The villain lover ।। পার্ট : ০৮
ছোয়া পাথরের মতো বসে আছে,
আর রুদ্র কথা বলেই যাচ্ছে।
রুদ্র ফ্রেস হতে চলে গেলো,
কিছুক্ষন পর ফ্রেস হয়ে এসে,
– ছোয়া যাও ফ্রেস হয়ে আসো।
ছোয়া একবার রুদ্রের দিকে তাকিয়ে, ফ্রেস হতে চলে গেলো।
অতীত,,,
– তোমাদের কারো কোনো কমোন সেন্স নেই? ছোয়াকে না নিয়ে কেনো আসলে আমি নাহয় সামনে ছিলাম খেয়াল করিনি, কিন্ত তোমরা তো ওর বান্ধবী, তোমরা খেয়াল করবেনা?
– আসলে স্যার আমরা তো একসাথেই হাটছিলাম, কিন্তু ছোয়া যে কখন উধাও হয়ে গেলো( একটু ভিতু হয়েই কথাটা বললো মিম।
– এখন কি হবে,এমনি রাত তার ওপরে পাহাড়? ( স্যার অনেক রেগে কথাগুলো বললো)
– স্যার রুদ্র ভাইয়াও তো ফেরেনি,
– তো কি হয়েছে, ছেলে মানুষ পথ ধরে আসতেই পাড়বে, কিন্তু ছোয়ার কি হবে???
এরমাঝেও সবাই দেখলো রুদ্র ছোয়াকে কোলে নিয়ে হোটেলে ঢুকছে,আর ছোয়া সেন্সলেস হয়ে আছে। ছোয়াকে রুদ্র তার রুমে শুইয়ে দিলো।
– আসলে স্যার আমার ফোনের নেট পাচ্ছিলাম না নেট খুঁজতে, খুঁজতে দেখি আপনারা পেছনে নেই। আর তখনি ছোয়াকে দেখি পাহাড়ের নিচে দাঁড়িয়ে আছে।
তারপর একসাথে আসতে লাগলাম,কিন্তু আচমকা ছোয়া অজ্ঞান হয়ে গেলো।( একটু মিথ্যা কথা বললো রুদ্র নয়তো সবাই অন্য মাইন্ডে নিতে পারে তাই)
– যাক বাবা,তুমি ভালো বাচা বাঁচিয়ে দিয়েছো,যাও তুমি অনেক ক্লান্ত বিশ্রাম নাও। আর মিম তুমি ছোয়ার রুমে যাও আমি রিসিভসনে যেয়ে দেখছি কোন ডাঃ এর ব্যাবস্থা করতে পারি কিনা।
– এক্সকিউস মি স্যার, হয়তো এতো রাতে এখানে ডাঃ পাবেন না। আমি কিছু ব্যাবস্থা করছি।
– ওকে বাবা, করো। মেয়েটার হলো কি বুঝতে পাড়ছি না।
– স্যার ছোয়ার লো প্রেশার এর সমস্যা আছে। আর দুপুরে ঘুরতে যাওয়ার খুশিতে তেমন কিছু খায় ও নি। আবার অনেকটা হেটেছে তাই মনে হয়, অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে।( মিম)
– ওহ আগে বলবা না,ওর মাথায় একটু পানি দাও, আর আজ ঘুমাতে দাও। আর জাগিওনা কাল দেখি কি করা যায়। বলেই স্যার চলে গেলো।
– মিম শোনো,
– হ্যা ভাইয়া বলেন?
– ছোয়ার একটু খেয়াল রেখো প্লিজ।
– আচ্ছা ভাইয়া,
– ধন্যবাদ।
বলেই রুমে চলে গেলো রুদ্র,বিছানায় গা এলিয়ে ছোয়ার কথাই ভাবছে।
মেয়েটা সবার এতো খেয়াল রাখলেও নিজের ব্যাপারে খুব কেয়ারলেস, ভালো করেই বুঝতে পারছে রুদ্র।
ইচ্ছা করছে মেয়েটার পাশে যেয়ে বসে থাকি মাথা নেরে দেই। আর আমার ঘুমন্ত বউটাকে মন ভরে দেখি। কিন্তু পারছিনা।আচ্ছা একবার কি দেখে আসবো, কিন্তু মিম,কি ভাববে। ছোট বোন হিসেবে মিমের সাথে ব্যাপারটা সেয়ার করা যেতেই পারে।
– এতো রাতে দরজায় কেও নোক করছে, মিমের বেস ভয় লাগছে। আবার ভাবলো স্যার হবে হয়তো। ছোয়ার কন্ডিশন জানতে এসেছে।
মিম দরজা একটু ফাকা করলো,
– একি ভাইয়া আপনি?
