The villain lover ।। পার্ট : ১০
ছোয়ার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে অনবরত,
– ভাইয়া, তুমি খুব চালাক, ছোয়ায়া আপু বুঝতেই পাড়ল না,তোমার পরিচয়।
– হুম বুঝতে কি করে তোর ভাই তো অনেক চালাক, যে করেই হোক ছোয়াকে নিজের করতে হবে। ছোয়াই পারে আমাকে বাচাতে।
– আচ্ছা ভাইয়া,তুমি কি ছোয়া আপুকে কখনো নিজের আসল পরিচয় দিবেনা?
– হ্যা দিবো তো , সময় হলেই দেবো।
– ছোয়া আপু তো তোমাকে দু চোখে দেখতে পারেনা, তোমার আসল পরিচয় জানলে যে কি হবে।
– কিছুই হবে না, আমি সব সামলে নিবো।
– ছোয়া দরজায় দাড়িতে সব শুনছে, তার বুঝতে নাকি রইলো না,যে জীবন আরো একবার তাকে ঠকিয়েছে। সে এতোদিন যাকে বন্ধু ভেবেছিলো সেই আসলে তার পরম।শত্রু। তার মানে রুদ্র কি আবার ফিরে এসেছে,তাইলে এবার কি তার টার্গেট দোহা আর আম্মু, ভাবতেই শরীরে কাটা দিচ্ছে ছোয়ার।বাবার পরে বেচে থাকার একমাত্র মানে আম্মু আর দোহা তাদের ও যদি কোনো ক্ষতি হয়ে যায়,
ছোয়ার মাথা ভার হয়ে আসছে এসব ভাবতে, ভাবতে। হঠাৎ ছোয়ার চোখের সামনে সব কিছু ঝাপসা হয়ে আসতে লাগলো। যেন মাথার ওপরে কেও খুব ভারি একটা কিছু রেখে দিয়েছে।
একটা সময় মাটিতে লুটিয়ে পড়লো ছোয়া,,,
( আচ্ছা ছোয়া কি ভুল বুঝলো, রুদ্রকে????)
চোখ মেলতেই দেখলো সবাই ছোয়াকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে,কিছুক্ষনের ভেতরে আবার স্বাভাবিক হলো ছোয়া।
রুদ্র আর রোদেলাকে দেখে কিছুক্ষণ আগে হয়ে যাওয়া ঘটনা মনে পড়লো ছোয়ার,
– ছোয়া কি হয়েছিলো আবার? সকালে কি ঠিকমতো খাওনি?( স্যার)
– আসলে স্যার কি জানো হলো,আমার মনে নেই।
– আচ্ছা ঠিক আছে শুয়ে থাকো রেস্ট নাও।
এক কোনে দাঁড়িয়ে আছে রুদ্র, ছোয়ার ইচ্ছা করছে যেয়ে রুদ্রকে মেড়ে ফেলতে, রাগি লুক নিয়ে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে নিলো ছোয়া।
নিজেকে নিজেই গালাগালি করছে ছোয়া, (মনে, মনে)
রুদ্র ছোয়ার কাছে এসে বসলো,
– কি হয়েছিলো ছোয়া?
