আমার ক্রাশ বর

আমার ক্রাশ বর !! Part- 05

সারা রাত বেচারি অনু খুশির ঠেলায় ঘুমাতে পারে নাই,,,
যেই না একটু চোখ লেগেছিল তাও ভোরে আজানের সুর শুনে ভেঙ্গে যায়।
তাড়াতাড়ি উঠে নামাজ পড়ে।
নামাজ পড়া শেষে কি করবে তাই ভাবতে থাকে,
সে ভোর থেকে রেডি হতে শুরু করে,,
নিজেকে একদম পারফেক্ট ভাবে রেডি হয়ে বসে থাকে।

এদিকে সকাল আটটায় নাস্তার টেবিলে,,,

আবির :অনু বনু তা রাতে ঘুম ঠিক মতো হয়েছে তো??

অনু :একটু ভাব নিয়ে বলে,,,
কেনো রাতে ঘুমের আবার কি হবে??
ঘুম ঠিক মতো কমপ্লিট হয়ছে,,
তা নিয়ে তোমাদের ভাবতে হবে না।

আবির :কি যে বলিস আমি না ভাবলে কে ভাববে বল।
জানিস প্রথম যে দিন আমি বাবার অফিসে জয়েন করি,,
সেই দিন সারারাত আমার একটুও ঘুম আসে নাই।।
খুব টেনশন কাজ করছিল মাথায়।

অনু :আমার কোনো টেনশন নাই।
(হো তোমাগো আমার টেনশনের কথা বলে মরি তাই না।মনে মনে)

অনুর মা :আবিদ বাদ দাও অনুর কথা,,
যে দুষ্টু মেয়ে,,আর না আছে কোনো কাজের যোগ্যতা।
আজ জয়েন করবে তো আজকেই চাকুরী ছেড়ে চলে আসবে।

অনু :যদি চাকুরী ছেড়ে না আসি তখন কি করবে?

অনুর মা :তুই যদি ১ মাস চাকুরী করতে পারিস তাহলে আর বিয়ের কথা বলবো না।
কিন্তু যদি ছেড়ে চলে আসিস তাহলে তোকে আমাদের পছন্দ মতো বিয়ে করতে হবে।

অনু :আমি রাজী। আমিও দেখিয়ে দিবো আমি কি করতে পারি।
তোমাদের কথা মতো জীবনেও বিয়ের আসরে বসবো না।

তারপর অনু তাড়াতাড়ি সবার থেকে বিদায় নিয়ে অফিসে যাবার জন্য বেরিয়ে যায়।

অনু রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে আর ভাবছে,,
আমাকে কি বাড়ির মানুষ ছাগল পেয়েছে যে বিয়ে দিয়ে বিদায় করবে,,,
এই অনুকে তো চেনে না,,অনু কি জিনিস😏



অফিসের গেটে ঢুকতেই সে আরিয়ানের সাথে ধাক্কা খায়।সামনে তাকিয়ে বলে

অনু :ওরে শালার ছেঁছড়া কানা আমারে ফলো করতে করতে আমার অফিসে চলে আসছিস??

আরিয়ান :Hey dirty girl,, are you crazy??
নিজেকে আয়নাতে ভাল মতো দেখছো যে তোমাকে ফলো করতে যাবো তাও এই আমি।
look at me!!

অনু :ওরে আমার সোনার চান্দু আমি যেখানে যাই সেখানে পৌঁছে যায়।
আবার আমাকে নিয়ে নিন্দা করতে আসছে??নিজে বাড়িতে গিয়ে ভাল করে আয়না দেখুন। আজ অফিসে প্রথম দিন বলে কিছু বলছি না,,
নাহলে ঘাড় মটকে দিতাম।
তাই বলে আরিয়ান কে পাশ কাটিয়ে চলে যায় ।

আরিয়ান :oh i see,,, এই Dirty girl এই অফিসের,,,,Not bad for her…
wait & see,,,
আমাকে অপমান করার শখ মিটে যাবে।



অনুকে অফিসের ম্যানেজার কিছু কাগজ দেয় স্বাক্ষর করতে।
কাগজে কি লেখা আছে তা না পড়ে স্বাক্ষর করে দেয়।

অনু :ম্যানেজারের হাতে কাগজ গুলা দিয়ে বলে,
কি কাজ আজ থেকে আমার??

ম্যানেজার :আজ থেকে আপনি এ অফিসের বসের পি এ

অনু :কিন্তু আমি তো একজন সাধারণ কর্মচারী হিসেবে কাজ করতে আসছিলাম।
পিএ কি করে হয়ে গেলাম😕

ম্যানেজার :আমি জানি না,,হয়তো আপনার মাঝে কোনো ভাল গুন দেখছে তাই এ পোষ্ট অফার করছে।
আপনি বরং বসের সাথে কথা বলে দেখুন,,
এখান থেকে সোজা গিয়ে বাম পাশে স্যারের কেবিন।

অনু :সোজা বসের কেবিনে এসে নক করে,,
অনুমতি পাবার পর রুমে প্রবেশ করে।

অনু :স্যার আমি তো সাধারণ কর্মচারি হিসাবে কাজ করতে আসছিলাম!!
এতো বড় পোস্ট কি ভাবে আমাকে দিলেন?? এর যোগ্য তো আমি না।

আরিয়ান :নিজের মুখের সামনে থেকে ফাইল সরিয়ে বলে,,,জানি তো আপনি পিএ হবার যোগ্য না।

অনু :তোতলা তে তোতলাতে বলে আপ_নি এখানে বসের কেবিনে কি করছেন??

