The villain lover

The villain lover ।। পার্ট : ১২

কখনোই না, এমনটা আমি কখনো হতে দিবোনা,
– হবে,হবে আর কয়েকদিন পর থেকে তুমি নিজে এসে আমার কাছে বলবে যে তুমি আমার সাথে আজীবন থাকতে চাও,
– হুম আমাকে উঠতে দিন,
– না এখন কোথাও যাবে না!
– একি আপনি জামা কাপড় বদলাননি? ফ্রেস হননি? আর আপনি এই ধুলাবালি নিয়ে আমার সাথে শুয়ে ছিলেন?
– বাহ খুব ভালো,বাসায় এসে দেখি মেডাম বাগানে ঘুমাচ্ছে, ভাবলাম বিছানায় শুইয়ে দেই, কোলে করে বিছানায় শুইয়ে দিতেই নিজেই আমার শার্ট খামছে ধরলে। তারপর উপায় না পেয়ে আমিও পাশে শুয়ে পড়লাম, আর এখন আমারি দোষ হচ্ছে??
– জ্বিভে কামড় দিলো ছোয়া,( ইস ছোয়া ঘুমালে কি তোর কিছুই খেয়াল থাকেন। নিজেকে সামলে বললো ছোয়ায়।
তো আপনার বোঝা উচিত ছিলো, যে ঘুম অবস্থায় ওতো কিছু খেয়াল থাকেনা,( মুখ বাকিয়ে কথা গুলো বললো ছোয়া)
– হুম হয়েছে জানি তুমি দোষ আমারি দিবে তাই আর কিছু বললাম না,এখন যাই ফ্রেস হয়ে আসি নয়তো তুমি রুমেই থাকতে দিবেনা।
বলেই রুদ্র ফ্রেস হতে ঢুকলো,
– উফ নিজের কপাল নিজেই চাপড়াতে ইচ্ছা করছে কেনো যে ঘুমাতে গেলাম। বার,বার এই লোকটা কথার পেচে ফেলে দেয় আমাকে( মনে,মনে এসব ভাবছে ছোয়া।
রুদ্র ফ্রেস হয়ে দেখলো বালিশের ওপরে এক হাত আরেক হাত গালে রেখে কি যেন ভাবছে ছোয়া।
– কি ভাবছো জান? আমাকে মারার প্লেন করছো বুঝি?
– আমিকি খুনি যে আপনাকে মারা প্লেন করবো?
– বাহ আমার বউটা দেখি খুব ভালো উত্তর দিতে পারে,কিন্তু উত্তরটা ভুল। কারন আমার কাছে তুমি খুনি?
– কিভাবে?( ঠোট বাকিয়ে প্রশ্ন করলো ছোয়া)
রুদ্র বিছানার ওপরে হাত রেখে ছোয়ার খুব কাছে এসে উবু হয়ে বলতে লাগলো।
এইযে তোমার ভালোবাসা আমাকে খুন করে দিচ্ছে, তোমার দেয়া কষ্ট আমার বুকে রক্তক্ষরণ করছে, এ দোষে কি আমি তোমাকে দোষী করতে পারিনা? যদি মন কষ্ট দেয়ার কোনো শাস্তি থাকতো তবে তুমি হয়ে প্রথম শারির অপরাধী, কারন তোমার প্রেমে আজ আমি মত্ত,আমি মাতাল,আমি নেশাক্ত।
ছোয়া একপলকে তাকিয়ে আছে রুদ্রের দিকে, মনে হচ্ছে রুদ্রকে কেও চোখের পাতা না নড়ানোর জন্য বাধা দিচ্ছে, পলক পরলেই রুদ্রর খুব বড় ক্ষতি হতে পারে,
আর একি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে ছোয়া ও,কারন ছোয়াও পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে রুদ্রের দিকে।
– এভাবে তাকিয়ে কি দেখছো?
রুদ্রের কথা থতমত খেয়ে গেলো ছোয়া,
– কই আমি তাকিয়ে আছি আপনি তো তাকিয়ে আছেন,
হ্যা আমি তাকানোর কারন আছে কারন আমিতো তোমাকে ভালোবাসি।কিন্তু তুমিতো আমাকে ভালোবাসো না, তাইলে কেনো তাকিয়ে ছিলে! ওহ আরো একটা কারন আছে তোমার তাকানোর!
– কি কারন( বেশ অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো ছোয়া)
– তুমি আমাকে হয়তো আবার খুন করতে চাচ্ছ,দেখেছো একটু আগে তুমি বলেছিলে তুমি খুনিনা। আর এখনি আমাকে খুন করার চেষ্টায় তুমি মেতে উঠেছো!
– চোখ দিয়ে আবার কেও খুন হয় নাকি হুম?
