আমার ক্রাশ বর !! Part- 04
অনু সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘুম ঘুম চোখে এক মগ পানি নিয়ে ঘরের বাহিরে আসে কুলি করে মুখ ধৌত করতে।
সে মুখে পানি নিয়ে কুলকুচি করে মুখের পানি পেছনে ফেলে দেয়,কিন্তু সে পানি কারো গায়ে পড়ে,,,
সে ব্যক্তি চিৎকার দিয়ে বলে,
“you dirty girl… কেউ মুখের নোংরা পানি কারো গায়ে ফেলে???”
অনু :এবার দুচোখ ভাল ভাবে কচলে তাকিয়ে দেখে এ আর কেও না,,সেই শয়তান বেডা।
“আমি ইচ্ছে করে পানি আপনার গায়ে ফেলে দেই নি।”
অারিয়ান :ইচ্ছা করে আমাকে এমন নোংরা পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিয়েছেন???
অনু :আর কিছু না বলে মগে থাকা বাকী পানি ও আরিয়ানের গায়ে ছুড়ে দেয়।তারপর বলে, “প্রথমে নোংরা পানি দিয়েছি না জেনে। এবার পরিষ্কার পানি দিয়ে পরিষ্কার করে দিয়ে গেলাম।” বলে অনু অন্যদিকে চলে যায়।
আরিয়ান :এই বেয়াদব মেয়ে যে কেনো আমার সামনে আসে আল্লাহ জানে।কোন জন্মের শত্রুতা আছে মাবুদ এ মেয়ের সাথে 😤
তারপর আরিয়ান রফিক চাচাকে দেখতে তার বাড়ির ভেতরে যায়।
রফিক চাচার সাথে কথা বলে,,,
রফিক :আরে আরিয়ান বাবা যে এতো কষ্ট করে এখানে কেনো আসতে গেলেন। আমাকে বলতেন আমি চলে যেতাম দেখা করতে।
আরিয়ান : আরে চাচা কি যে বলেন,,আপনি আমাকে এতো ভালবাসা দিয়েছেন আর আপনার জন্য আমি এই টুকু কাজ করতে পারবো না। তাই কখনো হতে পারে।
রফিক :তা আরিয়ান বাবা আপনার শার্ট ভিজে গেছে কি করে?? বাহিরে তো রোদ,, বৃষ্টি তো নেই।
আরিয়ান :নিজের দিকে তাকিয়ে বলে,”চাচা সব সময় ভিজতে বৃষ্টি লাগে না,এ বৃষ্টি মানুষের দান।”
রফিক :তার মানে আমাদের এখানে কেউ এ অকাজ করছে , বাবা আমি আমাদের এলাকার মানুষের হয়ে ক্ষমা চাইছি।।
আরিয়ান :আরে চাচা কি যে বলেন,,,আপনি কেনো ক্ষমা চাইবেন!এ কথা বাদ দিন।
তারপর রফিকের পরিবারের সাথে দেখা করে,তাদের মোটা অংকের কিছু টাকা দেয়।
রফিক ও তার পরিবার প্রথমে নিতে রাজি হয় না।
কিন্তু আরিয়ান তাদের অনেক বুঝিয়ে টাকা গুলো দিয়ে সেখান থেকে চলে আসে।
এর কিছু সময় পর অনু সে বাড়ির ভেতরে গিয়ে বলে,”বাব্বাহ এখানে যে দেখছি ফলের দোকান দিয়েছেন!
এতো ফল, মিষ্টি কোথায় থেকে আসছে?”