আরিয়ান :আমার অফিসে আমি থাকবো না তো কি থাকবে আপনার বর??

অনু একটু লজ্জা পেয়ে বলে না স্যার সে থাকলে কি আপনি সামনে থাকতেন?? 😁😁

আরিয়ান :just shut up, You idiot !!

অনু এই একদম ধমক দিয়ে কথা বলবেন না?? আপনার মতো মানুষ এ অফিসের বস আগে জানলে কখনো কাজ করতে আসতাম না।

অারিয়ান :তাই তাহলে কি করতে আসতেন?? প্রেম করতে তাই বুঝি?

অনু :আপনি কি দেখে যে বস হয়েছেন আল্লাহ জানে,,ড্রাইভার হবার ও যোগ্যতা নাই আপনার।

অারিয়ান :অনেক অপমান করছেন।এবার আমার পালা মিস…

অনু :আরিয়াত খান অনু।

অারিয়ান :বাববাহ নামের কি বাহার,,আরিয়াত খান অনু,,,তা নামের সাথে কি কাজের মিল আছে??

অনু :কাজের মিল থাক বা না থাক তাতে আপনার কি,,??

অারিয়ান :আমার কিছু না,আবার অনেক কিছু এখন আপনি আমার পিএ।

অনু :কিসের পিএ করবো না আপনার চাকুরী চলে যাবো আমি আমার বাড়ি।বলে দরজা খুলবে তখন

আরিয়ান : তাহলে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা দিয়ে যান।

অনু থ হয়ে দাড়িয়ে যায়।ফিরো এসে বলে কীসের টাকা,,চাকুরী করবো না তো টাকা কেন দিবো??

অারিয়ান :আপনি একটু আগে যে কন্টাক্ট পেপার সাইন করছেন তাতে লেখা আছে,এক বছরের আগে এ অফিস থেকে আপনি কাজ ছেড়ে যেতে পারবেন না।আর এক বছরের আগে যদি যান তাহলে অফিস কে এ টাকা দিতে হবে।

অনু :টাকা দিতে রাজী আছি তাও চাকুরী করবো না।(এমন সময় অনুর মার কথা মনে পরে চাকুরী করবি না বিয়ে করে সংসার করবি?)

আরিয়ান :বাববাহ Dirty girl এর দেখছি টাকার গরম আছে।

অনু কিছু না বলে ভে ভে ভে করে কান্না শুরু করে।।

আরিয়ান :ধমক দেয় জোড়ে,, একদম চুপ।

অনু :আরিয়ানের হাত ধরে বলে স্যার গো আপনার চাকুরী করতে আমি রাজী আছি।পঞ্চশ টাকা হলে কথা ছিল এতো টাকা আমি কোথায় পাবো।

আরিয়ান :আচ্ছা এইবার না ঘুঘু লাইনে আসছো।।
যাও আমার ডান পাশের কেবিন তোমার সেখানে গিয়ে বসো,, আমি দরকার হলে ডাক দিবো।

অনু নিজের ডেক্সে বসে আরিয়ান কে হাজার গালি দিচ্ছে,,
শালা হনুমানের চৌদ্দ নাম্বার বংশের নাতি,,,
খচ্চরের বড় বাপ,,,শয়তানের নানা,,,তুই কি ভাবছিস তোর টাকা দিবার ভয়ে চাকুরী তে জয়েনিং করছি,,😡আরে বোকা না,,,বিয়ের ভয়ে করছি,,চাকুরী টা না করলে মা বিয়ে দিয়ে দিবে তাই।

একটু পর আরিয়ান অনুকে ডেকে পাঠায়।

অনু : স্যার আমাকে ডেকেছেন??

অারিয়ান :নাহ আমি তো আমার পিএ কে ডাকছি।

অনু :জ্বি আপনার পিএ হাজির বলুন কি করতে হবে??

আরিয়ান :নিচে গাড়িতে আমার কিছু ফাইল আছে তা সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে আনতে হবে।

অনু :এ আর কি কথা আমি এখুনি আনছি।
নিচে এসে গাড়িতে দেখে চার পাঁচ টা ফাইলের বান্ডিল বাধা,,,তা এতো যে সে এক বারে নিয়ে যেতে পারবে না।।

অনু :শয়তান বান্দরবন তোর মনে এই ছিলো?? অনুরে তুই আজ মরে ভুত রে।

অনু সেই ফাইল গুলা নিয়ে অনেক কষ্ট তিন চারবার দশ তালা ওঠা নামা করে শেষে বসের কেবিনে বসে কান্না শুরু করে।

আরিয়ান :সবে শুরু Dirty girl আগে আগে দেখো আরো কতো কি করি।

অনু :আমাকে মারে ফেলতে চান?? এমন ইনোসেন্ট বাচ্চা মেয়ের সাথে এমন করতে একটু কষ্ট লাগে না,,??

আরিয়ান :হুম কষ্ট লাগে তো,,তাই এখন তোমাকে ছুঁটি দিচ্ছি। কাল ঠিক নয়টায় অফিসে থাকে।

অনু :খুশি হয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ছয়টা বাজে।,,নাক শিটকে বলে ১ ঘণ্টা আগে অফিসের সময় শেষ হয়ছে,,,এখন না কি ছুটি।

আরিয়ান :আরো সময় থাকতে চাও তাহলে থাকো আমকার সমস্যা নাই।

অনু :আমার মরার শখ নাই,,তাই বলে তারাতারি বাড়িতে চলে আসে…
(বাকিটা কালকে জানবেন অনু মরে কি বেঁচে থাকে,,,এই অল্প কাজে কেউ মরে না😏)



চলবে…..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *