না চাইলেও তুই আমার !! Part- 32
মিহানে মিরাকে নিয়ে আস্তে বাইক চালিয়ে রাত নয়টার দিকে বাড়ির সামনে হাজির হয়। মিহান বাইক থামালে মিরা মিহানের বুক থেকে মাথা তুলে দেখে বাড়ি এসে গেছে।
মিহান : তুমি ঘুমাও নি?
মিরা : না। চোখ বন্ধ করে ছিলাম।
মিহান : আচ্ছা চলো।
মিরা : মিহান মামুর গাড়ি আর খান বাড়ির গাড়িগুলো এখানে কেনো?
মিহান : তাই তো!
মিরা : আচ্ছা চলো ভিতরে গিয়ে দেখি।
মিহান : তাই চলো।
মিরা আর মিহান হল রুমে এসে দেখে মিরার নানুর বাড়ি আর খান বাড়ির সবাই এই বাড়িতে। মিরা মিহানের দিকে তাকায় আর মিহান মিরার দিকে। কিছু বোঝার আগেই মম ওদের বলে।
মম : তোরা ফ্রেশ হয়ে আয়। তারপর একসাথে ডিনার করবো।
মিহান মাথা নেড়ে মিরাকে নিয়ে উপরে চলে যাবার সময় অনু এসে মিহানকে বলে।
অনু : ভাইয়া তুই গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়।আমার ভাবীর সাথে কথা আছে।
মিহানকে কিছু বলতে না দিয়ে মিরাকে নিয়ে অনু চলে যায় ওর রুমে। মিরা অনুর রুমে গিয়ে দেখে সব মেয়েরা অনুর রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছে। মিরা ভ্রু কুঁচকে ওদের হাবভাব বোঝার চেষ্টা করছে।
মিরা : অনু কি বলবে আমাকে?
নিশু : অনু কি বলবে আপু বলবে তো তুমি?
মিরা অবাক হয়ে বলে।
মিরা : আমি আবার কি বলবো?
নিঝুম : বা রে জিজু তোমাকে প্রপোজ করলো। তুমি রাজিও হলে। তারপর কি হলো সেটা বলবে?
মিরা চোখ বড় বড় করে তাকায় ওদের দিকে। ওরা একথা জানলো কি করে একথা ভেবে পাচ্ছে না মিরা। মিরা অনুর দিকে তাকালে অনুর চোখ মুখ দেখে মিরা বুঝে যায় একাজ অনু করেছে।
মিরা : সব তো ভিডিও তে দেখলে তাহলে আর নতুন করে কি বলবো।
নীলা : সব ছিলো না আপু। তুমি জিজুর কোলে বসার পর কি হয়েছে সেটা ছিলো না। সেগুলো বলো।
নিধি : আপু তোমার বেলি চেইন টা খুব সুন্দর। কেউ গিফট করেছে তোমাকে? বেশ মানিয়েছে তোমাকে।
নিধির কথা শুনে সবাই মিরার পেটের দিকে তাকায়। মিরা বিড়বিড় করে বলে।
মিরা : কি চোখ রে বাবা। সব চেয়ে বেলি চেইন টা চোখে পড়লো। না এরা এখন আমাদের নিয়ে মজা করবে কিছু একটা করতে হবে। না হলে একের পর এক প্রশ্ন করে মাথা খারাপ করে দিবে।
মিথি : ভাবী আসতে আসতে কি কথা বলো।
মিরা হাসি মুখে বলে।
মিরা : তেমন কিছু না। ভাবছিলাম তোমাদের সবকিছু ডিটেইলে বলবো না প্রাক্টিকাল দেখাবো?
মিশু : মানে?
মিরা দরজার দিকে তাকিয়ে বলে।
মিরা : এই তো মিহান এসে গেছে। এখনি তোমাদের মানে বুঝিয়ে দিচ্ছি। মিহান তুমি এসে সোফায় বসো ওরা সবাই তুমি আমাকে প্রপোজ করার পর কি হয়েছে সেটা জানাতে চাচ্ছে। তাই আমি ওদের প্রাক্টিকাল কলে দেখাবো।
মিরার কথা শুনে সবাই চোখ বড় বড় করে মিরার দিকে তাকায়। মিহান মিরার কথা বুঝতে পেরে ঠোঁটের কোণে হাসি এনে মিরাকে কোলে তুলে নিয়ে হাটতে হাটতে বলে।
মিহান : জান তুমি ওদের পরে প্রাক্টিকাল ফেক্টিকার দেখিয়ো এখন তোমার সাথে আমার কথা আছে রুমে চলো।
মিহান মিরাকে নিয়ে চলে গেলে। অনুরা মজা করে না পেরে মুখ ভার করে বসে আছে।
সবাই ডিনার করে হল রুমে বসলে তখন মিহানের পাপা মিহানকে বলে।
পাপা : মিহান আমরা চাচ্ছি তোমার আর মিরা মামনির বিয়ে টা বড় অনুষ্ঠান করে করতে।
মিহান : বিয়ে যখন হয়ে গেছে তাহলে এখন আবার অনুষ্ঠান করার কি দরকার!