– আপনি, ( তারপর ছোয়া ভাবলো এখন যদি সে রুদ্রকে বুঝতে দেয় যে সে সব বুঝে গিয়েছে সব জানতে পেড়েছে তাহলে রুদ্র হয়তো তার আম্মুর আর দোহার কোনো ক্ষতি করে দিতে পারে, এখনি কিছু বুঝতে দেয়া যাবেনা) ছোয়া নিজেকে সামলে বললো, কিছুনা ভাইয়া। মাথাটা একটু ঘুরিয়ে গিয়েছিলো,আসলে কাল অনেক হেটেছি তো তাই।
– ওহ এখন কেমন লাগছে,
– ভালো লাগছে,
– আচ্ছা ছোয়া আজ কিন্তু বিকেলে আমরা ঢাকায় রওনা দিবো, গোজগাজ করে নিও।
– আচ্ছা ঠিক আছে।
রুদ্র চলে গেলো,
ছোয়া আজ কষ্ট পাবে, নাকি ভয় পাবে বুঝতে পারছে না। বাবার খুনি তার চোখের সামনে কিন্তু সে কিছুই করতে পাড়ছে না। উলটে ভালো ব্যাবহারের অভিনয় করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
কিন্তু আমার সাথে জোর করে বিয়ে দেয়ার রাগেই তো, আমার বাবাকে খুন হতে হয়েছিলো রুদ্রের হাতে। কিন্তু এখন সে আবার কেনো আমাকে তার জীবনে চাচ্ছে, আবার কেনো আমার পেছনে লেগেছে। আর কাল তার চোখে আমি যা দেখলাম তাতে তো আমি কোনো রাগ বা হিংস্রতা দেখিনি, কি হচ্ছে আমার সাথে ভাবতেই ছোয়া মাথায় হাত দিয়ে বিছানায় বসে পড়লো। কিছুই ঢুকছে না
ছোয়া আর দেড়ি না করে তার মাকে ফোন দিলো,
– হ্যালো আম্মু
– হ্যা মা বল
– আম্মু কোনো প্রশ্ন করবেনা,যা বলছি তাই করো।রেডি থাকো,আমি আসলেই দোহা, তুমি আমি মামা বাসায় চলে যাবো।
– কি হয়েছে আমাকে খুলে বল।
– আম্মু বললাম তো সব বলবো।
কথা বলা শেষ করে ছোয়া পেছনে তাকাতেই ছোয়ার অন্তর কেপে উঠলো,,
রুদ্র দাঁড়িয়ে আছে, চোখ দুটো ধারন করেছে রক্ত বর্ন,
– আ আপনি।
– রুদ্র আর কিছু না বলে, ছোয়াকে এক ঝাটকা দিয়ে ছোয়াকে বিছানা থেকে উঠয়ে,
– তুমি কি ভেবেছো জান? তুমি রোদেলার রুমের সামনে জ্ঞান হারিয়েছো আর কেনো হারিয়েছো তা আমি জানি না? এতো বোকা ভাবো আমাকে? আমরা খটকা ছিলো, কিন্তু জ্ঞান ফিরতেই তোমার তাকানো দেখে আমি সিওর হয়েছি।
কোথায় পালাবে তুমি?
– আ আপনি কেনো এমন করছেন?
– ভালোবাসি তাই।
– মিথ্যা কথা আপনার অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে, আপনি আমাকে কিভাবে ভালোবাসতে পারেন? এই বিয়ের জন্য আপনি আমার বাবাকে খুন করেছেন সেখানে ভালোবাসা কিভাবে আসে?
– ছোয়া আমার কথা শোনো, আমি তোমার বাবাকে মাড়িনি, আর তখন। ওতো কিছু আমি বুঝতাম না,বিয়ে মানে অনেক দায়িত্ব এই দায়িত্ব ওতোটুকু বয়সে নেয়াটা আমি মেনে নিতে পারিনি। কিন্তু তোমাকে দেখার পর জানার পর আমি অনুভব করেছি যে তুমি আমার বউ আর আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
-ছোয়ার ঠোট দুটো কাঁপছে,
রুদ্র ছোয়ার কোমর আরো শক্ত করে চেপে ধরতেই ছোয়া চোখ বন্ধ করে ফেললো।
রুদ্র ছোয়ার কপালথেকে আঙুল ছোঁয়াতে, ছোঁয়াতে আঙুল নিচে নামাচ্ছে। ছোয়া চোখ বন্ধ করে আছে। অনেক ইচ্ছা করছে রুদ্রকে বাধা দিতে কিন্তু সে কেনো তা পাড়ছে না।নিজেও জানেনা ছোয়া।
– জান তোমাকে সত্যি ভালোবাসি অনেক, তুমি শুধু আমার। রুদ্র ছোয়াকে আরো চেপে ধরছে।
হঠাৎ ছোয়ার মনে পড়লো, রুদ্রের পরিচয়, ছোয়া চোখ খুলেই রুদ্রকে ধাক্কা দিয়ে বাহিরে বের হয়ে গেলো।
বিকেলবেলা,,,
সবাই রওনা দেয়ার জন্য রেডি হচ্ছে,
আর ছোয়াও আনমনে রেডি হচ্ছে।
– মিম শোন না?
