুচড়ে পিছনে নিয়ে তিথিকে শক্ত করে ধরে বলে
আবিরঃ আমার সাথে পারবে না অযথা কেন জোর খাটাতে আসো হ্যাঁ?
তিথিঃ আমার হাতে লাগছে প্লিজ হাত ছাড়ুন
আবিরঃ সবাই কে সত্যি বলে দাও না হলে কি হবে দেখবা,,,
তিথিঃ কখনো না ওকে,,,
আবিরঃ ওকে আমি ও বাসর করবো আর কি,,,
তিথি আবিরকে জোরে ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়,,,আবির তো হাসতে হাসতে শেষ
আবিরঃ এখন কই যাবে সত্যি টা সবাই কে না বলে মিস বকবক,,,এখন আসছে তো উট পাহাড়ের নিচে,,,
আবির খাটের উপর শুয়ে আছে আর নিজে নিজে হাসছে কি না মজা দেখাইছে তিথিকে,,,,আর বেচারি যা ভয় পাইছে ভয়ে তো পালিয়েছে,,,
চলবে,,,,,,,,,