The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 45

সেদিন আরাভ আর্ভিনের সাথে বেশখানিকটা সময় কাঁটিয়ে দেয়।আর্ভিন কে বেশ মনমরা লাগছিলো। আরাভ আর্ভিনের কাঁধে হাত রাখে।এতো চিন্তা করোনা সব ঠিক হয়ে যাবে।আর যেহেতু আমার কারনেই তোমাদের মাঝে দুরুত্ব এসেছে।আমিই ঠিক করবো সব কিছু বলেই বাঁকা হাসে আরাভ।আর্ভিন আরাভের দিকে তাকায় অবাক চোখে।কেমন করে করবা তুমি।
আরাভ বলে শুনো এ কয়দিন তুমি একদম চুপচাপ থাকবা।আরাবীকে কোন কল দিবানা মেসেজ ও দিবানা।আমার বিয়ের দুতিনদিন পর আমাকে কিডন্যাপ করবে তুমি।আর্ভিন বলল তোমাকে কিডন্যাপ করলে আরাবীর তো খারাপ লাগবেনা।কারন তুমি ওর জন্য এখন জাস্ট বিজনেস পার্টনার।আরাভ বলল দেখো ইয়ারাবী যখন বিয়ের পর আমার বাসায় যাবে তখন আমি টেকনিক আমার সেখানে কাঁটানো কিছু ছবি অর্পন কে দিয়ে ইয়ারাবীকে দেখাবো।ইয়ারাবী সেটা দেখলে কনফার্ম হবে যে এটা ওর খালাতো ভাই আরাভ।এবং ইয়ারাবী অবশ্যই সেটা আরাবীকে জানাবে।তখন আরাবী অবশ্যই আমাকে খুঁজতে আসবে আর সেদিন তুমি আমাকে কিডন্যাপ করে আরাবীকে কল দিবে।আর বাকিটা হয়ত তোমাকে আর বলতে হবেনা।
আর্ভিন বলল আরাভ ইউ আর গ্রেট ম্যান।তুমি না থাকলে কি যে হতো আমার।আরাভ আর্ভিন কে জড়িয়ে ধরে বলল জাস্ট একটাই চাওয়া তোমার কাছে আমার।প্লিজ বোনটাকে পৃথিবীর সব সুখ দিবা।প্রমিজ করো আর্ভিন। আর্ভিন বলল এটা বলতে হবেনা।ওকে আমি খুব ভালোবাসি।ওকে খুব ভালো রাখবো আমি প্রমিজ।
আরাভ সরে আসে।তারপর আরো কিছু সময় আর্ভিনের বাসায় কাঁটিয়ে বেরিয়ে পড়ে আরাভ।
,দেখতে দেখতে ইয়ারাবীর হলুদের দিন টা চলে আসে।
সকাল থেকেই বেশ হৈ হুল্লোড় চলছে।রেহানের একমাত্র মেয়ের বিয়ে বলে কথা।আরাবী এসেছে সকালেই বোনকে সময় দিবে বলে।আরাভের বাসা থেকে হলুদ একটা লেহেঙ্গা সেই সাথে মিলিয়ে লাল ফুলের গয়না আছে।রুহী আসতে পারেনি রোয়েনের কারনে।কারন এখানে আসলে রোয়েনের কষ্ট হতো।বাসায় অনেক গেস্ট যার কারনে বিশ্রাম হতোনা রোয়েনের।
অবশ্য রুহী রুপন্তীকে জানিয়ে দিয়েছে বিকেলে ও আর রোয়েন চলে আসবে।বাসায় অনেক কাজ করছে সবাই কেউই বসে নেই।ইয়ারাবীর সকাল থেকে শরীরটা ভালো নেই।খুব দূর্বল লাগছে।ঘুমাতে চাইছিলো কিন্তু পারছেনা।ওর শোবার ঘরে মহিলা গেস্টরা বারবার আসা যাওয়া করছে।আবার কখনো ছোট ছোট বাচ্চারা আসছে খেলছে আবার বেরিয়ে যাচ্ছে।কখনো যাওয়ার সময় খুব শব্দ করে দরজা লাগাচ্ছে।সারাটা দিন এভাবেই কেঁটে যায় ইয়ারাবীর।শেষমেশ না পেরে উঠে রুম থেকে বেরিয়ে যায় ও। হেঁটে হেঁটে পাকঘরে এসে দাঁড়ায়।রুপন্তী আরাবী আরেকজন বুয়া গোছের মহিলা কাজ করছে পাকঘরে।রুপন্তী তরকারি নাড়ছে।ইয়ারাবী মায়ের কোমড় জড়িয়ে ধরে।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-কি রে মা এই গরমে এখানে কেন তুই?জিজ্ঞেস করে রুপন্তী।
-আমাকে একা রেখে তোমরা কাজ করছো।কোথায় আমার সাথে এসে সময় কাঁটাবা আর এখন দূরে দূরে থাকছো।মন খারাপ করে বলে ইয়ারাবী।
-শোন মেয়ের কথা।আজ তোর হলুদ দেখছিস না ঘরে কতো গেস্ট।এখন বসে থাকতে পারি আমরা বল?বলে উঠে রুপন্তী।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
তখনই বুয়া গোছের মহিলা বলল মাইয়া অইছো জামাইর বাড়ি যাওনি লাগবো।বাপের বাড়ি বইয়া আর কতোদিন খাইবা।মাইয়াগোর এই এক কপাল না শান্তী আছে স্বামীর বাড়িত না বাপের বাড়িত।বাপের বাড়িত বেশিদিন থাইকলে লোকে মন্দ কয় আর জামাইর বাড়িত শত অফমানিত অইয়াও ফইড়া থাহন লাগে।রুপন্তী বুয়ার কথায় পাত্তা না দিয়ে আরাবী কে বলল আরু যা ইয়ারাবীর সাথে গিয়ে বস।জি খালামনি।চল ইয়ারাবী রুমে চল।ইয়ারাবী কে রুমে নিয়ে এলো আরাবী।আচ্ছা ইয়ারাবী তোর কেমন লাগছে?জিজ্ঞেস করে আরাবী।
কি কেমন লাগছে আপু?জিজ্ঞাস করে ইয়ারাবী।
এই যে আজ তোর হলুদ।সেজন্য বলছি কেমন লাগছে।
ইয়ারাবী বলে উঠে আমার বমি পাচ্ছে মাথা ঘুরছে।
আরাবী হেসে দিলো তুই খুব টেনশন করছিস তাই এমন লাগছে।রাতে ও ঘুম হয়না তোর তাইনা?জিজ্ঞাস করে আরাবী।
হুম।আস্তে করে জবাব দিলো ইয়ারাবী।বিকেলে আরাবী বসে যায় বোন কে সাজাতে।হলুদ লেহেঙ্গা আর লাল ফুলের গয়নায় পরীর থেকে কম লাগছেনা ইয়ারাবীকে।চমৎকার মানিয়েছে হলুদের সাজে।রুহী রুপন্তী ইয়ারাবীর রুমে এলো।
রুহী ইয়ারাবীর কাছে এসে বলল আম্মুটাকে খুব সুন্দর লাগছে।ইয়ারাবী খালাকে জড়িয়ে ধরলো।এতো দেরি হলো কেন খালামনি?রুহী ইয়ারাবীকে জড়িয়ে ওর মাথায় চুমু দিয়ে বলল জেঠু এখানে আসলে রেস্ট করতে পারতোনারে মা।ইয়ারাবী সরে এলো।রুপন্তী রুহীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।অনেক গেস্ট এসেছে রেহানের বাসায়।রেহান রোয়েন রুহী রুপন্তী ওদের সময় দিচ্ছে।অর্পন ইয়ারাবীর সাথে দেখা করতে এলো।অর্পনকে রুমে দেখে ইয়ারাবী সোজা হয়ে দাঁড়ালো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-ভাবিকে তো চরম লাগছে।দুষ্টু গলায় বলল অর্পন।
-ইয়ারাবী লজ্জামাখা কন্ঠে বলল থ্যাংক ইউ ভাইয়া।
-তা ভাবি কেমন আছেন আপনি?জিজ্ঞাস করে অর্পন
-এই তো আলহামদুলিল্লাহ।আপনি?
-আমি ও বেশ আছি।কথাটা বলতেই আরাবী ইয়ারাবীর রুমে এলো।আরাবীর সাথে হালকা কথা বলে বেরিয়ে যায় অর্পন।আরাবী ইয়ারাবীর সাজ আবার ও ঠিকঠাক করে ওকে নিচে নিয়ে এলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
স্টেজ সাজানো হয়েছে ড্রয়িংরুমে।ইয়ারাবী কে স্টেজে বসালো রুহী রুপন্তী আর আরাবী।প্রথমে হলুদ লাগাতে এলো রোয়েন আর রুহী।ইয়ারাবীর দুপাশে বসে ওর দুগালে হলুদ লাগালো ওরা।তারপর রুপন্তী আর রেহান।একে একে পালা ক্রমে এসে ইয়ারাবীকে হলুদ লাগাচ্ছে সবাই।অর্পন এসে একটু দুষ্টুমি ও করে হলুদ লাগানোর সময়।তবে ও চলে গেল হলুদ দিয়েই কোন এক গুরুত্বপূর্ন কাজ এসে পড়ায়।
হঠাৎ এতো এতো মিষ্টি ঝাল ফল খাওয়ায় নিজেকে আটকে রাখতে পারেনা ইয়ারাবী।এমনিতেই রাতে ঘুম হয়না।তারওপর এতো হৈহুল্লোড়।জ্ঞান হারিয়ে স্টেজেই পড়ে যায় ইয়ারাবী।সবার মাঝে শোরগোল বেঁধে যায়।রেহান দৌড়ে এসে মেয়েকে কোলে তুলে নিলো।তারপর ইয়ারাবীকে রুমে এনে খাটে শোয়ালো রেহান।ওর পিছু রোয়েন রুহী রুপন্তী আর আরাবী ও এসেছে।ইয়ারাবীর জ্ঞান ফিরানো হলো কিন্তু খাট থেকে উঠে বসতে পারছেনা ও।রোয়েন ডাক্তারকে কল দিলো কারন ওর নিজের কাছে এখন প্রেশার মাপার কোন কিছু নেই।ডাক্তার এলো ইয়ারাবীর রুমে।চেকআপ শেষে ডাক্তার বলল পেশেন্টের এ অবস্থায় ঘরে এতো হৈচৈ করা ঠিক হয়নি।ওনি হয়ত ঠিকমতো খাবার খান না।এমন চলতে থাকলে বাচ্চা মা দুজনের ক্ষতি হবে।
বাচ্চার কথায় সবাই অবাক হলো।রোয়েন রাগী গলায় বলল বাচ্চা মা মানে কি বলেন এসব?
ডাক্তার বলেন আরে আপনাদের মেয়ে ১মাস বিশ দিনের প্রেগন্যন্ট জানেন না?রেহান রুপন্তী থমকে যায়।আরাবী!!!ডেকে উঠে রোয়েন।জি বাবাই, জবাব দিলো আরাবী।আরাভ কে এখানে আসতে বল।বলে উঠে রোয়েন।
জি বাবাই।মলিন কন্ঠে কথাটা বলে আরাভকে কল দিয়ে বাসায় আসতে বলে আরাবী।
কিছুক্ষনের মাঝে আরাভ রেহানের বাসায় এলে একজন ডাক্তার কে বেরিয়ে যেতে দেখলো।
আরাভ দ্রুত উপরের রুমে এলো।গেস্টরা অবশ্য খাওয়া শুরু করেছে।আরাভকে কেউ খেয়াল করেনি।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
আরাভ রেহানের রুমে এসে দেখলো খাটের মাঝামাঝি ইয়ারাবীকে শুইয়ে রাখা হয়েছে।আরাভ কে দেখে রেহান আর রোয়েন উঠে এলো।
আঙ্কেল ডাক্তার যেতে দেখলাম। কি হয়েছে ওর?রেহান কে জিজ্ঞাস করে আরাভ।আরাভ বাবা আমি জানতামনা এমন কিছু হবে।খুব লজ্জিত আমি বাবা।ইয়ারাবীকে তোমার সাথে বিয়ে দিতে পারছিনা আমি।প্লিজ মাফ করে দাও।বলে উঠে রেহান।
কেন আঙ্কেল কি হয়েছে?জিজ্ঞাস করে আরাভ।
রোয়েন বলল আরাভ ইয়ারাবী প্রেগন্যন্ট। আমাদের ধারনা ছিলো না ওর প্রেগন্যান্সি সম্পর্কে।আর আজ ধারনা নেই বাবুটা কার।প্লিজ মাফ করো বাট আমরা এভাবে তোমার লাইফ নষ্ট করতে পারিনা।তুমি অন্য কোন মেয়েকে বিয়ে করো।
আঙ্কেল বেবিটা আমার।একচুয়ালি আমাদের অনেক আগের থেকেই সম্পর্ক ছিলো।যা হয়েছে জাস্ট এন এক্সিডেন্ট। এর কারনেই তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করছিলাম আমি।যদি অন্য কাউকে বিয়ে করতে হতো আমি করতাম।আমি ওকেই বিয়ে করবো।সবাই আরাভের কথা অবাক হয়ে শুনছে।আমাকে প্লিজ ডক্টরের ফাইলটা দিন। সামনে ওকে চেক আপ করতে নিয়ে যেতে হবে।তাই আজই নিয়ে যাই।বলে উঠে আরাভ।রুপন্তী আরাভের হাতে ফাইল তুলে দিলো।আরাভ বেরিয়ে যায়।আজ ইয়ারাবীকে দেখে ভয় পেয়ে গেছিলো। ভাগ্যিস ভালো আছে ইয়ারাবী।তবে আজ বৌটাকে হলুদ পরী লাগছিলো আরাভের কাছে।
চলবে