The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 71

আরাবী আর্ভিন রোয়েনের বাসায় এলো গ্রীস থেকে আসার পর দিনই।রুপন্তী রেহান কে ও ডাকা হয়েছে।ওরা ও কিছুসময়ের মাঝে চলে আসলো।আরাবী, রুহী,রুপন্তী আর ইয়ারাবীর সাথে গল্প করছে।আর্ভিন,রেহান আর রোয়েনের সাথে বসে খেলা দেখছে।আরাভ অফিসে গেছে।আরাবী আর্ভিনের কথা জানানোর পর বলল বিকেলে চলে আসবে।
রুহী, রুপন্তী আর ইয়ারাবী আরাবীকে এটা ওটা জিজ্ঞেস করছে।কই গেলো,কেমন এন্জয় করলো ইত্যাদি ইত্যাদি।রুহী আর ইয়ারাবী যখন মিউজিয়ামের কাহিনী জিজ্ঞেস করলো আরাবী সব টুকুই বলল সাথে ইডিপাসের কাহিনী বলতে রুহী, রুপন্তী আর ইয়ারাবী দুজনেই নাক শিটকায়।
-ইসস কি জঘন্য।বলে উঠে রুপন্তী।
-হ্যা খালামনি খুবই জঘন্য।বাজে লাগছে আমার এ কাহিনী শুনে।
-তা আরো কয়দিন ঘুরতে পারতি।বলে উঠে রুহী।
-না মা এতো দিন অফিস কামাই দেয়া যায় বলো?
ওরা মাথা ঝাঁকিয়ে সায় দিলো আরাবীর কথায়।দুপুরে সবাই খেয়ে রেস্ট করতে চলে গেলো।রুপন্তী ইয়ারাবী আরাবী আর রুহী একসাথে শুয়ে আছে।অবশ্য ইয়ারাবীকে বেশি জায়গা দিয়েছে ওরা।যেন কষ্ট না হয়।ঠিক করে রেখেছে আরাভ আসলে লাগেজ খুলবে তার আগে নয়।
বিকেলে আরাভ চলে আসে নির্দিষ্ট সময়ে।রুমে ইয়ারাবীকে না পেয়ে একটু রাগ হয় আরাভের।রাগী ভাবে এপাশ ওপাশ তাকিয়ে খুঁজতে থাকে ইয়ারাবীকে।হঠাৎ আরাভের মনে হলো ওর পিঠে কারোর গরম নিশ্বাস পড়ছে আর কোমড়ে ভারি হয়ে যাওয়া একটা পেট লাগছে।দুটো হাত আরাভের বুককে আড়াআড়ি ভাবে জড়িয়ে ধরে আছে।
-মিসড ইউ।
-আই মিসড ইউ টু।কই ছিলে?
-খালামনির কাছে।মাম্মা আর আরাবী আপু বাসায়।আপনি জানেন না?
আরাভ ইয়ারাবীর হাত ধরে সামনে এনে ওর গালজোড়া দুহাতে ধরে ইয়ারাবীর মুখ কাছে টেনে আনলো।তারপর কপালে ছোট্ট করে চুমু খেলো আরাভ।তারপর ওর একহাত আরাভ নিজের দুহাতের ভাজে নিয়ে বলল,
-আমি ঘরে আসলে রুমে থাকবা।আসার পর যেখানে যাবার যেও।
-ওকে।আপনি ফ্রেশ হয়ে নিন।আমি আপনার কফি নিয়ে আসছি।
কথাটা বলে চলে যেতে নিচ্ছিলো ইয়ারাবী।আরাভ পিছন থেকে ডাক দিলো,
-কফি এখানে এনো না।আমি নিচে আসবো।
-আচ্ছা।
বেরিয়ে গেলো ইয়ারাবী।রুহী চা বানাচ্ছে।ইয়ারাবী পাশে এসে দাঁড়ায়।রুহী মেয়ের দিকে তাকিয়ে একবার হাসলো।
-খিদে লেগেছে আম্মু?