– হয়,হয় তুমিও একদিন হবে। তবে সেদিন তুমি নিজ থেকে ধরা দেবে খুন হবার জন্য, বলেই রুদ্র আয়নার সামনে যেয়ে চুল আচরাতে লাগলো।
ছোয়া একমনে ভেবে যাচ্ছে রুদ্রের বলা কথাগুলো, লোকটার মনে হয় মাথায় সমস্যা আছে নয়তো এসব আবল, তাবল কেনো বলবে( ঠোট কামড়ে এসব ভাবছে ছোয়া)
– হঠাৎ ছোয়া চিৎকার করে রুদ্রকে জড়িয়ে ধরলো,রুদ্র অপ্রস্তুত ভাবে বোঝার চেষ্টা করলো কি হয়েছে,
– এএএএএএএএ
– কি হলো ছোয়া,কি হলো।
– তে তে তে
– আরে ততলাচ্ছ কেন,কি?
– তেলাপোকা,
– কোথায়???
– খাটে,
– বাহ তেলাপোকাটাকে ধন্যবাদ দেয়া উচিত, ধন্য তুমি তেলাপোকা তোমারি জন্য আমার বউ আজ নিজ থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
রুদ্রের কোথায় ছোয়া রুদ্রের দিকে তাকাতেই দেখলো সে রুদ্রকে জড়িয়ে আছে,
– আসলে আমি অনেক ভয় পাই তেলোপোকাকে।
– তাই নাকি জান? কিন্তু আজ থেকে আমি তেলাপোকাকে অনেক ভালোবাসি।
– প্রশ্নসুলভ দৃষ্টিতে তাকালো ছোয়া?
– কারন তেলাপোকার জন্য আমার বউটা আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
ছোয়া রুদ্রকে জোরে ধাক্কা দিলো,
– আমি ভয় পেয়েছি আর উনি আছে ওনার জড়িয়ে ধরা নিয়ে,
– ওহ তুমি ভয় পেয়েছো? আসলে তোমাকে জড়িয়ে ধরার খুশিতে ভুলে গিয়েছিলাম,
– হুম ওটাকে তাড়িয়ে দিন প্লিজ!
– আচ্ছা একটা শর্ত আছে!
– কি??
– আমি তেলাপোকাটাকে একটা কিছুতে বন্দি করে রাখবো।
– কেনো?
– আরে আগে আমার পুরো কথা শোনো।
-ওকে বলুন?
– তারপর তুমি আমার সাথে ছাদে যাবে,
– না আমি যাবো না,
– ওকে তাইলে আমি ওই বন্দি তেলাপোকাটাকে তোমার গায়ে ছেড়ে দিবো।
– এএএএ( কাঁদো, কাঁদো ভাবে)
– এ না বউ বলো হ্যা, মানে তুমিতো ছাদে যাবা তাইনা?
-না যেয়ে কি উপায় আছে,নয়তো তো তেলাপোকা ছেড়ে দিবেন।
– এইতো লাইনে এসেছো।
তারপর রুদ্র একটা কাচের পটে তেলাপোকাটাকে ভরে রাখলো, আর মুচকি,মুচকি হাসতে হাসতে ছোয়ার কাছে আসলো।
– এখন যাওয়া যাক?
ছোয়া একবার তেলপোকার দিকে তাকাচ্ছে আর একবার রুদ্রের দিকে, তেলাপোকা গায়ে জড়ানোর চেয়ে রুদ্রের সাথে যাওয়াটা ছোয়ার বেশি গ্রহণযোগ্য মনে হলো, তাই ছোয়া রুদ্রের পেছন পেছন হাটা শুরু করলো।
আকাশে আজ চাঁদ নেই,মেঘে ডেকে গিয়েছে যেমন ছোয়ার জীবনটাও কোনো এক কালো মেঘে ছেয়ে গিয়েছে,হয়তো আকাশের মেঘ কেটে যাবে,তবে ছোয়ার জীবনের মেঘ কাটার কোনো সম্ভবনা দেখছেনা ছোয়া।
– ছোয়া,
– হুম।
– কতো ছোয় বেলা আমাদের বিয়ে হয়েছে তাইনা?
– এতোক্ষন ছোয়ার চোখে ছিলো, আকুলতা তবে এখন রুদ্রের কথায় যেন কপালে হালকা ভাজ পড়লো ছোয়ার।
– হুম সব মনে আছে কিছু ভুলিনি, আর ভুলবো ও না।
– ছোয়া, তুমি যা আজ ভুলতে চাইছো না,একদিন তুমি বুঝবে তোমার বোঝায় অনেক ভুল ছিলো।
আর সেদিন তুমি নিজের ভুল বোঝাগুলো ভুলতে চাইবে।
– ছোয়া একমনে তাকিয়ে আছে,
– ছোয়া, আমাদের কি কখনো বাসর হবে, চাঁদের আলো গায়ে মেখে?
