The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 84
★★★★
ঘরে ফিরে ইয়ারাবী আর আয়রানা কে দেখে মনটা কিছুটা ভালো হয় আরাভের।মেয়েটা বসতে শিখেছে।তবে পাকাপোক্ত ভাবে নয়।পড়ে যায় একটু বসে।ইয়ারাবী মেয়েকে নিয়ে ব্যাস্ত।আয়রানা মায়ের সাথে খুব হাসি খুশি আছে।শব্দ করে হাসছে মায়ের দুষ্টুমিতে।ইয়ারাবী মেয়ের পেটে সুঁড়সুঁড়ি দিচ্ছে কখনো ওর গালে চুমু খাচ্ছে কখনো উড়না দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে আবার উড়না সরিয়ে বলছে ‘এই যে মা”আর আয়রানা হাসছে। ইয়ারাবী মুখে উড়না দিলে মাঝে মধ্যে আয়রানা উড়না সরিয়ে নিজেই হেসে দিচ্ছে।হাসতে হাসতে পড়ে যেতে নিলেই ইয়ারাবী আবার ও মেয়েকে বসিয়ে দিয়ে দুষ্টুমি করছে।আরাভ কিছুসময় ওদের দেখে এবার হেঁটে বিছানায় এসে বসে পিছন থেকে মেয়ের গালে চুমু খেয়ে বলল,
.
.
-আম্মুটা খেয়েছে?
.
.
বাবার কথায় আয়রানা মেয়ের পিছনে তাকাতে গিয়ে আরাভের পায়ের ওপর পড়ে যেতে নিলেই ইয়ারাবী আর আরাভ দুজনেই মেয়েকে সামলায়।কারন পায়ে পড়লে ব্যাথা পেতো মেয়েটা।ইয়ারাবী আরাভের দিকে তাকায় কারন ওর হাতের ওপর আরাভ হাত দিয়ে আয়রানাকে ধরে আছে।ইয়ারাবী হাত সরিয়ে সোজা হয়ে বসলো।আরাভ মেয়েকে কোলে নিয়ে বুকে জড়িয়ে ইয়ারাবীর দিকে তাকায়।তারপর মেয়ের গালে চুমু দিয়ে বলল,
.
.
-রেডি হয়ে নাও।
-নাহ।
-দেখো আমরা তিনজন বের হবো এখন।প্লিজ রেডি হয়ে নাও।
-বললাম তো হবো না রেডি।কোথাও যাবো না আমি।
-ইয়ারাবী এতো ত্যাড়ামীর মানে হয়না।যাও রেডি হও।
-বাংলা কথা বুঝেননা?বললাম তো যাবো না কোথাও।
-দেখো ইয়ারাবী লাস্ট চান্স দিলাম জলদি রেডি হয়ে নাও।নাহলে!!!
-কি নাহলে কি?চিৎকার করে উঠে ইয়ারাবী।
.
.
আরাভ একটু হেসে বাবুকে বিছানায় শুইয়ে আলমারির কাছে এগিয়ে গেলো।সেখান থেকে লেমন কালারের শাড়ী বের করে খাটের ওপর রেখে দরজা লাগিয়ে ইয়ারাবীর কাছে এগিয়ে এলো।ওর হাত টেনে দাঁড় করায়।
.
.
-কি করবেন আপনি?
-তোমাকে রেডি করাবো।
-মানে কি এসবের?
-তোমার কোমড়ের লাল তিলটা অনেকদিন দেখিনা।
-না।লজ্জা পেয়ে বলল ইয়ারাবী।
-তোমার শরীরে কোথায় কি আছে আমি জানি।সো প্লিজ।
.
.
