The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 63

দম খিচে রইলো কিছুক্ষন আরাভ।মেয়েটা যতক্ষন ব্যাথা পাচ্ছিলো ততক্ষন আরাভের বুকে কামড়ে ধরে রেখে ছিলো।আরাভের শক্ত গাল দুটো আরো শক্ত হতে হতে একসময় নেতিয়ে পড়লো। আর পারছেনা যন্ত্রনা সহ্য করতে।চোখের কোনা বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো আরাভের।হঠাৎ কামড় টা যেন আলগা হয়ে এলো।আরাভ যেন শান্তি পেলো।কিন্তু তখনই বৌটার কান্না শুনতে পেলো।চোখ খুলে নিচে তাকায় আরাভ।ইয়ারাবী আবার ও কাঁদতে শুরু করেছে আরাভের বুকে মুখ গুঁজে।আরাভ ইয়ারাবীর মুখ ধরে ওর সামনে আনলো।ইয়ারাবী ঠোঁটে রক্ত লেগে আছে।আরাভ হাত দিয়ে রক্ত গুলো মুছে দিয়ে বলল,
-মলম লাগিয়ে দিচ্ছি ব্যাথা কমে যাবে।
-আপনি পঁচা। আমার নখ উঠিয়ে ফেলেছেন আআআআ কেঁদে দিলো ইয়ারাবী।
-আরে বোকা ওটা না উঠালে আরো বেশি ব্যাথা পেতে।
-আমার পা জ্বলছে।কাঁদতে কাঁদতে বলল ইয়ারাবী।
ইয়ারাবীর চোখ মুছে দিলো আরাভ।তারপর ওর পা নিজের কোলে উঠিয়ে আলতো হাতে ঔষধ লাগিয়ে দিতে শুরু করলো।কিছুক্ষন পর পর ইয়ারাবী পা সরাতে চাইছে।আরাভ এবার কটমট করে তাকালো।ইয়ারাবী ভয়ে ভয়ে নিচে তাকায়।আরাভ ইয়ারাবীর পায়ে ব্যান্ডেজ করে দিয়ে এক গ্লাস পানি ওর মুখের সামনে দিলো।
-খেয়ে নাও।
ইয়ারাবী পানি খেয়ে নিলো।ইয়ারাবীকে শুইয়ে দিয়ে আরাভ ওর চুল হাতাচ্ছে।
-আপনার বুকে কি হয়েছে?আরাভের খালি বুকের কাঁটা জায়গা দেখিয়ে বলল ইয়ারাবী।
-ও কিছুনা।কেঁটে গিয়েছে।
-সরি কাঁদো মুখে বলল ইয়ারাবী।
-কি হলো?সরি কেন?
-আমি কামড় দিয়েছি আপনাকে।
-কখন দিলে?
-একদম মিথ্যা বলার চেষ্টা করবেননা।খুব লেগেছে তাইনা?
-একদম না ঘুমাও।
ইয়ারাবী একটু বসে পাশের বেড সাইড টেবিল থেকে মলম নিয়ে আরাভের বুকে লাগিয়ে দিলো।আরাভ বৌকে দেখে মিটিমিটি হাসছে।এটাই ওর স্ত্রী।ওর সব ওর দুনিয়া ওর ভালোবাসা।বাচ্চাটা খুব ভালোবাসে ওকে।বাচ্চাটা আজ মা হবে।তবে এই বাচ্চাটাকেই ওর চাই,সারাজীবনের জন্য চাই। মরনের সময়ে ও একেই পাশে চাই।বুড়ো বয়সে ও এই পুচকিকে চাই।ভালোবাসতে চাই সারাজীবন।ইয়ারাবী ঔষধ লাগিয়ে সরে এসে আরাভের কপালে চুমু দিয়ে বলল,
-ঘুমিয়ে পড়ুন।
-আরাভ ইয়ারবীকে বুকের সাথে মিশিয়ে বলল এখন ভালো ঘুম হবে।
ইয়ারাবী আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরলো স্বামীকে।ভালবাসে খুব মানুষটাকে।এদিকে অর্পন ঠিক পাঁচটায় ফেন্সির সামনে এসে বসলো।ফেন্সির ঠোঁটের কোনে ঘায়েল করা হাসি।
-রাইট টাইমিং।আই লাইক ইট।
-থ্যাংকস।অর্পন খেয়াল করলো আজ বেশ সেজে এসেছেন ফেন্সি।এনিথিং স্পেশাল!!!
-হোয়াই?ভ্রু কুঁচকায় ফেন্সি।
-নাথিং।
-একচুয়ালি একটা পার্টি আছে সো আপনাকে ও যেতে হবে এজ মাই পার্টনার।ড্যান্সিং পার্টনার।
-হোয়াট!!!!!
-ইয়াহ।
অর্পন কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।ফেন্সি ওকে এমন একটা অফার দিলো ভাবতেই অবাক লাগছে ওর।অর্পন কিছু বলতে যাবে তখন ফেন্সি,
-আপনাকে আসতেই হবে।ইটস মাই অর্ডার।
-ওকে আ’ম কামিং।
কিছুক্ষন পর,
ফেন্সি আর অর্পন একটা ক্লাবে এলো।এখানে অনেকেই আছেন।অনেকবড় বিজনেসম্যানরা ও।ফেন্সি অর্পনের হাতের ভিতর হাত ঢুকিয়ে বলল,
-এমন ভাব দেখান যে আমাকে ভালোবাসেন আপনি।
-হু!!!
তখনই ফেন্সির একজন বান্ধুবী এসে ওকে জড়িয়ে ধরলো।ফেন্সি তখনো অর্পনের হাত ছাড়েনি।
-বয়ফ্রেন্ড???মেয়েটা অর্পনকে দেখিয়ে বলল।
-ইয়াহ।হি ইজ অর্পন আজহার।অর্পন ও নিবেদিতা।
-হায় মিস নিব!!!!কথা টা শেষ না করতেই ফেন্সি অর্পনকে সরিয়ে অন্যদিকে নিয়ে গেলো।
অর্পনের বেশ লাগছে ফেন্সির সাথে এভাবে হাঁটতে।ফেন্সি ওর বান্ধুবীদের সাথে অর্পনকে পরিচয় করালো।কাপল ড্যান্স ও হলো ওরা এক সাথে নেচেছে।দুজনেই ভীষন কাছা কাছি ছিলো।একে অপরের নিশ্বাসের শব্দ শুনতে পাচ্ছিলো।অর্পন নাচের মাঝেই ফেন্সির কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিতেই ফেন্সি কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বলল,
-আমাদের যাওয়া উচিৎ অর্পন।
-আ’ম সরি।
-চলুন।ফেন্সি খুব তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে এলো।
সেদিন ঘুমাতে পারেনি ফেন্সি।অর্পনের ছোট্ট চুমুটা ওকে ঘুমুতে দিচ্ছেনা। না চাইতে ও খুব কাছে চলে যাচ্ছে অর্পনের।অর্পনের সাথে দেখা হওয়া প্রত্যেকদিন ভালো লাগে ফেন্সির।অর্পন বেশ সাহায্য করেছে ওকে প্রজেক্টের কাজে।ছেলেটা ভালো।বেশ কেয়ারিং।একটু হাসলো ফেন্সি।
আরাবীর ঘুম ভাঙ্গতেই দেখলো বদটা ওর দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসছে।আরাবী লজ্জা পেয়ে আর্ভিনের বুকে মুখ লুকায়।
-কি হলো বৌ??
-কিছুনা উঠো।কাজে যেতে হবেনা।আর্ভিনের বুকে মুখ লুকিয়ে বলল আরাবী।
-এভাবে লুকিয়ে বলছো কেন?একবার তাকাও।
|
|
|
|
|
আরাবী মাথা উঠিয়ে বলল,
-হয়েছে??? এবার উঠো।
-আরেকটু প্লিজ।আরাবীকে জড়িয়ে বলল আর্ভিন।
-না না একদম না।উঠো বলছি।নিজেকে সরাতে চাইলো আরাবী।
আরাবীর সাথে পেরে উঠেনি আর্ভিন।উঠে দুজনে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে গেলো।আরাবীকে অফিসে পৌছে দিয়ে আর্ভিন কাজে চলে এলো।আরাবী অফিসে এসেই দেখলো একটা রুমকে খুব সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে।
-এই রাসেল শোন!!!পিএস কে ডাকলো আরাবী।
-জি ম্যাম!!
-কার কেবিন এটা?
-বড় স্যার আসছে।আরাভ স্যারের জন্য কেবিন ঠিক করছে।
-বাবাই কই?
-স্যার ওনার কেবিনে।
আরাবী নিজের কেবিনে না গিয়ে রোয়েনের কেবিনে এলো।রোয়েন সাদা এপ্রোন পরে গদিতে বসে কফিতে চুমুক দিয়ে একটা হাদীসের বই পড়ছে।আরাবী রোয়েনের পাশে এসে দাঁড়ায়।
-বাবাই!!!
-বই থেকে চোখ সরিয়ে মেয়ের দিকে তাকায় রোয়েন।আরাবী ভালো আছিস মা?
-জি বাবাই তোমরা কেমন আছো?
-ভালো।ইরু টা পায়ের নখ উল্টিয়ে রেখেছে।
-ইস মন খারাপ করে আরাবী।
-হাঁটতেই পারছিলোনা।ওহ আরাভ কাল থেকে জয়েন করবে।আজই আসতো কিন্তু বলেছি বৌয়ের কাছে থাকতে।বাচ্চা মানুষ।কি যে লাফায় বিশ্বাস করবিনা আরাবী।আরাভ ঘর থেকে গেলেই ওর বাঁদরামি শুরু হয়ে যায়।
আরাবী হাসছে।অনেকদিন পর বাবাইকে খুব খুশি লাগছে।আরাভ আসার পর বাবাই আগের মতো হয়ে গেছে।ঝরঝরা হয়ে গেছে বাবাই।প্রানোচ্ছ্বল হয়ে গেছে।রোয়েন মেয়ের দিকে তাকায় তারপর আবার বলল,
-জামাই কেমন আছে?
-ভালো বাবাই।
-হুম।বইয়ে মনযোগ দিয়ে রোয়েন বলল ঘুরে আসতে পারিস তো।
লজ্জা পেয়ে গেলো আরাবী।
-বাবাই আমি আমার কেবিনে যাচ্ছি।কিছু লাগলে জানিও।
-আমি বেশিক্ষন থাকবোনা আম্মু।তুই কাজে মনযোগ দে।
-DMION কোম্পানীর মিটিং এ তুমি ও থাকলে ভালো হতো বাবাই।
-কবে সেটা?
-আজ বিকেলে।
-হাসপাতাল থেকে বের হতে পারলে জানাবো তোকে।
-ওকে বাবাই আসি আমি।
আরাবী নিজের কেবিনে চলে গেলো।এদিকে পরদিন আরাভ অফিসে আসার জন্য রেডি হচ্ছিলো।খাটে বসে মুখ গুমড়ো করে রেখেছে ইয়ারাবী।আয়নায় ঝয়ারাবীর দিকে তাকিয়ে আরাভ বলল,
-কেউ জোর করে নিম রস খাইয়ে দিয়েছে কি?
-না গেলে হয়না?মন খারাপ করে বলল ইয়ারাবী।
-অনেকদিন তো ঘরেই বসে আছি।তাছাড়া মা তো আছেই।
-হুম।মলিন মুখ করে বলল ইয়ারাবী।
আরাভ রেডি হয়ে ইয়ারাবীর কপালে চুমু দিয়ে বলল,
-আসি।
-আরাভের গলা জড়িয়ে ওর গালে জোরে চুমু খেলো ইয়ারাবী।এবার যেতে পারেন।
আরাভ হেসে ইয়ারাবীর ঠোঁটে বেশ জোরে চুমু খেয়ে বলল,
-লাভ ইউ।
-লাভ ইউ টু
আরাভ বেরিয়ে গেলো।
আরাভ কে আজ খুব আনুষ্ঠানিকতার সাথে ওয়েলকাম করা হয়েছে ওদের কোম্পানীতে।সামনে ছিলো আরাবী।গোলাপ ফুলের বড় তোড়া ভাইয়ের হাতে দিয়ে আলিঙ্গন করলো আরাবী আরাভকে।
-ওয়েলকাম ভাই।
-থ্যাংকস আরাবী।
-সবাই একে একে অারাভকে ফুল দিলো।মেয়েরা ওকে দেখে পাগল।
কেউ চোখ ফিরাতে পারছেনা।আরাভ চোখ রাঙ্গাতেই সবাই মাথা নিচু করছে।নিজের কেবিনে যেতেই রোয়েন এসে আরাভকে জড়িয়ে নিলো বুকে,
-ওয়েলকাম আব্বু।
-থ্যাংকস বাবাই।
-রুম দেখে বল পছন্দ হয়েছে কিনা?
-খুব সুন্দর রুম বাবাই।খুব ভালো লেগেছে।
-মন দিয়ে কাজে লেগে পড় সোনা।আসি আমি।
-জিহ।
রোয়েন সহ সবাই বেরিয়ে গেলো।আরাভ ওর চেয়ারে বসলো।বেশ নরম সিট।সামনে নিউ ব্লাক এ্যাপল ল্যাপটপ।ও জানে এসব বাবাইয়ের পছন্দ করা।আধঘন্টা পর কাজে অনেক মনযোগ আসতেই আরাভের ফোন বেজে উঠলো।আরাভ ফোন দেখে ভাবলো আধঘন্টা না যেতেই কল।সারাদিন কি করে কাঁটাবে এ পাগলী ওকে ছাড়া।আর ওই বা কি করে কাঁটাবে ওর পাগলীকে ছাড়া।বারবার কল আসছে।
আরাভ ফোন রিসিভ করে কানে রাখলো,
-হ্য্যালো আরাভ!!!আহ্লাদী গলায় বলল ইয়ারাবী।
-কি হলো?
-বাসায় আসেন।
-মাত্রই এলাম ইয়ারাবী অনেক কাজ পড়ে আছে।
-আসতেই হবে।
-আসবো আমি।কাজ শেষ করেই জলদি আসবো।
-এক্ষুনি আসবেন নয়তো লাফা লাফি শুরু করবো।
-এই না না।আমি আসছি।বলা যায়না এই পাগল কি করে।
চলবে