– মিম প্লিজ একটা গেল্প করো।
– কাল সকালে করবো ভাইয়া,এখন জান।
– আরে কাল সকালে হবে না, আমার বউটা,থুরি ছোয়াকে একটু দেখবো।
– মানে কেনো????
– আমার ছোট বোন ভাই ভাবিকে দেখতে চায়,কেনো দেখতে চায় তুমি বোঝোনা???
– (অবাক হয়ে) তার মানে আপনারা?
– না,না আমরা না,শুধু আমি ওকে ভালোবাসি বোন। ও এখনো বাসে না,আর আমার ভালোবাসার কথা জানেও না। কাল সকালে সব বুঝিয়ে বলবো প্লিজ একটু দেখতে দাও ভাবিকে।
– আচ্ছা আসেন,ভাইয়া।
তারপর রুদ্র ছোয়ার পাশে যেয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো,আর ঘুমন্ত ছোয়াকে দেখেই উঠতে যাবে।
তখনি,,
– ভাইয়া এবার বলেন ব্যাপারটা?
– বোন কাল সকালে সব বলবো, কিন্তু হ্যা ছোয়াকে এখনি কিছু বলবে না।ওকে??
– ওকে বলবো না,তার বদলে আমি কি পাবো।
– হুম তাই তো, আচ্ছা তোমাকে একটা বর খুজে দেবো( দুষ্টুমি করে)
– ভাইয়া,( একটু রেগে)
– কাল সকালে সব বলবো এখন আসি।
বলেই রুদ্র চলে গেলো।
সকালে ঘুম থেকে উঠলো ছোয়া, পাশে বসে ফোন টিপছে মিম।
ছোয়া মিমকে লাথি মাড়ল।
– এই কুত্তি আমি এখানে আসলাম কিভাবে,
– তুই আমাকে লাথি মাড়লি কেনো?( রেগে)
– অলে ব্যাথা পেয়েছো,আসো আদর করে দেই।
-ঢং লাগবেনা তোর আদর। কাল তো সবাইকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিলি।( মুখ বাকিয়ে, মিম)
– কেনো রে কি হয়েছিলো?
– কি না হয়েছিলো তাই বল? আমাদের থেকে আলাদা হয়ে গেলি,আবার জ্ঞান হারিয়ে রুদ্র ভাইয়ার কোলে করে ফিরে এলি,জানিস স্যার কতো রেগে গিয়েছিলো।
– রুদ্র ভাইয়া আমাকে কোলে করে এনেছে, কি বলিস এতোদুর আমাকে নিয়ে সে আসলো কিভাবে?? হায় আল্লাহ আমার তো হাটতে,হাটতে লো প্রেশার হয়ে গিয়েছিলো তাই জ্ঞান হারিয়েছিলাম।
– তো কি? তুই কি ভাবছিলি ভাইয়া তোকে সেখানে ফেলে আসার ছেলে?