রহিমা :আম্মাজান আমার ভাই যাদের বাড়িতে চাকুরী করে সে অফিসের বস এসেছিল।
সে তার সাথে এসব ফল মিষ্টি আর লগে মেলা টাকা দিয়ে গেছে,,,
রফিক :আমাদের আরিয়ান বাবা অনেক ভাল।।সে সবাই কে সাহায্য করে।।
আর সবাই কে অনেক ভালবাসে।
অনু :ও তাহলে তো ভালই।
রহিমা :আম্মাজান আপনে একটু আগে আসলে দেখতে পারতেন,, কি সুন্দর পোলা,,,যেমন দেখতে সুন্দর তেমন মনডা তার ভালা।
অনু :হুম তাই তো দেখছি,,একটুর জন্য দেখা হলো না। সমস্যা নাই নাম তো জানি কোনো একদিন দেখা হবে ইন শা আল্লাহ।
‘
‘
এদিকে আরিয়ান বাড়িতে এসে নিজের ড্রেস গুলা চেঞ্জ করে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নিজের রুমের বারান্দায় দাড়িয়ে থাকে।
এমন সময় আয়াত এসে বলে,”কি ভাইয়া তোমার মুড খারাপ কেনো?”
আরিয়ান :আজ ও সেই রাস্তার মেয়ের সাথে দেখা হয়।।আজ আমাকে মুখের নোংরা পানি দিয়ে ভিজিয়ে দেয়।
আয়াত :বেপার কি রে ভাইয়া?? একি মেয়ের সাথে বারবার দেখা!!দেখিস, শেষে গলায় না ঝুলে যায়।
আরিয়ান :আমার গলায় কেউ কোনোদিন ঝুলতে পারবে না,,,কারণ তো ভালই জানিস।
ফুপু আম্মা ছাড়া আমার জীবনের উপর আর কারো কোনো অধিকার নাই।
আয়াত :জীবন টা তোর।।ফুপু আম্মার না।
তাই তোর জীবনের সব সিদ্ধান্ত সে কেনো নিবে?? তোমার নিজের ইচ্ছা সিদ্ধান্ত থাকতেই পারে।
আরিয়ান :আমার কালো অতীত টা তোর থেকে অজানা নয়।তাহলে কেনো এতো প্রশ্ন??
আমি ফুপু আম্মার কাছে বাঁধা যে।
আয়াত : আর কিছু না বলে চলে যায়।
জানে, ভাইয়ের সে এমন স্থানে আঘাত করেছে, যেখানে থেকে এখন অনেকটাই রক্তক্ষরণ হবে। সে রক্তক্ষরণে ইচ্ছা করলেও কোন ডাক্তার মলম লাগাতে পারবে না।
মানুষের জীবন সত্যিই অন্যরকম।
কেউ হাসির আড়ালে কাঁদে,
আবার কেউ কান্নার আড়ালে হাসে।
‘
‘
‘
সেখানে আর দুই এক দিন থেকে অনু আর রহিমা চলে আসে।।
কারণ অনুর একটা কোম্পানিতে জবের ইন্টারভিউ আছে।
ভাইবা তে পাশ করলে চাকুরী শিউর।
আজ অনুর খুব তাড়াহুড়া।
কারণ আজ ওর ইন্টারভিউ আছে।।
সে খুব দ্রুত রেডি হয়ে বাড়িতে ভার্সিটির নাম করে মিথ্যা বলে ইন্টারভিউ দিতে চলে যায়।
যদি আজ চাকুরী হয় তাহলে সবাই কে সারপ্রাইজ দিবে।
অনেক সময় ধরে অনু ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করছে কখন ইন্টারভিউয়ের সময় হয়।
নির্ধারিত সময় অনুর নাম ধরে ডাকা হয় সেখানে।
তারপর অনু ইন্টারভিউ খুব সুন্দর ভাবে দিতে পারে।
তাই সবাই ওর অ্যাটিটিউড এ খুশি হয়ে জবটা অনুকে দিয়ে দেয়।
এবং বলে পরেরদিন থেকে জয়েনিং।
সকালে আগে এসে কাগজের ফর্মালিটি কমপ্লিট করতে হবে।
তারা সব কিছু ঠিক করে রাখবে সে এসে তার কাজ বুঝে নিবে।
‘
‘
অনু তো খুশিতে বাড়িতে গিয়ে বড় ভাই আবির কে জড়িয়ে ধরে।
আবির :কী বেপার আজ অনু মনু এতো খুশি যে!!ব্যাপার কি??
অনু :সত্যি ভাইয়া আমি অনেক খুশি!!
অাবির :কি অকাজ করছিস যে এতো খুশি??
অনু :আবির কে ছেড়ে দিয়ে সোজা সামনে দাঁড়িয়ে কোমরে দু হাত দিয়ে বলে,,,
মোটেই কোনো অকাজ করি নাই,,
কি করছি জানলে সবাই গর্ব করবি।
অনুর মা :তুই করবি গর্ব করার মতো কাজ ভাবা যায়!!!কোন অকাজ যে করছিস আল্লাহ জানে??
অনুর বাবা :অনুর হাত ধরে নিজের পাশে বসিয়ে বলে কি করেছো মামনি? বলো তো শুনি!!
অনু :বাবা আমার চাকরি হয়ে গেছে😁😁😁
সবাই একসাথে “কিহহহ!!!”
আবির :তোকে কোন অফিসের মানুষ চাকরি দিলো রে??
অনুর মা :দেখ কোনো অফিসের মাছি তাড়াবে, সে কাজ পেয়েছে। তা নাহলে ওর যে যোগ্যতা কে দিবে ওর মতো মেয়েকে কাজ!!😏
অনুর বাবা :এই তোমরা চুপ করবা?? অনু মা বলো তুমি কোথায় চাকরী পেয়েছ??
অনু :বাবা আমি চৌধুরী গ্রুপ এন্ড কোম্পানি তে চাকুরী পেয়েছি। কাল থেকে জয়েন করবো,,,
এই দেখো জয়েনিং লেটার 😁
সবাই তো পুরাই ভেবাচেকা খেয়ে যায়।।
তাদের মেয়ে নিজের কোম্পানি ছেড়ে অন্যের কোম্পানিতে জব করবে ভাবা যায়।
অনুর বাবা :এতো বড় কোম্পানি তে তুমি কাজ করবে,,এতো ভাল কথা।।তুমি আমাদের কোম্পানি তে জব করলে তো পারতে?
অনু :বাবা তোমার কোম্পানি তে জব করলে তো আর নিজের পরিচয় তৈরি করতে পারবো না।।সবাই বলবে তখন, বাবার আছে তাই পেয়েছি, নিজের যোগ্যতায় পাই নি।আমি তোমাদের ছাড়া নতুন এক পরিচয় তৈরি করতে চাই।
তারপর আর কেউ কিছু বলে না,,,তাদের মেয়ে যা ইচ্ছা করতেই পারে সমস্যা নাই।
সে স্বাধীনতা অনুর আছে।
আবির মিষ্টি এনে অনু কে খাইয়ে বলে,”অভিনন্দন বনু,বেশী করে মিষ্টি খা আর ভাল মতো কাজ করে আমাদের সবার মাথা গর্বের সাথে আরো উঁচু করবি।”
অনু আবির কে জড়িয়ে ধরে।
বলে ধন্যবাদ ভাইয়া তোমাকে,,,
এতো এতো ভালবাসি তোমাকে 😘😘
অনুর বাবা :ভাইকে পেয়ে কি আমাদের ভুলে যাবি??
অনু :বাবা মা তোমাদের তিন জন কেই
আমি নিজের থেকে বেশি ভালবাসি।
তারপর অনু সারারাত ঘুমাতে পারে না,,,
কাল থেকে জব করবে,,,
উফফ কতো নতুন মানুষের সাথে পরিচয় হবে।
নতুন একটা জিবন শুরু হবে ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে যায়।
(প্লিজ মন্তব্য করলে গঠনমূলক করবেন😊)
‘
‘
‘
চলবে….