The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 85
★★★★
আরমান মাহবুব বেশ ভালো সময়ই কাঁটাচ্ছেন আরাবী আর আর্ভিনের সংস্পর্শে।এই দুই মাসে ভালো বিশ্বাস কয় করেছেন আরাবীর।তবে।আর্ভিন এখনো।ওনাকে দেখতে পারেনা।বাবার সাথে কথা বলা দূরে থাক।তার আশেপাশে ও থাকতে চায়না।আর্ভিন চায়না আরাবী আরমান মাহবুবের সাথে কথা বলুক।কিন্তু প্রেগন্যান্সিতে মেয়েটা বেশ নরম মনের হয়ে গেছে আগের মতো কঠোরতা কাজ করেনা ওর মাঝে।আরাবী কে নিয়ে চিন্তা হয় আর্ভিনের। ওর বাবা আবার কোন ক্ষতি করে বসেনা তো ওর বৌটার।এইতো সেদিন আরাবীর পায়ে তেল মালিশ করে দেয়ার সময়ে আর্ভিন বলছিলো,
.
.
-আরাবী বাবাকে বিশ্বাস করোনা।ওনি ভালো নন।
-আর্ভিন ওনি আগে যাই করেছেন সেটা অন্যায় ছিলো কিন্তু ওনি এখন নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন।তোমার ও মাফ করা উচিৎ ওনাকে।
-আরাবী তুমি এসব কেমন করে বলতে পারছো?তোমার মনে নেই ওনি আমাদের ৬মাসের বিয়ের কন্ট্রাক্ট করতে চেয়েছিলো।
-ওনি মাফ চেয়েছে আর্ভিন।সবাইকে সুযোগ দেয়া উচিৎ।
-আমি জানি না কি বলছো তুমি।তবে বিকেয়ারফুল আরাবী।
.
.
কথা গুলো বলে উঠে চলে গেলো আর্ভিন।আরাবী চুপচাপ চেয়ে রইলো আর্ভিনের যাওয়ার দিকে।লোকটা বিশ্বাস করতে পারছেনা তার বাবাকে।তাকে সময় দেয়া দরকার।নিজেই বুঝবে।কথা গুলো ভাবতে থাকে আরাবী।ওর আটমাস চলছে সবে।হাঁটা চলা করতে ও প্রচুর কষ্ট হয়।তারপর ও কষ্ট করে উঠে পাকঘরে যাওয়ার জন্য পা বাঁড়ালো আরাবী।
এদিকে আরাভ ফারহানকে কল করে দেখা করতে বলল একটা ধানমন্ডির একটা রেস্টুরেন্টে। ফারহান বেশ অবাক হলে ও শেষ পর্যন্ত রাজিই হলো।বেশ শীত পরেছে।ডিসেম্বর মাসে সাধারনত বেশ শীত পড়ে।আরাভ চকলেট কালারের কোট পরে আছে।আর ভিতরে কালো শার্ট।কিছুসময় পর ফারহান কে আসতে দেখা গেলো।ফারহান হাত ঘষতে ঘষতে আরাভের সামনে এসে বসলো।ফারহান শয়তানি হেসে বলল,
.
.
-সাত সকালে দেখা করতে বললেন যে?
-অবশ্যই কাজেই ডেকেছি।
-হুম।তো বলুন কিভাবে হেল্প করতে পারি?
-ইয়ারাবীকে জব ছাড়তে দিন।
-না।
-কেন?
-আমার ওকে পছন্দ।
-আরাভ হাত মুঠ করে বলল ইউ নো ইয়ারাবী আমার ওয়াইফ।
-আমি সেটা জানি।
-তাহলে ছাড়তে দিন ওকে জব।নাহলে আমি কি করতে পারি সেটা ভাবতে ও পারবেননা আপনি।
-যা করার করুন।ওকে ছাড়ছিনা।আর এখন আজহারদের কোম্পানীর পঞ্চাশ পার্সেন্ট শেয়ারের মালিক আমি।সো কিছুই করতে পারবেননা আপনি।
-ফাইলটা এবার পড়ে দেখুন।আপনার সব ভুল ধারনা চলে যাবে।একটা ফাইল ফারহানের সামনে দিয়ে বলল আরাভ।
.
.
ফারহান ফাইল পড়তে শুরু করে।ফাইল পড়ে চমকে গেলো ফারহান।আরো বেশি অবাক হলো নিজের সাইন দেখে সেখানে।
.
.
-এটা কবে সাইন করলাম আমি।
-যেদিন ফাইল না পড়ে সাইন করেছিলেন।
-এটা তো সাইন করিনি।পঞ্চাশ পার্সেন্ট শেয়ারের ফাইল সাইন করেছিলাম।
-সেদিন শেয়ারের ফাইল না এটা রেডি করে এনেছিলাম আপনার জন্য।আমাকে ভালোমতো চিনেন না আপনি।আমার সাথে পাঙ্গা নেয়ার আগে ভাবতে হতো আপনাকে।এটা পুলিশের হাতে এখনো পড়েনি তাই এতো স্বাধীন ভাবে ঘুরছেন আপনি?ফাইল টা পুলিশের কাছে গেলে আপনার কি অবস্থা হবে ভাবতে ও পারবেননা।জলদি ওকে জব ছাড়তে দিন।নাহলে এই ফাইল পুলিশের হাতে যাবে।
.
.
চিৎকার করে কথা গুলো বলে বেরিয়ে গেলো আরাভ।ফারহান রাগে ফুঁসতে লাগে।ইয়ারাবী আয়রানা খাইয়ে অফিসের জন্য রেডি হচ্ছিলো।হঠাৎ ওর ফোন একবার বেজে উঠে।ইয়ারাবী ফোন চেক করে দেখলো মেইল এসেছে।মেইলটা এসেছে অফিস থেকে।ওর রেজিগনেশন লেটার এপ্রুভ হয়েছে।বেশ খুশি হলো ইয়ারাবী।রেহানের কাছে এলো।মেয়ে কে দেখে উঠে দাঁড়ায় রেহান। তারপর হেঁটে মেয়ের কাছে এলো।
.
.
-কিরে আম্মু অফিসে যাবিনা?
-পাপা রেজিগনেশন লেটার দিয়েছিলাম সেটা এপ্রুভ হয়ে গেছে।
-ভালোই হলো।পাপা এখন নিউ জব খুঁজতে হবে।
-জব দিয়ে কি করবি আম্মু?
-পাপা জব করবো আমি স্টাডির পাশাপাশি।
.
.
রেহান না করতে পারেনা মেয়েকে।ইয়ারাবী রুমে আসতেই আরাভ ওর হাত চেঁপে ধরে।ইয়ারাবী বড় চোখ করে তাকায় আরাভের দিকে।আরাভ ইয়ারাবীর কোমড়ে ধরে নিজের কাছে নিয়ে এলো।
.
.
-জব করতে হবেনা।আমার সাথে বাসায় যাবে তুমি।
-একদম না।আমি কোথাও যাবোনা আপনার সাথে।জব করবো আমি।
-একটা সমস্যা শেষ হতেই নতুন ঝামেলা আনতে চাইছো।
-যা বলার বলুন আপনি।চাকরি করে আমার মেয়ের ভরনপোষন করবো আমি।
-যা করার করো আমার মেয়েকে আমি নিয়ে যাবো।
-মেয়েটা আমার।
-মেয়েটা আমার ও ইয়ারাবী।একা একা মেয়েটা হয়ে যায়নি।ও হওয়ার কারন আমি ও।আমার মেয়ে কে আমি নিবো।
-আমার মেয়েকে কোথাও দিবোনা আমি।
-কেস করবো আমি তোমার নামে।
.
.
কথাটা বলেই অফিসের জন্য বেরিয়ে যায় আরাভ।ইয়ারাবী আরাভের যাওয়ার দিকে অশ্রুসজল চোখে চেয়ে থাকে।এদিকে অর্পন হাসপাতালে পুরোটা সময় ফেন্সির পাশেই ছিলো।ফেন্সির খেয়াল রাখছিলো পুরোটা সময়।ফেন্সির রিলিজ হয়ে গেলে অর্পন নিজের ফার্ম হাউজে নিয়ে এলো ফেন্সিকে।ফেন্সির সাথে তেমন কথা বলতো না অর্পন দরকার ছাড়া।অবশ্য ফেন্সির যত্নে কোন প্রকারের ত্রুটি রাখছিলো না অর্পন।ওর সাথেই থাকছিলো ফার্ম হাউজে।এ নিয়ে আকরাম আজহার জিজ্ঞেস করেছিলো কেন অর্পন আলাদা থাকছে।অর্পন বলেছে কাজের জন্য সেখানে থাকতে হচ্ছে ওকে।আকরাম আজহার আর কিছুই বলেনি ছেলের কথায়।
ফেন্সি অনেক ক্ষমা চেয়েছিলো অর্পনের কাছে কিন্তু অর্পন কোন রেসপন্স দেয়নি।এবার ফেন্সি ও ঠিক করে রেখেছে আর কোন কৈফিয়ত দিবেনা ও অর্পনকে।এরপর থেকে অর্পন থেকে কোন সাহায্য চায়নি ফেন্সি।অর্পন নিজে এসে করে দিলে কিছু বলতো না।
,
,
,
,
,
সেদিন রাতে অর্পনের ঘুৃম ভাঙ্গে গ্লাস ভাঙ্গার শব্দে।অর্পন রুম থেকে বেরিয়ে খেয়াল করলো ফেন্সি খুব কষ্টে নিচে যাচ্ছে।অর্পন রেগে গেলে ও নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে ফেন্সিকে আটকায়।
.
.
-কই যাও?
-গ্লাস আনতে।পানি খাবো।
-ডাকতে পারতে আমাকে।
-আমি একা করতে পারবো।তুমি ঘুমাও।
.
.
ফেন্সিকে কোলে নিয়ে রুমে আনে অর্পন।ওকে খাটে বসিয়ে বের হয়ে গেলো অর্পন।কিছুসময় পর গ্লাস সমেত ফিরে আসে ও।তারপর নিজ হাতে ফেন্সিকে পানি খাওয়ায় অর্পন।তারপর চলে যেতে নিলে ফেন্সি থামায় অর্পনকে।
.
.
-অর্পন!!
-দাঁড়িয়ে যায় অর্পন।বলো।
-তুমি বাসায় যাও।এখানে থেকোনা।আমার কারনে তোমার অনেক প্রবলেম হয়েছে আর নয়।
-দেখো আমার কারনে এঅবস্থা তোমার।আমার দায়িত্ব তোমার খেয়াল রাখার।
-তোমার জন্য না নিজের জন্য এ অবস্থা আমার।তোমার সাথে যা করেছিলাম সেটা অন্যায় ছিলো আমার।আর সেটার শাস্তিই পাচ্ছি আমি।
.
.
অর্পন কিছু না বলে বেরিয়ে গেলো তবে নিজের বাসার উদ্দেশ্যে।ফেন্সির দিকে আরেকবার ও তাকায়নি।সেদিন অফিসে যাওয়ার পথে আরাভ নিজের উকিল বন্ধু তুর্জয়ের সাথে দেখা করলো।বাল্যকালের বন্ধুকে দেখে তুর্জয় ভীষন খুশি হয়।
.
.
-আরাভ এতোদিন পর মনে পড়লো আমাকে।।
-মনে ছিলো আসলে কাজের চাপ প্রচুর বুঝিসই তো।
-ওহ ইটস ওকে।শুনলাম এক মেয়ের বাবা হয়েছিস।
-হুম।
-নাম কি মেয়ের?
-আয়রানা চৌধুরী আদর।
-বাহ চমৎকার নাম।বয়স কতো হলো মামনির?
-৬মাসে পড়লো।
-ওহ।তা হঠাৎ আমার অফিসে এলি?
-কেস করবো আমার ওয়াইফের নামে।
-হোয়াট কেন দোস্ত?
-আমার মেয়েকে আমার কাছে নিয়ে আসবো।
-পুরো কাহিনী বল তো।
-এতো কিছু বলতে পারবোনা।তুই জাস্ট সব ব্যাবস্থা কর।
-তুই শিওর ভাবির নামে কেস করবি তুই?
-আরে যাহ।বৌ বাচ্চা দুজনই লাগবে আমার।আমি জাস্ট ওকে ভয় দেখাতে চাই।
-ওকে।কাল সকালে নোটিশ পেয়ে যাবে ভাবি।
-থ্যাংকস তুর্জয়।
.
.
বেরিয়ে যায় আরাভ অফিস পানে।এদিকে পরদিন সকালে ইয়ারাবীর হাতে নোটিশ এলো।কান্না চলে আসে ইয়ারাবীর নোটিশ হাতে অারাভের অফিসে এলো ও।বৌকে দেখে কিছুটা অবাক হলে ও মুখে বাঁকা হাসি ফুঁটে উঠে আরাভের।ইয়ারাবী আরাভের কাছে এসে বলতে শুরু করে,
.
.
-এসব কি?
-নোটিশ।আমার মেয়েকে আমি চাই।ওর জন্য যদি তোমার বিরুদ্ধে কেস করতে হয় তাও করবো আমি।
-শুধু মেয়ে লাগবে আপনার আর কিছুনা?
-নাহ।
-সত্যিই শুধু মেয়ে লাগবে?
-হুম।
.
.
ইয়ারাবী বেরিয়ে যায় মন খারাপ করে।ঘরে ফিরে রুমে এসে কাঁদতে শুরু করে।আরাভ ঘরে ফিরে ইয়ারাবীকে মন খারাপ করে থাকতে দেখেও কিছু বলেনা।আয়রানা কে কোলে করে নিজের রুমে নিয়ে এলো।রাত দশটায় কলিংবেলের শব্দে বেশ অবাক হয় ফেন্সি।নিচে এসে দরজা খুলেই অর্পনকে দেখতে পায় ফেন্সি।
বেশ অবাক হয় ফেন্সি।
.
.
-তুমি!!!
.
.
অর্পন কিছু না বলে ফেন্সিকে জড়িয়ে ধরে ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।পাগলের মতো ফেন্সিকে চুমু খেতে শুরু করে অর্পন।ফেন্সি সরাতে পারছেনা অর্পনকে।বেশ কিছুসময় চলে গেলো এভাবে।
চলবে