– না ঠিক তা না, ( মাথা চুলকে)
– এখন মাথা চুলকানো বন্ধ কর, রেডি হো।আর পেট ভরে খেয়ে নিয়ে বের হবি আজ। আজ যদি কালকের মতো কিছু হয়না!! ( রেগে,বললো মিম) তোকে আজকের রাতের বাসে ঢাকা পাঠিয়ে দিতে বলবো।
– ফাজিল মেয়ে আমি গেলে সবগুলাকে নিয়েই যাবো হুম!!( মুখ বাকিয়ে, ছোয়া)
ছোয়া উঠে ফ্রেস হয়ে নিলো,আজ সবাই পাহাড়ে উঠবে। তাই সবাই যার, যার ব্যাগে পানি আরো প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে নিলো।
সবাইকে খাওয়ার জন্য ডাকছে স্যার, ছোয়াও গেলো।
রুদ্র কোথা থেকে এসেই ছোয়াকে বলতে লাগলো,
-ঠিক আছো তুমি,এখন শরীরের কি অবস্থা? এখনো কি মাথা ঘুরাচ্ছে?( একটানে কথাগুলো বললো রুদ্র)
রুদ্রের এভাবে কথা বলা দেখে ছোয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,,
– ভাইয়া,শান্ত হয়ে বসুন প্লিজ, আমি ঠিক আছি।
ছোয়ার কথা শুনে শান্ত হলো রুদ্র।
– এই রে চিন্তায় একটু বেশি করে ফেলেছি( মনে,মনে) রুদ্র।
আসলে কাল তুমি ওভাবে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তো তাই একটু চিন্তায় পরে গিয়েছিলাম।আজ কিন্তু ঠিক মতো করে খেয়ে বের হবা।
– হ্যা ভাইয়া ঠিক বলছেন আর নয়তো দেখা যাবে আপনার কোলে করেই ফিরতে হবে, আমার কি মনে আজ যদি কালকের মতো হয়। ভাববেন ও ইচ্ছা করে, করেছে এসব।( মজা করে বললো মিম)
– ছোয়া চোখ বড় করে,রেগে বলতে লাগলো, তুই চুপ করবি? যা মুখে আসে তাই বলে যাস? ভাইয়া কিছু মনে করবেন না ও একটু পাগলই। মেন্টাল একটা( ভেংচি দিয়ে)
– হ্যা,হ্যা এখন তো আমি মেন্টালই হবো তাইনা,
এই মেয়েরা তোমাদের কি খাওয়া শেষ হয়েছে চলো বেড়িয়ে পরি।
তারপর সবাই , বেড়িয়ে পরলো
স্যার – এইযে ছোয়া, তুমি সাবধানে থেকো,কাল ভয় পাইয়ে দিয়েছিলে।
– সরি স্যার এমন আর হবে না।
সবাই হাটছে,
– ভাইয়া কালকের ব্যাপারটা কিন্তু পুরোটা বললেন না?
-কোন ব্যাপার?
– বাহ,ভাইয়া দেখি ভাবির ব্যাপারটা ভুলে গিয়েছে?
– ওহ হ্যা, সরি বোনটি, সব বলছি।
আসলে তারপর রুদ্র মিমকে সব বললো,
(কিন্তু হ্যা বিয়ে,টিয়ে এতো কিছুর কথা কিন্তু বলেনি কলেজে দেখে ভালোলেগেছিলো, তারপর দেখা হওয়া এগুলা বললো জাস্ট)-
– বাহ ভাইয়া আপনি তো পুরো দিওয়ানা হয়ে গিয়েছেন, হুম খুব ভালো। তাইলে ছোয়াকে বলে কেনো দিচ্ছেন না সব??
– তুমিতো জানো ছোয়া প্রেম ভালোবাসা পছন্দ করে না,তাই ভয়ে বলতে পারছি না।
অনেকক্ষন ধোরে রুদ্র আর মিম হাটছে আর কথা বলছে, বিষয়টা অনেকক্ষন ধরেই খেয়াল করছে
ছোয়া,,,,
– হুমম,কাল অবদি তো আমার সাথেই ছিলেন সারাটা সময় আজ একেবারে মিমকে পেয়ে আমাকে ভুলেই গেছে,ধুর আমি এতো কেনো ভাবছি যা ইচ্ছা করুক তাতে আমার কি।( মনে,মনে এসব ভাবছে ছোয়া,আর রুদ্রকে গালাগালি করছে)
– ভাইয়া তাইলে এখন কি করবেন?
– কি আর করবো ছোয়াকে ফিল করাবো,যে আমি ওকে ভালোবাসি।
– কিন্তু কিভাবে ভাইয়া?
– দেখি, কি করা যায়।
– আচ্ছা ভাইয়া আপনি ভাবিকে নিয়েই ভাবেন আমি ভাবিকে ডেকে আনছি।
এর মাঝেই ছোয়া আসলো,
– কিরে ভাইয়াকে পেয়ে তো আমাকে ভুলেই গেলি,( ছোয়া)
– আরে না তা হবে কেনো?( আমি তোর কাছেই যাচ্ছিলাম।
– ইস কি মিথ্যাবাদী, আমার কাছে নাকি যাচ্ছিলো,( মনে, মনে রেগে বললো ছোয়া)
– আচ্ছা চল,রুদ্রের দিকে একপলক তাকিয়ে, ছোয়া আর মিম আগে, আগে হাটছে আর রুদ্র পেছনে।
– কি হলো মেয়েটার আমার সাথে কথা বললো না,আর তখন ওভাবে চলে গেলো কিছুই তো বুঝতে পারছিনা।
– ভাইয়া,,
রুদ্র পেছনে তাকিয়ে দেখলো রোদেলা,
– ওহ তুই বল,
– ভাবিকে পেয়ে তো আমাকে ভুলেই গেছো!