-না খালামনি।ওনার কফি বানাবো।
-আচ্ছা দাঁড়া চা বানিয়ে কফি বসিয়ে দিচ্ছি।
-ওকে।
-আর শোন ঢালার সময় আমাকে ডাক দিবি।
-আচ্ছা খালামনি।
রুহী চা বানিয়ে সবাই কে দিতে চলে গেলো।কিছু সময় পর বলগ এলো।রুহী এসে কফি ঢেলে ইয়ারাবীর হাতে দিলো যাহ ওকে দিয়ে আয়।ইয়ারাবী দেখলো আরাভ আর্ভিনের পাশে বসে গল্প করছে।বেশ হাসছে দুজন।ওনার হাসি ভীষন সুন্দর।দেখলে দেখতেই ইচ্ছে হয়।ওনার হাসি একদম জেঠুর মতো।ওনার চোখ হাসি সবই দেখতে জেঠুর মতো।তবে পা টা যদি……..কিছু হবে না এটা তো ওনাকে আটকে রাখেনি সফলতার পথে।অতোটা বোঝা যায়না হাঁটার সময়।যদি কেউ মনযোগ দিয়ে দেখে তাহলে বুঝবে একটু খুঁড়িয়ে হাঁটছে।তবে এটা সত্য ওনার যাই হোক ভালবাসি ওনাকে।সবসময় ভালোবাসি।আরাভকে দেখে কথা গুলো ভাবতে ভাবতে ইয়ারাবীর চোখের কোনায় পানি জমা হলো।
-ইয়ারাবী কিরে আম্মু যা কফি দিয়ে আয়।তোর কি খারাপ লাগছে?
-না খালামনি এমনি।
ইয়ারাবী কফি নিয়ে আরাভের দিকে বাঁড়ালো।আরাভ কফি হাতে নিয়ে ইয়ারাবীর দিকে তাকিয়ে ঠোঁট চোখা করে কফির মগে চুমুক দিলো।ইয়ারাবী বেশ লজ্জা পেয়ে সরে গেলো।
সন্ধ্যায় রোয়েনের রুমে সবাই একসাথে এনে আর্ভিন লাগেজ খুলল।ইয়ারাবী জুস নিয়ে এসেছে সবার জন্য।
আরাভ ফোনে কথা শেষ করে রুমে এসে দেখে বেচারী বৌটা দুটো গ্লাস নিয়ে বসে আছে।আরাভ কাছে যেতেই ওর হাতে একটা গ্লাস ধরিয়ে দিলো।আরাবী সবার গিফট বের করছে।এক লাগেজ আর একটা ব্যাগে এ বাসার গিফট।খালাৃ্মনির বাসা সহ।রোয়েনের জন্য এনেছে একটা পারফিউম বেশ দামী ঘড়ি আর ধূসর বর্নের শার্ট।রেহানের জন্যও বেশ দামী ঘড়ি, একটা ব্লুটুথ আর শার্ট।আর পারফিউম সবার জন্য এনেছে।আরাভের হাতে একটা বক্স ধরিয়ে দিলো আরাবী।
-ভাই তোর জন্য একটু স্পেশাল।রুমে নিয়ে দেখবি।
-ওকে।হাসে আরাভ।
-আরাভ এগুলো ও তোর।শার্ট পারফিউম ঘড়ি আরো যেন কি ছিলো।
আরাবী রুপন্তীর গিফট গুলো ওর দিকে ধরে বলল,
-খালামনি তোমার প্রিয় ব্যান্ডের মেকাপ আছে পারফিউম এনেছি আর হলো কিছু অর্নামেন্টস।
-পাগলী এতো কিছু কেন করলি আম্মু?
-আমি তোমার বড় মেয়ে খালামনি।
-সেটা জানি আম্মু।
-তাহলে চুপচাপ নিয়ে নাও।
-ওকে মামনি।
আরাবী এবার রুহীর গিফট নিয়ে রুহীর দিকে ধরলো,
-মা তোমার ক্যালসিয়াম টেবলেটস বলছিলে হাঁটু পেইন।
-আরাভ নিয়ে এসেছিলো আরাবী।তুই আনতে গেলি কেন?