তারপর নিজ হাতে ইয়ারাবীকে রেডি করাতে শুরু করে আরাভ।শাড়ী পরানোর সময় আরাভের চোখ ইয়ারাবীর কোমড়ের লাল তিলটার ওপর পড়লো।আরাভ নিচে বসে ইয়ারাবীর কোমড়ের তিলটায় চুমু খেতে শুরু করে।ইয়ারাবী চোখ বুজে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে।আরাভ ইয়ারাবীর পেটে চুমু দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে ওর গলায় ঠোঁট বুলায়।ইয়ারাবীর ঠোঁটে আলতো চুমু দিতেই ইয়ারাবী আরাভকে সরিয়ে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।
আরাভ একটু হেসে আয়রানা কে রেডি করিয়ে নিচে নেমে আসে।তারপর তিনজনে বেরিয়ে যায়।ইয়ারাবী আর আয়রানাকে নিয়ে একটু রেস্টুরেন্টে এসেছে আরাভ।ইয়ারাবী মাথা নুঁইয়ে বসে আছে।আয়রানা বেবি কারে বসে হাত নেড়ে খেলছে।ইয়ারাবীর পছন্দের খাবার অর্ডার করলো আরাভ।ইয়ারাবী কিছু মুখে নিচ্ছেনা।
.
.
-খাও না কেন?
-খিদে নেই।
-জানি কিছু খাওনি তুমি।খেয়ে নাও।
-খিদে নেই বললাম তো।
.
.
আরাভ ইয়ারাবীর পাশে চেয়ার টেনে বসে ওর সামনে থেকে প্লেট আর চামচ নিয়ে নিলো।তারপর চামচে কিছু খাবার তুলে ইয়ারাবীর দিকে ধরলো।ইয়ারাবী অন্যদিকে মাথা ঘুরাতে নিলেই আরাভ ওর কানের সামনে মুখ নিয়ে বলল,
.
.
-এতো জেদের ফল ভালো হবেনা।পাব্লিক প্লেসে আমার মিষ্টি রাগ হয়ত ভালো দেখাবেনা।সো প্লিজ খেয়ে নাও।
.
.
ইয়ারাবী মাথা ঘুরিয়ে খেতে শুরু করে আরাভের হাতে।তারপর ওরা বেশ কিছুসময় ঘুরে ঘরে ফিরে আসে।ইয়ারাবীকে আরাভ প্রতিনিয়ত লক্ষ্য করে যাচ্ছে।মেয়েটা অফিস থেকে আসে মন খারাপ করে।অফিসে ও যায় মন খারাপ করে।আরাভ ফারহানের অফিসের একজন এমপ্লয়ি সাদমানের নম্বর সংগ্রহ করে।আরাভের কথা মতো সাদমান আরাভের অফিসে চলে আসে।
আরাভ সাদমানকে বসতে বলে ওর সামনে রাখা চেয়ারাটায়।
.
.
-মোঃ সাদমান রহমান রাইট।
-ইয়েস।দেখা করতে বলেছেন আপনি।
-জি।ইয়ারাবীকে চিনো তো?
-জি।ফারহান স্যারের পিএ।ওর কেবিন আমার পাশেই।কেন স্যার কি হয়েছে?
-তোমার সাহায্য লাগবে আমার।
-কি সাহায্য করতে পারি আমি?
-ইয়ারাবী আমার ওয়াইফ।অফিসে কি করছে কোথায় যাচ্ছে,কি হচ্ছে ওর সাথে এর প্রত্যেকটা আপডেট জানাবা আমাকে।
-এতে আমার কি লাভ হবে?
.
.
আরাভ একটা দুটো মোটা টাকার বান্ডিল সাদমানের সামনে রেখে বলল,
.
.
-নিশ্চয়ই সাহায্য করবে আমাকে।আমি খুশি হলে আরো পাবে তুমি।
-আমাকে দুটো দিন সময় দিন।জানাবো আপনাকে আমি।
-ধন্যবাদ সাদমান।
-আমি আসি তাহলে।
.
.
.
.
.
টাকা নিয়ে বেরিয়ে গেলো সাদমান।দুইদিন পর সাদমান আরাভের নম্বরে কল আসে সাদমানের।আরাভ মেয়েকে নিয়ে খেলছিলো।কল আসতেই আরাভ উঠে বসে কল রিসিভ করলো।
.
.
-হ্যা সাদমান বলো।
-স্যার ইয়ারাবী ম্যাম ফারহান স্যারের রুমে ঢুকলে স্যার ওনাকে সহজে বের হতে দেয়না।আমি কাল ওনার রুমে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েছিলাম।ওনি ম্যামের সাথে অনেক বেয়াদবি করে।ওনাকে স্পর্শ করে।
-থ্যাংকস সাদমান।তোমার বাকি টাকা পাঠাবো আমি।
-ওকে স্যার।আর সাহায্য লাগলে জানাবেন।
-ওকে বায়।
.
.
আরাভ রেহানের কাছে এসে দাঁড়ায়।রেহান খবরের কাগজ থেকে মাথা উঠিয়ে আরাভকে দেখে হেসে দিয়ে বলল,
.
.
-বসো আব্বু।
-আরাভ বসে পড়লো।চাচ্চু ইয়ারাবী কে জিজ্ঞেস করেন ওর অফিসে কোন প্রবলেম হচ্ছে কিনা।ওর বসকে আমার সুবিধের মনে হচ্ছেনা।
-ঠিক আছে আব্বু।
-আমার নাম বলবেননা ওকে।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
.
.
আরাভ সরে আসে রেহানের সামনে থেকে।সন্ধ্যায় ফিরে আসে ইয়ারাবী।ফ্রেশ হয়ে হালকা নাস্তা করে মেয়েকে বুকে টেনে কিছুসময় ঘুমিয়ে নিলো।রাতে ডিনারের সময় রেহান ইয়ারাবী জিজ্ঞেস করলো,
.
.
-ইয়ারাবী মন খারাপ কেন আম্মু?
-কই না তো পাপা।
-না মা কিছুদিন যাবৎ তোকে আপসেট লাগছে।কাজের চাপ বেশি মা?
-না পাপা।
-কি হয়েছে বল মা?
-না পাপা সব ঠিক আছে।
-জবটা ছেড়ে দে মা।
-কেন পাপা?
-তোর বসকে সুবিধের মনে হচ্ছেনা।
.
.
ইয়ারাবী কিছু বলতে নিয়ে ও পারেনা।অন্যদিকে তাকায় ও।ওর ছলছল চোখ জোড়া আরাভের নজর এড়ায়নি।আরাভ কিছু বলতে পারেনা।ডিনার শেষে যে যার রুমে চলে গেলো।ইয়ারাবীর রাতে ঘুম হচ্ছে না আর।বিছানায় কিছুটা সময় ছটফট করে উঠে দাঁড়ায়।মেয়ে পাশে ঘুমুচ্ছে।ইয়ারাবী ধীরে রুম থেকে বেরিয়ে আরাভের রুমের সামনে দাঁড়ায়।রুমের দরজাটা একটু চাঁপানো।ইয়ারাবী তাকায় রুমের ভিতরে।আরাভ ঘুমুচ্ছে।ইয়ারাবী আলতো পায়ে রুমে প্রবেশ করে।তারপর আরাভের মুখের দিকে তাকায়।কি মায়া লোকটার চেহারায়।ইয়ারাবীর চোখে পানি।খুব কষ্ট হচ্ছে ওর।দম বন্ধ হয়ে আসছে।ইয়ারাবী আরাভের পাশে বসে ওর বুকে মাথা রেখে চোখের পানি ছেড়ে দিলো।কাঁদতে লাগলো নিঃশব্দে।আরাভ তাকায় স্ত্রীকে দেখে নেয়।তবে কিছু বলছেনা ও।মেয়েটা কাঁদছে।আরাভের ইচ্ছে হচ্ছে স্ত্রীকে বুকে জড়িয়ে নিতে শক্ত করে।অনেকটা সময় কেঁটে গেলো ইয়ারাবীর আরাভের বুকে।ইয়ারাবী মাথা উঠিয়ে আরাভের দিকে তাকিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।পরদিন আরাভ সাদমানকে জানায় ইয়ারাবী কেন জব ছাড়ছেনা?সাদমান জানায় তার আরো দুূদিন সময় দরকার।
দুদিন কেঁটে যাওয়ার পর সাদমান আরাভকে জানায় ইয়ারাবীকে ফারহানের দেয়া মিথ্যা ১০কোটি টাকার কন্ট্রাক্টের কথা।যার কারনে ইয়ারাবী জব ছাড়তে পারছেনা।
আরাভ বেশ রেগে ফারহানের সাথে যোগাযোগ করার সিদ্ধান্ত নিলো।
চলবে