– হ্যা বল???
– বাসে কিন্তু তুই আমার সাথে বসবি।
– আচ্ছা।
একে, একে সবাই বাসে উঠছে, ছোয়া চারিদিকে তাকিয়ে দেখলো আশেপাশে রুদ্র নেই,
যাক বাবা বাচা গেছে মনে হয় সামনের বাসে উঠে গিয়েছে। ছোয়া আর জিনিস গুলো রেখেই বাসে উঠলো।
মিম আর ছোয়া একসাথেই বসলো।
– ছোয়া আনমনে তাকিয়ে আছে বাহিরে, গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে।
হালকা বাতাসে ভালোই লাগছে, কিন্ত্য প্রান ভরে নিশ্বাস নিতে পারছেনা ছোয়া,কারন কোনো এক কারনে তার মন আজ যে স্থির না।
বাহিরে তাকিয়ে থাকতে,থাকতে কখন চোখ লেগে গেছে নিজেও জানে না ছোয়া।
অনেকক্ষন পরে ঘুম ভাঙলো ছোয়া, সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত হয়ে গিয়েছে ছোয়া তা টের ও পায়নি।
ঘুম ভেঙে , ছোয়া কাওকে জড়িয়ে তার ঘারের ওপরে মাথা দিয়ে ঘুমাচ্ছে
ছোয়া ভেবেছে এটা হয়তো মিম।
– কিরে মিম তুই এতো লম্বা হলি কবে,আর শরীরটা এতো শক্ত কেনো লাগছে বলেই ছোয়া মাথা উঠালো।
-আপনি (অবাক হয়ে)
– হুম আমি জান,
– ছোয়া নিজেকে সামলাতে ব্যাস্ত ওড়না ঠিক করছে, রুদ্রর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে। মিম কোথায়?
– আছে পেছনে,,
– আমি মিমের কাছে যাবো, বলে ছোয়া উকি মাড়তে যায়। আর তখনি রুদ্র ছোয়ার পেট চেপে ধরে দুহাত দিয়ে।
– কি করছেন টা কি?
– কি করছি,তুমি তো আমার বউ।আমি করতেই পারি।
– ছাড়বেন নাকি চেঁচাবো,
– তুমি চেঁচালে আমি কি করতে পারি, তা তোমার ভালো করেই জানা আছে জান।
– রুদ্রের কথা বলার ধরন দেখে ছোয়ার কিছুটা ভয় লাগলো,
– কি করবেন?? খুন করবেন আমাকে,
– রুদ্র ছোয়ার পেট আরো শক্ত করে ধরে বললো, তোমাতে তো আমি খুন হয়েছি জান,সেই হিসেবে তুমিও খুনি।
তোমার ঘুম মাখা মুখ,তোমার চোখ, তোমার ঠোট আমাকে পাগল করে দেয়। বোঝোনা তুমি?
– বাসে সবাই আছে প্লিজ, কেও দেখলে আমাকে খারাপ ভাববে।
– সবাই ঘুমাচ্ছে,আর আমি আমার বউকে যা ইচ্ছা করবো।
– বউ,বউ করবেন না,ভালোলাগেনা।
– ছোয়া,
– হুম?
– আমি সত্যি তোমাকে ভালোবাসি।
– আমি বাসিনা। আচ্ছা আপনার নাম তো ফারহান?
– হুম, আমার নাম ফারহান রুদ্র।
চলবে,,