-লাগবে ঔষধ।আমি তোমার মেয়ে আনতেই পারি।
-আচ্ছা।
-আর মা তোমার পার্স এনেছি।পার্সের ভিতর একটা শাল,ঘড়ি আর পারফিউম আছে।
ইয়ারাবীর দিকে তাকায় আরাবী।তারপর বেশ বড় ব্যাগ ওর দিকে ধরে বলল,
-পুরোটা তোর।
-এতো কিছু কি আপু?
-দেখ।
ইয়ারাবী দেখতে শুরু করে।কসমেটিকস, চকলেটস, ডলস, সানগ্লাস,ছোট্ট পার্স যেটা ইয়ারাবী বলেছিলো,একটা ডিজিটাল ক্যামেরা,অর্নামেন্টস।আরো ছিলো বেবির ড্রেস, আর কিছু খেলনা।
-থ্যাংকস আপু।খুব ভালো লেগেছে আমার।
-ওয়েলকাম রে বাবু।
রাতে ডিনার করে সবাই চলে গেলো।তবে ওদের অনেকবার থাকতে বলেছিলো সবাই।আরাবী কাল অফিস জয়েন করবে আর্ভিনের কাজ আছে,রেহানের অফিস আছে রুপন্তীর ঘরে কাজ আছে।ওরা চলে যেতেই যে যার যার রুমে চলে গেলো।আরাবী আর্ভিন ঘরে এসে ফ্রেশ হয়ে নেয়।ঘর টর একটু গুছিয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিলো আরাবী।আর্ভিন এসে ওর পাশে শুয়ে পড়ে।
-আরাবী!!!
-হুম।
-আমাদের যদি ছোট্ট একটা পরী হয়।
-আর্ভিন আমি অফিস নিয়ে খুব বিজি হবো এখন।এসব নিয়ে পরে ভাবি?
-ওকে।চুপ হয়ে যায় আর্ভিন।দুজনের মাঝে আর কোন কথা হয়নি।
.
.
.
.
সকালে অফিসে যাওয়ার সময় ইয়ারাবী নিজের আবদারের ভান্ডার খুলে বসলো তবে সেটা নিজের জন্য নয় আরাভ আর ওদের বেবির জন্য।
আরাভ শার্টের বোতাম লাগাচ্ছিলো।ইয়ারাবী উঠে আরাভের বুকের সাথে লেগে গেলো।
-বোতাম লাগাচ্ছি ইয়ারাবী সরো।
-বাবুরা আপনাকে জড়িয়ে ধরতে চেয়েছে।
-আরাভ এবার হাত প্রশ্বস্ত করে ইয়ারাবী কে জড়িয়ে বলল হয়েছে?
-হুম।
সরে এলো ইয়ারাবী।
-খেয়ে নিবেন টাইমলি।
-ওকে।
-ভাজা পোড়া খাবার খাবেননা।
-আচ্ছা।
-গাড়ী ধীরে চালাবেন।আপনি খুব স্পীডে গাড়ি চালান।
-আচ্ছা।
-বেশি সময় ল্যাপটপের দিকে তাকাবেননা।মাথা ব্যাথা করবে।
-ওকে।
-মাঝে মধ্যে কেবিন ছেড়ে একটু হাঁটবেন।শরীর ভালো থাকবে।
-হলো!!!
-হুম।তা তোমার কি লাগবে সেটা বললেনা?