– আরে না তেমন কিছু না,কিন্তু কেনো জানি মনে হচ্ছে ছোয়া কোনো ব্যাপারে একটু রাগ করেছে।
একটু আগেও ঠিক ছিলো। বুঝতে পারছিনা।
– ভাইয়া আমি জানি কি হয়েছে!
– মানে তুই কিভাবে জানিস? ছোয়া তোকে কিছু বলেছে,
– আরে ভাইয়া আমাকে ভাবি কেনো কিছু বলতে যাবে,তুমি যখন মিম আপুর সাথে কথা বলছিলে তখন দেখছিলাম ছোয়া আপু তোমাকদের দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে ছিলো, তার মানে আপু জেলাস ফিল করছিলো!
– সত্যি? এই ব্যাপার তাহলে। এই জন্য মহারাণীর অভিমান হয়েছে? ওকে ওয়েট, (এই জেলাসিকেই আমি কাজে লাগাবো,বলেই দুষ্টু টাইপের হাসি দিলো রুদ্র।)
– উফ আর পারছিনা এতো উঁচু কেনো পাহাড়টা।( ছোয়া)
– আরে মিম সামধানে পরে যাবে,তোহ( রুদ্র) তোমার বেশি সমস্যা হলে তুমি আগে যাও আমি পেছনে আছি পরে গেলে যেন ধরতে পারি। ছোয়াকে শুনিয়ে,শুনিয়েই কথাগুলো বললো রুদ্র।
– রুদ্রের এমন আচরন দেখে মিম বেশ অবাক হলো রুদ্র ছোয়াকে না,হেল্প কতে তাকে করছে ব্যাপারটায় খটকা লাগলো মিমের।
আর ছোয়া কোটমোট করছে আর মনে,মনে বলছে,
– লুচু ব্যাটা আমিও তো পরে যেতে পারি,মিম পরে যাওয়ার এতো চিন্তা আর আমি( রেগে মুখ বাকিয়ে)
( পরের পার্ট এ চমক আছে, কেনো জোর করে তুলে আনা। ছোয়ার রুদ্রকে এতো ঘৃনা করার কারন সব জানতে পাড়বেন। সামনের পর্বে। আমার তো আর তোর সইছেনা,সব কিছু জানার জন্য।আপনাদের ও কি একি ফিলিংস??)
বর্তমান
– ছোয়া ফ্রেস হয়ে এসে দেখলো রুদ্র কাজ করছে ল্যাপটপে,
ছোয়াকে দেখে রুদ্র বললো,
– জান এসে গিয়েছো,তোমার জন্য ওয়েট করছিলাম। চলো খেয়ে নিবে চলো।
ছোয়া রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে,তাকে দেখে মনে হচ্ছে তারা সাধারণ, দম্পতীর মতোই। তাদের মাঝে যে এতো কিছু হয়েছে রুদ্রের কথার ধরনে তা বোঝা যায় না।
ছোয়া তাকিয়ে আছে রুদ্রের দিকে,ছোয়ার তাকিয়ে থাকা দেখে,
ছোয়ার খুব কাছে এসে রুদ্র
– কি হয়েছে জান? সরি বললাম তো কতোবার, গালে হাত দিয়ে।
– আচ্ছা কাল আমি এমন কি করেছিলাম যে আপনি ওভাবে রিয়েক্ট করলেন?
– আমার ফ্রেন্ড অনিকের সাথে হেসে, হেসে কথা বলেছো,আমি ছাড়া তুমি অন্য কারো সাথে হেসে কথা বলবে তা আমি মানতে পারিনা। আজ কতোদিন তুমি আমার সাথে হেসে কথা বলোনা,সেই আগের মতো!!কেনো জান?
– এই প্রশ্নটা নিজেকে করুন, উত্তর পেয়ে যাবেন, আর হ্যা আপনার চিন্তা ভাবনা বদলান,আপনার সাথে,সাথে চিন্তা ভাবনাগুলোও নোংরা হয়ে গিয়েছে।
বলেই চলে যাবে,ঠিক তখনি।
চলবে,,