মম : আমার এক মাত্র ছেলে তুমি তোমার বিয়েতে আমি আমার সব শখ পূরন করতে চাই মিহান।
মিহান : আচ্ছা তোমরা যা ভালো মনে করো।
পাপা : আর পনের দিন পর তোমাদের বিয়ের তারিখ ঠিক করা হয়েছে। ততদিন মিরা ওর বাড়িতে থাকবে।
পাপার কথা শুনে মিহান গম্ভীর হয়ে বলে।
মিহান : বিয়ে হয়ে ভালো কথা কিন্তু আমার বউ আমার সাথে থাকবে।
মিহানের কথায় সবাই হেসে দেয়।
পাপা : মাত্র পনের দিনের ব্যপার তো।
মিহান আর কিছু না বলে ওখান থেকে উঠে চলে যায়। সবাই মিহানের যাবার দিকে তাকিয়ে থাকে। মিরা সবার দিকে তাকিয়ে বলে।
মিরা : আমি মিহানকে রাজি করাছি তোমরা চিন্তা করো না।
মিরা আর কারো সাথে কথা না বলে ওখান থেকে উঠে চলে আসে। মিরা মিহানকে রুমে না পেয়ে ছাদে চলে যায়। মিরা গিয়ে দেখে মিহান দোলনায় বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। মিরা একটু হেসে আস্তে আস্তে হেঁটে গিয়ে মিহানের কোলে বসে।
মিরা : চলে এলে যে?
মিহান : তোমাকে ছাড়া কি করে এতদিন থাকবো। তুমি যে আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। তুমি এখন আমার বুকে মাথা না রাখলে আমার ঘুম আসে না। সেখানে পনের দিন! আমি পরবো না।
মিরা : এই পনের দিন না তুমি আমার থেকে আলাদা থাকবে না আমি তোমার থেকে আলাদা থাকবো।
মিহান : কি করে?
মিরা কিছু বলবে তার আগেই ছোটরা সবাই ছাদে এসে হাজির। মিরা ওদের দেখে মিহানের কোল থেকে নেমে যেতে চাইলে মিহান ওকে ভালো করে জড়িয়ে ধরে।
মিথি : ভাইয়া এবার তো ভাবীকে ছাড়ো?
মিহান : আমি আমার বউকে ধরছি তাতে তোর কি? আর তোরা এই সময় এখানে কেনো?
অনু : আমরা জানতাম না তোমরা এখানে। আমরা তো এখানে গান বাজনা করবো বলে এসেছি।
মিশু : জিজু তুমি আর আপু আমাদের তো ট্রিট তো দিলে না। এখন না হয় তোমরা একটা গান শুনাও আমাদের।
নিঝুম : মিশু একদম ঠিক কথা বলেছে।
মিহান : আচ্ছা ঠিক আছে আমরা গান গাইবো। পরে আমি তোমাদের সবাইকে ট্রিটও দিয়ে দেবো।
নিধি : কিন্তু আমার একটা কথা আছে।
মিরা : আবার কি কথা?
নিধি : তোমরা এখন যেভাবে বসে আছো সেভাবে গান গাইতে হবে।
মিরা : কী?
মিহান হেসে বলে।
মিহান : ঠিক আছে। আমি রাজি গিটার দেও।
শুভ মিহানের হাতে গিটার দিলে। মিহান মিরাকে কোলে নিয়ে গিটার বাজাতে শুরু করে। গিটারের সুর তুলে মিরা, মিহান গান গাইতে শুরু করে।
মিরা ও মিহান : 💞 Tu nazm nazm sa mere
Honthon pe thehar ja
Main khwab khwab sa teri
Aankhon mein jaagun re
Tu ishq ishq sa mere
Rooh mein aake bas ja
Jis aur teri shehnaai
Uss ore main bhaagun re
Na na…….🎵
Haath thaam le piya
Karte hain vaada
Ab se tu aarzu
Tu hi hai iraada
Mera naam le piya
Main teri rubaai
Teri hi tto piche piche
Barsaat aayi, barsaat aayi
Tu itrr itrr sa mere
Saanson mein bikhar jaa
Main faqeer tere qurbat ka
Tujhse tu maangun re
Tu ishq ishq sa mere
Rooh mein aake bas ja
Jis aur teri shehnaai
Uss ore main bhaagun re
Mere dil ke lifaafe mein…🎵
[ Tera khat hai janiya ](2)
Nacheez ne kaise paali
Kismat yeh janiya ve
Oh mere dil ke lifafe mein
[ Tera khat hai janiya ](2)
Nacheez ne kaise paali
Jannat yeh janiya ve
[Tu nazm nazm sa mere…
Honthon pe thehar ja ]…(2)
Main khwaab khwaab sa teri
Aankhon mein jaagun re
Tu ishq ishq sa mere
Rooh mein aake bas ja
Jis aur teri shehnaai
Uss ore main bhaggun re…🎵💞
মিরা এতক্ষণ মিহানের বুকে মাথা এলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে গান গাইছিল। মিহান গিটারটা সাইডে রেখে মিরার দিকে তাকিয়ে দেখে মিরা চোখ বন্ধ করে আছে। সবার হাত তালির শব্দে মিরা, মিহানের ঘোর কাটে।
চলবে… 🍁