-আপনি ঘরে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু দিবেন সেটা আমার লাগবে।আপনার সুস্থতা লাগবে আমার।
আপনার বুকটা লাগবে ঘুমাতে।আপনার হাতটা লাগবে আমার চুলে বিলি কেঁটে দেয়াী জন্য।আমার হাতটা ধরার জন্য।আপনাকে পুরো লাগবে সারাজীবনের জন্য।দেখলেন কতো কিছু চেয়ে নিলাম।
আরাভ কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।একেই কি বলে ভালোবাসা?আরাভ শার্ট ঠিক করে ইয়ারাবীর কাছে এসে দাঁড়ায়।তারপর ওর মাথায় চুৃমু দিয়ে ইয়ারাবীর ঠোঁটজোড়ায় নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।কিছুক্ষন পর সরে ইয়ারাবী কে বুকে জড়িয়ে নিলো আরাভ।
-এতোটা ও ভালবাসবে কেউ ভাবতেই পারিনি।
ইয়ারাবী চুপচাপ স্বামীর বুকের মাঝে লেপ্টে রইলো।
কিছুক্ষনপর চলে গেলো আরাভ।ইয়ারাবী রুহীর কাছে গেলো দুষ্টুমি করতে।আজ অফিসে রোয়েন ও এসেছে কারন আজ ওদের প্রজেক্টের ফাইনাল মিটিং।তাই রোয়েনকে দরকার হয়েছে।আজ মিটিং টা করছে আরাভ।ওর একপাশে রোয়েন আর অপরপাশে আরাবী।মিটিং শেষ হলো।ওদের প্রজেক্ট সাকসেসফুল। সবাই আরাভকে কংগ্রাচুলেট করলো।সবাই বের হবে ঠিক সেই মুহূর্তে আরাভ কল দিলো ইয়ারাবীকে।
-হ্যালো আরাভ”””
-ইয়ারাবী প্রজেক্টটা সাকসেসফুল হয়ে গেছে।
-ওহ তাই.??খুব ভালো লাগছে আরাভ।খালামনিকে বলবো।
-হুম।
-আপনি কই আছেন?
-হল রুমে।
-যেখানে আছেন সেখানে থাকেন।
-হুম।
-এবার বলুন আই লাভ ইউ সবার সামনে।
-আর ইউ ম্যাড ইয়ারাবী!!!!সবাই আমার সামনে।ফিসফিসিয়ে বলল আরাভ।
-বলুন নইলে,,
-নইলে কি?
-লাফ দিবো।
-এই না না।
-তাহলে বলুন।
আরাভ মলিন মুখে সবাইকে একবার দেখে বলে দিলো আই লাভ ইউ ইয়ারাবী!!!!কথাটা জোরে শোনা গেলো বন্ধ রুমে।
রোয়েন আরাভের দিকে তাকিয়ে থাকে।আরাবী ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে হেসে দিয়ে বলল,
-Carry on ভাই।
আরাভ লজ্জায় শেষ।রোয়েন একটু হেসে অন্যদিকে ব্যাস্ত হওয়ার ভান করলো।আরাভ গলা আস্তে পরিষ্কার করে নিলো নিচে তাকিয়ে।
ঘরে ফিরে এলো আরাভ।ইয়ারাবী পাকঘরে কাজ করছে।রুহী ও পাকঘরে কাহ করছে তবে ইয়ারাবীর পিছে।আরাভ মাকে খেয়াল করেনি।পাকঘরে এসে ইয়ারাবীকে জড়িয়ে মাথার পিছে চুমু খেলো।
-আরে কি করেন কি?এসেই কি শুরু করেন এসব?তখন অফিসে এতো জোরে বললেন আই লাভ ইউ বললেন।আর এখন এসে এমন করছেন।আপনার মান সম্মান নাই বুঝলাম।তাই বলে কি আমার মান সম্মান নাই?সরেন। আরাভ কে ছাড়িয় বেরিয়ে গেলো ইয়ারাবী।
আরাভ প্রচন্ড ঝটকা খেলো।এই মেয়ে কি বলে গেলো এসব?আরাভ হজম করতে পারছেনা কথা গুলো।তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে পিছনে তাকাতেই আরাভ কি বলবে ভেবে পেলো না। রোয়েন রুহী ওর দিকে চেয়ে হাসছে।আরাভ মাথা নিচু করে রুমে চলে গেলো।
চলবে