– তাচ্ছিল্যর হাসি হাসলো ছোয়া,
কেনো বাসর তো আপনি করেছেন তবে তা ছিলো একলা বাসর। আপনি ক্ষনিকের সুখ পেয়েছেন কিন্তু কারো মনে গভীর দাগ কেটে দিয়েছে, যে দাগ মুছবার না।
– আমি তেমন করতে চাইনি ছোয়া, তুমি আমাকে বাদ্ধ্য করেছো। বার,বার।
– ছোয়া আবার একমনে আকাশ দেখতে ব্যাস্ত ইচ্ছা করছেনা কথা বলতে,
রুদ্র ছোয়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে,
আস্তে আস্তে ছোয়ার পেছনে গিয়ে ঘার থেকে চুল সরিয়ে ফিসফিসিয়ে ছোয়ার কানে বললো,
ওই মেঘময়ি আকাশকে এতো দেখার কি আছে? আমার কিন্তু ওই আকাশটাকে খুব হিংসা হচ্ছে। আমাকে পাগল করে এখন আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা হচ্ছে?
– (কাপা কাপা গলায়) কি করছেন রুদ্র?
– মেঘ বাসর করছি,মনে খুব ইচ্ছা জাগলো মেঘবাসর করার। দেখো চাঁদ ও দেখছেনা আমাদের চাঁদের আলোতে ধরা পরার ভয় নেই আমাদের, মেঘ আমাদের সুযোগ করে দিচ্ছে মেঘ বাসর করার।
রুদ্রের প্রতিটা ছোয়ায় আজ ছোয়া পাগল হতে চাচ্ছে,কিন্তু কোনো এক অজানা দ্বিধা তাকে বার,বার আটকে দিচ্ছে।
হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো, দুজন ভিজছে রুদ্রে হাট দুটো এতক্ষনে চলে গিয়েছে ছোয়ার নরম পেটে।
আর ছোয়া শুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, হালকা ধাক্কা দেয়ার চেষ্টা করছে রুদ্রকে,
– ছোয়া, ভালোবাসার মতো এ অজানা অনুভূতিতে তুমি আমাকে ডুবিয়ে দিয়েছো এখন চাইলেও আমাকে যে দূরে সরাতে পারবেনা তুমি। সেই ক্ষমতা নেই তোমার,আমি তোমাকে সব অধিকার দিয়েছি কিন্তু আমার থেকে আলাদা হওয়ার অধিকার আমি দেইনি ছোয়া।
রুদ্র ছোয়ার হাত ধরে টান দিয়ে ছোয়াকে কোলে নিয়ে নিলো, বৃষ্টির পানি লেগে ছোয়ার শাড়ি শরীরের সাথে লেগে গিয়েছে। ছোয়ার ভেজা চুল,ভেজা ঠোট,আর ভেজা শরীর রুদ্রের নেশাটাকে কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। বিজলি চমকাচ্ছে ছোয়া রুদ্রকে চেপে ধরে চোখ বুজে আছে।
আজ রুদ্রকে হাজার চাইয়া সত্তেও সে দূরে সরিয়ে দিতে পারছে না, কেনো পারছে না নিজেও জানে না সে।
রুদ্র ছোয়ার নেশায় মাতাল হয়ে গিয়েছি, সিরি বেয়ে ছোয়াকে রুমে নিয়ে এলো রুদ্র,ছোয়া চোখ বুজে আছে, ছোয়াকে আলতো করেই বিছানায় শুইয়ে দিলো রুদ্র, ছোয়া চোখ খুলছেনা।
ছোয়াকে শুইয়ে নেশাক্ত চোখে রুদ্র দেখতে লাগলো ছোয়া,
রুদ্র ছোয়া পেট থেকে আলতো করে শাড়িটা সরাতেই ছোয়া কেপে উঠলো,
রুদ্র ছোয়ার পেটে অঝোরে চুমু দিয়ে যাচ্ছে, আর ছোয়া যেন রুদ্রের ছোয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে ,
কিছু একটা ভেবে ছোয়া চোখ খুলেই রুদ্রকে ধাক্কা দিলো,
– রুদ্র তাল সামনে, কি হলো ছোয়া?

(এই রোমান্টিক টাইমে ছোয়াটা এমন কেনো করলো,আমি নিজেই বুঝতে পারিনা। ছোয়া কি রুদ্রকে কখনো ভালোবাসবে!!)
চলবে,,
( আজকের পর্বটা একটু ছোট হয়ে গিয়েছে তার জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। গল্পটি কেমন লাগছে জানাবেন। উৎসাহ পেলে গল্প লিখতে ভালোলাগে)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *