ভালোবেসে মরেছি – লেখাঃ আশুরা আক্তার আনু
ভালোবেসে মরেছি
জামার পেছনের চেইনটায় জোড়ে একটান দিতেই ছিড়ে গেল। সাথে সাথে জেরিনের ফর্সা পিঠটি উন্মুক্ত হলো। হাত,পা এবং মুখ বাঁধা থাকায় জেরিন কিছুই করতে পারছিলো না। শুধু চোখের জল ফেলা ছাড়া।পা পর্যন্ত লম্বা একটা কালো কোট হাতে কালো মোজা, মুখে মাস্ক এবং মাথায় লম্বা একটা হ্যাট। বোঝার কোন উপায় নেই কে এমন করছে জেরিনের সাথে।একটু পর জেরিনের পিঠে একটা সুচ দিয়ে আচর দিল। সাথে সাথে পিঠ কেটে গিয়ে রক্ত পরতে শুরু করলো।জেরিন সহ্য করতে পারছেনা,আবার কিছু বলতেও পারছেনা।
এরপর ব্যক্তিটি একটা ট্যাটু করার মেশিনের সাহায্যে জেরিনের সমস্ত পিঠে এমনভাবে কিছু লিখছে, যাতে জেরিন অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা। লেখা হয়ে গেলে ব্যক্তিটি হাতের ইশারায় জেরিনের মুখের বাধন খুলে দিতে বলে।মুখের বাধন খোলার সাথে সাথে জেরিন চিৎকার দিয়ে ওঠে।এবং খুবই হিংস্রতার সাথে বলে,
জেরিনঃতোরা একটাও বাচবি না। আমার সাথে এমন করার ফল খুবই খারাপ হবে তোদের। আমার বাপি তোদের একটাকেও ছাড়বে না বলে দিলাম। আমি বাপিকে সব বলবো।
জেরিনের এমন কথায় ছেলেগুলো হাসতে থাকে।তাদের মাঝে একজন হাসতে হাসতেই বলে,
-বেচে ফিরলে তো বলবেন
একটা ডেভিল হাসি হেসে দেয় সবাই।জেরিনের মাঝে আতংক ভর করে। সে আবারও চিৎকার দিয়ে বলে,
-তোরা কারা,কি চাস আমার থেকে?আমি তোদের কি ক্ষতি করেছি?আমায় যেতে দে তোরা প্লিজ।।
আবারও ছেলেটি বলতে থাকে,
-ম্যাডাম আপনি কি করেছেন তা না হয় ওপারে গিয়েই শুনবেন কেমন? ( ভালোবেসে মরেছি )
আবারও জেরিনের মুখ বেধে দেয়।সব ছেলেরা মিলে জেরিনকে ধরে গাড়িতে ওঠায়।কালো কোট পড়া ব্যক্তিটি শুধু ইশারা করে জেরিনকে নিয়ে যাওয়ার। ছেলেগুলোও তার কথামতো কাজ করে। ওরা গাড়ি নিয়ে চলে যাওয়ার পর কালো কোট পড়া ব্যক্তিটির ঠোটের কোনে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে।।।।।।।।
(বিঃ দ্রঃ “ ভালোবেসে মরেছি – লেখাঃ আশুরা আক্তার আনু ” গল্পের সবগুলো পর্ব একসাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন)
আজ তৃতীয়বারের মতো একই স্টেশনের পাশের ব্রীজটার নিচে আরেকটি লাশ পাওয়া গেল।লাশটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুব টর্চার করার পর ব্রিজের ওপর থেকে ফেলে দিয়ে খুন করা হয়েছে ।লাশটিকে ভালোভাবে সার্চ করে দেখা গেল সেই একই চিন্হ যা এর আগের দুটো লাশে পাওয়া গিয়েছিল।
পুলিশ বুজতে পারলো একই ব্যাক্তির কাজ এটা।তবে এটা বুঝতে পারলো না কে করছে এমন।
________________
-“এএই…উফ..” মেরে দিল রে.. আম্মু😭
গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে মিহু বসে বিলাপ করছে।
-“ওই শালা তোর গাড়ি নিয়ে ভার্সিটির মাঠে আসার স্বাদ মিটিয়ে ছেড়ে দিব।। আমায় তো মেরেই ফেলছিলি। তোকে তো খুন করা লাগে😭ওই হারামজাদা বাইর হ,বাির হ গাড়ি থেকে😤”
মিহুর কথা শুনেও গাড়ি থেকে কারও বের হওয়ার নাম নেই।তারউপর গাড়ি একটু ব্যাকে নিয়ে মিহুর পাশ কেটে চলে গেল। মিহুর দেমাগ এতেই চটে গেল।।ধুলো ঝাড়তে ঝাড়তে গাড়িতে থাকা ব্যক্তিটিকে ভিষন বকতে থাকলো।
ক্যান্টিনে পৌছে মিহু দেখতে পেল তিথি,পিয়াস,চৈতি,বিপুল সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছে।ওদের আড্ডা দিতে দেখে মিহুর রাগ যেন সপ্তম আকাশে পৌঁছে গেল।ওদের কাছে গিয়েি বলতে শুরু করল,
-ওই হারামিরা,একেকটা বান্দর বান্দরনী। এদিকে আমি এক্সিডেন্ট হয়ে বসে আছি..আর তোরা আড্ডা মারছিস?
চৈতিঃকৈ। তুই তো ঠিকই আছিস।তোর এক্সিডেন্ট হয়েছে বলে তো মনে হচ্ছে না রে 🤣
মিহুঃতারমানে তোরা কি আমি হসপিটালে ভর্তি হলে খুশি হতি?🥺
তিথিঃনাহ বেবি। তোমার কিছু হোক আমরা কেউ এমন চাইতে পারি বলো? তুমি শুধু শুধু আমাদের ভুল বুঝছো😁
বিপুলঃওই তোরা মিহুর সাথে কি ঢং করতেছিস?ওর কোথায় লেগেছে আগে দেখ।
চৈতিঃওহ হ্যা রে তোর কোথায় লেগেছে?আর এমন হলো কিভাবে?
মিহুঃআর কইস না বইন😭এক হারামজাদা আমার মার্ডার করতে চাচ্ছিল মনে হয়। শালার এটিটিউড দেখে আমি অবাক। একে তো আমায় গাড়ি দিয়ে ধাক্কা দিল। তারওপর আমায় সরি না বলেই গাড়ি নিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে গেল। শালাকে ধরতে পারলে এমন মাইর দিব যাতে জিন্দেগিতে না ভুলে।
পিয়াসঃআচ্ছা হয়েছে হয়েছে। তোরা এখন থামবি?এখানে আয় বোস। আর বল কে এমন করেছে? আমরা দেখে নেব।
মিহুঃ🙄দেখলে কি আর তোদের বলতাম নাকি?
সবাই অবাক হয়ে বলল,
-মানে?😮
মিহুঃআরে ব্যাটা তো গাড়ি থেকেই বের হয়নি। আর কালো কাচ থাকায় দেখতেও পারিনি কে।
পিয়াসঃখুব ভালো করেছিস। আচ্চা টেনশন নিস না। আমরা খুজে বের করব।আর তাকে সেই ধোলাি দেব কেমন?😃
মিহুঃহ্যা😋🥳
ওরা সবাই গল্পগুজব করতে থাকে। এর মাঝে মিহুর পেছন থেকে দাড়িয়ে,
“এক্সকিউজ মি”
যে এইটুকু কথা বললো তাকে দেখে মিহু বাদে সবাই অবাক হয়ে দারিয়ে পড়লো…..
.
.
#চলবে_ ভালোবেসে মরেছি
বিঃ দ্রঃ “ লেখাঃ আশুরা আক্তার আনু ” লেখকের লেখা অন্য গল্প গুলো পড়তে এখানে ক্লিক করুন !!
এক পলকে দেখে নিন সহজে গল্প খুঁজে পাওয়ার সুবিধার্থে দেওয়া হল